নীড় পর্ব-১৭

0
1865

নীড়
রেশমী রফিক
১৭।।
শফিকুল চৌধুরী হতভম্ব ছেলের দুরবস্থা দেখে। ছিন্নভিন্ন শার্ট কোনোরকমের গায়ের উপর ঝুলে আছে। তাতে রক্ত মাখানো। কানের পাশ দিয়ে রক্তের কয়েকটি শুকনো ধারা নেমে কাঁধের উপর। এসেছে। মাথায় একটা কাপড় বেঁধে রাখা হয়েছে। ওর পেছনে দাঁড়িয়ে আছে তুবা। শক্ত করে শার্ট মুঠির মধ্যে ধরে রেখেছে। ভয়ে থরথর করে কাঁপছে সে। কারও দিকে তাকাচ্ছে না। মাথা নিচু করে রেখেছে। শারার আতঙ্কিত হঠাৎ বাবাকে এখানে উপস্থিত দেখে। সে ভাবতেও পারেনি বাবা এতদূর চলে আসবে। তাকে কি কোনোভাবে ডেকে আনা হয়েছে?
স্বর্ণ ফোনে কথা বলছিল ডাক্তারের সাথে। তিনি পরিচিত ফার্মাসিতে প্রেসক্রিপশন দিয়ে রেখেছেন। একজন পুলিশ অফিসার গেছে সেগুলো আনতে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর শারার আপাতত ভালো আছে। সবথেকে বড় ব্যাপার হলো, রক্ত পড়া বন্ধ হতে হবে। সেটা বন্ধ হয়েছে। কিন্তু প্রচণ্ড ব্যাথায় শারার কাবু হয়ে গেছে। মাথা আর ঘাড় নাড়াতে পারছে না। ঠিকমতো তাকিয়ে থাকার উপায়ও নেই। তবু জোর করে চোখ খুলে রেখেছে। ভেতরের সাদা অংশ লাল বর্ণ ধারণ করছে ধীরে-ধীরে। আঘাতটা যেহেতু কপালের ঠিক উপরে লেগেছে, ডাক্তারের আশঙ্কা, চোখের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। স্বর্ণ তার পরিচিত একজন সাইকোলজিস্টের সাথে তুবার ব্যাপারেও কথা বলেছে। তুবা এখানে আসার পর কারও সাথে কথাই বলছে না কোনোরকম। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিচ্ছে না। একমাত্র শারারের সাথেই সে স্বাভাবিক। পুলিশ এসেছিল জিজ্ঞাসাবাদ করতে। যা যা উত্তর দেবার, ওর পক্ষ হয়ে শারার বলেছে। সে কেবল মাথা নেড়ে হ্যাঁ-না সূচক উত্তর দিয়েছে নীরবে।
শফিকুল চৌধুরী ছেলের পেছনে থাকা তুবাকে এক ঝলক দেখলেন। তুবার পরনেও ছেঁড়া জামা। একটা ওড়না গায়ে জড়িয়ে ধরেছে। চুল আলুথালু হয়ে মুখের সামনে জড়ো হয়েছে। তাই চেহারা খুব একটা বুঝা গেল না। তিনি গম্ভীর সুরে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন,
– ও কে হয় তোমার? গার্লফ্রেন্ড?
– না আব্বু।
– তাহলে?
– ও হচ্ছে তুবা। সাইফুলের ওয়াইফ দিবার বোন।
পরিচয় শুনে শফিকুল চৌধুরীর কপালে ভাঁজ পড়ল। সাইফুলের শ্যালিকার সাথে শারারের কোনো যোগাযোগ আছে বলে তো শোনেননি। কেবল সাইফুলের বিয়েতে গিয়েছিল। সেখানে কি তবে আলাদাভাবে পরিচয় হয়েছে ওদের? হলেইবা কী? সম্পর্কে বেয়াই-বেয়াইন। পরিচিত হওয়াটা কোনো সমস্যা না। তবে এতদূর পর্যন্ত যোগাযোগ যেহেতু, একসাথে লাঞ্চ করতে এসেছে, তার মানে বুঝতে হবে এর মধ্যে আরও কিছু আছে। তিনি বললেন,
– দিবার বোন এখানে কী করছে? তুমি ওকে নিয়ে এসেছ?
– হ্যাঁ মানে তুবা খেতে খুব পছন্দ করে। তাই…
– তাই ওকে নিয়ে এসেছ লাঞ্চ করাতে?
– হ্যাঁ মানে স্বর্ণর রেস্টুরেন্টের অনেক সুনাম তো। এখানকার খাবার সবাই পছন্দ করে। তাই ভাবলাম…
– তুমি নিয়ে আসলে কেন? ও নিজে কি আসতে পারত না? ঠিকানা দিলেই পারতে।
– ছোট মানুষ তো।
– ছোট মানুষ?
শফিকুল চৌধুরী মাথা বেঁকিয়ে তুবার দিকে তাকালেন। মেয়েটাকে তিনি আগে লক্ষ করেননি ভালোভাবে। সাইফুলের বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ির দিকের এতসব আত্মীয়স্বজনের ভীড়ে কখনো সেভাবে চোখে পড়েছে বলে মনে হলো না। তাই বলে শারার যেভাবে বলছে, তেমন ছোট তো না এই মেয়ে। অন্তত নবম-দশম শ্রেণীতে পড়ার কথা। বয়স কত হবে? পনেরো বা ষোল? খুব বেশি হলে আরও দুই-এক বছর বাড়তে পারে। এই বয়সের মেয়েরা সাধারণত বান্ধবীদের সাথে ঘুরে বেড়ায়। কোথাও খেতে গেলে দলবেঁধে যায়। অথচ এই মেয়ে কি না শারারের সাথে চলে এসেছে রেস্টুরেন্টে খাবে বলে? উহু, হিসেব মিলছে না।
তুবা কুঁকড়ে যাচ্ছে। শারারের পিঠের সাথে মিশে আছে সে। শারার ইশারায় সরতে বলল ওকে। এভাবে বাবার সামনে গা ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়িয়ে থাকাটা ভালো দেখায় না। তাছাড়া ওদের মধ্যে সেরকম ঘনিষ্ঠতাও নেই। বাবা এটাকে অবশ্যই ভালোভাবে নেবে না। কিন্তু তুবা নড়ল না একচুল। শারার একদিকে সরে যেতে চাইলে সেও সরে গেল। হয় বুঝতে পারেনি শারারের ইশারা, নয়তো খেয়াল করেনি। এদিকে শারারের অবস্থা বেগতিক। বাবাকে ভয় না পেলেও মোটামুটি সমীহ করে চলে। একমাত্র ছেলে হলেও এত বেয়াড়াপনা করার স্পর্ধা কখনো তার হয়নি। কিন্তু তুবাকে তা বুঝানো যাচ্ছে না। আঠার মতো সেঁটে আছে সে।
শফিকুল চৌধুরী বুঝলেন ছেলে কিছু লুকোচ্ছে। তার চেহারায় ঘাপলার ছাপ স্পষ্ট। তিনি এবার তুবাকে উদ্দেশ্যে করে বললেন,
– অ্যাই মেয়ে, তুমি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে আছ কেন? সামনে এসো। এদিকে বসো।
তুবা নড়ল না। শারার নিজেও চাপা সুরে বলল,
– যাও!
কিন্তু সে গ্যাঁট হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। শারারের শার্ট পেছন থেকে আরও মুঠ করে ধরল। শফিকুল চৌধুরী এবার খানিক ব্যঙ্গ ভরে বললেন,
– ছোট মানুষ দেখি তোমাকে ছাড়া নড়তে-চড়তেই পারে না। যেখানে যায়, তোমাকে থাকতে হয় সাথে। তা, তুমি কি ওকে প্রতিদিন ওর বাসায় রেখে আসো?
– না আব্বু। ও আসলে ভয় পেয়েছে। মানে আমি তো ওর সাথে প্রতিদিন দেখা করি না।
– তাহলে আজ কেন দেখা করতে হলো?
– ইয়ে, মাঝেমধ্যে দেখা হয়। মানে তুবা খেতে পছন্দ করে তো…
– এজন্য তুমি প্রতিদিন অফিস ফাঁকি দিয়ে এই রেস্টুরেন্টে সেই রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে নিয়ে যাও।
– না না, মানে…
স্বর্ণ হতাশ ভঙ্গিতে বসে বাবা-ছেলের কথোপকথন শুনছিল এতক্ষণ। এবার বলল,
– আংকেল, আপনি ভুল বুঝছেন। শারার আর তুবা দুজনের সাথেই কথা হয়েছে আমার। ওরা আসলে বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড না। এমনি, জাস্ট ফ্রেন্ড।
শফিকুল চৌধুরী ভ্রু উঁচু করলেন,
– জাস্ট ফ্রেন্ড! বাহ, ভালো তো!
কথাটা ব্যঙ্গ করে বলা তো বটে, কিন্তু কী অর্থে বলা হলো কেউ বুঝে উঠতে পারল না। স্বর্ণ আর কথা বাড়াল না। শফিকুল চৌধুরী জিজ্ঞেস করলেন,
– এখানকার যিনি এমপি, তার নাম কী?
– জি। মাসুদ। মাসুদুল করিম।
– নাম্বার আছে তার কোনো?
– জি না আংকেল।
– শুনলাম, তোমার রেস্টুরেন্টে অ্যাটাক হবার পেছনে তার হাত আছে। আবার এও শুনলাম, এখানে নাকি কীসব হচ্ছে। এলাকার মানুষজন…
– আংকেল, ওগুলো সব মিথ্যে। ব্যাপারটা হলো, আমি একটা মেয়ে হয়ে রেস্টুরেন্ট বিজনেস করছি। নিজে শেফ হিসেবে কাজ করছি। কাস্টমার হ্যান্ডেল করছি। এটা ওরা মানতে পারছে না। তাছাড়া, এই জায়গাটা যার কাছ থেকে লীজ নিয়েছি, তার সাথে এমপির ঝামেলা আছে জমি নিয়ে। তাই সে আমার রেস্টুরেন্ট বন্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
– তাহলে শারারের উপর অ্যাটাক হলো কেন? তোমার রেস্টুরেন্টের বাকি কাস্টমারদের ফেলে ওর পেছনে কেন লাগল?
স্বর্ণ চুপ রইল। এই এক কেনর উত্তর দিতে গিয়ে তার মুখ ব্যাথা হয়ে গেছে। সে নিশ্চিত, শফিকুল চৌধুরী কারণটা জানেন। ওসি বা এসআইয়ের কাছে সবটা শুনেছেন। সম্ভবত পুলিশের মতো তিনিও বিশ্বাস করতে পারছেন না। পুলিশ এতক্ষণে তাকে হাতকড়া পরিয়ে জেলে ভরত, যদি না সময়মতো রাসেলকে সে কল করত। রাসেলের সাথে তার খুব একটা পরিচয় নেই। একদিন একটা পার্টিতে দেখা হয়েছিল। বান্ধবীর মীরা পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল কীভাবে যেন। অত খেয়াল নেই। সেদিন রাসেল নিজে আগ বাড়িয়ে কথা বলেছিল। ছেলেটা বেশ মিশুক। সাবলীল ভঙ্গিতে আলাপ করছিল যেন পূর্বপরিচিত। সেদিনই নিজে থেকে মোবাইল নাম্বারসমেত কার্ড দিয়েছিল ওকে। বলেছিল, কখনো মনে পড়লে যেন কল করে।
সেই মনে পড়েছে আজ, এই বিপদের দিনে। মীরার কাছে কথা প্রসঙ্গে শুনেছিল, রাসেলের বাবা সেক্রেটারিয়েটে উচ্চপদে চাকুরি করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অফিস। ওই তথ্যটুকু সম্বল করেই কল করেছিল। তাতে কাজ হয়েছে। রাসেল শুরুতে অবাক হলেও পরে আন্তরিক ভঙ্গিতে সমর্থন করেছে। তার বাবাকে বলে থানায় কল করিয়েছে তখনই। কিন্তু মাঝখান থেকে রাসেলের কানে তার সম্পর্কে যত ধরনের গুজব আছে, সবটা চলে গেছে। রাসেল নিজেও একটু আগে বলছিল,
– সত্যি করে বলো স্বর্ণ, হোয়াটস গোয়িং অন? আমাকে সবটা না বললে আমি হেল্প করতে পারব না।
– রাসেল ভাই আমি তো বললামই আপনাকে…
– ইজ দেয়ার এনিথং এলস? আমি কিন্তু অন্য কিছু শুনছি।
– অন্য কিছু মানে?
– মানে ওখানে নাকি আই মিন… প্লিজ অন্যভাবে নিও না। প্রস্টিটিউশন বা এমন কিছু? আর ওই ছেলেটা শারার না কী যেন নাম, ও কি তোমার পার্টনার? আই মিন বিজনেস পার্টনার?
স্বর্ণ কয়েকটা মুহূর্ত কথাই বলতে পারেনি। কেবল ছোট্ট করে বলেছে,
– দেয়ারস নাথিং লাইক দ্যাট। শারার ইজ মাই ফ্রেন্ড অনলি।
– দেখো স্বর্ণ, তুমি আমাকে ফ্র্যাংকলি বলতে পারো। আই উড নেভার থিংক এনিথিং নেগেটিভ অ্যাবাউট ইউ। অ্যাম এনাফ ব্রড মাইন্ডেড।
– ভাইয়া প্লিজ। এই টপিকটা এখানেই বন্ধ হোক। এরকম কিছুর সাথেই আমি ইনভলভড না। আর শারার আমার পার্টনারও না। ও জাস্ট একজন ফ্রেন্ড। আমার এখানে জাস্ট খেতে এসেছিল। সাথে একটা মেয়ে আছে…
– ওর গার্লফ্রেন্ড? তারা কি ডেট করতে এসেছিল? মানে তুমি কি তোমার ফ্রেন্ডকে কোনো প্রাইভেট স্পেস…
– না ভাইয়া, ইউ আর গেটিং ইট রঙ। টোটালি রঙ। শারার আমার রেস্টুরেন্টেই ঢুকতে পারেনি। তার আগেই অ্যাটাক হয়েছে।
– ওহ ওকে। সো, ঠিক আছে। আমি দেখছি ব্যাপারটা।
তখনকার মতো রাসেল ফোন রাখলেও ব্যাপারটা আর নির্দিষ্ট গন্ডির ভেতর রইল না। ঘন্টাদুয়েক পর চারপাশ থেকে কল আসতে শুরু করেছে। কেউ কেউ লিঙ্ক পাঠাচ্ছে। সেসব লিংকে অনলাইন নিউজ পোর্টালের লেখা। এই রেস্টুরেন্ট এবং আজকের কাহিনি নিয়ে যত রকমের আজগুবি আর বানোয়াট গল্প বানানো যায়, যতটা রগরগে করে লেখা সম্ভব, তার কমতি হয়নি কোনো। হলুদ সাংবাদিকতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ যাকে বলে। কয়েকজন আবার ফেসবুকেও লিখেছে। রেস্টুরেন্টের ছবির সাথে আজেবাজে সব গল্প লিখে পোস্ট করেছে। সেসব আবার দেদারসে শেয়ার করা হচ্ছে।
বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে ফেলল সে। আজকের দিনটাই কুফা দিয়ে শুরু হয়েছে। কার মুখ দেখে ঘুম ভেঙ্গেছিল আল্লাহ মালুম। ঘুম ভাঙ্গার পর কিছুক্ষণ মোবাইল টিপাটিপি করে। সাধারণত মেসেঞ্জার ফেসবুক আর ইমেইলস চেক করা হয়। এরপর ক্যালেন্ডারের নোট দেখে, আজকের দিনে কী কী করার আছে। তারপর কারও মেসেজের রিপ্লাই দেবার থাকলে দেয়। কিংবা ফেসবুকে কিছু পোস্ট করে। তারপর ধীরেসুস্থে বিছানা ছাড়ে। কিন্তু আজ ঘুম ভেঙ্গেছে দেরিতে। অ্যালার্ম বাজছিল কিন্তু সেই শব্দে ঘুমের এতটুকু হেরফের হয়নি। রাতে প্রবাসে থাকা দুই বন্ধুর সাথে ভিডিও চ্যাট করেছিল। বহুদিন পর দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে বিধায় গল্প-আড্ডায় অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। তারপর শুয়ে পড়লেও ঘুম আসছিল না সহজে।
নাশতার টেবিলে ঘটল আরেক ঝামেলা। তার মা নিয়ম মেনে চলা মানুষ। বাসায় একদণ্ড বেদিক হতে দেন না কিছু। সংসারের কিছু নিয়মের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, দিনের বাকিটা সময় যে যেখানেই থাকুক না কেন, নাশতা একসাথে খাওয়া হবে। আজ স্বর্ণর নাশতা খাওয়ার উপায় ছিল না। রেস্টুরেন্টে আসার আগে ব্যাংকের সাথে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। তাই নাশতা না খেয়েই চট করে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। এই নিয়ে মায়ের মেজাজ তুমুল খারাপ। ফোন করে একফদা ঝেড়েছে। মাকে সে কিছুতেই বুঝাতে পারেনি ব্যাংকের এই অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস করা মানে অনেক বড় ক্ষতি।
রেস্টুরেন্টটা আরেকটু সাবলীলভাবে চালাতে কিছু লোন দরকার। এই লোনটা সে বাবার কাছ থেকে নিতে চাচ্ছে না। বাবা ইতোমধ্যে অনেক টাকা ঢেলে ফেলেছে রেস্টুরেন্টের পেছনে। চাইলে বিনা বাক্য ব্যয়ে আরও দেবে। কিন্তু চেহারায় একটা তাচ্ছিল্য ঝুলিয়ে রাখবে। ভাবখানা এমন, দেখি আর কত টাকা নষ্ট করে এই রেস্টুরেন্টের পেছনে দৌড়াতে পার। বাবার ধারণা, ওর মতো মেয়ে এই ব্যবসায়ে বেশিদূর যেতে পারবে না। ওকে অফিসে বসতে বলেছিলেন। এছাড়াও পড়াশুনার বেলায় বাবার সাথে কিছুটা মন কষাকষি চলছিল। বাবা চায়নি, হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ুক সে। তার মতে, এইসব ফালতু বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়া মানে সময় নষ্ট।
আজীবন টাকার বিছানায় গড়াগড়ি করা মায়েরও এই নিয়ে আপত্তি ছিল। তার মতে, মেয়ে মানুষ হয়ে ক্যারিয়ারের পেছনে দৌড়ানোর দরকার নেই। টাকাপয়সাওয়ালা এক ছেলের গলায় ঝুলে পড়লেই কেল্লাফতে। বাবা অবশ্য এদিক থেকে ওর পক্ষে আছে। বাবা চায়, সে নিজের পায়ে দাঁড়াক। কিন্তু বাবা ওকে নিজ গন্ডি থেকে বের হতে দিতে ইচ্ছুক নন। যাকগে, এই নিয়ে বলতে শুরু করলে দিন পার হয়ে যাবে। কিন্তু বলা শেষ হবে না। আপাতত আজকের সমস্যা সমাধান করতে হবে নিজেকেই।
(চলবে)
পরের পর্ব রাত নয়টায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here