হুজুরের বউ যখন ডক্টর পর্ব-১২

0
1484

হুজুরের বউ যখন ডক্টর

রাইটার :রাকিবুল ইসলাম

পর্বঃ ১২

কিন্তু না,,,, জাফরী অন্য রাস্তায় ঢুকে গেল আর
খাদিজার আব্বু নিজের বাড়ি চলে গেল।
অল্প একটুর জন্য দেখা হলো না…!!!!!
খাদিজার আব্বু বাড়ির কলিংবেল বাজালো
সাথে সাথে খাদিজার আম্মু দরজা খুলে
দিলো।

খাদিজার আব্বু : আস্সালামুআলাইকুম

খাদিজার আম্মু : ওয়ালাইকুমুস্সালাম তুমি কি রাস্তায় কাউকে দেখতে পেলে।

খাদিজার আব্বু : কই নাতো শুধু একটা মেয়েকে পিছন থেকে দেখলাম।মনেহলো ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছে।আর তোমাকে এতো চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন….!!!!

খাদিজার আম্মু : নাহ কিছু হয়নি ঘরে এসো
____________________

নাসরিন : কিরে কই গেছিলি তোকে আমরা খুজতেছি।তোর এমনিতে শত্রু বেশি আর তুই একা একা বের হয়েছিস কেন।

খাদিজা কোন কথার উত্তর না দিয়ে নিজের ঘরে
গেল।নিজের ঘরে গিয়ে মন খারাপ করে বসে আছে।নাসরিন একটু পিছে পিছে গেল।

নাসরিন : কি হয়েছে তোর কথার উত্তর দিতেছিস না যে।

জাফরী : প্লিজ আমাকে একটু একা থাকতে দেতো।
নাসরিন : আচ্ছা সরি ডিস্টার্ব করে ফেললাম তোকে।আর টেবিলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নিস
তারপর ওষুধ টা খেয়ে নিস।

নাসরিন ঘর থেকে বের হয়ে যেতে চাচ্ছে
এমন সময় জাফরী নাসরিনের হাতটা
ধরে বলল দোস্ত কষ্ট পেলি আমার কথায়
তাইনা।আমার কাছে বস।
নাসরিন কে বসিয়ে দিয়ে নিজের মাথাটা
নাসরিনের কাধে রেখে বলছে দোস্ত
একটা কথা বলি তোকে

নাসরিন : বল

জাফরী : আমি খুব খারাপ তাইনা

নাসরিন : হঠাৎ এমনভাবে কথা বলছিস

জাফরী : আগে বলনা রে আমি কী খুব খারাপ

নাসরিন : আরে নাহ তুই আমার লক্ষি বেস্টফ্রেন্ড

জাফরী : জানিস আজকে ওই বাচ্চা মেয়েটার বাড়ি গিয়েছিলাম।
কিন্তু মেয়েটার মা খুব খারাপ ব্যাবহার করলো আমার সাথে।আমার মনেহয় আমি ওখানে যাওয়াতে ওই আপুর কোন অসুবিধা হয়েছে।
আর খাদিজা খুব ভাল একটা মেয়ে তার মা ওমন ব্যাবহার করেছে সেটা মেনে নিতে পারছিনা রে….

নাসরিন : তুই যেখানেই যাস সেখানেই বাচ্চাদের সাথে ভাব লাগাস

জাফরী : কি করব বল দোস্ত,, বাচ্চাদের খুব ভাল লাগে আমাকে।যদি আমার হুজুরটা কাছে থাকতো তাহলে এতোদিনে খাদিজার মতো একটা কিউট বেবি হতো তাইনা

নাসরিন : আবার নতুন করে শুরু দোস্ত…
তাহলে স্বামী পাবি আল্লাহ তোর ঘরে কিউট বেবিও দেবে।মেহেদি ভাইয়ের আশা ছেড়ে দে।
আমার মনেহয় উনি যদি বেচে

জাফরী : নাহ প্লিজ এমন করে বলিস না।
উনি এখনো বেচে আছে আমার অন্তরে…
আর আমি আমার হুজুরকে ছাড়া কাউকে এই
জায়গা দিতে পারব না রে।

নাসরিন : এইভাবে আর কতোদিন
আল্লাহ তোর সহায় হোক এই দোয়া করি রে দোস্ত
______________
খাদিজার আব্বু ঘরে ঢুকে দেখছে খাদিজা
কান্না করছে…!!!
নজর করে দেখছে খাদিজার গাল লাল হয়ে
আছে।খাদিজার আব্বু বললো কি হয়েছে মা
তুমি কান্না করছো কেন।
আর গালে এইভাবে লাল হয়েছে কেন…!!!
এই কথা বলতেই খাদিজা আব্বুর গলা জড়িয়ে ধরে বলছে আম্মু খুব পচা।
আম্মুর ভিতরে আল্লাহর রহমত নেই।
তার ভিতরটা পাথরে মতো শক্ত…!!!
আম্মু আজ আল্লাহর রহমতের সাথে দূর ব্যাবহার করেছে।আম্মু খুব পচা, আম্মু খুব বাজে (কান্না)
জানো আব্বু আজ ওই আন্টিকে বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু আম্মু ওনার সাথে দূর ব্যাবহার করেছে।মেহমানদের তাড়িয়ে দেয়া মানে আল্লাহর রহমত তাড়িয়ে দেয়া।

খাদিজার আব্বু : খাদিজা এসব কি বলছে

খাদিজার আম্মু : কি আমার হবে।

খাদিজার আব্বু : আর মেয়েটাকে মেরেছো তাইনা

স্ত্রী : মারবো নাতো কি করব,,,অচেনা একটা মেয়েকে বাড়ি নিয়ে এসেছে।

স্বামী : খাদিজা তো প্রায় অনেক মেয়েদের বাড়ি নিয়ে আসে।তখন তো তুমি রাগ হওনা।
কিন্তু আজ মেহমানকে এইভাবে তাড়িয়ে দিলে কেন।তুমি তো এমন ছিলেনা,,,, আর খাদিজাকে তো কোনদিন এইভাবে মেরো নাই।
কি হয়েছে তোমার বলো তো….!!!!!!!

স্ত্রী : তুমি আমাকে বকা দাও,আমাকে মারো,
যা ইচ্ছা করো,কিন্তু প্লিজ আমাকে রেখে চলে
যেওনা। তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবনা।

স্বামী : তোমার হয়েছে কি বলো তো।এমন করছো কেন।

স্ত্রী : নাহ কিছুনা।

স্ত্রী সাথে সাথে স্বামীর পা ধরে জড়িয়ে ধরে বলছে
তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না গো।
তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না…!!!!

খাদিজার আব্বু স্ত্রীর মুখটা ধরে ঠোটে একটা
চুমু দিয়ে বলছে কি হয়েছে গো তোমার।
আমি তো কথা দিয়েছি তোমাকে ছেড়ে কোথাও
যাবো না।
প্রমিজ,আই লাভ ইউ

স্ত্রী : (আই লাভ ইউ টু) খুব ভালোবাসি আপনাকে।
_______________
এইভাবে আট দিন পেরিয়ে গেল

জাফরী : দোস্ত খাদিজাকে এই সপ্তাহ ধরে
দেখিনাই।খুব কষ্ট লাগতেছে রে।

নাসরিন : মেয়েটা এতোই বাজে যে তোর সাথে একটু কথা বলে। সেইজন্য বাচ্চা মেয়েটাকে মনেহয় বের হতে দেয় না।

জাফরী : খাদিজা খুব ভাল বাচ্চা,,, কিন্তু ওর মা আমার সাথে এমন ব্যাবহার করলো কেন
বুঝে আসছে না।
আর তো কয়েকটা দিন থাকব যদি খাদিজাকে
একটু দেখতে পেতাম খুব ভাল হতো।
মেয়েটার প্রতি অনেক মায়া জমে গেছে দোস্ত

নাসরিন : কি আর করবি ওদের বাচ্চা কি তোকে
কি আর দেবে।

জাফরী : নাহ দোস্ত তেমন কিছুনা কিন্তু ব্যাপারটা বুঝলাম না।

তারা দুজন কথা বলতেই দরজায় কে যেন ঠোকা মারলো।
নাসরিন : এতো রাতে আবার কে…!!!

জাফরী : দাড়া আমি দেখছি

জাফরী দরজা খুলে তাকিয়ে দেখছে একটা
মেয়ে বোরখা পরিহিত অবস্থায়
হাতমোজা পা মোজা পরা……!!!!

মেয়েটা : আস্সালামুআলাইকুম

জাফরী : ওয়ালাইকুম আস্সালাম কে আপনি

মেয়েটা : তুমি আমাকে হয়তো চিনতে পারো নি

জাফরী : আসুন ভিতরে আসুন আপু

মেয়েটা : আমি সেদিন তোমার সাথে দূর ব্যাবহার করেছি আপু তুমি আমাকে মাফ করে দাও

জাফরী : ওহ তুমি….. খাদিজার মা

খাদিজার মা : হ্যা আপু,,, সেদিন তোমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছি, আমাকে মাফ করে দিও
আসলে সেদিন থেকে রাত্রিবেলা ঘুম হয়নি
তোমার সাথে দূর ব্যাবহার করেছি বলে।
মনে কষ্ট দিয়েছি আমাকে মাফ করে দাও আপু

জাফরী : ছি ছি আপু এসব আপনি কি বলছেন
এভাবে লজ্জা দিবেন না প্লিজ…..দিজার মা : আসলে তখন আমার মাথা ঠিক ছিলোনা আপু প্লিজ আমাকে মাফ করে দিও

জাফরী : প্লিজ আপু এমন করে বলবেন না
লজ্জা দিয়েন না।
_______________
খাদিজার আব্বু ঘুমাচ্ছে এমন সময় হঠাৎ ঘুমটা
ভেঙ্গে গেল,তাকিয়ে দেখছে খাদিজার আম্মু ঘরের ভিতরে নাই।

খাদিজার আব্বু : কি ব্যাপার কোথায় গেল
এই খাদিজার আম্মু তুমি কোথায়।
কিন্তু কোন আওয়াজ নাই…!!!
কোথায় গেল খাদিজার আম্মু,,, ওয়াশরুমে গিয়েও দেখছে খাদিজার আম্মু নাই।
অবাক কান্ড এতরাতে কোথায় গেল

তারপর তাকিয়ে দেখছে খাদিজার আম্মু
দরজায় ঠুক ঠুক করে ঢুকছে…..
খাদিজার আব্বু : কি কোথায় গিয়েছিলা তুমি

খাদিজার আম্মু : একটা কাজ ছিল

খাদিজার আব্বু : কি কাজ এতো রাতে

খাদিজার আম্মু : তোমাকে নিয়ে খুব ভয় গো

খাদিজার আব্বু : কিসের ভয়

খাদিজার আম্মু : তোমাকে হারানোর ভয়

খাদিজার আব্বু : আমি তোমাকে কথা দিয়েছি
তোথাও যাবোনা। এতো টেনশন করছো কেন
তুমি এ কয়েকদিন ধরে তোমাকে খুব চিন্তিত দেখছি।এতো চিন্তা করলে তোমার পেটে যে মেহমান আছে তার তো কষ্ট হবে তাইনা।

খাদিজার আম্মু : আর কয়েকটা দিন শুধু একটু টেনশন হবে আমার।

খাদিজার আব্বু : জানিনা তুমার কিসের এতো টেনশন।যদি আমার কাছে একটু শেয়ার করতে
খুব ভাল হতো।

খাদিজার আম্মু : আরে নাহ কিছুনা এমনি টেনশন
হয় আরকি

খাদিজার আব্বু : এতো রাতে কথা বাদ দাও

স্ত্রীর হাত ধরে বলছে,,, এই এতো রাত হয়েছে
এখন ঘুমাও,,, এইযে তোমার মাথায় হাত
বুলিয়ে দিচ্চি।

খাদিজার আম্মু : আমি নিজেই প্রমাণ পেয়েছি

খাদিজার আব্বু : কি প্রমাণ পেয়েছো

খাদিজার আম্মু : হুজুরেরা বউকে আদর করে বেশি,, সেটা নিজের চোখে দেখছি।
আমার স্বামীতো একজন হুজুর আমাকে কি আপনি কম আদর করেন নাকি
খুব আদর করেন তো আমাকে,,, সত্যি হুজুরেরা বউকে খুব আদর করে।

খাদিজার আব্বু : তাইনা কি উম্মাহ………
_____________
জাফরী আর তিনদিন থাকবে তারপর সে বাংলাদেশে চলে যাবে।
নাসরিন আর জাফরী একই চেম্বারে বসে রোগি
চেকআপ করছে।এমন সময় কিছু আদিবাসি
মহিলা কান্না করছে।
তাদের ভাষায় বলছে আমার বাবাকে আপনারা
একটু চিকিৎসা করেন

জাফরী : এরা কি বলছে

স্থানীয় : ম্যাডাম ওরা বলছে আমার বাবার একটু চিকিৎসা করেন…!!!

জাফরী : ওহ রোগি কে নিয়ে আসো।

আদিবাসি মেয়ে গুলো তাদের ভাষায় বললো
বাবাকে এখানে নিয়ে আসার পরিবেশ নাই
আপনি একটু চলুন…!!!

এবার নাসরিন বললো তাহলে তুই যা জাফরী
তুই তো ভালকরে চেকআপ করতে পারিস,,,
এবার জাফরী আদিবাসি মেয়ে গুলোর সাথে
যাচ্ছে তাদের বাসায় চেকআপ করতে
___________
খাদিজার আম্মু : এসো সকালের নাস্তাটা সেরে নাও।এই খাদিজার আব্বু কই গো

খাদিজার আব্বু : দাড়াও আসতেছি
কি রান্না করছো গো দেখি

খাদিজার আম্মু : এইতো ডিম খিচুড়ি

খাদিজার আব্বু : ওহ,,, সেই মজা হবে দাও তাড়াতাড়ি ক্ষুদা লেগেছে।

খাদিজার আব্বু যখন খাবার মুখে দিতে যাবে
এমন সময় একটা বৃদ্ধ আদিবাসি বুড়ি এসে ডাকছে বাবা বাড়িতে আছো।

খাদিজার বাবা তাড়াতাড়ি খাবার বাদ দিয়ে
বৃদ্ধ আদিবাসি বুড়ির কাছে গিয়ে বলছে কিগো
দাদি কি হয়েছে এতো সকালে

দাদি : নাতি তোর দাদার শরীর খুব খারাপ
আমার মেয়ে ডাক্তার আনতে গেছে।
কিছু টাকা দে বাবা ডাক্তারকে দিতে হবে,,,,
ওষুধ কিনতে হবে।

খাদিজার আব্বু : কি হয়েছে দাদুর

দাদি : কাল রাত থেকে খুব শ্বাস কষ্ট বেড়েছে তোর
দাদার।

এই খাদিজার আম্মু তাড়াতড়ি জোব্বাহ দাও
আমি একটু দাদাকে দেখতে যাবো
খাদিজার আম্মু খাদিজার বাবাকে জোব্বাহ
বের করে দিলো।জোব্বাহ খানা পরিধান করে
বলছে,,, চলো তো দাদি দেখি দাদার কি হয়েছে।

আর অপর দিকে জাফরী মেয়ে গুলোর সাথে আসতেছে,,,,, তাদের বাবাকে চেকআপ
করতে। বাবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে অনেক,
ডাক্তার আপু একটু তাড়াতাড়ি চলেন।
যেতে যেতে জাফরী আদিবাসি এলাকায় ঢুকে
পড়লো।আর ওইদিক দিয়ে খাদিজার আব্বু আসতেছে।

আর অপর দিকে জাফরী মেয়ে গুলোর সাথে আসতেছে,,,,, তাদের বাবাকে চেকআপ
করতে। বাবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে অনেক,
ডাক্তার আপু একটু তাড়াতাড়ি চলেন।
যেতে যেতে জাফরী আদিবাসি এলাকায় ঢুকে
পড়লো।আর ওইদিক দিয়ে খাদিজার আব্বু আসতেছে।

খাদিজার আব্বু : দাদি চলো একটু তাড়াতাড়ি

দাদি : বয়স হইছে রে দাদা কোনদিন জানি তোর দাদা আর আমি মরে যাবো।
আগের মত হাটতে পারিনা

খাদিজার আব্বু : দাদি ওমন জীবনে আমরাও পা দিব।আমাদেরও সামনে আছে ওই রকম দিন।

দাদি : হ রে দাদা চল তাড়াতড়ি ডাক্তার মনে হয় এসে গেছে।

খাদিজার আব্বু : হুমমমমম
__________

জাফরী বৃদ্ধলোকটার চিকিৎসা করছে
আর ওইদিক দিয়ে খাদিজার আব্বু আসছে

জাফরী : ভয় পাওয়ার কারণ নাই তোমাদের বাবা ঠিক আছে।শুধু ঠান্ডা লাগার কারণে শ্বাসকষ্ট বেড়েছে।
কিছু ওষুধ লিখে দিচ্ছি এই ওষুধ গুলো ওনাকে
খাওয়াবেন কেমন

মেয়ে গুলো : ম্যাম বাবা সুস্থ হবে তো

জাফরী : ইনশাআল্লাহ সুস্থ হবে..তেমন কিছু হয়নি
একটু ঠান্ডা লেগে শ্বাসকষ্ট টা বেড়েছে।

জাফরী ব্যাগ থেকে কি যেন বের করে দিলো
মেয়ে গুলোকে।

মেয়ে গুলো : এটা কি ম্যাম,,

জাফরী : এতে কিছু টাকা আছে।

মেয়েগুলো : আপনি টাকা দিচ্ছেন কেন…??

জাফরী : আমি জানি তোমাদের কাছে কোন টাকা নাই।তাই দিচ্ছি, তোমাদের বাবাকে ওষুধ কিনে
এনে দিও কেমন।
যে ওষুধ গুলো লিখে দিয়েছি এগুলো আমার কাছে বর্তমানে নাই।লজ্জা করিয়োনা টাকা
গুলো রাখো।

মেয়েগুলো : কিন্তু আপনি কিসের স্বার্থে এতো টাকা দিচ্ছেন আমাদের।

জাফরী : কই বেশি কিছু দেইনাই তো।
আর সত্যি কথা বলতে আমার বরকে কথা দিয়েছিলাম বড় ডাক্তার হয়ে মানবতার খেদমতে নিজিকে বিলিয়ে দেব।

মেয়েগুলো অবাক নজরে তাকিয়ে আছে
সত্যি ম্যাম আপনার মত যদি সব ডাক্তার
এমন হতো তাহলে পৃথিবীটা অনেক সুন্দর
হয়ে যেত।
_______________

খাদিজার আব্বু আর দাদি দরজায় দাড়িয়ে আছে
এই পুটি তাড়াতাড়ি দরজা খোল
তোর ফারুক ভাইকে নিয়ে এসেছি….!!!
তাড়াতাড়ি দরজা খুল……!!!
পুটি দরজা খুলে দিলো দাদি বললো ডাক্তার এসেছে।
পুটি : হুম এসেছিলো এই মাত্র চলে গেল

দাদি : টাকা পেলি কই

পুটি : টাকা আমরা দেই নাই।বরং উনি আমাদের কিছু টাকা দিয়ে গেল।আর বললো বাবার তেমন কিছু হয়নি ঠান্ডা লেগে বাবার একটু শ্বাসকষ্ট
বেড়েছে আরকি।

খাদিজার আব্বু : ডাক্তারের নাম কিরে পুটি

পুটি : দাদা ওটা মেয়ে ডাক্তার

খাদিজার আব্বু : ওহ তা নাম কি।

পুটি : ওনার নাম (জাফরী)

খাদিজার আব্বু : নতুন ডাক্তার মনে হচ্ছে এর আগে নাম শুনি নাই তো।

পুটি : ওনার বাড়ি বাংলাদেশে

খাদিজার আব্বু : বাড়ি বাংলাদেশে।নাম জাফরী।
কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে।যেন নামটা আগে কখনো শুনেছি খুব চেনা মনে হচ্ছে

পুটি : এই দাদা,,,,, এই দাদা,,,,

খাদিজার আব্বু : কিহ

পুটি : কি ভাবছিলি তুই

খাদিজার আব্বু : নাহ কিছু নাতো

পুটি : কি যেন ভাবতেছিলি

খাদিজার আব্বু : নাহ কিছু ভাবি নাই
______________
জাফরী : কিরে এখনো দেশে ফিরতে দুইদিন বাকি
এখনে ব্যাগ প্যাক করছিস

নাসরিন : যাওয়ার দিনে এতো ঝামেলা করতে পারব না।তাই আগে ভাগে সব গুছিয়ে নিচ্ছি।

জাফরী : দোস্ত একটা কথা বলবো রাগ করবি নাতো

নাসরিন : হুম বল, করব না

জাফরী : খাদিজার জন্য কিছু জিনিস কিনেছি,
কিভাবে ওকে দেব, সেটাই তো বুঝতে পারছি না।

নাসরিন : ওর মাকে গিয়ে দে

জাফরী : কিন্তু….কিভাবে,,, কেউ যদি না বলে এমনি তাদের বাড়িতে কিভাবে যাবি।

নাসরিন : তা ঠিক,,,এক কাজ করতে পারিস
কাহারো দ্বারা পাঠিয়ে দে।

জাফরী : গুড আইডিয়া।জানি না দুদিন পর চলে
যাবো।আর কোনদিন ওর সাথে দেখা হবে
কিনা জানিনা….!!!

নাসরিন : এতোদিনে বিয়ের পিড়িতে বসলে
খাদিজার মতো একটা কিউট বাচ্চা পাইতিস

জাফরী : ধ্যাত তোর যা কথা….
________________
স্ত্রী : তুমি যে তোমার আদিবাসি দাদাকে দেখতে গেছিলে কি বললো ডাক্তার

স্বামী : ডাক্তার বলছে কোন প্রবলেম নাই
শুধু ঠান্ডা লাগার কারণে শ্বাস কষ্ট একটু
বাড়ছে আরকি।

স্ত্রী : ওহ… টাকা পয়সা কিছু দাও নাই

স্বামী : নাহ

স্ত্রী : সে কি কথা বলছো।।। দাওনি কেন

স্বামী : একটা মেয়ে ডাক্তার আসছিল
ফ্রি চিকিৎসা দিলো আবার টাকাও দিয়ে গেল
জন দরদী মেয়ে মনেহয়।

স্ত্রী : কি নাম ওনার

স্বামী : ওনার নাম জাফরী

স্ত্রী : ওহ……

স্বামী : মন ভার হয়ে গেল কেন

স্ত্রী : নাহ কিছু না

স্বামী : জানো আমার কেন জানি মনে হচ্ছে
আমার কিছু মনে নাই।
ছোটবেলা মানুষ কত খেলা খেলত,কতকিছু করত
কিন্তু আমার মনে নেই কেন…..!!!! থেকে থেকে মনেহয় আমার কি যেন হারিয়ে গেছে।
বড্ড অসহায় লাগে গো…..!!!
আর জানো কিছু চিত্র যখন চোখের সামনে ভেসে উঠে তখনই মাথার যন্ত্রনা বেড়ে যায়…!!!

স্ত্রী : তোমার কেন এমন মনে হচ্ছে

স্বামী : তা জানিনা তবুও মনে হয় কি যেন আমার হারিয়ে গেছে।মাঝে মাঝে হুটহাট শব্দ মাথায় বেজে উঠে।তোমাকে একদিন বলেছিলাম মাঝে মাঝে আমি স্বপ্ন দেখি।একটা মেয়ে আমাকে ডাকছে…!!!কেন এমনটা হয় গো…
আবার কাহারো কান্না শুনতে পাই…….!!!
আর তখনেই মাথার যন্ত্রনা বেড়ে যায়।
আল্লাহ আমাকে কি কোন পরিক্ষায় ফেলিয়েছে নাকি

স্ত্রী : তোমার কোন সমস্যা নাই তোমার ভিমরতি ধরেছে (যত্তোসব)

স্বামী : রাগ করার কি হলো

স্ত্রী : কিছু হয়নাই

স্বামী : তাহলে হঠাৎ রাগ হলে তুমি

স্ত্রী : ধ্যাত ছাড়ুন তো,,, আমাকে টাস করবেন না (রাগি সুরে )

স্বামী : যাক বাবা,,, আমি আবার কি করলাম
এতো রাগ হলে যে।

দরজার কলিংবেল বেজে উঠলো, এখন আবার কে এলো রে,,,খাদিজার আব্বু গিয়ে দরজা খুলে দিলো।
দেখছে একটা লোক অনেক গুলো জিনিস পাতি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

খাদিজার আব্বু : হুমমম বলুন কি দরকার

লোকটি : আস্সালামুআলাইকুম,,, হুজুর একটা মেয়ে এসব পাঠিয়েছে আপনার মেয়ে খাদিজার জন্য।

খাদিজার আব্বু :কি নাম ওনার

লোকটি : ড. জাফরী ইসলাম

খাদিজার আব্বু : জাফরী মানে ওই মেয়েটা দিয়েছে মনেহয়। ওহ আচ্ছা দিন।

খাদিজার আব্বু জিনিস গুলো নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে আসছে

স্ত্রী : এসব কি

স্বামী : তা জানি না,,, খাদিজার জন্য পাঠিয়েছে।

স্ত্রী : কে পাঠিয়েছে

স্বামী : জাফরী কি যেন নাম মেয়েটার

স্ত্রী : মানুষ দিয়েছে সেইজন্য কি নিতেি হবে।
ঘুরিয়ে দিতে পারতেন

স্বামী : আচ্ছা তোমার কি হয়েছে বলো তো।
কয়েকদিন ধরে তুমি আমার সাথে অদ্ভুত ব্যাবহার করছো।খাদিজাকে বাহিরে বের হতে দিচ্ছো না।
আবার আমাকেও বের হতে দিতে চা্ওনা তোমার হয়েছে কি একটু বলবে।

স্ত্রী : আমার আবার কি হবে….!!!না কিছু হয়নি।

স্বামী : আচ্চা ঠিক আছে।
খাদিজা, খাদিজা, কই মা।

খাদিজা : আসসালামুআলাইকুম

বাবা : (ওয়ালাইকুম আস্সালাম) তোমার জন্য গিফট পাঠিয়েছে।

খাদিজা : কে আব্বু

বাবা : ওইযে জাফরী কে যেন

খাদিজা : ওহ জাফরী আন্টি দাও দাও

বাবা : খুব খুশি হয়েছিস দেখছি ওনার নাম শুনে

খাদিজা : হুমমমম আব্বু,, খুব খুব খুশি হয়েছি।
ওই আন্টি খুব ভাল….!!!
জানো ওনার বর নাকি ওনার জন্য অনেক গিফট
আনতো।অনেক জিনিস আনতো।
অনেক কষ্ট করে নাকি ওনার বর ওনাকে পড়াশোনা করিয়েছে।

বাবা : তাই…..

খাদিজা : জানো আব্বু ওই আন্টির মনে অনেক কষ্ট,উনি আমাকে সব বলেছে।
ওনার বর নাকি লুকিয়ে আছে,আমি বললাম কেন লুকিয়ে আছে।তারপর আন্টির চোখের পানি ছলছল করে বলছিলো মা,,, তাতো জানিনা তোর
আংকেল কোথায় লুকিয়েছে।
তবে তোর আংকেলের কাছে লুকোচুরি খেলায় হারমেনে গেছি,,, তারপরও তোর আংকেল বের হচ্ছেনা।
আমি আন্টিকে বলেছি,,,ঠিক তোমার বরকে তুমি পাবে।উনি ঠিক তোমার কাছে একদিন ফিরে আসবে।আমি আল্লাহকে বলে দিয়েছি, আল্লাহ
ছোট বাচ্চাদের কথা শুনে।
ঠিক একদিন আংকেল ফিরে আসবে..

বাবা : তাই…….!!!!তোমার আংকেলের নাম কি

খাদিজা : এই জা,,,, নাম তো শোনা হয়নাই আব্বু

বাবা : আচ্ছা ঠিক আছে,,, গিয়ে পড়তে বস।
কেমন………!!!
______________________
দিন যেতে থাকলো জাফরীর সময় হয়েছে দেশে
ফিরে যাবার।আর মাত্র একদিন, মানে আগামিকাল জাফরী দেশে ফিরে যাবে….!!!
তাই সবাই ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে….!!!!

বান্ধবী : জাফরী চলনা রে একটু মার্কেটে যাই
বাবা মায়ের জন্য কিছু কিনতে লাগবে

নাসরিন : কথা কিন্তু মন্দ বলিস নাই কিরে জাফরী কি বলিস

জাফরী : মন্দ বলিস নি।বাবা মায়ের জন্য আমাকেও কিছু নিতে হবে।

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here