অল্প থেকে গল্প🍁
অরিত্রিকা আহানা
পর্ব:১৯
আজকে সকালে খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠেছে ছবি।কাল সারারাত একটুও ঘুমাতে পারে নি সে।বিছানার এপাশ থেকে ওপাশ ছটফট করেছে কেবল।কোন কিছুতেই মন লাগাতে পারে নি।সারারাতই শুদ্ধ আসার উত্তেজনায় বিভোর ছিলো।সিটির পড়াও ভালোভাবে পড়া হয় নি।নির্ঘাত গোল্লা মারবে!
শুদ্ধ যদি জিজ্ঞেস করে পরীক্ষা কেমন হয়েছে কি বলবে সে?
ওর কি দোষ? টানা দুইঘন্টা যাবত বই নিয়ে বসে থাকার পরেও একফোঁটাও পড়া মাথায় ঢোকাতে পারে নি।এদিকে শিলা হাজারবারের ওপর বলে ফেলেছে সে কালকে সিটি দেবে না।সেটা দেখে ছবির মনও আকুপাকু করছিলো।
শেষমেশ দুই বান্ধবী একমত হলো।দুজনের কেউই সিটি দেবে না।
গোসল সেরে ব্রেকফাস্ট করে নিলো ছবি।দেরী হলে হলের ওয়াশরুম খালি পাওয়া যায় না।তাই ঘুম থেকে উঠে আর দেরী করে নি সে।গোসলে ঢুকে গেছে।
গোসল শেষে ভেজা টাওয়েল বারান্দায় মেলে দিয়ে খাটের ওপর এসে বসলো সে।অন্যমনস্ক ভাবে ফেইসবুকে লগ ইন করলো।মুহূর্তেই খুশিতে চকমক করে উঠে মুখ!
ওদের সি আর রাহাত গ্রুপে পোস্ট দিয়েছে।আজকে সিটি হচ্ছে না,রোকেয়া সিটি পিছিয়েছে।সবাইকে সেমিনারে এটেন্ড করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ছবি খুশিতে আত্মহারা হয়ে শিলাকে টেনে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিলো।চেঁচিয়ে উঠে বলল,
—আজকে সিটি হচ্ছে না শিলা।
শিলা আঙ্গুল দিয়ে চোখ কচলাচ্ছে।ঘুমের রেশ এখনো কাটে নি তার।ফ্যালফ্যাল করে কিছুক্ষন ছবির মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলল,
—যাক রোকেয়া ম্যাম এর ঝাড়ির হাত থেকে বেঁচে গেলাম!
—ওঠ তাড়াতাড়ি রেডি হতে হবে না?
শিলা উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।ছবি ওদের এটাচড আলমারি থেকে আকাশী রংয়ের ফুলহাতা একটা থ্রিপিস বের করে নিলো।পিউর কটন জামদানী।গলায়,হাতা,জামার চারপাশে এবং ওড়নায় রূপালী বর্ডার দেওয়া।জামাটা পরে প্রতিদিনের মত চুল বেধে হালকা সাজগোজ করলো নিলো।আজকে অবশ্য একটা জিনিস বাড়তি পরেছে সে।হাতে ইমিটেশন এর দুগাছি চিকন চুড়ি,যেটা ও কখনোই পরে না।কিন্তু আজকে পড়লো।ফর্সা হাতে চিকন দুগাছি চুড়ি পুরো বউদের মত মানিয়েছে।ওড়না টেনে মাথায় ঘোমটা দিয়ে নিলো।
আধঘন্টা যাবত রেডি হয়ে বসে আছে সে।শিলা এখনো আসে নি।আরো পাঁচমিনিট পর হেলে দিলে রুমে এসে ঢুকলো সে।একেবারে রেডি হয়ে এসেছে।ছবি ভ্রু কুঁচকে বলল,
—তুই এত সেজেছিস কেন?আমরা কি বিয়ে খেতে যাচ্ছি?
—আমি এখন সাজতেও পারবো না?
—না পারবি না।প্রতিদিন তো তোকে এমন সাজতে দেখি না?
শিলা লাজুক হাসি হাসলো।ছবির কাছে ওর হাসিটা পুরো বেকুবের মত লাগছে।শিলা কাচুমাচু করে বলল,
—সবই যখন বুঝিস তখন জিজ্ঞেস করিস কেন? আমি উনার ওপর ক্রাশড!
ছবির রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে।সে কিছুতেই শিলাকে বিশ্বাস করাতে পারে নি ডা.ইফতেখারই শুদ্ধ।মাথামোটা মেয়েটার ধারণা ছবি ওকে মিথ্যে বলছে।দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে কন্ট্রোল করলো ছবি।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো নয়টা পঁয়ত্রিশ বাজে।
আর দেরী করা যাবে না।মেজাজ শান্ত রেখে শিলাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
—ঠিক আছে চল!
ব্যাগ নিয়ে হুড়মুড়িয়ে অডিটোরিয়াম এর দিকে ছুটলো ওরা।শুদ্ধর দশটায় আসার কথা।
অডিটোরিয়াম প্রায় ভর্তি।আমন্ত্রিত দের জন্য স্টেজে সাজানো হয়েছে।বসার জন্য কারুকাজ করা চেয়ার।সামনের টেবিলগুলো বাহারি ফুল দিয়ে সাজানো।গোলাপ,।অর্কিড,রজনীগন্ধা, জারবেরা সহ না ধরনের ফুলের ব্যবহার করা হয়েছে।লাল গালিচা বিছানো হয়েছে মেঝেতে।
ছবি শিলাকে নিয়ে মাঝের সারিতে বসে পড়লো।
শিলা পকপক করে ওর মাথা খারাপ করে দিচ্ছে। কষে ধমক লাগালো ছবি।এমনিতেই উত্তেজনায় ওর বুক কাঁপছে।তারওপর এই মেয়ের মুখ!ভাঙ্গা টেপরেকর্ডার এর মত!চলতে শুরু করে থামাথামি নেই!
নয়টা চল্লিশ,পৌনে দশটা,নয়টা পঞ্চাশ!একটু পরপর ঘড়ি দেখছে ছবি।অস্থির অস্থির লাগছে।
ঠিক দশটা দুইয়ে অডিটোরিয়াম এ এসে ঢুকলো শুদ্ধ।শিলা বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেছে।ছবি হাঁ করে তাকিয়ে আছে।ধবধবে সাদা শার্ট,কালো প্যান্টের সাথে ইন করে পরেছে শুদ্ধ।গলায় কালো টাই,শার্টের হাতা কব্জির ওপর থেকে সামান্য একটু গোটানো।হাতে দামী রোলাক্স ঘড়ি,চোখে কালো ফ্রেমের চশমা!পলিশড সু!মাথা ভর্তি একরাশ চুল।ফর্মাল গেট আপে দুর্দান্ত লাগছে শুদ্ধকে!ছবির নিশ্বাস আটকে যাচ্ছে।বুক ধড়ফড় করছে,রুদ্ধশ্বাসে শুদ্ধর দিকে চেয়ে রইলো সে।
শুদ্ধ স্টেজে উঠে পকেট থেকে ফোন বের করে টেবিলে রাখল।তারপর সামনে ঢেকে রাখা পানির গ্লাসের ঢাকনা উল্টে ঢকঢক করে পুরো পানিটা খেলো !টাইয়ের নটটা সামান্য একটু ঢিলে করলো।ছবির সারা শরীর ঝিমঝিম করে কাঁপছে,ঘনঘন চোখের পাতা ফেলছে সে।শরীরের কাঁপুনি থামানোর জন্য কোলে রাখা ব্যাগটা চেপে ধরলো সে।শিলা ওকে কনুই দিয়ে খোঁচা মেরে বলল,
—ছবি!আমি শেষ!
ছবি নিরুত্তরভাবেই চেয়ে রইল!ওড়না দিয়ে কপালের ঘাম মুছলো।দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত সুন্দর লাগছে শুদ্ধকে।
—এই ছবি?কিছু বল? ছবি? আমার কি হবে ছবি?
—প্লিজ শিলা দয়া করে পাঁচটা মিনিটের জন্য তোর মুখটা বন্ধ রাখ!..প্লিজ!
অনুষ্ঠান শুরু হলো সাড়ে দশটায়।অনুষ্ঠান শুরুর দশমিনিট আগে উপাচার্য মহোদয় এলেন।ইন্ট্রোডাক্টরী স্পিচ দিয়েছেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের একজন অধ্যাপক! তারপর এক এক করে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে আসা ডাক্তাররা বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন।
শুদ্ধ একপাশ হয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে ফোন স্ক্রল করছে।বাম হাতটা কনুইয়ে ভর দিয়ে টেবিলের ওপর রেখে দু আঙ্গুল দিয়ে থুতনি চেপে ধরে আছে সে।তবে সে যে মনোযোগ দিয়ে বক্তৃতা শুনছে সেটা ছবির কাছে স্পষ্ট! মাঝে মাঝেই মাথা নাড়িয়ে মাইকের সামনে দাঁড়ানো মানুষটার সাথে সম্মতি পোষণ করেছে।খুব কমই সামনের দিকে তাকাচ্ছে।
ছবি অধীর আগ্রহে বসে আছে কখন শুদ্ধ স্টেজে উঠবে,কখন বক্তৃতা দেবে।বসে থাকতে থাকতে কোমর ব্যথা হয়ে গেছে ওর।তবুও নড়ছে না।শিলা ওয়াশরুম চেপে বসে আছে।কোনভাবেই শুদ্ধর বক্তৃতা মিস করা যাবে না।
অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত হলো।শুদ্ধ মাইকের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।সবাইকে উদ্দেশ্য করে গালভর্তি অমায়িক হাসি দিলো।সেই হাসিতে ছবির হৃদয়টা শীতল হয়ে বরফের মত জমতে শুরু করলো।কি নির্মল,নিখাদ ঝলমলে হাসি!চোখ বন্ধ করে অনুভব করলো সে।শিলা আবারও বিড়বিড় করে বলল ,
—আজকে সিউর আমি হার্টএটাক করবো ছবি।
শিলার কর্মকান্ডে ছবির মেজাজ রীতিমত খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে। না কিছু বলতে পারছে না কি কিছু করতে।মাঝে মাঝে শিলার গলা টিপে ধরতে মন চায় ওর।কঠিন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ক্রুদ্ধ মেজাজে শিলাকে কিছু বলতে যাচ্ছিলো সে,ওর হঠাৎ পেছনের সীটে বসা মেয়েটার কথা শুনে কানখাড়া করে ফেললো,মেয়েটা ফিসফিস করে ফোনে কারো সাথে কথা বলছে।
—হ্যাঁ কই তুই? আরে শুরু হয়ে গেছে।..হ্যাঁ হ্যাঁ উনি স্পিচ দিতে উঠেছেন।তাড়াতাড়ি আয়!
ছবির রাগে নিজের মাথার চুল ছিঁড়তে মন চাইছে।মেয়েটা কি শুদ্ধর কথা বলছে? কেন?আশেপাশে তাকালো সে।অনেকেই ক্যামেরা অন করে ভিডিও করছে!
শিলা আবার খোঁচা দিয়ে বলল,
—দেখেছিস মেয়েগুলার অবস্থা? এমন করছে কেন এরা?দেশে কি ছেলের অভাব পড়েছে?
—তুই চুপ থাক।
শুদ্ধ প্রথমে কিছুক্ষন বক্তৃতা দিলো।তারপর এক এক করে অন্যদের কাছে থেকে প্রশ্ন নিলো। সবার প্রশ্নেরই আন্সয়ার দিচ্ছে সে।ছবি মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো।
ওর পেছনের মেয়েটা যার সাথে কথা বলছিলো সে মেয়েটা এসে বসলো।
সাথের মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলো,
—শেষ?
মেয়েটা বোধহয় মাথা নাড়িয়ে না বোঝালো।
মেয়েটা ফিসফিস করে বলল,
—শেষ হলে আমি শেষ!উনার জন্য ক্লাস বাঙ্ক দিয়ে এসেছি!আমার এটেন্ডেন্স এমনিতেই কম!
মেয়েটা শুদ্ধর সাথে ঢাকা মেডিকেল কলেজে কর্মরত একজন ডাক্তারের ছোট বোন।সেই সুবাদেই শুদ্ধর কথা জানতে পেরেছে সে।ভাইয়ের মুখে শুদ্ধর প্রশংসা শুনে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সেমিনার এটেন্ড করতে এসেছে।নাম উর্মি।এই ভার্সিটিতেই কেমিস্ট্রির ওপর অনার্স করছে।
ছবি আড়চোখে মেয়েটাকে দেখে নিলো।আলট্রামর্ডান এবং বেশ স্টাইলিশ!নায়িকাদের মত স্লিম ফিগার!পরনে কালো টিশার্ট আর জিন্স!স্ট্রেইট করা চুল,কালো সানগ্লাস মাথার ওপর তুলে রাখা।
ছবি কৌতুহল থাকা সত্ত্বেও চুপচাপ রইলো।ওর সামনের সীটে বসে থাকা মেয়েগুলোও শুদ্ধকে নিয়ে গুজুরগুজুর ফুসুরফাসুর করছে।
রাগে,দুঃখে ছবি দাঁত কিড়মিড় করছে।কিসের হেলথ এওয়্যারনেস সেমিনার!সব গুলো মেয়ে এসেছে কে কার চেয়ে বেশি হ্যান্ডসাম এসব দেখতে!অসভ্যগুলো নির্লজ্জের মতন শুদ্ধর দিকে চেয়ে হাসছে।চড়িয়ে কান লাল করে দিতে মন চাইছে ওর।টেনে ওদের চুল ছিঁড়ে সেই চুল দিয়ে পাপশ বানাতে মন চাইছে।রাগে আরো বেড়ে গেলো যখন ওদের থেকে দু তিন সারি সামনে বসা একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলো,
—বাংলাদেশে কয়টি সরকারি হস্পিটাল আছে স্যার?
সাথে সাথেই পুরো অডিটোরিয়াম জুড়ে হাসির রোল।ছবি মুখ হাড়ির মত করে বসে আছে।শিলা বিড়বিড় করে বলল,
—যতসব আজাইরা প্রশ্ন!হস্পিটালের সংখ্যা দিয়ে এই মেয়ে কি করবে?দুনিয়ার সব আজগুবি প্রশ্ন করছে।
শুদ্ধ চোখের চশমাটা ঠিক করে নিলো।চার আঙুল দিয়ে কপাল চুলকে মেয়েটার প্রশ্নের জবাব দিলো সে।বলল,
—কিছুদিন আগে একটা পত্রিকায় দেখলাম স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং হস্পিটাল মিলিয়ে মোট ছয়শ চুয়ান্নটি।নতুন করে বেড়েছে কি না জানি না।তবে মনে হয় বাড়ে নি।
পুরোটা সময়জুড়ে যদিও ছেলেরা অধিকাংশই ভালো প্রশ্ন করেছে মেয়েরা দুই একজন বাকিরা সবাই ছাগলমার্কা প্রশ্ন করলো।স্যার পড়তে ইচ্ছে করে না কেন? পড়ায় মন বসে না কেন? কি করে পড়ায় মন বসাবো?ইত্যাদি হাবিজাবি প্রশ্ন!
প্রশ্ন উত্তর পর্বের পর শুদ্ধ কিছুক্ষন মাথাব্যথা, মাইগ্রেনের সমস্যা,ঘাড় ব্যথা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করলো।
স্পিচ এর এক পর্যায়ে ছবির দিকে চোখ পড়লো ওর।থমকে গেলো,আবারও সেই অমায়িক হাসি!তার পরপরই আবার স্পিচে মনোযোগ।ছবি সলজ্জ হাসি হাসলো।
পঁয়ত্রিশ মিনিটের মাথায় শুদ্ধর স্পিচ শেষ করলো।পুরো অডিটোরিয়াম জুড়ে করতালি!প্রথমে অনেকেই মনোযোগ না দিলেও পুরো স্পিচ শুনে অভিভূত হয়ে গেছে সবাই।হাসিমুখে স্টেজ থেমে নেমে গেলো শুদ্ধ।শিলা মুগ্ধ কন্ঠে বলল,
—দারূণ স্পিচ দিয়েছে!একেবারে বেস্ট!
অনুষ্ঠান সমাপনী বক্তৃতা দিলেন উপাচার্য মহোদয়!সেমিনার এ উপস্থিত সকল ডাক্তারদের কৃতজ্ঞতা জানালেন।সবাইকে ধন্যবাদ জানালেন তিনি।একপর্যায়ে শুদ্ধকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
—ডা.ইফতেখার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য।উই আর ভেরি গ্ল্যাড টু হেভ ইউ হিয়ার!ইউ হেভ মেইড আওয়ার টাইম ডিলাইটেড।
বিনীতভঙ্গিতে মাথা দোলালো শুদ্ধ।উপাচার্য মহোদয় ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বললেন,
—ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল এবং ডিরেক্টর দুজনেই আমার খুব ভালো বন্ধু।ওদের সুত্র ধরেই ডা.ইফতেখারের সাথে আমার পরিচয়।আজকে উনার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি একটা প্রোগ্রাম ছিলো।উনি সেটা পিছিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসে এসেছেন।উনার মূল্যবান সময় আমাদেরকে দিয়েছেন।তারজন্য আবারও আমাদের সবার পক্ষ থেকে উনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
একটু থেমে উপাচার্য মহোদয় দুষ্টু হাসি দিয়ে বললেন,
— পরে অবশ্য আমরা জানতে পারি উনার ওয়াইফ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্রী।
শুদ্ধ ফোনের দিকেই তাকিয়েই মুচকি হাসি দিলো।
সম্মতিসূচক ঝলমলে হাসি!শুরু হয়ে গেলো পুরো অডিটোরিয়াম জুড়ে মৃদু গুঞ্জন।শিলা স্ট্যাচু হয়ে বসে আছে।বাকি মেয়েদের মধ্যে যারা এতক্ষন লাফালাফি করছিলো বিরস মুখে বসে রইলো সবাই।
ছবি হতবিহ্বল ভাবে বসে আছে।তড়াক করে লাগিয়ে উঠলো হৃদপিন্ডটা!আবার সেই ধুকপুকুনি!লজ্জা,আনন্দ,উচ্ছ্বাস সব মিলিয়ে অপূর্ব এক অনুভূতি!এই স্বীকৃতি কত বড় সম্মানের,কত বেশি মর্যাদার তা কেবল একটা মেয়েই বুঝতে পারে।শুদ্ধ ওকে ভালোবাসার চ্যাপ্টার নয়,পুরো পাণ্ডুলিপিই পড়িয়ে দিয়েছে।
.
.
চলবে