#মেঘের_পরে_রংধনু
#পর্ব_৩৩
লিখা: Sidratul Muntaz
ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করা অরিনের প্রতিরাতের অভ্যাস। আয়না না দেখে সে ব্রাশ করতে পারে না৷ নিয়মমাফিক আজকেও বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে আয়না দেখে ব্রাশ করছিল অরিন। পানির ঝনঝন শব্দটা কল ঘুরিয়ে বন্ধ করতেই সে শুনতে পেল কারো কান্নার ফ্যাচফ্যাচ শব্দ। অরিনের বুকের ধুকবুকানিটা হিঁচকির মতো গলায় উঠে গেল। এতো ভয় লাগছে কেনো? গভীর রাতে কি তার নিজস্ব বেডরুমে কোনো অতৃপ্ত আত্মা ঢুকে পড়েছে? নিজের মনের অহেতুক চিন্তাটা ঢোকের মতো গিলে ফেললো সে। এসব কি চিন্তা করছে? তার ঘরে আত্মা আসবে কেন? মিহরীমা হয়তো ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে হাঁটতে অরিনের ঘরে চলে এসেছে। অরিন ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো মিহরীমা নয়, নিশিতা অরিনের বিছানায় বসে মুখে টিস্যু গুঁজে অদ্ভুত শব্দে কাঁদছে। অরিন কপালে হাত ঠেকালো। এই মেয়ের কান্না মিহরীমার থেকেও ভয়ংকর। এতোবড় একটা মেয়ে হয়েও কেউ এমন বাচ্চাদের মতো কাঁদতে পারে? নিশিতারা বাংলাদেশে ফিরেছে আজ দুইদিন হলো। ইলহানকেও হসপিটাল থেকে রিলিজ দিয়েছিল সেদিন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, যেদিন রাতে নুসাইবা ইলহানকে দেখা-শুনা করার দায়িত্ব নার্সের কাছে না দিয়ে অরিনের কাছে দিলেন তারপর দিনই ইলহান এতো সুস্থ হলো যে ডাক্তার ওকে চেকাপ করে বিকালের মধ্যেই রিলিজ করে দিলেন। শ্যানিন তো কানে কানে জিজ্ঞেস করলো,
“কি এমন সেবা করেছিস তুই যে ভাইয়া একদিনেই সুস্থ হয়ে গেল?”
অরিন চোখ রাঙিয়ে শ্যানিনকে ধমক দিয়েছিল। তবুও শ্যানিন সবার সামনে মজা করে বলেছিল,” অরিন, তোর কিন্তু ম্যাথম্যাটিকস নিয়ে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া একদম উচিৎ হয়নি। নার্সিং প্র্যাটিকসের জন্য নার্সিং কলেজগুলোতে ট্রাই করতি! পাক্কা ফার্স্ট ক্লাস নার্স হয়ে যেতি।”
সবাই মজাও পেয়েছিল শ্যানিনের কথায়। শুধু অরিন পেয়েছিল লজ্জা। নিশিতারা বাংলাদেশে ফেরার পর থেকে অরিনদের বাড়িতে শোক নেমেছে। অরিনের বাবা-মা চব্বিশ ঘণ্টা মুখ ভার করে ঘুরছেন। কারণ হলো, নিশিতার সাথে অর্ণভের বিয়েতে ফাটল ধরা। এই বিয়ে নিয়ে সবচেয়ে খুশি ছিলেন অরিনের বাবা মানে ফয়সাল সাহেব। এইবার তাঁর ছেলেটা অন্তত সুমনা নামক মায়াজাল কাটিয়ে বের হতে পারবে। এই সুখে সারাক্ষণ তাঁর মুখে হাসি লেগে থাকতো। কিন্তু যখন তিনি জানতে পারলেন নিশিতা অর্ণভকে নয় কোথাকার কোন ডেলিভারিম্যানকে বিয়ে করার জন্য উঠে-পরে লেগেছে, ফয়সাল সাহেবের মুখের হাসি বাষ্পীভূত হয়ে উঁবে গেল। তিনি কটাক্ষ ভাষায় হালিমাকে কথা শোনালেন।
” তোমার বংশের মানুষের এ কেমন স্বভাব? তোমার ভাই একটা বিয়ে করেছিল জন্ম-পরিচয়হীন এতিমখানার মেয়ে। সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে তোমার ছেলেও এখন বড়মামার আদর্শ ভাগ্নে হয়ে নিজে কোত্থেকে একটা বস্তির মেয়ে তুলে আনলো৷ তাকে বিয়ে করার জন্য উন্মাদ হয়ে গেল। এখন আবার তোমার বোনের মেয়ে নতুন তামাশা শুরু করেছে। চেনে না, জানে না, কোন ডেলিভারিম্যানকে সে নাকি বিয়ে করবে। ওই ডেলিভারিম্যান কি আমার ছেলের চেয়েও ভালো? অবশ্য বলেও লাভ নেই। তোমাদের বংশটাই তো এমন। ভালো জিনিসের কদর জানো না তোমরা। কথায় আছে কুকুরের পেটে যেমন ঘিঁ হজম হয় না। যতই ভালো জিনিস দাও, কুকুরের লোভ ওই রাস্তায় পড়ে থাকা পঁচা মাংসের দিকেই যায়।”
হালিমা কোমড়ে আঁচল বেঁধে ঝগড়া করার মতো বললেন,
” আমার বংশকে তুমি কুকুরের সাথে তুলনা দাও কোন সাহসে? আর অর্ণভ কি শুধু আমার ছেলে? তোমার ছেলে না? ও তো তোমার বংশ, তোমার রক্ত। তাই ওকে যেটাই বলো তোমার নিজের ঘাড়ে এসেই পড়বে।”
” বংশ আমার হলে কি হবে? মানুষ তো করেছো তুমি। ছোটবেলায় যেই বাচ্চা বড়মামাকে কাজের মেয়ের সাথে বিয়ে করতে দেখে তার শিক্ষা তো এমন হবেই। আর তোমার বোনের মেয়ে এখন যেটা শুরু করেছে তাতে আমার অরিন আর মিহরীমাকে নিয়েও ভয় লাগছে। দেখা যাবে তারাও কিছুদিন পর সবজিওয়ালা,ভ্যানওয়ালা অথবা রিকশাওয়ালা ধরে আনবে বিয়ে করার জন্য। শিক্ষাটা তো তোমাদের কুরুচিপূর্ণ পরিবার থেকেই দেওয়া হচ্ছে।”
” আমার পরিবারের রুচি যদি কুরুচিপূর্ণ হয় তাহলে তো আমার রুচিও কুরুচিপূর্ণ। তোমাকে আমি পছন্দ করেছিলাম বলেই বিয়েতে মত দিয়েছিলাম। আমার রুচির মধ্যে তাহলে তুমিও পড়ো। অন্যকারো রুচি নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার নেই তোমার। কারণ তুমি নিজেই কুরুচিপূর্ণ, জঘন্য মানুষ।”
বাড়িতে ঝড় তোলা এই ঝগড়াঝাঁটি দেখতে দেখতে অরিনের মাথাখারাপ হওয়ার পালা। এখন আবার মাঝরাতে নিশিতা এসেছে কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করতে। অরিনের বড্ড ঘুম পাচ্ছে। তার ইচ্ছে করছে নিশিতাকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে দরজা আটকে দিতে৷ দিনেরবেলা মা-বাবার অত্যাচার, রাতে নিশিতার অত্যাচার আর চব্বিশ ঘণ্টা সাইকোপ্যাথ বয়ফ্রেন্ডের অত্যাচার৷ অরিনের পাগল হতে বেশিদিন লাগবে না মনে হয়। অরিন নিশিতার পাশে গিয়ে বসতেই নিশিতা দুইহাতে জাপটে ধরলো অরিনকে। তারপর ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
” অরিনরে, অরিন! জানিস পাপা আমার বিয়ে ঠিক করেছে।”
অরিন ক্লান্ত ভঙ্গিতে হাই তুলে বললো,
” এইটা তো খুশির খবর তাই না? কান্নার কি হলো?”
নিশিতা চোখ সরু করে অরিনের দিকে তাকালো।
” তুই জানিস না আমার বয়ফ্রেন্ড আছে? কিন্তু পাপা আমাকে জোর করে অর্ণভ ভাইয়ের কাছে বিয়ে দিতে চায়। আমি কি করবো অরিন? পালানোর পথ খুঁজে দে। পাপা যদি সন্দেহ না করতো তাহলে পালিয়ে যাওয়া আমার কাছে কোনো ব্যাপারই ছিল না। কিন্তু সমস্যা হলো পাপা আমাকে খুব সন্দেহ করছে। সন্দেহের কারণে আমাকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে। আমি ঘর থেকে বের হলেই দশ-বারোজনের মতো পাহাড়াদার আমার পেছনে লেগে পড়ে৷ তোদের বাড়িতে আসার সময়ও একঝাঁক সাঙ্গ-পাঙ্গ আমাকে ফলো করেছে। তারা দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। আমার পক্ষে পালানো এখন অসম্ভব। আমার কি করা উচিৎ তুই বলে দে।”
” সত্যি কাল তোমার সাথে ভাইয়ার বিয়ে? কোথায় আমরা তো কিছু জানি না।”
” আমার বিয়ের খবর আমিই মাত্র জানলাম। তোরা আর কোত্থেকে জানবি? তোরা কিছু জানলেও বিয়ে হবে আর না জানলেও বিয়ে হবে। আমার পাপা কি কারো অনুমতির জন্য অপেক্ষা করবে?”
নিশিতা কথাগুলো বলছে আর সুর টেনে কাঁদছে।বার-বার খালি টিস্যুতে নাকের পানি মুছছে। অরিনের চূড়ান্ত বিরক্ত লাগলো। সে নিশিতাকে হাত ধরে উঠিয়ে ঘরের বাহিরে নিয়ে বললো,
” আমার অনেক ঘুম পেয়েছে। ঘুমিয়ে আগে মাথা ঠান্ডা করি। সকালের মধ্যে আমি তোমাকে ভালো কোনো আইডিয়া জানাবো। এখন গুড নাইট।”
” আরে, আরে…সকালে কেন? এখনি বল না। তুই ঘুম থেকে উঠার আগে যদি আমার বিয়ে শেষ হয়ে যায়?”
” ভাইয়া আমাকে ফেলে জীবনেও বিয়ে করবে না। সো ডোন্ট টেনশন।”
অরিন দরজা আটকে দিল৷ সে জানে নিশিতার বয়ফ্রেন্ড ইলহান নয় বরং ইলহানের বেস্টফ্রেন্ড নাসির। অর্ণভ সবই অরিনকে বলেছে। কিন্তু অর্ণভ ভাইয়া তো বলেছিল সে এমন একটা ব্যবস্থা করবে যাতে সবাই খুশি থাকে। কিন্তু নিশিতা আর অর্ণভ ভাইয়ের বিয়ে হলে তো সবাই খুশি থাকবে না। ভাইয়া কি আসলেই বিয়েতে রাজি? কে জানে? হয়তো নিশিতাই আবল-তাবল বকছে। প্রেমের শোকে পাগল হয়ে গেছে। যখন সে জানতে পারবে তার এই প্রেম সেই প্রেম নয় বরং সবই ধোঁকা তখন কি কেলেংকারী ঘটাবে আল্লাহ মা’বুদ জানেন। অরিন বিছানায় শুয়ে শরীরে কাঁথা টেনে দিল। তখনই টুং করে ম্যাসেজ আসলো,
” মায়াপরী, তোমার বারান্দার নিচে মই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। একটা ওরনা ফেলো তো।”
অরিন শোয়া থেকে প্রায় লাফিয়ে উঠে বসলো। ইলহান কি সত্যি তার বাসার নিচে চলে এসেছে? অরিন বারান্দায় গিয়ে দেখলো আসলেই ইলহান মই হাতে দাঁড়িয়ে আছে৷ অরিনকে দেখে সে হাত নাড়লো। গালে টোল পড়া নজরকাঁড়া হাসিটা দিল। অরিন কপালে হাত দিয়ে তিনবার উচ্চারণ করলো,” সাইকো, সাইকো, সাইকো।”
তারপর একটা ওরনা নিয়ে বারান্দার কার্নিশের সাথে বেঁধে দিল। ইলহান মই বেয়ে উপরে উঠে আসলো। অরিন নিচু স্বরে ধমক দেওয়ার মতো বললো,
” তোমার প্রবলেম কি? এতোরাতে এখানে কেনো এসেছো?”
” ঘুম আসছিল না। আচ্ছা, তোমাদের বাসার সামনে এতো ভীর কিসের? অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে দেখলাম।”
” মানুষ দাঁড়িয়ে আছে মানে? ও, বুঝেছি। ওগুলো নিশিতা আপুর বডিগার্ড। সে যেনো পালিয়ে কোথাও যেতে না পারে তাই ইউসুফ আঙ্কেল ওদের ভাড়া করে এনেছে নিশিপুকে নজরদারিতে রাখার জন্য। ”
” ওহহো! নিশিতা তোমার সেই ক্রিঞ্জি কাজিনটা না?”
” ইশশ, এমনভাবে বলছো যেনো চেনোই না? তোমার জন্যই আজকে এতো ঝামেলা হচ্ছে। সকল ঝামেলার মূল উৎস তুমি। কে বলেছিল ডেলিভারিম্যান হতে?”
ইলহান অরিনের কোমড় জড়িয়ে ধরে বললো,” আর আমার ঝামেলার সব উৎস যে তুমি সেটা জানো?”
তারপর কবিতা আবৃত্তির মতো করে আওড়ালো ইলহান,
” তোমাকে পাওয়ার জন্য, আমি হতে পারি ডেলিভারিম্যান। পিজ্জা হাতে ছুটতে পারি মাইলের পর মাইল। তোমাকে পাওয়ার জন্য, আমি বাসে হাঁটু ভাজ করে বসতেও রাজি। ব্যথা ধরা পা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ও প্রিয়তমা, তোমাকে পাওয়ার জন্য মাঝরাতে মই বেয়ে চড়তে পারি বারান্দায়..”
অরিন হাতজোড় করে বললো,” প্লিজ থামো। তোমার এই বাজে কবিতার লাইন শুনলে শামসুর রহমানের মৃত আত্মাও দ্বিতীয়বার মরে যেতে চাইবে।”
” এইটা শামসুর রহমানের কবিতা ছিল নাকি?”,
” হুম। তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা।”
অরিন কথা বলতে বলতে রুমে চলে এলো। ইলহান পিছু পিছু এসে বললো,
” আচ্ছা যাইহোক,এখন আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও তো।”
অরিন বিছানায় বসে বললো,” কি প্রশ্ন?”
ইলহান বিছানায় বসলো না। হাঁটু গেঁড়ে অরিনের বরাবর বসলো। তারপর অরিনের দুইহাত শক্ত করে ধরে বললো,” তুমি কি ম্যাজিশিয়ান?”
অরিন ঠোঁট টিপে হাসলো।
” কেনো?”
” অবশ্যই তুমি ম্যাজিশিয়ান। কি ম্যাজিক করেছো আমাকে? হসপিটালের শেষরাত এখনও ভুলতে পারছি না। আমার তো এখন তোমাকে কয়েক মুহুর্ত না দেখলেই দম বন্ধ হয়ে আসে। সারাক্ষণ তোমার শরীরের ঘ্রাণ পেতে ইচ্ছে করে।”
অরিন লজ্জায় মিইয়ে যেতে চাইল। উফফ, ইলহান বার-বার শুধু এই প্রসঙ্গে কথা বলে কেনো? সে কি জানে না এতে অরিন লজ্জা পায়? নাকি সে ইচ্ছে করেই অরিনকে লজ্জায় ফেলতে চায়? অরিনের দরজায় খটখট শব্দ হতে লাগলো। ইলহান খুব বিরক্ত হয়ে বললো,” শিট! আমি থাকলেই কি বাসার সবার মাঝরাতে তোমার ঘরে আসতে ইচ্ছে করে?”
অরিন জীভ কেটে বললো,” সর্বনাশ, নিশিতাপু এসেছে মনে হয়। এই তুমি জলদি লুকাও।”
ইলহান আতঙ্কিত হয়ে বললো,
” বাথরুমে চলে যাবো?”
” না না, বাথরুমে গেলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা আছে। প্লিজ কষ্ট করে খাটের নিচেই ঢুকো।”
” এতো ছোট খাটের নিচে আমি কিভাবে আঁটবো? আগেরবার কি হয়েছিল মনে নেই?”
” প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ। এইটা ছাড়া অন্যকোনো রাস্তা নেই।”
ইলহান খাটের নিচে কোনোমতে নিজেকে মানিয়ে নিল। অরিন দ্রুত গিয়ে দরজা খুলতেই নিশিতা দুম করে ঢুকে নিজেই দরজাটা আটকে দিল। তারপর খুশির জোয়ারে ভাসতে ভাসতে বললো,
” খুব ভালো একটা আইডিয়া পেয়েছি অরিন। ইয়েস!”
” কি আইডিয়া পেয়েছো?”
নিশিতা বিছানায় উঠে বসলো। অরিনের আত্মা আতঙ্কে নিভু নিভু করছে। নিশিতার বসার ধরণ দেখে মনে হচ্ছে না সে খুব সহজে এখান থেকে যাবে। ওইদিকে ইলহানটা খাটের নিচে ভর্তা হয়ে যাচ্ছে। নিশিতা খুব আগ্রহ নিয়ে বললো,
” শোন, সকালে উঠেই তুই আমার বিয়ের শাড়ি ইস্ত্রি করার বাহানায় পুড়িয়ে ফেলবি৷ তারপর আমি জেদ ধরে বলবো, নতুন শাড়ি ছাড়া বিয়েতে বসবো না। অরিনের ভুলে আমার শাড়ি পুড়েছে তাই সে আমাকে শাড়ি কিনে দিবে। এই কথা পাপাকে বলবো। তারপর পাপার অনুমতি নিয়ে আমরা জেন্টালম্যান আউটলেটে যাবো। ওইখানে যদি ক্যাটবেরিকে একবার পেয়ে যাই..”
” কি বলো এইসব? আঙ্কেল কি আমাদের একা যেতে দিবে? তখনও যদি বডিগার্ডগুলোকে সাথে পাঠায়?”
” পাঠালে পাঠাবে। আমরা তো শপিংমলেই যাবো। তাছাড়া একবার ক্যাটবেরিকে পেয়ে গেলেই তো হলো।”
” কিন্তু আপু, জেন্টালম্যান তো ছেলেদের শপিং সেন্টার। আর তাছাড়া, তোমার ক্যাটবেরি যে তোমাকে বিয়ে করতে রাজি হবে তার কি গ্যারান্টি আছে? সে যদি সব অস্বীকার করে তখন কি করবে তুমি?”
” জীবনেও না। এতো সোজা? প্রয়োজনে আমি ওর কপালে রিভলবার ঠেকিয়ে বলবো, এই বেটা আমাকে বিয়ে কর। নাহলে এক্ষুনি তুই খালাস। খুনাখুনি হয়ে যাবে একদম।”
ইলহান এই কথা শুনে কেশে ফেললো। অরিনের নিঃশ্বাস থেমে গেল ইলহানের কাশির কর্কশ শব্দে শুনে। নিশিতা আশেপাশে তাকিয়ে বললো,” কেরে?”
অরিন কিছু বুঝানোর আগেই নিশিতা চাদর উল্টিয়ে খাটের নিচে উঁকি দিল।
চলবে