বৃষ্টিস্নাত ভোর পর্বঃ৩০

0
4522

#বৃষ্টিস্নাত_ভোর
#পর্বঃ৩০
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি

সময় চলতে থাকে তার আপন গতিতে।সময়ের সাথে পূরণ হতে থাকে ক্ষত।শরীরের ক্ষত না হয় সেরে যায় কিন্তু মনের ক্ষত!!
তা সারানোর কী উপায় আছে??

বিছানায় আধ শোয়া হয়ে বসে আছে সানায়া।আজ সাতদিন সে হসপিটালে।এখন অনেকটা ভালো সে কিন্তু দূর্বলতা কাটিয়ে উঠেনি।ম্লান চেহেরা চোয়াল চেপে গেছে অনেকটা ভেতরে।মুখের সেই উজ্জ্বলতা এখন নিস্প্রভ।সমুখপানে নিশ্চল দৃষ্টি দিয়ে বসে আছে সানায়া।ওর পাশেই একটা চেয়ারে বিধ্বস্ত দৃষ্টি নিয়ে বসে আছে তারাফ।

মনে হচ্ছে তার পাজরের এক একটা হাড় গুড়িয়ে দিচ্ছে উন্মত্ত সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ।বুকের বা’পাশের যন্ত্রটাও যেন কম্পন নিতে ভুলে গেছে।কেমন যেনো অসাড় তার কার্যক্রম।আচ্ছা হৃদস্পন্দন থমকে গেলে তো কেউ বাঁচতে পারে না।তাহলে সে কী করে বেঁচে আছে!!

নির্লিপ্ত সানায়া একবারও তাকায় নি তারাফ এর দিকে।নিরাক পরিবেশে দুই মানব মানবী একে অন্যের মৌনতার সাক্ষী হয়ে বসে আছে।তারাফ নড়ে বসলেন।তার বুক টা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।এমন কেনো লাগছে তা সে জানে না।আসলেই কী জানে না!নাকি সে বুঝতে চায় না।
এক স্নিগ্ধ আওয়াজ তুলে তারাফ বলল–

“মৃত্যুই কী সব সমস্যার সমাধান মিস সানায়া??

সানায়া নির্বিকার।সে জানে সে ভুল করেছে।কিন্তু কী করতো সে!একটা মানুষকে সে নিরন্তর ভালোবেসে গেলো আর মানুষটা টেরও পেলো না।তা কী করে হয়!
শুনেছি ভালোবাসতে না কি চোখ লাগে না।ভালোবাসা না কী মনের ব্যাপার।তাহলে তার ভালোবাসা কেনো তার প্রিয় মানুষটি বুজলো না!
সব কী বলে দিতে হয়!

নন্দিতার সাথে আজরাহান এর সব কথা শুনতে পায় সানায়া।তার যেই ভাই সবসময় তার সব আবদার পূরণ করেছে সে ভাই যখন নিজের মুখে বলেছে এইসব তখন সানায়ার মাথা কাজ করছিলো না।ভালোবাসা নাকী অন্ধ হয়!সত্যিই অন্ধ হয়।তাইতো সে এতোবড় একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেললো কাউকে কিছু না বলেই।
এইসব ভাবতেই সানায়ার চোখ ভারী হয়ে আসে।আসলে কি বলোতো ভালোবাসার মানুষগুলো যখন ছেড়ে চলে যায় তখন এই সুন্দর পৃথিবীকেও বিভৎষ মনে হয়।সব কিছুই যেনো থমকে যায়।থমকে যায় ঘূর্নায়মান এই পৃথিবী।তখন ইচ্ছে করে নিজেকেও থমকে দিতে।থাক না কিছু মানুষ সুখে।হৃদয়ের অনলে পুড়ে প্রতি মুহুর্তে মরার চেয়ে না হয় একবারেই মরে যাই।

তারাফ শান্ত গলায় আবার বলল–

“অমোঘ সত্য মৃত্যু কে আমরা কেনো ভয় পাই বলেন তো?

সানায়া সম্বিত ফিরে তারাফ এর মৃদু আওয়াজ এ।অক্ষিযুগলের ভেজা পল্লব ছড়িয়ে একবার তাকায় তারাফের দিকে।তারফের মুখটা আজ একদম অন্যরকম।হাস্যোজ্জ্বল চেহারার সেই মনোহারী স্মিত হাসি আজ নেই।সেখানে ভর করে একরাশ গম্ভীরতা,বিবর্ণ,মলিনতা।যা একদম বেমানান।সানায়া এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফিকে গলায় বলল–

“কেমন আছেন আপনি??

তারাফ দুবোর্ধ্য হাসলো।মনে হলো কেউ বন্দুক তাক করে তাকে হাসতে বাধ্য করছে।স্মিত গলায় বলল–

“ভালো আর থাকতে দিলেন কোথায়!!
শুরুতেই সবকিছু শেষ করে দিতে চাইলেন!!

সানায়া এ কথার মানে কী বুঝেছে যানে না।কিন্তু সে ম্লান হাসলো।তারাফ মৃদু গলায় বলল–

“হাসছেন!!
আমি তো হাসির কথা বলি নি।”

“কাঁদার কথাও তো বলেন নি।”

তারাফ হাসলো।সানায়ার এইবার মনে হলো এই হাসি সে চিনে।সেই হাসি যা প্রথমবার সে তারাফের সুক্ষ্ম,তেজস্বি ওই চেহারায় দেখেছে।মৃদু হাসলো সানায়া।
তারাফ গাঢ় গলায় বলল–

” এতো কিছু থাকতে এই পদ্ধতি কেনো বেঁচে নিলেন?আপনি আসলে মরতে চান নি!!চেয়েছেন শুধু সেই যন্ত্রনা উপলব্ধি করতে।আসলেই কী মৃত্যু থেকে বেঁচে থাকা কষ্টকর!!

সানায়ার প্রতীত হলো তারাফ কী বলতে চায়।আসলেই তো বেঁচে থাকা সত্যিই কী মৃত্যু থেকে কষ্টকর!

তারাফ তার অধর জোড়া ছড়িয়ে বুক ভরে শ্বাস নিলো।হালকা গলায় বলল–

“আপনার মনে আছে একবার আপনি আমাকে জিঙ্গেস করেছিলেন মানুষ কেনো বাঁচে?
আজ আমি আপনার কাছে জানতে চাই কেনো মানুষ মরতে চায়??

সানায়ার অক্ষিযুগল ভরে আসলো।এই প্রশ্নের জবাব সে জানে না।আর জানলেও সে দিবে না।সে ভুল করেছে।শুধু নিজেকে নিয়ে ভেবেছে।এ বড় অন্যায়।সে অন্যায় করেছে।

তারাফ আবার নরম গলায় বলল—

“সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ প্রাণি মানুষ।উপর ওয়ালা এই পৃথিবীতে কতো কিছু দিয়েছেন তাদের বেঁচে থাকার জন্য।কতো বিকল্প দিয়েছেন।
কিন্তু মানুষ বড় অকৃতজ্ঞ প্রাণি।এতোকিছুর পরও তাকে প্রশ্ন করে কেনো সে এটা পেলো না,ওটা পেলো না!এমনটা তার সাথেই কেনো হলো!তার কী দোষ!
তাই না বলেন??

সানায়া নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে।তার অক্ষিপুট নির্লিপ্তভাবে উঠানামা করছে।সে কিছু ভাবতে চায় না।মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে চায়।

তারাফ তার ধরা গলায় বলল–

“পৃথিবীতে সে মানুষ সবচেয়ে ভাগ্যবান যার পরিবার আছে।
কিন্তু আজ মনে হচ্ছে আমার ধারনা ভুল।মানুষ আসলেই শুধু অকৃতজ্ঞই নয় স্বার্থপরও বটে।নাহলে একুশ বছরের ভালোবাসাকে পায়ে ঠেলে হৃদয়ে জন্ম নেওয়া সদ্য ভালোবাসার জন্য কেউ এমন করতে পারে!!

ডুকরে কেঁদে উঠে সানায়া।শ্রাবনের অঝোড় ধারা বইতে থাকে তার অক্ষিকোটর থেকে।নির্বাক সেই দৃষ্টি।কিন্তু মন ভাঙা আর্তনাদ কেউ তো শুনতে পায়।

তারাফ ম্লান হাসলো।ফিকে গলায় বলল–

“কষ্ট হচ্ছে তাই না!!
এর চেয়ে দ্বিগুন কষ্ট দিয়েছেন ওই মানুষগুলোকে যারা আপনাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছে।আপনার অসুস্থতায় যেই মা রাত জেগেছে।আপনার কান্না থামাতে যে বাবা আপনাকে কোলে নিয়ে সারারাত বিনা দ্বিধায় পায়চারী করেছে।সেই ভাইদের যারা আপনার জন্য আকাশের চাঁদটাও এনে দিতে পারে।ঝড়,বাদল উপেক্ষা করে আপনার জন্য আইসক্রীম নিয়ে আসতে পারে।
সত্যিই মানুষ স্বার্থপর।”

সানায়া কাঁদছে।তার কাঁদা জরুরী।তার বোঝা উচিত,আল্লাহর দানের এই জীবন শুধু নিজের জন্য নয়।আমরা একা বেঁচে নেই।আমাদের সাথে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোও আমাদের সাথে নিয়ে বাঁচে।আমাদের সুখে যেমন তারা হাসে আমাদের দুঃখেও তারা কাঁদে।

তারাফ শ্বাসরূদ্ধ করে বলল—

“আমাদের বাঁচতে হয়।নিজের জন্য নয়।প্রিয় মানুষগুলোর জন্যও মাঝে মাঝে বেঁচে থাকতে হয়।আমি কাউকে পেলাম না তার মানে এই নয় ধরনী আমাকে কিছু দেয় নি।”

তারাফ শীতল নিঃশ্বাস ফেলে আবার বলল–

“আমি আমার সবকিছু হারিয়ে সুখতারা কে পেয়েছিলাম।তাকেও হারিয়ে ফেললাম।কিন্তু দেখেন আমি আজও ওর অপেক্ষায় আছি।কেনো জানেন?
কারণ উপরওয়ালা কে আমি বিশ্বাস করি।আমি জানি সে আমার কাছ থেকে যা কেড়ে নিয়েছেন তার চেয়ে দ্বিগুন আমাকে ফিরিয়ে দিবেন।আমি তার প্রতিক্ষায়।”

সানায়া স্নিগ্ধ,শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো তারাফ এর দিকে।কী অদ্ভুত এই মানুষটা!সে তো তার কেউ নয়।তবুও কতোটা আপন।কিন্তু যাকে আপন ভাবলো সে তো…..
,
,
,
লম্বা লম্বা পা ফেলে হসপিটাল এর সিড়ি বেয়ে উঠছে আজরাহান।বিক্ষিপ্তচিত্ত এক চাপা অস্থিরতা তার মনে।সানায়া কে আজ ডিসচার্জ দিবে।কী করবে সে!সেদিন এর ব্যবহার এ সে অনুতপ্ত।কিন্তু তবুও!
বোনের চোখের জলে ভাইয়ের মন তো কাঁদবেই।
আজরাহান এর পাশেই প্রহর শান্ত পায়ে হেটে যাচ্ছ।আজকাল আজরাহান কে ওর প্রচন্ড ভয় করে।কখন কী করে বসে!
আজরাহান এর চোখে মুখে অস্থিরতার ছাপ স্পষ্ট।এই সাতদিন কেউ একবিন্দু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে নি।
এক অন্য আজরাহান কে আবিষ্কার করেছে প্রহর।আপন মানুষের ক্রন্দনে কতোটা অসহায় হয়ে যায় মানুষ তা সেই মানুষটা ছাড়া কেউ বুঝতে পারে না।হসপিটাল এর কড়িডোরে আসতেই প্রহর দেখতে পায় তারাফ হেটে যাচ্ছে।দমকে যায় প্রহর।উদ্ভাসিত চোখে তাকিয়ে থাকে।তারাফ গুঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রহর এর দিকে।কেনো যেনো মনে হচ্ছে এই মানুষটাকে সে চেনে।
প্রহর এর শরীরে থেমে থেমে কম্পন শুরু হয়।বুকের ভিতর হাসফাস করতে থাকে।ভয়ে হিম হয়ে আসে প্রহর এর শরীর।ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়ছে তার।মনে হচ্ছে তার পা আটকে গেছে কোনো চোরাবালি তে।আজরাহান কয়েক কদম গিয়ে থামে।পিছন ফিরে সন্দিহান গলায় বলল–

“কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো??
চল।”

অনুরণিত হয় প্রহর এর ওষ্ঠদ্বয়।কাঁপা কাঁপা গলায় বলল—

“আআমি ওওয়াশরুমে যাবো।”

আজরাহান ভ্রু কুচকে বলল–

“যাবি ভালো কথা।কাঁপছিস কেনো তুই??

“আআসলেএ ইমার্জেন্সীঈ তো তাইই।আআপপপনি যান আমি আসছি।”

“চল আমার সাথে।”

প্রহর ব্যস্ত গলায় বলল—

“না,না।আপনার যেতে হবে না।আমি একাই পারবো।আপনি যান।”

“আচ্ছা।সোজা গিয়ে বামদিকে।একদম এদিক ওদিকে যাবি না।”

“আচ্ছা।”

আজরাহান পা বাড়ায় সানায়ার কেবিনের দিকে।এখনো নিরুত্তাপ,নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে তারাফ।সে তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।অদ্ভুতভাবে দেখে যাচ্ছে প্রহর কে।কিন্তু সে ভাবছে।এইটা তার ভুল নয়তো!!
তার ছোট্ট সুখতারা আর এই সুখতারার মধ্যে যে বিস্তর ফারাক।সে চঞ্চল,প্রাণোচ্ছল সুখতারা কী সত্যিই আজ তার সামনে!সত্যিই কী তার অপেক্ষার অবসান ঘটেছে!

প্রহর এক শ্বাসে দৌঁড়ে আসে তারাফ এর কাছে।তারফের চোখ ভারী হয়ে আসে।তার কান্না পাচ্ছে।কিন্তু কেনো পাচ্ছে!তার কী কান্না করা উচিত!কিন্তু কেনো!তার তো হাসা উচিত।তার সুখতারা কে সে ফিরে পেয়েছে।তাহলে কেনো তার চোখে জল!
ও বুঝতে পেরেছে সে, এ সুখের জল।পরম সুখেও মানুষ কাঁদে।সত্যিই মানুষ অদ্ভুত !কী অদ্ভুত তার আচরণ!

দুই হাত ছড়িয়ে তারাফ কে আঁকড়ে ধরে প্রহর।নিরবে চোখের জল বিসর্জিত হচ্ছে।তারাফ প্রহর এর মাথায় আলতো হাত রাখে।মাথা তুলে তাকায় প্রহর।ওকে ছেড়ে আলগা হয়ে দাড়ায়।হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছে।উচ্ছলিত গলায় বলল–

“কেমন আছো তুমি তারাফ ভাইয়া??

তারাফ নাকের পাটা ফুলিয়ে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে।বুক ভরে আসে তার।চোখে মুখে তার তৃপ্ততা।স্মিত হেসে শান্ত গলায় বলল–

“তুই সত্যিই আমার সুখতারা তো!!

প্রহর টুস করে তারাফের হাতে চিমটি কাটে।একগাল হেসে বলল–

” এখন বলোতো আমি কে??

খিলিখিলিয়ে উঠে প্রহর।প্রহর এর উচ্ছ্বসিত হাসির আওয়াজ এ সরব হয়ে উঠে তারাফ এর হৃদস্পন্দন।চোখে মুখে তার উজ্জ্বলতা যেনো খুশির ফোয়ারা বইয়েছে।উদ্ব্যস্তের মতো তারাফ এর হাত টেনে ওকে প্রহর নিয়ে যায় করিডোরে উত্তর দিকের শেষ প্রান্তে।

তারাফ বিস্মিত নয়নে অধীর আগ্রহে শুনে যায় প্রহর না বলা অতীত।দমদম করতে থাকে ওর মস্তিষ্কের নিউরণ।মানুষ কী করে পারে এতো নিষ্ঠুর হতে!
তারাফ গাঢ় গলায় বলল–

“তুই চল আমার সাথে।তুই জানিস তোকে আমি কতো খুজেছি।”

প্রহর ব্যস্ত গলায় বলল–

“নাহ।আমি আর কখনো সেখানে যাবো না।আর রাহান ভাইয়া আমাকে কোথাও যেতে দিবে না।”

তারাফ চকিত হয়।সে কিছু বুজতে পারলো না।ভাবুক গলায় বলল—

“কেনো যেতে দিবে না!মানছি তারা যা করেছে তার প্রতিদান দেওয়া সম্ভব নয়।কিন্তু…..।”

“রাহান ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে তারাফ ভাইয়া।”

“আজরাহান!

“হুম।”

“তারা জানে তোর অতীত??

“নাহ।আমি কাউকে কিছু বলেনি।আর তুমিও কাউকে কিছু বলো না।রাহান ভাইয়া জানলে কাউকে ছাড়বে না।”

“কিন্তু প্রহর…।”

“তুই এখানে কী করছিস??

আজরাহান এর ভরাট গলায় করা প্রশ্নে কেঁপে উঠে প্রহর।

প্রহর কাতর নয়নে তাকিয়ে আছে তারাফ এর দিকে
।চোখের দৃষ্টি আনম্র করে বোঝাতে চাইছে যেনো আজরাহান কে কিছু না বলে।
আজরাহান কড়া গলায় আবার বলল–

“এখানে কী করছিস তুই!তোর না ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা!

“আসলে…।

“তুই সানায়ার কাছে যা।”

“রাহান ভাইয়া!

“যেতে বলেছি তোকে আমি।”

প্রহর নিশ্চল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তারাফ এর দিকে।পা বাড়ায় সে।

আজরাহান তারাফ এর মুখোমুখি দাঁড়ায়।মুখে স্নিগ্ধ হাসি ঝুলিয়ে হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়ায় তারাফ।আজরাহান সম্মতি দেয়।তারাফ তার পরিচয় জানায়।বেশ কিছুক্ষন কথা হয় ওদের মধ্যে।কিন্তু আজরাহান এর চোখে মুখে অদ্ভুত নির্লিপ্ততা।তারাফ কে বিদায় দিয়ে কেবিনে আসে আজরাহান।সানায়ার পাশেই বসে আছে প্রহর।আজরাহান এর চোখের রঙ প্রহর এর মনে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।সানায়া উঠে ওয়াশরুমে যায়।প্রহর ভয়াতুর চোখে তাকিয়ে আছে আজরাহান এর দিকে।ওর সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই উঠে দাড়ায় প্রহর।আহত গলায় বলল—

“কী হয়েছে রাহান ভাইয়া?

আজরাহান শক্ত এবং শান্ত গলায় বলল–

“আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নিবি না প্রহর।”

“রাহান ভাইয়া!

আজরাহান গাঢ় গলায় বলল—

“পৃথিবীর কোনো কিছুর বিনিময়ে আমি তোকে হারাতে পারবো না।
না কারো সাথে আমার ভালোবাসার সাগরের এক বিন্দুও আমি শেয়ার করতে পারবো।আমার তোর সবটা চাই, সবটা।আদ্যোপান্ত তুই আমার।তোর সর্বত্র জুড়ে আমার অধীকার।”

প্রহর বারংবার ঢোক গিলে নেয়।এই মানুষটাকে সে ভালোবাসে নাকী ভয়???

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here