#ফেইরিটেল
#Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
Part–38
আকাশে অর্ধবৃত্ত একটা চাঁদ উঠেছে।শান্তিময় হিমেল হাওয়া এলোমেলো করে দিচ্ছে মিরার হৃদ মাঝারটাকে৷ ইমানের যাওয়ার পানে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। আরো আধ ঘন্টা আগেই এ রাস্তা দিয়ে সে হেঁটে হেঁটে চলে গেছে। তবুও সেদিকে তাকিয়ে মিরা যেন ধ্যানে বসেছে৷ চোখের পলক ফেলার সময় বাদে সে বাকি সময়টুকু জুড়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে৷ উম্মাদ-উত্তাল বাতাসে তছনছ হচ্ছে গাছের পাতা। প্রবল স্রোতে বাতাস দৌঁড়ে আসায় গাছের পাতাগুলো এমনভাবে ঝরছে যেন রেইনফল না লিভ-ফল হচ্ছে৷ অন্যরকম একটা অনুভূতি অনুভব করছে সে। শুষ্ক পাতার দলগুলো হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে উদ্দেশ্যহীনভাবে৷ একসময় তার মনে হলো, পাতার মতো আমরা মানুষও যদি মন চাইলে সবটা ছিন্ন করে উড়ে হারিয়ে যেতে পারতাম!”
তখনই মেদেনীর বুক ভার করে এক ঝাক বৃষ্টি নেমে এলো। প্রথমে ঝিরিঝিরি এরপর ক্রমশ বাড়তে লাগলো। মিরা আকাশের দিকে তাকালো। যদিও অন্ধকারে কিছু দেখতে পেল না। কিন্তু চোখ খুলে রাখা যাচ্ছে না৷ মোটা মোটা বৃষ্টির ঝাটা সোজাসাপটা চোখে এসে লাগছে। সে চোখ নামিয়ে নিয়ে খানিকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজল৷ খুব আরাম লাগছে ভিজতে৷ মনে হচ্ছে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে সব ক্লান্তি ধুয়ে যাচ্ছে৷ যতোক্ষণ বৃষ্টি পড়ল, সে ঠায় বাসার সামনের রোডে দাঁড়িয়ে থাকল৷ মাঝে দুজন পথিক তাকে পাশ কাটিয়ে গিয়েছে। দুজনেই তাকে দেখে মুচকি হেসেছে। একজন প্রশ্ন করে বসে, “তোমার কী অনেক দুঃখ ডিয়ার? কেমন উদাসীন লাগছে। প্লিজ একটু হাসো। ডোন্ট ক্রাই ডিয়ার৷ ”
মিরার তখন খেয়াল হলো সে কাদছিল। চোখ দিয়ে টপাটপ জল গড়াচ্ছিল তার৷ অথচ, অথচ ভদ্রমহিলা না বললে সে টেরও পেত না৷ কি আশ্চর্য! নিজের দু’চোখ কাদলো তাও মন টের পেল না? সে জানেও না কেন, কি জন্য কাদলো সে? ভদ্রমহিলার প্রশ্নের উত্তরে সে কিছুই বলতে পারেনি। সামান্য হেসেছে কেবল। প্যান্ট-শার্ট আর ছোট চুলেরই সেই মাঝবয়েসী মহিলা তাকে হাসতে দেখে দারুণ সুন্দর করে বলে, “তোমার হাসি যা মিষ্টি।”
উনি মিরার ভেজা গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে যান। অনাকাঙ্ক্ষিত একজনের স্নেহে কোমল মনটা ভিজে উঠে মিরার৷ সে সঙ্গে সঙ্গে বাসার দিকে ছুট লাগায়৷ বাসার দরজা বন্ধ ছিল। ভেতর থেকে লক করা। মিরা বেল বাজালে হাসনাহেনা দরজা খুলে দিয়ে মিরাকে কাকভেজা অবস্থায় দেখে হতভম্ব হয়ে যান৷ উনি বলে উঠে, “তুমি বৃষ্টির মধ্যে বাইরে ছিলে?”
–” জি আন্টি।”
–” আমি ভেবেছি তুমি দোতলায় আছ। এই ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বাইরে কেন? বৃষ্টিতে কেন ভিজলে? সেদিন না জ্বর থেকে সারলে। এখন যদি ঠাণ্ডা লেগে যায় আবারো?”
মিরা মাথা নিচু করে ফেলে। আসলেই তো। সে তো অসুস্থতার কথা ভুলেই গিয়েছিল৷
আন্টি রাগী গলায় বলে উঠে, ” তোমাদের জেনারেশনের ছেলে-মেয়েদের কোন ঠিক-ঠিকানা নাই। যা মন চায় তাই করবে৷ সেটা ভালো না খারাপ ভাবার প্রয়োজনবোধ করো না৷”
–” সর্যি আন্টি।”
–” বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেন? ভেতরে আসো। পুরা বাসা আবার ক্লিন করতে হবে। তুমি এক্ষুনি হট শাওয়ার নিয়ে চুল শুকাবে৷”
তখনই মিরা একটা হাঁচি দিয়ে বসে৷ হাসনাহেনা এবার আরো রাগী চেহারা বানালেন। মিরার কী যেন হলো। সে তার দিকে তাকিয়ে হেসে উঠে৷ এতে হাসনাহেনা বিরক্ত হয়ে বলে, ” হাসবে না একদম। যাও দ্রুত যাও। এবার জ্বর আসলে কিন্তু তোমার খবর আছে৷”
মিরা ভেজা অবস্থায় দোতলার রুমে প্রবেশ করে। আজকে রুমটা কেমন শূন্য শূন্য হয়ে আছে৷ মনে হচ্ছে কী যেন নেই৷ কী যেন খালি৷ অবশ্য এতো সুন্দর রুমটার মালিক নেই। তার অনুপস্থিতি পুরা রুম জুড়ে ছড়িয়ে গেছে৷ রুমের বারান্দার উইন্ডচার্মটা মন খারাপ করে ঝুমঝুম আওয়াজ তুলে গান-বাজনা করা থামিয়ে দিয়েছে৷ পর্দাটা আনন্দে উড়াউড়ি করা বন্ধ করে দিয়েছে৷ অন্যথায় পর্দার উড়াউড়ির জন্য ওপাশের সবটা দেখা যায় এতে কতবার বিব্রত হতে হয়েছে দুজনকে। কালকের ঘটনা। ইমান তার সাইডে দাঁড়িয়ে গেঞ্জি খুলে ফেলেছে পাল্টাবে বলে, তখনই বাতাসের জন্য দু’রুমের পার্টিশন সরে যায়৷ পর্দার অবান্তর উড়াউড়ির জন্য। আর আজকে পর্দা এক জায়গায় স্থির। রুমে এখনো ছেলেটার গায়ের গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে৷ মিরা বুক ফুলিয়ে শ্বাস নিল। এরপর ওয়াশরুমে শাওয়ার নিতে চলে যায়৷ ফ্রেস হয়ে এসে সে নিচে নেমে যায়। দোতলায় মন টিকছে না তার। এরচেয়ে আন্টিকে ডিনার তৈরিতে সাহায্যে করা যাক৷ উনি নিশ্চয়ই পুরা বাসা ক্লিন করে ফেলেছেন। স্বল্প দিনের পরিচয়ে মিরা বুঝে গেছে উনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বাতিক আছে। সবকিছু সবসময় ক্লিন এন্ড নিড চাই৷ এধরণের মানুষ গুলোর ভারী কষ্ট৷
কিচেনে যেতেই হাসনাহেনার দেখা মিলল। উনি মিরাকে দেখে বলে, “ওইবার জ্বর আসলে তো ইমান তোমাকে কফি খাইয়েছিল। এখন কফি খাবে? গরম কফি খেলে ভালো লাগবে৷”
— আন্টি, এখন কফি খেলে ঘুম হবে না৷”
–” তাও ঠিক। সেদিনের মতো ভাত খেতে চেও না। আজ ইমান নেই বাসায়৷ তোমার জন্য এতোরাতে শপে যাওয়া সম্ভব হবে না। ও তো সেদিন ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গিয়েছিল।”
একথাটা আন্টি আগেও একবার বলেছেন৷ তবুও আজকে দ্বিতীয়বার শোনার পর মিরার লজ্জা লাগলো৷
সে পাশ ফিরে যেতে ধরলে আন্টি তাকে ডাকল৷ মিরা কিচেনের ভেতর ঢুকলে উনি স্যুপের বাটি ধরিয়ে দিয়ে বলে, ” স্যুপ খাও। দশটার দিকে ডিনার করবে৷ আর চুল শুকাও নি কেন?”
— আসলে… আমি হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে চুল শুকাই না। আম্মু মানা করে। ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে যাবে৷”
হাসনাহেনা বলে উঠে, ” ঠাণ্ডা লাগলে কী করবে? তোমাদের জেনারেশন নিয়ে আমি হতাশ৷ কারো কথা শুনতে চাও না। মুরুব্বিদের কথাও শুনো না৷”
মিরা বুঝল আন্টির নিউ জেনারেশনের উপর বেজায় ক্ষোভ। নিশ্চয়ই এই ক্ষোভের উৎপত্তি তার পুত্রদের জন্য। তার গুনধর ছেলেরাই কারো কথা শুনে না৷ মর্জি মতো চলে। বিশেষ করে বড়জন!
হলরুমে বসে সে স্যুপ খাচ্ছে। তখন সাদ নিজের রুম থেকে বের হয়ে ফ্রিজ খুলে চকলেট বের করল। দুটো বিশাল বড় কিটক্যাট এনে সোফায় মিরার পাশে বসল৷ কিটক্যাট একটা নিজে নিল, আরেকটা মিরাকে দিল৷ মিরা ফ্রিজ খোলার সময় লক্ষ্য ফ্রিজের পুরা এক তাক ভর্তি চকলেট৷ এ বাসায় কোন বাচ্চা নাই। কার জন্য এতো এতো চকলেট?
সাদের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ হওয়ায় সে সরাসরি প্রশ্ন করে, ” এতো চকলেট কেন এনেছো?”
সাদ চকলেটে কামড় বসিয়ে বলে, ” আমি আনিনি। ভাই আজকে সকালে আনিয়েছে। শুধু চকলেট না। আইসক্রিম, প্রেস্ট্রি, চিপস, ডোনাট আরোও কিছু স্ন্যাকস। ভেবেছিলাম বাসায় ও আজ ছোটখাটো পার্টি দিচ্ছে৷ পরে দেখলাম ব্রাদার শহরের বাইরে যাচ্ছে। মেবি তোমার জন্য এনেছে৷
মিরা সবে চকলেটের প্যাকেট খুলেছে। সাদের কথায় সে হা হয়ে যায়। ইমান এনেছে চকলেট তাও তার জন্য! বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। এমন সময় মিরার ম্যাসেঞ্জারে নোটিফিকেশন আসে৷ ইরার নক দিয়েছে৷ ইরার সঙ্গে দু’দিন কথা হয়নি তার। স্ক্রিনে ইরার আইডি ভেসে উঠে। সাদের চোখ এড়ালো না তা। সে বলে, “হু ইজ সি?”
–” আমার ছোট বোন। ”
–” মেহজাবিন ইরা নাম?”
— “ফেসবুক আইডি। ওর নাম আসলে ইরা জামান৷”
মিরা ফোন হাতে নিয়ে এক্সকিউজ মি বলে উঠে যায়। সাদের মাথায় আইডির নামটা পেরেক দিয়ে বাধাই করার মত ঢুকে গেল৷ প্রোফাইল পিকচারে লাল রঙের জামা পরা ছবি৷ সে ফোন বের করে ওই আইডি সার্চ করে। সঙ্গে সঙ্গে আইডিটা ভেসে উঠে। আইডেন্টিটিতে দেওয়া,লিভস ইন বাংলাদেশ৷ স্টাডিজ এট লিটল ফ্লাওয়ার হাই স্কুল। প্রোফাইল লক। তবে মিচুয়ালে মিরার আইডি৷ সে মিরার সঙ্গে এড নেই। ভুলে গিয়েছিল এড পাঠাতে৷ আসলে এদেশে ফেসবুক নিয়ে এতো হাইপ নেই। অবসরটা কাটাতে তারা ফেসবুকে কিছু সময় স্পেন্ড করে৷
ইরার সঙ্গে সে ম্যাসেঞ্জারে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে৷ কত বোঝানোর চেষ্টা করল এক্সাম দেওয়ার জন্য কিন্তু ওর এক কথা৷ প্রিপারেশন ভালো না৷ সে এক্সাম দিবে না। মিরা হাল ছেড়ে দিল। কিছুক্ষণ টুকটাক কথা বলে সে ফোন টেবিলে রাখতেই ফোনটা বিকট শব্দে বেজে উঠল। স্ক্রিনে ইমান খান লেখা ভাসছে। ইনকামিং কল। কিন্তু ইমানের নাম্বার তো “ভাইরাস” নামে সেইভ ছিল?পরবর্তীতে মন পড়ল ওটা বাংলাদেশী নাম্বার। এটা আমেরিকান সিম থেকে কল আসছে। ট্রু-কলার অন জন্য নাম লেখা উঠেছে৷ সে ধরল না। একটানা বেজে যেতে থাকল।
মিরা বিরক্ত হয়ে ফোন রিসিভ করে কড়া গলায় বলে , ” কী চাই?”
ওপাশ থেকে কোন শব্দ ভেসে আসলো না।
মিরা আবারো বলে, ” বলুন কী চাই আপনার? কেন বিরক্ত করছেন?”
ফোনের ওপাশ থেকে এবার শোনা গেল, ” যা চাই তা দিতে পারবে না৷ আমি বিরক্ত করি?ওকে ফাইন৷ আর কোনদিন কল দিব না৷ আমার নাম্বার ব্লক লিস্টে ফেলে রাখো।”
সে ফোন কেটে দিল। মিরার ফোন রেখে কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে মৃদ্যু হাসল। মানুষের নাকি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন একটু একটু করে ম্যাচুরিটি বাড়ে৷ কিন্তু ছেলেটা এই থিউরি ভুল প্রমানিত করল। ও দিন দিন আরো ইমম্যাচুউর হচ্ছে। কোথায় যেন পড়েছে মানুষ প্রেমে পড়লে ইমম্যাচিউর হয়ে যায়৷ ইমান আবার কার প্রেমে পড়ল?
★★★
ইমানের রাগে গা কাঁপছে। তাকে এটিটিউট দেখানো হচ্ছে? তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে “কী চাই”! সাহস কত মেয়ের। এখন যদি ইমান বলে দিত, তোমাকে চাই-ই। তাহলে কি ওই মেয়ে নিজেকে সপে দিতে পারবে? নিশ্চয়ই পারবে না। তাহলে এতো দাপট দেখিয়ে কোন সাহসে বলে কী চাই।মনটাই তেতো হয়ে গেছে৷ তিক্ততায় ভরে উঠেছে ভেতরটা৷ একদম করলার মতো তিতা লাগছে। সে ওয়েটার ডাকিয়ে একদম স্ট্রং কফি অর্ডার দিল। বার বার বলে দিল তিতা যেন বেশি হয়৷ বিষে বিষ ক্ষয় হলে, আজ ইমান তিতায় তিতা ক্ষয় করবে৷ ওয়েটার কফি দিয়ে গেল। গরম কফি মুখে দিতেই তার মন চাইল ধুক করে সবটা ফেলে দিক৷ কিন্তু সে কফি খেল। এতো তিতা কফি সে জীবনেও খায়নি। নো সুগার, নো মিল্ক। ওলনি তিতা!
কফি শেষ করে সে লবিতে আসল। সে কিছুক্ষণ কাটিয়ে রুফটপে চলে গেল৷ কেমন ছটফট লাগছে। হুট করে মনে পড়ল, সোনালী আপু বলেছে সুপ্তি বেগমের নাকি শরীর খারাপ৷ সে কী ভেবে যেন সুপ্তি বেগমকে কল দিল। আমেরিকা আসার পর কথা হয়নি তাদের৷ আজই প্রথম ফোনে কথা বলবে। খুব উদ্ভট লাগে৷ অবশ্য সুপ্তি বেগমের প্রতি তার কোন রাগ নেই। বরং ওনাকে অসহায় লাগে এখন৷ আগে ভাবত উনিও ওনার স্বামীর মতো৷ কিন্তু রিসেন্টলি এ ধারনা বদলে গেছে৷
দুবার কল হতেই সুপ্তি বেগম ফোন রিসিভ করলেন৷
ইমান বলে, “কেমন আছেন?”
–” আছি বাবা আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো? মিরা কি করছে?”
–” আমি ভালো আছি। কাজের জন্য নিউইয়র্কের বাইরে এসেছি৷ আপনি অসুস্থ এজন্য ফোন দিলাম। হুট করে কেন সিক হলেন? দুশ্চিন্তায়? দুই মেয়ের জন্য চিন্তা হয়?”
–” তোমাকে এগুলো কে বলেছে?”
–” কাউকে বলার লাগবে কেন? আমি তো বাচ্চা না যে বুঝব না। আপনি চিন্তা নিবেন না একদম । একদা আপনাকে মা বলে ডেকেছি। আমি মা শব্দটার মর্যাদা দিতে জানি। আমি আছি আপনার পাশে।”
সুপ্তি বেগমের গলা ধরে এলো বোধহয়। উনি বলে উঠে, ” তোমার জন্য অনেক দোয়া বাবা। তুমি কল দিয়ে খোঁজ দিয়েছো এটাই অনেক। মিরাকে ভালো রাখ। এটা ঠিকভাবে করলে আমার আর তোমার কাছে কিছু চাওয়ার নাই।”
–” আপনি ডাক্তার দেখিয়েছেন?”
উনি অপ্রতিভ গলায় বলে, “নাহ। সামান্য অসুস্থতা। সেরে যাবে৷”
–” কালকেই ডাক্তার দেখাবেন প্লিজ৷”
–” মিরার জন্য একটা জব খুজে দিতে পারবে?ও শুধু শুধু সময় নষ্ট করুক এটা আমি চাই না। পড়াশুনা শুরু করতে নাকি আরো মাস খানেক সময় লাগবে। এই সেসনে এডমিট হতে পারবে না?”
— না। নেক্সট সেমিস্টারে ভর্তি হতে হবে। মাঝামাঝিতে ভর্তি হওয়া ঝামেলা৷”
–” আচ্ছা, বাবা। তুমি কাজ কর৷ রাখি৷”
ইমান ফোন রাখার আগে বলে, ” আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে কোন ম্যাসেজ যায়নি? একটু চেক করবেন। আর কোন সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন৷”
★★★
ইরা চুপচাপ বসে আছে নিজের বিছানায়। ফোনের ওয়াইফাই অন থাকায় কুটুস করে নোটিফিকেশনের আওয়াজ আসল। সে ফোন হাতে নিয়ে দেখে “আবরার সাদ” নামের একটা আইডি থেকে রিকুয়েষ্ট এসেছে। ইরার বদ অভ্যাস হলো কেউ রিকুয়েষ্ট দিলে সেই আইডিতে গিয়ে স্পাই করা। সে ক্লিক করে প্রোফাইলে ঢুকে। ছেলে নিউইয়র্কে থাকে। বিদেশি এক ভার্সিটিতে পড়ে যার নাম প্রথম শুনল সে। ইরার বিশ্বাস হলো না৷ লুইচ্ছা ছেলেগুলো এসব আজগুবি দিয়ে রাখে। আসলে দেখা যাবে এই ছেলে গুলিস্তানে গামছা বেচে৷ সে রিকুয়েষ্ট এক্সসেপ্ট না করে ফোন রেখে দিল৷
চলবে৷