#বদ্ধ_হৃদয়ের_অনুভূতি
#পর্বঃ১৮
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি
রাতের খাওয়া শেষ করে নিজের ঘরে বসে আছে মাহাদ।কাল সকালেই তাকে দু’দিনের জন্য কক্সবাজার যেতে হবে।জরুরী কাজ আছে।ল্যাপটপে কিছু একটা দেখছিলো মাহাদ।
বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে আছে আম্বের।সামান্তা,অভি আর আম্বেরদের একটা পার্সোনাল চ্যাট গ্রুপ আছে।প্রায়ই রাতভর তিন বন্ধু মিলে চ্যাট করতে থাকে।চ্যাটিং এর মাঝে মাঝেই ঝলমলে হাসে আম্বের।মাহাদ কয়েকবার আড়চোখে তাকিয়ে দেখে।
নিজের কাজ শেষ করে বিছানায় যায় মাহাদ।আম্বের কে কোনো সময় না দিয়েই টুপ করে লাইট অফ করে দেয়।আম্বের হকচকিয়ে বললো—
“এইটা কী হলো!
মাহাদ গাঢ় গলায় বললো–
“রাত হয়েছে দেখেছেন নিশ্চয়ই।আর এতো কী করেন মোবাইলে !আপনাকে কাজের জন্য মোবাইল দিয়েছি রাত জেগে চ্যাটিং করতে না।দেখি কার সাথে এতো কথা আপনার?
আম্বের ব্যস্ত হয়ে নিজের হাত পেছনে নিয়ে চটপটে গলায় বললো–
“কেন!আপনি দেখবেন কেন!কারো পার্সোনাল জিনিস দেখতে নেই জানেন না!
মাহাদ শক্ত গলায় বললো–
“রাখেন মোবাইল,রাখেন বলছি।”
আম্বের আস্তে করে তার মোবাইল নিজের বালিশের নিচে রাখে। নীলচে ড্রিম লাইটের আলোতে আম্বের কে আরো আবেদনময়ী লাগছে।জ্বলজ্বল করছে আম্বের এর দুই চোখ।আর সেই অদ্ভুত ঘ্রাণ !
ঘোর লেগে আসে মাহাদ এর চোখে।আম্বের কে কাছে টেনে নেয়।তার ছড়ানো চুলে নাক গুঁজে দেয় মাহাদ।স্মিত গলায় ফিসফিসিয়ে বললো—
“আপনার আর আমার মাঝে এখন পার্সোনাল কিছু আছে নাকি!
আম্বের কিছু বললো না।পাথর এর মতো চুপ করে রইলো।মাহাদ এর নেশার্ত চোখের তৃষ্ণা বাড়তে লাগলো।ডানহাত রাখে আম্বের এর পেটের উপর।তাকে আরো কাছে টেনে নেয়।আম্বের কে শুইয়ে তার গলায় ঘ্রাণেন্দ্রিয় ডোবায় মাহাদ।আম্বের এর শরীরের সেই অদ্ভুত সুগন্ধ মূহুর্তেই মাতাল করে তোলে মাহাদ কে।নিজের বুকের মধ্যে জোরালো ভাবে আবদ্ধ করে আম্বের কে।আম্বের কোনো প্রতিক্রিয়া করলো।বরং মাহাদ এর স্পর্শে সাড়া দিতে লাগলো।
দুই নরনারীর অবাধ্য অনুভূতি গুলো জড়ো হতে লাগলো একে একে।
,
,
সকালে ফুল স্প্রীডে ফ্যান ছেড়ে তার নিচে চুল ছড়িয়ে বসে আছে আম্বের।আম্বের এর চুল মাত্রাতিরিক্ত ঘন।প্রায় দুই ঘন্টা এইভাবে বসে থাকলে চুল শুকায় তার।মাহাদ রেডি হচ্ছে।ঘড়ির কাটা ছয়টার ঘর ছুঁইছে মাত্র।
গায়ে সাদা শার্টের উপর কালো ব্লেজার পড়েছে মাহাদ।মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আম্বের।মাহাদ এর ফর্সা রঙের মাঝে কালো ব্লেজার দেখে মনে হচ্ছে নিমিষ কালো আঁধারের আকাশে এক ফালি রূপালি চাঁদ।
ফিকে গলায় আম্বের প্রশ্ন করলো–
“এখনই চলে যাবেন?
মাহাদ ব্লেজার এর কলার টা সেট করে হাতা টা উঠিয়ে ঘড়ি দেখে বললো—
“হ্যাঁ।”
“এখন তো ছয়টা বাজে মাত্র!
“এখন না গেলে যে অনেক দেরি হয়ে যাবে মিস সুগন্ধি।”
আম্বের নরম গলায় বললো–
“কখন ফিরবেন?
“পরশু।”
আম্বের ম্লান গলায় বললো–
“আমাকে নিয়ে যাবেন সাথে?
মাহাদ নিষ্প্রভ চোখে তাকায়। আম্বের এর সামনে গিয়ে বসে।মৃদু হেসে বললো—
“আমি আপনাকে আমার সাথে নিতে পারবো না মিস সুগন্ধি।আপনার কোথাও যেতে ইচ্ছে হলে মি.রহিম কে বলবেন নিয়ে যাবে।”
মাহাদ আম্বের কপালে চুমু খায়।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ব্যস্ত হয়ে বললো—
“আমাকে এখনই বের হতে হবে প্রজাপতি।আর কাল রাতের জন্য থ্যাংকস।”
মাহাদ আম্বের এর ঠোঁটে দীর্ঘ সময় নিয়ে চুমু খেলো।
“আসি প্রজাপতি।”
মাহাদ চলে যেতেই উঠে দাঁড়ায় আম্বের।ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে মাহাদ এর যাওয়া দেখে।যতক্ষন পর্যন্ত মাহাদ এর গাড়ি দৃষ্টি সীমার ভেতরে ছিলো আম্বের তাকিয়ে রইলো।তারপর ঘরে আসলো আম্বের।ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে স্থির হয়ে রইলো।সামনে থাকা চুলগুলো পেছনে নিয়ে জামার গলাটা হালকা নিচের দিকে টেনে ধরে আম্বের।সেখানে কামড় এর দাগ স্পষ্ট।কাল রাতে ওদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে মাহাদ দুষ্টুমির ছলে প্রতিশোধ নিবে বলে তার দাঁত বসিয়ে দেয়।সেখানে হাত দিতেই মাহাদ এর স্পর্শের অনুভূতি গুলো জাগ্রত হয় আম্বের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
মুহূর্তেই ফিচেল হাসে আম্বের।হাতে থাকা ডেবিট কার্ড আর মোবাইলা টা রাখে সেখানে।নিজের গলা থেকে মাহাদের দেওয়া সেই প্যান্ডেন্ট খুলে রাখে।নাক ফুলিয়ে চোখে রণমূর্তি ধারণ করে আম্বের।হিসহিসিয়ে বললো—
“আমি আপনাকে ক্ষমা করবো না মাহাদ।আপনার পাপের শাস্তি আপনাকে পেতেই হবে।ধোঁকা দিয়েছেন আপনি আমাকে।”
আম্বের মাহাদ এর দেওয়া সবকিছুই ফেলে রাখে বিছানায়।একদিন টাকা চাওয়ায় মাহাদ তাকে কার্ড ধরিয়ে দেয় যাতে করে তার মাধ্যমে মাহাদ বুঝতে পারে আম্বের এর লোকেশন।
আম্বের মাহাদ এর দেওয়া কোনো কিছুই সাথে নেয় না।মোবাইল থেকে সিম কার্ড বের করে তা ভেঙে ফেলে দেয়।
কিন্তু একটা জিনিস সে চাইলে ফিরিয়ে দিতে পারে না।আর তার হলো মাহাদ এর ভালোবাসার স্পর্শ যা মিশে আছে আম্বের এর সারা অঙ্গে।মাহাদের উষ্ণ নিঃশ্বাসের বিচরণ ঘটেছে আম্বের এর শিরা উপশিরায়।তার ঠোঁটের আর্দ্রতা কাঁপন ধরিয়েছে আম্বের এর হৃদয়চিত্তে।আম্বের শত চাইলেও তা ফিরিয়ে দিতে পারবে না।মাহাদ মিশে গেছে তার অস্থিমজ্জায়।এ কয়েকদিনে মাহাদ কে আম্বের কয়েকবার কাছে পেয়েছে।একবারো ফেরাতে পারেনি।কেন তা আম্বের নিজেও জানে না।
বেড সাইড টেবিলে টেবিলে মাহাদ এর হাস্যোজ্জ্বল চেহারার একটা ছবি রাখা।আম্বের তা হাতে তুলে নেয়।পরম আবেশে তাতে হাত বুলিয়ে চুমু খায়।আম্বের নিজ থেকে কখনো মাহাদ এর কাছে যায়নি।মাহাদ নিজেই আম্বের কে টেনে নিয়েছে কাছে।ছলছল করে উঠে আম্বের এর চোখ।বিগলিত গলায় অস্ফুটভাবে বললো—
“আই এম সরি মাহাদ।আপনি আমার বাবার সাথে যা করেছেন তা ঠিক করেন নি।আমি আপনাকে কখনই ক্ষমা করবো না।আপনার পাপের শাস্তি আপনাকে পেতে হবে।”
আম্বের ঝরঝর করে কেঁদে দেয়।হাউমাউ করে বলতে লাগলো—-
“কেন এমন করলেন আপনি!কেন আমাকে ভালোবাসলেন!আপনার ভালোবাসার যে বিষ ঢেলেছেন আমার সত্তায় তা আমাকে আপনার কাছ থেকে সরে গিয়ে বাঁচতে দিবে না মাহাদ।আপনার অধরামৃত এর এই তেষ্টা যে আমার কোনো অমৃতে মিটবে না ।কেনো এভাবে আমাকে নিঃশেষ করে দিলেন আপনি!
আত্মহত্যার চেয়ে আত্নগ্লাণি নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টের।
আম্বের কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নেয়।এ কয়েকদিনে মায়া বসে গেছে এ ঘরটার উপর তার।আর মাহাদ!
মাহাদ এর কথা মনে হতেই আম্বের এর চোখ ভরে আসে।বুকের ভেতরে বেপরোয়া ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে।জলোচ্ছ্বাসের মতো ছাঁপিয়ে নেয় তার পাজর।উত্তাল সমুদ্রের মতো কাঁপিয়ে তোলে তার হৃদয়।
আজ আম্বের এর মনে হচ্ছে এই আসামাজিক,নোংরা আর হৃদয়হীন পুরুষটাকে সে সত্যিই ভালোবেসে ছিলো।
,
,
,
“তুই কী পাগল হয়ে গেছিস!এইসব কী বলছিস!
সামান্তার ভীত গলার প্রশ্নে আম্বের ভাবলেশহীন ভাবে বললো–
“যা সত্যিই তাই ই বলছি।”
সামান্তা অক্ষিযুগল চওড়া করে সন্দিহান গলায় বললো–
“তারমানে তুই এতোদিন মিথ্যে বলেছিস আমাদের?
আম্বের অনুযোগের গলায় বললো–
“আমার কোনো উপায় ছিলো না।মাহাদ আমাকে আটকে রেখেছিলো।সে কোনোভাবেই আমাকে ছাড়বে না।আজ আমি সুযোগ পেয়েছি।”
সামান্তা অবিশ্বাসের গলায় বললো—
“আই ডোন্ট বিলিভ দিস!মাহাদ আবইয়াজ এই কাজ করতে পারে!
“মানুষ কে চেনা বড় দায়।এই আমিই আমার সর্বস্ব দিয়ে মাহাদ এর বিশ্বাস অর্জন করেছি।”
সামান্তা সন্দিগ্ধ গলায় বললো–
“মানে?
আম্বের কথার প্যাঁচ কাটতে বললো—
“কিছু না।তুই এখন আমাকে কিছু টাকা ধার দে।”
নম্র গলায় সামান্তা বললো—
“তুই অভি কে বল।ওর বাবা কমিশনার।নিশ্চয়ই তোকে হেল্প করবে।আমার তো বিশ্বাস ই হচ্ছে না মাহাদ আবইয়াজ এতো জঘন্য একটা কাজ করতে পারে!কিন্তু আমি এটাই বুঝতে পারছিনা সে তোর বাবা কে কেন খুন করবে?
আম্বের বিতৃষ্ণা গলায় বললো—
“আমি জানি না।জানি না আমি কিছু।আমি ওই মাহাদ আবইয়াজ কে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বো।সে আমার সাথে যা করেছে তার ফল তাকে ভোগ করতেই হবে।আর আমি এইসবের মধ্যে অভি কে জড়াতে চাই না।”
সামান্তা চোখের কোণ ক্ষীন করে ফ্যাকাশে গলায় বললো—
“এখন কোথায় যাবি তুই আর কী করবি?
“আমি চট্টগ্রাম যাবো।সেখানে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড সিথি আছে।ওর মামা পুলিশ কমিশনার।আমি তার কাছেই যাবো।কথা বলেছি আমি সিথির সাথে।”
সামান্তা আগ্রহী গলায় বললো–
“প্রমাণ করবি কী করে তুই যে মাহাদ আবইয়াজ তোর বাবাকে খুন করেছে।”
আম্বের উৎফুল্ল গলায় দৃঢ় হয়ে বললো—
“আছে আমার কাছে।আর তা যথেষ্ট মাহাদ কে তার আসল চেহারায় বের করে আনতে।
এখন তুই আমাকে কিছু টাকা দে।আমার হাতে সময় নেই।”
“কিন্তু আম্বের আমার ভয় করছে।মাহাদ আবইয়াজ যেনো তেনো লোক নয়।ফিল্মস্টার সে।আর এতোকিছু যদি করে থাকে তোকে এতো সহজে সে ছেড়ে দিবে!
আম্বের নিষ্কম্প গলায় বললো—
“সে আমাকে কী করবে আমি জানি না।কিন্তু তাকে তার পাপের শাস্তি পেতে হবে।আমার বাবাকে সে কষ্ট দিয়েছে।”
“আমার কিন্তু প্রচন্ড ভয় করছে।এইটা ফিল্ম নয় আম্বের বাস্তব জীবন।এখানে যা হবে তার পরিণতি খুব খারাপ।”
আম্বের কোমল গলায় বললো—
“জানি।তবুও আমি চেষ্টা করবো।”
আম্বের রহিম কে বলেছে তার এক্সট্রা ক্লাস আছে তাই সময় লাগবে।সামান্তার কাছ থেকে হাজার দু এক টাকা নিয়ে কলেজের পেছনের গেইট দিয়ে বের হয় আম্বের।সামান্তাকে চিন্তা করতে মানা করে।তাকে আশ্বস্ত করে চট্টগ্রাম পৌঁছেই তাকে কল করবে।একটা সি এন জি করে বাস স্ট্যান্ডে আসে আম্বের।
আম্বের টিকেট কেটে কিছুক্ষন যাত্রী ছাউনি তে বসে বাসের জন্য।পুরো ছাউনি ভরপুর মানুষ।আম্বের এর সামনেই একটা তিন বছরের ছোট বাচ্চা চকলেট খাচ্ছে।চকলেট খাওয়ার কারণে বাচ্চাটির সারা মুখ আঠালো আঠালো হয়ে আছে।আম্বের কে দেখেই মিষ্টি হাসে বাচ্চাটি।মুখের ভেতর থেকে চকলেট বের করে তা আম্বের এর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো–
“কাও,কাও।”
আম্বের মুচকি হেসে বাচ্চাটির ফুলকো গাল দুটো টিপে দেয়।ফিক করে হেসে দেয় বাচ্চাটি।আম্বের এর মনে শুভ্র ঝলমলে আকাশ খানিক সময়ের ব্যবধানে আষাঢ়ের কালো মেঘে ঢেকে যায়।
ছোটবেলা থেকেই একা একা হোস্টেলে থেকে বড় হয় আম্বের।কোনো এক অজানা কারণে এই শহরে তাকে নিয়ে আসতে দ্বিধান্বিত ছিলো আহমেদ।অপরিচিত মানুষদের সাথেই সখ্যতা গড়তে থাকে আম্বের এর।কিন্তু তার ছোট্ট হৃদয়ে সব সময় উঁকি দিতো এক সোনালী ভবিষ্যৎ।যেখানে থাকবে তার বাবা,তার স্বামী,সন্তান আর একটা মিষ্টি পরিবার।কিন্তু আম্বের এর মনে হচ্ছে তা আর কখনো সম্ভব নয়।সব শেষ হয়ে গিয়েছে তার।মাহাদ নামের এক অকল্পনীয় ঝড় তার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।
আম্বের এর অশান্ত বুকের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে সুদীর্ঘ শ্বাস।
বাস এসেছে।যাত্রীদের ডাক পড়তেই তড়িঘড়ি করে বাসে চড়ে বসে আম্বের।তার হাতে সময় অনেক কম।মাহাদ এর কানে এই খবর পৌঁছনোর আগেই তাকে এই শহর ছেড়ে যেতে হবে।
প্রায় আধাঘন্টা বাসে বসে থাকলেও কারো আসার কোনো হদিস নেই।আম্বের এর বুকে দুরুদুরু শুরু করে।বাসেই একটা ঘড়ি লাগানো।আম্বের তাতে সময় দেখে।ক্লাস আওয়ার শেষ হয়েছে প্রায় এক ঘন্টা।এতোক্ষনে হয়তো মাহাদ জানতে পেরে গেছে পুরো ব্যপারটা।আম্বের এর শ্বাস আটকে আসে।সে তাড়াহুড়ো করে বাস থেকে নেমে কাউন্টারে গিয়ে প্রশ্ন করে।তারা জানায় সামনেই একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে তাই একটু লেট হচ্ছে।পনেরো বিশ মিনিটের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আম্বের আশ্বস্ত মনে আবার গাড়িতে গিয়ে বসে।শরীর আর মন দুটোই বড় ক্লান্ত।জানালা দিনে পিনপিনে বাতাস আসছে।আম্বের জানালার দিকে হেলে দেয় মাথা।
আর একটু পরই সে এইসব কিছু থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।চলে যাবে অনেক দূরে।আদৌ কি সে দূরে যেতে পারবে!যে মানুষটা তার শিরা উপশিরায় মিশে আছে তাকে ছেড়ে যাওয়া কী এতো সহজ!হয়তো না।কিন্তু তাকে যেতে হবে।পাপ করলে তার শাস্তি তাকে পেতেই হয়।মাহাদ কেও তার শাস্তি পেতে হবে।
শীতল বাতাসে আম্বের এর চোখ লেগে আসে।সে অনুভব করছে গাড়ি চলতে শুরু করেছে।কিন্তু চোখের পাল্লা দুটো এতটাই ভারি হয়েছে আর খুলতে ইচ্ছে করছে না।
আম্বের তার মুক্ত জীবনের ছবি দেখতে পাচ্ছে।
একটা তিন চার বছরের বাচ্চা একজন সুদর্শন পুরুষের ক্রোড়ে উঠে তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।তার থেকে একটু দূরে আম্বের বসে আছে।আম্বের এর কোলে আর তার পাশেই আরো দুটো ফুটফুটে শিশু।ঘুমের ঘোরেই অধর জুড়ে প্রসন্ন হাসে আম্বের।
যদি কখনো তার এই দিবাস্বপ্ন সত্যি হয়!
চলবে,,,