ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)পর্বঃ২০

0
830

#ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ২০




” নাফিসা রুপকে আগুনের গোলক ছুড়ে মারে। রুপও একটু সরে যায়। যার জন্য রুপ একটুতেই বেঁচে যায়।
-নাফিসা………! বলে একটা চিৎকার দিয়ে রুপ রাগের চোটে নাফিসার কাছে হাজির হয়ে আবার একটা চড় বসিয়ে একটা কাচের জারে বন্দী করে ফেলে নাফিসাকে।

– এত্ত ক্ষমতার দেমাক না তোমার! আগে তোমাকেই শায়েস্তা করব জাষ্ট ওয়েট….. এ্যান্ড সী।
“”
– এদিকে নাফিসা জার বন্দী হয়ে ছটফটানি শুরু করে দিল।



– মার্ক রুপের কাছে এসে বলল প্লিজ ওকে ছেড়ে দাও রুপ। ও একটু বদমেজাজি মেয়ে তুমি কিছু মনে করনা।
– তোমাদের আষ্কারা পেয়ে পেয়ে ওর এতটা অবনতি। ওর সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাই ও আমাকে…… এই রুপকে আঘাত করতে আসে। ওর ভিমরতি যদি না ছুটাইছি……….. সব জায়গায় পাগলামো?




– রুপ মার্কের সাথে ওর বাসায় এসে বসে পড়ল সোফায়।

– অলিভিয়া রুপকে দেখে রাগের সাথে বলল ও এখানে কেন মার্ক?

– মেহমান হয়ে এসেছি অলিভিয়া সাওগাত করবা না আমায়।(রুপ)

– অলিভিয়া তেড়ে রুপের কাছে গিয়ে বলল তোমার সাহসতো কম না আমাদের রুমে আসছ!

– কি করব অলিভিয়া নিজের ওয়াইফ ♥
তোমাদের কাছে আছে ওকে ছাড়া ক্যামনে থাকি বল।(রুপ)

– Just shut up…….(অলিভিয়া)

– You shut up অলিভিয়া……. যেমন আছো তেমন থাক। কিছু দরকারে এসেছি। তোমাদের মুখ
দেখা আমার এত্ত ইচ্ছা নেই।




– এমন সময় নেগার দৌড়ে আসে মম বলে ডাকতে ডাকতে। নেগার এসেই রুপের হাত থেকে কাঁচের জার টি হাতে নিয়ে মম মম বলে চিৎকার করতে থাকে।



– নিজের মাকেই চিনে না কিন্তু পালিত মায়ের জন্য কি অদ্ভুদ টান বলেই রুপ নেগার কে কাছে নিয়ে বলল তোমার মম এখানে তুমি কি ভাবে জানলা বাবা?
– নেগার কোন কথা না বলে একনজরে নাফিসার দিকে তাকিয়ে ফিকরে কাঁদছে। কি অদ্ভুদ মায়া ২ জনের ভিতর।




– আমি নেগারের কান্না দেখে বার বার জারে ধাক্কা দিচ্ছি কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে। শেষে ক্লান্ত হয়ে বসে পড়লাম।

– নাফিসার কান্ডড দেখে রুপ হেঁসে ফেলে।
অবেশেষে রুপ নাফিসাকে শেষে মুক্তি দিল।

– আমি আমার মধ্য এক নিমিষেই ফিরে আসতেই নেগার আমার কোলে ঝাপিয়ে পড়ল। কি হয়েছে বাবা কাঁদছো কেন! এই তো তোমার মম বলেই নেগার কে কয়েকটা কিস করতেই ও থেমে যায়।




– কোন দিন দেখলামনা ঠিকমত নিজের শাড়ী সামলাতে আর সে কিনা বাচ্চা সামলাচ্ছে……. ওর দ্বারা এটা কেমনে সম্ভব মার্ক? দেখছি বাচ্চা মানুষ করার মত ওর যোগ্যতা হয়ে গেছে তাহলেতো এবার ওকে বাচ্চা দিতেই হয়।



– মার্ক শুধু রুপের কথায় মুচকি হাসি দিল।

– আমি রেগে রুপের কাছে গিয়ে বললাম ঐ হুনমান আমি তোমার কোন জন্মের শত্রু ছিলাম দেখে তুমি আমার সাথে বদলা নিচ্ছো?
তুমি কিসের বাচ্চা দিবা………!



– আমার বাচ্চা! এই ধর ছোট্ট রুপ কিংবা নাফিসা। শত্রুতো তুমি ছিলানা নাফিসা……. তুমিতো আমার প্রিয়তমা ছিলে….♥

– মুখ সামলে কথা বলুন আমি আপনাকে কোন দিন দেখিইনি।

– তাই!

– হুম তাই।




– রুপ তুমি ওর কথায় কিছু মনে করনা ওর মাথার একটু তার ছিড়া।(মার্ক)

– একটু না মার্ক পুরটাই তার ছিড়া। (রুপ)

– ভাল হচ্ছেনা কিন্তু বলেই আমি চিৎকার দিলাম। এরা আমাকে পাগল বলছে।



– রুপ আমরা এখান থেকে আজই চলে যাচ্ছি…. তুমি চিন্তা করনা। ও আর তোমাকে জ্বালাবেনা।

– তোমরা যেতে পারো কিন্তু নাফিসা কোথাও যাবেনা…. এখানে এবং আমার কাছে থাকবে।

” ও আমাদের সাথেই যাবে দেখি তুমি কি করতে পারো!(অলিভিয়া)




– আচ্ছা রুপ তুমি বার বার কেন বলছো ও তোমার স্ত্রী! রাফসানকেও বললা। তোমার কাছে কোন প্রমান আছে?(মার্ক)


– রুপ নাফিসার দিকে তাকিয়েই বলল সম্রাট আলবার্ট এর মেয়ে প্রিন্সেস এলিনার একমাত্র সন্তান নাফিসা। যে ৭ বছর আগে সম্রাট আলবার্টের কাছে যায় মারিয়ামের মাধ্যমে। আমি যা জানি তোমরা তা জানো না। যদি তোমরা ওর কাছে থাক তাহলে তোমাদের জিবনও বিপন্ন হবে মারিয়ামের মত। এক নাফিসাকে বাচাতে গিয়ে অলরেডি ৫ জিবন শেষ হয়ে গেছে। তাই তোমরা ফিরে যাও আর সম্পূর্ন ওর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দাও।

– মার্ক সহ সকলে অবাক হয়ে গেল সব তথ্য শুনে। তবুও অলিভিয়া বলল আমরা নাফিসাকে নিয়েই যাব।

– ওকে চেষ্টা করে দেখ।(রুপ)



– অলিভিয়া আর মার্ক নাফিসাও নেগার কে নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। ওদের কাজ দেখে রুপ শুধু হাসল।



– কিন্তু কিছুক্ষন পর নাফিসা ছিটকে এসে রুপের সামনে পরে গেল।

– এত্ত জোড়ে ব্যাথা পেলাম যা কল্পনার বাহিরে।

– মার্ক অলিভিয়া বা নেগার কাউকে দেখতে পাচ্ছিনা। সব এই লোকের কাজ।
– আমি করুন গলায় বললাম প্লিজ আমার মেয়েটার কাছে যেতে দিন….. ও আমাকে ছাড়া থাকতে পারেনা।


– নেগার আর কিছু বছর পর ওর আপন মায়ের কাছে ঠিকি ফিরে যাবে। মাঝখান থেকে শুধু তুমি কষ্ট পাবে আর আমার সামনে কান্না করবে তাই ওর জায়গায় ও চলে গেছে। ওরাই ওর দেখাশুনা ভালভাবে করতে পারবে।



– রুপের কথা শুনে আমি এতটা ক্ষেপে যাই যে নিজের রাগ আর কন্ট্রোলে রাখতে পারলাম না। ওকে খুব জোড়ে একটা ধাক্কা দেই এতে ও ছিটকে পরে যায়।


– রুপ সাথে সাথে গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বলল তুমি কোনদিন শুধরানোর মেয়ে নও নাফিসা। দারাও তোমার কি হাল করি বলেই কি যেন আমার দিকে ছুড়ে মাড়ল আর আমি বেহুশ হয়ে পরে গেলাম।




– রুপ নাফিসাকে নিয়ে বসে আছে। কত দিন পর ওকে পেলাম আর ও আমার সাথে লড়াই করতে ব্যাস্ত!




– সকালের দিকে আমি জেগে উঠে দেখি আমি রুপের বুকের মধ্য। চট করে উঠে পড়লাম আমি।


– কি হল উঠলা কেন! ভাল লাগছেনা বুঝি আমাকে?


– দেখুন মিষ্টার রুপ আপনি আপনার শক্তির অপব্যবহার করছেন। আর আমি আপনার স্ত্রী নয়। তাই আমাকে যেতে দিন।




– ওকে রিলাক্স আমার সাথে একবার আমার বাসায় চল তার পর তুমি যদি চাও তাহলে চলে এসো আমি আর তোমাকে আটকাবোনা।


– এটা ছিল রুপের ফাঁদ যাতে সহজেই নাফিসা পা দিল।

– ওকে… কি আর করা….. আমিও এর শেষ দেখতে চাই বলেই রুপের সাথে ওর বাসায় গেলাম।




– বাসায় ঢোকার সাথে সাথে মিনা এসে বলল রুপ তুই কই ছিলি। লুসি বলল যে তুই নাকি বাহিরে গেছিস বলেই নাফিসার দিকে তাকালো। এটা কে রুপ?


– তোমার বউমা MoM

– মানে?

– মানে সোজা She is my wife…… ওকে বিয়ে করেছি আজ। তাই ও আমার সাথেই থাকবে।


– রুপের কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। এ বলে কি।



– মিনা যেন বিস্বাসই করতে পারছেনা রুপ এমন কান্ড করবে।
– রুপ নাফিসাকে হাত ধরে ওর রুমে নিয়ে গেল এবং দরজাটা লাগিয়ে দিল।
– আমি রুমে দাড়িয়ে আছি। এরা খুবই উচ্চবিত্ত। কি নেই এদের।
– নাফিসা দাড়িয়ে আছো কেন বস এখানে।
– আমি বসতেই ও একটা আলব্যাম আমার সামনে দিয়ে বলল আমার স্ত্রীর♥ ছবি আছে এখানে তুমি দেখতে পারো।




– আমি দেখতে লাগলাম অনেক সুন্দর একটা মেয়ের বিভিন্ন স্টাইলে ছবি তুলা।

– তোমার স্ত্রীর নাম কি রুপ?

– নাফিসা♥

– নাফিসা! বলেই ওর দিকে তাকালাম। আমি রুপের দিকে তাকাতেই ও চোখ সরিয়ে নিল। ও কাঁদছে। রুপ তুমি কাঁদছো কেন? তোমার স্ত্রী কই।


– সেতো আমার সামনেই বসে আছে শুধু চিনতে পারছেনা কিছু।(রুপ)

– তুমি সব পিক গুলো দেখ। আর দেখ কাউকে পরিচিত পাও কিনা এর মধ্য। ( রুপ)

– আমি আবার পিক দেখতে শুরু করলাম। একটা জায়গায় আমার চোখ আটকে যায়। মারিয়াম আর রুপের স্ত্রীর পিক একসাথে। তাও সেটা একটা নয় অনেক গুলো।

– মারিয়াম মায়ের পিক তোমার কাছে কেন বা তোমার স্ত্রীর সাথে কেন রুপ? সে তো আমার পালিত মা!


– রুপ যেন আর ধর্য্য ধরতে পারলনা। সোজা নাফিসাকে জড়িয়েই একটার পর একটা কিস ♥♥♥♥করতে লাগল আর বলল নাফিসা! সত্যিই তুমি আমাকে চিনতে পারছোনা?

– আমি বিমোহিত হয়ে গেলাম। এ কেমন স্পর্শ যা আমায় পাগল করে দিতে চায়। মনে হয় কতযুগ ধরে এই স্পর্শের অপেক্ষায় আছি। আমার ভিতরের ক্ষুদা বেড়েই যাচ্ছে। নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম রুপ ছাড় আমায়……



– রুপ চট করে ছেড়ে দেয় আমায়। আমি ওর চোখে কখনও মিথ্যা দেখিনি। সব কিছু বিস্বাস করতে মন চাচ্ছিল। কিন্তু এত্ত সহজে ওকে কিছু বললাম না।




– আমাকে সময় দাও রুপ। সব কিছু আমার কাছে অপিরিচিত।


– ওকে যত খুশি সময় নাও নিতে পারো কিন্তু শেষে যেন না শুনি আমি…… কথাটি বলেই ওর চোখ ২টি জ্বলে উঠল।


– মহাঝামেলায় পড়ে গেলাম তো।




– আমি রুপের রুমের সব কিছু এক এক করে দেখতে লাগলাম। এমন সময় নিচে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ পেলাম। আমি রুম থেকে বের হয়ে সিড়ির কাছে আসতেই একটা মেয়ে এসে আমায় ধরে জোরে নিচের দিকে ছুড়ে মারল।
– আমিও অচমকায় এসব কান্ড ঘটে যাবে ভাবতেও পারিনি। আমি নিচে গিয়ে পরে বেশ আঘাত পেলাম।



– মেয়েটি আবার এক পলকে এসে আমায় আঘাত করে। আমিতো কিছু বুঝতেই পারছিনা আমাকে কেন আঘাত করছে। তবে কি রুপের ফাঁদে আমি পা দিলাম?

– মেয়েটি এবার বিশাল বিশাল ২ টা ডানা বের করে আমার দিকে তেড়ে আসে আর রুপ এক পলকে এসে মেয়েটির গলা ধরে।

– এই তোমার সাহস কি করে হয় ওর গায়ে হাত দেওয়া….. একদম শেষ করে দিব যদি আর একবার ওর গায়ে হাত দাও।(রুপ)





– লুসি চিৎকার দিয়ে বলল এত দিন আমায় avoid করছ কিছু বলিনি কিন্তু এই মেয়েকে তুমি কিভাবে বিয়ে করলে রুপ……. আমিতো ওকে কিছুতেই ছাড়বোনা!

– ও সাধারন মেয়ে না ও আমার স্ত্রী নাফিসা যে তোমার অনেক অনেক আগে আমার জিবনে এসেছে।
” আমি তোমাকে কোন দিন বলেছি যে ভালবাসি তোমায়! না কোনদিন বলেছি তোমাকে বিয়ে করব না কখনও আমার কোন আচরন দেখে তোমার মনে হয়েছে যে আমি তোমাকে চাই?



– আমি কিছু শুনতে চাইনা তুমি শুধু আমার আমিতো ওকে…………. বলেই রুপের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নাফিসাকে আক্রমন করতে এল লুসি।

– আমিও প্রস্তুত ও আমার কাছে আসতেই ওকে ধরাসায়ী করে ফেলি। ওকে একটা বিড়াল বানিয়ে দেই….. দেখ কেমন মজা লাগে আমার সাথে লাগা?



– রুপ আমার কাজ দেখে হাসতে হাসতে বলল তোমার বাচ্চামো স্বভাব এখনও গেল না। ওকে মুক্ত করে দাও নাফিসা….. ও আমার কাজিন হয়। এই বাসার মেহমান। মেহমানের সাথে এরকম ব্যবহার করতে নেই।



– আমি রুপের কথা শুনে বললাম কেন? ও আমাকে আঘাত করবে আর আমি বসে বসে দেখব!

– ওকে……… এর পর আর দেখতে হবেনা। এবারের মত ছেড়ে দাও। নেক্সট বার করলে এর থেকেও বড় শাস্তি দিও ওকে!

– ওকে…….. মনে থাকে যেন! বলেই লুসিকে মুক্ত করে দিলাম।

– নাফিসার কাজ দেখে মিনা বেশ চটে যায়….. এসে সোজা নাফিসাকে চড় মেরে বলল তুমি ওর গায়ে হাত তোল কি করে?

– আমি মিনার উপর যাদু প্রয়োগ করতেই রুপ উপর থেকে বলল নাফিসা ভুলেও না…….. ওটা আমার mom মানে তোমার শাশুড়ি হয়।
তাই ভুলেও না………

– কোন জায়গায় এসে পড়লাম রে বাবা আমায় কিছু বললে আমি জবাব দিতে পারবনা দেখছি।




– সন্ধায় বাসায় মিটিং বসে গেল। আজগড় আর রোজ ও এসেছে। সিড ও মিনা বসে আছে। রুপম ও বসে আছে….. ছেলেটা বড় হয়ে গেছে। আর ছোট বলে কেউ ভুল করবেনা।
– রুপ নাফিসাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে নিচে নামাল।



– রুপ এটা আমাদের নাফিসা?(সিড)

– হুম dad….. She is my Nafisa ♥

– এই মেয়ের তো অন্য চেহেরা তাছাড়া স্বভাব একদম জংলির মত। এটা কখনও নাফিসা হতে পারেনা।(মিনা)

– ঐ আমি জংলী! আপনার থেকেও আমার সুরত অনেক ভাল। ব্যাবিলন থেকে আমি শিক্ষা নিছি। আপনি আমার কাছে চুনোপুঁটি বুঝছেন?

– রুপ কি আর বলবে মার্ক আর অলিভিয়া একে জংলীই বানিয়ে ফেলছে। ওর সব কিছু প্রশ্রয় দিয়ে দিয়ে আজ ওর এই অবস্থা।



– এ কখনই নাফিসা না( মিনা)

– সবাই যখন নাফিসাকে অস্বীকার করতে লাগল তখন আজগড় বলল এই আমাদের নাফিসা………

– যাহোক আজগড় ওকে চিনতে পেরেছে বলেই রুপ স্বত্বির নিঃস্বাস ফেলল।

– আজগড় কি বলছো তুমি এটা সম্ভব না(রোজ)

– সব সম্ভব? ওয়েট আমি প্রুভ করছি…….
– নাফিসা তোমার মারিয়াম মা কোথায় তাকে দেখছিনা যে……..

– আজগড়ের কথায় নাফিসা আর রুপ ২ জনেই নিস্তব্ধ হয়ে যায়।

– নাফিসা সেখান থেকে নিশব্দে উঠে রুপের রুমে চলে যায়।

– রুপ কি বলবে…….. মারিয়াম মারা গেছে আজগড়…….।

– কিহ্! কবে?

– কিছুদিন হল……

– আজগড় এবার বলল মারিয়ামের মৃত্যর জন্যই ওকে ফিরে পেয়েছি আমরা তাছাড়া ও জিবিত থাকতে রুপের কাছে কখনও নাফিসাকে ফিরতে দিত না।



– রুপম উল্লাসে বলে উঠল তাহলে এটাই আমার sis…?

-ইয়েস রুপম ( রুপ)

– ওর সাথে লাগতে যেওনা যেন। ও ছন্ন ছাড়া শক্তিশালী একটা মেয়ে হয়ে গেছে। ও কাউকে আঘাত করতে ২ বারও ভাববেনা।(রুপ)

– এতটা পরিবর্তন হঠাৎ? (সিড)

– বেশি আদর পেয়ে বাদর হয়ে গেছে…..
শাসন করেনি কখনও কেউ…… ২ জন কে জুটিয়েছিল ঠিক ওর মত। কিভাবে যে নাফিসার জ্বালাতন সহ্য করত ওরা সেটা ওরাই ভাল জানে।(রুপ)





– আমি রুমে এসে বসে আছি। এমন সময় একটা মেয়ে এসে বলল কেমন আছিস নাফিসা?

– কে তুমি? আর আমাকে তুই করে কেন বলছো!

– তুই কি সব ভুলে গেছিস?(রোজ)

– জানিনা বলেই অন্য দিকে মুখ করে বসে রইলাম।

– আমার নাম রোজ? আমার মনে হয় তুই কিছু ভুলিসনি আমাদের শাস্তি দিতেই এসব করছিস বলেই আমার হাত ধরল।

– অসহ্য লাগছে….. আমার হাত ধরেছে কেন?

– এবার আমাকে জড়িয়ে ধরতেই আমি ওকে জোড়ে ধাক্কা দেই।

– রোজ ছিটকে পরে যেতেই রুপ এসে ধরে রোজ কে….

– রোজ ঠিক আছিস?(রুপ)

– রোজ শুধু চোখের জল ফেলে বলল হুম।




– নাফিসা তুমি পাগল হয়ে গেছ। তুমি কি চিড়িয়াখানার জন্তু জানোয়ার হইছ দিন দিন?
যে সবাই কে আক্রমন করছো! She is my sister and she pregnant……” আমি যদি ঠিকমত না আসতাম ওর কি হত?



– আমায় কেন জড়িয়ে ধরবে আমি বার বার নিষেধ করা স্বত্তেও!

– ওতো তোমাকে ভালবেসে জড়িয়ে ধরেছে!

– ভালবাসা মাই ফুট…… আমার এখানে ভাল লাগছেনা আমার মেয়েকে এনে দাও।

– যে একজন মা কে সম্মান করতে পারেনা তার কোন মা হওয়ারও যোগ্যতা নাই।(রুপ)

– আমার মেয়েটা কোথায় আছে সেটার জন্য আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি…. আর এ আমাকে লেকচার শুনাচ্ছে….. ওর লেকচার শুনানো বের করছি বলেই ড্রেসিং টেবিল থেকে একটা বক্স রুপের দিকে ছুড়ে মারলাম।

– নাফিসার কান্ড দেখে রুপ এবার চটে গেল। এই তোমার বাড় বেশি বেড়েছে না! কিভাবে তোমার ডানা ছাটতে হয় সেটা আমি ভাল করেই জানি।




– ওর কথা শুনে আমি ভিষন রেগে যাই…. চোরের মায়ের বড় গলা…….. দেখাচ্ছি বলে সব জিনিস পত্র ভাঙ্গতে শুরু করলাম।

– রুপ এসে নাফিসাকে শক্ত করে ধরল। নাফিসাও ওর বুকে কিল, খামচি একের পর এক দিতে লাগল। রুপ কিছু না বলে সব সহ্য করে নিচ্ছে। কারন নাফিসা বেশ চটে গেছে এখন কিছু বললে পরে কারও উপর সে শোধ নিবেই।




– নাফিসাকে রুপ জড়িয়ে ধরাতে সেখান থেকে রোজ চলে যায়।

– আমার মেয়েকে আমার কাছে এনে দাও প্লিজ….. ও আমাকে ছাড়া থাকতে পারেনা। তুমি যা বলবা আমি তাই শুনব তাও আমার মেয়েকে এনে দাও…. আমার খুব কষ্ট হচ্ছে রুপ বলেই নাফিসা রুপকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল।

– ওকে আমি নেগার কে এনে দিব….. চুপ কর।

– নেগার নাম করেও হোক তবুও নাফিসা রুপকে জড়িয়ে ধরেছে এটাই অনেক।




– আমি ঘুমিয়ে ছিলাম…… ঘুম থেকে জেগে উঠতেই দেখি নেগার আমাকে জড়িয়ে ঘুমে আছে।



– আমি নেগার কে দেখে এতটা খুশি হলাম যে দৌড়ে গিয়ে রুপকে জড়িয়ে ধরে কয়েকটা কিস করলাম। আমি জানিইনা সবাই সেখানে ছিল।

– নাফিসা ছাড়! এখানে সবাই আছে……. লজ্জার একটা ব্যাপার আছে তো নাকি!(রুপ)

– ধুর কিসের লজ্জা? লন্ডনে তো সবার সামনে এভাবে জড়িয়ে ধরি।

– এটা লন্ডন না বাংলাদেশ বুঝেছো?

– আমি ওকে ছেড়ে দিয়ে দেখলাম সবাই মাথা নিচু করে আছে।
– যাক বাবা আমি কি করলাম…… তার জন্য সবাই চোরের মত মাথা নিচু করে আছেন আপনারা?

– sis আসলে তুমি ও ভাবে ভাইয়াকে সবার সামনে জড়িয়ে ধরে……. কি……..স ♥করলে যেটা আমাদের কাছে বেশ লজ্জাজনক ব্যাপার।( রুপম)

– অহ্ Sorry বলেই উপরে চলে আসলাম।




– এই মেয়েকে নিয়ে থাকা আমার পক্ষে একদম অসম্ভব বলে মিনা সেখান থেকে চলে যায়।

– আজগড় বলল একটু সময় লাগবে তবে ঠিক হয়ে যাবে ও। এতটুকু আমাদের ছাড় দেওয়া উচিত ওকে।




– পরদিন সকালে আমি নাস্তা করার জন্য নেগারকে নিয়ে নিচে নামতেই রুপম হা করে আমার দিকে তাকাল। শুধু রুপম না সবাই। শুধু রুপ রাগের চোটে ওর চোখ জলজল করছে।

– আবার কি করলাম রে বাবা…… এরা তো আমাকে শান্তি দিবেনা দেখছি!

– রুপ দেখল নাফিসা একটা টু কোয়াটার জিন্স পান্ট আর একটা টপস্ পরে দাড়িয়ে আছে। নাভি দেখা যাচ্ছে…. আর চুল হাটু অবদি ছেড়ে দেওয়া।পোষাকের কি শ্রী!

– নাফিসা এগুলো কি পড়েছিস……… লজ্জা শরমের মাথা কি খেয়েছিস…… এতগুলো মানুষের সামনে!(রোজ)

– সিড তো খাওয়া ছেড়ে উঠেই গেল আর আজগড় মাথা নিচু করে আছে।

– কেন কি পড়েছি আবার?



– এই মেয়ে দেখছি আমার মান সম্মান সব খাবে বলেই রাগে গজ গজ করতে করতে নাফিসার কাছে গেল রুপ………
চলবে——

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here