#চেরি_ব্লসমের_সাথে_এক_সন্ধ্যা
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ২৯
____________
রাগে জোহানের মুখ মন্ডল কেঁপে উঠছে। ও ছুটে এলো মিতুলের কাছে। এক টানে মিতুলের থেকে আলাদা করে ফেললো ফ্রেডিকে।
জোহানের এই কাজে চমকে উঠলো মিতুল। সেই সাথে ফ্রেডি। ফ্রেডির মুখ দেখে জোহানের আরও বেশি রাগ হলো। গলায় রাগ ধরেই বললো,
“তোমার সমস্যা কী ব্রো? তোমার তো মেয়েদের অভাব নেই। এত এত গার্লফ্রেন্ড তোমার, তাদের গিয়ে হাগ করো না। ওকে কেন জড়িয়ে ধরছো? আর কখনো ওর আশেপাশেও যেন না দেখি তোমাকে। ওর থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে থাকবে।”
বলেই জোহান মিতুলের এক হাত শক্ত করে চেপে ধরলো। আরও একবার চোখ দিয়ে ফ্রেডিকে সতর্ক করে, মিতুলকে টেনে নিয়ে বেরিয়ে গেল কফিশপ থেকে।
ফ্রেডি এখনও বিমূঢ় দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ করে হলো কী জোহানের? মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
চলতি পথে কোনো কথা বললো না জোহান। কিছুতেই নিজের রাগ কন্ট্রোল হচ্ছে না দেখে, একসময় গাড়ি থামিয়ে নেমে গেল গাড়ি থেকে। গাড়ি থেকে কতক দূর হেঁটে গিয়ে থামলো। অস্থির অস্থির লাগছে ওর। চোখের সামনে কীভাবে ফ্রেডি মিতুলকে জড়িয়ে ধরলো? দৃশ্যটা মনে উঠতেই সর্বাঙ্গ জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।
মিতুল গাড়িতে বসে দূরে জোহানকে দেখছে। এমনিতেই কার্লের জন্য মন খারাপ ওর। এর উপর ফ্রেডির ওই কাজ! আর এখন আবার জোহানের এমন আচরণ মাত্রাতিরিক্ত বিরক্ত লাগছে।
ফ্রেডির জড়িয়ে ধরার দৃশ্যটা চোখে ভেসে উঠতেই মিতুলের গা ঘিন ঘিন করছে। ফ্রেডির কত বড়ো সাহস ওকে এইভাবে জড়িয়ে ধরে! এ দেশে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার হলেও, এটা ওর কাছে তো স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। অন্য একটা দেশের মেয়েকে এভাবে জড়িয়ে ধরতে বিবেকে বাধলো না ওর? প্রথম দেখাতেই ধারণা করেছিল ফ্রেডি কেমন যেন। ঠিক কেমন সেটা বুঝে উঠতে পারেনি তখন। আজ হাতে নাতে প্রমাণ পেল। ফ্রেডি হলো একটা অসভ্য, ইতর! অবশ্য দোষ তো ফ্রেডির থেকে জোহানের বেশি। বেশি কী? সব দোষই তো জোহানের। এই ঘটনার উৎপত্তি তো জোহানের জন্যই হলো! জোহান কেন নিয়ে গিয়েছিল কফিশপে? ওই কফি শপে না নিয়ে গেলে কি আর এমন হতো? আর নিয়ে গিয়েছেই যখন, তখন একা রেখে চলে গিয়েছিল কেন? হ্যাঁ, এটাও মেনে নিলো। একটা ইম্পরট্যান্ট ফোন আসায় কথা বলার জন্য যেতেই পারে। কিন্তু আরও একটু আগে ফিরে এলো না কেন? ফ্রেডি জড়িয়ে ধরার পর ছাড়িয়ে দিলো, জড়িয়ে ধরার আগে এসে বাধা দিতে পারলো না? কেন পারলো না? অকর্মণ্য একটা! দুই দুইটা অপরাধ করেছে জোহান ওর সাথে। এক, কার্লের রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিল। দুই, আজ কফিশপে নিয়ে গেছে। এই দুইটা অপরাধের জন্য জোহানকে যেই শাস্তিই দেওয়া হোক না কেন, তাই কম হয়ে যাবে। ওর অপরাধের কোনো সাজা হয় না। মিতুল জোহানের সম্পর্কে এসব ভাবতে ভাবতেই দেখতে পেল জোহান কারের দিকে এগিয়ে আসছে। মুখে রাগের গাঢ় প্রলেপ। জোহান উইন্ডোর কাছে এসে চেঁচিয়ে উঠলো মিতুলের সাথে,
“ছেলেরা জড়িয়ে ধরলে তোমার খুব ভালো লাগে, তাই না?”
মিতুলের ভিতরের রাগ সব জেগে উঠলো।
“ঠিক করে কথা বলো জোহান! লিমিট ছাড়িয়ে যেও না! এটা কোন ধরণের কথা বলছো তুমি? ফ্রেডি আমায় জড়িয়ে ধরলে আমি কী করবো? জড়িয়ে কি আমি ধরেছি? নাকি ও? এমন বিহেভ করার মানে কী তোমার?”
“কেন জড়িয়ে ধরলো ও তোমাকে? তুমি কী করছিলে? থামাওনি কেন ওকে?”
জোহানের গলায় তীব্র আক্রোশ।
“আরে আজব তো! একটা মানুষ জড়িয়ে ধরলে তাকে থামাবো কী করে? আমি কি আগে থেকে জানতাম ও জড়িয়ে ধরবে? ও কি আমাকে বলে করেছে কাজটা? আর ও আমাকে জড়িয়ে ধরলে তাতে তোমার এত কী? তুমি নিজে যখন অন্য মেয়েদের জড়িয়ে ধরো, তখন? তখন কিছু হয় না? নিজের গার্লফ্রেন্ডকে আমার সামনে যখন জড়িয়ে ধরেছিলে, তখন?”
জোহান আকাশ থেকে পড়লো,
“গার্লফ্রেন্ড?”
মিতুল আত্মবিশ্বাসের সুরে বললো,
“ন্যাকা সাজার চেষ্টা করো না। সবই বুঝি আমি। সেদিন রেস্টুরেন্টে যে মেয়েকে জড়িয়ে ধরেছিলে, তার কথা বলছি। না সান্ডা, আর না লেনি। তুমি আসলে ভালোবাসো ওই মেয়েটাকে। ওই মেয়েটার সাথে রিলেশন তোমার।”
“বাজে কথা বলে মেইন পয়েন্ট থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করো না আমাকে। ফ্রেডি জড়িয়ে ধরলো, আর তুমি ওকে জড়িয়ে ধরতে দিলে কেন? ওকে বাধা দিলে না কেন?”
“আবারও একই কথা বলছো তুমি! একটা লোক যদি আচমকা জড়িয়ে ধরে, তাহলে বুঝবো কী করে?”
জোহান কিছু বললো না। কয়েক সেকেন্ড তির্যক তাকিয়ে থেকে গাড়িতে উঠে বসলো। গাড়ি চালু করে গন্তব্যে নিয়ে যেতে লাগলো। রাগ কিছুটা হালকা হয়েছে। তবে অনেকটাই ঝেঁকে আছে এখনও। জোহান একসময় বললো,
“ফ্রেডিকে চেনো না তুমি। ও মেয়েদের খুবই পছন্দ করে।”
“তো সেটাই তো স্বাভাবিক। একটা ছেলে মেয়েদের পছন্দ করবে সেটাই স্বাভাবিক নয় কি? না কি ছেলেদের পছন্দ করলে সেটা স্বাভাবিক লাগতো তোমার কাছে?”
“উহ, তুমি বুঝতে পারছো না। আমি বলতে চাইছি ও মেয়েদের জন্য পাগল। কোনো মেয়ে দেখলেই সে মেয়ের জন্য পাগল হয়ে যায় ও। কোনো মেয়ে দেখলেই তার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলবে প্রথমে। তারপর বন্ধুত্বের থেকে একটু বেশি কিছু। এই রকম বেশি করতে করতে অনেক দূর এগিয়ে যায় ও। তুমি জানো এ পর্যন্ত কতগুলো গার্লফ্রেন্ড আছে ওর? কম করে হলেও দুইশ-তিনশ। ফ্রেডির ক্যারেকটার খুবই খারাপ। ওর ক্যারেকটারের জন্য ওকে আমার একদমই পছন্দ না। চরিত্রহীন অসভ্য একটা!”
“বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছো তুমি।”
“টান লাগছে তোমার ফ্রেডির জন্য? ওর সম্পর্কে এ কথা বলছি দেখে তোমার খারাপ লাগছে? যা বলছি এর একটা কথাও মিথ্যা নয়। আমার জানা মতে দুই-তিনশ মেয়ে আছে। এর বাইরে আরও কতগুলো আছে, সে তো আমার ধারণার বাইরে।”
দুইশ, তিনশ গার্লফ্রেন্ড? জোহানের কথা বিশ্বাস হলো না মিতুলের। ও ধীরে ধীরে উইন্ডো মুখী হলো।
কার্লের কথা মনে পড়ছে ওর। খুব শীঘ্রই বিয়ে কার্লের। অলিভারের সাথে! কার্লের বিয়ের দিনটি হবে ওর জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন।
__________
নায়াগ্রা ফলস দেখতে শুধু ওর এবং রেশমী আন্টির যাওয়ার কথা থাকলেও, এর সাথে জায়িনও যোগ হয়েছে। হঠাৎ করে কেন আবার জায়িনের যাওয়ার কথা উঠলো ও জানে না। জায়িন না গেলেই ভালো হতো বলে ওর বিশ্বাস। আজকে টরোন্টো যাচ্ছে ওরা। একেবারে শেষ ফ্লাইটে যাবে। বিকেল ছয়টায় ফ্লাইট। সকালেই সব কিছু গোছগাছ করে নিয়েছে। মাত্র তিনদিন থাকবে টরোন্টো। টরোন্টো থেকে নায়াগ্রা ফলস যেতে মাত্র এক ঘণ্টা পনেরো কী বিশ মিনিট লাগে। নায়াগ্রা ফলসও দেখবে, সেই সাথে টরোন্টোর কিছু জায়গা ঘুরবে। মিতুল জোহানের রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় শুনতে পেল জোহান গান গাইছে। গানটা যে বেশ ফুরফুরা মেজাজে গাইছে সেটা শুনেই বোঝা যাচ্ছে। গানটা জোহানের লেখা নয়। এর আগেও শুনেছে এই গানটা। কার গাওয়া সেটা ভুলে গেছে। জোহানের রুমের দরজা ভেজানো ছিল। মিতুল একটু ঠ্যালা দিতেই দরজা খুলে যায়।
আচমকা দরজা খুলে যাওয়ায় ভয় পায় জোহান। বুকের উপর এক হাত রেখে বলে উঠলো,
“ওহ মাই গড!”
মিতুলকে দেখে বললো,
“নক করে ঢুকতে পারো না? একটা ছেলের রুমে হুট করে ঢুকে যাওয়া অন্যায়। প্রাইভেসি বলে একটা কথা আছে।”
বলে জোহান নিজের খালি গায়ে এই সবে পরতে নেওয়া টি-শার্টটা পরে নিলো।
জোহানকে এর আগে একদিন খালি গায়ে দেখে মিতুলের কেমন যেন লেগেছিল। কিন্তু আজ আর লাগলো না। ওর অনুভূতি ছিল একেবারে নিস্তেজ। জোহানের সামনে খোলা লাগেজ দেখে বললো,
“তুমি কোথাও যাচ্ছ?”
জোহান বিছানার উপর মেলে রাখা কতগুলো পোশাক আশাকের ভিতর থেকে একটা থ্রি কোয়াটার প্যান্ট তুলে ভাঁজ করতে করতে বললো,
“হ্যাঁ যাচ্ছি।”
“কোথায়?”
“রিকার্ডোর ফ্ল্যাটে।”
“কেন?”
“সাত দিন ব্যাপী পার্টি করবো আমরা পুরো ফ্রেন্ড সার্কেল মিলে। ওর বাসাতেই হবে। ওর একার পক্ষে কি আর সব কিছু অ্যারেইনজমেন্ট করা সম্ভব হবে? তাই হেল্প করতে যাচ্ছি ওকে।”
“সাত দিন ব্যাপী পার্টি মানে?”
“একটানা সাত দিন পার্টি।”
“একটানা সাত দিন পার্টি করবে তোমরা?”
“হুম। এই সাত দিন বাড়ি থাকবো না আমি। মিস করো না আবার আমাকে। তুমি তো বড্ড বেশিই মিস করো আমাকে।”
মিতুল অবিশ্বাসের সুরে বললো,
“আমি? মিস করি? তোমাকে? ওহ, জোহান তুমি হাসিও না আমাকে।”
“করো না মিস?”
“না, করি না।” দৃঢ়তার সাথে বললো মিতুল।
“সত্যিই করো না? কীভাবে বিশ্বাস করবো তোমার কথা? তোমার মন খুলে দেখাও আমাকে। দেখি, ওই মনে আমাকে মিস করার কোনো হিস্ট্রি আছে কি না।”
জোহানের কথায় অকারণেই মিতুলের হৃদয় ঢিপঢিপ শুরু করলো। ও দাঁড়াতে পারলো না এখানে। কিছু না বলেই বেরিয়ে গেল জোহানের রুম থেকে। জোহানের এই সামান্য কথায়ও এমন হচ্ছে ওর! কোনো রোগে পেল না কি ওকে?
জোহানের রুম থেকে একটা রুম রেখেই জায়িনের রুম। জায়িনের রুমের দরজা সাধারণত বন্ধই থাকে। আজকে খোলা দেখলো। খোলা দরজা দিয়ে দেখতে পাচ্ছে জায়িন ব্যাগ গোছাচ্ছে। টরোন্টো যাওয়ার জন্য নিজের প্রয়োজনীয় সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে। মিতুল কতক্ষণ খোলা দরজা দিয়ে জায়িনের দিকে তাকিয়ে ছিল জানে না। হঠাৎ করে জায়িনের দৃষ্টি ওর উপর পড়তেই নিজের সম্বিৎ ফিরে পায় ও। চোখ নামিয়ে ফেলে। নিজেকে চোর চোর মনে হচ্ছে মিতুলের। চোরের মতো জায়িনকে দেখছিল? হায়রে! কী ভাববে জায়িন? মিতুল আড়চোখে দেখতে পেল জায়িন এগিয়ে আসছে। মিতুল কী বলবে মনে মনে প্রস্তুতি নিতে চাইলো। কিন্তু মাথাতে কিছু এলো না। জায়িন প্রায় দরজার কাছাকাছি এসে গেছে।
মিতুল চোখ তুলে তাকালো। কিছু একটা বলবে বলে মুখ খুলতে যাবে, এর মাঝেই জায়িন ওকে অপমানের সাগরে ঠেলে দিয়ে ওর মুখের উপর দরজাটা বন্ধ করে দিলো। জায়িনের অপমানে মিতুলের মুখ হা হয়ে গেল। ওর মাথায় কেবল ঘুরলো একটি শব্দ, সেটি হলো, ‘অপমান’। এই অহংকারী জায়িন আবার অপমান করেছে ওকে!
জোহান রুম থেকে বের হয়ে জায়িনের রুমের সামনে মিতুলকে স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কাছে এলো। মিতুলকে একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বললো,
“স্ট্যাচু খাতায় নাম লিখলে কবে? আমাকে একটু খবরও দিলে না যে?”
জোহানের কথা কানে আসতে পাশ ফিরে তাকালো মিতুল। ওর মন যে কী পরিমাণ বিষাক্ত এখন তা কেবল ও জানে। এই বিষাক্ত মনের সৃষ্টি করেছে জায়িন। মিতুল জায়িনের রাগটা সম্পূর্ণ জোহানের উপর মেটালো। জোহানকে জোরে একটা ধাক্কা দিলো। জোহান দেয়ালের সাথে গিয়ে ঠেকলো।
মিতুল গটগট করে চলে এলো নিজের রুমে। আসতে আসতে পিছনে জোহানের বিরক্তি কণ্ঠ শুনতে পেল,
“হেই, তুমি কি পাগল হয়ে গেছো? না কি হুটহাট করে আমাকে আঘাত করবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছো?”
___________
ঘড়িতে চারটা বাজতে না বাজতেই জোহান লাগেজ নিয়ে রুম থেকে বের হলো। নিচে না গিয়ে প্রথমে এলো মিতুলের দরবারে। দরজা বন্ধ। জোহান নক করলো।
দরজা খুললো।
“হেই তুলতুল, তোমার কাছে একটা আইলাইনার হবে?”
মিতুল জোহানকে দেখছে। জোহানের মাথায় বাঁকা করে একটা কালো ক্যাপ পরা। গায়ে কালো রঙের টি-শার্ট। পরনে থ্রি কোয়াটার প্যান্ট। তাও কালো। তবে কিছুটা ফ্যাকাশে। পিঠে একটা ব্যাগও আছে। ওর পাশেই আবার লাগেজ রাখা। মিতুল বললো,
“আইলাইনার দিয়ে কী করবে? চোখে ইউজ করবে?”
জোহান যেন মিতুলের উপর একটু বিরক্ত হলো।
“আমি আইলাইনার ইউজ করি না।”
“তাহলে কেন চাইছো আইলাইনার?”
“দরকার আছে তাই চাইছি। তুমি আনো।”
জোহান কী করবে তা দেখার জন্য মিতুল আইলাইনার এনে দিলো। জোহান যা করবে তা ওর ধারনাতেও ছিল না। পেন আইলাইনারটা জোহানকে দিতেই, জোহান মিতুলের এক হাত ধরে আইলাইনার দিয়ে নিজের নাম লিখে দিলো হাতের তালুতে।
মিতুল অবাক হয়ে জোহানের দিকে চাইলো।
জোহান বললো,
“ভিন্ন ধারায় তোমাকে নিজের সিগনেচার দিলাম। কলমে নয় আইলাইনারে। আশা করি মনে রাখবে কেউ তোমার হাতে আইলাইনার দিয়ে সাইন করেছিল। ফেমাস কেউ নয়। তবে ফেমাসের পথে। মনে রেখো কিন্তু। সবার জীবনে এমন বিস্ময়কর স্মৃতি থাকে না। আমি জন্ম দিলাম তোমার জীবনে একটি বিস্ময়কর স্মৃতির।”
মিতুল সিগনেচারটার দিকে একটু সময় তাকিয়ে থেকে বললো,
“এটা কেন করলে?”
“যাতে তুমি আমায় মিস করো সেজন্য। তুমি তো বলেছিলে তুমি না কি আমাকে মিস করবে না। যদিও আমি জানতাম তুমি আমাকে মিস করবে। তবুও মিসটা আরও কিছুটা গভীর করে দিলাম আমি। অনেক বেশি মিস করো কিন্তু আমায়। এবং নায়াগ্রা ফলস দেখার সময় মনে মনে বলো, ‘জোহানের সাথে এই মুগ্ধ, বিস্ময় প্রকৃতিতে হারিয়ে যাব আমি। আমার অবুঝ মনের আসল চাওয়া আমিও খুঁজতে পারি’।”
কথাটা বলে হেসে চলে গেল জোহান। ফেলে গেল নিজের ঝাপসা কথার গাঢ় ছায়া।
(চলবে)