সবটা অন্যরকম♥ পর্ব_১৪

সবটা অন্যরকম♥
পর্ব_১৪
Writer-Afnan Lara
.
ওড়নাটা বিছানার উপর ছুঁড়ে মেরে দিবা এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে
এটাকে কুচি কুচি করে কেটে না ফেলা অবদি রাগ যাবে না তার
.
আসবো দিবা?
.
দিবা দরজার দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো আরিফ দাঁড়িয়ে আছে,,দিবা ওকে আসতে বলে উঠে দাঁড়ালো
আরিফ দিবার হাতে পাঁচশত টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললো একটা ভালো মানের ওড়না কিনতে,জর্জেটের লাল রঙের
দিবার যেহেতু ওড়নাটা পছন্দ হয়নি,,ভাই হিসেবে আরিফেরও তো কিছু দেওয়া উচিত
.
ভাইয়া আমার মনে হয় এটা আপনার ভাইয়াকে দেওয়া উচিত, উনার হয়ত কাজে লাগতে পারে
.
তোমার কি মনে হয়?আমি ভাইয়াকে এই টাকা দিলে ভাইয়া নেবে??ভাইয়া জানে আমার চাকরি নাই,তার মানে টাকাটা আরিশা ছাড়া আর কেউ দেয়নি,আরিশার দেওয়া টাকা ভাইয়া কখনওই নেবে না,,পারলে এই টাকা দিয়ে তাকে গিফট করতে পারতাম কিন্তু তাও ভাইয়া নেবে না,,ভাইয়া আমার থেকে একদিন চেয়েছিলো আমি যেন চাকরি পেয়ে তার জন্য নিজের কামাইতে গিফট কিনি ঠিক সেদিন তিনি আমার থেকে কিছু নেবেন
.
দিবা টাকাটা নিতে চাইলো না তাও আরিফ জোর করে হাতের মুঠোয় ঢুকিয়ে দিয়ে বললো”আরিশা আমাকে মাঝে মাঝে হাত খরচ দেয়,আমি মানা করলেও শুনে না,,তো এই টাকাটা পুরান শার্টের পকেটে রয়ে গিয়েছিলো,দুইশ আশি টাকা ছিলো সেখানে,বাকিটা আমি মিলিয়ে পাঁচশ করেছি,,ওড়নার দাম এত হবে না,বাকি যেটা থাকবে সেটা দিয়ে নিজের জন্য চকলেট কিনে নিও,কেমন?”
.
দিবার চোখে পানি এসে গেছে,ইভান কখনও ওর সাথে এভাবে কথা বলেনি,,অথচ আজ আরিফের এমন ব্যবহারে তার কান্না পাচ্ছে,আরিফ আর দাঁড়ালো না,মিনিকে খপ করে ধরে চলে গেলো নিজের রুমে
দিবা টাকাটা নিয়ে ভাবলো কি করবে,,খালামণি সে সময়ে এসে হাজির,,বললেন টাকা দিয়েছে ভালো,কাল মার্কেট সকাল সকাল খোলা থাকবে কিনা তা নিয়প সন্দেহ আছে,তাই এখনই গিয়ে সামনের একটা বস্ত্রবিতান আছে সেখান থেকে দিবা ওড়না নিয়ে আনলে ভালো হবে
.
দিবা রাজি হয়ে গেলো,,খালামণি বললেন সমস্যা নাই,বাসার নিচে খালু আছে,,একা গেলেও সমস্যা হবে না,দোকানটা কাছেই
দিবা ওড়না মাথায় দিয়ে বের হওয়ার সময় ওর চোখে পড়লো আহনাফের দেওয়া মোটা ওড়নাটা,,যাওয়ার পথে সেই ওড়নাটাও নিয়ে নিলো সে কি সব মনে করে
বাসার নিচে এসেই দেখতে পেলো খালুকে,খালু কয়েকজন তার বয়সী লোকের সাথে চায়ের আড্ডা দিচ্ছেন,তার হাতে ধোঁয়া ওঠা গরম চা আর মুখে হাসি,,দিবাকে খেয়াল করেননি,,তার বন্ধুদের সাথে কথা বলায় মেতে আছেন তিনি আপাতত
দিবা চুপচাপ সামনের দিকে এগিয়ে গেলো,,সামনে কটা মুদি দোকান আর সবার শেষে একটা জামাকাপড়ের দোকান,যেটার কথা খালামণি বলেছিলো
দোকানটার নাম “বধুয়া”
দিবা ভেতরে ঢুকতেই দোকানদার রা শুরু করলো পহেলা বৈশাখের জামাকাপড় দেখানো,দিবা আগেই বললো সে জামা কিনবে না,সে একটা ওড়না কিনবে
নিজে পছন্দ করে একটা লাল ওড়না কিনলো সে,দাম ১৫০টাকা
আর থাকে ৩৫০ টাকা,সেগুলো হাতে নিয়ে আরেক হাতে ওড়নার প্যাকেট ঝুলিয়ে দিবা বধুয়া থেকে বাহিরে পা রাখলো,,এপাশে তাকাতেই তার নজরে আসলো একটা টেইলারের দোকান,,আহনাফের দেওয়া ওড়নাটা উপরে তুলে দিবা মুচকি হাসলো
আহনাফ আজ সবার জন্য কিনেছে ঠিক তবে নিজের জন্য কেনে নাই এটা দিবা খেয়াল করেছে
ওড়নাটা নিয়ে সে এবার হাজির টেইলরের দোকানে
দোকানের মালিক খালুর বয়সী,,,সাথে আছে জেয়ান দুটো ছেলে,,তারা নিচের দিকে তাকিয়ে জামার মাপ কাগজে লিখছে আর রঙিন ছক দিয়ে দাগ দিচ্ছে,,ভেতরের রুম থেকে সেলাই মেশিনের গটগট আওয়াজ ভেসে আসছে,,জুতা খুলে দিবা ভেতরে ঢুকলো
দোকানের মালিক যিনি,, তিনি এতক্ষণ তার দোকানের ছোটখাটো টিভিটাতে খবর দেখছিলেন,কেউ এসেছে দেখে এদিকে ফিরে বসলেন তিনি
.
আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল,কেমন আছেন?
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,ভালো আছি,,তুমি এই এরিয়ায় নতুন নাকি?আগে তো দেখিনি
.
হ্যাঁ আমি ঐ বাসার
.
তোমাকে আহনাফ বাবার সাথে কয়েকবার দেখেছিলাম,,কে হয় তোমার?
.
খালাতো ভাই
.
ওহহহহ হো!!আগে বলবা না,তাহলে তো তুমি আমার মা হও,,বসো বসো
.
নাহ বসবো না,,আসলে আমার তাড়া আছে,এই কাজটা যদি বুঝে নিতেন,,
.
হুম বলো কি করতে হবে
.
এটা একটা ওড়না,,এটা দিয়ে আপনারা একটা পাঞ্জাবি বানাতে পারবেন??ওড়নাটা মোটা আর অনেক বড়,,আমার মনে হয় অনায়াসে বানানো যাবে
.
হুম ঠিক ধরেছো,,বানানো যাবে,তবে হাতা ফাইভ কোয়াটার হবে
.
সমস্যা নাই,,বোতাম তিনটা দিবেন,,আর কাল সকালে দিতে পারবেন এটা??
.
সকালে????
.
প্লিস আঙ্কেল,আমার খুব উপকার হয়,,আমি আপনাকে ফিস বাড়িয়ে দেবো,,,এটা আমার খুব দরকার,জানেন তো কালকেই পহেলা বৈশাখ,প্রথম দিন শেষ হয়ে গেলে জামাটা দিয়ে কি হবে বলুন
.
এখন রাত নয়টা বাজে,,কাল সকাল নয়টায় এসে নিয়ে যেও,তোমারে মা কইছি তোমার কথা তো আর ফেরাতে পারুম না,,তবে আমাকে একদিন বিরিয়ানি খাওয়াইতে ওইবো,, এত জলদি কাজ করে দেওয়ার খাতিরে
.
আচ্ছা দেবো,,এই টাকা গুলো রাখেন এখন,,আশা করি আর লাগবে না

দিবা এক দৌড়ে বের হতেই বাহিরে আহনাফের সাথে এক ধাক্কা খেয়ে স্টেচু হয়ে গেলো সাথে সাথে
.
আহনাফ কপাল ঘষতে ঘষতে এদিক ওদিক দেখে বললো”তুমি এখানে কি করো??”
.
দিবা আহনাফের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফেললো,কারন আহনাফের গায়ে কালো টিশার্ট আর পরনে নীল লুঙ্গি,সেটাকে আবার একটু উঠিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে
.
আহনাফ উঠানো লুঙ্গি ছেড়ে দিয়ে নড়াচড়া করে বললো”কি হলো বলো,,এত রাতে এখানে কি?”
.
এমনি ঘুরতে বের হইছিলাম
.
তোমার হাতে ওটা কি?
.
আপনাকে দেখাবো কেন?
.
কথাটা বলেই দিবা এক দৌড় দিলো আর থামলো না
আহনাফ ওর চলে যাওয়া দেখছে,সে বেরিয়েছিলো আদা চা খাবে বলে,আর এখানকার তার কিছু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবে বলে,দিবা এই টাইমে এখানে কি করছিলো সেটাই মাথায় ধরছে না
নিশ্চয় কিছু কিনতে এসেছিলো,কিন্তু ও টাকা পাবে কই??
অবশ্য এক গুনী লোক বলেছিলো”নারীরে ধরে এক ঝাঁকুনি দিলেই টাকার রহস্য পাওয়া যাবে,তারা হাজার সমস্যা তেও টাকা জমাতে পারে”
এই মেয়েটাও তেমন আই থিংক,,কিন্তু কিনলো টা কি??
.
দিবা হাঁপাতে হাঁপাতে নিজের রুমে এসে হাজির,,মনে খুশি লাগছে এই ভেবে যে এক ঢিলে দুই পাখি মরলো
ঐ ঘাউড়ার দেওয়া মোটা ওড়না দিয়ে ওরেই পাঞ্জাবি বানাই দিলাম আর আমি আমার মনমত ওড়নাও কিনে নিলাম,,ব্যস হয়ে গেলো,,
আরে আমাকে গিফট দেওয়ার কি দরকার ছিলো,,আমি জীবনে এই পহেলা বৈশাখ পালন করি নাই,আমাকে মা শুধু রোজার ঈদে জামা একটা কিনে দিতো,,এরকম সিজনালি কিনা লাগে নাকি,এগুলো হচ্ছে বড়লোকদের শখ,,আমাদের এসব মানায়?ঐ টাকায় ফল কিনে আনলেও ভালো হতো
কিনছে ভালো কথা,নিজের জন্য নিলো না কেন?
নিলে সবার জন্য নেবে আর নাহলে কারোর জন্য কেনার দরকার নাই

পরেরদিন ভোর হতে না হতেই দিবা আহনাফের রুমের উপর কড়া নজর রাখা শুরু করে দিয়েছে
আহনাফ নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়েছে,দিবা নাস্তা টেবিলে রেখে ঘড়ির দিকে তাকালো,,আটটা বাজে তখন,,নয়টা বাজতে দেরি
আহনাফ রুম থেকে না বের হলে তো পাঞ্জাবি ওর বিছানায় রাখতে পারবো না
খালামণি, আরিফ আর খালু আসলেন নাস্তা করতে,,পান্তা ইলিশ,,বেগুন ভাজা,,শুটকি ভর্তা,শুকনো মরিচ দেখে সবাই হা হয়ে গেছে
দিবা সব রেডি করেছিলো
আরিফ নিজের প্লেট ছুঁয়ে বললো”তাই তো বলি সকাল সকাল ইলিশ মাছ ভাজার গন্ধ পাচ্ছিলাম কেন”
.
তুই একা একা এতসব করতে গেলি কেন?আমরা এরকম পালন করি না
আমাদের কাছে নরমাল দিনটা,,এত কিছুর সময় কই
.
আমরা করতাম বাসায়,তাই আজ করলাম,,নাও খাওয়া শুরু করো
.
খালু মাথা তুলে আহনাফের রুমের দিকে তাকিয়ে ওকে ডাক দিলেন দুই তিনবার,আহনাফ আলতো স্বরে বললো”পরে খাবো,আজ ঘুমাই”
.
তাই আর কেউ ডাকলো না ওকে,বেচারা আজকে ছুটির দিনে রেস্ট নিক এটা বাবা মা দুজনেই চান,,দিবা চুপচাপ খাবার খেয়ে নিজের রুমের বারান্দায় এসে মিনিকে নিয়ে বসে আছে,,কি করে আহনাফের রুমে প্যাকেটটা পাঠাবে সে??
ওদিকে নয়টা বাজতে না বাজতেই দিবা আবার বেরিয়ে পড়েছে পাঞ্জাবিটা আনতে,,,উনারা বানাতে পেরেছি কিনা কে জানে,খুব চিন্তা হচ্ছে
আস্তে আস্তে মিনিকে নিয়ে দিবা টেইলরের দোকানের সামনে এসে হাজির হলো,,ঢোক গিলে ভেতরে ঢুকতেই সেই আঙ্কেল ওকে দেখে মুচকি হেসে বললেন”ঠিক সময়ে এসে পড়লে তাহলে,,তবে আরও দশ মিনিট বসো,,কাজটা আর একটু বাকি”
.
দিবা মিনিকে কোলে নিয়ে বসলো চেয়ার টেনে
দশ মিনিট পরে আহনাফের পাঞ্জাবিটা মেলে ধরলেন টেইলর
দিবা মুচকি হাসলো,,এত সুন্দর হয়েছে বুঝিয়প বলার মতন না,,ওরড়াটায় ঢাক ঢোলের চিত্র প্রিন্ট করাছিলো,বোতাম আর কলার লাগানোয় আরও ভালো লাগছে
দিবা হাতে নিয়ে এক গাল হাসলো তারপর বললো”অনেক অনেক ধন্যবাদ আঙ্কেল”
.
বিরিয়ানির কথা কিন্তু ভুলতে পারবা না
.
মনে আছে,নিশ্চয় খাওয়াবো,এবং সেটা আজকেই
.
আইচ্ছা মা
.
দিবা মিনিকে এক হাতে ধরে আরেক হাতে পাঞ্জাবির প্যাকেট নিয়ে ছুটলো বাসার দিকে
আহনাফের রুম অবদি এসে হাঁপাচ্ছে দিবা,,এত জোরে দৌড়ায়নি আগে,,খালামণি তার রুমে,,ভাগ্যিস এখানে নেই,নাহলে কত প্রশ্ন করতো
.
দিবা আস্তে করে আহনাফের রুমের দরজাটা ফাঁক করলো,রুম অন্ধকার করে আহনাফ ঘুমাচ্ছে উপুড় হয়ে
দিবা পা টিপে টিপে রুমে ঢুকে প্যাকেটটা টেবিলের উপর রেখে আবারও চলে গেলো চুপিচুপি
কোনো শব্দ করলো না,,দরজাটা আবারও আটকে দিয়ে সে নিশ্চিন্তে নিজের রুমে এসে হাজির হলো,,তারপর কি ভেবে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো,আহনাফ ঘুম থেকে উঠলেই বারান্দার সামনের পর্দাটা সরাবে,,তাহলেই দিবা বুঝবে সে ঘুম থেকে উঠেছে
তার বারান্দা থেকে আহনাফের বারান্দা ঠিকঠাক দেখা যায়
বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করে চলে যাওয়া ধরতেই সে দেখলো আহনাফ তার বারান্দার আর রুমের সামনের পর্দাটা সরিয়েছে,দিবা এক দৌড়ে গিয়ে আহনাফের রুমের দরজাটা একটু ফাঁক করে দাঁড়িয়ে পড়লো
আহনাফ চোখ ডলতে ডলতে বাথরুমে চলে গেলো আবার,দিবার আর সহ্য হচ্ছে না,কখন খুলে দেখবে প্যাকেটটা
.
মুখ ধুয়ে আহনাফ বাথরুম থেকে বের হলো,,চেয়ারে ঝুলানো তোয়ালেটা হাতে নিতেই ওর চোখে পড়লো দিবার রাখা প্যাকেটটা,,চমকে প্যাকেটটা হাতে নিলো সে
তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে বিছানায় বসে প্যাকেটা থেকে পাঞ্জাবিটা বের করলো আহনাফ
ইয়া বড় হা করে এক মিনিট তাকিয়ে থাকলো তারপর ভাবলো পাঞ্জাবির ডিজাইনটা এত চেনা চেনা লাগছে কেন
অনেক ভেবে ওর মাথায় আসলো এটা তো দিবার জামার ওড়না ছিলো,সেম টু সেম সেই কাপড়ের পাঞ্জাবি নাকি ঐ কাপড়টা দিয়েই এই পাঞ্জাবি বানানো
এসব ভেবে আহনাফ দরজার দিকে তাকাতেই দিবা লুকিয়ে পড়লো
তাও এক ঝলক দেখে ফেললো আহনাফ,,দিবার গায়ে আহনাফের দেওয়া সেই জামাটা,,তবে ওড়না ভিন্ন,
আহনাফ পাঞ্জাবিটা হাতে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে দিবার রুমের দিকে গেলো সোজা
দিবা বই হাতে নিয়ে পড়তে বসেছে,,আহনাফ পাঞ্জাবিটা ওর সামনে ধরে বললো”এটা কি?”
.
পাঞ্জাবি
.
সেটা তো আমিও দেখছি,,কোথা থেকে এলো?
.
আমি কি জানি কোথা থেকে এলো,আপনিই কিনছেন এটা,,ভালো করে মনে করে দেখেন
.
এমন মার মারবো না একেবারে সত্য কথা বলার বুলি ফুটে যাবে তোমার,আমার দেওয়া ওড়নাটা দিয়ে পাঞ্জাবি বানিয়ে নিলা,তাও পরবা না ওড়নাটা
.
না পরবো না,, আপনার দেওয়া ওড়না আপনি পরেন,,বেশ লাগবে,,বোতাম তিনটা দেওয়াইছি,একবার পরে আসুন খুব ভাল্লাগবে
চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here