#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়
#Sohani_Simu
পর্ব:২৫
রাত ১২টা বাজে, আমি একা বেডের উপর বসে পুরো রুমে চোখ বুলাচ্ছি।এটা আমাদের স্টোররুমের পাশের রুম।আজকে এই রুমে আমার একা থাকতে হবে।নির্ভীক ভাইয়ার রুলস ভাঙ্গার অপরাধে উনি আমাকে এই ভয়ঙ্কর শাস্তিটা দিয়েছেন।আমি এখন খুব ভয় পাচ্ছি।এখানে ভয় পাবার অনেক গুলো কারন আছে তার মধ্যে দুটি প্রধান কারন হলো ওই হুডি পড়া লোক যাকে আমি এখনও অনেক ভয় পাই,লোকটা যদি আবার আসে?আর আরেকটা প্রধান কারন আমি নিচের ফ্লোরে একাই আছি।আম্মু,ভাইয়া,ইচ্ছে ওরা উপরের ফ্লোরে।কেউ আমাকে দেখতে পর্যন্ত আসছেনা।দরজা বাহিরে থেকে লাগানো নাহলে আরও ১ঘন্টা আগে বেড়িয়ে যেতাম এখান থেকে।বিকেলে ইচ্ছের সাথে বসে হরোর মুভি দেখেছি এখন সেটার সাইড ইফেক্ট যে আমার উপর পরছে বেশ বুঝতে পারছি।ভয়ে চোখ বন্ধই করতে পারছিনা ঘুমাবো কি করে।নাহ আমি কিছুতেই এখানে থাকতে পারবোনা, এখনই কিছু একটা করতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ ফোন নিয়ে জারিফ ভাইয়াকে ভিডিও কল দিলাম,
আমি:ভাইয়া আমি এখানে থাকতে পারবোনা, ভয় করছে।(কান্নার ভান করে)
জারিফ:এখন ভয় পাচ্ছিস কেন?বাহিরের খাবার খাওয়ার সময় মনে ছিল না?এত ভীতু হয়ে তুই ওই সাহসী কাজ গুলো কিভাবে করলি?(রেগে)
আমি:আর করবোনা প্রমিস।তুমি নিয়ে যাও আমাকে।
জারিফ:সত্যি প্রমিস?(ভ্রু কুচকে)
আমি:তিন সত্যি প্রমিস,তুমি তাড়াতাড়ি আসো। এখানে কিসের যেন সাউন্ড হচ্ছে।
জারিফ:কিন্তু চাঁদ যে তোর রুমে তালা লাগিয়ে দিয়েছে?
আমি:তুমি তালা খুলে দাও।
জারিফ:কিন্তু আমার কাছে তো চাবি নেই।(হতাশ হয়ে)
আমি:এ্যা এ্যা……. (আমি সত্যি অনেক ভীতু)
জারিফ:চাঁদ? যা ওকে নিয়ে আয় ওর শিক্ষা শেষ।(ফোন থেকে মুখ তুলে অন্যদিকে তাকিয়ে)
নির্ভীক: এখন ঠিক মধ্যরাত আমি শুনেছি এইসময় ঘর থেকে বের হলে জ্বীনে ধরে তাই ২০মিনিট পর নিয়ে আসবো।(উনাকে দেখতে পেলামনা শুধু কথা শুনতে পেলাম)
তখনই লোডশেডিং হলো।
আমি:আআআআআ……(চিল্লিয়ে)
অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছেনা ফোনে জারিফ ভাইয়া বললো,
জারিফ:ছোটপাখি আসছি আমি।
ভাইয়ার কথা শুনে একটিপে কল কাটলাম তারপর ফ্লাশ অন করবো কিন্তু একি ফোন যে হ্যাং হয়ে গেল।স্ক্রিন কালো হয়ে আছে যার জন্য খুবই ক্ষীণ আলো বের হচ্ছে আমি সেটা নিয়েই বসে থাকলাম। দরজায় খট করে শব্দ হতেই আমি বেডে উপর দাঁড়ালাম।দরজা খুলে ভাইয়া ঢুকলো হাতে আমার ফোনের মতোই কম আলো কিছুই ভালোমতো দেখা যাচ্ছে না।ভাইয়া বেডের কাছে আসতেই আমি এক লাফে ভাইয়ার কোলে উঠলাম। দুইপা দিয়ে ভাইয়ার কোমড় জড়িয়ে ধরেছি গলাও দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ভাইয়ার ঘাড়ের কাছে মুখ রেখে চোখ বন্ধ করে বললাম,
আমি:ভাইয়া আমাকে রুমে দিয়ে আসো।
ভাইয়া দুই হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে হাঁটতে লাগলো।সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতেই কারেন্ট চলে আসলো।আমি তাকিয়ে বললাম,
আমি:ভাইয়া আমাকে নামিয়ে দাও কারেন্ট চলে এসেছে।
বলেই আমার মুখ ভাইয়ার মুখের সামনে আনলাম।মুখ দেখেই আমি হকচকিয়ে উঠে হাত-পা ছেড়ে নিলাম।এটাতো নির্ভীক ভাইয়া।শীট এটা আমি কি করলাম,ছি লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে।উনি আমার দিকে অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকিয়ে দুই হাত দিয়ে শক্ত করে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে আছেন।আমি হতবাক হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি আর ফ্লোরে পা রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু নাগাল পাচ্ছি না।এইদিকে আমার বুকের ভেতর ঢিপ ঢিপ করছে,খুব নার্ভাস লাগছে।আমি কাঁপা কাঁপা গলায় আবার বললাম,
আমি:আপনি..? এখানে.. তো জারিফ ভাইয়া আসতে চাইলো।সরি,আমি..
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে উনি আমাকে কোলে তুলে নিলেন। আচমকা এমন হওয়ায় আমি উনার কাঁধে হাত রাখলাম।উনি বড় বড় পায়ে আমাকে রুমে নিয়ে গিয়ে বেডে শুয়ে গায়ে কম্বল টেনে কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে কানে কানে বললেন,
নির্ভীক:ঘুমাও, গুড নাইট।
আর এক মুহূর্তও না দাঁড়িয়ে হন হন করে বেড়িয়ে গেলেন।আমি আবুলের মতো উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।কিছুক্ষণ পরই লজ্জা পেয়ে কম্বল মুরি দিলাম।ইশ!এরপর উনার সামনে দাঁড়াবো কি করে। উনিই বা কি ভাবলেন।আম্মু ঠিকই বলে এখন আমি বড় হয়ে গেছি হুটহাট ভাইয়ার কোলে আর উঠা যাবে না।তখন কেন যে আম্মুর কথাটা মাথায় আসলো না।ধূর আমার কোন দোষ নেই সব হয়েছে ভাইয়ার জন্য,ভাইয়া নিজে আসতে চেয়ে নির্ভীক ভাইয়াকে পাঠিয়ে দিল আর আমি তো অন্ধকারে উনাকে দেখতে পাইনি তাই এত বড় ভুল হয়ে গেল।নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে কম্বল থেকে মাথা বের করে নিলাম।তারপর ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে দেখি ও উপুর হয়ে ঘুমোচ্ছে। আমিও কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে গেলাম।
.
সন্ধ্যায় ড্রইং রুমের সোফায় শুয়ে ফোনে গেমস খেলছি আর গল্প শুনছি। আম্মু ইচ্ছের মাথায় তেল দিয়ে দিচ্ছে আর গল্প করছে।গল্পের এক পর্যায়ে আম্মু বললো,
আম্মু:তোর মা আরাফকে বিয়ের কথা বলেছে?
ইচ্ছে:হুম,কিন্তু ভাইয়া সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে ও এখন বিয়ে করবেনা।
আম্মু:নিপা মেয়েটা ভাল বুঝলি,তোর মা ওকে আরাফের জন্য পছন্দ করেছে।
ইচ্ছে:নিপা আপুকে ভাইয়াও মনে হয় পছন্দ করেছে।
আম্মু:তাই?নিপাকে কোথায় দেখলো?
ইচ্ছে: নিপা আপুর ছবি আমার ফোনে ছিল। ভাইয়াকে দেখালাম ফোনের দিকে তাকালোনা পর্যন্ত কিন্তু কয়েকমিনিট পর ভাইয়া নিজের থেকে আমার ফোন চেয়ে নিল।আম্মু পরে জিজ্ঞেস করেছিল নিপা আপুকে বিয়ে করার কথা। ভাইয়া বলেছে নিপাকে ভাল লেগেছে কিন্তু এখন বিয়ে করতে চাইনা।
আম্মু:আরাফকে তো ঠিক ঠাকই লাগলো।আগের চেয়ে অনেক ভদ্র আর শান্ত হয়েছে ছেলেটা।
ইচ্ছে:হুম ভাইয়া আর আগের মতো নেই।আচ্ছা মামিন?তোমরা অন্তকে কি আর কোনদিনই ভাইয়ার সামনে যেতে দিবেনা?
আম্মু:তোরা নিজের মামাতো-ফুফাতো ভাইবোন হোস তোদেরকে কিভাবে আলাদা করি বল?এখন জারিফ চাইনা আবার আগের মতো কিছু হোক তাই আরাফের সাথে অন্তর দেখা করাবেনা।
ইচ্ছে:যানো মামিন ভাইয়া কাঁদছিল আগের ভুল গুলো বুঝতে পেরে।
আম্মু:আরাফ এখনও অন্তকে ভালোবাসে আমি ওকে দেখেই বুঝেছি।আমাদের বাসায় এসে কেমন ছটফট করছিল অন্ত নেই সেজন্য।কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই।
ইচ্ছে:কি আর বলবো বলো জোড় করে তো কিছু হয়না কিন্তু ভাইয়া সেটা বুঝেনা।
আম্মু: আরাফ যা পাগলামু করেছে তাও আমি সেইসময় তোর মামাকে বলেছিলাম আরাফ সত্যি অন্তকে ভালোবাসে তোমরা নাহয় ওকে মেনে নাও ও অন্তকে ভাল রাখবে।তোর মামার মন গললেও জারিফ কিছুতেই রাজি হয়নি,ওর এক কথা বোনের কোনদিন বিয়ে নাহলেও আরাফের হাতে দিবেনা।আর অন্তও তো ওকে একদমই পছন্দ করেনা তাহলে কিভাবে ওকে আরাফের হাতে তুলে দিবো।যেখানে অন্তই মানতে পারবেনা সেখানে আমাদের মানা না মানায় কিছু যায় আসেনা।
আমার এসব শুনতে একদম ভাল লাগছেনা তাই উঠে রুমে যাওয়ার জন্য পা বারালাম।তখনই জারিফ ভাইয়া অফিস থেকে ফিরলো।
আম্মু:আজ এত তাড়াতাড়ি এলি?(ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
জারিফ:ছোটপাখি এক গ্লাস পানি নিয়ে আয়।(সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে)
আমি এক দৌঁড়ে পানি নিয়ে এসে ভাইয়াকে পানি দিলাম।পানি খেয়ে ভাইয়া বললেন,
জারিফ:একটা গুড নিউস আছে। সামনের উইক এ রাযীন দেশে ফিরছে।
আম্মু:আলহামদুলিল্লাহ।
আমি আর ইচ্ছে তো ঢিংকাচিকা নাচ শুরু করে দিয়েছি।কারন রাযীন ভাইয়া আসছে মানেই আপুর বিয়ে।
সবাই আনন্দে হৈ-হুল্লোর করছি এমন সময় নির্ভীক ভাইয়া এলেন।উনাকে খুব হাসিখুশি দেখাচ্ছে,হয়ত ভাই দেশে ফিরছে সেইজন্য।উনাকে দেখেই আমার রাতের কথা মনে পরে গেল।আমি মাথা নিচু করে আড় চোখে উনার দিকে তাকালাম।উনি মুচকি হেসে আম্মু আর ভাইয়ার সাথে কথা বলছেন,কি নিষ্পাপ সেই হাসি।এই রকম মুচকি হাসলে উনাকে আরও বেশি সুন্দর লাগে।কথা বলতে বলতে উনি আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসলেন। উনার হাসি দেখে আমিও যে আনমনে হেসে চলেছি সেই খেয়াল আমার নেই।আমি যেন এক অন্য জগতে চলে গিয়েছি। বাস্তবে ফিরলাম ইচ্ছের ধাক্কায়।
ইচ্ছে:বোনু তোমার কি হইলো?এমন হাসো ক্যা?
আমি ওর দিকে রাগী চোখে তাকালাম।মনে মনে বললাম,”বজ্জাত মহিলা এত সুন্দর মোমেন্ট টা নষ্ট করে দিলি?”কিন্তু মুখে বললাম,
আমি:বোনু নয় তুই বরং আমাকে ননদিনী ডাক।(ফিসফিস করে)
ইচ্ছে আমার কথা মনে হয় বুঝতে পারেনি তাই আবার বললাম,
আমি:আরে প্রান্ত ভাইয়া আছে না?তোর ১০বাচ্চার বাবা,আমি উনার বোনু হই সেই হিসেবে আমি তোর ননদিনী। বুঝেছিস ভাবি?(ফিসফিস করে)
ইচ্ছে আমার কথা শুনে মুচকি হাসছে।আমিও একটু মজা নিয়ে প্রসঙ্গ চেন্জ করে দিলাম,
আমি:আইসক্রিম…. খাবো..হু..হু..।(ঘ্যান ঘ্যান করে)
হঠাৎ আমি এমন কিছু বলবো ইচ্ছে ভাবতেও পারেনি সেটা ওর ফেস দেখেই বোঝা যাচ্ছে।আমি যেয়ে ফ্রিজ খুলে আইসক্রিমের বক্স খুজছি কিন্তু পাচ্ছিনা। আশ্চর্য গেল কই ভাইয়া তো কালই ১লিটার বক্স এনে দিয়েছিল।তবে কি ইচ্ছে একাই খেয়ে নিল?সেই জন্য আমার আইসক্রিম খাওয়ার কথা শুনে ও মুখটা এমন করেছিল? দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা,বলেই ইচ্ছের কাছে গেলাম।ইচ্ছে, জারিফ ভাইয়া আর নির্ভীক ভাইয়া বসে গল্প করছিলেন।আমি কোন কিছু না ভেবেই ইচ্ছেকে বললাম,
আমি:ওই রাক্ষসী তুই আমার আইসক্রিম খেয়েছিস?(ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে জোড়ে চিল্লিয়ে)
ইচ্ছে:আমি?ইয়ে মানে আমি একা খাইনি(জারিফ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
আমি:ভাইয়া তুমিও আমার আইসক্রিম খেয়েছো? আমাকে ছাড়া একা একা খেয়ে নিলে? (কোমড়ে হাত দিয়ে)
জারিফ:একা একা কোথায়.. আমি,মিষ্টি পাখি,চাঁদ সবাই খেয়েছি আমরা।(হালকা কেশে)
আমি:তোমরা আইসক্রিম পার্টি করেছো?আমাকে বাদ দিয়ে?(মন খারাপ করে)
জারিফ:আসলে হয়েছে কি কাল রাতে তুই তখন নিচের ঘরে ছিলি…
আমি:আমাকে পানিশমেন্ট দিয়ে তোমরা মজা করে খাচ্ছিলে?(মুখ মলিন করে) আমি এখনই আইসক্রিম খাবো,এনে দাও।(রেগে)
জারিফ:এখন তো রাত হয়ে গেছে কাল এনে দেই?
আমি:না এখনই।
জারিফ:আমার খুব টায়ার্ড লাগছে এই দেখ অফিস থেকে এসে ফ্রেশ ও হতে পারিনি।
ইচ্ছে:এত ফকিন্নির মতো করছিস কেন?মনে হচ্ছে জীবনেও আইসক্রিম খাসনি।
আমি:আমি ফকিন্নি?(রেগে)…তুই ফকিন্নি সেই জন্য আমার জন্য একটুও রাখিসনি।
ইচ্ছে:রেখেছিলাম তো কিন্তু আমি আর জারিফ ভাইয়া খাচ্ছিলাম তখন নির্ভীক ভাইয়া আসলেন তাই তোর ভাগ উনাকে দিয়েছি।
জারিফ:হুম ছোটপাখি তুই বরং চাঁদের থেকে আইসক্রিম নে ও তোর ভাগ খেয়েছে।(সোফা থেকে উঠে সিঁড়ির দিকে যেতে যেতে)
আমি এইবার নির্ভীক ভাইয়ার দিকে তাকালাম। উনি ফোন প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
নির্ভীক:চলো।
বলেই আমাকে ফ্রিজের কাছে নিয়ে গেলেন।ফ্রিজ খুলে একটা কাচের বাটি বের করে আমার হাতে দিয়ে বললেন,
নির্ভীক:তোমাকে রেখে খেতে পারিনি তাই রেখে দিয়েছি,পুরোনো অভ্যাস।
আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।উনি বললেন,
নির্ভীক:কি হলো খাও।
আমি বাটি নিয়ে ডাইনিং টেবিলে যেয়ে আরেকটা বাটিতে অর্ধেক আইসক্রিম ঢেলে নিলাম। দুই বাটিতে দুটো চামচ রেখে ফ্রিজ থেকে কয়েকটা কিটকাট চকলেট নিয়ে নির্ভীক ভাইয়াকে বললাম,
আমি:আসুন।
নির্ভীক:কোথায়?(ভ্রু কুচকে)
আমি:আমরা ছাদে পার্টি করবো।ওই রাক্ষসী মহিলা(ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে)আর দি গ্রেট আহনাফ জারিফ বাদ।
ইচ্ছে:হা হা হা।
নির্ভীক:ইউ মিন তুমি আমার সাথে শেয়ার করবে?(অনেক খুশি হয়ে)
আমি:আমি নয় আপনি শেয়ার করছেন। চলুন আইসক্রিম গলে যাচ্ছে।
ছাদে এসে আমার ছোট কুড়ে ঘরে বসলাম।এই ঘরের চাল ছনের, দেয়াল কোমড় পর্যন্ত উঁচু আর ঘরের মাঝখানে বসার জন্য চেয়ার টেবিল আছে।এইরকম ঘর বিভিন্ন পার্কে দেখা যায়।আমরা বসে বসে খাচ্ছি আর গল্প করছি।হঠাৎ ইচ্ছে এসে ডাকলো,
ইচ্ছে:অন্ত তোর ফোন, সেই কখন থেকে বাজছে।
আমি:কে কল দিয়েছে?
ইচ্ছে:আননোন নাম্বার।
আমি কল রিসিভ করে টেবিলের উপর ফোন রেখে স্পীকার অন করে বললাম,
আমি:হ্যালো কে বলছেন?(কিটকাটে কামড় দিয়ে)
ওপাশ:জানপাখি…….।
সঙ্গে সঙ্গে আমি বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলাম।নির্ভীক ভাইয়া আর ইচ্ছেও স্পষ্ট শুনেছে।নির্ভীক ভাইয়া আমাকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে ইশারা করলেন লোকটার সাথে কথা বলতে।আমি দুই হাত দিয়ে নির্ভীক ভাইয়ার টি শার্ট খামচে ধরে আছি।উনি টেবিল থেকে ফোন তুলে আমার সামনে ধরলেন,
ওপাশ:কথা বলো জানপাখি, আমি যে তোমার ভয়েস শোনার জন্য হন্যে হয়ে বসে আছি।
আমি:কে..কে আপ..নি।(কাঁপা গলায়)
ওপাশ:গুড এখনও জ্ঞান হারাওনি তাহলে,আমি তোমাকে যতটা ভীতু ভেবেছিলাম তুমি ততটা ভীতু নও।
আমি:কি..কি চান?কে..আপনি?(বার বার ঢোক গিলে)
ওপাশ:তোমাকে চাই জানপাখি,,,ওই নির্ভীকের হৃদপিন্ড চাই আমার।আই লাভ ইউ জানপাখি।তোমাকে ছাড়া আমি নিষ্প্রাণ হয়ে যাচ্ছি যেভাবেই হোক আমার তোমাকে চাই খুব তাড়াতাড়ি চাই।
আমি:কে আপনি বলছেন না কেন?
ওপাশ:তোমার ভাষায় কালো হুডি,তোমার ভাইয়ের ভাষায় এনিমি,নির্ভীকের ভাষায় অজ্ঞাত০.১, তোমার বোন-ইচ্ছের ভাষায় দুঃস্বপ্ন আর আমার ভাষায় জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি….. হাহাহা হা….জানপাখি,,,তুমি শুধু আমার,ওই নির্ভীক কে বলে দিও ও আগুন নিয়ে খেলছে। খুব তারাতাড়ি তুমি আমার হবে….তুম হে আপনা বানানে কি কাসম খায়ি হে খায়ি হে।(মোটা কন্ঠে)
বলেই কল কেটে দিলেন।ভয়ে আমার হাত-পা কাঁপছে।ইচ্ছেরও একই অবস্থা। নির্ভীক ভাইয়া আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললেন,
নির্ভীক:ডোন্ট ওরি।ওকিছু করতে পারবেনা ।আজকে ও আবেগের বসে ওর লাইফের সেরা ভুলটা করে ফেলেছে।(বাঁকা হেসে)
আমি:ও ভয়ঙ্কর ওর সাথে লাগবেন না প্লিজ।ও আপনার হৃদপিন্ড নিয়ে নিবে বলছে।(জোড়ে কান্না করে)
নির্ভীক:নাইস জোকস।(হেসে)…ওর দৌঁড় আমার জানা হয়ে গেছে।যত্তসব আজাইরা পাবলিক সুন্দরি মেয়ে দেখলে এদের…বাই দা ওয়ে চলো তো ডিনার করবো।এই ইচ্ছেমতি তুমি এমন স্টার্চু হয়ে আছো কেন?(ভ্রু কুচকে)
ইচ্ছে:ওই লোকটা কিভাবে জানলো আমার ভাষায় ও দুঃস্বপ্ন?
নির্ভীক:আন্দাজে ঢিল মেরেছে।আমার ভাষায় ও একটা চোর।একদম থার্ড ক্লাস চোর।চলো তো…
বলেই আমাকে টেনে নিচে নিয়ে আসলেন।
চলবে……