তুমি আমার স্বপ্নচারিণী পর্ব-২৭ ২৮ ২৯

0
800

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:27

অপলা নিজেকে সামলে নিয়ে সরে দাঁড়িয়ে বলল, তুমি ঠিক আছো?মাহিম এর ঘোর কাটল।কি করতে যাচ্ছিলাম আমি না না নিজেকে সামলে রাখতে হবে।বারবার কোথায় হারিয়ে যাও?অপলার কথায় বাস্তবে ফিরলো মাহিম।তেমন কিছু না ভাবছি এত সাজের কারণ কি?অপলা খুব লজ্জা পেলো।মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।যেনো সে কোনো অপরাধ করেছে। আরে লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু হয়নি। চলো বসি।অপলা কিছু বললো না।ওরা পার্কের নরম ঘাসের উপর বসলো।

মাহিম অপলার দিকে একটু পর পর তাকাচ্ছে।ওর যেনো দেখাই শেষ হচ্ছে না।আর অপলা এখনো মাথা নিচু করে বসে আছে।কিছু বলছো না কেনো?অপলা চুপ করে আছে। ও কি বলবে মনে মনে গুছিয়ে নিচ্ছে।

– তুমিতো বলেছিলে তোমার কি যেনো important কথা আছে।
– hmmm
– কি কথা?
– খুব তারা বুঝি তোমার?
– উহু,তবে জানতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে।
– hmm
– কি hmm?
– আমরা রাজশাহী যাবো।
– hmm(ভালো করে না শুনে)।
– আমরা রাজশাহী যাবো।
– আচ্ছা(বলে থেমে গিয়ে বলল) কীইইহহহহ?কবে যাচ্ছ?
– আমার এক্সামের পর।
– মানে আরো এক/দেড় মাস পর?
– hmm.
– ঠিক আছে ততদিনে আমি সব গুছিয়ে ফেলবো।
– কেনো?
– বারে তুমি আমাদের বাড়ি যাচ্ছো আর আমি যাবো না?আমার একটা দ্বায়িত্ব আছে না?
– আচ্ছা তাই?
– হ্যা তাই।
– আমিতো বলিনি তোমাদের বাড়ি যাবো!!
– বলনিতো কি হইছে ।আমিতো জানি।
– উহু জানোনা।
– জানি।আংকেল আব্বুকে কথা দিয়েছে তোমার এক্সামের পর যাবে আমাদের বাড়ি।
– হ্যা,দিয়েছে।তবে আমরা শুধু সে জন্যই যাচ্ছিনা।
– তাহলে?
– মা খুব অসুস্থ।ডক্টর বলেছে weather change করতে।সেজন্যে বাবা বলল,রাজশাহী যাবে।তোমার বাবার কথাও রাখা হলো weather change ও হলো।
– আংকেল একদম ঠিক কথা বলেছে।
– তোমরা যেদিন যাবে আমি তার আগেই চলে যাবো।
– গিয়ে কি করবে?
– কি করবো মানে?
– ঘুরতে নিয়ে যাবে?
– তুমি বললে অবশ্যই নিয়ে যাবো ।
– আর যদি না বলি তাহলে নিয়ে যাবেনা?
– তোমাকে জোর করার অধিকার কি আমার আছে?
– যদি বলি নেই..
– (মন খারাপ করে)তাইতো আমার ইচ্ছেতে তোমাকে কোথাও নিয়ে যেতে পারবনা।জোর করার তো প্রশ্নই উঠে না।
– আর যদি বলি অধিকার আছে!!
– (উল্লাসিত হয়ে)তাহলে শুধু ঘুরতে যাওয়া না গোটা আমিটাই তোমার হয়ে যাবো।এক্ষুনি তোমাকে নিয়ে হারিয়ে যাবো যেদিকে দুচোখ যায়……
– তো যাওনা হারিয়ে। আমারও খুব ইচ্ছে করে বহুদূর অজানায় হারিয়ে যাই।
– একবার সেই অধিকার দিয়ে দেখই না কতদূরে হারিয়ে যাবো।
– (অপলা লজ্জা পাচ্ছে।অজান্তেই মনের কথাগুলো মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো।কথা ঘুরাতে বলল)আগে আমার এক্সাম শেষ হোক পড়ে ভাববো অধিকার দেই কি না?
– (আশাহত হলেও পুরোপুরি আশা ছাড়লো না)ঠিক আছে। আমাদের তো কথা হবেই।মাঝেমাঝে তো দেখাও হবে?
– কথা হবে মাঝে মাঝে। তবে দেখা হবে না।
– (প্রচুর মন খারাপ হচ্ছে।এতদিন দেখতে পারবোনা আমার স্বপ্নচারিণীকে)আমাদের দেখা হবে না?
– হবেতো।
– (আনন্দিত হয়ে)কবে হবে?
– আমার এক্সামের পর।
– (নিজেকে সামলে)তুমি যা বল।আমি অপেক্ষা করবো।আর রোজ ফোন করবো।
– রোজ???
– hmm, তোমার প্রিপারেশন কেমন হচ্ছে?এক্সাম কেমন হচ্ছে?জানতে হবেনা?
– কেনো?
– না হলে আমার টেনশন হবে।
-অপলা হাসলো।
-(মাহিম অপলক তাকিয়ে আছে।)তবে আজই আমদের শেষ দেখা।এই দেড় মাস তোমাকে দেখতে পারবোনা?
-না পারবেনা।আর এখন আমাকে যেতে হবে।
-এখনই যাবে?কতদিন দেখবনা তোমাকে।আজ দেখতে দেও।

অপলা কিছু বলল না।ওর খুব লজ্জা লাগছে।আর মাহিম অপলক তাকিয়ে আছে।যেনো শত জন্মের তৃষিত নয়ন তার তৃষ্ণা মেটাতে ব্যস্ত।
চলবে……..

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:28

অপলার আজ এক্সাম শেষ হবে।প্র্যাক্টিক্যাল চলছে এখন।আজই শেষ।এর মাঝে মাহিমের সাথে রোজই অল্প বিস্তর কথা হয়েছে কিন্তু দেখা হয়নি।ওই দেখা করেনি।মাহিম বহুবার দেখা করতে চেয়েছে।এর জন্য ওর খুব আফসোসও হয়েছে।ওর মনও তো চাইতো মাহিমকে দেখতে।কিন্তু ও ওকে সামলেছে।ভালোবাসার গভীরতা বুঝতে হলেও মাঝে মাঝে দুরত্ব রাখতে হয়।এতে ভালোবাসা শুদ্ধ হয়।

আজ ওর স্বপ্নচারিণী এক্সাম শেষ হবে।ওরা তো রাজশাহী যাচ্ছেই।এবার আবার খুব কাছ থেকে দেখতে পারবো।এতদিন আড়াল থেকে দেখেছি।স্বপ্নচারিণীতো জানেও না।জানলেতো রাগ করতো।আবার না দেখেও থাকতে পারছিলামও না।তাইতো লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেছি।ওর খুব চনমনে লাগছে।আবার স্বপ্নচারিণীর কাছাকাছি থাকতে পারবে।ওর যে কি আনন্দ হচ্ছে। তা ওই জানে।সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে দ্রুত।যেদিন ওর স্বপ্নচারিণীরা যাবে তার আগের দিনই ও চলে যাবে ।

আজ সারাদিনে মাহিম একবারও কল করেনি।এক্সাম শেষ করে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বসে আছে তবুও ফোন করছেনা।আর অন্যদিন তো বাসায় ডুকার আগেই কল করতে থাকে।আজ কি হলো?আমি কি কল করবো?কি জানি কি কাজ নিয়ে ব্যস্ত।খুব খারাপ লাগছে ও তো এমন করে না। আমিই কল করি।কল কেটে যাবে এমন সময় রিসিভ করলো।

– হ্যা,বলো।
– তুমি কি ব্যস্ত?
– না তো ।
– ওহ!
– এই তোমার না এক্সাম তুমি কল করছো কেমনে?
– কয়টা বাজে?
– (মাহিম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে শকড এতক্ষণ আগে এক্সাম শেষ হলো আর আমার হুশ নেই)sorry sorry sorry আমার একদমই খেয়াল ছিলনা sorry. তোমার এক্সাম কেমন হলো?
– ভালো।তা মনে থাকবে কেনো?কি এমন কাজে ব্যস্ত শুনি?
– আসলে প্যাকিং করছিলাম।
– কেনো?
– বারে রাজশাহী যেতে হবে না?
– তাই বলে এখন? আমরাতো যাবো আরও দুদিন পর।
– তাইতো প্যাকিং করছি।তোমরা যাওয়ার আগের দিন যাবো আমি।
– আগে যাবে কেনো?আমাদের সাথেই চলো।
– উহু তাতো হবেনা।আমাকে আগেই যেতে হবে।
– বুঝতে পারলাম।
– কি?
– নিশ্চয়ই কেউ ঐখানে অপেক্ষা করছে?
– উহু তোমার কথায় একটু ভুল আছে।
– আচ্ছা তার মনে আমি ঠিক বলেছি শুধু একটু ভুল আছে।
– hmm
– তো কি ভুল আছে শুনি।
– অপেক্ষা করছে না করবে।
– মানে?
– মানে আমি আগে গিয়ে আমার স্বপ্নচারিণীর জন্য অপেক্ষা করবো ।
– বুঝলাম।কিন্তু স্বপ্নচারিণী কেনো বলো তা কিন্তু এখনো বলনি।
– বলবো আগে আসো রাজশাহীতে।তখন বলবো।
– ঠিক আছে অপেক্ষায় রইলাম।
– অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়।
– হয়েছে হয়েছে,রাখছি।
– সারাক্ষণ রাখি রাখি করো কেনো?
– তো কি বলবো?
– যা খুশি বলবা।সারাক্ষণ কথা বলতে থাকবা।
– হ্যা আমারতো আর কাজ নেই সারাদিন কথা বলবো।
– এখনতো ফ্রী এক্সাম শেষ।তাহলে?
– কে বলছে ফ্রী?
– তো এখন কি করবে?
– তোমাদের ঐখান থেকে এসে ভার্সিটি এক্সাম প্রিপারেশন নিবো।
– আচ্ছা ভালো ডিসিশন।
– hmm রাখছি।
– ঠিক আছে।
– bye
– bye

মাহিম বেরিয়ে পড়লো তার চিরচেনা বাড়ির উদ্দেশ্যে।গন্তব্য তার রাজশাহী।আজ কতদিন পর মাহিম বাড়ি যাচ্ছে।সবার সাথে দেখা হবে।খুব ভালো লাগছে।তার স্বপ্নচারিণীও আসছে।সব প্রিয় মানুষদের সাথে তার জায়গায় একসাথে থাকবে।এর চেয়ে আনন্দ আর কি হয়?সব কিছু ঠিক থাকলে তার স্বপ্নচারিণীও তার সাথে সারাজীবন এইখানে থাকবে।এইবার সে তার স্বপ্নচারিণীকে তার মনের সব কিছু জানাবে।প্রিয় জায়গায় প্রিয় মানুষটাকে সব বলবে।সে এখন বুঝে তার স্বপ্নচারিণীও তাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে।তাকে নিশ্চয়ই ফিরিয়ে দিবেনা।
চলবে…..

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:29

সবার আদরের মাহিম এতদিন পর বাড়ি এসেছে।সবাই কত খুশি।ওকে নিয়েই ব্যস্ত সবাই।কিন্তু ওকি সবার মাঝে আছে?নেই তো।সে আছে তার স্বপ্নচারিণীর অপেক্ষায়।কখন আসবে কখন।এসে থেকেই বাসায় চুপ করে বসে আছে। এ যেনো কেমন একটা লাগছে সবার কাছে ।এতদিন পরে এলো অথচ কারো সাথে খুব একটা কথা বললো না।এখনো বন্ধুদের সাথে দেখা করে নি!!!সত্যিই ছেলেটা ঢাকায় গিয়ে চেঞ্জ হয়ে গেছে।

সন্ধ্যার পর মাহিমের বন্ধু রুদ্র খবর পেয়েছে মাহিম আসার।কিন্তু মাহিম এখনো দেখা করলো না একটা ফোনও করলনা।এইটা তো হতে পারে না।মাহিম অসুস্থ নয়তো?ওকে একটা ফোন করবো?না ফোন করবনা।ওর বাসায় গিয়ে ধরবো ওকে।যদি সুস্থ থাকে তবে যে কি করবো??অসুস্থ হলেও ছাড়বো না।বন্ধুদের ভুলে গেছে ঢাকায় গিয়ে!!ওর কপালে দুর্গতি আছে।

মাহিমকে পুরো সুস্থ দেখে যেনো মনে শান্তি পাচ্ছে রুদ্র।প্রিয় বন্ধুকে দেখেই রাগ গুলো হারিয়ে গেলো।তবে মাহিমের মধ্যে কিছু একটা চেঞ্জ দেখতে পাচ্ছে।কিছুটা উদাস হয়ে আছে যেনো কিছুর অপেক্ষায়।আবার খুব আনন্দিত।মুখে এক মিশ্র আভা।রুদ্র ওকে যেনো জোর করেই নিয়ে গেলো।পুরোনো আড্ডায়।মাহিম আসার খবর পেয়ে সবাই এসেছে।অনেকদিন পরে জমে উঠেছে তাদের সেই জম্পেশ আড্ডা আর মিন্টু ভাইয়ের চা।বেশ লাগছিল।যেনো সবাই আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।কিন্তু যার জন্য এত আনন্দ সে এইখানে আছে তো??সেই আড্ডাবাজ বন্ধুটি আর আড্ডাবাজ নেই।সবাই খুব করে জানতে চেয়েছে কিছু হয়েছে কিনা ।কিছুনা tired বলে এড়িয়ে গেল।আড্ডা বেশিক্ষণ জমলো না।মাহিম ঘন্টাখানিক এর মধ্যে চলে এলো।মাহিম অপলার আসার ব্যাপারে এতটাই উচ্ছাসিত যার ফলে জম্পেশ আড্ডাও তার মন ছুতে পারছেনা।

মাহিম এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলো যেটা আরও অবাক করছে সবাইকে।যে মাহিমকে বাসায় আসার জন্য ফোনের পর ফোন করে যেত তবু বাসায় আসতনা সে চলে এলো!!অহনা কিছুটা বলেছিল মাহিমের এইসব পরিবর্তনের কথা।এখনতো নিজেরাই দেখছে।

তূর্য এখন দ্রুত হাঁটতে পারে। কথাও স্পষ্ট হয়েছে।সে তার কচি কচি পায়ে হেঁটে এসে মাহিমকে জড়িয়ে ধরলো।মাহিম তুর্যকে কোলে নিয়ে বললো,বাবাইটা কেমন আছে?তূর্য আদো আদো আদুরে গলায় কিছুটা অভিমান নিয়ে বলল,তুমি এতদিন কথায় ছিলে?তুমি জানো তোমাকে ছাড়া আমার কত কষ্ট হয়েছে?একটু থেমে আবার বলা শুরু করলো না অভিমান না এইবার অভিযোগ এর উকিঝুকি হচ্ছে। জানো চাচ্চু সবাই খুব পচা।কেউ আমাকে ঘুরতে নিয়ে যায় না।তুমিও পচা।তূর্য গলা জড়িয়ে ধরে বলল,তুমি কোথায় ভেনিস হয়ে গিয়েছিলে?মাহিম তুর্যকে আদর করে গালে চুমু খেয়ে বললো,এইতো বাবাই আমি এসেগেছি।এখন থেকে তোমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবো। চাচ্চু চলনা এখন যাই।না বাবাই এখনতো রাত হয়ে গেছে আমরা কাল সকালে যাবো।তুমি কত্তো ভালো।তূর্য কোল থেকে নেমে বললো আম্মুকে বলে আসি। বলেই দৌড় দিয়ে গেটের সাথে হোচট খেয়ে পড়ল।মাহিম তুলবে তার আগেই উঠে দৌড়ে মাহিমের কাছে এসে বলল, চাচ্চু নিচু হও।মাহিম নিচু হয়ে বসলো।তূর্য মাহিমের গলা জড়িয়ে ধরে গালে চুমু খেয়ে বলল, চাচ্চু আমি এখন দৌরাতেও পারি।বলে আবার দৌড়ে চলে গেল।

কিছুক্ষণ পর মাহিমের মা মোমেনা চৌধুরী এলো।মাহিমের কাছে গিয়ে আদর করে বলল,কিছু হয়েছে তোর?মাহিম মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,নাতো আম্মু কিছু হয়নি।এসে থেকেই ঘরে বসে আছিস,আমার কাছেও গেলিনা, কারো সাথেও ঠিকভাবে কথা বলছিস না।কিছু হয়েছি কি বাবা?আমাকে বল বাবা।মা আমার কিছু হয়নি।একটু tired আছিতো তাই রেস্ট নিচ্ছি কাল থেকে সব ঠিক থাকবে ভেবোনা।এমন সময় মাহিমের ভাবী লিপি রুমে ঢুকলো।মা ছেলে কথা বলছে দেখে চলে যেতে নিল তখনই শাশুড়ির ডাকে আবার ফিরে এলো।

আসলে মা খেতে ডাকতে এসেছিলাম..আমি মাহিমের সাথে কথা বলছিলাম। তাই চলে যেতে হবে কেনো?মা আপনারা খেতে চলুন।দেখো না লিপি মাহিমের কি হয়েছে জানতে এসেছিলাম।কিন্তু কিছুই বলছেন।আমিতো তাই ভাবছি মা আমার বাচাল দেবর কি করে এত চুপচাপ হয়ে গেল।ঢাকায় গিয়ে ঢাকাই মাহিম হয়ে গেল।মাহিম খুব লজ্জা পেলো।কিছুনা বলে খেতে চলে গেলো মাহিম।লিপি শাশুড়ি হাত ধরে বলল, মা একদম চিন্তা করবেন না।আমি ওর পেটের খবর বের করেই ছাড়বো।আমার কাছে কিছু লুকাবেনা ও।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here