#বৈবাহিক_চুক্তি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্বঃ১৮
“ভাবি কত্ত কিউট দেখতে তুমি… যাক এই ইউজলেস এর চয়েজ ভালো আছে “সায়ানের দিকে মুচকি হাসি দিয়ে বললো সামায়রা।
“তুমি অনেক সুন্দর দেখতে, নাম কি তোমার? ”
“মাইসেল্ফ সামায়রা জামিল খান, ইউ কেন কল মি সামু ” তখনি রুহান রুশির হাত ধরে উকি দিয়ে সামুকে দেখলো
“অঅঅঅঅ কি কিউট তুমি দেখতে, নাম কি তোমার? ” বলেই রুহানের হাত চেপে ধরে কাছে আনতে চাইলে রুহান রুশির পিছনে চলে যায় আর সামু চেহারায় প্রশ্নবোধক চিহ্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকে।
“আসলে সবার সাথে হুট করে মিশতে পারেনা, একটু সময় লাগে, রুহান ও তোমার ফুফিমনি হয়, সালাম দাও ” রুহানকে সামনে এনে বললো রুশি
“আসসালামু আলাইকুম, আমার নাম রুহান ”
“শুধু রুহান আর কিছু নেই?”
“রুহান জামিল খান, এটাই হবে অবশ্যই ” সায়ান বলে উঠলো, রুশি সায়ানের এই অস্থিরতা দেখে ভেতরে মজা পেলেও চোখ ছোটছোট করে তাকালো, সায়ান তো জানেই না বার্থডে সার্টিফিকেটে রুহানের পুরো নাম রুহান জামিল খান আর বাবার নাম সায়ান জামিল খান দেয়া।
“ভাবি তুমি আর রুহান উপরে যাও, মিনু ভাইয়ের রুম দেখিয়ে দে তো ”
রুশি আর রুহানের পিছনে সায়ানও যেতে নিলে সামু ডান হাত চেপে ধরে বলে
“তুই কোথায় যাচ্ছিস? প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যা ”
“তার আগে এইটা বল ছেলে বউয়ের সামনে ইউজলেস বললি কেন?”
“আমি সত্য বলতে পছন্দ করি, ওইসব বাদ দে, এটা বল তুই বিয়ে করলি কবে আর… ”
“তোকে এতকিছু বলার টাইম নেই। অনেক লম্বা কাহিনী তবে এইটুকু বলতে পারি বউও আমার আর বাচ্চাও আর আমাদের বিয়ে চারবছর আগে হয়েছে ”
“চারবছর আগে!!হতচ্ছারা এতদিন বললি না কেন? আমি ভাবলাম তোর আবার কোন সমস্যা আছে নাকি? কিন্তু চারবছর হলে তোর বউ ছিলো কই আর তুই আমাদের বললি না কেন?”
“এতকিছু বলার টাইম নেই ”
“আমাকে নাহয় নাই বললি, কিন্তু দাদাজি কে কি জবাব দিবি? সে কিন্তু লাঠি রেডি করে রেখেছে ”
“তুই বলে দিয়েছিস ”
“আমার পেটে আবার কবে কোন কথা টিকেছে বলতো? তাছাড়া না বললে আমার পেট ব্যাথা করতো ওই কথার চাপে ”
“চুচকা কোথাকার ”
“ভাই চুচকি হবে, জেন্ডার কনফিউশনে ফেলছিস কেন সবাইকে?”
“ওই একি, খেতে দে ক্ষুদা লাগছে, খেতে দে”
“যাহ আগে ফ্রেশ হয়ে খচ্চর কোথাকার নাহয় খাবার পাবি, আজকে কিন্তু গরুর মাংস রান্না হয়েছে খেতে চাইলে তাড়াতড়ি আয়, নাহয় তোর ভাগেরটাতো গেলো ”
“নাহ যাচ্ছি একপিসও খাবি না,আগে ভালোমতো খেয়ে তারপর দাদাজির মার খেতে যাবো ”
“তাতো খাবিই, আসুক খামার থেকে তোর নিস্তার নেই আজকে”
সায়ান আর রুশি সবাই সন্ধ্যায় খাবার খেয়ে নিলো, সবাই মিলে ড্রয়িংরুমে কথা বলছিলো। সায়ানের দাদাজি রুশিকে খুব পছন্দ করে আর রুহানকে তো কোলছাড়াই করতে চাইছে না, পাশে বসিয়ে এই কথা ওইকথা জিজ্ঞেস করছে। তখনি একটা মেয়েলি কন্ঠ কেউ বলে উঠলো
“সায়ান তুমি বাংলাদেশে আসলে আর আমাকে বললে না, রাগ করেছি আমি ”
“আমি তোমার বড় ইশানি,সম্মান দিয়ে কথা বলো ”
“ওহ কামন তুমি মাত্র তিন বছরের বড়, এটাকে বড় বলেনা।তাছাড়া বয়ফ্রেন্ডকে আজকাল নাম ধরে ডাকার ট্রেন্ডই চলে ”
“আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড না “বলেই উঠে চলে গেলো সায়ান, এই মেয়েকে যাই বলুক যত অপমানই করুক এর গায়ে লাগে না, গন্ডারের চামড়া যাকে বলে।তাই বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে কিছু না বলা।
রুশি এই বাড়ির সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখছে, মেয়েটি আসাতে যেন কেউ খুশি হয়নি, মেয়েটির গেটাপ কেমন উৎশৃংখল তারউপর কেমন গায়ে পড়া ভাব, আর ওনাকে দেখো একবার বলে নি আমার বউ আছে তুমি এমন বললে সে মাইন্ড করতে পারে। সব পুরুষরাই এক, গাছেরটাতো খাবেই তলারটাও কুড়াবে।
“আমি আসছি, রুহান বড় আব্বুর সাথে উপরে চলো ”
হঠাত দাদাজির এমন উঠে যাওয়া আশ্চর্য লাগলো রুশির তখনি দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো একজন মধ্যবয়সী লোক গেইট দিয়ে ঢুকলো। হাতে অনেক ধরনের জিনিস।রুশি বুঝতে পারলো লোকটিকে দেখেই চলে গেছে। এসব দেখে রুশি সামুর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
“কিরে সামু মা কেমন আছিস? ”
“ভালো কাকা বসুন, এই মিনু কাকাকে চা নাস্তা দে ”
“এই মেয়েটি কে ঠিক চিনলাম নাতো? “তখনি ওই মেয়েটিও বলে উঠলো
“ইয়া সামু,কে এই মেয়েটি আগে কোনদিন দেখিনিতো!”
“ওহ তোমাকে তো বলাই হয়নি ও হচ্ছে রুশানি, আমার ওয়ান এন্ড অনলি ভাবি আর এই বাড়ির বউমনি ”
“মানে সায়ান বিয়ে করেছে? কি বলছো তুমি এসব? ”
“শুধু বিয়ে করেনি, ভাইয়ের ছেলেও আছে তিনবছরের ”
“আমাকে আগে বলোনি কেন? আমি এখনি আমার সায়ানকে জিজ্ঞেস করছি ”
বলেই মেয়েটি উঠে চলে গেলো,মেয়েটির পিছু সামুও উঠে গেলো
“মনে হচ্ছে নিজের প্রোপার্টি যেমন ভাবে বলছে আমার সায়ান ”
রুশি ভেতরে ভেতরে ফুঁসছে। বাঙালি মেয়েরা হাজবেন্ড মানুক আর না মানুক তার ভাগ কাউকে দিতে রাজি নয়। রুশি থম মেরে বসে রয়েছে, এই মেয়েটা যথেষ্ট সুন্দর দেখতে, তাই এই মেয়েকে একসেপ্ট করতেই পারে সায়ান তারউপর ও সায়ানকে পাত্তা দেয়না, এখন মনে হচ্ছে একটু একটু পাত্তা দিলে ভালোই হতো।ও এখানে হলেও পা গুলো কেমন উশখুশ করছে ওইখানে যাওয়ার জন্য।
রুশি তার হাতের নখ কামড়ে এসব ভাবতে ভাবতেই পাশে তাকালো। তাকিয়ে দেখে ওই মাঝবয়সী লোকটি কেমন জানি ওকে স্ক্যান করছে মনে হচ্ছে বহুকাংখিত বস্তু পেয়ে গেছে। এই নজর রুশির বাজে লাগলো তাই সেখান থেকে উঠে গেলো, দরজার কাছাকাছি যেতেই শুনতে পেলো
“ফারদার আমার সামনে আসবিনা, আমার বউ মাইন্ড করতে পারে নাও গেট আউট ”
তখনি ওই মেয়েটি মানে ইশানি কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এলো আর রুশিকে দেখে যেন রাগ বেড়ে গেলো
“তুমি কি মনে করো তোমার এই সৌন্দর্যে সায়ানকে মুগ্ধ করে ওকে নিজের বশে আজীবন রাখতে পারেবে? সায়ান আমার ছিলো আমারি থাকবে, দেখে নিও”
রুশিকে কিছু না বলতে দিয়ে চলে গেছে ইশানি, রুশি দরজার সামনে যেতেই শুনতে পেলো
“ভাই ওকে দিয়ে তো ভাবিকে জেলাস ফিল করাতে পারতি ”
“নাহ আমি ওর সামনে কোন নাটক করতে চাইনা আর না জেলাস ফিল করাতে চাই, আমি এটা করলে ও ভাবতো অন্য পুরুষদের মত আমিও মেয়েবাজ। আর ও আমার থেকে আরোও দূরে চলে যেতো। আমি চাই ও আমাকে ভালোবাসুক তবে তার আগে আমি ওর বিশ্বাস অর্জন করতে চাই যে আমার লাইফে ও ছাড়া না কেউ ছিল না আছে না থাকবে।ও আমার কাছে আছে এটাই আমার জন্য অনেক। ওর জন্য আমি আজীবন ওয়েট করতে পারবো।
এই কথাগুলো সত্যি না মিথ্যে রুশির জানা নেই তবে যাচাই করতে ইচ্ছে করছে না। সায়ানের জন্য রুশির সম্মান অনেকখানি বেড়ে গেছে আজ। এমন হাজবেন্ড পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার যার পৃথিবী শুধু তার বউকে ঘিরে। শুধু তাকে ঘিরে
#চলবে
(জানিনা কেমন হয়েছে,কালকে সাইকো Stalker দিবো তাই এটা নাও দিতে পারি। হ্যাপি রিডিং)