সৃজা” পর্ব – ৪

0
1842

#সৃজা
পর্বঃ৪
লেখিকাঃআরুনীয়া চৌধুরী।

কারণ একজন স্ত্রীই পারে তার স্বামীর সাথে মানিয়ে নিতে যেটা অন্যরা পারেনা।স্বামীর কাছে বাইরের মেয়ে তুচ্ছ কিন্তু স্ত্রী অমূল্য।স্ত্রী মনের মতো হলে স্বামী সাত সাগর পাড়ি দিতেও দ্বিধা করেনা।এতোদিন আমার ছেলের বাজে অভ্যাস থাকলেও তোমার কারণে তার পরিবর্তন হবে এটা আমি আশা করি।আমি অন্যান্য টিপিক্যাল বাঙালী শাশুড়ীদের মতো নই,যারা বউদের নিন্দা করবে ছেলের কাছে।আমি আধুনিক শাশুড়ী যে ছেলের সাথে বউয়ের মিল থাকাতেই সুখী হয়।আমাকে বা তোমার শ্বশুরকে শেষ বয়সে তোমাদের দেখতে হবেনা,আমি সে আশা করিও না।কিন্তু সন্তানের সুখ আমার কাম্য।আশা করি বুঝতে পেরেছো।আর চৌধুরী বাড়ির বৌ হিসেবে তোমারও কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে,এগুলো আমাকে দেখে ধীরে ধীরে রপ্ত করতে পারবে আশা করি।স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবে,কষ্ট হলেও তোমায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।আমার ম্যাট্রিক দেয়ার পর বিয়ে হয়েছিল এরপর এখানে এসে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি।সন্তান এবং পরিবার একসাথে সামলেছি।সে অনুযায়ী তুমি অনেক ম্যাচিউর।

এতক্ষণ চুপ করে শাশুড়ী মায়ের কথা শুনছিলাম।ভিতর থেকে শ্রদ্ধা জাগ্রত হলো তার প্রতি।আমার ভাগ্যে এ ও বুঝি ছিলো।এতো ভালো শাশুড়ী!পড়াশোনা করতে পারবো শুনে অজান্তেই মনটা ভালো হয়ে গেলো।উৎফুল্ল মনে শাশুড়ীর সব কথায় মাথা নাড়াচ্ছিলাম।উনি বোধহয় সন্তুষ্ট হলেন।

সারাদিন এ ঘর ও ঘর করে আর টিউলিপের সাথে খেলা করে কেটে গেলো।সারাদিনে উনি একবারো কল করেনি।আমি ফোনটা একটু পরপর চেক করেছি।এখন সাফওয়ানের আসার সময় হয়ে গেছে।আমি থ্রি পিছটা পাল্টে একটা পিংক কালার শাড়ি পরলাম।চোখে একটু কাজল দিলাম।আমার মনের অজান্তেই তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি।

সাফওয়ান আসলো রাত ১১টায়।তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে খাবার টেবিলের উপর মাথা দিয়েই ঘুমিয়ে গেছি।এ বাড়ির নিয়ম ৯টার মধ্যে খাওয়া শেষ করে ১০টার মধ্যে সব কাজ শেষ করে ঘুমানো।সাফওয়ান নাকি জরুরী মিটিংয়ে আটকে গেছে।তাই শাশুড়ীর অনুমতি নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।ঘুম ভাঙলো কারো হাতের আর্দ্র ছোঁয়ায়।আমার গাল ভিজিয়ে দিচ্ছে কেউ।ধরফরিয়ে উঠে বসলাম।সাফওয়ান সরে গিয়ে চেয়ারে বসে ভাত বাড়লো।উনি অফিস থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খেতে এসেছেন।আর আমি মরার মতো ঘুমাচ্ছিলাম।ওনাকে খাবার দিয়ে আমিও খেয়ে নিলাম।

সবকিছু গুছিয়ে এসে দেখি উনি এখনো ল্যাপটপ নিয়ে খটখট আওয়াজ করে দ্রুত কোনো কাজ করছেন।আমি বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।ঘুম আসছেনা লাইটের আলোতে তাই এপাশ ওপাশ করছি।কিছুক্ষণ পর সাফওয়ান লাইটটা অফ করে দিলো হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার অসুবিধা হচ্ছে।কিন্তু উনি তখনও কাজ করছে।আমি ঘুমিয়ে গেলাম।

সকাল ৬টায় ঘুম ভেঙে গেলো।সাফওয়ান আমার শাড়ির আচল আকড়ে ঘুমাচ্ছে দেখে অবাক হলাম।আস্তে করে তার হাত থেকে আচলটা সরাতেই তার কাছে ধরা দিতে হলো।বুঝলাম এখনো উঠার সময় হয়নি আমার।

গোসল করতে এসে নাভীর পাশে তিলটাকে এই প্রথম এতো গভীরভাবে দেখলাম।সাফওয়ান এই তিলটাতে অসংখ্যবার অধর ছুইয়েছে।তার নাকি এই তিলটা অনেক পছন্দের।ভেজা তোয়ালেটা বারান্দায় দিয়ে আমি নিচে গেলাম।সাফওয়ান এখনো ঘুমাচ্ছে।আজ অফিস নেই নাকী??

কফি এনে দেখি ঘড়িতে ৯টা বাজে, এবার ডাকলাম তাকে।উনি আধো চোখে আমাকে ইশারা করলো, কী??অফিসে যাবেননা??উনি এবার উঠে বসলেন আমাকে তার কোলে বসিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন তারপর ঘুমজড়ানো কণ্ঠে বললেন “না কয়েকদিন অফিসে যাবোনা,বাসায় থাকবো আর তোমাকে দেখবো।গতকাল দেরী করে আসার কারণ আগামী এক সপ্তাহের জরুরী কাজ ফিনিশ করেছি”।

আজ চারদিন হলো উনি বাসায় আছেন।বেশিরভাগ সময় ওনার চোখের সামনে থাকতে হয়েছে।ওনার শৈশবের বিভিন্ন কথা আমাকে বলেছেন।এর মধ্যে শাশুড়ীমা আমাকে প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তির কথা বললেন কিন্তু আমি নাকচ করে বললাম পাবলিকে আগে চেষ্টা করে দেখবো যদি না হয় তাহলে তারা যা বলবে সেটাই হবে।উনি শুনে খুশিই হলেন মনে হয়,বললেন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য হোম টিউটর রাখবেন।আজ টীচার আসার কথা ছিল কিন্তু উনি বললেন আর দুদিন পর আসতে।কিছুটা মন খারাপ হলেও কিছু বললাম না।

আজ সকালে সাফওয়ানের অফিস থেকে তার পার্সোনাল সেক্রেটারী লীলী এসেছে।মেয়েটা খুবই মডার্ণ পোশাক পরে আছে। বাসার অফিস রুমে আলোচনা করছে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, দেখে এটাই মনে হলো।নাস্তা খাওয়ার জন্য তাদের ডাকতে গিয়ে যা শুনলাম তাতে আমার কান গরম হয়ে উঠলো। অপমানে আর লজ্জায় আমি ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম।দৌড়ে আসার সময় শাশুড়ীমা হয়তো দেখলেন। ওই বিশ্রী শব্দগুলো আমার কানে এখনো বাজছে,রাগে আমি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলাম।ভুলেই গেলাম কোথায় আছি।শুধু সজোরে ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস ভাঙছি আর এলোমেলো করছি।আমার রাগ এভাবেই ঘরের জিনিসপত্রের উপর পরে সবসময়। বাইরে থেকে শাশুড়ীমা দরজা ধাক্কাচ্ছে আর ডাকছে। কিছুক্ষন পর সাফওয়ানের উদ্বিগ্ন স্বর শুনতে পেলাম। কিন্তু আমি নিজের মাঝে নেই যেনো।কতক্ষণ পর সাফওয়ান লক ভেঙে ঘরে ঢুকে আমাকে পেছন থেকে তার সর্বশক্তি দিয়ে পেঁচিয়ে ধরলো।কিছুক্ষণ ছুটানোর চেষ্টা করে একসময় শান্ত হয়ে সাফওয়ানের বুকেই নেতিয়ে পরলাম।শাশুড়ীমা ছেলেকে বললেন ওকে অন্য রুমে নিয়ে যাও।রুমটা পরিষ্কার করতে হবে।

বিকেলে ঘুম ভাঙার পর দেখলাম সাফওয়ান সোফায় বসে টি-টেবিলে পাগুলো রেখে একের পর এক সিগারেটে সুখটান দিচ্ছে আর আমার দিকে চোখগুলো লাল করে তাকিয়ে আছে,মনে হচ্ছে উনি খুবই রাগান্বিত।সিগারেটের ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে বাতায়ন দিয়ে পলায়ন করছে।হয়তো ওরাও সাফওয়ানের রাগকে ভয় পায়।সে ধীর পায়ে এসে আমার পাশে বসলো।

আমার রাগটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।তার চোখে চোখ রেখে বললাম”আপনি এখানে কেনো?যান আপনার পার্সোনাল সেক্রেটারীর কাছে যান।ওহ্ হো আপনাদের রাসলীলায় আমি বেঘাত ঘটিয়েছি তাই না?ঠিক আছে আমি চলে যাবো এখান থেকে।তারপর যত ইচ্ছা..”

আর বলতে পারলাম না সাফওয়ান একটা চড় মারলো আমাকে।আমি কপোলে হাত দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলাম।গাল থেকে হাতটা জোর করে ছাড়িয়ে আঘাতের জায়গায় তিনি ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছেন।

ধীর কণ্ঠে বললেন “যেকোনো বিষয় পুরোটা জানতে হয় মিসেস, তারপর রিয়েক্ট করতে হয়।তুমিতো অর্ধকথা শুনেই সব ভাঙচুর করলে।বিয়ের আগে তার সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক ছিল এটা সত্যি, কিন্তু আজ তার সাথে আমার কিছুই হয়নি।সে তার শরীর দেখিয়ে আমায় জোর করতে চেয়েছিল।তার ধারণা,নাহয় সে চাকরি হারাবে।”

“আপনি মেয়েদের এভাবে চাকরি দিতেন?”ঘৃণিত চোখে বললো সৃজা।

সাফওয়ান কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।বললো “এরকম কিছু না,চাকরি দেয়ার বিভিন্ন প্রসেস আছে,শুধু আমার পার্সোনাল সেক্রেটারী আমি চুজ করি।”সৃজা
পর্বঃ৪
লেখিকাঃআরুনীয়া চৌধুরী।

কারণ একজন স্ত্রীই পারে তার স্বামীর সাথে মানিয়ে নিতে যেটা পতিতারা পারেনা।স্বামীর কাছে বাইরের মেয়ে তুচ্ছ কিন্তু স্ত্রী অমূল্য।স্ত্রী মনের মতো হলে স্বামী সাত সাগর পাড়ি দিতেও দ্বিধা করেনা।এতোদিন আমার ছেলের বাজে অভ্যাস থাকলেও তোমার কারণে তার পরিবর্তন হবে এটা আমি আশা করি।আমি অন্যান্য টিপিক্যাল বাঙালী শাশুড়ীদের মতো নই,যারা বউদের নিন্দা করবে ছেলের কাছে।আমি আধুনিক শাশুড়ী যে ছেলের সাথে বউয়ের মিল থাকাতেই সুখী হয়।আমাকে বা তোমার শ্বশুরকে শেষ বয়সে তোমাদের দেখতে হবেনা,আমি সে আশা করিও না।কিন্তু সন্তানের সুখ আমার কাম্য।আশা করি বুঝতে পেরেছো।আর চৌধুরী বাড়ির বৌ হিসেবে তোমারও কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে,এগুলো আমাকে দেখে ধীরে ধীরে রপ্ত করতে পারবে আশা করি।স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবে,কষ্ট হলেও তোমায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।আমার ম্যাট্রিক দেয়ার পর বিয়ে হয়েছিল এরপর এখানে এসে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি।সন্তান এবং পরিবার একসাথে সামলেছি।সে অনুযায়ী তুমি অনেক ম্যাচিউর।

এতক্ষণ চুপ করে শাশুড়ী মায়ের কথা শুনছিলাম।ভিতর থেকে শ্রদ্ধা জাগ্রত হলো তার প্রতি।আমার ভাগ্যে এ ও বুঝি ছিলো।এতো ভালো শাশুড়ী!পড়াশোনা করতে পারবো শুনে অজান্তেই মনটা ভালো হয়ে গেলো।উৎফুল্ল মনে শাশুড়ীর সব কথায় মাথা নাড়াচ্ছিলাম।উনি বোধহয় সন্তুষ্ট হলেন।

সারাদিন এ ঘর ও ঘর করে আর টিউলিপের সাথে খেলা করে কেটে গেলো।সারাদিনে উনি একবারো কল করেনি।আমি ফোনটা একটু পরপর চেক করেছি।এখন সাফওয়ানের আসার সময় হয়ে গেছে।আমি থ্রি পিছটা পাল্টে একটা পিংক কালার শাড়ি পরলাম।চোখে একটু কাজল দিলাম।আমার মনের অজান্তেই তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি।

সাফওয়ান আসলো রাত ১১টায়।তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে খাবার টেবিলের উপর মাথা দিয়েই ঘুমিয়ে গেছি।এ বাড়ির নিয়ম ৯টার মধ্যে খাওয়া শেষ করে ১০টার মধ্যে সব কাজ শেষ করে ঘুমানো।সাফওয়ান নাকি জরুরী মিটিংয়ে আটকে গেছে।তাই শাশুড়ীর অনুমতি নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।ঘুম ভাঙলো কারো হাতের আর্দ্র ছোঁয়ায়।আমার গাল ভিজিয়ে দিচ্ছে কেউ।ধরফরিয়ে উঠে বসলাম।সাফওয়ান সরে গিয়ে চেয়ারে বসে ভাত বাড়লো।উনি অফিস থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খেতে এসেছেন।আর আমি মরার মতো ঘুমাচ্ছিলাম।ওনাকে খাবার দিয়ে আমিও খেয়ে নিলাম।

সবকিছু গুছিয়ে এসে দেখি উনি এখনো ল্যাপটপ নিয়ে খটখট আওয়াজ করে দ্রুত কোনো কাজ করছেন।আমি বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।ঘুম আসছেনা লাইটের আলোতে তাই এপাশ ওপাশ করছি।কিছুক্ষণ পর সাফওয়ান লাইটটা অফ করে দিলো হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার অসুবিধা হচ্ছে।কিন্তু উনি তখনও কাজ করছে।আমি ঘুমিয়ে গেলাম।

সকাল ৬টায় ঘুম ভেঙে গেলো।সাফওয়ান আমার শাড়ির আচল আকড়ে ঘুমাচ্ছে দেখে অবাক হলাম।আস্তে করে তার হাত থেকে আচলটা সরাতেই তার কাছে ধরা দিতে হলো।বুঝলাম এখনো উঠার সময় হয়নি আমার।

গোসল করতে এসে নাভীর পাশে তিলটাকে এই প্রথম এতো গভীরভাবে দেখলাম।সাফওয়ান এই তিলটাতে অসংখ্যবার অধর ছুইয়েছে।তার নাকি এই তিলটা অনেক পছন্দের।ভেজা তোয়ালেটা বারান্দায় দিয়ে আমি নিচে গেলাম।সাফওয়ান এখনো ঘুমাচ্ছে।আজ অফিস নেই নাকী??

কফি এনে দেখি ঘড়িতে ৯টা বাজে, এবার ডাকলাম তাকে।উনি আধো চোখে আমাকে ইশারা করলো, কী??অফিসে যাবেননা??উনি এবার উঠে বসলেন আমাকে তার কোলে বসিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন তারপর ঘুমজড়ানো কণ্ঠে বললেন “না কয়েকদিন অফিসে যাবোনা,বাসায় থাকবো আর তোমাকে দেখবো।গতকাল দেরী করে আসার কারণ আগামী এক সপ্তাহের জরুরী কাজ ফিনিশ করেছি”।

আজ চারদিন হলো উনি বাসায় আছেন।বেশিরভাগ সময় ওনার চোখের সামনে থাকতে হয়েছে।ওনার শৈশবের বিভিন্ন কথা আমাকে বলেছেন।এর মধ্যে শাশুড়ীমা আমাকে প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তির কথা বললেন কিন্তু আমি নাকচ করে বললাম পাবলিকে আগে চেষ্টা করে দেখবো যদি না হয় তাহলে তারা যা বলবে সেটাই হবে।উনি শুনে খুশিই হলেন মনে হয়,বললেন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য হোম টিউটর রাখবেন।আজ টীচার আসার কথা ছিল কিন্তু উনি বললেন আর দুদিন পর আসতে।কিছুটা মন খারাপ হলেও কিছু বললাম না।

আজ সকালে সাফওয়ানের অফিস থেকে তার পার্সোনাল সেক্রেটারী লীলী এসেছে।মেয়েটা খুবই মডার্ণ পোশাক পরে আছে। বাসার অফিস রুমে আলোচনা করছে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, দেখে এটাই মনে হলো।নাস্তা খাওয়ার জন্য তাদের ডাকতে গিয়ে যা শুনলাম তাতে আমার কান গরম হয়ে উঠলো। অপমানে আর লজ্জায় আমি ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম।দৌড়ে আসার সময় শাশুড়ীমা হয়তো দেখলেন। ওই বিশ্রী শব্দগুলো আমার কানে এখনো বাজছে,রাগে আমি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করলাম।ভুলেই গেলাম কোথায় আছি।শুধু সজোরে ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস ভাঙছি আর এলোমেলো করছি।আমার রাগ এভাবেই ঘরের জিনিসপত্রের উপর পরে সবসময়। বাইরে থেকে শাশুড়ীমা দরজা ধাক্কাচ্ছে আর ডাকছে। কিছুক্ষন পর সাফওয়ানের উদ্বিগ্ন স্বর শুনতে পেলাম। কিন্তু আমি নিজের মাঝে নেই যেনো।কতক্ষণ পর সাফওয়ান লক ভেঙে ঘরে ঢুকে আমাকে পেছন থেকে তার সর্বশক্তি দিয়ে পেঁচিয়ে ধরলো।কিছুক্ষণ ছুটানোর চেষ্টা করে একসময় শান্ত হয়ে সাফওয়ানের বুকেই নেতিয়ে পরলাম।শাশুড়ীমা ছেলেকে বললেন ওকে অন্য রুমে নিয়ে যাও।রুমটা পরিষ্কার করতে হবে।

বিকেলে ঘুম ভাঙার পর দেখলাম সাফওয়ান সোফায় বসে টি-টেবিলে পাগুলো রেখে একের পর এক সিগারেটে সুখটান দিচ্ছে আর আমার দিকে চোখগুলো লাল করে তাকিয়ে আছে,মনে হচ্ছে উনি খুবই রাগান্বিত।সিগারেটের ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে বাতায়ন দিয়ে পলায়ন করছে।হয়তো ওরাও সাফওয়ানের রাগকে ভয় পায়।সে ধীর পায়ে এসে আমার পাশে বসলো।

আমার রাগটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।তার চোখে চোখ রেখে বললাম”আপনি এখানে কেনো?যান আপনার পার্সোনাল সেক্রেটারীর কাছে যান।ওহ্ হো আপনাদের রাসলীলায় আমি বেঘাত ঘটিয়েছি তাই না?ঠিক আছে আমি চলে যাবো এখান থেকে।তারপর যত ইচ্ছা..”

আর বলতে পারলাম না সাফওয়ান একটা চড় মারলো আমাকে।আমি কপোলে হাত দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলাম।গাল থেকে হাতটা জোর করে ছাড়িয়ে আঘাতের জায়গায় তিনি ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছেন।

ধীর কণ্ঠে বললেন “যেকোনো বিষয় পুরোটা জানতে হয় মিসেস, তারপর রিয়েক্ট করতে হয়।তুমিতো অর্ধকথা শুনেই সব ভাঙচুর করলে।বিয়ের আগে তার সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক ছিল এটা সত্যি, কিন্তু আজ তার সাথে আমার কিছুই হয়নি।সে তার শরীর দেখিয়ে আমায় জোর করতে চেয়েছিল।তার ধারণা,নাহয় সে চাকরি হারাবে।”

“আপনি মেয়েদের এভাবে চাকরি দিতেন?”ঘৃণিত চোখে বললো সৃজা।

সাফওয়ান কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।বললো “এরকম কিছু না,চাকরি দেয়ার বিভিন্ন প্রসেস আছে,শুধু আমার পার্সোনাল সেক্রেটারী আমি চুজ করি।”

চলবে…..

৩য় পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/Anyaprokash/permalink/1225923967922628/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here