#বিবর্ণ_জলধর
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ১৬
_____________
ময়মনসিংহ যাওয়া দিয়ে আবার অর্ধপথ থেকে বাড়ি ফিরছে আষাঢ়। আজকে তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার মুড নেই। আজ কেন, মেয়েটার সাথে আর কখনোই দেখা করবে না সে। আষাঢ়ের এমন পরিবর্তন কারিবকে ভাবাচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে আষাঢ় তত পাল্টে যাচ্ছে। আষাঢ়ের এই পরিবর্তনে তার খুশি হওয়ার কথা। মানুষটার মেয়েদের প্রতি থেকে ঝোঁক কমে আসছে, বিষয়টা তো ভাবতেই ভালো লাগে। কিন্তু তার খুশি হওয়ার থেকে চিন্তা হচ্ছে বেশি। চিন্তার কারণে খুশি হওয়ার জো পাচ্ছে না সে।
বাড়ি ফিরে মা এবং রুপালিকে কোথাও যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখলে আষাঢ় জিজ্ঞেস করলো,
“কোথায় যাচ্ছ তোমরা?”
লায়লা খানম শুকনো মুখে বললেন,
“নোয়ানা মেয়েটার হঠাৎ করে জ্বর এসেছে, ওকে একটু দেখে আসি।”
আষাঢ় কারিবের দিকে তাকালো একবার। কারিব ইশারায় বোঝালো সে কিছুই জানে না এ ব্যাপারে। আষাঢ় মাকে জিজ্ঞেস করলো,
“কখন জ্বর এসেছে তার?”
“গতকাল থেকে না কি জ্বর জ্বর ভাব ছিল, রাতে প্রচন্ড জ্বর এসেছে। মিহিক তো সকালেই বাবার বাড়িতে গিয়েছে।”
“ও। ঠিক আছে, যাও তোমরা।”
“তুমি যাবে না? বাড়িতে তো এসে গেছো, আমাদের সাথে চলো। নোয়ানা তো আমাদের আত্মীয়। মেয়েটা অসুস্থ, দেখতে যেতে হবে না? শ্রাবণ তো সকালে একবার দেখে এসে অফিস গিয়েছে। তুমিও এখন চলো।”
“আমি এখন যেতে পারবো না আম্মু, আমার এখন একটু ঘুম প্রয়োজন। ঘুম থেকে উঠে না হয় একবার গিয়ে দেখে আসবো।”
কথাটা বলে আষাঢ় সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেল। কারিব অবাক। আষাঢ় নোয়ানাকে দেখতে যেতে আলসেমি করছে?
“তুমিও কি এখন যাবে না?” লায়লা খানম প্রশ্ন করলেন কারিবকে।
“না, আমার মনে হয় আষাঢ় ভাই যখন যাবে তখনই গিয়ে দেখে আসলে ভালো হবে।”
বলে কারিবও সিঁড়ির দিকে ছুটলো।
আষাঢ়ের পিছন পিছন আষাঢ়ের রুমে এসে থামলো।
“আপনার ব্যাপারটা আজ কী হলো বলুন তো আষাঢ় ভাই? আফরিনের সাথে দেখা না করে চলে এলেন, এখন আবার নোয়ানাকে দেখতে যাওয়া নিয়েও তো আপনার মাঝে কোনো আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি না! আমি তো ভেবেছিলাম আপনি সবার আগে নোয়ানাকে দেখতে ছুটে যাবেন।”
আষাঢ় পরিপাটি অবস্থায়-ই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। চোখ বুজে বললো,
“নোয়ানাকে দেখতে যেতে আমার মাঝে আগ্রহ নেই কে বললো? আছে বলেই তো এখন যাচ্ছি না।”
কারিব একটু বিস্মিত কণ্ঠে বললো,
“এমনটা কেন?”
“এখন গেলে নোয়ানার কাছে সবাই-ই উপস্থিত থাকবে। এত লোকের মাঝে আমি কি মন খুলে একটা কথাও বলতে পারবো? দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করো।”
কারিব নিশ্চুপ হয়ে গেল। আষাঢ়ের বুঝ ব্যবস্থা ভিন্ন। আষাঢ়ের অস্পষ্ট কণ্ঠ কানে এসে লাগে,
“অসুস্থ বলে আজ সকালে আমার কল রিসিভ করেনি, ব্যালকনিতেও দেখতে পাইনি। জ্বর এসেছে সেটা এত দেরিতে কেন জানতে হলো আমার? আই থিংক ও বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে।”
কারিব আতঙ্কিত হয়ে বললো,
“আপনি এমন একটা কাজ করবেন?”
“ওটা কথার কথা বললাম। তুমি কি একটা বিষয় জানো কারিব?”
“কী বিষয়?”
আষাঢ় চোখ খুলে তাকালো। দু চোখে কেমন কাতরতা। বললো,
“মেয়েটা বড্ড হার্টলেস! কোনো মেয়ের কি উচিত এই প্রেমিক পুরুষের সাথে এত হার্টলেস হওয়া?”
কথাটা বলে আবার চোখ বুজলো আষাঢ়।
কারিব সংশয় নিয়ে তাকিয়ে রইল। আষাঢ়ের কথা শুনলেও মানে অবধি পৌঁছাতে পারলো না সে।
_________________
“দেখতেই তো পাচ্ছ এসেছি, দেখেও বসে থাকবে? যাও কিছু নাস্তার ব্যবস্থা করো। যাও।”
আষাঢ়ের কথা তীব্র বিরক্তিকর ছাড়া কিছু শোনালো না মিহিকের কাছে। সে নোয়ানার পাশ থেকে উঠে এসে চাপা স্বরে বললো,
“তোমরা দু ভাই-ই বিরক্তিকর।”
কথাটা কেবল আষাঢ়ই ভালো করে শুনতে পেল। না কারিব শুনলো স্পষ্ট, আর না শুনলো নোয়ানা। মিহিকের কথার প্রত্যুত্তরে আষাঢ় হাসলো। মিহিক হাসিটা দেখে গটগট করে বেরিয়ে গেল। আষাঢ় মিহিকের থেকে চোখ এনে নোয়ানার দিকে তাকালো। নোয়ানার ক্লান্ত মুখ। ক্লান্ত চোখ। জ্বরে কাবু হয়ে বসে আছে। আষাঢ় মৃদু হাসি উপহার দিলো। চোখ দুটো হঠাৎ অভিমানী হয়ে উঠলো। অভিমানী চোখে নোয়ানার দিকে স্থির চেয়ে থেকে কারিবের উদ্দেশ্যে বললো,
“এই বাড়ির মেয়েরা খুব সাংঘাতিক কারিব। এরা কঠিন, এরা রুক্ষ, এরা হৃদয়হীন…উঁহু, হৃদয়হীন নয়। হৃদয় নেই এমন আচরণ। কিন্তু এই মিথ্যা আচরণ করে কী লাভ? যখন আমি জানি হৃদয় আছে।”
নোয়ানার ক্লান্ত চোখ যেন আষাঢ়ের কথায় বিষাক্ত হলো। আষাঢ় নোয়ানার দিকে এগিয়ে এসে, নোয়ানার পাশে বসে, প্রথমে কপালে হাত রাখলো। খুব উষ্ণ নোয়ানার কপাল। হাতটা নোয়ানার মাথায় রেখে বললো,
“হঠাৎ করে টিউলিপ ফুলের এত জ্বর কেন এলো? আমার কথা ভাবতে ভাবতেই কি এই অসুস্থতা? জ্বর এসেছে সেটা আগে জানাওনি কেন? কেন এত দেরিতে জানতে হলো আমার?”
নোয়ানা কারিবের দিকে তাকালো। নোয়ানার হঠাৎ চাহনিতে ভড়কে গেল কারিব। আষাঢ় নোয়ানার দৃষ্টি লক্ষ্য করে বললো,
“ইট’স ও কে। কারিব আমার ব্যক্তিগত মানুষ। যা খুশি বলতে পারো ওর সামনে। কোনো চিন্তা নেই।”
নোয়ানা চোখ নিয়ে এলো আষাঢ়ের উপর। ক্লান্ত গলায় বললো,
“আমার জ্বর এসেছে সেটা আপনি আরও আগেই খবর পেয়েছেন। কিন্তু খবর পেয়ে তখনই আসেননি। দেরি করে এসেছেন।”
নোয়ানার কথা শুনে যেন আষাঢ়ের মন তৃপ্তি পেল। হেসে বললো,
“আমার উপর অভিযোগ করছো? জানো অভিযোগ কখন বাড়ে? অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিয়ো না আমায়। তোমাকেও ছাড় দেবো না কিন্তু। এর থেকে বড়ো অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেবো তোমায়। অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য আমাকেই আঁকড়ে ধরতে হবে তখন।”
নোয়ানা চোখ সরিয়ে নিলো। হঠাৎ করে যেন কঠিনতা বিরাজ করলো তার মাঝে। কঠিন স্বরে বললো,
“আপনি আমাকে দেখতে না এলেই বোধহয় খুশি হতাম আমি।”
“হতে না। অভিনয়টা দয়া করে আবার শুরু করো না। প্রথমে ভেবেছিলাম তোমার অভিনয়টা সহ্যযোগ্য হবে, উপভোগ্য হবে। কিন্তু হচ্ছে না। এটা আমার সহ্য তুল্য হচ্ছে না।”
কারিব পড়লো বিপাকে। এখানে থাকা তার কাছে একদম ঠিক মনে হচ্ছে না। কিন্তু যাবে কোথায়? তবে সে আষাঢ় আর নোয়ানার কথা বলার ধরণ দেখে এটুকু স্পষ্ট বুঝতে পারলো, নোয়ানা আর আষাঢ়ের মাঝে গভীর কিছু আছে। কিন্তু সেই গভীরতা হাতড়ে আসল ব্যাপারটুকু সে উদ্ধার করতে পারছে না। কী এক অসহ্যনীয় ব্যাপার! আষাঢ় তাকে সবটা বলবে বলেও কিছু বললো না। কবে তার আর নোয়ানার মাঝে এই গভীর ব্যাপারটা হলো?
“সেই প্রথম থেকে কী অভিনয় অভিনয় করছেন? কীসের অভিনয়? কী অভিনয় করছি আমি?”
“জানো না কি অভিনয়?”
“না, জানি না।”
“বেশ, ধরে নিলাম কিছুই জানো না তুমি। কিন্তু নতুন করে জানার চেষ্টা তো করতে পারো। সেটা কেন করছো না? আমি চাই তুমি আমাকে জানার চেষ্টা করো।”
“নতুন করে কী আর জানবো আপনাকে? যা জানা বাকি ছিল, সেটা তো নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন সেদিন। অগণিত গার্লফ্রেন্ড পুষে রাখার রোগ আপনার। আমাকেও অমন ভাববেন না। ভাববেন না যে আমিও আপনার অগণিত গার্লফ্রেন্ডের মাঝে একজন হবো।”
আষাঢ় রেগে গেল। বসা থেকে দাঁড়িয়ে গিয়ে বললো,
“আমার সাথে হৃদয়হীন আচরণ করা বন্ধ করো নোয়ানা। হৃদয় কেড়ে নিয়ে, হৃদয়হীন আচরণ করা সাজে না।”
মিহিকের আগমন ঘটলো। তার হাতে ট্রে। তাকে দেখে থেমে গেল রুমের ভিতরে চলমান সকল ঝড়। মিহিক আষাঢ় আর শ্রাবণকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো,
“তোমরা এখনও দাঁড়িয়ে কেন? বসার জায়গার অভাব পড়েছে? বসো।”
আষাঢ় বললো,
“না, বসবো না। আমাদের কাজ আছে। কারিব, চলো।”
“চলো মানে? নাস্তা নিয়ে এসেছি, সেগুলো খাবে কে? খেয়ে তারপর যাও।”
“নাস্তা তোমার বোনকে খাওয়াও ভাবি। খাইয়ে দ্রুত সুস্থ করে তোলো। তার এরকম অসুস্থতা দেখে কষ্ট হচ্ছে আমার।”
আষাঢ় একটু থেমে বললো,
“বাড়ি কখন ফিরবে তুমি? আজকে ফিরবে? না কি বোনের কাছেই থাকবে?”
প্রশ্নগুলো শুনে মিহিকের কষ্ট লাগলো। কই শ্রাবণ তো তাকে একবারও এই প্রশ্নগুলো করলো না! মিহিকের এখন বড্ড অভিমান হয় লোকটার উপর। লোকটা এমন পাষাণ কেন? সে না গেলেই হয়তো ভালো হয় শ্রাবণের। তবে এই ভালো তো সে সহ্য করবে না। বললো,
“আমি গেলে, না গেলে হয়তো কারও যায় আসবে না। আর যায় আসবে না বলেই আমি যাব।”
“ভুল বললে। তুমি বাড়ি না ফিরলে অবশ্যই আমার ভাই এটা নিয়ে ভাববে। চিন্তা করো না। সব সময় এক নিয়মে জীবন চলে না। একদিন আমার ভাই তোমার জন্যই দিওয়ানা হবে। অলরেডি দিওয়ানা হয়ে গেছে কি না কে জানে।”
আষাঢ় কাঁধ ঝাঁকালো। কারিবের উদ্দেশ্যে বললো,
“কারিব, চলো।”
শেষ এক পলক নোয়ানাকে দেখে বেরিয়ে গেল আষাঢ়।
মিহিক হেসে ওঠে মনে মনে।
‘তোমার ভাই রুমকিতেই আটকে আছে আষাঢ়। বউ’তে কখন আটকাবে সেটা সেই ভালো জানে। এত ধৈর্যশীল আমি কখনোই ছিলাম না। তোমার ভাইয়ের সাথে বিয়ে হওয়ার পর ধৈর্যশীল হয়েছি অনেক। তবে ধৈর্য ধরে কোনো লাভ হবে কি না জানি না। তোমার ভাই আদৌ শুধরাবে কি না জানি না আমি!’
________________
মিহিক বাড়িতে ফিরলো সন্ধ্যার আগে। শ্রাবণ ভেবেছিল মিহিক আসবে না।
“আমি তো ভেবেছিলাম আপনি আসবেন না, চলে এলেন যে?”
শ্রাবণের কথা শুনে রাগ-কষ্ট দুটোই হলো মিহিকের। ইদানিং কেন যেন নিজের মাঝে নিদারুণ কষ্ট, অভিমান উপলব্ধি করে সে। এই লোকটা তার মাঝে এমন নিদারুণ কিছুর জন্ম দিয়েছে। সে ধৈর্য ধরে আছে। তার আর শ্রাবণের মাঝে সম্পর্কটা ঠিক কেমন, শ্রাবণ এখনও রুমকির সাথে রিলেশনশিপে আছে, এসব মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে এখন প্রকাশ করতে চায় না। কারণ, চায় না এটা নিয়ে বড়ো কোনো ঝামেলা হোক। তার এখন মনে হয় বিয়ের মতো একটা সম্পর্ক মুহূর্তেই এভাবে ভেঙে যেতে পারে না। সে আশা করে শ্রাবণ ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এরকম আশা ধরে চুপ করে থাকা ঠিক হচ্ছে কি না আদৌ জানে না। মাঝে মাঝে মনে হয় এই আশা ধরে থাকাটা ভুল। এই যে, এইমাত্রও এটাই মনে হলো। মিহিক অভিমানপূর্ণ কণ্ঠে বললো,
“আমি না এলে আপনি খুশি হতেন?”
শ্রাবণ একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। থতমত খাওয়া গলায় বললো,
“আমি কি সেটা বলেছি?”
“স্পষ্ট বলেননি, কিন্তু আমি বুঝতে পারি। আমি না এলেই আপনি খুশি। রুমে বসে নিশ্চিন্তে সারারাত রুমকির সাথে কথা বলতে পারবেন, আপনাকে বিরক্ত করার কেউ থাকবে না, খুব খুশি থাকতেন আপনি।”
“আমি এসব নিয়ে কথা বলতে চাইছি না আপনার সাথে।”
শ্রাবণ মিহিককে পাশ কাটিয়ে যাওয়া দিলে মিহিক হাত টেনে ধরলো। শ্রাবণ চমকে পিছন ফিরে তাকালো।
“কী হলো?”
মিহিক কীয়ৎক্ষণ তাকিয়ে থাকে শ্রাবণের দিকে। তারপর হাত ছেড়ে দিয়ে বললো,
“কিছু না।”
বলে শ্রাবণের পরিবর্তে নিজে বেরিয়ে গেল রুম থেকে।
________________
নোয়ানার জ্বর কমে গেছে অনেক। রাত এখন দশটা বারো। ঘরের পিছনে সিঁড়িতে বসে আছে সে। বাড়ির পিছনের লাইটটা ক্ষীণ আলোয় জ্বলছে। দৃষ্টি তার আনমনা। বহু বছর আগের কিছু স্মৃতি মনে জেগে উঠছে। একটা ছোট মেয়ের কান্নার আর্তনাদ, দপদপ করে জ্বলতে থাকা অগ্নি লেলিহান শিখা, দুটো অর্ধ পোড়া লাশ, মার খাওয়ার বীভৎস দৃশ্য, এক কিশোরের হাস্য মুখ, আরও অনেক কিছু। নোয়ানার জল টলমল চোখ থেকে টুপ করে অশ্রুধারা নেমে গেল গাল বেয়ে।
পিছনে কারো চরণ ধ্বনির শব্দে নোয়ানা অশ্রু মুছে নিলো।
হাফিজা এসে বসলেন নোয়ানার পাশে। নোয়ানা নিজের অশ্রুসিক্ত নয়ন লুকাতে পারলো না। হাফিজা এক ধ্যানে তাকিয়ে রইলেন নোয়ানার দিকে। অতীত নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ভাবলেই নোয়ানার এমন হুট করে জ্বর আসে, এটা তিনি জানেন। শুধু তিনি না, পরিবারের সবাই জানে এটা। হাফিজা বললেন,
“কতবার বলেছি তোকে ওসব ভুলে যেতে? কেন এখনও ওসব মনে করে শরীর খারাপ করিস? এই নিয়ে কতবার হলো?”
নোয়ানার চোখ থেকে উষ্ণ জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো। এবার আর মুছলো না। চুপটি হাফিজার বুকে মাথা হেলিয়ে দিয়ে বললো,
“খুব কষ্ট হচ্ছে চাচি! জীবনের কষ্টগুলো এত নির্মম হয় কেন বলো তো? তোমরা না থাকলে আমার জীবনটা হয়তো অন্ধকারেই আটকে থাকতো! হয়তো মরেও যেতে পারতাম আমি!”
(চলবে)