#ধূসর_রঙে_আকাশ
#পর্ব_৪১
লিখা: Sidratul Muntaz
রক্তাক্ত মুখে, এলোমেলো চুলে, ছিন্নবিচ্ছিন্ন শাড়িতে স্তব্ধ হয়ে আমীরের লঙ্গরখানার দরজার সামনে তোহা দাঁড়িয়ে আছে। শরীরে কোনো হেলদোল নেই তার। মনে হচ্ছে মস্তিষ্কটা ফাঁপা হয়ে তাতে কোনো বিষাক্ত গ্যাস ঢুকে গেছে। তাই সবকিছু বিষের মতো লাগছে। প্রত্যেকটা অনুভূতি তীক্ষ্ণ থেকে তীক্ষ্ণতর বিষ। অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক! আমীরের নিস্তব্ধ শরীর ফ্লোরে লেপ্টানো। রক্তগুলো পারদের মতো জমাট বেধে আছে। কত ভয়ংকর! কত নির্মম! সবচেয়ে হৃদয়বিদারক হলো আমীরের গায়ের পোশাকটি। তোহার কিনে রাখা পাঞ্জাবীটাই গায়ে জড়িয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত সে। পীচ কালারে আসলেই আমীরকে মানায়। খুব মারাত্মকভাবে মানায়! এক মুহুর্তের জন্য দৃষ্টি ফেরানো যায় না। তোহা কতক্ষণ পর নড়েচড়ে দাড়ালো। টিপটিপ করে হেঁটে আমীরের কাছে যাচ্ছে। সে টলছে। শিউলির মনে হলো তোহা এখনি উল্টে পড়বে। তাই দৌড়ে ওকে ধরতে যায়। তোহা হাত দিয়ে আগেই বাধ সাধলো। শিউলি থেমে গেল। তোহা ধপ করে আমীরের মাথার কাছে বসে পড়ে। আমীর উল্টো হয়ে শুয়ে আছে। ডানহাতের কাছে ওর ভাঙা চশমা, বামহাতের কাছে ধারালো ব্লেড পড়ে আছে। এই ব্লেডটি সবসময় ওর গলায় ঝুলন্ত থাকতো, আজ সেই গলার রক্তেই স্নান করে বেরিয়েছে। ব্লেডের সুতোটা ছেঁড়া, রক্তে লাল! আমীরের ফরসা, লম্বাটে হাতভরা শুধু টকটকে গাঢ় রক্তের দাগ! গলা থেকে শুরু করে মুখের পুরো একপাশ অভিশপ্ত লাল রঙে আবৃত। আমীরের কপালে পড়ে থাকা কালো চুলগুলো ফ্যানের বাতাসে মৃদু উড়ছে। মনে হচ্ছে এখনো তারা জীবন্ত, সজীব। তোহা নির্বাকদৃষ্টে চেয়ে থাকে। ওর কলিজাটা দুমড়ে মুচড়ে থেতলে যেতে চায়। প্রতিটি শিরায় টনটনে ব্যথা! পাঞ্জাবী পরিহিত আমীরকে দেখার স্বাদ এতো নির্দয়ভাবে পূরণ হবে জানলে তোহা জীবনে কখনো ওকে পাঞ্জাবী পড়াতে চাইতো না। ভুল করেও এই দুঃসাহস করতো না। এই পাঞ্জাবী বাসায় আনার আগেই টুকরো টুকরো করে আগুনে পুড়িয়ে দিতো! তোহার হঠাৎ মনে হয়, ওর মস্তকটা তো ছিঁড়ে যাচ্ছে। মাথায় অসীম ভার! তোহা মাথা চেপে ধরলো। একটু ঝুঁকে চাতকপাখির মতো আমীরের মুখের দিকে তাকায়। কত নিষ্পাপ মুখটা! মনে হচ্ছে আমীর ঘুমন্ত নগরীর রাজকুমার। নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে। একটু শব্দ করলেই ভ্রুজোড়া কুচকে জেগে উঠতে পারে। চোখে একটা ডলা দিয়ে মুচকি হেসে বলতে পারে,” তোহা, আমার কোমলমতী আহ্লাদী। ভালোবাসি।”
তোহার ফাঁকা হৃদয়টা হাহাকার করে উঠলো। তীব্র চাপে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আমীরের মুখমন্ডল রক্তমাখা। তোহার কয়েক মুহুর্তের জন্য মনে হয় রক্ত না, এগুলো লাল রঙ। আমীর নিশ্চয়ই দুষ্টমী করে মেখেছে অথবা কেউ মাখিয়ে দিয়েছে। তোহা মনের সব আড়ষ্টতা ঠেলে আমীরের কপালে চুমু দিল। পরম আদরে ওর জীবন্ত চুলগুলোয় বিলি কাটতে লাগলো। শিউলি মুখে ওরনা চেপে দাঁড়ানো। একটু আগেও সে হাউমাউ করে কাঁদছিল। তার চোখ ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। কিন্তু এখন তোহার এসব কান্ড দেখে তার আর কান্না আসছে না। সে নিজেও থমকে গেছে। থমকে গিয়ে দেখছে এক অপূর্ণ ভালোবাসার করুণ পরিণতি। আমীর ভাইজান এটা কি করলেন? নিজে মরে গিয়ে বেঁচে গেলেন অথচ তোহা আপুকে এক ভয়ংকর কঠিন জীবন উপহার দিয়ে গেলেন! তোহা তো বাঁচবে না। প্রতি মুহুর্তে তাকে মরতে হবে। ধুঁকে ধুঁকে বিতৃষ্ণাময় এই তিক্ত জীবন পার করতে হবে। এতোবড় শাস্তি আমীর ভাইজান কেন দিলেন তোহা আপুকে? তার কি এমন অপরাধ ছিল?
তোহা হঠাৎ মুচকি হাসলো। শিউলির ভ্রু সংকুচিত হয়। ভালো করে তোহার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো সে কি সত্যিই হাসছে? হ্যা হাসছে, দাঁত বের করে হাসছে। অদ্ভুত! তোহা আমীরের চুলে সানন্দে বিলি কাটতে কাটতে হাসিমুখে বললো,
” শিউলি দ্যাখ, তোর ভাইজানকে পাঞ্জাবীতে কত্ত ভালো লাগছে না? আমি যেমনভাবে ওকে কল্পনা করেছিলাম, ঠিক তেমনি লাগছে বিশ্বাস কর! ঘুমন্ত রাজপুত্রের মতো লাগছে। তাকে পাঞ্জাবীতে খুব মানায় নারে? মনে হচ্ছে এই পাঞ্জাবীটা শুধু ওর জন্যই তৈরী হয়েছে। গায়ের রঙের সাথে কাপড়ের রঙটাও কত সুন্দর মানিয়েছে! পীচ কালারে ওকে দারুণ লাগে। এখন থেকে সবকিছু পীচ কালার পড়াবো ওকে। পিচ কালারের ঘড়ি, পিচ কালার শার্ট, প্যান্ট, এমনকি জুতোও। আচ্ছা পীচ কালারের জুতো কি পাওয়া যায়?”
তোহা হাসতে হাসতে হঠাৎ হিঁচকি তুলে কাঁদতে শুরু করলো। একদম বাচ্চাদের মতো কাঁদছে। শিউলির কলিজা ফেটে যায়।ডুঁকরে কেঁদে উঠতে ইচ্ছা করে। তোহাকে জড়িয়ে ধরে বলতে ইচ্ছা করে,” আপু, আপু গো! ভাইজান আর নাই!”
শিউলি বলতে পারে না। পিছিয়ে যায়৷ রুদ্ধশ্বাস ছাড়ে। এবার আর আমীরের জন্য না, তোহার জন্য কান্না পাচ্ছে তার। কাঁদতে কাঁদতে দুটো লাশকে দেখছে সে৷ একটা লাশ মৃত। আরেকটা জ্বলজ্যান্ত লাশ! তোহা ভ্রু কুচকে আবদারের মতো বললো,
” শিউলি, এই শিউলি, শোন।”
শিউলি ভেজা কণ্ঠে বললো,” জ্বী আপু?”
” তোর ভাইজানকে একটু সোজা করে দিবি? আমি ভালো করে ওকে দেখবো! এভাবে না ঠিক করে দেখতে পাচ্ছি না।”
কি আকুতিমিশ্রিত কণ্ঠ! নিঃসংকোচ আবদার। অবুঝের মতো আবদার! মনে হচ্ছে আমীর বেঁচে আছে। তোহা স্বাভাবিকভাবেই ওকে দেখতে চাইছে। যেমন আগে দেখতো। কিন্তু এ অবস্থায় আমীরের বিভৎস রূপ সে সহ্য করতে পারবে তো? কি দরকার? মনের মধ্যে স্বামীরূপী যে সুন্দর, মোহনীয় ছবিটি আছে সেটাই থাকুক না! ক্ষতি কি?এই ভয়ংকর রূপ দেখে আঁৎকে উঠার কোনো মানে হয়না। তোহা একনাগাড়ে বলতে লাগলো,
” শিউলি, এই শিউলি। তোর ভাইজানকে সোজা করে দে না! একবার দেখি ওকে, শুধু একবার! একটু!”
শিউলি মুখে আঁচল চেপে কাঁদছে। তোহার প্রতি চরম আনুগত্য থাকার কারণে সে তোহার কথা ফেলতে পারলো না। শপথ করেছিল তোহা যা বলবে তাই করবে। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে দিবে! জীবন তো তাকে দিতে হচ্ছে না। তার পরিবর্তে এই কাজটি তো খুব সামান্য। শিউলি মনের সমস্ত ভয়, আতঙ্ক তুচ্ছ করে শক্ত হাতে আমীরের শরীর টেনে সোজা করলো। কাজটা করতে ওর দুইমিনিটের মতো লেগেছে। কিন্তু তোহা দুই সেকেন্ডও অপেক্ষা করেনি। তৃষ্ণার্ত হরিণীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে আমীরের বুকে! শিউলি শিউরে উঠে৷ দূরে সরে যায়। তোহা চাতকপাখির মতো কান পেতে কি যেন শুনছে। রক্তের উৎকট গন্ধে শিউলির নাড়িভুঁড়ি উল্টে বমি আসার উপক্রম। সে দৌড়ে বের হয়ে যায় রুম থেকে। এলোপাতাড়ি বমি শুরু করে। কিন্তু তোহা? এখনো আমীরের বুকে লেপ্টে আছে। আকুল হয়ে খুঁজছে, আমীরের বুকের প্রাকৃতিক বাদ্যযন্ত্র। আগে তো এই বুকে মাথা রাখলেই সুরেলা সঙ্গীত শুনতে পেতো। এখন এই জায়গায় বিষাক্ত নিস্তব্ধতা কেনো? কেনো তোহা শুনতে পাচ্ছে না আমীরের বুকের ঢিপঢিপ শব্দ? এবার সে বাঁচবে কেমন করে? তার পৃথিবীটা হঠাৎ করেই অন্যরকম হয়ে গেল। নিদারুণ, করুণ, যন্ত্রণাপ্রদ, অসহনীয় নির্দয়তায় বিদ্বিষ্ট! সবকিছু এতো নীরব কেনো? তোহার মনে হচ্ছে তার জগৎটা এখানেই থমকে গেছে। ভয়ংকর স্তব্ধতা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ঢিপঢিপ শব্দ ছাড়া তোহা বাঁচবে কিভাবে? কিভাবে? তোহা উন্মাদের মতো মেঝেতে দুই-তিন ঘুষি মেরে আচমকা চিৎকার শুরু করলো। খুব ভয়ানক চিৎকার!
একমাস গত হয়েছে। তোহা সারাক্ষণ তার রুমে বন্দী হয়ে থাকে। কখনো ঘর থেকে বের হয়না। গত পনেরো দিনে একবারো সূর্যের আলো দেখেছে কিনা সন্দেহ। তার ভুবন বলতে শুধু একটা রুম, আমীরের চিঠি, ভাঙা চশমা, আর ওর ব্যবহৃত কিছু জিনিস।এসব নিয়েই তোহা দিন পার করে। দিনে কমপক্ষে বিশ-থেকে পচিশবার ওই চিঠি পড়ে। আর আপনা-আপনি হাসে। যেন আমীরের সাথে কথা বলছে। রাতে ঘুমানোর সময় তোহা একপাশে আমীরের জন্য জায়গা রাখে। আমীরের বালিশের উপর ভাঙা চশমা রেখে দেয়। কল্পনা করে আমীর তার পাশেই শুয়ে আছে। বিছানার ওইটুকু জায়গায় তোহা কাউকে আসতে দেয়না। কেউ ভুল করে ওইখানে বসে পড়লে তোহা কুরুক্ষেত্রম বাধিয়ে দেয়। বাসার সবাই এখন ওকে ভয় পায়। ওর খিটখিটে মেজাজের জন্যই ভয় পায়। মোমের মতো নরম স্বভাবের মেয়েটা এখন জ্বলন্ত অগ্নিশিখার মতো ফুসে উঠে। তার সামনে কেউ যতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে,ততক্ষণ সেই মানুষটির হৃৎপিন্ড কাঁপে। শিউলি তো তোহার কাছেও আসে না। পূরবী দিনে একবার তোহার ঘরে উঁকি দেয়। সেটুকু সময়ও ওর হার্টবিট ফাস্ট থাকে। তোহাকে লাঞ্চ বা ডিনারের জন্য ডাকতে আসাও অনেকটা এভারেস্ট জয় করার মতো সাহসের ব্যাপার। তোহা তার বাবা-মায়ের সাথেই থাকে। পাশের বিল্ডিং এর যে ফ্ল্যাটে আগে আমীর-তোহার সংসার ছিল সেটি এখন তালাবদ্ধ থাকে। ওই ফ্ল্যাট আর ভাড়া হয়নি। সেই বিল্ডিংএর মানুষেরাও কিছুদিন পর পর বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। নতুন ভাড়াটে আসে, তারাও চলে যায়। সবার ধারণা ওই বাড়ি অভিশপ্ত। এতো ভয়ানক আত্মহত্যার ইতিহাস যে বাড়িতে আছে সেখানে মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেনা। সবাই নিশ্চিত ওই বাড়িতে ভূত আছে। যে ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে, তার আত্মা ও বাড়ির ছাদে ঘুরে বেড়ায়। মানুষ নাকি দেখেছেও, কেউ কেউ হাসির আওয়াজও শুনেছে। সম্প্রতি এক মধ্যবয়স্কা মহিলার বক্তব্য, তিনি নাকি আমীরকে স্বচক্ষে ছাদ থেকে লাফ দিতে দেখেছেন। প্রতিরাতেই নাকি আমীরের আত্মা ছাদে উঠে লাফ দেয়। আর বিকট শব্দে হাসে। আত্মহত্যাকারী মেয়ে হলে সবাই কান্নার আওয়াজ পেতো। কিন্তু আত্মহত্যাকারী যেহেতু ছেলে, তাই সবাই হাসির আওয়াজ পায়। বেশিরভাগ ছেলেরা অতি দুঃখে কাঁদে না, হাসে। মেয়েরা ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদে। ওদের দুঃখের পাল্লা যত ভারী, কান্নার আওয়াজও তত ভারী।কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে উল্টা। ওদের দুঃখ যতবেশি, হাসির শব্দ ততই গম্ভীর, ভয়ংকর, বিদঘুটে। তোহার কাছে এসব নিতান্তই আজাইরা প্রলাপ। এসব কথা কখনো সে পাত্তা দেয়না। আমীর ভূত হয়েছে ব্যাপারটা হাস্যকর। মরে গেলে কেউ ভূত হয়না।আল্লাহর কাছে চলে যায়। কিছু মানুষের বদ্ধ ধারণা, যারা আত্মহত্যা করে মারা যায় তারা দুনিয়াতেই অশরীরী রূপে ঘুরে বেড়ায়। তোহার কাছে এই বিষয়টাও হাস্যকর লাগে। আমীর যদি সত্যিই দুনিয়াতে অশরীরী হয়ে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পেতো, দুনিয়ার একটা মানুষও বাঁচতে পারতো নাকি? তাছাড়া তোহার বিশ্বাস, আমীরের আত্মা যদি সত্যিই থাকতো তাহলে সবার আগে তার কাছেই আসতো। তাছাড়া আমীরের কি খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই যে মানুষকে হেসে হেসে ভয় দেখাবে? তোহার আমীর কি এতোই সস্তা? সে যদি আসলেই ভূত হতো, তাহলে ভূতসমাজের মান রাখতো। ওর ভয়ে শুধু বিল্ডিং কেন? সারা শহর কাঁপতো। পুরো পৃথিবী তছনছ করে দিতো সে। মাঝরাতে মানুষকে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে কাধে তুলে ছাদে নিয়ে যেতো। তারপর আছাড় মেরে ছাদ থেকে ফেলে দিতো। অথবা আরও ভয়ানক কান্ড করতো। ঘুমের মধ্যে চুপিচুপি এসে মানুষের শিরা কেটে দিয়ে চলে যেতো।ঘুমন্ত ব্যক্তি টেরও পেতো না। এই যেমন, ধরা যাক একঘরে দুজন মানুষ ঘুমিয়ে আছে। আমীর এসে একজনের গলায় ব্লেড বসিয়ে চলে গেল। সকালে ঘুম থেকে উঠে দ্বিতীয় ব্যক্তি দেখবে তার পাশের মানুষটি মৃত। অথবা দুজনই মৃত। আশেপাশের মানুষ এসে দেখবে একরাতের মধ্যে একবাড়ির সমস্ত জীবিত মানুষ লাশ হয়ে গেছে! কি ভয়ানক ব্যপার! আমীর ভূত হলে এমন ভয়ানক ধাচের ভূতই হবে। রোজ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার মতো অথবা অকারণে হাসার মতো বোকা ভূত হবে না। অবশ্য এখন পর্যন্ত আমীরের ভূত সম্পর্কিত আলোচনা কেউ তোহার সামনে করতে আসেনি। সবাই তোহাকে ভয় পায়। তোহা শুধু উড়োকথা শুনেছে। সে অপেক্ষায় আছে কেউ তার সামনে এসে একবার খালি বলুক যে আমীরকে ছাদে হাসতে দেখেছে অথবা লাফ দিতে দেখেছে। তোহা নিজেই ভূত হয়ে ঘাড় মটকে দিবে সেই মানুষটির। জ্যান্ত ভূতের পাগলামি কি জিনিস ভালোমতো বুঝিয়ে দিবে। মৃত ভূতের চেয়েও জীবিত ভূত বেশি ভয়ংকর এই সত্য তারা অনুধাবন করবে। পূরবী তোহার দরজায় টোকা দিল। তোহা ঘাড় ঘুরিয়ে মেশিনের মতো বললো,” কে?”
পূরবীর আত্মা দূর্বার গতিতে কাঁপতে থাকে। ইচ্ছে করে উল্টো পথে দৌড়ে পালাতে। কিন্তু পালানো যাবে না। তোহাকে একটা জরুরী খবর দিতে হবে।
চলবে
( আমি হঠাৎ করেই ব্যস্ত হয়ে গেছি। দুইরাত ঘুম হয়না। খুব কষ্টে এটুকু লিখার সুযোগ পেয়েছি।)