#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================
❝ ফিরে_আসা ❞
———————-
লেখক- Umma Hurayra Jahan
পর্ব- ৪৪
হঠাৎ একটা জিনিসের উপর চোখ পড়লো মাহিনের ।মাহিন একটা কাগজ দেখতে পেলো।মাহিন কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলো।কাগজটার মধ্যে একটা দোয়া লেখা ছিলো।সেই দোয়াটা যেটা ফাতেমা মাহিনের জন্য লিখে এনেছিলো।যে দুয়াটা বাসর রাতে স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে পড়তে হয়।মাহিন কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলো দোয়াটা।মাহিন বুঝতে পেরেছে এটা ফাতেমার হাতের লেখা।লেখাগুলো গোটা গোটা করে সুন্দর করে লেখা।ফাতেমার লেখাগুলোও ফাতেমার মতই সুন্দর।মাহিন কাগজটা যত্ন করে রেখে দিলো নিজের কাছে।কারন যেদিন নিজেকে ফাতেমার যোগ্য করে ফাতেমাকে ফিরিয়ে আনতে পারবে আর তাদের নতুন জীবন শুরু করবে সেদিন মাহিন ফাতেমার মাথায় হাত রেখে এই দোয়াটা পড়বে।
মাহিন বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।কিন্তু আজ তার চোখে ঘুম নেই।কারন মিমি আজ যেটা তার সাথে করলো এটা সে কোনদিন কল্পনাও করতে পারে নি।মাহিন মিমিকে ভালোবেসেছিলো।কিন্তু আজ মিমির আসল রূপ দেখে তার মনে মিমির জন্য এক ফোটা ভালোবাসাও বেঁচে রইলো না।
মাহিন এটাও ভাবছে ফাতেমাকেও তো সে এভাবেই কষ্ট দিয়েছিলো।এই ভেবে মাহিনের চোখে আজ ঘুম নেই।ঘুম যেন বিলিন হয়ে গেছে অজানা রাজ্যে।
ওদিকে বেচারি ফাতেমাও এ বাড়ি থেকে যাওয়ার পর একদিনো ভালো করে ঘুমায় নি।সারাক্ষন আল্লাহর কাছে হাত পেতে বসে থাকে মাহিনের হেদায়েত কামনায়।আর চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বেচারির বেহাল দশা।মেয়ের এমন কষ্ট খাদিজা বেগমের আর সহ্য হয় না।তিনিও ফাতেমার সাথে কাঁদে।
আর রফিক সাহেব তো মাহিনের প্রতি এমন রেগে আছে তা বলার মতো না।কারন মাহিনের কারনে ফাতেমার লেখাপড়াটাও ঠিক মতো হচ্ছে না।মেয়ের কষ্ট উনার আর সহ্য হয় না।বার বার শুধু নিজেকেই দোষারূপ করেন তিনি।
পরদিন সকালবেলা মাহিন খুব তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠেছে অন্য দিনের তুলনায়।মাহিন খাওয়া দাওয়া শেষ করে আস্তে আস্তে মহিমার রুমে গেলো।মহিমা চুল আচড়াচ্ছিলো।
মাহিনকে দেখতে পেয়ে মহিমা বললো“ কিরে ভাইয়া তুই আমার রুমে??ব্যাপার কি??কোন দিন তো আমার রুমে আসিস না ।তাহলে আজ হঠাৎ আমার রুমে ব্যাপার কি?
মাহিন– কেন রে মহিমা তোর রুমে কি আমি আসতে পারি না??
মহিমা- হ্যা আসতে পারিস কিন্তু সচারচার আসিস না তো তাই আরকি।
মাহিন- আমি তোর কাছে একটা দরকারে এসেছি।
মহিমা- ও তাই বল। দরকার ছাড়া তো তুই কিছুই বুঝিস না।
মাহিন- একটু চুপ কর না।আসলে যেটার জন্য এসেছিলাম সেটা হলো…তোর কাছে কি তোর ভাবির নাম্বার আছে??
মহিমা – হুম আছে।কিন্তু কেন???
মাহিন- না মানে ইয়ে…..
মহিমা- কি ইয়ে ইয়ে করছিস??
মাহিন- না মানে ওর নাম্বারটা আমার কাছে নেই।তুই একটু নাম্বারটা দে না।আমি ওর কাছে ফোন করে একটু কথা বলে মাফ চাইবো।নিজেকে পাল্টানো পর্যন্ত ওর সামনে যাবো না কিন্তু কথা তো বলতে পারি।খুব ইচ্ছা করছে কথা বলতে ।কতদিন ওর সাথে কথা বলি না।
মহিমা –বাহ্ বাহ্ বাহ্।একজন আদর্শ স্বামী তো তুই!!যার কাছে নিজের বউ এর নাম্বারটা পর্যন্ত নেই।বাহ্ বাহ্ বাহ্।তোকে তো নোবেল দেওয়া উচিত।তুই দুনিয়ার প্রথম পুরুষ যার বিয়ের এতোদিন হয়ে গেলো কিন্তু তার বউয়ের নাম্বার নেই।বাহ্ বাহ্ বাহ্।
মাহিন- এসব কথা রেখে নাম্বারটা একটু দে না।
মহিন- হাহাহাহা।
Impossible।তোকে কিছুতেই ভাবির নাম্বার দেবো না।এমন কি কেউ তোকে ভাবির নাম্বার দিবে না।এবার বুঝ মজা কেমন লাগে।
মাহিনের সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেলো যেদিন ফাতেমা বলেছিলো যে তার নাম্বারের জন্য মাহিনকে আফসোস করতে হবে।কিন্তু কেউ মাহিনকে ফাতেমার নাম্বার দিবে না।
মাহিন- প্লিজ মহিমা তুই আমার ছোট বোন আমি তোর হাতে ধরি প্লিজ নাম্বারটা দে না।
মহিমা – না দেবো না।এমনকি মা বাবা কেউ তোকে ভাবির নাম্বার দিবে না।কারন তোকে তো একটু কষ্ট ভোগ করতেই হবে।কম কষ্ট তো তুই ভাবিকে দিস নি।so এখন একটু শাস্তি ভোগ কর।দেখ কেমন লাগে।বিচ্ছেদের কষ্ট কেমন এবার তুই হারে হারে টের পাবি।
মাহিন- এটা কিন্তু তুই ভালো করলি না।নাম্বারটা দে বলছি।
মহিমা – দাড়া বাবাকে ডাক দিচ্ছি।বাবা তোর খবর নিবে।
মাহিন- বাবাকে ডাকিস না ।আমি চলে যাচ্ছি।তুই না দে মা ঠিকি দিবে।
কিন্তু মাহিন মায়ের কাছে গিয়ে নাম্বার চাওয়ায় মেহেঘ বেগম কতগুলো ঝাড়ি দিলো মাহিনকে।তিনিও মাহিনকে ফাতেমার নাম্বার দেন নি।
মাহিন নিজের রুমে চলে গেলো।কিভাবে নাম্বারটা পাবে ভেবে পাচ্ছে না।আর আজ সত্যি খুব আফসোস হচ্ছে মাহিনের।মাহিনের সেই দিনের সেই বড় বড় কথাগুলোও আজ হার মানলো ।
সেদির কথা ভেবে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে তার।খুব কষ্ট হচ্ছে তার।হবেই বা না কেন??মাহিন তো কষ্ট পাওয়ার মতই কাজ করেছে।
ওদিকে ফাতেমার বাড়িতে ফাতেমা সারাদিন উদাস হয়ে বসে দিন কাটায়।নামায কালাম ছাড়া আর আল্লাহকে ডাকা ছাড়া আর কোন কাজ নেই তার।এভাবে উদাস হয়ে থাকতে থাকতে মাহিনের কথা মনে মনে করে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে ফাতেমা।হঠাৎ একটা চিন্তা এলো ফাতেমার মাথায়।তাই ফাতেমা মায়ের সাথে সে বিষয়ে কথা বলতে গেলো।
ফাতেমা সালাম দিয়ে তার মায়ের রুমে গেলো।
খাদিজা বেগম সালামের জবাব দিলেন।
খাদিজা – ফাতেমা মা আয়।
ফাতেমা – মা তোমার সাথে একটা কথা বলতে এসেছিলাম।কথাটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপুর্ন মনে হয়েছে তাই প্রথমে সেটা তোমার সাথেই বলতে এলাম।
খাদিজা– কি কথা রে মা??
ফাতেমা – মা দেখো ভাইয়ার যথেষ্ট বয়স হয়েছে।এবার তো ভাইয়ার বিয়ে করানো উচিত।কারন ছেলে মেয়েদেরকে তাড়াতাড়ি বিয়ে করানো উচিত।
খাদিজা – কিন্তু তোর ভাইয়ার তো এখনো তেমন বয়স হয়নি।মাত্র ২৫ বছর বয়স।এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করানো তো ঠিক হবে না।আগে ও প্রতিষ্ঠিত হোক।আর তাছাড়া তোর এখন মন ভালো নেই।তোর সাথে তো অন্যায় হয়েছে।
ফাতেমা – তুমি ভুল বলেছো মা।ইসলামে ছেলে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে করানোর নির্দেশ দেওয়া আছে।যেখানে আল্লাহ তায়ালা রিযিক প্রদান করার দায়িত্ব নিজে নিয়ে নেন কোন বান্দার বিয়ের পরে সেখানে প্রতিষ্ঠত হওয়ার কথা আসে কোথা থেকে।
জানো কুরআনে কি বলা আছে??বলা আছে“তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন তাদের বিয়ে দাও এবং দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরকেও ।তারা যদি নিঃস্বও থাকে তবে আল্লাহ নিজে তাদেরকে ধনী বানিয়ে দিবেন””–সুরা নুর ।আয়াত ৩২।
আর প্রত্যেক বাবা মায়ের উচিত ২টি দিকে খুব দায়িত্ববান হওয়া।প্রথমত সন্তান লালন পালনে সঠিক দায়িত্ব পালন করা আর বিয়ের উপযুক্ত বয়স হলে বিয়ে করিয়ে দেওয়া।আর মা আরেকটা বিষয় কি জানো??
খাদিজা- কি??
ফাতেমা – বিয়ের বয়স হওয়ার পর ছেলেমেয়ে যত ধরনের অবৈধ সম্পর্ক ,যেনা ব্যাবিচার করে তাহলে তার সম্পুর্ন দায়ভার বাবা মায়ের হবে।তারা গুনাহগার হবে।
আর তুমি আমার এ অবস্থার কথা বলছো??যদি আল্লাহ না করুন এ অবস্থা যদি সারা জীবন থাকে তাহলে কি ভাইয়া সারা জীবন বিয়ে না করে থাকবে??
খাদিজা- তা তো বুঝলাম ।কিন্তু হাসান আর তোর বাবা কি রাজি হবে??
ফাতেমা – বাবা আর ভাইয়াকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার।আমি রাজি করাবো।
খাদিজা- তুই যা ভালো বুঝিস তাই কর ।এতে যদি তুই খুশি থাকিস তাহলে আমিও খুশি।
ফাতেমা – মা ভাইয়া তো এখন বাড়িতে আছে।আমি ভাইয়ার সাথে কথা বলে আসি।আর রাতে বাবা বাড়ি ফিরলে বাবাকেউ বলবো।
খাদিজা- ঠিক আছে।
ফাতেমা এই বলে হাসানের কাছে গেলো।ফাতেমা সালাম দিয়ে হাসানের ঘরে ঢুকলো।
হাসান- ওয়া আলাইকুমুস সালাম।আরে পুচকি তুই!এখন কি মনটা ভালো লাগছে একটু??
হাসান ঘরে বসে বই পড়ছিলো।ফাতেমাকে দেখে হাসান উঠে বসলো।
ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ ।।।একটা কথা বলতে এসেছি।ভাইয়া তোর এই পুচকি বোনটার একটা কথা রাখবি??যদি রাখিস তাহলে বলবো।
হাসান- তোর জন্য তো আমি আমার জীবনটাও দিয়ে দিতে পারি রে বোন।বল কি কথা??
ফাতেমা — তুই তো জানিস আমার মনটা এখন বেশি ভালো নেই ।বাবা মারও বয়স হচ্ছে।তাই আমাদের পরিবারে আরেকজন নতুন সদস্য দরকার।যার সাথে আমি একটু কথা বলতে পারবো।মনে সব দুঃখ শেয়ার করতে পারবো।
হাসান- তুই কি বলতে চাইছিস রে বোন আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
ফাতেমা – আরে আমার বুদ্ধু ভাই আমি তোর বিয়ের কথা বলছি ।আমার একটা ভাবি লাগবে।হিহিহি
হাসান- সেটা তো বুঝলাম।কিন্তু …
ফাতেমা – কিন্তু কি??
হাসান- তোর এই অবস্থা ।এ সময় আমি বিয়ে কি করে করবো??আর বাবা মাকে কি করে নিজের বিয়ের কথা বলবো???আমার তো লজ্জা করে।
ফাতেমা – জানি রে ভাইয়া।আমাদের সমাজে অনেক ছেলেই আছে যারা নিজের বিয়ের কথা লজ্জায় বলতে পারে না।যার কারনে বিয়ের বয়স পার হতে থাকলে কিন্তু তাদেরকে বিয়ে না করালে তারা নানা ধরনের অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।যার কারনে ফেতনা সৃষ্টি হয়।তাই বাবা মার এটা বুঝা উচিত ছেলে মেয়ে বিয়ের বয়স হলে তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া।
হাসান- তুই ঠিকি বলেছিস।কারন এমনিতেই তো শয়তান মানুষের পিছনে লেগে থাকে।যার কারনে সেই বয়সে যুবক যুবতীরা তাদের অন্তরকে আর ঠিক রাখতে পারে না।
ফাতেমা – কিন্তু তুই চিন্তা করিস না।আমি তোর বিয়ের ব্যাপারে মায়ের সাথে কথা বলেছি।মা রাজি আছে ।রাতে বাবা আসলে বাবার সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো।
হাসান কিছুটা লজ্জা পেলো বিয়ের কথা শুনে ।
ফাতেমা হাসানের এমন লজ্জা পাওয়া দেখে বললো কিরে ভাইয়া তুই বিয়ের কথা শুনে মেয়েদের মতো লজ্জা পাচ্ছিস কেন??হিহিহি
হাসান- আমি লজ্জা পেয়েছি বলেই তো তোর মুখে হাসি ফুটেছে রে পুচকি।কতদিন তোর এমন হাসিমুখ দেখি না।সব সময় তো মন খারাপ করে থাকিস ঐ মাহিনের জন্য।যে তোকে এতো কষ্ট দিয়েছে।
ফাতেমা – ভাইয়া রে কষ্টের পরেই রয়েছে শান্তি।আল্লাহ হয়তো এখন আমাকে কষ্ট দিয়ে পরিক্ষা করছেন।কিন্তু এমনো তো হতে পারে আল্লাহ আমাকে এমন সুখ দিবেন যা আমি কল্পনাও করতে পারবো না।
হাসান- তোর মতো ধৈর্য্যশীল মেয়ে হয়তো আমাদের সামাজে কমি আছে রে।
আর ধৈর্য্য হলো মুমিন ব্যাক্তিদের অন্যতম গুণ।
ফাতেমা – কি বই পড়ছিলি রে ভাইয়া??
হাসান- মহানবী সাঃ এর জীবন কাহীনি।আমারদের নবি করিম সাঃ কতই না ধৈর্যশীল ছিলেন।তাঁর তুলনা হয় না।
ফাতেমা — হুম।তিনিই তো সারা মুসলিম জাতীর আইডল।আমাদের তো সবার উচিত তাঁর আদর্শে জীবন পরিচালনা করা।
হাসান- হুম ঠিক বলেছিস।
ফাতেমা – আচ্ছা ভাইয়া আমি এখন যাই।একটু পর আজান দিয়ে দিবে।নামাযের প্রস্তুতি নিতে হবে।তুইও গোসল করে মসজিদে চলে যা।
ফাতেমা নিজের ঘরে চলে এলো।এসে ওযু গোসল করে সালাত আদায় করে নিলো।
সালাত শেষে ফাতেমা একটা জিনিস খুজছে।কিন্তু পাচ্ছে না।ফাতেমা তার ডায়েরিটা খুজছে কিন্তু খুজে পাচ্ছে না।
ফাতেমা – আমার ডায়েরিটা কোথায়??কোথায় রাখলাম??ব্যাগটা ফাতেমা তন্য তন্য করে খুজে দেখলো।কিন্তু পেলো না।
হঠাৎ ফাতেমার মনে পড়লো ডায়েরিটা হয়তো ও বাড়িতেই রয়ে গেছে।
হে আল্লাহ ডায়েরিটা তো ওবাড়িতে রয়ে গেছে।এখন আমি কিসের মধ্যে লিখবো??আমার তো আর নতুন ডায়েরি নেই।
““““““““
রাতের বেলা মাহিন নিজের রুমে আর দরকারি কাগজ খুজছিলো।
মাহিন–কাগজগুলো যে কোথায় রাখলাম??এখানে তো নেই।টেবিলের ড্রয়ারে হয়তো আছে।
এই বলে মাহিন টেবিলের ড্রয়ার খুলে কাগজ গুলো খুজছিলো।হঠাৎ একটা ডায়েরি দেখতে পেলো মাহিন।
কাগজ খুজা রেখে মাহিন ডায়েরিটা হাতে নিলো।
মাহিন- এটা তো আমার ডায়েরি না।এটা কার ডায়েরি??
ডায়েরির একপাশে ছোট করে ফাতেমার নাম লিখা ।আর সাথে লেখা cute cat।
Cute cat নামটা ফাতেমার খুব পছন্দের।তাই এটা ডায়েরির উপর লিখে রেখেছে।
মাহিন নাম দেখে বুঝতে পারলো এটা ফাতেমার ডায়েরি।মাহিন তার কাজ ফেলে ডায়েরিটা নিয়ে বসলো।যদিও কারোর ডায়েরি অনুমতি ছাড়া পড়া ঠিক না।তবুও মাহিন ডায়েরিটা পড়বে বলে মনস্থির করলো।কারন এটা তার স্ত্রীর ডায়েরি।এতে তার অধিকার আছে এটা পড়ার।
এতোদিন তো স্ত্রী হিসেবে মানেই নি।কিন্তু আজ স্বামীর অধিকার বলে মাহিন ফাতেমার ডায়েরিটা পড়বে বলছে।
ডায়েরিটা নিয়ে মাহিন টেবিলে বেশ সুন্দর করে বসলো।ডায়েরির প্রথম পাতাটা খুলতেই একটা লেখা পড়ে মাহিন চমকে গেলো।চমকে গিয়ে বুকে থুথু দিলো।
লেখাটা ছিলো““কারোর ডায়েরি বিনা অনুমতিতে ধরা ঠিক না।আর আমার ডায়েরি কেউ আমার অনুমতি ছাড়া পড়ুক এটা আমি চাই না।তাই চুপচাপ ডায়েরিটা রেখে দিন।একজন কিন্তু সব দেখছেন।”””
মাহিন- কি ডেঞ্জারাস মেয়ে রে বাবা।ডায়েরির মধ্যেই হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছে।হাহাহা
ডায়েরির মধ্যে ফাতেমার পছন্দ অপছন্দ সব কিছুই লেখা ছিলো।
ফাতেমা বেড়াতে খুব ভালোবাসতো কিন্তু কোন দিন তার বাবা মা তাকে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যায় নি কোথাও।মেঘের দেশ সাজেক যাওয়ার খুব ইচ্ছা ফাতেমার।কিন্তু কোনদিন যায় নি।এ কথাটা ডায়েরিতে লেখা ছিলো।এটা ২/০৩/২০১৮ সালের লিখাটা।
আরো অনেক জায়গার নাম লিখা ডায়েরিতে।যেখানে ফাতেমা যেতে চায়।আর সেই জায়গাগুলোর টপ লিস্টে আছে মক্কা।যেখানে ফাতেমা তার জীবন সাথীর সাথে হজ করতে যেতে চায়।
মাহিন এটা পড়ে বললো “তুমি চিন্তা করো না আমার হুর পরী।তোমাকে নিয়ে আসি আগে।তারপর দুজনে মিলে হজ করতে যাবো।
আরো অনেক কিছু লিখা ছিলো ।যেমন -ফাতেমার প্রিয় খাবার বিরিয়ানি।সে ফুচকার থেকে বিরিয়ানি বেশি ভালোবাসে।প্রিয় ফুল শাপলা আর পদ্ম।সব ফুল ভালো লাগে কিন্তু এই দুইটা বেশি ভালো লাগে।ফাতেমার প্রিয় রং সাদা ,কালো আর টুকটুকে লাল।
ময়মনসিংহের প্রিয় জায়গা হলো সেই নদীর পাড়।ফাতেমার প্রিয় আরো কতগুলো জিনিস হলো কুরআন ,ইসলামিক বই,।জু্ব্বা ,টুপি,সুন্নতি বোরকা,পর্দা করার জিনিস,আতর আর জায়নামায।ছবি আকতে ফাতেমা অনেক বেশি পছন্দ করে।তাই ছবি আকার জিনিস যেমন -রং ,ছবি আকার খাতা„তুলি ,পেন্সিল ইত্যাদি।ফাতেমা আরো একটা কথা লিখেছিলো ।সেটা হলো ফাতেমার প্রকৃতি, গাছপালা ,ফুল এসবের ছবি তুলতে খুব ভালো লাগতো।যাবে বলে ফটোগ্রাফি লাভার।ফাতেমার গিফ্ট পেতে খুব ভালো লাগতো।কিন্তু জীবনে কোন আত্মীয় স্বজন বা বান্ধবির কাছ থেকে কোন গিফ্ট পায় নি।এটাও ডায়েরিতে লিখা ছিলো।যার জন্য ফাতেমার খুব মন খারাপ হতো।ডায়েরিতে কতগুলো ছোট ছোট কবিতা লিখা ছিলো।
যেগুলো দেখে মাহিন হাসছিলো।
মাহিন বলছে ও আমার হুর পরী আমি তোমার সব ইচ্ছা পুরন করবো।আগে তুমি ফিরে আসো আমার কাছে।
মাহিন বাকি পাতা গুলো উল্টে পড়ে দেখছিলো।
হঠাৎ চোখ পড়লো কয়েকদিন আগে লেখা কথাগুলো উপর।
চলবে ইনশাআল্লাহ……