#এক_সমুদ্র_ফুল
#পর্ব_7(#অতীত_স্পেশাল_1)🌸
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida
।
।
অতীত
দাদুম। ও দাদুম।(আমি হাঁটতে হাঁটতে)
কি হয়েছে দাদুম দাদুম বলে চেঁচাছিস কেনো?(আমান শিকদার — সমুদ্রের দাদু)
আর কত হাঁটুম।আমার পা যে ব্যাথা করছে!(আমি পায়ে হাত দিয়ে)
এতো যখন কাহিল লাগে তাহলে আমার সাথে ক্ষেত পাড় হাঁটতে এসেছিস কেনো?(আমান)
আমি কি জানতুম তুমি এই কড়া রোদে ক্ষেত পাড় আসবে?(আমি)
দেখ ফুল।এখন আর নাক শিসকিয়ে লাভ নেই।এসেই যখন পড়েছিস।তাহলে চল আজ পুরো ক্ষেত পাড় হাঁটতে হবে।ধান কতো দূর পাকছে দেখতে হবে তো?আর তুই না বলিস তুই এই গ্রামের মাতব্বর।গ্রামের মাতব্বর হয়ে যদি এইসব বিষয় খেয়াল না রাখিস হবে?চল চল।
বলেই দাদুম আমার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলো।
আমিও মুখ ফুলিয়ে হাঁটতে লাগলাম।
একটা সাত বছরের বাচ্চা শিশুকে দিয়ে এতো কষ্ট করাছো!(আমি)
তুই কবে বাচ্চা ছিলি?তুই তো বুড়ি!আমাদের বাচ্চা বুড়ি।
বলেই দাদুম আমার নাক টেনে ধরে।
আমান শিকদার।আমার দাদু আসলে উনি আমার সত্যিকারের দাদু না।আমি তো এইটাও জানি না।আমি কে? কোথা থেকে এসেছি?কি করেই বা দাদুমের কাছে এসেছি?আমি কিছুই জানি না। যবে থেকে বুঝ হয়েছে দাদুমের কাছেই আছি।উনিই এক মাত্র আমার পরিবার।যখন খুব ছোটো ছিলাম তখন একবার দাদুকে জিজ্ঞেস করি আমি কে?আমার বাবা মা কে?তখন উনি বলেন আমি ফুল।শুধু ফুল।এমন একটা ফুল যেটা সব জায়গাতেই ফুটে নিজের সুভাষ চার পাশে ছড়িয়ে দেয়।পড়ে কাকা আর কাকী মার কাছ থেকে জানতে পারি দাদুম আমাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পেয়েছে তখন আমার বয়স পাঁচ কি দশ দিন হবে!তখন থেকেই দাদুম আমাকে নিজে মানুষ করেছে।কাকা কাকী দাদুর বাড়িতেই থাকে।কাকী দাদুমের খাবার দাবারের খেয়াল রাখে।আর কাকা বাগানে কাজ করে আর মাঝে মধ্যে বাজার করে এনে দেয়।আমি আসার পর উনারা আমাকেও আপন করে নিয়েছে।আমারও খেয়াল রাখে নিজের মেয়ের মতো। উনাদেরও সন্তান নেই।
তবে যেদিন জানতে পারি আমাকে কুড়িয়ে আনা হয়েছে।সেদিন অনেক কেঁদেছি।তখন আমার বয়স পাঁচ বছর ছিলো।সারারাত দাদুম আমাকে কোলে করে নিজের বুকের উপর রেখেছিলো।সেদিন আমার কান্না দেখে দাদুও কান্না করে দিয়েছিল।পড়ে দাদুম,,কাকা কাকী মা সবার আদরে ভুলে যাই যে আমি কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে।কেটে যায় বছর আমি দাদুর কাছেই বড়ো হতে থাকি। দাদুম গ্রামে থাকে।উনার একটাই ছেলে।উনি শহরে থাকে। শুনেছি অনেক বড় ব্যবসা করে। দাদুকেও বলেছে তাদের সাথে শহরে গিয়ে থাকতে।কিন্তু দাদু এই গ্রামের মাটি ছেড়ে কিছুতেই যাবে না।মাঝে মধ্যে উনারা আসেন গ্রামের বাড়িতে।শুনেছি উনার নাকি তিন ছেলে মেয়ে।দুই ছেলে এক মেয়ে।বড়ো ছেলে সাগর ভাইয়া আর মেয়ে সোনালী আপু।খুব মিশুক যখনই গ্রামে আসে আমার সাথে অনেক খেলা করে।আর আরমান আঙ্কেল আর আয়শা আন্টিও অনেক ভালো মানুষ।আমাকে অনেক আদর করে।যখনই আসবে আমার জন্য খেলনা,,পুতুল,,নতুন জামা কাপড় নিয়ে আসবে।আর সাগর ভাইয়া আমার জন্য চকোলেট।সোনালী আপু আমার জন্য ক্লিপ,,তুলি কাকড়া নিয়ে আসত।উনাদের সবার সাথে দেখা হলেও উনাদের ছোটো ছেলের সাথে আমার কখনও দেখা হয় নি।উনি অনেক কম গ্রামে আসত।যদি আসতোও তো রাতে আসতো আর ভোরে চলে যেত।আর যখন আমি আর দাদুম বেড়ানোর জন্য উনাদের শহরের বাড়ীতে যেতাম তখনও আমি উনাকে দেখি নি।
কোনো দিন উনাকে দেখা তো দূর উনার নামও শুনি নি।আর আমি কাউকে জিজ্ঞেসও করি নি তার নাম কি?উনি কেমন যেনো একঘোরে।আমার আবার এমন পছন্দ না।আমি সবার সাথে আনন্দ করতে ভালোবাসি।যখনই আরমান আঙ্কেলরা আসতো আমার যেনো ঈদ লেগে যেত।আর যখন চলে যেত তখন খুব মন খারাপ হতো।যদিও আরমান আংকেল বলেছে আমাকে উনাদের সাথে কিন্তু আমি কখনো দাদুমকে ছাড়া থাকতে পারি না।আর দাদুমকে ছাড়া আমার জীবন অসম্ভব।আমি উনাকে অনেক ভালোবাসি।উনাকে ছাড়া আমি এখন পর্যন্ত কোথাও যায়নি।কারণ দাদুমই আমার পরিবার।আমার সাত বছর চলছে এই সাত বছর আমি ছায়ার মতো উনার কাছে ছিলাম আছি আর থাকবো।
কি হলো ফুলোনদেবি!তোর মাতব্বরি শেষ?(আমান)
মাফ করে দাও দাদুম আর কোনো দিন স্কুল কামাই করমু না।(আমি কাদতে কাদতে)
আসলে আজ স্কুল কামাই করতে চেয়েছিলাম।আমার স্কুলে যাওয়া একদম পছন্দ না।এক জায়গায় বসে বসে আমি বিরক্ত হয়ে যাই।তাই যখন দাদুম বললো স্কুল কামাই করলে তার সাথে যেতে হবে তখন আমি কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যাই।তখন আমার মাথায় ছিলো যেখানে খুশি সেখানেই যাবো।কিন্তু স্কুলে যাবো না কিন্তু কে জানতো।দাদু এই কড়া রোদে ক্ষেত পাড় হাঁটতে নিয়ে আসবে।উনি ইচ্ছে করে করেছে যাতে আমি শিক্ষা পাই।
এখন বল এই রোদে পোড়া ভালো না স্কুলের রুমে ফ্যানের নিচে বসে বসে পড়া ভালো?(আমান)
ফ্যানের নিচে বসে বসে পড়া।(আমি কাদতে কাদতে নাক টানতে শুরু করলাম)
দাদুম তার পাঞ্জাবির হাতা দিয়ে আমার চোখ মুখ নাক মুছে দিয়ে আমাকে কোলে তুলে নিলো।
আমি কোলে উঠে ফুফিয়ে কাদছি।
দেখ ফুল।এই মাইলের উপর মাইল ক্ষেত করতে একজন মানুষের কতো কষ্ট হয়েছে।কিন্তু সে করেছে।কারণ সে জানে যে আজ সে যদি কষ্ট করে কাল তার পরিবার দুবেলা খেতে পারবে।লেখা পড়া ঠিক এমনি।আজ একটু কষ্ট হবে।বিরক্ত লাগবে।কিন্তু আজ করলে কালকে তুই সুখে থাকতে পারবি।(আমান)
তাহলে আজ যদি পড়ি তাহলে আমি কালকে সারাদিন খেলতে পারবো?(আমি দাদুমের কোলে বসে)
হায়রে।হয়তো তোর এতো বড় বড় কথা বুঝার বয়স হয়নি।যেদিন হবে সেদিন ঠিক বুঝবি!তবে একটা জিনিস সব সময় মাথায় রাখবি।শিক্ষা সব জায়গা থেকে নেয়া যায়।নিজের শিক্ষা নেয়ার পদ্ধতি শুধু বই পুস্তকে রাখবি না।আর সব থেকে বেশি জীবন থেকে শিক্ষা নিবি।(আমান)
হুহ!জীবন থেকে কি করে শিক্ষা নেয়।আমার তো বইয়ের এক অধ্যায় পড়তে পড়তে দিন পার হয়ে যায়।(আমি মুখে আঙ্গুল দিয়ে)
দাদুম এক গাল হেসে বললো
যেমন বইয়ের অধ্যায়ে দিন পার হয়।তেমনি জীবনের অধ্যায়ে জীবন পাড় হয়।
হ্যা?(আমি কিছু না বুঝে)
কিছুনা চল।তোকে আজ অনেক টুকু হাটিয়েছি এখন তোকে মালাই আইস ক্রিম খাওয়ানো যাক।খাবি তো?(আমান)
মালাই। আমি দুইটা খাবো।(আমি)
তাই নাকি তো ভাবছি তোকে চারটা কিনে দিবো।থাক তুই যখন দুটো খাবি তাহলে আর কি করার?(আমান ঠোঁট উল্টে)
না না আমি চারটাই খাবো।তখন পেটে জায়গা ছিল না বলে দুটো বলছি।এখন জায়গা হয়েছে তাই চারটা খাবো।(আমি)
তাই নাকি?তাহলে গিয়েই দাত ব্রাশ করবি।(আমান)
আইচ্ছা।
বলেই হিহি করে হেসে দিলাম।
।
।
পরে দাদুম আমাকে চারটা মালাই আইস ক্রিম কিনে দিলো।একটা খেলাম আরেকটা দাদুমের দিকে বাড়িয়ে দিলাম
দাদুম।(আমি আইস ক্রিম দিয়ে)
আমি খাবো?(আমান অবাক হয়ে)
হুম।(আমি)
কেনো?তুই খাবি না?(আমান)
তুমিই তো বলো ভাগ করে খেলে ভালোবাসা বাড়ে।(আমি)
বাহ!আমার ফুল তো খুব ভালো।
বলেই আমার কাছ থেকে আইস ক্রিমটা নিলো।নিয়ে খেতে শুরু করলো।পড়ে আমি আর দাদুম বাসায় ফিরে আসতে লাগলাম।
ফুল।বাকি দুটো আইস ক্রিম খেয়ে নে না হলে গলে যাবে।(আমান)
এই দুটো আইস ক্রিম।কাকা কাকী মার জন্য।(আমি হাসি দিয়ে)
দাদুম আমার দিকে হাসি দিয়ে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
।
।
আমি দৌড়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে
কাকা কাকী মা দেখো তোমাদের জন্য আমি আইস ক্রিম আনছি।(আমি)
আরে আমগো মায় দেহি আমগো লেইগা আইস ক্রিরিম আনছে।(কাকা)
হিহি।(আমি এক গাল হেসে)
আহো। তমগো খাওন তৈরি কইরা রাখছি।খাইয়া দাইয়া ঘুমাও।(কাকী মা)
দাদুম।আমি দুপুরে ঘুমাবো না।(আমি মুখ ফুলিয়ে)
তো কি এই কড়া রোদে খেলবি নাকি!খালি না ঘুমিয়ে খেল,, তোর পা ভেঙ্গে দিবো।(আমান কিছুটা রেগে)
আমি মুখ ফুলিয়ে বসে রইলাম।
পরেই কাকিমা আমাকে গোসল করিয়ে দিলো।আর দাদুম আমাকে আদর করে খাইয়ে দিল।খাওয়া দাওয়া শেষ করে। দাদুম আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো আর আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
আমান ফুলের কপালে চুমু দিয়ে
তুই তো আমার এই বুড়ো কালের লাঠি।তোকে আল্লাহ এই বুড়োটার কাছে দিয়েছে যাতে তোর সাথে থেকে জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো উপভোগ করি।মাঝে মাঝে ভাবি আমি চলে গেলে তোর কি হবে?তুই কি করবি?আমার জীবনের সব আনন্দ তো তুইই ফুল।আমি জানি তুই যেখানে যাবি সেখানে সবাইকে খুশিই রাখবি।কিন্তু তোর খুশি কি হবে?উপরলার কাছে এই দোয়া যে তোর খুশির খেয়াল রাখার জন্য কাউকে উনি পাঠায়।যে আমি না থাকলেও তোর খুশির খেয়াল রাখবে।
।
।
অন্যদিকে
শহরের বাড়ীতে
মা।আমি এক বার না করেছি বার বার কেনো কানের কাছে এক কথা বারবার রিপিট করো?(সমুদ্র চিৎকার চেঁচামেচি করে)
আমি আর কি করেছি সমুদ্র?আমি তো শুধু এইটাই জানতে এসেছি তুই কি খাবি?(আয়শা)
মা।আজ সোমবার তুমি জানো আমি কি সোমবারে কি খাই?(সমুদ্র)
রুটিন মাফিক চলা ভালো কিন্তু অতিরিক্ত রুটিন মাফিক চলা ভালো না সমুদ্র।(সাগর)
জাস্ট shut up। তোর কাছ থেকে আমায় কিছু শিখতে হবে না।যে নিজের দায়িত্ব থেকে দূরে চলে যায় তার মুখে আমি আমার ব্যাপারে কোনো কথাই শুনতে চাই না।(সমুদ্র রুডলি)
সমুদ্র,,,
বলেই সাগর রাগে সমুদ্রকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরমান ওকে আটকে বললো
যে যার যার কাছে যাও। ও বলেই দিয়েছে কি খাবে তাহলে আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।(আরমান)
পরেই সবাই বেরিয়ে গেলো।
বাবা নেক্সট টাইম আমার রুমে আসলে নক করে আসবে।(সমুদ্র লেপটপে কাজ করতে করতে)
আরমান কিছু না বলে দরজা হালকা করে লাগিয়ে দিলো।
বাহিরে বেরিয়ে
বাবা ভাই এমন কেনো?(সোনালী মুখ ফুলিয়ে)
সব দোষ তো তোর বাবারই।(আয়শা কাদতে কাদতে)
আরমান চুপ করে আছে।
না মা বাবার কোনো দোষ নেই।সব দোষ আমার।আমিই নিজের স্বপ্নকে আকড়ে ধরেছি বলে সমুদ্রের উপর এতো প্রেশার।(সাগর)
তোমরা নিচে যাও।আমি রুমে একটু বিশ্রাম নিবো।(আরমান)
পরে সবাই কিছু না বলেই নিজের কাজে চলে গেলো।আরমান বেলকনিতে এসে দাড়িয়ে ভাবতে লাগলো নিজের হাতে নিজের ছেলেকে কি বানিয়ে ফেলেছে!
আরমান একটা বড়ো বিজনেস এম্পায়ারের মালিক।তাই ও সব সময় চাইতো ওর অবর্তমানে ওর ছেলেরা এর দেখা শুনা করবে।কিন্তু সাগরের ব্যবসার প্রতি কোনো টান ছিলো না।ওর ছিলো দেশের প্রতি টান। ও ছোটো বেলা থেকেই আর্মি অফিসার হতে চেয়ে ছিলো।এইজন্য ও ব্যবসা থেকে দূরে সরে গেল।কিন্তু এর ফলে সমুদ্রের উপর বেশি চাপ পড়ে গেলো।আরমান সমুদ্রকে জোর করে ছোটো বেলা থেকেই ব্যবসার কাজে লাগাতে শুরু করলো।ব্যবসার বিভিন্ন জিনিস শেখাতে শুরু করলো।সমুদ্র সব সময় পড়া না হয় ব্যবসার খুঁটিনাটি নিয়ে ব্যাস্ত থাকতো।ওর কোনো বন্ধুও ছিলো না।ক্লাসের টপ বয় আর বিজনেস ম্যানের ছেলে থাকার কারণে ওর সাথে বেশির ভাগ ছেলেমেয়েরাই হিংসে করতো।আর যারা ওর কাছে আসতো তারা নিজের স্বার্থ রক্ষায়।এই জন্য সমুদ্র বন্ধু বানানো বন্ধ করে দেয়।নিজেকে একা রাখতে শুরু করে।বেশি চাপ পড়ার কারণে ও পরিবারের সাথে কম সময় কাটতে শুরু করলো।পরিবারের প্রতি মায়া কমে গেলো।মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেলো।সমুদ্র এখন তেরো বছরের ছেলে,, ক্লাস সেভেনে পড়ে আর পাশাপাশি ওর বাবার সাথে ব্যবসা শিখছে।তাই ব্যবসার ক্ষেত্রেও ওর যথেষ্ট সুনাম আছে।তবে একঘেমি ওকে আশেপাশের সবাইয়ের থেকে ওকে আলাদা করে ফেলেছে।
এইসব ভেবেই আরমান আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলো।
নিজের ছেলের জীবনকে নিজেই একটা বাক্স এর মধ্যে বন্ধি করে রেখেছি।কেমন বাবা আমি?ওকে জোর করা আমার ঠিক হয়নি।ওকে বোধ হয় বেশি চাপ দিয়ে ফেলেছি।এখন ওর এই একঘেমী থেকে কি করে বের করবো?কে বের করবে ওকে?কে আমার ছেলেটাকে আবার স্বাভাবিক করে তুলবে?(আরমান কাদতে কাদতে)
।
।
অন্যদিকে
গ্রামে
ফুল। ও ফুল উঠ।তোর টিচার আসছে।পরবি না?(আমান ফুলকে উঠানোর চেষ্টা করে)
দাদুম।আজকে না পড়ি!(আমি চোখ কচলাতে কচলাতে)
আবার ক্ষেত পাড় হাঁটতে নিয়ে যাবো?(আমান রেগে)
না না।উঠছি।
বলেই এক লাফ দিয়ে উঠলাম।উঠে হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসলাম।
স্যার।(আমি)
হুম।(স্যার)
আপনি কি একটু লেট আসতে পারেন না।আমার সুন্দর ঘুমটার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন।আর আপনাকে কেনো বিকেলে আসতে হবে?আপনি জানেন আমার সবাই খেলে বিকেলে।এক মাত্র আমিই খেলতে পারি না।আপনার জন্য।(আমি পেন্সিল মুখে দিয়ে)
ফুল আমি কিন্তু শুনছি!তুই স্যারকে কি বলছিস?(আমান পাশের রুম থেকে)
আরে দাদুম আমি পড়ছি তো।স্যার পড়ান না।(আমি মুখ ফুলিয়ে)
হ্যা হ্যা,,(স্যার কনফিউজ হয়ে)
।
।
কিছুক্ষণ পর
বুঝতে পেরেছো?(স্যার)
না।(আমি ফট করে)
আচ্ছা।তাহলে আমি আবার বুঝিয়ে দিচ্ছি।(স্যার)
স্যার,,(আমি)
হুম বলো।(স্যার)
স্যার এক ঘণ্টা হয়ে গেছে।ঐযে দেখুন ঘড়িতে এক ঘণ্টা পার হয়ে গেছে।এখন ছুটি দিয়ে দেন না স্যার।আমি খেলবো।(আমি মুখ ফুলিয়ে)
ফুল?(আমান অন্য রুম থেকে গর্জন করে)
তুমি এখনও ওই রুমে বসে আছো?(আমি অবাক হয়ে)
হ্যা আর সব বকবকানি শুনছি।এক ঘন্টা না?তুই পড়তে বসেছিস আধ ঘন্টাও হয়নি।(আমান)
আমি কি করবো?এই ঘড়িই তাহলে নষ্ট আমার দোষ নেই।(আমি)
ফুল!(আমান)
পড়ছি।পড়ছি।
বলেই মুখ ফুলিয়ে পড়তে বসলাম।আর বসে বসে বাহানা খুঁজতে লাগলাম।কি করে পড়া থেকে বাঁচা যায়।
বাহানা খুঁজে লাভ নেই।যতক্ষণ না তোর পড়া হচ্ছে ততক্ষণ আমি উঠছি না এই রুম থেকে।তাই মনোযোগ দিয়ে পড় বাহানা না খুঁজে।(আমান)
আমি মুখ ফুলিয়ে পড়া শুরু করলাম।
অন্যদিকে স্যার আমাদের দাদা নাতিনের কান্ড দেখে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।
।
।
চলবে,,,
আমি কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি রমজানের কারণে এক দিন পরপর আমি গল্প পোস্ট করবো।