অপরাধী পর্ব-৪

0
1585

#অপরাধী
#লেখক_অন্তর
পর্ব_৪
,
,
,
আমি আমার imo ও whats up খুলে নিলাম,কারন দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোনে এই app গুলো থাকা প্রয়োজন,এরপর আমার fb আইডির নাম্বার চেঞ্জ করে দিলাম যেন আমার সেই নাম্বার সার্চ করে আমার Id যাতে না পায়!কারন আমি চাই না তাদের সাথে আমার আর কোনো ভাবেই যোগাযোগ হোক।

তারা যদি আমাকে ভুলে থাকতে চায়, তাহলে থাকুক তারা,আমিও আমার মতো করেই থাকবো।ফিরবো না আর তাদের কাছে, আমিও আর কি করবো,রুমের মধ্যে আছি,তবে রুমের মধ্যে আর ভালো লাগতেছে না তাই আমিও রুম থেকে বেরিয়ে ছাদে চলে গেলাম,ছাদে গিয়ে দেখি একটা দোলনা আছে, আর বসার জায়গাও আছে এই সব দেখে মায়ার কাটানো কিছু মুহুত্তের কথা মনে পড়ে গেলো আমার, আমি আর মায়া রাতের বেলা ঠিক এই সময়ে ছাদে এসে দুজন দুজনের হাত ধরে আকাশের তারা গুলো দেখতাম, মায়া আমার পাশে বসে হাত ধরা অবস্থায় আমার কাধে তার মাথা রেখে আকাশের দিকে চেয়ে থাকতাম আর উপরভোগ করতে থাকতাম রাতের সেই মুগ্ধকর মুহুত্ত গুলো, দিন গুলো বেশ ভালোই ছিলো তখনি মনে পড়ে গেলো মায়া আমার সাথে কি করছে! আমি প্রতি মুহুত্তেই মায়াকে আমার মধ্যে থাকা সবটুকু ভালোবাসা দিতে চাইতাম কিন্তু শেষ মেষ সে কি করলো!আমাকে ধোকা দিলো, আমার ফিলিংক্সকে শেষ করে দিলো সে, আমার থেকেও সুন্দর দেখতে,টাকাওয়ালা একজনকে পেয়ে আমাকেই ছেড়ে দিলো,শুধু ছেড়েই দেয় নি, ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সকলের সামনে আমাকে অপরাধী বানিয়ে সকলের সামনে আমাকে ছোট করলো,যে আপু তার ভাইকে সবসময় আদরের মধ্যেই রাখতো সেই আপুর কাছেই আমাকে খারাপ চরিত্রহীন ছেলে বানিয়ে দিলো।যে দুলাভাই আমাকে নিজের ভাইয়ের চোখে দেখতো সেই দুলাভাইয়ের সামনে ছোট করে দিয়ে সেই দুলাভাইকে দিয়ে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাহির করে দিলো।যে মামাতো ভাইকে আমি নিজের ভাইয়ের মর্যাদা দিয়ে আগলে রাখছিলাম সেই ভাই আমার কষ্টের সময় আমার দিকে তাকিয়ে হাসছিলো,আম্মু আব্বুর কথা বাদই দিলাম কারন বুঝতে পারলাম তারা আমাকেই উপরের দিক দিয়ে চিনছে কিন্তু আমার ভিতরেরটাকে জানলো না,আর যাকে ভালোবাসা শিখিয়ে দিলাম ও মনে প্রানে তাকে ভালোবাসলাম দিন শেষে সেই ভালোবাসার দ্বারাই প্রতারিত হলাম,ঐযে বলে না যারা ভালোবাসতে শেখায় দিন শেষে তারাই ভালোবাসাহীন রয়ে যায়।সকলে ঠিকি বলে বিপদে পড়লেই বোঝা যায় কে আপন কে পর,আমিও বুঝতে পারলাম, হ্যা ধরেই নিলাম আমি অপরাধ করলাম তাই বলে কি আম্মু আব্বু একবারও কল করে জিজ্ঞেসা করবে না কথাটা!আজ সত্যি কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে, কারন যাদের আপন মনে করছিলাম,আর ভাবছিলাম বিপদে আপদে কেউকেই পাই আর না পাই তাদেরই পাবো কিন্তু শেষমেষ কি হলো আমি ভুল প্রমানিত হলাম তারা আমাকে ভুল বুঝে পর করে দিলো।আমার সাথে মনে তারা তাদের সম্পকের সমাপ্তি ধটিয়ে দিলো!ঘটিয়ে দিলো কি অলরেডি ঘটিয়ে দিছে, থাক সমস্যা নেই তারপরেও দোয়া করি সকলের জন্য সুখে থাকুক সকলে।

আকাশের দিকে তাকিয়ে এই সব মনে মনে ভাবছি আর চোখ দিয়ে পানি বেয়ে পড়ছে আর কষ্টের বুক ফেটে যাচ্ছে আমার।

–আকাশের দিকে কি এতো কি দেখছেন হুম!!(পিছন থেকে)

সাথে সাথে আমার ঘোর কাটলো,আর আমি সাথে সাথে আমার চোখের পানি মুছে নিলাম।আর পিছিনে ফিরে তাকালাম দেখলাম রিদিকা কথাটা বললো।

–কি হলো,কথা বলছেন না যে?? আকাশের দিকে দেখছিলেন??এক মিনিট আপনার চোখে পানি কেন???(রিদিকা)

–কই আমার চোখে পানি!অহ আসলে চোখে কি ময়লা ডুকছে তাই চোখে পানি!(আমি)

আমি অন্য একটা বলে রিদিকার কথা ঘুরাতে চেষ্টা করলাম,কারন আমি চাই না আমার চোখের পানির আসল সত্যিটা সে জানুক,শুধু সেই না আর কারো সাথে এই সব নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছা নেই আমার,কারন যা ঘটার তা ঘটে গেছেই শুধু শুধু সেই স্মৃতি গুলো মনে এনে আর কষ্ট পেতে চাচ্ছি না তাছাড়াও সব কিছু সবার সাথে সেয়ার করাও ঠিক না, আমার ব্যাথা নিয়ে আমিই থাকতে চাই, আমার ব্যাথা সম্পকে কেউকে বলতে চাই না আমি,যে জানার সে তো জেনেই গেছে এর বাহিরে আর কারো সাথে এই গুলো সেয়ার করতে চাই না আমি।

–এই যে কি ভাবছেন এতো!(রিদিকা)

–না কিছু না এমনেই রাতের আকাশ দেখতেছিলাম,(আমি)

–রাতের আকাশ দেখতে আপনার ভালো লাগে তাই না!(রিদিকা)

–হ্যা, ভালো লাগে বলেই তো দেখি!(আমি)

–আচ্ছা, ওহ আপনাকে তো একটা কথা বলতেই ভুলে গেছি,আব্বু আপনাকে ডাকছিলো!(রিদিকা)

–ওহ,আচ্ছা চলেন, দেখি মামা কেন ডাকছে আমাকে!(আমি)

এরপর আমি আর রিদিকা যেতে লাগি আমি রিদিকাকে ফলো করতে লাগি ছাদ থেকে নেমে তার সাথে সাথে সোজা হল রুমে যাই গিয়ে দেখি মামা TV দেখতেছে!আমিও মামার কাছে গেলাম।

–আমাকে ডাকছেন!(আমি)

–ঐ ডাকছেন মানে কি রে??তোরে কি বলছিলাম আমি??(মামা)

–আচ্ছা সরি,এখন বলো আমাকে ডাকছো!(আমি)

–হ্যা ডাকছি তো,বয় বলতেছি!(মামা)

আমিও সোফায় বসলাম!

–শুন,আমি বলি কি চাকরীটা তো পাবিই তবে কয়েকদিন শহর ঘুরে দেখ এরপর আস্তে করে জয়েন করিস!(মামা)

–না মামা, আমি বসে থাকতে পারবো না,আমি এমনে বসে থাকতে পছন্দ করি না, আর তাছাড়াও চাকরী করতে করতে শহর ঘুরাঘুরি করা যাবেই।(আমি)

–কিন্তু অন্তর দেখ তুই এই শহরে নতুন, তাই বলি কি মামার কথাটা শোন আগে কয়েকদিন শহরটা ঘোর,আমার সাথে চলা ফেরা কর জায়গা চিনে নে ভালো করে এরপর তো জয়েন করতে পারবিই!মামা তোর জন্য ব্যবস্থা করে রাখছিই তো!(মামা)

–কিন্তু মামা!(আমি)

–কোনো কিন্তু না, যা বলছি তাই শোন,(মামা)

আমি আর বার্তি কিছু বলতে পারলাম না কারন একত আমি তাদের বাড়িতে আছি ২য়ত উনি আমার বড় আর আমি এমনেও উনাকা চিনিই না সো এখন মুখের উপর কথাটা বলাটা বেয়াদবি হয়ে যাবে,হ্যা সে ভালো কথাই বলছে আগে আমাকে এই শহরের অলিগলি চিনতে হবে কারন আমি এই শহরে নতুন,যদি তার কথায় ভুল থাকতো তাহলে একটা কথা বলতে পারতাম কিন্তু তার কথায় কোনো ভুলই পেলাম না আমি।একটা জায়গা যখন কেউ যায়, হুট করেই সেই জায়গায় ঘুরে বেড়ানো যায় না, আগে সেই জায়গা সম্পকে জানতে হবে এরপর সেই জায়গায় ঘুরাফেরা করা যায়।আর সত্যি তাদের কথা বার্তা আচরন আমাকে মুগ্ধ করে দিলো,কয়েক ঘন্টার পরিচয়ে আমাদের এরই মধ্যে আমাকে তাদের ফেমেলির একটা অংশ বানিয়ে নিলো,আর এইভাবেই তাদের সাথে মিলেমিশে থেকে ৬টা মাস পার করে দিলাম

৬ মাস পর,

আমি অফিসে কাজ করতেছি, ফাইল দেখতেছি,আসলে অফিসের বস আমাকে কিছু গুরুত্বপূর্ন কাজের ফাইল দিছে আমি সেটাই দেখতেছি,তখনি আমার টেলিফোন বেজে উঠলো, আমার টেলিফোনে একমাত্র আমার বসই কল দেয়,আমিও রিসিব করলাম সে আমাকে তার কেবিনে যেতে বলে,আমিও নিজের কেবিন থেকে উঠে তার কেবিনে গেলাম দরজার সামনে গিয়ে দরজায় নক করলাম,

–স্যার আসতে পারি!(আমি)

–থাপ্পর দিয়ে তোর বস বাহির করে দিবো,ভিতরে আয়!(বস)

আমিও ভিতরে গেলাম,গিয়ে দাড়ালাম

–ঐ তোরে বারন করছি না আমাকে বস ডাকতেছে, (বস)

–আরে আজব আর কতোবার বলবো তোমাকে এটা বাড়ি না যে এখানে তোমাকে মামা ডাকবো,অফিসে তো আর আমরা মামা ভাগিনা না!এটা অফিস অফিসের ঘরোয়া মেটার আনা তো ঠিক না তাই না!

–কানের নিচে দিবো একটা!বয় কথা আছে!(মামা)

আমিও চেয়ারে বসলাম,

–হ্যা বলো!(আমি)

–শুন,আমার এক বন্ধুর ছেলের বিয়ে, সে আমাকে আর একটু আগে কল দিয়ে অনেক অনেক রিকোয়েষ্ট করছে সেখানে উপস্থিত হতে!সো আমি চিন্তা করলাম আমরা চার জনেই সেখানে যাবো!(মামা)

–মামা, আমি না গেলে হয় না!না মানে আমার এই সকল ফাংশনে যেতে ইচ্ছা করে না! কেমন জেন uneasy লাগে।(আমি)

–চুপ,যা বলছি তাই শুনবি!(মামা)

–কিন্তু মামা!(আমি)

–চুপ!(মামা ধমক দিয়ে)

এই দিকে মামা ধমকাইতেছে অন্য দিকে অফিসের কিছুস্টাফ ও আমার কিছু কলিগ মজা নিতেছে!

–মামা আমার একটু ইজ্জত রাখো,এভাবে অফিসে তো চিল্লাইও না,(আমি)

–তোকে এখানে চেচাবো না তো কোথায় চেচাবো শুনি,বাসায় তো তোর মামীর জন্য কিছুই করতে পারি না, এখানে সুযোগ পাই চেচানোর তাই আমিও সুযোগে সৎ ব্যবহার করি আর কি!(মামা)

–ভালা!বহুত ভালা!আমার মতো নিরিহ একটা ছেলে পাইয়া এটাই তো করবা! আচ্ছা বাদ দাও!আচ্ছা যাবা কোন দিন?(আমি)

–কি আর বলবো রে, সে আমার রিকোয়েষ্ট করছে যে করেই হোক কালকেওই উপস্থিত হতে! সে নাকি খুবই একা হয়ে আছে,আর বিয়ের কাজ একা সামলাতে পারবে না তাই বলছে আজকেই রওনা দিতে!আর যাই হোক ছোট বেলার বন্ধু তো,তাই চিন্তা করতেছি আজকেই রওনা দিবো!

–আচ্ছা ঠিক আছে, তবে মামা একটা কথা বলি!(আমি)

–বল!(মামা)

–না মানে বলতে চাচ্ছিলাম তুমি গেলে অফিস্টাও তো কেউকে সামলাতে হবে তাই বলি কি আমি থাকি! (আমি)

–হা হা হা, আর কিছু,তুইও যাবি মানে যাবি, আর অফিস সামলানোর জন্য ম্যানেজার তো আছেই,তাকে বুঝিয়ে দিবো, আর কথা বলিস না, আমি ম্যানেজারকে ডেকে এনে তাকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছি, তারপর এক সাথে বাড়ি যাবো!তত ক্ষনে তুই গিয়ে তোর কাজ কিছুটা করে ফেল!(মামা)

–আচ্ছা, মানে নিবা তো নিবাই, মিস নাই তাই তো!(আমি)

–হা হা হা হ্যা,এবার যা (মামা)

আমিও উঠে গেলাম আর গিয়েই আমার কেবিনে চলে গেলাম,তাদের সাথে থেকে সত্যি আমার দিন গুলো বেশ ভালোই কাটতে লাগলো,মানে আমার জীবনে যে অনেক খারাপ একটা অতিত আছে সেটা তাদের মায়ামমতা ভালোবাসা জন্য আমি ভুলে যাই গা,মামা মামী আমাকে যথেষ্ট আদর করে আমার খেয়াল রাখে আর একটা আছে না রিদিকা সেটা তো ভাইসাব প্যারাও দেয় আবার আমার খেয়াল রাখতেও পিছু হাটে না, মানে তাদের সাথে আমি এখন পূরাপূরি ভাবেই মিশে গেছি,আমি তাদের সাথে থাকলে আমার যে অতিতে কিছু হইছিলো সেটা ভুলেই যাই,এখন তো আর বাসার কারো কথাই মনে পড়ে না,না মানে মনে পড়ে না যে এটাও না আর যাই হোক আম্মু আব্বুকে মিস করি,কিন্তু আম্মু আব্বুর যে আদর যত্ন আছে সেটা মামা মামী আমাকে যথেষ্ট দিচ্ছেই,আমিও বেশ সুখেই আছি,আর থ্যাংক্সটু তানভির যে কিনা আমাকে খারাপ সময়ে একা ছেড়ে না গিয়ে বরং পাশে দাঁড়ায় ও এদের সাথে মিলিয়ে দেয়!এই সব ভাবছি তখনি আমার অফিসের এক কলিগ আসলো!

–কিরে মামা তোরে বসে কিসের এতো ঝাড়ী দিচ্ছে,নাকি তোর বিয়ের ব্যবস্থা করতেছে! (সাকিব)

–হ,আর কিছু!(আমি)

–তাহলে কিসের জন্য বস খেপছে তোর উপর!(সাকিব)

–ভাই হুদাই, আমার মতো নিরিহ একটা ছেলেকে পেয়ে তারা অত্যাচার শুরু করে দিছে আরকি!আচ্ছা বাদ দে, শুন কয়েক দিনের জন্য হাওয়া হচ্ছি অফিস থেকে!(আমি)

–কেন!(সাকিব)

–আরে ভাই, বিয়েতে যামু,(আমি)

–কার বিয়ে! (সাকিব)

–আরে মামার কোন বন্ধুর ছেলের বিয়ে, আমরা সেখানে যাবো,আসলে ভাই বিশ্বাস কর আমার যাওয়ার কোনো ইন্ট্রেষ্ট নাই,হুদাই জামেলায় গিয়ে লাভ আছে! যদি অফিসের বস মামা না হতো না তাহলে বসরে দিয়েই আমার যাওয়া ক্যান্সেল করতাম কিন্তু আমার যে ভাগ্য সালার আমার মামাই আমার অফিসের বস,আর তার কাছে তো আর কোনো বাহানা করা যাবে না, দোস্ত,আমার না এই ফেমেলি ফাংশেন গুলো ভালা লাগে না,কিন্তু মামা আমাকে জোর করে নিতেছে এখন কি করতাম বল!(আমি)

–কি আর করবি যা মজা কর,মামা পারলে আমার জন্য কিছু সুন্দরীর নাম্বার নিয়ে আসিস!(সাকিব)

–সালা ছ্যাচড়া, ধুর হ আমার চোখের সামনে থেকে! আমারে কাজ করতে দে!পরে বস এসে যদি দেখে আমি ফাকি বাজি করতেছি সেও আবার সুযোগ পেয়ে যাবে আমারে ঝারী দেওয়ার।(আমি)

–আচ্ছা মামা কাজ কর,(সাকিব)

বলেই চলে গেলো আর আমিও কিছুক্ষন ফাইল নিয়ে চ্যাক করতে লাগলাম,কিছুক্ষন পরে মামা আসে আর আমিও উঠে মামার সাথে যেতে লাগি,এরপর মামা গাড়ি নিয়ে সোজা বাসায়।বাসায় গিয়ে আমি আমার রুমে যাই,একটু ফ্রেস হয়ে নিলাম,ফ্রেস হয়ে বেরিয়েই দেখি রিদিকা আমার রুমে উপস্থিত!

–জি কি চাই!(আমি)

–কি চাই মানে,তোমার রুম বলেই কি আসতে পারবো না নাকি!(রিদিকা)

–না আস্তে পারবা না যে সেটা বলি নাই কিন্তু যেভাবে আছো মনে হচ্ছে কিছু তো একটার জন্য আসছো তুমি!(আমি)

–আরে না এমনেই আসছি,না মানে আমাকে ১০০০ টাকা দাও তো থাকলে!(রিদিকা)

–হে হে হে আমি জানতাম এই রিদিকা এই স্টাইলে থাকার পিছনে কিছু না কিছু চাওয়ার আছেই,আমার থেকে টাকা নাই!মামার থেকে নাও যাও!!(আমি)

–দিবা কি না সেটা বলো!(রিদিকা)

–নেহি,কেটে পড়ো এখান থেকে(আমি)

–আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমিও এই ছবিটা fb তে দিচ্ছি!(রিদিকা)

–কোন ছবি??(আমি)

–এই যে দেখো,কি সুন্দর ছবি না এটা! রিদিকা বলেই আমাকে তার মোবাইলে একটা ছবি দেখায়!ছবিটা দেখেই আমার পূরাই হোস উড়ে গেলো,কারন ছবিটা এমন একটা ছবি যা আমাকে মামা মামীর সামনে জোকার বানিয়ে দিতে পারে, আসলে একদিন সকালে আমি ঘুমাচ্ছিলাম সেই সুযোগে রিদিকা এক আকাম করছে, আমার ঘুমন্ত অবস্থা সে ডাইরেক্ট আমার মুখে ম্যাক আপ করে বসে, এরপর আমিও ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হতে গেলাম বাথ রুমে নিজেকে আয়নার সামনে দেখেই নিমিশেই ভয় পেয়ে গেছি, কারন হুট করেই এক অদ্ভিত চেহারা আয়নার সামনে ভেসে উঠে আমার তো ডাইরেক্ট কলিজায় প্রায় বের হয়ে গেছে, পরে যখন খেয়াল করলাম তখন দেখলাম আমার মুখে ম্যাক আপ করে আমার পূরাই জোকার বানিয়ে দিলো,প্রথমে আমি যে ভয় পাইছি পরে ভিশন রাগ উঠে কিন্তু কিছুই করতে পারি নাই,আমি মুখ ধুয়ে বের হলাম আর দেখি রিদিকা আমার দিকে তাকিয়ে হাসতেছে, মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ভিষন রাগ উঠে।কিন্তু কিছুই করলাম না, তবে সে যে এই অবস্থার ছবি তুলে রাখবে তা কে জানতো!

–কি এখন কি টাকা দিবা নাকি!(রিদিকা)

–এটা কিন্তু ব্লেকমেইলিং হইতেছে,আমার মতো সিদাসাদা একটা ছেলেকে কি করে ব্লেকমেইল করতেছে, তোমার মনের কি দয়া মায়া নাই!(আমি)

–দয়া মায়া দরকার নাই,টাকা ছাড়াও ছাড় নাই,বাচতে যদি চাও তাহলে ঝটপট ১০০০ টাকা দাও!(রিদিকা)

–প্লিজ ছবিটা ডিলিট করো,আমার থেকে সত্যি টাকা নাই!(আমি করুন গলায়)

–না না না টাকা ছাড়া মাফ নাই,(রিদিকা)

–একটু ডিস্কাউন্ট দেওয়া যায় না!(আমি)

–ঠিক আছে ৫০০ টাকা দাও তাহলেই হবে!(রিদিকা)

আমিও মানি ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকা বের করে দিলাম!কিছু করার নাই মাইনকার চিপায় ভালো করেই আটকায়ছি আমি।

–আচ্ছা আমার থেকে আগেও তো টাকা নিছো, এতো টাকা দিয়ে কি এমন করো হ্যা!(আমি)

–যা মন চায় করি,তোমাকে বলতে হবে নাকি!আমি গেলাম আর হ্যা আরো ১০০০ টাকা দিলেই তবেই ছবিটা ডিলিট করা হবে বলেই রিদিকা দিলো দোড়, এটা পূরাই না ইন্সাফি হইছে আমার সাথে কথা হইছে ৫০০ টাকার কিন্তু সে! থাক বাদ দি,তখনি মামার এন্ট্রি,

–কিরে ব্যাগ ঘোছানো শুরু করছিস!(মামা)

–না মামা করবো!(আমি)

–আমরা কিন্তু ৮ঃ০০ রওনা দিবো, তাই তারাতারি ব্যাগ রেডি করে নে!বলেই মামা চলে গেলো এরপর ব্যাগ রেডি করে আমরা খাবার খেয়ে রেডি হয়ে নিলাম,মামা তার পাজারু গাড়িটা রেডি করলো অবশ্যই ড্রাইবার নিছে কারন রাতের বেলা মামার ড্রাইব করাটা ঠিক হবে না, আমরাও ব্যাগ নিয়ে রেডি এরপর আমরা গাড়িতে বসলাম,আমি ড্রাইবারের পাশে বসতে চাইলাম কিন্তু মামা আমাকে মামী ও রিদিকার সাথে বসতে বলল,আমি অনেক বার বললাম সামনে বসবো কিন্তু দিলোই না, মামী তো আরো রেগে যায় কথাটা শুনেই!আমরাও বসলাম আমি জানালার সাইডে রিদিকাকে কেন যে আমার পাশে দিলো মামী,এটা আমারে জালাই মারে, না পারি সহ্য করতে না পারি বলতে, তখনি মনে হলো আচ্চা আমরা তো বিয়ে বাড়ি যাচ্ছি কিন্তু কোথায় যাচ্ছি বা কোন এলাকায় যাচ্ছি তাই তো জানি না তাই আমিও মামাকে জিজ্ঞেসা করতে লাগলাম।

–মামা একটা কথা ছিলো!(আমি)

–হ্যা বল!(মামা)

–মামা আমরা তো বিয়ে বাড়ি যাচ্ছি তা মানলাম কিন্তু কোন এলাকায় বা কোন শহরে যাচ্ছি তাই তো জানি না, (আমি)

–আরে আমরা চট্টগ্রামে *********এলাকায় যাচ্ছি!(মামা)

মামার কথাটা শুনেই নিমিশেই সেই লেভেলের সক খেয়ে গেলাম আমি,কারন মামা যে এলাকার কথা বলল সেটা আর অন্য কোনো এলাকা না এটা সেই এলাকা সেখানে আমাকে অপমান করে অপরাধী বানিয়ে তাড়িয়ে দিলো!হ্যা আমি সেই এলাকায় যাচ্ছি যেখান থেকে আমি মুখ কালো করেই বেরিয়ে গেছিলাম আর বলছিলাম আর কখনোই এই এলাকায় আসবো না !আর এটা সেই এলাকা যেখানে আমার আপন বোনের শশুর বাড়ির তার সাথে সেই ছলনা ময়ী মায়ার বাড়িও।

চলবে…………..
ভুলক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।আর লাইক ও গল্প ভিত্তিক কমেন্ট করে পাশে থাকুন।নাইস নেক্সট বলা থেকে বিরত থাকুন।বিনা অনুমতিতে কপি করা নিষেধ।সেয়ার করুন আর পরর্বতি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।
Part 3
https://www.facebook.com/groups/315195763809014/permalink/379424740719449/

Part 5
https://m.facebook.com/groups/315195763809014/permalink/380850137243576/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here