মন চায় তোকে পর্ব-১২

0
1914

#মন_চায়_তোকে
#পার্ট_১২
#নিশাত_জাহান_নিশি

কথাগুলো বলেই মেয়েটা দ্রুত পায়ে প্রস্থান নিলো।

অন্তর কিছুটা আপসেট হয়ে মল্লিকার পাশে এসে খাবার প্লেইট নিয়ে বসল। মল্লিকা থম মেরে বসে আছে। অন্তর খাবারের লোকমা ধরে মল্লিকাকে খাইয়ে দিচ্ছে। পর পর কয়েকটা লোকমা খাওয়ার পর মল্লিকা কায়দা করে অন্তরের মুখে ও খাবারের লোকমা পুড়ে দিলো। অন্তর এক ভ্রু উঁচু করে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। মল্লিকা খাবার চিবুচ্ছে আর বলছে,,,,,

—-“আরে খান তো। এভাবে তাকাবেন না। আমি ও খাই আপনি ও খান কেমন?”

অন্তর মুচকি হেসে খাবারটা চিবুতে লাগল। এভাবেই দুজন সম্পূর্ণটা খাবার শেষ করল। অন্তরের মনে শান্তি নেই। সে বেশ টেনশানে আছে ঐ অদৃশ্য ছায়াটা নিয়ে। মল্লিকার মুখ মুছিয়ে অন্তর খাবারের প্লেইটটা ডেস্কের উপর রেখে পুরো রুমটা ভালো করে চোখ বুলিয়ে দেখে নিলো। সবকিছু চেইক করে অন্তর বিছানায় গাঁ এলিয়ে দিলো। মল্লিকা আর অন্তর মুখোমুখি শুয়ে আছে। দুজনই দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। মল্লিকার কেমন শীত শীত লাগছে। তাই সে গায়ে কম্বল জড়িয়ে নিলো। খানিকটা অন্তরের গায়ে ও মেলে দিয়েছে। অন্তর বাঁকা হেসে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। মল্লিকা অন্তরের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,

—-“অন্তর এক্টা সত্যি কথা বলব?”

—-“হুম বলো।”

—-“আপনি না দেখতে অন্নেক কিউট। আচ্ছা আপনার ঠোঁট গুলো এতো লাল কেনো? আপনি কি লিপস্টিক ইউজ করেন?”

অন্তর হু হা করে হেসেই যাচ্ছে ওর হাসি যেনো থামছেই না। মল্লিকা কিছুটা আহ্লাদি কন্ঠে অন্তরকে বলল,,,,,

—-“অন্তর প্লিজ বলুন না, আপনি কোন ব্যান্ড্রের লিপস্টিক ইউজ করেন? আমি ও ঐ লিপস্টিকটা ইউজ করব।”

অন্তর এবার হাসি থামিয়ে মল্লিকাকে হেচকা টান দিয়ে ওর গাঁয়ের সাথে মিশিয়ে নিলো। মল্লিকা চোখ বড় বড় করে অন্তরের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর বাঁকা হেসে মল্লিকার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,

—-“তোমাকে লিপস্টিক ইউজ করতে হবে না মল্লিকা। এক্ষনি তোমার ঠোঁট গুলো আমি আমার ঠোঁটের মতো লাল করে দিচ্ছি।”

কথাগুলো বলেই অন্তর মল্লিকার ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরল। মল্লিকা বেকুব হয়ে অন্তরের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তর ব্যস্ত মল্লিকার ঠোঁটের রং পাল্টাতে। পরম আবেশে মল্লিকা এক পর্যায়ে চোখ জোড়া বন্ধ করে অন্তরের পিছনের চুলগুলো আঁকড়ে ধরল। মল্লিকার সায় পেয়ে অন্তর আরো উওেজিত হয়ে উঠল। প্রায় দশ মিনিট পর হুট করেই ব্যালকনীর দরজায় কিছু এক্টা পড়ার আওয়াজ হলো। আওয়াজ টা খুবই জোরে সোরে হলো। মনে হচ্ছে পুরো দরজাটা কেঁপে উঠেছে। অন্তর তাড়াতাড়ি মল্লিকার ঠোঁট ছেড়ে দৌঁড়ে ব্যালকনীর দরজার দিকে গেলো। দরজার সামনেই বড় এক্টা পাথর পড়ে আছে। অন্তর নিচু হয়ে পাথরটা হাতে নিয়ে দেখল পাথরটাতে মেয়েদের লিপস্টিক লেগে আছে। লাল লিপস্টিক দিয়ে পুরো পাথরটা রঙ্গিন হয়ে আছে। অন্তর তাড়াতাড়ি পাথরটা হাত থেকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিলো। ওর পুরো হাতটা লিপস্টিক দিয়ে লাল হয়ে গেছে।

মল্লিকা ভয়ে গুটিসুটি মেরে কম্বল আঁকড়ে শুয়ে আছে। অনেকক্ষন হওয়ার পর ও অন্তর আসছে না দেখে মল্লিকা খানিক চেঁচিয়ে বলে উঠল,,,,,,

—-“অন্তর আপনি ঐখানে কি করছেন? প্লিজ তাড়াতাড়ি আসুন। আমার ভয় লাগছে।”

মল্লিকার চেঁচানোর আওয়াজ পেয়ে অন্তর আবারো ব্যালকনীর দরজাটা ভালো করে লাগিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে হাতটা ভালো করে ওয়াশ করে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল। মল্লিকা অন্তরের দিকে তাকিয়ে কাঠ কাঠ গলায় বলল,,,,,

—-“কি হয়েছে অন্তর? ওটা কিসের আওয়াজ ছিলো?”

অন্তর ব্যাপারটাকে হাসি দিয়ে উড়িয়ে বলল,,,,,

—-“আরে না কিছু না মল্লিকা। বাইরে খুব বাতাস তো তাই ব্যালকনীর দরজাটা এক্টু নড়ে চড়ে উঠেছে। এতোটাই গভীর ভাবে নড়ছে যে, মনে হচ্ছে কেউ ঢিল ছুড়ছে।”

মল্লিকা ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,,,,,

—-“সত্যি বলছেন তো?”

—–“জ্বি ডিয়ার সত্যি বলছি।”

কথাটা বলেই অন্তর আবারো মল্লিকার ঠোঁট আঁকড়ে ধরল। মল্লিকা মুচকি হেসে অন্তরের শার্ট আঁকড়ে ধরল। দুজনই আবার প্রেম নেশায় মগ্ন হয়ে গেলো। প্রায় পনেরো মিনিট পর অন্তর কিছুটা উওেজিত হয়ে মল্লিকার শাড়িটা খুলতে নিলেই আবারো ব্যালকনীর দরজায় ঢিল ছোড়ার আওয়াজ হলো। অন্তর ব্যাপারটাকে আমলে না নিয়ে এক টানে মল্লিকার শাড়িটা খুলে ফেলল। মল্লিকা ঢিল ছুড়ার আওয়াজে ভয় পেয়ে আছে। সে পুরোপুরি তব্দা লেগে আছে। অন্তর ওর শার্ট টা খুলে যেই না মল্লিকার গলায় মুখ ডুবাতে যাবে অমনি রুমের প্রতিটা লাইট আপনা আপনি জ্বলতে, নিভতে শুরু করল। মুহূর্তেই পরিবেশটা পুরো ভুতূড়ে হয়ে গেলো। অন্তরের কাছে ব্যাপারটা এতক্ষনে খোলসা হলো কেনো বার বার এমন ঘটনা ঘটছে। অন্তর গায়ে শার্টটা জড়িয়ে বেডের উপর থেকে নামছে আর বিড়বিড় করে বলছে,,,,,

—-“কেউ নিশ্চয়ই আছে, যে আমাকে আর মল্লিকাকে এক হতে দিচ্ছে না। লোকটা হয়তো আমার সাথে রিলেটিড, নয়তো মল্লিকার সাথে। এভাবে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আমাকে এক্ষনি নিচে গিয়ে কারেন্টের লাইনটা চেইক করতে হবে। আশা করছি হাতে নাতে ধরতে পারব।”

কথাগুলো বলতে বলতে অন্তর শার্টের বাটন গুলো লাগিয়ে নিচে পড়ে থাকা শাড়ীটা মল্লিকার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে বলল,,,,,,

—-“শাড়ীটা পড়ে নাও মল্লিকা, আমি এক্টু নিচ থেকে আসছি।”

মল্লিকা শাড়ীটা আঁকড়ে ধরে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,,,,,

—-“আমাকে একা রুমে রেখে যাবেন না অন্তর। আমার বেশ ভয় করছে।”

—-“চলো তাহলে শাড়ীটা তাড়াতাড়ি পড়ে নাও।”

রুমের লাইট গুলো এখনো জ্বলছে আর নিভছে। অন্তর আর মল্লিকার ভয়টা ও ক্রমশ বাড়ছে। শাড়ীটা কোনো রকমে গায়ে পেঁচিয়ে মল্লিকা বেড ছেড়ে উঠে নিচে নেমে দাঁড়ালো। অন্তর মল্লিকার হাত ধরে রুমে থেকে বের হয়ে সোজা নিচে নেমে গেলো। ইলেকট্রিসিটি কাউন্টারের দিকে মোড় নেওয়ার সাথে সাথে কেউ একজন দৌঁড়ে কাউন্টার থেকে বের হয়ে গেলো। অন্তর লোকটার ছায়া দেখেছে তবে লোকটাকে স্পষ্ট দেখে নি। অন্তর ছায়াটাকে ফলো করে দৌঁড়াচ্ছে আর চেঁচিয়ে বলছে,,,,,,

—-“হেই হু আর ইউ? কেনো আমাদের পিছনে লেগেছেন? আমাদের এভাবে ডিস্টার্ব করার মানে কি? প্লিজ দাঁড়ান বলছি। আমি আপনার সাথে ফেইস টু ফেইস কথা বলতে চাই।”

হুট করেই ছায়াটা যেনো কোথায় মিলিয়ে গেলো। অন্তর এদিক সেদিক তাকিয়ে ছায়াটাকে খুঁজছে। কিন্তু কোথাও ছায়াটার লেশ মাএ দেখা যাচ্ছে না। আচমকাই অন্তরের কানে মল্লিকার চিৎকারের আওয়াজ ভেসে আসল। অন্তর আর দেরি না করে ইলেকট্রিসিটি কম্পাউন্ডে দৌঁড় লাগালো। মল্লিকার হাত থেকে টপটপ করে রক্ত পড়ছে। এই রক্ত থামবার নয়। থামবে কি করে? মল্লিকার হাতে কেউ ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে। কমচে কম তিন, চারটে সেলাই তো লাগবেই। মল্লিকা ব্যাথায়, যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। অন্তর দৌঁড়ে এসে মল্লিকাকে ঐ অবস্থায় দেখে মুহূর্তেই মুর্তি রূপ ধারণ করল। সে চেষ্টা করে ও নিজেকে নাড়াতে পারছে না। অন্তরের চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। মল্লিকাকে এই অবস্থায় সে দেখতে পারছে না। বুকের ভিতরটা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। মল্লিকা পিটপিট করে চোখ খুলে বার বার ব্যাথায় কুঁকিয়ে উঠছে। অন্তর নিজেকে কিছুটা সামলিয়ে দৌঁড়ে গিয়ে মল্লিকাকে কোলে তুলে লজের হেলথ কমপ্লেক্সে চলে গেলো। মল্লিকার চেয়ে ও অন্তর কাঁদছে বেশি। মল্লিকার হাতের রক্ত দিয়ে অন্তরের হোয়াইট শার্টটা লাল হয়ে গেছে। দুজনই রক্তে মাখামাখি হয়ে গেছে। অন্তর কান্নাজড়িত কন্ঠে মল্লিকার কপালে চুমো খেয়ে বলল,,,,,

—–“তোমার কিছু হবে না মল্লিকা। তুমি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। তোমার এই অবস্থা যে করেছে তাকে আমি ছাড়ব না। আজ রাতটা কোনো রকমে পাড় করতে দাও। কাল থেকেই খেলা শুরু হবে।”

কথাগুলো বলেই অন্তর মল্লিকাকে নিয়ে হেলথ কমপ্লেক্সের ভিতর ঢুকে গেলো। একজন ডক্টর মল্লিকাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে কেবিনে ঢুকিয়ে নিলো। কেবিনে ডক্টরের পাশাপাশি অন্তর ও আছে। মল্লিকাকে সেন্সলেস করে কাটা জায়গাটা সেলাই করা হচ্ছে। মোট পাঁচটা সেলাই লেগেছে কাটা জায়গাটায়। ডক্টর কয়েকটা ঔষধ উনার কম্পাউন্ড থেকে অন্তরের হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। অন্তর ঔষধ সহ মল্লিকাকে কোলে নিয়ে ওর রুমের উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরল।

প্রায় পাঁচ মিনিট পর অন্তর রুমে ঢুকে মল্লিকাকে বেডে শুইয়ে দিয়ে মেডিসিন প্যাকেটটা ডেস্কের উপরে রেখে মল্লিকার পাশে ধপ করে বসে পড়ল। মল্লিকার ফর্সা মুখটা কালচে রূপ ধারণ করেছে। চোখের পানি গুলো শুকিয়ে জায়গা গুলো সাদা সাদা হয়ে আছে। অন্তর চোখে জল নিয়ে মল্লিকার দিকে তাকিয়ে আছে। এই মুহূর্তে অন্তর নিজেকে দোষী মনে করছে। কিছুতেই শান্তি পাচ্ছে না সে।

হুট করেই অন্তর কিছু এক্টা মনে করে বসা থেকে উঠে রুমের প্রত্যেকটা লাইট জ্বালিয়ে দিয়ে দেয়ালের প্রতিটা আনাচে কানাচে গভীর মনযোগ দিয়ে কিছু এক্টা খুঁজছে। অন্তর কিছুটা ভাবুক হয়ে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,

—–“আ’ম ডেম সিউর। কেউ আমার রুমে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে। কেউ দূরে থেকেই আমাদের ফলো করছে। আমাদের প্রতিটা স্টেপ সে দেখছে। যে করেই হোক সিসি ক্যামেরাটা আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে।”

রুমের দরজার কাছাকাছি যেয়ে অন্তরের নজর পড়ল সিসি ক্যামেরাটার দিকে। ছোট্ট ক্যামেরাটা রুমের দরজায় ফিট করা আছে। কেউ রুমে ঢুকে এই কান্ড করে গেছে। অন্তর ক্যামেরাটা হাতে নিয়ে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,

—–“তাহলে কি ঐ ছায়াটাই আমাদের এ্যাবসেন্সে রুমে ঢুকে ক্যামেরাটা ফিট করে দিয়ে গেছে? আমি যখন মল্লিকাকে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে ছিলাম তখন ঐ ছায়াটা ব্যালকনী বেয়ে এসে আমার রুমের দরজায় ক্যামেরাটা ফিট করে দিয়ে গেছে? হবে হয়তো।”

অন্তর কিছুক্ষন ভেবে আবার বলল,,,,,

—-“এটা তো সম্ভব না। আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যেই মল্লিকাকে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম। পাঁচ মিনিটেই কারো পক্ষে সম্ভব না ব্যালকনী বেয়ে রুমে ঢুকে দরজার কাছে এসে সিসি ক্যামেরা ফিট করে আবার রুম থেকে বের হয়ে ব্যালকনী বেয়ে নিজের গন্তব্যে ফিরে যাওয়া। তাহলে কি ঐ ছায়াটা ছাড়া ও অন্য কেউ আছে এর পিছনে?”

অন্তর মাথায় হাত দিয়ে আবার বিড়বিড় করে বলল,,,,,,

—-“না ঐ ছায়াটা এই কাজ করে নি। করেছে অন্য কেউ। আমি, মল্লিকা আর ছায়াটা ছাড়া নিশ্চয়ই কোনো চতুর্থ ব্যক্তি আমাদের রুমে ঢুকেছে। দরজা থেকেই সে চলে গেছে। তাছাড়া আমি যখন এক্টু আগে এ ছায়াটার পিছনে দৌঁড়াচ্ছিলাম, তখন হুট করেই অন্য কেউ এসে পিছন থেকে মল্লিকার উপর এ্যাটাক করেছে। ছায়াটার পক্ষে অবশ্যই সম্ভব না দুই দিক ব্যালেন্স করা। এক সাথে দুই জায়গায় থাকা সম্ভব না। আই থিংক চতুর্থ কোনো ব্যক্তি ও আছে আমাদের পিছনে।”

অন্তর কিছু এক্টা মনে করে মাথা থেকে হাত সরিয়ে বেশ পেরেশান হয়ে আবার বলল,,,,,

—-“এক সেকেন্ড, এক সেকেন্ড, আমি, মল্লিকা আর ছায়াটা ছাড়া ও চতুর্থ কোনো ব্যক্তি রুমে এসেছিলো। হুডি পড়া মেয়েটা। মেয়েটা দরজা থেকেই চলে গিয়েছিলো। হয়তো মেয়েটাই সুযোগ বুঝে দরজায় ক্যামেরাটা ফিট করে গেছে। ইয়েস আমি ধরতে পেরেছি। মেয়েটাই আছে সবকিছুর পিছনে। এখনি আমাকে লজ ম্যানাজারের সাথে মেয়েটা সম্পর্কে কথা বলত হবে।”

কথা গুলো বলেই অন্তর যেই না রুম থেকে বের হতে যাবে এর আগেই মল্লিকা বিড়বিড় করে অন্তরকে ডাকা শুরু করল। ব্যাথায় নাক, মুখ খিঁচে রেখেছে মল্লিকা। অন্তর তাড়াতাড়ি মল্লিকার কাছে ছুটে গেলো। মল্লিকা পিটপিট চোখে অন্তরের দিকে তাকিয়ে মিনমিনিয়ে বলল,,,,,

—-“অন্তর আমরা আর কেউ ই রুম থেকে বের হবো না। রুম থেকে বের হলেই ঐ কালো হুডি পড়া লোকটা আমাদের মেরে দিবে। লোকটা খুব খারাপ অন্তর। বলা নেই, কওয়া নেই হুট করে পিছন থেকে এসে লোকটা আমার হাতে ছুরি বসিয়ে দিলো। আমি ঠিক ঠাওর করতে পারি নি অন্তর। তবে আমার মনে হচ্ছে ঐটা কোনো মেয়ের হাত ছিলো। হাতটা কেমন সফট ছিলো। ব্রেস লাইট জাতীয় কিছুর আঁচ পেয়েছি আমি।”

এতক্ষনে অন্তরের কাছে সবটা ক্লিয়ার হলো। অন্তর আবারো ভাবনায় পড়ে গেলো। অন্তর আপন মনে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,

—-“তাহলে আমার ধারনাটাই ঠিক ছিলো। চতুর্থ ব্যক্তি ঐ মেয়েটি। যে মেয়েটি ওয়েটারের ভেষে এসেছিলো। মেয়েটা আমাদের ক্ষতি করতে চায়। বিশেষ করে মল্লিকার। তবে মোটিভটা ঠিক বুঝতে পারছি না। নিশ্চয়ই কোনো রহস্য আছে। যা আমার অজানা।”

অন্তরের মৌণতা দেখে মল্লিকা অন্তরকে ঝাঁকিয়ে বলল,,,,,

—-“কি ভাবছেন অন্তর? বিশ্বাস করুন আমি যা যা বলছি সব ঠিকঠাক বলছি। ঐ লোকটা এক্টা মেয়ে ছিলো।”

অন্তর মল্লিকার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,,,,

—-“শান্ত হও মল্লিকা। ঔষুধ খেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করো। কাল সকালে আমরা এই বিষয়ে কথা বলব।”

অন্তর ডেস্কের উপর থেকে মেডিসিন প্যাকেটটা নিয়ে এক এক করে মেডিসিন ছাড়িয়ে মল্লিকাকে খাইয়ে দিলো। মল্লিকা এবার চোখ বুজে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ল। অন্তর ও আর দেরি না করে মল্লিকাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।

পরের দিন,,,,,

#চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here