শেষ বিকেলের আদর❤️পর্ব : ৪

0
5002

#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
#পর্ব : ৪

🌸
সময় প্রবাহমান।দেখতে দেখতেই কেটে গেছে দুটো মাস।এর মধ্যে রোশনি আর অধিরের দেখা হয়নি।দুজন দুজনের কথা আর ভাবেও নি।যে যার জিবন নিয়ে ব্যস্ত।তবে কথায় আছে না,,,,নিয়তি চাইলে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।শুক্রবারের সকাল….. এই একটা দিনই সময় পাই রোশনি পুরো বাড়িটা পরিষ্কার করার।তাই সকাল থেকেই শুরু করেছে সাফ সাফায়ের কাজ।এ্যাশ কালারের টিশার্ট আর কালো প্লাজু পড়ে চুলগুলো উচুতে কাঠিতে পেচিয়ে লেগে পড়েছে রোশনি।রোশনি অপরিষ্কার কাপড় গুলো ডিটারজেন্ট দিয়ে ভিজিয়ে রেখে এসে ঝাড়ু হাতে তুলে নিলো।উদ্দেশ্য পুরো বাড়িতে জমে থাকা ধুলো ময়লা পরিষ্কার করা।চাচি এখন বাসায় নেই।আর আয়াশ গেছে টুসির সাথে খেলতে।

অন্যদিকে অধির তার দাদির কথা মত চলে এসেছে তার জন্যে পান কিনতে।ব্যাপার অনেকটাই অদ্ভুদ।সেই সাথে বিরক্তিরও।অধির চৌধুরিকে যে কোনো দিন পান কিনতে হতে পারে এটা যেন কল্পনাতেও আসার কথা নয়।কিন্তু কল্পনা নয় আজ সত্যি সত্যিই তাকে পান কিনতে আসতে হয়েছে।অধিরের এখন আদিলের উপর রাগ হচ্ছে।ওর জন্যেই তো এখানে আসতে হল অধিরকে।এই তো সকালের ঘটনা।শুক্রবার থাকায় একটা ফুলহাতা টিশার্ট আর ছেড়া স্টাইলিশ প্যান্ট পরেই নিচে এসেছে অধির।সকালে সবার সাথে বসে ব্রেকফাস্ট করার কিছুক্ষন পরেই সবাই মিলে বসে চা আর কফি খাচ্ছিলো সবাই।তখনই সাহিল বলে উঠলো….

___প্রিয়াঙ্কা আমাকে ফোন করেছিলো।তোর সাথে কথা বলতে চাই….

আদিল প্রোটিন শেকের বোতলটা একটু ঝাকিয়ে নিয়ে বলে উঠলো….

__কোন প্রিয়াঙ্কা…?

__কোন প্রিয়াঙ্কা মানে…? তোর গার্লফ্রেন্ডের কথা বলছি ইডিয়েট।

___হ্যা সেটাই তো বুঝতে পারছি না।কোনটা….? লম্বা করে ওইটা না গ্লাস ওয়ালাটা….?

আদিলের কথা শুনতেই সবার মনোযোগ এবার আদিলের দিকে।অধিরও বাকা চোখে একবার আদির দিকে তাকালো।এরপর রিয়া চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বলে উঠলো…

___আদি,,,বলতো তোর টোটাল কয়টা গার্লফ্রেন্ড…? না মানে তোর বোন হিসেবে তো আমার একটা দায়িত্ব আছে তোর গার্লফ্রেন্ডের হিসেব রাখা।যতোই হোক তোর বউকে তো আমার জানাতে হবে তার একমাত্র বডি বিল্ডার জামাই এর ঠিক কতটা গার্লফ্রেন্ড ছিলো।

রিয়ার কথা শুনে আদি একটু স্টাইল করে বসলো।তাপর কিছুটা ভাব নিয়ে বলে উঠলো…..

___মি কি করবো বল…? মেয়েরা চোখের সামনে এমন হট এন্ড চকলেট বয়কে দেখলে কি আর ঠিক থাকতে পারে…?মার মত কিউট ছেলে এদেশে আর দুটো পাবি নাকি…?আমি যখন ইউনিভার্সিটিতে ঢুকি তখন জুনিয়র বল সিনিয়র বল সব মেয়েরা হা করে তাকিয়ে থাকে।আর আমার বডির কথা আর কি বলবো….?

আদির কথা থামিয়ে দিয়ে সাহিল বলে উঠলো….

____আর বলিস না মেরে ভাই।তোর এই কথাগুলো শুনে শুনে আমরা ক্লান্ত।মেয়েদের সাথে ফ্লাট করা ছাড়া আর কিছু পারিস তুই…? প্রেমটাও তো ঠিক মত করতে পারিস না।তোর একটা গার্লফ্রেন্ড কত দিন টেকে বলতো…? বড় জোর সাত দিন…।আই এম ড্যাম সিওর এর বেশি না।আর পড়াশোনার কথা কি বলবো…।সারাদিন তো অধির ভাইয়া অধির ভাইয়া বলে বলে সারা বাড়ি মাথায় তুলিস।তবুও কি কোনো দিক থেকে অধিরের মত হতে পেরেছিস ডাফার…?

আদিল কিছুক্ষন গোমরা মুখ করে থেকেই বলে উঠলো….

___আমি যা পারি ভাইয়া তা পারে না।

___তা কি কি পারিস তুই যা অধির পারে না…?

সাহিলের কথা শেষ হতেই অধির কঠির মগটা টি টেবিলে রেখে সচেতন চোখে তাকালো। এদিকে আদিলও ভাব নিয়ে বলে উঠলো…

___এই যেমন ধরো আমি মেয়েদের সাথে ফ্লাটিং করতে পারি,,,,প্রেমও করতে পারি যেটা অধির ভাইয়া পারে না।

আদিলের কথাগুলো শুনে সাহিল দাতে দাত চেপে বলে উঠলো…

___মাশআল্লাহ,,,,,,, কত কিছু পারে আমার ভাইটা….

রিয়াও এবার নড়ে চড়ে বসলো। তারপর বলে উঠলো….

___এছাড়া আর কি কি পারিস দয়া করে যদি বলতি তাহলে আমরা ধন্য হতাম আর কি….

__দেখ করতে তো আমি অনেক কিছুই পারি।কিন্তু নিজের প্রশংসা নিজেই কিভাবে করি বল…? মানে লজ্জা বলেও তো একটা ব্যপার আছে।তবে এতো করেই যখন বলছিস তখন আর না বলে কিভাবে থাকি…? আমি বড় বড় ডাম্বেল উঠাতে পারি…ঘর ঝাড়ু দিতে পারি এমনকি মুছতেও মোটামুটি পারি,,,,বাজার করতে পারি,,,,এমনকি দাদির জন্যে পানও কিনতে পারি…কি বলো সুইটি….?

দাদিজানও আদিলের কথায় মাথা নাড়ালো।তিনিও বলে উঠলেন…

___হ্যা এটা তো একদম ঠিক যে অধির আর যাই হোক আমার জন্যে পান কিনতে পারবে না….এটা শুধুমাত্র আমার আদি দাদুভাইই পারবে….

দাদির কথাটা শুনতেই আদিলের ভাবটা আরো একটু বেড়ে গেলো।এতোক্ষনে অধির মুখ খুললো…

__তোমরা কি ইনডিরেক্টলি আমাকে চ্যালেঞ্জ করছো…??

এবার দাদি বলে উঠলেন….

___ইনডিরেক্টলি কোথায়,,,,আমরা তো তোকে ডিরেক্টলি চ্যালেঞ্জ করছি…..

বলতেই দাদি আর আদিল হাইফাইভ করে হেসে উঠলো।সাহিল অধিরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো…

___অধির,,,এটা কিন্তু রিত্তিমত ওপেন চ্যালেঞ্জ। বুঝতে পারছিস তুই…? অধির চৌধুরিকে কেউ ওপেন চ্যালেঞ্জ করছে।এদের দেখিয়ে দে যে অধির চৌধুরি যেমন বিজনেসে যেমন পারদর্শী তেমন পান কিনতেও পারদর্শী,,,, আই মিন তুই পানও কিনতে পারবি….

রিয়াও এবার বলে উঠলো…..

___ইটস হাই টাইম তুমি এদের দেখিয়ে দাও অধির চৌধুরি সব পারে….

অধির এবার সোফা ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে বলে উঠলো….

___চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্টেড। অধির চৌধুরি কোনো চ্যালেঞ্জ ছেড়ে দেয় না আর সেটা যদি ওপেন চ্যালেঞ্জ হয় তবে ছেড়ে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না……

অধিরের কথা শুনে আদিল ফিচেল হেসে বলে উঠলো….

__দ্যাটস গ্রেট।তবে তোমার ভাই হিসেবে একটা ফেভার তো করতেই পারি।তুমি না সোজা চাদনিচকে চলে যাও।ওখানেই পান পেয়ে যাবে….

এদিকে কারো মোটা কন্ঠে ধ্যান ভাঙলো অধিরের।অধির গাড়ির গ্লাস নামাতেই একজন মোটা সোটা দেখতে লোক বলে উঠলো….

__এই সাহেব,,,,,,গাড়ি আছে দেইখা কি রাস্তার মাঝে দাড় করাই রাখবেন…? আপনার গাড়ির লাইগা তো আমাগো রিকশা,ঠেলা গাড়ি যাইতে পারতাছে না….

অধির আশেপাশে তাকিযে দেখলো রাস্তাটা অনেকটাই সরু।আর ওর গাড়ির জন্যে ফেরীওয়ালা, রিকশা এমনকি মানুষ গুলোও ঠিক মত যেতে পারছে না।অধির একটা ফাকা জায়গা দেখে গাড়ি পার্ক করলো।তারপর গাড়ি থেকে নামতেই নাক মুখ কুচকে ফেললো অধির। কারন এমন পরিবেশে একেবারেই অভ্যস্ত নয় সে।চারিদিকে মানুষে গিজ গিজ করছে।তারউপর সব কেমন নোংরায় ভরা।এমন আনহাইজেনিক জায়গায় কখনোই যেতে হয়নি অধিরকে।অধির হাজার খানিক বিরক্তি নিয়ে পকেট থেকে রুমাল বের করে নাক আর মুখ চেপে ধরলো।চারদিকে একবার তাকিয়ে সামনের দিকে কয়েকপা এগুতেই বিরক্তির পরিমানটা বেড়ে গেল ওর।এখানের কোনো কিছুই সে চেনে না।এক্সজেক্ট পানের দোকানটা কোথায় সেটাও জানে না।তবুও সামনের দিকে এগুলো অধির।কিছুদূর যেতেই দেখতে পেলে দু চারটে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে খেলা করছে।অধির ওদের দিকে তাকিয়েই ডাক দিলো।ওদের মধ্যে থেকে একটা ছেলে অধিরের সামনে এসে দাড়ালো।ছেলে আর কেউ নয় আয়াশই।অধির মুখে রুমাল ধরেই বলে উঠলো….

___এখানে পানের দোকান কোথায় বলতো পারবি….?

আয়াশ ভেঙে ভেঙে বলে উঠলো…

___ওই তো সামনে গিয়ে বাম দিকে গেলেই পেয়ে যাবেন….

অধির আয়াশের বেধে যাওয়া কথা শুনে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে যেই সামনের দিকে হাটা দিতে যায় ওমনি কিসের সাথে যেন বারি খাই আর সাথে সাথেই অধিরের বাম কাধে কিছু একটা পড়ে।অধির হোয়াট দা বলে তাকাতেই দেখে গোলাপি আবির,,,যা ঘাড়ের বামদিকে পড়ে আস্তে আস্তে বুকের বাম পাশটা পর্যন্ত গড়িয়ে পড়ছে।অধরির চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই দেখে একজন বৃদ্ধ লোক বোয়াম ভর্তি আবির মাথায় নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

____হোয়াট দা হেল ইজ দিস….চোখে দেখতে পান না…? দিলেন তো পুরো রঙে ভরিয়ে….

অধির অনেকটা রেগেই কথা গুলো বলে।আর নিজের গায়ের রঙ গুলো ঝাড়তে থাকে।এদিাে রঙ ঝাড়তে গিয়ে অধিরের দুই হাত ও রঙিন হয়ে গেছে রং লেগে।এমনকি টিশার্ট ভেদ করেও বুকের সাথে লেগে গেছে রঙ।বৃদ্ধ লোকটা এবার শুকনো গলায় বলে ওঠে….

__আমার দোষ নাই বাবা,,,,,আপনেই তো পিছন দিকে ফিরতে যাইয়া ধাক্কা দিলেন।আমি কি করতাম…?আমারও তো লোকশান হয়া গেল….?

অধির বৃদ্ধ লোকটার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো।তারপর পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে লোকটার সামনে ধরলো…

__এটা রাখুন।এটা দিয়ে নতুন করে আবির কিনে নিবেন…

বৃদ্ধ লোকটি নিতে না চাইলে অধির আবারো বলে উঠলো….

___আবিরগুলো যখন আমার জন্যে নষ্ট হয়েছে তো র ক্ষতিপূরণ করাও আমার দায়িত্ব।সো…..

এবার বৃদ্ধ লোকটা টাকাটা নিলো। আর অধিরকে ধন্যবাদও জানালো।লোকটা চলে যেতেই অধির নিজের দিকে তাকিয়ে বিরক্তিতে বিড়বিড় করে কিছু একটা বলে উঠলো যা সামনে দাড়ানো আয়াশেন কান অবধি গেলো না।আয়াশ এতোক্ষন এখানেই দাড়িয়েছিল।অধিরকে বিড়বিড় করতে দেখেই আয়াশ বলে উঠলো….

___আপনি চাইলে আমাদের বাড়িতে গিয়ে পরিষ্কার হতে পারেন। এই কাছেই আমাদের বাড়ি…

অধির আয়াশের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো….

__প্রয়োজন নেই…

অধিরে গম্ভির গলায় বলা কথাটা কানে যেতেই আয়াশ বলে উঠলো….

___সেটা আপনার ইচ্ছা।তবে আপনাকে এভাবে দেখতে যে একদম জোকারের মত লাগছে সেটা কি বুঝতে পারছেন..?দেখুন,,,,সবাই কেমন দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে…..

অধির এবার চারপাশে তাকিয়ে দেখলো সত্যিই লোকজন তার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।অধির চোখ রাঙিয়ে তাকিয়েও খুব একটা লাভ হলো না।
তাই বাধ্য হয়েই যেতে রাজি হলো।আয়াশ আগে আগে হেটে যাচ্ছে আর অধির পিছে পিছে । মিনিট দুয়েক হাটতেই সামনে একটা ছোটখাটো বাড়ি দেখতে পেলো।ছোট লোহার গেটটার কাছে আসতেই আয়াশ বলে উঠলো….

__এটাই আমাদের বাড়ি।আপনি ভিতরে যান।গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন।ভিতরে আমার বাডি আছে….

অধিরকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই দৌড়ে চলে গেলো আয়াশ।এদিকে অধির গেট খুলে ভিতরে যেতে লাগলো।বাড়িটা টিন শেডের।মানে ছাদের পরিবর্তে উপরে রঙিন টিন দেওয়া।সামনে বারান্দাও আছে।আর বাড়ির সামনের জায়গাটুকুতে ফুলের বাগান।তার ঠিক পরেই কিছু সবজি লাগানো।আর তার পরেই রয়েছে কিছু ফলের গাছ। বাড়িটা ছোট হলেও দেখতে ভিষন সুন্দর লাগছে।অধির এবার সোজা চলে গেলো।মেইন দরজা খোলায় আছে।অধির একটু উকি মেরেই বসার ঘরে প্রবেশ করলো।রোশনি তখন বসার ঘরের সিলিং পরিষ্কার করতে ব্যস্ত।চেয়ারের উপর দাড়িয়ে ঝাড়ু দিয়ে সিলিং পরিষ্কার করছে।এদিকে বসার ঘরে ঢুকতেই অধির রোশনিকে দেখতে পায়।আর সাথে সাথেই মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে “”””তিলোককন্যা “”””

অধির কথাটা আস্তে বলায় রোশনির কান পর্যন্ত পৌছায় নি অধিরের কথা।সে একমনে সিলিং পরিষ্কার করছে আর গুনগুনিয়ে গান গাইছে।অধির পলক না ফেলেই কয়েক পা এগিয়ে আসে।আর চোখ যায় রোশনির খোলা সাদা পেটের দিকে।রোশনি হাত উঠিয়ে কাজ করছে আর টিশার্টটা একটু ছোট হওয়ায় পেটটা অনেকটাই বেরিয়ে গেছে।আর অধিরেরও নজরটা ওখানেই থেমে গেছে।অধির আরো কিছুটা এগিয়ে আসতেই দেখতে পায় রোশনির মেদহীন পেটে তিনটা কুচকুচে কালো তিল।যা নাভির ঠিক ডানপাশে।অদ্ভুুদ বিষয় হলো রোশনির মোট তিন জায়গায় এমন তিনটে করে তিল আছে।আর। আরও অবাক করার বিষয রোশনির ডান হাতে কনুয়ের কিছুটা উপরে একসাথে পাচটা তিল আছে।রোশনিও ভেবে পায়না ওর তিলগুলো এমন অদ্ভুুদ ভাবে কেন।মানে এক জায়গাতেই অনেকগুলো তিল কেন…।

অধির পলকহীন ভাবে রোশনির পেটের দিকে তাকিয়ে থাকে।চেয়েও যেন পারছে না নিজের দৃষ্টি সরাতে।অধিরের যেন ঘোর লেগে যাচ্ছে।নেশা লেগে যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে তিলগুলোকে আলতো করে ছুয়ে দিতে।অধির একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।যেন চোখের পলক ফেলতেও ভুলে গেছে।এদিকে রোশনির মনে হচ্ছে তাকে কেউ খুব গভির ভাবে দেখছে।কিন্তু কে হতে পারে…? রোশনি নিচের দিকে তাকাতেই দেখতে পায় অধির দাড়িয়ে আছে।অধিরকে দেখেই বিষ্ময়ে চোখ বড় বড় হয়ে যায় রোশনির।তাড়াতাড়ি করে চেয়ারের উপর থেকে নেমে দাড়ায় রোশনি।

___অধির চৌধুরি….!!!! আপনি এখানে…?

রোশনির মিষ্টি কন্ঠে অধিরের ঘোর কাটে।অধির রোশনির মুখের দিকে তাকায়।রোশনি এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অধিরের দিকে।

___আর আপনার এই অবস্থা কেন…?

অধির নিজের দিকে তাকিয়ে আবার রোশনির দিকে তাকায়।

___এক্সচুয়েলি আমি এখানে একটা কাজে এসেছিলাম।আর ধাক্কা লেগে আমার গায়ে এই রঙ লেগে গেছে।তখন একটা ছেলে আমাকে এখানে নিয়ে এলো ফ্রেশ হতে…

রোশনি বুঝতে পারলো ওটা আয়াশই ছিলো।

___ভালোই হল আপনার সাথে দেখান হয়ে।থ্যাংক ইউ ওই দিন আমাকে হসপিটালে নেওয়ার জন্যে…..ওই দিকে ওয়াশরুম,,, আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন….

অধির ওয়াশরুমের দিকে যেতে নিলেই রোশনি বলে ওঠে….

___এক মিনিট মিষ্টার চৌধুরি….

রোশনির কথায় অধির পিছনে ফিরে তাকায়।রোশনি অধিরকে রেখেই ভিতরের রুমে চলে যায়।আর কিছুক্ষনের মধ্যেই হাতে কিছু টাকা নিয়ে অধিরের সামনে দাড়ায়।অধির ভ্রু কুচকে দাড়িয়ে আছে।রোশনি অধিরের সামনে টাকাগুলো বারিয়ে দিয়ে বলে ওঠে…..

___আপনার টাকা টা।ওই আপনি হসপিটালের বিল পে করেছিলেন।এটা তার টাকা।আসলে জ্ঞান ফেরার পর আপনাকে পায় নিতো তাই টাকাটা দিতে পারি নি…..

রোশনি মুচকি হেসে কথাগুলো বললেও মুহূর্তেই অধিরের মাথায় রাগ উঠে গেল।অধির রোশনির হাত পিছনের দিকে মুচড়ে ধরে দেয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরলো।অধির যে এমন কিছু করবে সেটা ভাবতেও পারেনি রোশনি।হঠাৎ এমন করার কোনো কারনও পেলো না রোশনি।তবে অধির রোশনির হাতটা যে খুব শক্ত করে ধরে আছে সেটা বেশ বুঝতে পারছে।অধির রোশনির চোখের দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বলে ওঠে…..

___টাকা,,,,টাকা দেখাও ভধির চৌধুরিকে…? এতো টাকা হয়ে গেছে যে অধির চৌধুরিকে টাকা দেখাও…? সাহস কি করে হয় তোমার আমাকে টাকার দেমাগ দেখানোর….?

অধির কথা গুলো বলতে বলতেই আরো শক্ত করে ধরলো রোশনির হাত।আর বাম হাতে শক্ত করে রোশনির খোলা কোমর চেপে ধরলো।এতোটা জোরে চেপে ধরেছে যে রোশনি মৃদু আওয়াজ করে উঠলো।কিন্তু সেদিকে অধিরের খেয়াল নেই।রোশনি কিছু বলতে গিয়েও অধিরের রক্ত লাল চোখের দিকে তাকিয়ে থেমে গেলো।অধিরের লাল চোখ দেখেই অন্তরআত্মা কেপে উঠলো রোশনির।কতটা ভয়ংকর দেখাচ্ছে এই মুহূর্তে অধিরকে।অধির রেগে আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই রোশনি হিচকি দিতে শুরু করলো।রোশনির এই এক সমস্যা,,,,একটু ঘাবড়ে গেলেই সেন্সলেস হয়ে যাবে নয়তো হিচকি উঠে যাবে।রোশনির হিচকি দেওয়ার ভ্রু কুচকে তাকায় অধির রোশনির দিকে।এতোক্ষনে অধিরের খেয়াল হয় সে একদম রোশনির কাছে।এতোটা কাছে যে দুজনের নিশ্বাসও এক হয়ে যাচ্ছে মিলেমিশে।আর রোশনির গরম নিশ্বাস অধিরের চোখে মুখে আচড়ে পড়ছে।দুজনের ঠোট অনেক বেশিই কাছাকাছি।আর একটু হলেই হয়তো দুজনের ঠোটের সাথে ঠোট ছুয়ে যাবে।ওর একটা হাত যে রোশনির খোলা কোমর চেপে আছে সেটাও বুঝতে পারে অধির।অধিরের চোখ এবার রোশনির পুরো মুখে বিরাজ করে।কখনো চোখ,কখনো গাল,,আবার কখনো গোলাপি ঠোটের দিকে।এদিকে রোশনি সমানে হিচকি দিয়ে চলেছে।ার হিচকি দেওয়ার জন্যে রোশনির ঠোট দুটো ক্রমাগত নড়ছে।আর অধিরও পলকহীনভাবে তাকিয়ে থাকে রোশনির ঠোটের দিকে…….।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here