গোধূলির বেলায় তুমি’পর্ব-১৫

0
684

#গল্প_গোধূলি_বেলায়_তুমি
#Writer_Ritu_Bonna
#পর্ব_১৫

অবন্তী হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। কোনটা করা ঠিক হবে কোনটা করা ভুল হবে তা সে ভাবতে পারছে না। তার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছে,,, সব দোষ তার। সবকিছু তার জন্যই হয়েছে। এইসব কিছু থেকে সেই সবাইকে মুক্তি দিতে পারে। যত সমস্যা তো শুধুই তার জন্য, তাই সেই যদি না থাকে তবে তো কোন সমস্যাই থাকলো না।

,,,,,,,,,,,,,,

বর্তমান,,,,,,

হঠাৎ গ্রাস ভাঙার শব্দে আদ্রিজা ভিতরে ঢুকে।আভিয়ান পানি খেতে চাচ্ছে কিন্তু তার ভিতরে সেই শক্তি নেই যে নিজে পানি নিয়ে খাবে। কাঁপা কাঁপা হাতে পানি নিতে গিয়ে তার হাত থেকে গ্রাস পরে ভেঙে গেছে। আদ্রিজা সাবধানে এদিকে এসে আভিয়ানকে পানি দেয়। আভিয়ান নিচের দিকে তাকিয়ে পানি খেয়ে নেয়। কিছুক্ষন আগের কাজের জন্য সে লজ্জিত।

রাতটা কোন রকম কেটে যায়। সকালে ফজরের আজানের শব্দে আদ্রিজার ঘুম ভেঙে যায়। সে উঠে ফ্রেস হয়ে নামাজ পড়ে নেয়। নামাজ পড়া শেষ হলে নিচে নেমে যায়। বাড়িটা ভালো করে দেখতে থাকে। রান্নাঘরে যেতেই সার্ভেন্ট বলে,,, মেডাম আপনি এখানে কিছু লাগবে?

আজ থেকে আমি রান্না করবো আপনি সব আমাকে দেখিয়ে দেন,,,,,,,

মেয়েটি ভয়ে ভয়ে বলে,,,, প্লিজ মেডাম এমন করবেন না। স্যার রাগ করবে। আমার চাকরিটাই চলে যাবে।

আমি বলছি তো কিছু হবে না। আপনাকে যা বলছি তা করেন,,,,,,

মেয়েটি আর কিছু না বলে আদ্রিজাকে সব কিছু বুঝিয়ে চলে যায়।

৯ টা বেজে গেছে। আদ্রিজা রান্না শেষ করে রুমে এসে ফ্রেস হয়ে নেয়। আভিয়ান এখনো ঘুমিয়ে আছে। সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চুল আঁচড়াতে লাগলো। আভিয়ানের ঘুম ভাঙতেই সামনে আদ্রিজাকে দেখতে পেয়ে তার মন ভালো হয়ে যায়। মুখের উপর ছোট ছোট চুল গুলো ভিজে লেপ্টে আছে। কুমোর পর্যন্ত ঘন লম্বা চুল। কাজল কালো চোখ। ঠোঁটে হালকা গোলাপি রঙের লিপস্টিক দেওয়ার। গোলগাল মুখ। উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ গায়ের রং। গাড় খয়েরী রঙের শাড়ি পরে আছে। সে তার দিকে তাকিয়েই ঘোরের মাঝে চলে যাচ্ছে। চেহেরাতে মায়াতে ভরা। এই মায়াবীর প্রেমেই তো সে পরেছে। খুব গভীর ভাবে পরেছে। তাকে ছাড়া যে তার জীবনটাই বৃথা। এই তিনটা বছর তো সে মরার মতো করে বেঁচে ছিল। কিন্তু আর নয় এখন সে সব ঠিক করবে। সব ভুল বুঝাবুঝি দূর করে। এইসব ভেবেই একটি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ায়। আলমারি থেকে কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমের যায়। শরীরটা এখনো অনেকটা কান্ত। সে ফ্রেস হয়ে এসে রুমে আদ্রিজাকে দেখতে পায় না। চুলগুলো মুছে রেডি হয়ে সে নিচে নেমে যায়। আজ তার অনেক ইমপোর্টেন্ট একটা কাজ আছে।

সে এসে ডাইনিং টেবিলে বসে সার্ভেন্টকে বলে খাবার দিতে। আভিয়ানের আওয়াজ শুনে আদ্রিজা খাবার বেড়ে তার সামনে দেয়। আভিয়ান অবাক হয়ে তার দিকে এক পলক তাকিয়ে বলে তুমিও খেয়ে নাও।এই বলে সে খাওয়া শুরু করে। আদ্রিজা কোন কথা না বলে পাশ থেকে একটা চেয়ার টান দিয়ে খাওয়া শুরু করে।

খাওয়া শেষ হতেই আভিয়ান বাহিরে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। আদ্রিজা পিছন থেকে তাকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করে,,, কোথায় যাচ্ছেন? আপনি তো অসুস্থ। আজ আফিসে না গেলে হয় না,,,,,

আদ্রিজাকে তাকে নিয়ে চিন্তা করতে দেখে আভিয়ান মন একরাশ প্রশান্তিতে ছেয়ে গেলো। সে এসে আদ্রিজার কুমোর ধরে তাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে নেশাক্ত কন্ঠে বললো,,,,, তুমি এখনো আমার জন্য চিন্তা করো। তার মানে তোমার মনে আমার জন্য এখনো ভালোবাসা আছে। আমি জানি তুমি কখনোই আমাকে ঘৃণা করতে পারো না।

আভিয়ান এত কাছে আসায় আদ্রিজা ছটফট করতে লাগলো। আভিয়ানকে নিজের এত কাছে দেখে তার অস্বস্তি হতে লাগলো। আভিয়ান আদ্রিজাকে আরো নিজের কাছে মিশিয়ে নিলো। আদ্রিজা লজ্জায় চোখ বন্ধ করে নিলো। আভিয়ান মুচকি হেসে আদ্রিজার কপাল গভীর ভাবে স্পর্শ করলো। আদ্রিজা ছিটকে তার থেকে দূরে সরে গেলো। সে রাগে কটমট করে বলো,,,, আপনার তো লজ্জা থাকা দরকার। এতবার বার করে না করার পরেও বেহায়ার মতো কি করে আমার কাছে আসেন? কতবার বলবো আমার যাস্ট ঘৃণা হয় আপনার স্পর্শে,,,,,

আদ্রিজার কথায় আভিয়ান একটু মুচকি হাসি দিয়ে বলে তুমি মুখে যা-ই বলো না কেন আমি জানি তুমি এখনো আমাকেই ভালোবাসো। তাই তো আমার এত চিন্তা করো,,,,,

আদ্রিজা রাগে ভ্রু কুঁচকে বলে,,,, আমার মনে আপনার জন্য বিন্দু পরিমাণ ভালোবাসা নেই যা আছে তা হলো ঘৃণা। আপনার জন্য চিন্তা করতে আমার বয়েই গেছে। আপনি বেঁচে থাকেন মরে যান তাতে আমার কিছু যায় আসে না।

আভিয়ান মুচকি হেসে বলে ,,,,, আর যাস্ট কয়েকটা দিন তার পরেই তুমি বলবে আমি তোমার সব।আমিই তোমার পরিপূরক। আমাকে ছাড়া তুমি তখন নিজেকে কল্পনা করতে পারবে না।

আদ্রিজা গম্ভীর স্বরে বলে ,,, এটা শুধু আপনার কল্পনা। বাস্তবে এটা কখনো সম্ভব নয়।

আভিয়ান শান্ত স্বরে বলে দেখা যাবে। তুমি রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পরো আমার আসতে দেরি হতে পারে। আমার একটা কাজ আছে। কোন প্রয়োজন হলে আমাকে কল দিও। রুমে গিয়ে আলমারি খোলে দেখো সেখানে তোমার জন্য নতুন ফোন আর সিম রাখা আছে। আর কিছু না বলে সে দ্রুত পায়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আদ্রিজা আভিয়ানের যাওয়ার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে,,,,,,,


..
.
চলবে,,,,

( ছোট করে দেওয়ার জন্য দুঃখিত। কালকে বড় করে দেওয়ার চেষ্টা করবো)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here