মুহূর্তে পর্ব-৪১

0
670

#মুহূর্তে
পর্ব-৪১
নিলুফার ইয়াসমিন ঊষা

সন্ধ্যায় অনু আইদের কিছু বন্ধুর সাথে মৃণার বাড়িতে গেল। মহলটা থমথমে। একটা রুম থেকে কান্নাকাটির শব্দ আসছিল। কোন খানিকটা অস্বস্তিবোধ করল। এমন মহলে কি করতে হয় সে জানে না। আইদের অন্যান্য বন্ধুরা তার পরিবারকে চেনার কারণে তাদের সাথে কথা বলতে গেল। মৃণার সাথেও। কিন্তু মৃণাকে দেখার মত অন্য কোন ইচ্ছা ছিলো না। মেয়েটার উপর তার যতই রাগ থাকুক না কেন, তার বাবার মৃত্যুর পরপরই সে মৃণাকে কিছু বলতে পারে না। এতটুকু বিবেক তার আছে। হোক মেয়েটা অনেক খাবার, তবুও তার বাবার মারা গেছে। অনুর বাবা মারা গেছে পাঁচবছর হবে। সে জানে এর কষ্ট। এছাড়া কারও মরা বাড়িতে তামাশা করাটা বিবেকহীনতার কাজ মনে হলো অনুর কাছে।

অনু আইদকে আশেপাশে খুঁজে পেল না। একটি বাচ্চা মেয়েকে জিজ্ঞেস করায় জানে সে ছাদে আছে। বিকেল থেকে সেখানেই বসা। মেয়েটি অনুকে নিয়ে গেল ছাদে। দরজা পর্যন্ত দিয়েই সে দৌড়ে চলে গেল।

আইদ দাঁড়িয়ে আছে ছাদের এক কোণে। চারদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। সে আনমনে তাকিয়ে আছে রাস্তার দিকে। হঠাৎ কেউ তার পিছনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, “তুমি ঠিক আছো?”
হঠাৎ এক মেয়েলী কন্ঠে আইদ চমকে উঠে। সে পিছনে তাকিয়ে অনুকে দেখতে পায়। জোরপূর্বক হেসে জিজ্ঞেস করে, “আমি ভেবেছিলাম তোমাদের আসতে আরও দেরি হবে। অফিস ছুটিতে সময় আছে তো তাই।”
“বড় ম্যাডামকে বলে জলদি এসেছি। নিচে আরও কয়েকজন এসেছে। তোমার পরিবারের সাথে কথা বলছে। তুমি এখানে কী করছ?”
“এমনিতেই দাঁড়িয়ে আছি।”
অনু যেয়ে পাশে দাঁড়ায় আইদের। সে নিচে তাকাল। বাড়ির পিছনের রাস্তার দিকে আইদ কি দেখছিলো সে বুঝতে পাড়লো না।তাই সরাসরি জিজ্ঞেস করে নিলো, “এই চিপা রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছ কেন?”
“আমি একবার ছোট বেলায় রাগ করে এখানে চলে এসেছিলাম। সাইকেলের জন্য। সবাই খুঁজছিলো আমায়, পায় নি, তখন রাশেদ আংকেল আমাকে এখানে খুঁজে পায়। আমি কিছুতেই বাসায় ফিরে যেতে চাইছিলাম না। জেদ ধরেছিলাম। আংকেল বাসায় ফোন করে জানায় আমি তার সাথে, তাই চিন্তা করতে না। সেদিন মধ্যরাত পর্যন্ত আংকেল আমার সাথে এখানে বসে ছিলেন।”
অনুর চোখ দুটো যেন কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলো, “তুমি রাগ করতে পারো?”
“পারি না?”
“দেখে একটুও মনে হয় না। তোমায় দেখে মনে হয় জীবনে রাগ করোই নি। একদম শান্ত তুমি”
অনুর প্রতিক্রিয়া দেখে আইদ না হেসে পারে না। দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে, “সেদিন রাতে আংকেল কি বলেছিলো জানো? রাগ এসব তোমার শক্র। অন্যের উপর যখন আমরা রাগ করি তখন একপ্রকার নিজের উপর অত্যাচার করি। আর তা আপন কারও উপর হলে তাদের থেকে বেশি আমরা কষ্ট পাই। তারপর সে আমায় বুঝালো বাবার আর্থিক অবস্থার কথা। আমাদের পরিস্থিতি তখন এত ভালো ছিলো না। কিন্তু বাবা সবসময় আমাকে সবচেয়ে ভালো শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সব কথা বর্ণনা দিয়ে আমাকে মধ্যরাত পর্যন্ত বুঝালেন সে। আমি বুঝলামও। এরপর কখনো আর জেদ করি নি। ঠিক একমাস পর আংকেল নিজে আমার জন্য সাইকেল কিনে নিয়ে আসলেন। আংকেল আন্টি দুইজনে আমাকে ছেলের থেকে কম আদর দেয় নি। অথচ আমি…আমি তাদের জন্য কিছু করতে পাড়লাম না। কিছু না।”
শেষ বাক্যটা বলার সময় গলা কেঁপে উঠে আইদের৷

অনু দ্বিধায় পড়ে যায়। এমন সময় কী বলে সান্ত্বনা দিতে হয় সে জানেনা। আর আইদকে তেমনভাবে জানেও না। সে সংকোচ নিয়ে বলল, “তোমাকে কি বলে সান্ত্বনা দিব আমি জানি না। তবে হ্যাঁ, এতটুকু বলব তুমি তার শিক্ষার মান রেখেছ। আর আমি নিশ্চিত, এই সে অনেক খুশি হবে।”
আইদ তাকায় অনুর দিকে, “অনু, আমার চেনার মাঝে কেবল তুমি জানো মৃণার সত্যটা। তোমার কি মনে হয় আমার কারণ এর রাশেদ আংকেল আজ আমাদের মাঝে নেই।”
“এসব কি বলছ তুমি? কে বলল তোমাকে এই ফালতু কথা?” অনু মৃদু হাসি ঠোঁটের কোণে এঁকে আইদের হাতের উপর হাত রাখে এবং বলে, “তোমার জন্য কিছু হয় নি। অকারণে নিজেকে দোষারোপ করো না।”

আইদের বন্ধুরা তার সাথে কথা বলতে চায়। কিন্তু আইদকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফোনও লাগছে না তার। তাই মৃণার আইদকে খুঁজতে বের হতে হলো। সারা ঘর খুঁজে না পেয়ে সে রওনা দিলো ছাদের দিকে। ছাদে যেয়ে আইদকে আরেকটি মেয়ের সাথে দেখতে পেল সে। মেয়েটি তার হাত ধরা। দৃশ্যটা দেখতেই কেন যেন রাগে তার শরীর জ্বলে উঠলো। সে উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে এগিয়ে যায়, “আমার বাবাকে মারার করার পরে তুমি এখন এখানে পিরিত করছো?”

অনু এবং আইদ পিছনে ফিরে তাকায়। মৃণাকে দেখে অনু ভ্রু কুঁচকে নেয়। সে মৃণাকে আগে দেখে নি। কিন্তু কথা শুনে সে নিশ্চিত এই মেয়েটাই মৃণা। সে একপলক তাকায় আইদের দিকে। আইদ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। মৃণার কথা উওর দিচ্ছে না।

মৃণা আবারও বলল, “আমার নাম নিয়ে তুমি আমাদের সম্পর্ক ভাঙতে চাইতে তাই না? যেন এই মেয়ের সাথে থাকতে পারো। আর সবাই আমাকে দোষারোপ করে। তোমার সাহস কত বড় হল আমার সাথে এমন করার? তোমার জন্য আজ আমার বাবা আমার সাথে নেই। শুধু তোমার জন্য। তুমি এই মেয়ের জন্য আমাকে প্রেশার দিয়েছিলে তাই না? তোমার সাহস কত বড়….”
মৃণা আইদের কাছে যেয়ে তার কলার ধরতে নিলেই মাঝখানে অনু এসে পড়ে। সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মৃণার দিকে, “আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিতে চাই তোমার বাবা কেবল আজ এই পৃথিবীতে নেই এর কারণ কেবল তুমি।”
“হাউ ডেয়ার ইউ। তুই কে আমার স্বামীর সাথে কথা বলার সময় মাঝখানে আসার।”
“স্বামী? কে? আইদ তোমাকে বলে নি গর্ভবতী মহিলার বিয়ে জায়েজ হয় না?”
মৃণা খানিকটা চমকে গেলেও অনুর কথায়।

অনু আবারো বলে, “কবিতা আছে না, যার জামাইয়ের সাথে বেহায়াপণা করে পেটে বাচ্চা নিয়ে ঢ্যাঙঢ্যাঙ করে ঘুরে বেড়াচ্ছ তার বান্ধবী আমি। আর সাহস কি করে হয় তোমার না সরি, তুমি বলে সম্মান দেওয়ার যোগ্য না তুই। শালী নিজে টাকার জন্য শালীনতা বেঁচে খাইছিস বলে কি সবাইকে তোর মতো ভেবে রেখেছিস? তোর বাবার মৃত্যুর পর তার উপর ভালোবাসা উতলে পড়ছে তোর। তখন সে ভালোবাসা কই ছিলো যখন তার সম্মান বিসর্জন দিয়ে তুই একজন বিবাহিত পুরুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে চেয়েছিস?”
আইদ অনুকে থামাতে চাইলো সামনের কথাগুলো বলতে। এখন এ কথাগুলো বলা উচিত হবে না। কিন্তু অনু থামে না। সে বলেই যায়, “এই’যে তুই এখন আইদকে দোষ দিচ্ছিস যে ও না প্রেশার দিলে তোর বাবা মরতো না। এই কথা তো একবারও মাথায় আসে নি যে তীর্থের সাথে সম্পর্কে না জড়ালে আজ তোর বাবা তোর সাথে থাকতো। তুই তোর জীবনে সুখে থাকতি। কবিতা নিজের জীবনে সুখে থাকতো। তোর জন্য কতগুলো জীবন নষ্ট হয়ে গেল। আচ্ছা তুই তো তীর্থকে বিয়ে করার জন্য প্রেশার দিয়েছিলে তাই না? তখন তোর বাবা জানতো না তোর এই নষ্টামির কথা? প্রেগন্যান্ট হবার সত্বেও তুই তীর্থের কাছে যেতে চেয়েছিলি, তখনও জানতো না তোর এই জঘন্য রূপ? তুই কেবল এখন অন্যকাওকে দোষারোপ করে নিজের মনের অপরাধী ভাব কমাতে চাইছিস, আর কিছু না। তোর বাবার মৃত্যুর একমাত্র অপরাধী তুই। তোর কারণে তোর বাপ মরেছে। তাও একরাশ অপমান, কষ্ট এবং ঘৃণা বুকে নিয়ে। আমি নিশ্চিত, সে মৃত্যুর মুহূর্ত আফসোস করছিলো তার তোর মত একটা মেয়ে আছে।”

কথাগুলো শুনে মৃণা নিজের হুঁশে আর থাকলো না। তার কান্না আসলো। সে রাগে, কষ্টের থাপ্পর মারতে নিলো অনুকে। আইদ সাথে সাথে তার হাত ধরে নিলো। সে গম্ভীর গলায় বলে, “মৃণা বাসায় যাও। আমি এখানে কোন তামাশা চাইনা।”

মৃণা কাঁপছিলো রাগে। সে কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে আইদকে বলল, “তুমি…তুমি ওর জন্য আমাকে এভাবে বলছো? এই মেয়ে তামাশা করেছে আমি না।”
“শুরু তুমি করেছ। এছাড়া আমি কার সাথে কথা বলি, কার সাথে নাএটা তোমার দেখার বিষয় না। আমার ওপর তোমার কোনো রকমের অধিকার নেই।”
“আমার অধিকার নেই, তাহলে কি এই মেয়ের আছে?”
“হ্যাঁ, ও আমার বন্ধু হয়। কিন্তু তুমি আমার কেউ হও না।”

অনু শান্ত গলায় বলে, “দেখো আমি আর তামাশা করতে হলে আমি এখনো করতে পারি। এখনই সবাইকে এখানে ডেকে তোমার সব সত্য সামনে আনতে পারি। বিশ্বাস করো, আমার বলতে এক মুহূর্ত লাগবেনা। আমি আইদ বা কবিতার মতো না যে অন্যকারো কথা ভাববো। কিন্তু একজন মৃত মানুষকে সম্মান দেখিয়ে কোন কিছু করছি না আমি। কিন্তু আমার মাথা নষ্ট করবে না, আমি সে সম্মান দেখানো ভুলে যাব।”
মৃণা ভয় পায় খানিকটা। সে এক পলক অগ্নিদৃষ্টিতে অনুর দিকে তাকিয়ে সেখান থেকে চলে গেল।

মৃণা যাবার পর আইদ অনুকে বলে, “সরি অকারণে তোমাকে এসব শুনতে হলো।”
“সরি? ভাই তুমি বুঝতে পারবে না আমার মনটা এখন কত হালকা লাগছে। শুধু পাড়ছি না বলে, নাহলে ওকে বটগাছে উল্টো লটকিয়ে কিছু পোকা-মাকড় ওর উপর ছেড়ে দিলে আমার মনটা আরেকটু শান্ত হতো।”
রাগে দুইহাত আড়া-আড়ি ভাঁজ করে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল অনু। আইদ এমন মন খারাপের মধ্যেও অনুর কথা শুনে হেসে দেয়।

অনু তার দিকে তাকিয়ে বলে, “তোমার সব সময় হাসতে থাকো উচিত। হাসিতে তোমাকে মানায়।”
.
.
কবিতা বাসায় আসো। একটা ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিল সে। সে প্রায় সেলেক্টও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এমন একটা ঘটনা ঘটলো যার কারণে সে নিজেই চাকরিটা ছাড়তে বাধ্য হয়। একটি মধ্যবয়স্ক লোক ইন্টারভিউ নিচ্ছিল। অন্তিম সময়ে সে অফিসের নিয়ম বলার সময় উঠে এসে তার পাশে দাঁড়ায়। বাজে ভাবে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে তার শরীরে। এখনো সেই মুহূর্তটা ভাবলে শরীর ঘিনঘিন করে ওঠে কবিতার।

এত বছর কোন দুনিয়াতে বাস করতো সে? এমন মুহূর্তে সাথে আর কখনো মুখোমুখি হয়নি সে। এই জগৎটা কি এতই খারাপ? এই ক’দিন এই সমাজের যে জঘন্য রূপ দেখেছে সে এত বছরেও দেখতে পাইনি।

বাসায় এসে দেখে কাব্যের আবারো জ্বর এসেছে। জ্বরে কাঁপচ্ছিলো সে। অথচ অনুর ভাবি বসে বসে টিভি দেখছে। তাকে একবার ফোন করে জানানোর প্রয়োজনওবোধ করে নি সে। ভীষণ রাগ করছিল তার অনুর ভাবির উপর। ইচ্ছা করছিলো কতগুলো কথা শুনাতে। কিন্তু এখনই সময় নেই। সে জলদি করে কাব্যকে নিয়ে গেল হাস্পাতালে। কুহুকেও সাথে নিয়ে গেল। সে কোনোমতে আর অনুর ভাবিকে ভরসা করতে পারবে না।

হাস্পাতালে এসে পড়লো আরে চিন্তায়। কাব্যকে কেবিনে ভর্তি করানো হয়েছে। ঔষধ এবং স্যালাইনের টাকা লাগবে। যা তার কাছে নেই। সে অনু এবং তাহিরাকে কল দিলো কিন্তু কাউকে পেল না। তারপর ঔষুধের দোকানে যেয়ে বাকি স্যালাইন দেওয়ার অনুরোধ করলো কিছুই হলো না। অবশেষে না পেরে কল দিলেও তীর্থকে।

“হ্যালো।”
“শেষমেষ তুমি কল দিলে। তোমার জেদ কী অবশেষে হলো?”
কবিতা কাঁপানো গলায় বলে, “কাব্য হাস্পাতালে ভর্তি। চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা লাগবে। ইমার্জেন্সি আছে।”
“কাব্য, ওর কী হয়েছে? তোমার গাফিলতি পরিণাম। তোমাকে আমি বলেছিলাম তুমি আমার ছেলেমেয়ে খেয়াল রাখতে পারবে না, তোমার জেদের কারণে আজ কাব্যের এই অবস্থা। আমি জানতাম তোমার পক্ষে কোন কিছু করা সম্ভব না। তাই মানা করেছিলাম। আমার কথা তোমার মানো নি। এখন পরিণাম দেখলে? কবিতা এখনো সময় আছে, আমার কাছে ফিরে আসো। আজ জেদ করো না।”
“কাব্য হাস্পাতালে ভর্তি, মাঝেও তুমি কথা বলছো। কিছুটা তো বিবেক রাখো।”
ফোনের ওপাশ থেকে তীর্থ শান্ত গলায় বলল, “তোমার টাকা লাগবে তাই না?”
কবিতা কাঁপছিল। দুই চোখ দিয়ে বয়ে যাচ্ছিলো জল। সে ভেবেছিলো এই জনমে আর তীর্থের টাকা সে ব্যবহার করব না। তার অর্থের অহংকার ভেঙে ছাড়বে সে। এ ধারণা ভেঙ্গে ছাড়বে যে, তাকে ছাড়া সে অসহায়। কিন্তু ভাগ্য তা হতে দিলো না। অবশেষে তাদের সামনে হাত পাততে হলো। কারণ তার নিজের থেকেও তাঁর সন্তান তার কাছে বেশি।
তাই সে কান্না ভেজা গলায় উত্তর দিলো, “হঁ”
“তাহলে আমার কাছে ফিরে আসো।”
কথাটা শুনে যেন কবিতার পায়ের নিচের থেকে জমিন সরে গেল। সে বিস্ময়ের চরম সীমানায়, “কাব্য তোমারও ছেলে তীর্থ। তুমি ওর এই অবস্থায় আমার কাছে শর্ত রাখছো?”
“তুমি আমার কাছে অন্য কোন রাস্তা রাখো নি।”

কল কেটে দেয় কবিতা। সে বিশ্বাস করতে পাড়ছে না নিজের কানকে। হতে পারে সে অনেক খারাপ করেছে কবিতার সাথে। কিন্তু কাব্য তো তার ছেলে। তার আপন রক্ত। কাব্য চিকিৎসার জন্য রাখছে সে? নিজেকে খুবই অসহায় মনে হলো কবিতা। সে কাঁদতে কাঁদতে মুখ হাত দিয়ে ঢেকে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। তার মনে হলো এই মুহূর্তে তার জন্য তার ছেলের প্রাণ সবার আগে। সে স্বার্থপর হতে পারে না। সে কাব্যের জন্য তীর্থের দেওয়া শর্ততেও রাজি।

হঠাৎ কারও কন্ঠ শুনতে পেয়েছে, “কবিতা… কবিতা তুমি ঠিক আছো তো?”
একটি হাত তার কাঁধে সান্ত্বনার ভঙ্গিতে রাখা হলো। সে চোখ তুলে তাকালো। দেখতে পেল কথনকে। কথন তার এই অবস্থা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সে অশান্ত বলে জিজ্ঞেস করে, “তুমি এভাবে কাঁদছো কেন? কি হয়েছে আমায় বলো।”

চলবে…

[বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। গল্পটা কেমন লাগছে জানাবেন। ধন্যবাদ।]

সকল পর্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here