ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)পর্বঃ১৭

0
697

#ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)
নাফিসা মুনতাহা পরী
পার্টঃ ১৭



– জ্বীন গুলো আমার চারপাশে অবস্থান করছে। অনেক শক্তিশালী জ্বীন এরা দেখেই বুঝতে পারলাম। এদের কন্টোল করা আমার জন্য কঠিন না কিন্তু বাচ্চাটা কে নিয়ে সমস্যা।
– তোর এতবড় সাহস একটা মানুষের বাচ্চা হয়ে আমাদের সাথে পাঙ্গা নিস বলেই জ্বীন গুলো হুংকার ছাড়ে। হুংকারে ওদের নাক দিয়ে লেলিহান অগ্নি শিখা বের হয়ে যাচ্ছিলো।
– আমি দুরে মার্ককে ইশারা করেই ওর দিকে বাচ্চাটি ছুড়ে দিতেই ও ধরে ফেলে। একটা জ্বীন মার্কের দিকে যেতেই আমি বললাম কাপুষের মত ও দিকে তোমরা ছুটছো কেন আমার সাথে মোকবেলা কর।
– ওরা খিক খিক করে হেঁসে বলল তুই তো এক সাধারন মানবী তোর সাথে আমাদের এত জন লাগার দরকার নেই আমি একাই যথেষ্ট বলে একটা জ্বীন ওদের মধ্য থেকে বের হয়ে এল।




– আমি একটু হেঁসে বললাম তাহলে ওখানে দাড়িয়ে আছিস কেন আয় আমার লাগ দেখি তোদের জোর কত। আমার সাথে পরীক্ষা করে নে তোরা বলেই আমি নিজেকে শূন্যতে ভেসে ওদের সামনে দাড়িয়ে গেলাম।



– একজন আমার একদম কাছে এসে বলল মরার খুব সখ দেখছি তোর বলতেই আমি অন্য দিকে ওর গলা এক হাতে চিপে ধরলাম এতে ও পুরে ভষ্ম হয়ে গেল।
এটা দেখে ওরা বেশ ভয় পেয়ে গেল।




– আরও কেউ আছিস! আয় পরখ করে নে নিজেদের।
– ওদের মধ্য একজন বলল রানীর হুকুম বাচ্চাটিকে হত্যা করার। তাই এদিকে তোরা সামলা আমি বাচ্চাটিকে দেখছি বলেই মার্কের দিকে যেতেই আমি বাতাশের মত দ্রুত ওর সামনে হাজির হয়ে বললাম তোর রক্ত দিয়ে যদি আমি গোসল না দিছি তখন বলিস আমি কথা রাখতে পারিনি বলেই একটা দেওয়ালের সাথে একটা আছাড় মাড়লাম।




– মার্ক মনে মনে অলিভিয়াকে স্মরন করতেই ও হাজির হয় সাথে। মার্ক অলিভিয়াকে বাচ্চা দিয়ে নাফিসার কাছে যেতেই ওর সামনে একটা সাদা চুলওয়ালা নারী দাড়ায়। ও বলে বাচ্চাকে দে। কিসের বাচ্চা বলেই মার্ক মেয়েটাকে আক্রমন করল।




– ৪ জ্বীন সোজা একসাথে নাফিসা কে আক্রমন করে।
– আমি সোজা ওদের ওখান থেকে অদৃশ্য একটা গাছের উপর দাড়িয়ে বললাম এই ওখানে কি দেখছিস। আমি তো এদিকে আয়…………
– ওরা আবার ওখানে আসতেই আমি সেখান থেকেও ওধাও হলাম। আমার উদ্দেশ্য ওদের আলাদা করা। হুম আমি সফল হলাম।





– ওরা সবাই হাঁপিয়ে গেল। আমি বললাম এতটুকুতেই হাঁপিয়ে গেলি। মেয়ে হতে পারি কিন্তু দুর্বল নয়।
– ওরা আবার আমাকে আক্রমন করতেই আমি ওদের আগুনের গোলকের মধ্য ওদের বন্দী করে ফেললাম। এবং আগুনকে হুকুম দিতেই ওদের গ্রাস করে ফেলে।




– আমি কাজ কমপ্লিট করে মার্কের দিকে তাকাই দেখি একটা মেয়ে মার্ককে আক্রমন করেছে।
– আমি একটু হেঁসে বললাম কি মার্ক সাহার্য্য লাগবে বলতেই মার্ক মেয়েটার মাথা শরীর থেকে টেনে আলাদা করে ফেলে। বাহ্ মার্ক গুড জব। অলিভিয়া বাচ্চাকে নিয়ে আমার কাছে এসে বলল নাফিসা! কেমন আছিস তুই?




– ভাল আছিরে বলেই ওর হাত ধরে বললাম তোরা ২ জনে কি একসাথে আছিস?
– হুম বিয়েও করে ফেলেছি ১ মাস হল।
– বাহ্ এর মধ্য বিয়েও করে ফেলেছিস ২ জনে! অথচ আমি জানিই না……..
– তুই কি আমাদের খোজ নিয়েছিস! কত খুজেছি তোকে কোন খোজ পাইনি।
– ওকে আমাকে কি এখানেই রাখবি না তোদের বাসায় নিয়ে যাবি?
– আমাদের বাসায় তোর গিয়ে কি কাজরে পেঁচী(মার্ক)
– তুই আমাকে পেঁচী বললি মার্ক। কোন কাটাগরীতে আমায় পেঁচীর মত দেখতে লাগল যে এটা বললি। আমার মত সুন্দরী মেয়ে কোথাও খুঁজে পাবি বলে মুখ ফিরিয়ে রইলাম।



– অলিভিয়া একটু হেঁসে বলল মজা করছে ও বলেই আমাদের নিয়ে ওর বাসায় নিয়ে গেল।
– বাহ্ দারুন সাজাইছিস তো বাসাটা।
– হুম বলেই অলিভিয়া আমার কোলে বাচ্চাটি দিয়ে বলল দেখ নাফিসা বাচ্চাটি কেমন জানি অদ্ভুদ। চোখের কালার দেখছিস! অদ্ভুদ টাইপের না?
– আমি বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে দেখলাম স্যতিই অদ্ভুদ ছিল বাচ্চাটি। কেমন যেন তার চাহনি। যেহেতু আমার বয়স খুবই কম আর এই জ্বীন দুনিয়াতে আমার অবস্হান খুব কম সময় তাই আমি এগুলো সম্পর্কে খুব কম জানি।




– রাফসানের সাথে তোদের আর কন্টাক্ট হয়েছিল?
– হুম প্রায় রেগুলার হয়। ওর মেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে।(অলিভিয়া)
– আমাকে মনে আছে ওর?
– তোকে খুঁজতেই হয়ত রেগুলার একবার হলেও কল দেয়।( মার্ক)
– দ্বারা তোর সাথে কথা বলে দিচ্ছি বলেই মার্ক রাফসানকে কল দিল।
– Hlw Mark?
-হুম রাফসান তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে বলেই নাফিসাকে ফোন দিতেই কল কেটে গেল।
– অদ্ভুদ কল কেন কেটে গেল। এভাবে অসংখ্য বার একই কাজ হল। অলিভিয়া মার্ক ওর সাথে কথা বলতে পারছে কিন্তু আমার কাছে আনতেই কল কেটে যাচ্ছে।
– নাফিসা কিছুতো একটা ব্যাপার আছে তোর সাথে। তাছাড়া আমি আর মার্ক কথা বলতে পারছি তুই কেন পারছিস না।
– হয়ত ঐ দেশ আমার জন্য নিষিদ্ধ। আগেও চেষ্টা করেছি কিন্তু সফল হতে পারিনি। বাদ দে আমার কথা রাফসান কে বলিস না। আমি চলে যাচ্ছি। তোরা আসিস কিন্তু আমার লড়াই দেখতে বলেই বাচ্চাটিকে নিয়ে আমি চলে এলাম প্রাসাদে।




– মুনিকা নাফিসার কোলে বাচ্চা দেখে বলল নাফিসা এটা কে my son……
– জানিনা নানু আপি। আপনি একটু দেখবেন? আমি ওকে পেলাম।
– মুনিকা বাচ্চাটিকে দেখে থমকে গেল।
– বেটা তুমি এই বাচ্চাটিকে কেথায় পেয়েছে?
– আমি ওনাকে সব খুলে বলতেই উনি বলল খুব ভুল করেছো আমার বাচ্চা। এটা কোন শ্বেতপরীর বাচ্চা। এ ব্যাপারে আর কিছু জানিনা।




– বাচ্চাটি বার বার আমার বুকে মুখ ঘষছে হয়ত খুদা লেগেছে…….. কিন্তু কিছুই খাওয়ানো যাচ্ছেনা। শেষে আলিক্সকে খবর পাঠালো মুনিকা সাথে মারিয়াম ও আলবার্ট কেও।




– আলিক্স অনেক পরীক্ষা করে বলল এ শ্বেতপরীর বাচ্চা ঠিকি কিন্তু সাধারন জ্বীনের বাচ্চা হয়ে গেছে ও কারন ওর শরীর থেকে সব শক্তি সুষে নেওয়া হয়েছে। ও নিদিষ্ট সময়ে ওর নিজের মাকে চিনে নিবে। এখন অবদি ৪ জন শ্বেতপরী আছে তাদের মধ্য একটা রানীও আছে। আরও একজন শ্বেতপরী আছে কিন্তু তাকে এখনও খুজে পাওয়া যায় নি। হয়ত এদের থেকেও সে শক্তিশালী। এই পরী গুলো কখনও চাইবে না শেষ শ্বেতপরী টা এদের মধ্য আসুক।প্রতিযোগিতার দিন তুমি তাকে দেখতে পাবে। কিন্তু কথা সেটা না। এই বাচ্চাটির মাতো এর পিতাকে হত্যা তো করেছে কিন্তু বাচ্চাকে পারেনি করতে হয়ত মায়া কাজ করেছে তাই অন্য জ্বীন দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করেছে আর সেই জ্বীন গুলো বিস্বাস ঘাতকতা করে এই বাচ্চাটির সব শক্তি সুষে নিয়েছে।




– কিন্তু টিচার ঐ জ্বীন গুলো তো কেউ বেঁচে নেই সবাই মারা গেছে। আমি নিজে তাদের মেরেছি তাহলে ওরা কেমনে সব শক্তি সুষে নিয়েছে।
– আলিক্স নাফিসার কথা সুনে ওর কাছে এসে বলে নাফিসা তোমার জ্বীভ দেখি?
– ও জ্বীভ বের করতেই কিছু আলোক রশ্মি ওর মুখের ভিতর ঝলমল করে উঠল। এটা দেখে আলিক্স ছিটকে গিয়ে দুরে পরে যায়।
– আলিক্স চিৎকার দিয়ে বলে নাফিসা তুমি খুব ভুল করেছ এর মাষুল যে তোমায় কিভাবে দিতে হবে আমি নিজেও জানি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাচ্চাটিকে হয় মেরে ফেল না হয় কোন সাগরে জলদি ফেলে দিয়ে এসো।
– আমি অবাক হয়ে বললাম কেন? আমি কি করেছি….. আর আমি ওকে কখনই হত্যা করব না। ওকে রক্ষা করতে যদি আমার প্রান বিসর্জন দিতে হয় আমি এক পাও পিছু হাটবো না।




– মারিয়াম বলল বিকল্প কোন পথ নাই আলিক্স যাতে সব সমাধান হয়।
– আলিক্স কিছু পড়তে লাগে…… একটু পর হাতে একটা বোতল আসে সেখানে তরল কিছু দেখা যাচ্ছে।
– নাফিসা এটা ওকে খাওয়াও তাহলে ও মানুষের মত জিবন যাপন এবং খাওয়া দাওয়া করবে। এতে কিছুটা হলেও ওর পরিচয় লুকানো যাবে। আর ওকে যদি অপর কোন শ্বেতপরী লালন পালন করত তাহলে ও সম্পূর্ন ওর কব্জাতে চলে যেত। ওকে কেউ বুঝতে পারত না। কিন্তু নাফিসা তুমিতো শ্বেতপরী পরী না!




– তাহলে আলিক্স বাচ্চাটা নাফিসার কাছেই নিরাপদ। তুমি চিন্তা কর না।
– মানে! নাফিসা…………
– হুম পরখ করে দেখতে পারো।( মারিয়াম)
– আলিক্স বিশ্ময়ের সাথে নাফিসার দিকে তাকিয়ে আছে। এতদিন ওর কাছে আছে তবুও জানতেও পাড়ল না ও সেই শেষ পরীটা?
– নাফিসা একমনে বাচ্চাটিকে ঐ তরল মেডিসিন খাওয়াতেই বাচ্চাটির দেহের গঠন পরির্বতন হতে লাগল। বাচ্চাটি এক নিমিষেই ৩ বছরের বাচ্চাতে পরিনিত হয়ে নাফিসাকে মা বলে ডেকে উঠল।
– আমি অবাক হয়ে বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে রইলাম আর ও বার বার মা বলে আমাকে ডাকতে লাগল।
– কি নাফিসা এবার মা হয়ে গেলে তো! বিয়ে না হতেই…… (আলিক্স)
– আলিক্সের কথা শুনে মারিয়া চুপ করে গেল। কারন নাফিসা বিবাহিত একটা মেয়ে।




– বাচ্চাটি বিছানা থেকে উঠে নাফিসাকে জড়িয়ে ধরে বার বার চুমু দিচ্ছে আর আদর করছে। ঠিক রাফসানের মেয়ের মত। আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। যে কষ্ট রাফসান ওর মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার সময় দিয়েছে সেটা যেন এক নিমিষেই উধাও হয়ে গেল।
– আলিক্স বাচ্চাটির নাম “নেগার” রাখল।
– নেগার তোমার মম কে বলতেই বাচ্চাটি নাফিসাকে জড়িয়ে ধরল।
– নাফিসা সাবধানে থাকবা সবসময়। তোমাকে নিয়ে আমার আরও বেশি ভয় হচ্ছে।




-নাফিসা মেয়েটিকে পেয়ে খুব খুশি ওকে নিয়েই দিন কেটে যায়। আলিক্স ওর সব যতগুলো বিদ্যা জানা ছিল সব নাফিসার উপর প্রয়োগ করেছে। ওকে একদম পরিপূর্ন করেছে। এভাবে চলতে চলতে সেই দিন এসে যায়।
– সকাল থেকে প্রস্তুতি চলছে। নিজেকে একদম তৈরী করে ফেলে নাফিসা। এমন সময় নেগার এসে বলে মম তু.তু.তু.মি ক…ই যা..চ্ছো! অস্পষ্ট কথা একটু।
– নাফিসা ওকে কোলে নিয়ে বলল এই তো মা আমরা একটা জায়গায় যাচ্ছি। তুমি যাবা নেগার?
– নেগার শুধু মাথা ঝাঁকালো।
– বের হওয়ার সময় মার্ক আর অলিভিয়াও চলে এল।
– মার্ক নেগার কে দেখে বলল ও কে?
– আমার মেয়ে…..
– তুই বিয়ে করলি কবে? না কারও সাথে কুকাম করছিস?
– ছিঃ মার্ক কি বলিস। তুই ওকে চিনতে পারছিস না।
– অলিভিয়া বলল ১ মাসে এত বড় হইল কেমনে?
– ম্যাজিক বলেই নেগার কে বললাম নেগার আঙ্কেলের কোলেও যাওতো মা বলেই মার্ক কে ওকে দিয়ে বের হলাম।



“- বিশাল মাঠ ছিল। লাখ লাখ জ্বীন সেখানে উপস্থিত হইছে। আমি শুধু দেখলাম। আলিক্স এসে বলল কি সব রেডী! তোমার মনকে প্রস্তুতি করে নিয়েছো ত?
মার্ক আর অলিভিয়াকে দেখে আলিক্স বলল বন্ধুর প্রতিযোগিতা দেখতে আসছো?
– হুম
– নেগার বেটা কেমন আছো তুমি?
– খুব ভাল বলেই মেয়েটি হাসি দিল।
– নাফিসা নেগার কে কেন আনছো। জানোনা ওকে যেখানে সেখানে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়।
– ওকে আমি আনতে বলেছি বলে আলবার্ট, মুনিকা আর মারিয়াম এসে দাড়াল। ওকে নিয়ে আসার একটা উদ্দেশ্য আছে।




– অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। নাফিসা মাঠে একা দাড়িয়ে আছে। এর পর সেখানে এক শক্তিশালী কৃষ্ণাঙ্গ পরী এসে নাফিসা সামনে দাড়াল। লড়াই শুরু হয়ে গেল। পরীটি নাফিসাকে আঘাত করতেই নাফিসা ওর গলা চিপে ধরে আর সাথে সাথে ও ভষ্ম হয়ে যায়।
– ওখানে রানী শ্বেতপরী ও ছিল। সে বলে উঠল বেশ প্রস্তুতি নিয়েই মেয়েটা এসেছে।
– এবার একটি পুরুষ জ্বীন আসল। সেও ব্যার্থ হল।
– আলবার্ট এবার ওর আসন থেকে উঠে দাড়িয়ে বলল
এমন কেউ আছো যে এই মেয়েটার সাথে লড়াইয়ে ওকে হারাতে পারবে সেটা সাধারন জ্বীন কিংবা কোন রাজা কিংবা কোন শ্বেতপরী। আছো কেউ!
– আলিক্স থমকে গিয়ে বলল মাই লড কি বলছেন। নাফিসা এখনও শ্বেতপরীদের সাথে লড়াই করার মত প্রস্তুতি নেয়নি। ও মাঠেই মারা পড়বে।
– চিন্তা করনা আলিক্স ও ওর মায়ের মত জেদি এবং তীক্ষ্ণ। আমি ভেবেই বলছি। আজ ও এই শ্বেতপরীদের অহংকার ভেঙ্গে দিবে।




– রানী শ্বেতপরী টা খুব অপমান বোধ করল। তার সাথে এই মেয়েটিকে তুলনা করল? বলেই বাকি ৩ শ্বেতপরী কে মাঠে নামিয়ে দিল।
– আলিক্স তো খুব টেনশনে আছে সাথে মার্ক ও অলিভিয়া।




– কিন্তু ৩ শ্বেতপরী ও সুবিধা করতে পারছেনা দেখে রানী নিজেই মাঠে নেমে এসে নাফিসাকে পিছন থেকে সমস্ত শক্তি দিয়ে আঘাত করে। নিজের অপ্রস্তুতির জন্য এত বড় আঘাত সইতে না পেরে মাটিতে লুটিয়ে পরে। আর মাঠে কড়া তালি পড়ে যায়।
– মার্ক, আলিক্স সহ ওরা সবাই দাড়িয়ে যায়। কিন্তু আলবার্ট ওভাবেই বসে মার্ক কে নির্দেশ দেয় নেগার কে মাঠে ছাড়িয়ে দিতে। আলবার্টের ধারনা কেউ তো এদের মধ্য নিজের সন্তান কে চিনে নিবে আর এতে নাফিসা সুযোগ পেয়ে যাবে। তাছাড়া নাফিসার জিবন থাকতেও এই মেয়েটির ক্ষতি হতে দিবে না। এটাও একটা সুযোগ।



– নাফিসাকে পড়তে দেখে নেগার মম বলে চিৎকার দিয়ে মার্কের কোলেই ছুটাছুটি করতে লাগে।
– মার্ক নেগারকে মাঠে নামিয়ে দিতে নেগার মম বলতে বলতে নাফিসার দিকে ছুটে যায়।
– রানী শ্বেতপরী( ঐশোর্য) নেগারের দিকে তাকিয়ে থমকে যায়। কারন মেয়েটি ঐশোর্যের।
– আর একটা শ্বেতপরী এক নিমিষেই নেগারকে ধরে ছুড়ে মারে মাঠের অন্য প্রান্তে। এদের মধ্য যেন দয়ামায়া নাই। কিন্তু নাফিসা চোখের পলকে নেগার কে ধরে ফেলে। নেগার কে বুকে নিয়ে বলল আমায় আঘাত করেছিস সহ্য করব কিন্তু আমার মেয়ের গায়ে একটা আঘাত যদি করিস তাহলে ১৪ হাত মাটির নিচে তোদের এক একটাকে পুতে রাখব। আয় কে আছিস আমার সাথে লড় আমার মেয়ের গায়ে কেন হাত দিস।

– এবার আলবার্ট বলে উঠল নেগার কে এজন্যই এনেছি আলিক্স।




– এই শ্বেতপরী দের কারো মনে কোন দয়া নেই। এরা সেইভাবেই তৈরী হয়েছে তাই ৪ জনই একসাথে ওকে আক্রমন করে। রানী ঐশোর্যই ওর নিজের মেয়েকে ছিনিয়ে নেয় প্রথমে আর গলা ধরে আছাড় দিতেই নাফিসা এসে ধরে ওকে। এরা বুঝে গেছে মেয়েটিকে শেষ করতে এই বাচ্চাই ওদের অস্ত্র। আলবার্টের চ্যাল মাঠে মারা গেল। হয়ত নেগার কে না আনলেই নাফিসার জন্য ভাল হত।



– রানী ঐশোর্য নেগারের গলা চিপে শুন্য ধরে আছে আর নাফিসাকে বলল তুই নিজেকে তো বাঁচাতে পারবি কিন্তু তোর মেয়ে নিজেকে কিভাবে রক্ষা করবে। কথাটি শুনে নাফিসা ধপ করে বসে যায়। ওর জন্য না জানি মেয়েকে না মরতে হয়।
– কাজ হয়েছে বলেই ঐশোর্য ওদের ৩ জনকে আদেশ দেয় একসাথে নাফিসার উপর মায়া প্রয়োগ করতে। ৪ জনেই নাফিসার উপর বার করে আর নেগারকে ছুড়ে মারে। মার্ক এক লাফে এসে নেগার কে ধরে ফেলে বিশাল সাপের রুপ ধারন করে। ওকে দেখে অলিভিয়াও এসে নেকড়ের রুপ ধারন করে। আলিক্স এবং ওরা সবাই মাঠে নেমে আসে।
– ঔশোর্য চিৎকার করে উঠে বলে এটা প্রতিযোগিতার মাঠ তাই ভেবে কাজ করুন তাছাড়া একজনকেও আস্ত ছেড়ে দিবনা বলতেই ওদের সামনে ছোট্ট একটা রুপার বক্স এসে হাজির হয়।




– রুপের পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে। চিৎকারে দিয়ে ছটফট করছে। মনে হয় কেউ আগুন দিয়ে ওর শরীরটা পুড়িয়ে দিচ্ছে। মিনা রুপের চিৎকারে রুমে এসে ঐ অবস্হায় রুপ কে দেখে সিড কে ডাকে।
– রুপ কি হয়েছে তোর বাবা আমায় বল বলে মিনা কাঁদতে লাগল। সিড এসে রুপের এই হাল দেখে চমকে যায়। আজগড়কে স্মরন করতেই ও আর রোজ এসে হাজির হয়।
– লুসি রুপের ঘরে বার বার ঢুকার চেষ্টা করছে কিন্তু আগুনের ঝালকানি এসে ওকে আঘাত করছে।
– আজগড় বলে উঠল নাফিসার খুব বিপদ যার জন্য ওর এই অবস্থা হচ্ছে।
– ঐ মেয়ে চলে গিয়েও আমার ছেলে কে ছেড়ে দেয়নি। নাফিসার কিছু হলে কি রুপ ভাইয়ারও কিছু হয়ে যাবে?
– না কিন্তু রুপ বুঝতে পারবে নাফিসার বিপদ। যতক্ষন নাফিসা বেঁচে থাকবে। রুপ একপর্যায়ে বেহুঁশ হয়ে যায়।




– ঐশোর্য সহ সবাই অবাক হয়ে যায় রুপার বক্স দেখে ততক্ষনে নাফিসা লুটিয়ে পরে।
– বক্সটি একনিমিষেই বিশাল বক্সে পরিনিত হয়। এবং সেটা খুলে যায়। অতি সচ্ছ ২ টা সাদা ডানা আকাশে উড়তে থাকে এবং তা নাফিসার শরীর ভেদ করে অবস্হান করে।
– নাফিসা সেন্সলেস অবস্থায় উপরে উঠে ভাসতে থাকে এবং এক নিমিষেই চোখ খোলে। নাফিসার চোখ ২ টা থেকে রশ্মিপাত হচ্ছিল আর সাথে সাথে বিশাল বিশাল ১৫ টা সাপ এসে নাফিসার পিছনে দাড়িয়ে যায় বড় বড় ফোনা তুলে।
– আমি সম্রাট আলবার্ট ও সম্রাজ্ঞী মুনিকার মেয়ে প্রিন্সেস এলিনার একমাত্র কন্যা নাফিসা তোদের আহ্ববান করছি আমার সাথে মোকাবেলা করার জন্য।
এমন দৃশ্য সবাই ভয় পেয়ে যায়। পুরো মাঠ থরথর করে কাঁপতে থাকে। নাফিসা ঐশোর্যকে চোখেন রশ্মিপাত দিয়ে ওর সামনে এনে ছুড়ে ফেলে।




– ঐশোর্য রাগে অপমানে আদি শক্তি যারা হাজার হাজার বছরের জ্বীন শক্তিকে নিজেদের দখলে রাখছে
এমন জ্বীন দের আহ্ববান করে।
– আলিক্স চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে ঐশোর্য তুমি এটা করতে পারোনা।
– ৭ টা আদি শক্তির অধিকারী জ্বী এসে নাফিসাকে আক্রমন করে। নাফিসাও আল্লাহু আকবার বলে ওর শক্তি প্রয়োগ করে। নাফিসার চুল থেকে হাজার হাজার সাপ বের হয়ে আসে। সব গিয়ে ৭ জ্বীনকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।
– কিন্তু ওরা ৭ জ্বীনে এক জ্বীনে রুপান্তরিত হয়ে দাড়িয়ে যায়। সাপগুলোও একটি বিশাল সাপে পরিনিত হয়।
– আলিক্স চিৎকার করে বলে মাই লড আপনি মস্ত বড় ভুল করে ফেলেছেন আজ। নাফিসা শক্তি শালী হতে পারে কিন্তু ও বয়সে খুবই ছোট যার জন্য সময়ের অভাবে সে গুলো প্রয়োগ শিখে নি। আলিক্সের কথা শুনে আলবার্ট বসে পরে।
– জ্বীনটা একটা তীক্ষ্ণ ধারালো সর্বধারা অস্ত্র নিক্ষেপ করে নাফিসার দিকে। নাফিসা যানেনা কোন মায়া দিয়ে এটাকে প্রতিহত করবে। এমন সময় মারিয়াম এসে ওর পুরো শরীর অস্ত্রর সামনে নিজেকে বলি দেয় এবং মারিয়ামের শরীর ছিন্ন ভিন্ন হয়ে আগুনে পুরে ভষ্ম হয়ে যায়। নাফিসা মারিয়াম মা বলে ডেকেই ঐ জ্বীনের মুখোমুখি দাড়িয়ে যায়………..
চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here