ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)পর্বঃ১৫

0
659

#ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)
নাফিসা মুনতাহা পরী
পার্টঃ ১৫



” জেনিফা ছিটকে পড়ে যায়। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল তুমি না ব্যাবিলন সম্রাট। তোমার শক্তিতে দেখ আমি ওকে নিয়েছি কিনা?




– জেনিফা মনে মনে খুব খুশি হয়। যাহোক আপদটাকে কেউ নিয়ে গেছে। তাছাড়া আমিই আজ ওর খেলা খতম করতাম। রুমে এসে দেখি ওকে কেউ নিয়ে গেছে।



– ঘুমন্ত নাফিসাকে নিয়ে জিবন ছেড়ে দৌড়াতে গিয়ে একটা গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে হাতের থাকা জারটি পরে যায়। Jar টি ভেঙ্গে যায়। নাফিসার ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখের পলেকে ছোট থেকে স্বাভাবিক হয়ে যায়।




– ঐ খাড়া আমাকে রেখে কই যাছ তোরা বলে নাফিসা ওদের কে ডাকল। ওরা হাতে দিকে তাকিয়ে দেখে jar নাই। পিছন ফিরে দেখে নাফিসা দাড়িয়ে মুচকি হাসি দিচ্ছে।
– মার্ক চোখের নিমিষেই এসে নাফিসার মুখ চিপে ধরে ওকে নিয়ে ভ্যানিস হয়ে যায় সাথে অলিভিয়া ও।



– আমি মার্ককে বললাম শয়তান ছাড় আমাকে। তোদের সাথে কথা নাই। তোরা আমাকে না বলে চলে গেছিস।
– নাফিসা তোরে কি এমনি ছেড়ে গেছি! তোর মা যে কেলমা দেখাইছে ভয়ে তোকে ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছি।
– মারিয়াম মা!
– জানিনা……বলে আরও কাহিনী ঘটেছে বলে দানবের সব ঘটনা খুলে বলল।




– তোহ আমাকে কেন এখানে আনলি।
– ২ মাস ধরে তোকে অনেক খুজেছি শেষে টিচারের প্রাসাদে তোকে পাই। কিছুদিন হলো টিচারের ওয়াইফ তোকে মারার চেষ্টা করছে। আজ সুযোগ পেয়ে উনি আসার আগে তোকে এনেছি বলেই মার্ক ওর লম্বা জ্বিভ বের করে আমার গাল ছুয়ে দিল।
– আবার তোর জ্বীভ বের করেছিস। এবার কিন্তু টান মেরে ছিড়ে ফেলব হুম।
– মার্ক ওকে বিরক্ত করিস না এখন বল আমরা ওকে নিয়ে কই যাবো বলে অলিভিয়া আমার দিকে তাকালো।
– কই আবার যাবো আগে যেখানে থাকতাম সেখানে যাব চল বলেই আমাকে নিয়ে একটা শহরে আসল।




– রাত অনেক তবুও মানুষজন অনেক। দুর থেকে একটা মিউজিক শুনতে পাচ্ছি। খুব চেনা। মার্ক এই মিউজিক কই থেকে আসছে?
– দুরে একটা শো হচ্ছে। কেন?
– খুব পরিচিত লাগছে আমায় একটু নিয়ে যাবি?
– ওকে কিন্তু দুষ্টমি করতে পারবিনা। আমরা কিন্তু মানুষের শহরে আছি তাই খুব সাবধান। এরা ভয়ঙ্কর হয় আমাদের জন্য।
– ওকে বলেই আমরা হাজির হলাম একটা ইস্টিডিয়ামে। একদল সুফি গায়ক গান পরিবেশন করছে।




– বিখ্যাত সুফি শিল্পী সামি ইউসুফ এবং আকিব ফারিদ সংগীত পরিবেশন করছে। সংগীতটি নাফিসার খুব পরিচিত কিন্তু মনে করতে পারছেনা।




– ও তানহা কোন হে…… আল্লাহু আল্লা।
বাদশা ও কোন হে…….. আল্লাহু আল্লা।
মেহের বা কোন হে……… আল্লাহু আল্লা।
কিয়া উচি শান হে………. আল্লাহু আল্লা।
হুম ওসকি সাব নিশান হে… আল্লাহু আল্লাহ।
সাব দিলকি জান হে……….. আল্লাহু আল্লা।
হাসবি রব্বি জাল্লালা……. আল্লাহু আল্লা।
মাফি গরবি গায়রুল্লাহ্……. আল্লাহু আল্লা।
নূর মুহাম্মদ সাল্লালা……… আল্লাহু আল্লা।
লা ইলাহা ইল্লাল লা আল্লাহু আল্লা।

শিরোনামে ৫ টি ভাষায় গানটি গাচ্ছিল। আমিতো সীটের উপর উঠে আল্লাহু আল্লা বলে সুর মিলাচ্ছিলাম।
– মার্ক আমাকে একবার নিচে নামাল। ধুর বলে আবার উঠলাম। দারুন লাগছে। লাষ্টে ওদের সাথে গলা ফাটিয়ে আল্লাহু আল্লা বলতেই ঠাস করে একটা শব্দ হতেই অলিভিয়া আর মার্ক আমাকে নিয়ে ভ্যানিস হয়ে বাহিরে এল।




– ঐ ছাড় আমাকে আমি আবার কি করলাম।
– কি করিসনি! বলে মার্ক আমার দিকে তেড়ে এলো।তোকে কে গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিতে বলেছে দেখলি তোর কন্ঠ গিয়ে মাইক্রোফোনে আঘাত হেনেছে। আর সব অফ।
– আমি মাথা নিচু করে বললাম আমাকে তোরা দেখতেই পারিসনা। ছিলাম তো এক আলিশান দালানে আর এখন এনে ফেললি রাস্তায়।
– এতক্ষন তোকে আর দুনিয়াতে থাকতে হতনা। জেনিফার হাতে মারা পড়তি। ভাল করতে নেই।(মার্ক)




– আমি একটু হেসে বললাম চল না মার্ক ঐ শিল্পীর কাছে যাই। আমি তার গান কিভাবে জানলাম। ও নিশ্চয় আমার অতীত জানে।
– এবার মার্ক রেগে গিয়ে আমার কাছে আসতে অলিভিয়া ওকে ধরে ফেলে।
– ছেড়ে দে অলিভিয়া ওর বোকামির জন্য আমাদের অনেক বিপদে পড়তে হবে। ওরে তো আজ দেখেই ছাড়ব।
– মার্ক তুই খুব খারাপ হয়ে গেছিস। যখন তখন তেড়ে আসিস আমার কাছে। ভুলে যাসনা ব্যাবিলন থেকে আমি তোকে বের করেছি তাইনা অলিভিয়া!
– তুইও কেন ভুলে যাচ্ছিস আজ তোকে জেনিফার হাত থেকে আমি বাঁচিয়েছি।




– এই তোরা থামবি! আগে একটা থাকার বন্দোবস্ত কর।
– আমি কিন্তু গাছে গাছে থাকতে পারবনা। আমার আলিশান বাসা চাই বলে অলিভিয়ার দিকে তাকালাম।
– অলিভিয়া বলল ঠিক বলছিস কোন গাছের কে বাসিন্দা আছে শেষে ঝাড়ু পিটা খাইতে পারবনা।
– তাহলে!( মার্ক)
– তাহলে বলেই আমি আর অলিভিয়া মার্কের দিকে তাকিয়ে একটা পৈশাচিক হাসি দিলাম।
– এই তোরা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছিস কেন আমি কিছু করতে পারবনা বলে দিলাম।(মার্ক)




– তাহলে আর কি দ্বারা আমি স্কার্ট খুলে দিচ্ছি তুই পরে নে বলে অলিভিয়া মার্কের কাছে গেল।
– এই না না এবার দয়া কর!
আচ্ছা আমি বাবস্থা করছি বলেই ও আমাদের নিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে হাজির হল।




– সুনাম ধন্য বাবসায়ী হামিদ রহামানের মেয়ে আজমী তার বাবার অফিসে গিয়ে দেখে একটা অত্যন্ত সুদর্শন ছেলে তার বাবার সাথে মিটিং করছে।
– পরে খোজ নিয়ে দেখল ছেলেটি ওর বাবার বিজনেস পার্টনার।
– এই বয়সে কেউ এতটা সাফল্য পেতে পারে সেটা ভাবাই যায় না। ছেলেটির নাম রুপ। নামেও যেমন রুপ দেখতেও তার থেকে রুপবান।
– রুপকে আজমীর খুব পছন্দ হয়ে যায়। যে কোন মূল্যই রুপকে তার চায়।




-রুপের মিটিং শেষে অফিস থেকে বের হয়ে কারে উঠতেই একটা মেয়ে এসে পথ আগলে দাড়াল। দেখতে বেশ আধুনিক।
– Hlw you r Rup! I am right?
– হুম।
– আপনি কোথায় থাকেন মি. রুপ?
– কেন! কিছু সমস্যা?
– না মানে আমি সরাসরি কথা বলতেই পছন্দ করি। আমার তোমাকে খুব ভাল লেগেছে। তোমাকে বিয়ে করতে চাই। হামিদ রহমানের মেয়ে আমি। আমার বিষয়ে সব খোজ নিতে পারো।
– রুপ কিছু বলতে গিয়ে আজমী ওকে থেমে দিয়ে বলে। আরে এখন ডিসিশন জানাতে হবেনা আমি হারিয়ে যাচ্ছিনা। পরে জানিয়ে দিও বলে ও চলে গেল।



– কোথায় থেকে যে এসব পাগল ছাগল এসে জোটে বলে রুপ বাসায় চলে আসে।


– রুপ কেমন আছো! কেমন দিন কাটলো? আবার একখান পাগল এসে জুটল।
– হুম ভালো তা কি মনে করে আমার রুমে?
– কেন আসতে পারিনা!
– পারো তবে যখন তখন না বুঝছো!
– রুপ তোমার এই অবহেলাটা আমাকে আরও তোমার প্রতি আকৃষ্ট করে।
– ঐ আকৃষ্ট নিয়েই থাকো লুসি দয়া করে আমাকে বিরক্ত করতে এসনা। কাজ করতে দাও।
– ওকে বেবি তুমি কাজ কর বিরক্ত করবনা। কিন্তু ঐ মনটা কাউকে দিয়ে ফেলনা বলেই লুসি চলে গেল।
– রুপ মন বিষন্ন করে বলল আর মন! সেটাতো কবেই হারিয়ে গেছে নাফিসা নামক অস্তিত্বে।




– মার্ক রেস্টুরেন্টে গিয়ে ওর মালিকের সাথে কথা বলে কিছু টাকা ধার করে আনল।
– মার্ক তোকে এমনিই টাকা দিল(অলিভিয়া)
– আগে পরিচিত ছিল এখন চল এখান থেকে। বলেই আমাদের নিয়ে একটা বাসার সামনে এসে হাজির হল।
– তোরা এখানে থাক আমি কথা বলে আসি। গড কাজটা যেন হয় বলেই মার্ক ভিতরে চলে গেল।





– আমি আর অলিভিয়া সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছি ব্যাটার আসার নাম নেই দেখছি। পা ধরে গেল। সামনে একটা জায়গায় বসে পড়লাম ২ জনে।
– অনেকক্ষন পরে মার্ক এসে বলল এই টুকুতেই হাপিয়ে গেছিস?
– কি হলো( অলিভিয়া)
– বাসা ঠিক হল কিন্তু শেয়ারে থাকতে হবে। মানে একটা ছেলে এখানে তার মেয়েকে নিয়ে থাকে তার সাথে থাকতে হবে।
তবে ওর ফ্লাটটা ভিন্ন।
– চল চল আর দেরী করিসনা গিয়ে আগে ঘুম দিব বলে মার্ক আমাদের ২ জনকে টেনে ভিতরে নিয়ে গেল।




– মার্ক বাসাটা তো বেশ দারুন।(আমি)
হুম ভিতরে চল আরও সুন্দর বলে রুমের ভিতরে নিয়ে গেল। ২ টা বেডরুম একটা বড় ডাইনিং রুম ২ টা বাথরুম ২ বেলকুনি সামনে ছোটখাটো একটা মাঠ সব মিলিয়ে বেশ।
– জিনিসপত্র সব সাজানো গোছানোই ছিল।
– আমি বললাম মার্ক গোসল দিব কাপড়ের বাবস্থা কর।
– হুম আমিতো তোদের গোলাম তাই এত্ত হুকুম করিস। পারবোনা ড্রেস ছাড়াই থাক বলে সুয়ে পড়ল।
– দেখছিস বদজ্জাত এর কথা মনে হয় কি করি যে।(অলিভিয়া)




– অলিভিয়া বাসার মালিকের কাছ থেকে কিছু ড্রেস নিয়ে আসল। সাথে একটা দের বছরের মেয়ে শিশু।
– এই এটা কে রে? একে কই থেকে জুটালি!
– আমাদের পাশের ফ্লাটের লোকটার মেয়ে। খুব কান্না করছিল আমি নিয়ে আসলাম আন্টির কাছ থেকে।


– কেন ওর মা বাবা নেই!
– না বাবা আছে সেও অফিসে। আন্টির কাছে রেখে যায়।
– আমি গোসল করে এলে ও আমাকে বাচ্চা দিয়ে গোসলে গেল।
– ওলে বাবা তোমার নাম কি বলতেই বাচ্চাটি পরম শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ল। লে বাবা একটু আদর করব তার আগেই ঘুম।
– আমিও ওকে নিয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়লাম।




– ঘুম ভাঙ্গল মার্কের ধাক্কায়।
– ঐ বাচ্চাটির বাবা আসছে ওকে দিয়ে দে। আমি ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখলাম একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে সামনে। আমি বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমার বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমাচ্ছে পাশে অলিভিয়াও ঘুমাচ্ছে।
– আমি ওনাকে বললাম আপনি যান আমি দিয়ে আসছি।



– উনি চলে গেলে আমি ধীরে ধীরে উঠে বাচ্চাটি কে কোলে নিয়ে পাশের ফ্লাটে গেলাম।
– দেখি উনি রান্না করছে।
– আমাকে দেখে বসতে বলল। আমিও বেবিটাকে নিয়ে বসে পড়লাম সোফায়।
– উনি আমায় জিঙ্গাসা করল। আমার মেয়েটা আপনাকে জ্বালায়নিতো?
– না জ্বালালে তোহ খুশি হতাম। কিন্তু আমার কোলে আসতেই ঘুমিয়ে পড়ল।
– অহ তাই! তা আপনার নাম কি! কি বলে আপনাকে ডাকব?
– নাফিসা…… আমাকে এ নামেই ডাকেন।
– উনি বেশ থমকে গেলেন।
– হেই আপনি ঠিক আছেন?
– হুম ঠিক আছি। বলেই এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। অনেকক্ষন এভাবে থেকে বলল আপনার বাসা কই?
– এখানেই। বাকি ২ জন আমার বন্ধু।
– আপনি কি জানেন আমার মেয়ের নামও নাফিসা?
-কিহ্!
– হুম আপনার মিতা। আমি ড. রাফসান। পেশায় একজন ডাক্তার। আমি বাংলাদেশি।
– অহ!
– উনি মেয়েকে আমার কাছ থেকে নিয়ে বলল মা আমার পুরো দিন বাবা তোমাকে দেখেনি। বাবার উপর রাগ করে ঘুমিয়ে পড়েছো?


– আশ্চর্য ও রেগে যাবে কেন।(আমি)
– রাফসান অবাক হয়ে বলল তুমি বাংলা জানো!
– আমি থতমত হয়ে বললাম এটা বাংলা ভাষা?
– হুম।
– তাহলেতো আমি অনেক ভাষায় জানি।
– অহ… বলতেই বাচ্চাটি ঘুম থেকে উঠে গেল এবং জোড়ে জোড়ে কান্না করে উঠল।
– দিলেন তো ওর ঘুম ভাঙ্গিয়ে বলে আমি ওকে আবার নিলাম।
– রাফসান বার বার মেয়েকে নাফিসা বলে ডাকছে আর তত বারই আমি রেগে যাচ্ছি।
– এই যে Hlw….. এই নামে ওকে আর ডাকবেন না আমার সমস্যা হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমাকে বার বার ডাকছেন।
– srry এটাই ওর নাম। আকিকা করে এটাই রাখা হয়েছে।
– তো কি হয়েছে! আবার আকিকা দিবেন কোন মুরগী বা সামুদ্রিক মাছ দিয়ে। ওকে রাকা বলে ডাকবেন বলে দিলাম। আর যদি না ডাকেন তাহলে আমাকে এবং আপনার মেয়েকে সহ কোলে নিয়ে ঘুরতে হবে বলে দিলাম। কারন ২ জনকেই আপনি ডাকছেন।



– এই আপনি পাগল হয়ে গেছেন! কি সব আজগুবি কথা বলছেন।


– কিছু মনে করেন না sir ও মাথায় একটু সিট আছে বলেই আমাকে বলল বেবিটাকে দিয়ে দে এবং চল মার্ক খাবার নিয়ে এসেছে।
– খাবার! বলেই চোখ ২ টি চকচক করে উঠল। ওনার মেয়েকে ওনার কোলে দিয়ে বললাম নাম চেঞ্জ ok!




-ভাগ্য আজ রাফসার আর নাফিসাকে আবার মিলে দিয়েছে কিন্তু কেউ কারও পরিচয় জানেনা।



– কয়েকদিন পর আজমী সরাসরি রুপদের বাসায় আসে।
– মিনা বলল তুমি কে?
– আসলে আন্টি আমি রুপের বিজনেস পার্টনার। ওকে একটু ডেকে দিবেন?
– মিনা রুপের রুমে যেতেই আজমীও পিছে পিছে গিয়ে হাজির।
– রুপ ঘুমিয়ে ছিল।
– আচ্ছা আন্টি যান আমি দেখছি।
– মিনা বেশ রেগেই গিয়ে বলল তুমি এখানে কেন?
– স্যরি আন্টি রুপকে সারপ্রাইজ দিব বলে এসেছি। আপনিতো সব ভেস্তে দিবেন দেখছি। কম্পানিতে বড় একটা ডিল হয়েছে সেটা জানাতে এসেছি।




– মিনা কিছু না বলে নিচে নেমে এসে লুসিকে ডাক দিয়ে বলল যাওতো রুপের রুমে বলেই চলে গেল।
– লুসি চোখের পলকে রুপের রুমে হাজির। একটা মেয়ে মানুষ যে রুপের বিছানায় বসে আছে এবং অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে। কেবল আজমী রুপের গায়ে হাত দিবে ওমনি লুসি একটানে ওকে সরে এনে বলে এই তুই কে! ওর গায়ে কেন হাত দিচ্ছিস।




– এই মেয়ে ভাষা মার্জিত কর তুমি কে?
– আমি কে সেটা বড় কথা নয়। তুই কেনন ওর গায়ে হাত দিচ্ছিস?


– আমি রুপকে ভাল বাসি। আর আজমী যা চায় সেটা নিয়েই থামে।
– আর আমি যা চাই সেটা আমি ছিনিয়ে নিয়েই ছাড়ি বলে ওর আসল রুপে এসে আজমীর গলা চিপে ধরে।
– লুসির এই রুপ দেখে আজমী ভিষন ভয় পেয় যায়। কিছু বলার আগেই লুসি ওর ঘাড়ে কামড় বসে দিয়ে রক্ত খেতে থাকে।
– রুপের রক্তের গন্ধে ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখ মেলে দেখে আজমীর রক্ত শুষে নিচ্ছে লুসি।
– রুপ লুসিকে টেনে আজমীর থেকে আলাদা করে নেয়। রক্তের সাধ পেয়ে লুসি যেন পাগল হয়ে যায়। আবার খেতে যায় আজমীকে। রুপ এবার লুসির গালে চড় বসিয়ে দিল।







– তোমার মাথা ঠিক আছে! আমাদের সমাজ নিয়ে চলতে। তুমি কিভাবে ওকে এটাক্ট করো।
– আমি ওকে ছাড়ব না ওর সাহস কি করে হয় তোমার গায়ে হাত দেওয়া আর আমার সাথে পাঙ্গা দেওয়া?
ওকে আমি শেষ করে দিব।
– লুসি শান্ত হও এবার। অনেক করে ফেলছো। বেশি বাড়াবাড়ি করও না।
– শোন রুপ যে তোমার দিকে হাত বাড়াবে তার পরিনিতি এর থেকেও ভয়াভয় হবে। হোক সে জ্বীন কিংবা ইনসান। জাষ্ট ফিনিস বলেই চলে গেল লুসি।



– রুপ আজমীর গলায় চোখ বন্ধকরে হাত বুলিয়ে দিতেই সব স্বাভাবিক হয়ে গেল। রুপ চট করে সরে গেল।
– কি ব্যাপার আজমী তুমি এখানে?
– আসলে আমি একটা কথা বলতে এসেছিলাম কিন্তু…..
– ওকে কাল অফিসে এসো। আমার কিছু কাজ আছে।
– আজমীর কাছে সব আজব লাগছে। কিছু না বলে চলে এলো আজমী।

“”


– রুমে এসে দেখি স্যতি মার্ক খাবার এনেছে। আমি খাবারগুলো দেখে সেই লেভেলের খুশি। খাচ্ছিলাম এমন সময় বাচ্চাটির কান্নার আওয়াজে আমার আর অলিভিয়ার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল।
– এই তোরা টেনশন নিসনা ও রকম বাচ্চা তোদের ও হবে তাই কান না দিয়ে খা।
– বাচ্চাটির কান্না যেন আমার বুকে বার বার আঘাত করছে। আমি না খেয়ে রাফসানের রুমে গিয়ে দেখি ও থামানোর চেষ্টা করছে। আমার বাবুটা বাবা তো তোমাকে বকা দেয়নি তাহলে কাঁদছো কেন মা?
– আমি ওর কথা শুনে হাঁসতে লাগলাম। আমার হাসি দেখে রাফসান লজ্জা পেয়ে থেমে গেল। আমি ছো মেরে বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে বসে পড়লাম। বাচ্চাটির মনে হয় খুদা লাগছে বার বার আমার বুকের মধ্য মুখ ঘষছে।


– রাফসান আপনার ওয়াইফ কই। তাকে কেন দেখছিনা। এতটুকু বাচ্চা নিয়ে কেউ একা থাকতে পারে?
– এটা আমার পার্সোনাল বিষয় তাই আর কখনও প্রশ্ন করবেন না মিস. নাফিসা।
– মন টাই আমার খারাপ হয়ে গেল। এভাবে কেউ কাউকে ধমকিয়ে কথা বলে?



– রাকার খুদা লাগছে ওকে কিছু খেতে দিন।
– রাকা কে?
– আপনার পিচ্চির নাম।
– ওর নাম নাফিসা আর এটাই শেষ কথা।
– আমার সমস্যা হয়তো।
– হোক তবুও নো চেঞ্জ you understand?
– উম বলে ঠোট ফুলিয়ে বসে রইলাম।
– রাফসান আমাকে পিচ্চির জন্য খাবার দিয়ে বলল খাওয়াতে পারবেন?
– পারবো বলে হাত থেকে খাবার নিয়ে পিচ্চিকে খাওয়াতে লাগলাম।



– উনি নিজেও খেতে বসলেন। সবার খাওয়া হল আমিই খেতে পারলাম না। নাফিসা আজ তোকে না খেয়েই থাকতে হবে।
– তা মিস. নাফিসা খেয়েছেন?
– না….. বলে পিচ্চিরে খাওয়াচ্ছি।
– আসেন আপনাকে বেড়ে দিচ্ছি।
– থাক শেষে খেয়ে আপনার ভাগে কম পড়ে যাক আর মনে মনে আমায় গালি দেন।
– যথেষ্ট খাবার আছে।
– ওকে তাহলে খাওয়াই দেন।
– কিহ্!
– হুম যা শুনেছেন তাই বলেছি।
– এই আপনাদের ইংলিশ এমন একটা সমাজ যেখানে হ্যাগ, কিস, যাইচ্ছা তাই করতেও ২ বার ভাবেন না। আমি অপিরিচিত একদিনও যায়নি আর তার হাতে খাবার খেতে চাইতে লজ্জাও করেনা!
– কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগল। আমাকে আর অলিভিয়াকে মার্ক তো মাঝে মাঝে খাইয়ে দেয়।
– আপনাদের আবার লজ্জা সরম বলে কিছু আছে।
– আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পিচ্চিটার গালের উপর পড়ল।




– আমি পিচ্চিকে ঐ অবস্থায় রেখে আমাদের ফ্লাটে চলে আসলাম।
– কিরে কিছু হয়েছে?(অলিভিয়া)
– না বলে পাশ ফিরে শুইলাম। আমার মনের ভিতর ঢুকে গেল রাফসান very bad…….


– গভীর রাতে এক অদৃশ্য শক্তি আমায় টানছে। আমি চলছিই। রুমের দরজা খুলে বাহিরের মেইন গেটও খুলে যাচ্ছি। আমি দরজা থেকে বের হচ্ছি আর দরজা আগের মত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোন হুস নাই আমি চলছিতো চলছি…..
চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here