অপরাধী পর্ব-১

0
5108

#অপরাধী #লেখক_অন্তর পর্ব_১ , , , –ছি অন্তর! ছি তুই এতোটা নিচে নেমে গেছিস,কি করে পারলি এই কাজ করতে তুই! তোকে আমার শশুড় বাড়ি আনলাম আর শেষ মেষ তুই কিনা এই কাজ করলি,লজ্জা করলো না তোর,একবারো মাথায় আসে নাই এই কাজটা করলে আমার উপর কি প্রভাব পড়বে,নিজের সম্মানের দিকে দেখলি না আমার সম্মান্টাও শেষ করলি তুই,(আপু) আমি আপুর কথা গুলো চুপচাপ মুখ বুজে সহ্য করে নিলাম কিন্তু আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে আমি কি এমন করলাম যার জন্য আমার আপু আমাকে এই কথাগুলো বলল,আসলেই আমি অপরাধী। খুবই বড় ধরনের জঘন্যতম অপরাধ করলাম তাও জীবনের সবচেয়ে বড় অপরাধ যার ফল এখন পাচ্ছি আর আমি এতটাও জানি আরো খারাপ কিছু ঘটতে চলল আমার সাথে।অপরাধ অপরাধ বলতেছি কিন্তু কি অপরাধ করলাম তা-ই বললাম না।তো চলেন একটু অতিত থেকে ঘুরে আসি কারন অতিত সম্পকে জানলেই বুঝতে পারবেন আমার অপরাধটা কি, তো চলেন….. এক সপ্তাহ আগে আমি নিজের রুমে বসে বসে মোবাইলে গেমস খেলছিলাম তখনি আম্মু আমার রুমে আসে। –আব্বু, কি করিস! –কিছু করি না, কিছু বলবা!(আমি) –হ্যা,তোর আপু কল দিছিলো!তোকে যাইতে বলছে!(আম্মু) আম্মুর কথা শুনে সাথে সাথে মনের মধ্যে আনন্দের তুফান বইতে লাগলো, –কি বলো আম্মু,আপু কল দিছিলো!(আমি) –হ্যা, সে বলছে তোকে যেতে, (আম্মু) –আচ্ছা, তো কখন যেতাম সেখানে!(আমি) –এক কাজ কর কালই চলে যাইস,(আম্মু) আম্মুর কথা শুনে আমি তো মহা খুশিতেই আছি, কারন আপু শশুর বাড়িতে যাচ্ছি, অনেকেই বলতেবে এটাতে এতো খুশি হওয়ার কি আছে আসলে খুশি হওয়ার কারন হচ্ছে সেখানে যাচ্ছি তো বটেই তবে আপুর জন্য না, বরং আপুর নাম ব্যবহার করে অন্য একজনের জন্য যাচ্ছি আমি।সে হচ্ছে মায়া, আর তার সাথেই মূল্যত দেখা করতে যাচ্ছি আমি।কারন মায়ার সাথে আমার অনেক দিন যাবৎ দেখা হয় না শুধু ফোনেই কথা হয় তবে দেখা করার মতো কোনোই চান্স পেলাম না তবে এখন একটা সুযোগ পেলাম আর সেটাকে হাত ছাড়া করতে চাচ্ছি না। –তাহলে আম্মু আমি ব্যাগ রেড়ি করতে শুরু করি!(আমি) –আচ্ছা কর,আর তোর আপুর জন্য আমি কিছু দিবো ঐগুলো নিয়ে যাইস!(আম্মু) –আচ্ছা আম্মু!(আমি) –আরে একটা কথা, শুন তোর আপু বলছে সাইমনকে নিয়ে যাইস তোর সাথে!(আম্মু) –আচ্ছা আম্মু,তুমি পারলে কষ্ট করে সাইমনকে কল করে বলে দাও,যাতে কাল সকালে রেডি হয়ে সোজা এখানে চলে আসতে! (আমি) –আচ্ছা, আমি বলে দিচ্ছি,তুই ব্যাগ রেডি কর!(আম্মু) বলেই চলে গেলো আর আমিও মনের খুশিতে ব্যাগ রেডি করতে লাগি, বুকের ভিতরে খুশি বন্যা বয়ে যাচ্ছে, আমিও মায়ার সাথে দেখার করার জন্য অনেক ধয্য ধরে ছিলাম আর অবশেষে আমার আর মায়ার দেখা হচ্ছে।আমিও তা ভাবতে ভাবতে ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। সকাল বেলা –অন্তর, ঐ কিরে, এখনো ঘুমাইতেছোস! কিরে আপুদের বাড়িতে যাবি না!(সাইমন) –হুম,আরে সাইমন তুই,চলে আসছিস!(আমি) –হ্যা, কিরে ভাই কয়টা বাজে, দেরি করে রওনা দিবি নাকি!(সাইমন) –না, বাজে কয়টা! (আমি) –৮ঃ১৪ বাজে!(সাইমন) –আমরা ১০টায় রওনা দিবো,দাড়া আমি ফ্রেস হয়ে নি,এরপর একত্রে নাস্তা করে বের হবো!(আমি) –ঠিক আছে, যা তুই আমি ফুফুর কাছে গেলাম(সাইমন) সাইমন আমার রুম থেকে চলে গেলো আর আমিও ফ্রেস হতে চলে গেলাম,ফ্রেস হতে হতে নিজের পরিচয়টা দিয়ে দি, বরাবরের মতো আমি মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান অন্তর,অনার্স ৩য় বৎসে পড়ি, পরিবারের ২য় তম সন্তান, প্রথম সন্তান হচ্ছে নাসরিন আপু, মানে,আর ২য়তে আমি,তাছাড়াও যে সাইমনের কথা বলতেছি সে হচ্ছে আমার আপন মামাতো ভাই,সাইমনরা ২ ভাই প্রথমে সে ২য় তে ফয়সাল,সাইমনদের পরিবারের মামা মামি সাইমনরা দুইভাই আছে, সাইমন বলতে গেলে প্রায় আমারই সমবয়সি,তবে আমি তার থেকে ৩ মাসের বড়, আর আম্মুও মামার বড়। তবে সাইমন আর আমি আলাদা আলাদা কলেজে পড়ি!কিন্তু সেইম ব্যাচ আমরা!তবে আমরা দুই ফেমেলি মানে মামা ও আমরা দুই এলাকায় থাকি। ফ্রেস হয়ে আসলাম আমার গোছানো ব্যাগ নিয়ে নিচে চলে গেলাম,সেখানে দেখলাম সাইমন আম্মু আব্বুর সাথে টেবিলে উপস্থিত, আমিও টেবিলে গেলাম নাস্তার জন্য, আমি যেতেই আম্মু আমাকে নাস্তা দেয়,এরপর নাস্তা করে নিলাম, নাস্তা শেষ করে ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার জন্য একদম প্রস্তুত আমরা! –সাবধানে যাইস আব্বু,নিজের ও নিজের ভাইয়ের খেয়াল রাখিস কেমন(আম্মু) –আরে আম্মু চিন্তা করিও না, আমাদের জন্য দোয়া করিও, আর আব্বু আমরা গেলাম তোমরা দুজন দুজনের খেয়াল রাখিও, (আমি) বলেই তাদের থেকে বিদাই নিয়ে চলে গেলাম বাস স্টেশনে সেখানে গিয়ে বাসের টিকেট নিলাম আর আমরাও বাসে উঠে পড়লাম আর কিছুক্ষনের মধ্যে বাস স্টাট করলো আর বাসের যাত্রা শুরু হলো।আমার মনে তো আর ত্বর সইছে না মায়ার সাথে দেখা করার জন্য, ও আপনাদের তো মায়ার সম্পকে কিছু বলি নাই তাহলে বাসে যাত্রা করতে করতে মায়ার সম্পকে কিছু কথা বলি,মায়া সে হচ্ছে আমার ভালোবাসা, তার সাথে ৮ মাসের রিলেশন, সে বলতে গেলে আমার আপুর ননদ মানে দুলাভাইয়ের মামাতো বোন,আর দুলাভাইয়ের যেহুতু একপ্রকারের বোন তাই আমার আপুর ও ননদই হবে,মায়া ও তার পরিবার দুলাভাইদের ঐখানেই থাকে।তার সাথে আপুর বিয়েতেই আমার পরিচয় হয়,আসলে আপুর লাভ ম্যারেজ হয়। তাই আপুর শশুর বাড়িটা একটু দূরে, আর তাদের বিয়ের কারনেই আমরা একে অপরের পরিচিত হই। প্রথমে তার সাথে বন্ধুত্ব, এরপর আস্তে আস্তে সেই বন্ধত্বটা ভালোবাসা রূপ নিয়ে নেয়,প্রথমে আমরা ছিলাম বেয়াইন, এরপর দুজন দুজনের সাথে মিশতে শুরু করি আর দুজন দুজনকে জানতে লাগলাম এরপর সেই মেলামেশা থেকে আস্তে আস্তে দুজনের মনের মধ্যে দুজনের জন্য একটা ফিলিংক্স কাজ করতে লাগে, এরপর একদিন দুজনেই সেই ফিলিংক্স একে অপরের কাছে প্রকাশ করলাম, তারপর থেকে আমাদের ভালোবাসার পথ শুরু হয়।আর মজার বেপার হলো আপুর বিয়ে হলো ৯ মাস,মানে এক মাসের ব্যবধান। আর ৮ মাসের রিলেশনের মধ্যে ৫ মাস হলো আমাদের দেখা হয় না, কিন্তু অপেক্ষার অবশন ঘটিয়ে আজ আমাদের আবার দেখা হবে আর আমি যে আপুদের বাড়িতে যাচ্ছি সেটাও মায়াকে বলি নাই কারন চিন্তা করলাম তাকে সার্প্রাইজ দিবো।মায়াকে দেখার জন্য মনের ভিতরে এক প্রকার উত্তেজনা কাজ করতে লাগলো। আমাদের শুধু ফোনেই আলাপ হতো আর দেখা কম হতো। ৪ ঘন্টা বাজে জার্নি করার পর আমরা আমাদের গন্তব্যের অনেকটা কাছে পোছালাম।আমরা বাস স্টেশিনে পোছালাম। বাস থেকে নেমে আমরা একটা সিনএজি নিলাম আর সেটা নিয়ে ডাইরেক্ট আপুর শশুর বাড়িতেই চলে যাই।এরপর সিএনজির ভাড়া দিয়ে আমরা আমাদের ব্যাগ নিয়ে আপুদের বাড়ির দরজার সামনে এরপর কলিং বেল বাজিয়ে দিলাম, বেল বাজাতেই দরজা খুলে যায় আর দেখলাম দরজা দুলাভাই খুলে দেয়, –আসসালামুয়ালাইকুম ভাইয়া,কেমন আছেন!(আমি) –ওয়ালাইকুমসালাম, এই তো আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,এই নাসরিন অন্তর চলে আসছে! আরে তোমরা ভিতরে আসো(দুলাভাই আমার থেকে একটা ব্যাগ নিয়ে ভিতরে যায়) আমরাও ভিতরে গেলাম, আপু তো আমাকে দেখে বেশ খুশিই! –কিরে শয়তান, ফাজিল কি খবর কেমন আছোস!(আপু) –আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,তুই কেমন আছিস আপু!(আমি) –এই তো দেখিস না কেমন আছি,আর কেমন আছিস সাইমন যাক অবশেষে তুইও আসলি,(আপু) –এই তো ভালো আছি,(সাইমন) সাইমন আপুর সাথে কথা বলতেছে আর আমার চোখ বার বার আশেপাশে যাচ্ছে কিন্তু তাকে দেখছি না আমি!হয়তো সে আসে নাই এখানে! এরপর আপু আমাদের একটা রুমে নিয়ে যায় আর বলে ফ্রেস হয়ে নিতে আমিও ব্যাগ গুলো এক সাইডে রেখে ফ্রেস হয়ে নিলাম এরপর সাইমন গেল ফ্রেস হতে। আমি রুমে বসে আছি এরই মধ্যে কেউ একজন দরজার সামনে উপস্থিত আমি দেখলাম দরজায় মায়া ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে আছে! আমি মায়ার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছি, তাকে দেখে আমার কেমন জানি ভালোলাগা কাজ করতে লাগলো! সাথে সাথে মায়া একটা কাশি দেয়, –এই যে, এভাবে কি দেখতে থাকলেই হবে, নাকি ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতিটাও দিবেন(মায়া মিষ্টি গলায়) –এই যে মিস,আপনাকেও আমি বলছিলাম আমি যে রুমে থাকবো সেই রুমে প্রবেশ করতে হলে আপনার পার্মিশন লাগবে না!(আমি) –ও তাই নাকি!(মায়া) বলেই ট্রে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে ট্রে খাটের উপর রেখে, সেখান থেকে একটা গ্লাস নিয়ে আমাকে দিলো! –এই নাও,আমি নিজ হাতে শরবত করলাম!(মায়া শরবতের গ্লাস এগিয়ে দিয়ে) –জি,থ্যাংইউ!(আমি) –থ্যাংইউ এর বাচ্চা, আসবা যে বলো নাই কেন!(মায়া রেগে) –আরে আমি একটা জিনিস চিন্তা করে আসছিলাম, তোমার তো আবার দুপুরে ঘুমানোর শখ, তাই আমিও এসে যদি তোমাকে রুমে ঘুমন্ত দেখি তাহলে আমিও পাশে শুয়ে পড়বো আরকি!(আমি মজা করে) –এ্যাহ,শখ কতো!ফাজিল একটা!(মায়া) –হ্যা বলো বলো ভালো করেই বলো!এক দিন এই ফাজিলের দায়িত্ব নিতে হবে মায়া ম্যাডাম!(আমি) –ঠিক আছে, আমিও নিবো আর ফাজিলের ফাইজলামি বের করবো!আর এই শুনলাম তোমার সাথে তোমার মামাতো ভাইও আসছে নাকি!(মায়া) –হ্যা ও ওয়াসরুমে! ফ্রেস হচ্ছে(আমি) –আচ্ছা আমি গেলাম, ওকে শরবতটা দিও(মায়া একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে) বলেই চলে গেলো, সে আসলো তো একটা মিষ্টি রোদ্দুরের মতো কিন্তু তুফানের মতো চলে গেলো!এরই মধ্যে সাইমন বের হইছে! –ঐ শরবতটা খা! আপু পাঠাইছে! (আমি) সাইমনও শরবতটাও খেয়ে নিলো এরই মধ্যে দুপুরের খাবারের ডাক আসলো আর আমরা খেতে চলে গেলাম,আর এভাবে সকলের সাথে আমরা দুদিন কাটিয়ে দিলাম। দুদিন আমরা বেশ মজা করেই কাটিয়ে দিলাম এখানে মায়ার সাথে সাইমনের পরিচয় ও ভাব জমে গেলো, আর আমরা ৩জনেই বেশ ভালোই সময় কাটাচ্ছি, আজ দেখলাম মায়া তেমন আমার সাথে কথা বলছে না তবে গতকাল যেভাবে আমার সাথে মিশেছিলো আর আজকে হঠাৎ করে সে আমার সাথে একটু কম করেই কথা বলতেছে, এই যে ধরুন আজকে সকালে ঘটনা, আমি নাস্তা শেষ করে মায়াকে ডাক দিলাম সেও আসলো বললাম চলো ছাদে যাই, সে বলে আপু নাকি তাকে কাজ দিছে, সে বলেই চলে যায় পরে আমি ছাদে উঠলাম আর দেখি দেখি সে সাইমনের সাথে ছাদে কথা বলতেছে, আমিও থাক কিছু মনে করি নাই হয়তো ফ্রি হইছে তাই আড্ডা দিচ্ছে এই দিকে দুলাভাই আমাকে ডাক দেয় তাই আমিও দুলাভাইয়ের কাছে চলে যাই, দুলাভাই বিজন্যাস করে তাই ভাইয়ার সাথে থাকার চেষ্টা করি তাকে টুকিটাকি সাহায্য করার জন্য।আর এভাবে আরো ৫টা দিন কেটে যায়, এই ৫ দিনে আমি দেখি মায়া আমার সাথে খুবই কমিই কথা বে আর বেশির ভাগই সাইমনের সাথে সময় কাটাতে লাগে, জিনিসটা সত্যি আমাকে অনেক কষ্ট দেয়,কারন নিজের ভালোবাসার মানুষ আমাকে সময় না দিয়ে অন্য একজনে সময় দেয় তখন প্রচুর খারাপ লাগে,ভাইয়া আমাকে বাহিরে পাঠাইছিলো কিছু জিনিস আনতে আর আমিও সেগুলো নিয়ে বাসায় ফিরি,বাসায় ফিরে মায়া ও সাইমনকে না দেখে চিন্তা করলাম তারা হয়তো ছাদে আছে তাই আমিও ছাদে গেলাম সেখানে তাদের দেখলাম এরপর আমি আপুর রুমে যাচ্ছি তখনি মায়ার রুমের থেকে কথা শব্দ পেলাম, মায়ার রুমটা হচ্ছে আপুর রুমের সামনের রুম,সেখানে আমি সাইমনের কথা শুনতে পাচ্ছি,তারা কথা বলতেছে আমিও সেই কথা গুলো শুনতে লাগলাম! –উফ, মায়া দেখলে কিভাবে আমাদের বন্ধুত্ব ভালোবাসায় পরিনত হয়ে গেলো!জাষ্ট এক সপ্তাহের পরিচয় আর এখন তো তুমি আমার জীবনের একটা অংশ হয়ে গেলে!(সাইমন) কথাটা শুনেই নিমিশেই কলিজায় মোচড় লাগলো,এটা আমি কি শুনলাম বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা মানে,আর জীবনের অংশ মানে!কি বলতেছে এই সব! –আসলেই,ভালোবাসাটা কি করেই হয়ে গেলো, হঠাৎ করেই এলে আর মনের ভিতরে জায়গা করে নিলে তুমি!(মায়া) মায়ার কথা শুনে তো আরো বড় ঝাটকা লাগলো, কি বলতেছে এই সব সে!মনের ভিতরে জায়গা করে নিলো মানে!মায়া কিভাভে এই কাজটা করতে পারলো! তাহলে কি সে আমার সাথে এতো দিন টাইমপাস করছিলো! আমার ফিলিংক্স নিয়ে খেল্লো সে!কথা গুলো মনের মধ্যে ভাবছি আর অজান্তেই চোখ দিয়ে গড়গড়িয়ে পানি ঝড়ে পড়তে লাগলো!তাদের এই কথা গুলো শুনে আমি আর ঐখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না সোজা রুমে চলে গেলাম আর ভাবতে লাগলাম কি করে পারলো মায়া আমার সাথে এতো বড় প্রতারনা করতে! কি করে পারলো এই জঘন্যতম কাজটা করতে,যদি ভালোবাসার কমতিই থাকতো তাহলে আমাকে বলে দিতো, কিন্তু সে আমাকে না বলেই নিজের ইচ্ছা মতো যা খুশি করে বেড়াচ্ছে, না আমি এর উত্তর চাই!সে কি করে আমার ফিলিংক্স নিয়ে খেল্ল! তাকে আমি মন থেকে ভালোবাসলাম, তার প্রতি যত্ন নিতাম,দূর থেকে হলেও তার খোজ খবর নিতাম,প্রয়োজন অপ্রোয়োজন সব কিছু ঠিক রাখতাম তাহলে কি করে এই কাজটা করলো সে!আমি এই সব ভাবতেছি আর চোখ দিয়ে পানি বেয়ে পড়ছে! আমিও চোখ মুছে নিলাম আর সময়ের অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন মায়াকে পাবো, দুপুরের খাবার শেষ করে আমি মায়ার রুমের দিকে গেলাম, সাইমন আমার রুমেই আছে তাই এই সুযোগে আমিও তাকে জিজ্ঞেসা করবো, –মায়া, ভিতরে আছো!(আমি) –কে অন্তর!হ্যা ভিতরে আসো না, পার্মিশন নিচ্ছো কেন!(মায়া) –আমি তো আর আপনি না যে পার্মিশন ছাড়াই কাজ করে বেড়াবো!(আমি) –মানে!বুঝলাম না(মায়া) –বুঝবেন কি করে, আপনি তো অবুজ শিশু শুধু মানুষের মন নিয়ে খেলা করতে পারেন!(আমি) –কি বলতেছো এই সব তুমি!(মায়া) সাথে সাথে মায়াকে কষে একটা থাপ্পর মেরে দিলাম, আর সে থাপ্পর খেয়ে মেঝেতে লেটিয়ে পড়ে! –তোর মতো নষ্টা মেয়ে আমার লাইফে আর দেখি নাই,যদি আমাকে তোর ভালো না লাগতো ডাইরেক্ট বলে দিতি, কি করে পারলি তুই আমার মন নিয়ে খেলতে, কি করে পারলি আমার বিশ্বাস নিয়ে খেলতে, কি না করছি তোর জন্য, তোকে খুশি রাখার জন্য ঐসকল কাজ থেকে বিরত থাকছি যা তুই বারন করছিলি, তোকে পাওয়ার পর আমি অন্য মেয়েদের দিকেও তাকিয়ে দেখি নাই,তুই ছেলেদের সাথে মিশে বেড়াস তাতেও আমার কোনো আপত্তি ছিলো না, তোর প্রতিটা কথা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করলাম আর শেষ মেষ তুই কিনা! (আমি) –তোর সাহস কি করে হলো আমাকে মারার,তুই কাজটা ঠিক করিস নাই,এর জন্য তোকে আমি একটা উচিত শিক্ষা দিবোই(মায়া) বলেই উঠেই সে তার রুমের দরজার আটকে দেয় আর নিজের জামা ছিড়তে লাগে, ছেড়া শেষ করে, বাচাও বাচাও বলে চিৎকার দিতে লাগে, আর আমি মায়ার কান্ড দেখে নিস্তব্দ হয়ে গেলাম, এরই মধ্যে আপু রুমের বাহিরে উপস্থিত।আর আপুর শব্দ পেয়ে মায়া আরো জোরে জোরে চিৎকার দিতে লাগে। –প্লিজ অন্তর,এমন করিও না, আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে,(মায়া আমার দিকে তাকিয়ে মিথ্যা কান্না ভান করে) এরই মধ্যে দরজা ধাক্কা মেরে দরজা ভেঙ্গে ফেলা হলো,দেখলাম সাইমন দরজা ভেঙ্গে ফেলছে, আর আপুও উপস্থিত,আর আপুকে দেখেই মায়া সাথে সাথে আপুর কাছে চলে যায় আর আপু মায়ার অবস্থা ও তার নেকা কান্না দেখেই মায়াকে সাইডে রেখে আমার কাছে এসেই আমাকে সজোরে কসে থাপ্পর দেয়! এই ছিলো মূল ঘটনা! ৭ দিন ধরে কি কি হইছে সবই তুলে ধরলাম, এরপরে আপু আমাকে অনেক কথা শুনা, বুঝতে পারলেন আমি কি অপরাধ করলাম! আপু আমাকে কথা গুলো বলা শেষ না করতে না করতেই দুলাভাই ও বাকিরাও হাজির, তারা এই অবস্থা দেখেই আমার দিকে তেড়ে আসে! –তোকে আমি অনেক ভালো মনে করছিলাম অন্তর,কিন্তু শেষ মেষ তুই কিনা এই জঘন্য কাজ করলি,আমি তোকে নিজের ভাইয়ের জায়গা দিলাম, আর তুই কি করলি,তুই আমারই খেয়ে আমারই সর্বনাশ করলি!এতো দিন আমি দুধ কলা দিয়ে কালসাপ ঘরে পোসে রাখছিলাম,(দুলাভাই রেগে) –এ কোনো দিনো আমার ভাই হতেই পারে, এতো কথা বলতেছো কেন,এই জানোয়ারকে এখনী ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করো,(আপু) বলতে না বলতেই দুলাভাই আমার কলার ধরে আমাকে নিয়ে সোজা বাড়ির বাহিরে, ছুড়ে মানে আর আমার ব্যাগও,আর পিছন থেকে দেখলাম সাইমন ও মায়া তারা দুজন দুজনের খুব কাছাকাছিই আছে আর আমার অবস্থা দেখে মুচকি হাসতেছে, আমার বুঝতে বাকি রইলো না সাইমনও মায়ার সাথে মিলিত হয়ে গেছে। –যা এখানে থেকে আর কোনো দিনো এই বাড়ির সীমানায় তোর এই মুখ নিয়ে আসবি না, আর আমি বাসায় ও কল করে বলতেছি, জাতে তোর মতো জানোয়ারের বাসায়ও জায়গা না হয়!চলেন এখান থেকে, এই জানোয়ার এখানেই থাক!(আপু) বলেই সকলে চলে যেতে লাগে আর আমিও বাড়ির আঙ্গিনায় পড়ে আছি, আর চোখ দিয়ে অঝরে পানি বেয়ে পড়ছে, আজ সত্যি নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে যে কেন আমি বিশ্বাস করলাম,কেন আমি এই মায়ার মায়ায় জড়িত হলাম,কেন তার সাথে আমার পরিচয় হলো! আমি এই সব ভাবতে ভাবতে উঠে দাড়ালাম,আর ব্যাগ নিয়ে হাটতে লাগলাম,জানি না কোথায় যাবো,তবে বাড়িতে গিয়ে লাভ হবে না এটা জানি কারন আপু আজকে ঘটনাটা বাড়িতে অবশ্যই বলবে আর বাসায় এটা শুনে আম্মু আব্বু তো জায়গাতেই আমাকে ঘৃনা করতে শুরু করবেই,আজকে এই মায়া আমাকে এই ভাবে জঘন্য ভাবে এক মিথ্যা অপবাদে ফাসিয়ে দিলো যে অপরাধ আমি করিই নাই সেই অপরাধে আমাকে অপরাধী বানিয়ে দিলো।আমিও ব্যাগ নিয়ে মেইন রোড়ে হাটতে লাগলাম,এখন জানি না কোথায় যাবো বা কোথায় ঠাই নিবো আমি! চলবে………….. ভুলক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।আর লাইক ও গল্প ভিত্তিক কমেন্ট করে পাশে থাকুন।নাইস নেক্সট বলা থেকে বিরত থাকুন।বিনা অনুমতিতে কপি করা নিষেধ।সেয়ার করুন আর পরর্বতি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন। বিদ্রঃ আজ থেকে আবার নতুন গল্প শুরু করলাম, আর ফ্রি আছি বলে তারাতাড়ি দিয়ে দিলাম,তবে আগামী কাল থেকে রাত ৯ঃ০০ গল্প দেওয়া হবে। আসা করি সকলে পাশে থাকবেন। Part 2 https://m.facebook.com/groups/315195763809014/permalink/376812757647314/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here