ফিরে আসা পর্ব-৩৭

0
503

#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================

❝ ফিরে_আসা ❞
———————-

লেখিকা- Umma Hurayra Jahan

পর্ব-৩৭

সন্ধ্যায় মেহেঘ বেগম,মহিমা আর ফাতেমা জান্নাত বেগমের বাসায় আসলো।যেহেতু বাসা পাশাপাশি তাই আসতে বেশি সময় লাগে না।

মেহেঘ- আস সালামু আলাইকুম ভাবি।
কেমন আছেন?

জান্নাত- ওয়া আলাইকুমুস সালাম বোন ।আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।তোমরা কেমন আছো??

মেহেঘ- আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

সবাই ড্রয়িং রুমে এসে বসলো

ফাতেমা আর মহিমাও জান্নাত বেগমের সাথে সালাম বিনিময় করলো আর কুশলাদি জিঙ্গেস করলো।

জান্নাত- মাহিন আর ওর বাবা এলো না কেন?

মেহেঘ- ভাবি আপনি তো জানেন মাহিন কোথাও যায় না।আর ওর বাবা অফিসে ।তাই আসতে পারে নি।
ইমন আর ভাইজান কোথায়?

জান্নাত- ইমন একটু বাইরে গেছে ।আর ওর বাবা অফিসে।

মেহেঘ- ও আচ্ছা।তা আমাদের নতুন বউ কোথায়?ওকে একটু ডাকুন।

ফাতেমা – হেন্সি কোথায় আন্টি??

জান্নাত- দাড়াও ওকে আমি ডেকে নিয়ে আসি।

জান্নাত বেগম হেন্সিকে ওর রুমে ডাকতে গেলো।

জান্নাত- মা হেন্সি ওরা এসে গেছে।চলো।

হেন্সি- ফাতেমারা এসে গেছে??চলুন মা তাড়াতাড়ি চলুন।কত দিন ধরে ফাতুকে দেখি না।

এই বলে জান্নাত বেগম হেন্সিকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে গেলো।

হেন্সি এদিক ওদিক না দেখে ফাতেমাকে দেখে সোজা গিয়ে ফাতেমাকে জড়িয়ে ধরলো।

হেন্সি- ফাতু আমার কলিজা বান্ধবি তুই কেমন আছিস??কত দিন পর তোকে দেখলাম।

ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আরে বোকা মেয়ে ।আগে ছাড় আমাকে।এখানে তো বড়রা আছে ।ওরা কি ভাববে বল তো ।হিহিহি

হেন্সি ফাতেমাকে ছেড়ে দিলো।

হেন্সি- আমি দু:খিত।আপনারা কেউ কিছু মনে করবেন না।আসলে অনেক দিন পড় ফাতুর সাথে দেখা হয়েছে তো তাই আরকি ওকে দেখে ঠিক থাকতে পারলাম না।
হেন্সি একটু লজ্জা পেলো।

ওদিকে জান্নাত বেগম,মেহেঘ বেগম আর মহিমা দুই বান্ধবির কান্ড দেখে মিটিমিটি হাসছে।

মেহেঘ- না মা কোন সমস্যা নেই।এমন বান্ধবি পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।দোয়া করি তোমাদের বন্ধুত্ব আল্লাহ যেন সারা জীবন আটুট রাখে।

হেন্সি সবার খোজ খবর নিলো।আর সবার সাথে কিছুক্ষন আলাপ করলো।

হেন্সি- আচ্ছা আপনারা যদি কিছু মনে না করেন তাহলে ফাতুকে আমার সাথে আমার ঘরে নিয়ে যাই?????

মেহেঘ- হ্যা অবশ্যই।এতো দিন পর দুই বান্ধবির দেখা হয়েছে।নিশ্চই অনেক কথা জমে আছে তোমাদের।তাই যাও দুজনে গিয়ে আলাপ করো।

হেন্সি- জাযাকিল্লাহু খইরান আন্টি।

এই বলে হেন্সি ফাতেমাকে নিজের ঘরে নিয়ে গেলো।ঘরে গিয়ে দুজন একসাথে বিছানায় বসলো।

ফাতেমা – তোর ছেলেমানুষিটা এখনো গেলো না হেন্সি।হিহিহি

হেন্সি- কি করবো বল তোকে দেখে যে আর তর সইলো না।তাই তো তোকে জড়িয়ে ধরলাম।হিহিহি
তোর সাথে বলার জন্য অনেক কথা জমে আছে।

ফাতেমা – হুম সব শুনবো।বল কি কথা?

হেন্সি- আগে তো তোকে বড় করে একটা ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।কিন্তু বন্ধুত্বে তো No Sorry,No Thanks
তাই ধন্যবাদটা দিলাম না।হিহিহি।
তোর উছিলায় আমি এতো ভালো একটা পরিবার পেয়েছি ।এতো ভালো একজনকে জীবন সাথী হিসেবে পেয়েছি।তুই যদি না সন্ধান দিতি তাহলে হয়তো এমন পরিবার পেতাম না আমি।সবি আল্লাহর লীলা খেলা।

ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ।সব কিছু আল্লাহর ইচ্ছা।যদি ইচ্ছা নেক হয় তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তা পুরন করেন।কারন আল্লাহ কাউকে নিরাশ করেন না।

হেন্সি—হুম ঠিক বলেছিস।জানিস ফাতু উনি আমাকে কতটা ভালোবাসে কতোটা খেয়াল রাখে আমার?? একটা মানুষ কি করে এতো ভালো হতে পারে? বাবা মাও খুব ভালোবাসে আমায় ।মানে আমার শ্বশুড় শ্বাশুড়ি।আর জানিস উনি আমাকে তাহাজ্জতের সময় সাথে নিয়ে একসাথে নামায পড়ে। তারপর আমাকে ফজরের নামায পড়তে বলে নিজে মসজিদে যায়।জানিস মসজিদে যাওয়ার সময় আমাকে প্রতিদিন কপালে চুমু দিয়ে যায়।হিহিহি।একসাথে বসে কুরআন পড়ি দুজনে।আমি তো বেশি পাড়ি না সেটা তো তুই জানিস।যদি ভুল হয় উনি নিজ হাতে ভুলটা শুধরে দেন উনি।ভুল হলে রাগ করে না।আর একি প্লেটে দুজনে খাবার খাই মাঝে মাঝে।অনেক খেয়াল রাখে আমার।এই কয়দিনে মানুষটাকে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি।আর জানিস উনি আমাকে ভালোবেসে নুসু বলে ডাকে।হিহিহি

ফাতেমা শুধু তাকিয়ে আছে হেন্সির দিকে ।আর শুধু হেন্সির কথা গুলো শুনছে।কিচ্ছু বলতে পারছে না ফাতেমা।

হেন্সি- জানিস বিয়ের দিন রাতে গিফ্ট আনতে ভুলে গেছিলেন বলে পরের দিন রাতে আমার জন্য গিফ্ট এনেছে।দাড়া দেখাচ্ছি গিফ্ট গুলো।
এই বলে হেন্সি ইমনের দেওয়া গিফ্টগুলো বের করে আনলো।

হেন্সি- এই দেখ একটা কুরআন শরিফ,একটা নতুন জায়নামাজ,আর একটা আতরের শিশি,তসবি,আর এই পাঁচটা ইসলামিক বই ।এগুলো হয়তো টাকার দিক দিয়ে দামি না কিন্তু এগুলো আমার জীবনের সেরা গিফ্ট।এমন একটা জীবনই তো আমি চেয়ে ছিলাম।

ফাতেম চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।হেন্সির কথা শুনে ফাতেমার বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে।কিন্তু হেন্সির সুখ দেখেও খুব ভালো লাগছে ফাতেমার।

হেন্সি- কিরে ফাতু তুই কাঁদছিস কেন??কিরে কি হলো তোর??

ফাতেমা – না রে কিছু হয়নি।তোর খুশি দেখে আনন্দে চোখে পানি চলে এসেছে।

হেন্সি- আমি তো তোকে সব বললমাম।এবার তুই বল মাহিন ভাই তোকে কতটা ভালোবাসে???।আর বিয়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত কি দিয়েছে???

ফাতেমা – উনিও আমাকে ভালোবাসবে একদিন।আর বিয়ের পর থেকে প্রতিদিনি তো উনার কাছ থেকে একটা না একটা গিফ্ট পাই আমি।[ ফাতেমা মাহিনের দেওয়া খারাপ ব্যবহার গুলোকেই গিফ্ট ভাবে] কিন্তু হেন্সিকে সেটা বলে নি।

হেন্সি- ভালোবাসবে মানে????কি বলছিস?? এখন ভালোবাসে না???

ফাতেমা – বাসে তো ভালো।আর আরো বেশি বাসবে ভালো একদিন।

হেন্সি- আমি তো তোর কথা কিছুই বুঝতে পারছি না।বুঝিয়ে বল তো।

ফাতেমা – তোকে এতো কিছু বুঝতে হবে না।তুই সুখে আছিস এতেই আমি খুশি।দোয়া করি সারা জীবন যাতে তোরা এভাবে হেসে খেলে জীবন কাটাতে পারিস।

আচ্ছা চল নিচে যাই।বড়রা কি না কি ভাববে।
হেন্সি- আচ্ছা চল।
হেন্সি গিফ্টগুলো গুছিয়ে ফাতেমাকে নিয়ে নিচে গেলো।

নিচে সবাই অনেকক্ষন কথা বললো।নাস্তা করে ফাতেমারা বাসায় চলে গেলো।

বাসায় পৌছতেই এশার আযান দিয়ে দিলো।
মাহিন বাসায় নেই।ফাতেমা নিজের রুমে এসে ওযূ করে নামাযে দাড়ালো।নামায শেষে মোনাজাতে ফাতেমা হেন্সির খুশির জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলো।
ফাতেমা – হে আল্লাহ ,হে মাবুদ আমার বান্ধবিটাকে তুমি সারা জীবন এভাবেই সুখি রেখো।ওকে তুমি দ্বীনের পথে কবুল করে নাও।হে মাবুদ আমিও তো হেন্সির মতোই এমন একটা জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলাম।আমিও তো এমন একটি জান্নাতি পরিবারের আশায় ছিলাম।তাহলে আমাকে কেনো এতো ধৈর্য্যর পরিক্ষা দিতে হচ্ছে?এই বলে ফাতেমা কান্নায় ভেঙে পড়লো।হে মাবুদ শুনেছি তুমি যাকে বেশি পছন্দ করো তাকে তুমি বেশি পরিক্ষা করো।তাহলে আমি কি তোমার প্রিয় হতে পেরেছি???যদি প্রিয় হয়ে থাকি তাহলে তুমি আমার দোয়া কবুল করো মাবুদ কবুল করো।তুমি উনাকে হেদায়েত দান করো হেদায়েত দান করো।আর হে আমি ধৈর্য্যর আরো পরিক্ষা দিতে রাজি আছি।

রাত ১০ টা বেজে গেলো খাবারের সময় হয়ে গেছে ।কিন্তু মাহিনের আসার নাম নেই।

মেহেঘ- কি রে মা ফাতেমা মাহিন কোথায় ?এখনো এলো না কেন??

ফাতেমা – আমি তো জানি না মা।একটা ফোন করে দেখো তো উনি এখনো কেন আসছেন না।

মেহেঘ- আচ্ছা ঠিক আছে।
মেহেঘ বেগম মাহিনকে ফোন দিলো।

মাহিন- হ্যালো মা „বলো।

মেহেঘ- কিরে মাহিন তুই কোথায়??এখনো বাড়ি আসিস নি কেন??খাওয়ার সময় হয়ে গেছে।সবাই তো তোর জন্য অপেক্ষা করছে।তাড়াতাড়ি আয়।

মাহিন- সরি মা ।আমার আসতে দেরি হবে ।তোমরা খেয়ে নাও।আমি এখন রাখছি।
এই বলে মাহিন ফোনটা কেটে দিলো।

মেহেঘ- হ্যা…..হ্য..হ্যালো। যা ফোনটা কেটে দিলো।

ফাতেমা – -উনি কি বলেছে মা??

মেহেঘ —ওর নাকি আসতে দেরি হবে।আমাদেরকে খেয়ে নিতে বলেছে।

ফাতেমা – ঠিক আছে মা ।তাহলে তোমরা সবাই খেয়ে নাও ।আমি উনার জন্য অপেক্ষা করছি।উনি আসলে তারপর উনার সাথেই খাবো আমি।

মেহেঘ- কিন্তু ওর তো আসতে অনেক দেরি হবে।তুইও খেয়ে নে

ফাতেমা – না মা কোন সমস্যা নেই।তোমরা খেয়ে নাও।

মেহেঘ- আচ্ছা তুই যা ভালো বুঝিস তাই কর মা।

ফাতেমা বাদে সবাই রাতের খাবার খেয়ে নিলো। ফাতেমা মাহিনের জন্য না খেয়ে বসে রইলো।

সবাই খেয়ে ঘুমিয়ে গেছে।কিন্তু এতো রাত হয়ে গেলো ফাতেমা এখনো সজাগ।
ফাতেমা একটু পর পর ঘড়ির দিকে তাকায়।সময় যাচ্ছে কিন্তু মাহিনের আসার নাম নেই।ফাতেমা ডাইনিং রুমে বসে আছে খাবর নিয়ে ।রাত প্রায় সাড়ে ১২ টা বাজে ।ফাতেমার খুব ঘুম পাচ্ছে।আর খুব ক্ষিদেও পেয়েছে।ফাতেমার চোখটা একটু লেগে আসলো।তাই ডাইনিং টেবিলে গালে হাত দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে ফাতেমা।রাত. ১ টা বাজে।কলিংবেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙলো ফাতেমার।

ফাতেমা ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখে ১টা বাজে।

ফাতেমা – হে আল্লাহ ১টা বেজে গেছে ।মনে হয় উনি এসেছেন।

ফাতেমা দরজা খুলে দিলো।মাহিনকে দেখে ফাতেমা সালাম দিলো।

মাহিন ফাতেমার সাথে কথা না বলে হন হন করে নিজের ঘরে চলে গেলো।
ফাতেমা দরজা বন্ধ করে মাহিনের পিছু পিছু ঘরে গেলো।

ফাতেমা – এতো দেরি করলেন যে??কোন সমস্যা হয়েছিলো কি??

মাহির এতোক্ষন মিমির সাথে ছিলো।মিমি ফাতেমার বিরুদ্ধে নানা রকম কান পড়া দিয়ে দিয়েছে মাহিনকে।তাই মাহিন ফাতেমার উপর রেগে আছে।

ফাতেমা – কি হলো কিছু বলছেন না যে।আচ্ছা এসেই যখন পড়েছেন ফ্রেশ হয়ে খেতে আসুন।আমি এতোক্ষন আপনার জন্য না খেয়ে বসে আছি।আর এতো রাত পর্যন্ত না খেয়ে থাকা ভালো না।অসুখ হয়ে যেতে পারে।

মাহিন- এই মেয়ে এই কানের কাছে ঘেন ঘেন করছো কেন???তোমাকে বলেছি আমার জন্য না খেয়ে আদর্শ বউ সেজে বসে থাকতে।এটা কি তুমি সিনেমা পেয়েছো????যে আমি রাত করে বাড়ি আসবো আর তুমি আমার জন্য না খেয়ে বসে থাকবে।আর আমি তোমার সাথে বসে খাবো।??

ফাতেমা – না না আপনি ভুল ভাবছেন।আমি জীবনে সিনেমা খুব কম দেখেছি।তাই সিনেমাতে কি হয় তা আমি জানি না।আমি তো আপনি খান নি বলে না খেয়ে বসে আছি।আর কিছু না।

মাহিন- আমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি।

ফাতেমা – কখন খেলেন??আর এতোক্ষন কার সাথে ছিলেন???

মাহিন- এর কৈফত কি তোমাকে দিতে হবে??

ফাতেমা – না না কৈফত কেন দিবেন??স্ত্রী হিবেসে তো আমার জানার অধিকার আছে।তাই জানতে চাইছি।আর কিছু না।

মাহিন- এতো জানার শখ তোমার???আচ্ছা বলছি।কিন্তু বলার পর সেটা সহ্য করতে পারবে তো???
রাগি রাগি ভাব নিয়ে কথাগুলো বললো মাহিন।

শুনতে চাও ,শুনতে চাও তুমি আমি কার সাথে ছিলাম???

ফাতেমা – আপনি এভাবে বলছেন কেন??আর আপনি কার সাথেই বা ছিলেন যে আমি শুনলে সেটা সহ্য করতে পারবো না??
খুব ভয় পেয়ে ফাতেমা কথাগুলো বললো।ফাতেমার হার্টবিট বেড়ে গেলো।

মাহিন- তাহলে শুনো আমি কার সাথে ছিলাম।আজ আর কোন লুকোচুরি নয় ।আজ সব ক্লিয়ার করে দিবো আমি।আমি আমার প্রেমিকা মিমির সাথে ছিলাম।এবার বুঝতে পেরেছো তুমি?আর ওকেই আমি আমার জীবনের থেকে বেশি ভালোবাসি।আর তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে আমি ওকে বিয়ে করবো।
চিৎকার করে কথাগুলো বললো মাহিন।

এই কথাগুলো শুনে ফাতেমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।ফাতেমা খাড়া থেকে নিচে বসে পড়লো।ফাতেমার দুনিয়া এক মুহুর্তে উলটপালট হয়ে গেলো।চোখে মুখে অদ্ভুত ছাপ পড়ে গেলো ফাতেমার।

মাহিন- কি হলো মিস ফাতেমা কথাটা শুনে শক খেলে বুঝি।???
হাহাহ
ভিলেনের মতো হাসছে মাহিন।
আমি মিমিকে ভালোবাসি।আর ও তোমার মতো গাইয়্যা ভুত বা কালো বোরকার চাচি না।ও তোমার থেকে হাজার গুন স্মার্ট আর মর্ডান।

ফাতেমা নিচেই বসে মাহিনের দিকে চেয়ে আছে।এটা কি শুনলো ফাতেমা??

মাহিন—I want divorce from you.Do you get it dam.????

ফাতেমা উঠে দাড়ালো।
ফাতেমা – এটা আপনি কি বলছেন??আ.আ..আপনি অন্য কাউকে ভালোবাসেন??

মাহিন- হ্যা মিস ফাতেমা হ্যা।I love mimi।she is my life.I can’t live without her.

ফাতেমা – কিন্তু আপনি কি জানেন পরনারীর সাথে আপনার এই সম্পর্ক সম্পুর্ন অবৈধ।আর এটা হারাম।নাউযুবিল্লাহ আসতাগফিরুল্লাহ।আপনার আর ঐ মেয়ের সম্পর্ক হারাম যা যিনার সমান।

মাহিন- একদম জ্ঞান দিতে আসবে না বলে রাখলাম।তাহলে কিন্তু আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না বলে দিলাম।

ফাতেমা – আমি তো জ্ঞান দিচ্ছি না।আপনি একটু বুঝার চেষ্টা করুন।দয়া করে আমার কথাগুলো শুনুন।প্লিজ একটু শুনুন।আপনাকে শয়তান ভুল পথে পরিচালনা করছে।আপনি শয়তানের ধোকার স্বিকার হয়েছেন।

মাহিন- শয়তানের স্বিকার তো হয়েছি তোমার মতো একটা মিচকা শয়তানকে বিয়ে করে।

ফাতেমা – আমার কথাগুলো মনযোগ দিয়ে শুনুন তাহলেই বুঝতে পারবেন যে শয়তান আপনাকে এই হারাম কাজ করতে উশকানি দিচ্ছে।
আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে বলেছেন “তোমরা অশ্লিলতার ধারে কাছেও যেও না।{আল ইসরা ১৭:৩২} আর বেগানা নারীপুরুষ যখন প্রেম নামাক হারাম কাজে লিপ্ত হয় তখন তাদের মধ্যে আশ্লিলতা চলে আসে।সেটা হোক কথার মাধ্যমে বা অন্যান্য কর্মকান্ড দ্বারা।
আর রাসূল সা: বলেছেন “যেখানে দুজন বেগানা নারী পুরুষ নির্জনে একত্রিত হয় তখন সেখানে ৩য় ব্যক্তি হয় শয়তান[সহিহ তিরমিযি ১১৭১]
যখন কোন বেগানা নারী পুরুষ নিরবে নির্জনে একত্রিত হয় হোক সেটা মেসেজ বা ফোনে আলাপ বা দেখা করার সময় তখন তাদের মাঝখানে শয়তান থাকে।আর শয়তান তখন তাদের অজান্তেই খারাপ কাজ করাতে বাধ্য করে।আর এটা সম্পুর্ন শয়তানের ধোকা।

তাহলে এবার আপরি বলুন আপনি কি শয়তানের ধোকার স্বিকার হোন নি??

মাহিন- আমি কিছু শুনতে চাই না।আমি মিমিকে ভালোবাসি আর ওকেই আমি বিয়ে করবো।আর আমি তোমাকে যত তাড়াতাড়ি পারি ডিভোর্স দিয়ে দিবো।

ফাতেমা – আল্লাহর রস্তে আপনি শান্ত হোন।আপনি একটু বুঝার চেষ্টা করুন।

মাহিন- আর একটা কথাও তুমি আমার সাথে বলবে না বলে দিলাম।

এই বলে মাহিন হাত মুখ ধোয়ে এসে শুয়ে পড়লো লাইট অফ করে।
বেচারি ফাতেমা ওখানেই দাড়িয়ে আছে।ফাতেমার আর খাওয়া হলো না আজ।
চোখের ঘুমও উধাও হয়ে গেলো ফাতেমার।এখন আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ডাকার পথ নেই ফাতেমার।ফাতেমা ওযু করে তাহাজ্জতের নামাযে দাড়িয়ে গেলো

চলবে ইনশাআল্লাহ…………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here