তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:46
বাড়ির সামনে বাস দাড়িয়ে আছে।সবাই দ্রুত এদিক সেদিক ছুটছে।রুনু ঝুনু তূর্য একসাথে দাড়িয়ে এইসব দেখছে আর লাফালাফি ঝাপাঝাপি করছে।মনে হচ্ছে পুরো ব্যাপারটা ওদের খুব আনন্দ দিচ্ছে।বড়রা যে যার মত রেডী হচ্ছে।মাহিমের বন্ধুরাও চলে এসেছে।মাহিম রিজভীর সাথে ওরাও হাতে হাতে এইটা ঐটা বাসে তুলছে।চারপাশে একটা হৈহৈ কাণ্ড।যেনো পিকনিকে যাচ্ছে সবাই মিলে।সারাদিনের জন্য যাচ্ছে তাই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত লিপি।বাচ্চাদের খাবার,প্রয়োজনীয় জিনিস,ওর শশুর শাশুড়ির সারাদিনের ওষুধ গুছিয়ে নিয়ে রেহনুমা আহমেদ এর ঘরের দিকে ছুটছে।ওনাদেরও টাইমলি ওষুধ খেতে হবে সে খেয়ালও ওর আছে।
সবাই মোটামুটি ভাবে রেডী হয়ে বের হয়ে বাসের কাছে চলে এসেছে।শুধু লিপি,মোমেনা চৌধুরী আর রেহনুমা আহমেদ বের হননি।লিপি পুরো বাড়ির সব দরজা জানালা লাগানো হয়েছে কিনা,চুলার গ্যাস,সুইচ অফ কিনা যাবতীয় সব চেক করছে।একদম পাকা গিন্নি।তার জন্য দাড়িয়ে আছে মোমেনা চৌধুরী ও রেহনুমা আহমেদ।সব চেক করে এসে ওনাদের দেখে লিপি এইবার এই দুজনকে তাড়া দিচ্ছে বের হতে।ওনারা তাড়া খেয়ে হাসি মুখে বেরিয়ে পড়লেন।মেয়েটা আসলেই পকাগিন্নি।
গাড়িতে যে যেখানে পারছে বসছে।একরকম হইচই শুরু হয়ে গেছে।তাই জন্য এহসান চৌধুরী হাক ছাড়লেন সবাইকে চুপ করতে।সবাই উনার কথা মত থেমে গেল।তিনি বললেন বড়রা সবাই সামনে,বাচ্চারা মাঝের দিকে আর বাকি সবাই যে যার মতো পিছন দিকটায়।তাই করা হলো।পিছনে ওরা সবাই বসলো।ঠিক বসলো না দাড়িয়ে বসে গোল হয়ে আছে।লুবনা অপলা পাশাপাশি বসেছে।অপলা জানলার পাশে বসেছে।তাদের অপজিট এ মোহন ভাইয়া আর লিপি আপু।উনি সাইডে বসেছেন বাচ্চাদের জন্যে তার পাশের সিট দুটোতেই বাচ্চা তিনজন।লুবনাদের সিটের খানিক পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে মাহিম আর পাশের সিটে রিজভী বসে আছে।তারপর মাহিমের সব বন্ধুরা কেউ বসে কেউ দাড়িয়ে আছে।দেখে সত্যিই মনে হচ্ছে পিকনিকে যাচ্ছে সবাই।
বাস তার তার যাত্রা শুরু করলো।উদ্দেশ্য জীবন্ত স্বর্গ।অপলা আজ খুব একটা আড্ডায় যোগ দিচ্ছে না।কেমন যেন উদাস হয়ে আছে।ওর কেবলই মনে হচ্ছে কিছু একটা ওকে খুব টানছে।খুব আপন করে ডাকছে।কেউ যেন বহুকাল তার অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছে সেখানে।খুব আপন কাছের কেউ।ভারী অদ্ভুদ অনুভূতি।
রিজভী অনবরত কথা বলেই চলেছে।লুবনা বিভিন্ন ভাবে বুঝাতে চাইছে লিপি আপু ওদের দেখছে।কিন্তু রিজভীর তো সে খেয়াল নেই।বোকাসোকা মানুষ এত ইশারা ইঙ্গিত বুঝে না।মাহিমও কয়েকবার থামানোর চেষ্টা করছে সে তো কোনোকিছুই তোয়াক্কা করছে না।লিপি ঘুরে ভাইয়ের দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,কখন থেকে দেখছি তুই মেয়েটাকে জালাচ্ছিস,তোর সমস্যা কিরে?রিজভী আমতা আমতা করছে এখন সে কি বলবে?মাহিমের দিকে তাকিয়ে আছে।মাহিম বুঝলো গাধাটা কিছু বলতে পারবে না এইজন্যই সাবধান করেছিলাম।যাক মাহিম ওর হয়ে বলে দিলো,ভাবী লুবনাতো প্রথমবার যাচ্ছে তাই ওকে ঐখানকার সব বলছে।লিপি মাহিমের কথা বিশ্বাস করেনি তবুও রিজভীর দিকে তাকিয়ে বললো,আমি কিন্তু দেখছি একদম জ্বালাবি না ওদের বলে অন্যদিকে মুখ করে বসলো।ও যেটা ভাবছে সেটা হলে ওর অনেককিছু ফেস করতে হবে।অপলার থেকে লুবনাকে ওর সবদিক থেকে বেশিই পছন্দ।মেয়েটা মিশুকে,সংসারীও,ওর ভাইকে সামলে রাখতে পারবে।ওর দিক থেকে সমস্যা নেই তবে হাজার হোক ওর শশুরবাড়ি আত্মীয়।বাড়ির সবাই যদি স্বাভাবিকভাবে না নেয়?এদের চোখে চোখে রাখতে হবে।কোনো ভুল হতে দেয়া যাবেনা।
মাহিম অপলাকে দেখছে।অপলা সেটা বুঝতেও পারছে।কিন্তু ওর এখন কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।কোনদিকে তাকাতেও ইচ্ছে হচ্ছেনা।ওর খুব অস্থির লাগছে।ভিতরে তোলপাড় করছে।কেনো লাগছে এমন।কি আছে ঐখানে?কেনো টানছে ওকে?ওর অস্থিরতা বেড়েই চলেছে।মাহিম ওকে অন্যমনস্ক দেখে লুবনাকে ইশারায় দেখতে বললো,কি হয়েছে?লুবনা বার কয়েক ডাকার পর সাড়া দিলো।লুবনা আস্তে করে বলল ভাইয়া ডাকছে তোমাকে।অপলা কিছু না বলে মাহিমের দিকে তাকালো।খুব সহজ স্বাভাবিক সে দৃষ্টি।এই কদিনের লজ্জার ছিটেফোটাও দেখা যাচ্ছে না।মাহিম ভাবলো যাক তবে আজ তার লজ্জা কেটেছে তার সাথে কথা বলবে স্বাভাবিকভাবে।মাহিম অপলার দিকে তাকিয়ে হাসলো অপলাও হাসলো।বাসটা আড্ডা হাসি ঠাট্টা আনন্দে ভরে উঠেছে।অপলার এখন আর অস্থির লাগছে না মাহিম পাশে থাকলে যে জাগতিক সব ভুলে থাকতে পারে ও।সেখানে এই অজানা অস্থিরতা তো কিছুই না।
তুর্যের খুব ইচ্ছে করছে চাচ্চুর মত মামার মত ঐরকম দাড়িয়ে দাড়িয়ে গল্প করতে।সেতো বড় হয়ে গেছে।কিন্তু তার আম্মু কিছুতেই বুঝছেনা।কেমন করে তাকিয়ে আছে।উঠতেই পারছে না।আজতো আব্বুও আছে।আব্বুকে ভীষণ ভয় হয় ওর।না হয় ও কি এইভাবে বাচ্চাদের মত রুনু আন্নি আর ঝুনু আন্নির মাঝে বসে থাকতো?বড় হয়ে গেছে এইটা ওর চাচ্চু ছাড়া আর কেউ বুঝে না।
রেহনুমা আহমেদ বারবার চেষ্টা করছেন মেয়েকে দেখার কিন্তু তিনি যেখানে বসেছেন সেখান থেকে অপলাকে দেখা যাচ্ছে না।তার যে খুব ভয় হচ্ছে,ভেতরটা খুব অস্থির হয়ে আছে তার।হিশাম আহমেদ স্ত্রীর অস্থিরতা বুঝতে পারছেন।তিনি নিজেও অনেক বেশি অস্থির হয়ে আছেন।তিনিও যে মেয়ের বাবা তারও তো ভয় হচ্ছে।প্রচন্ড ভয় হচ্ছে।কঠিন সত্যিটা আর কতক্ষণ আড়াল করতে পারবেন তিনি জানেন না।আলতো করে স্ত্রীর হাতের উপর হাত রাখলেন।চোখের ইশারায় বুঝলেন উনি পাশে আছেন,এতদিন যেমন অপলা তার মেয়ে ছিল এখনো আছে আর সারাজীবন থাকবেও।রেহনুমা আহমেদ স্বামীর চোখের ভাষা বুঝেন।তার স্বামীর উপর ভরসা আছে।তবুও আজ মনটা তার বড্ড অস্থির হয়ে আছে।বাস তার আপন গতিতে এগিয়ে চলছে।বাস যত সামনে এগুচ্ছে ততই তার মনে হচ্ছে বড় কোনো ঝড় উঠবে।যে ঝড় সব ভেঙ্গে চুরে ধ্বংস করে দিবে।সে ঝড়ে তার তার সাজানো সংসার ধ্বংস হয়ে যাবে না তো?তার মেয়ের জীবনটাতে কোনো খারাপ প্রভাব পড়বে না তো??না এইসব আর তিনি ভাবতে পারছেন না।এইখানে আসাটাই ঠিক হয়নি।সবচেয়ে বড় ভুল এইখানে আসা।একবার এইখান থেকে ফিরে যাই আর কখনো অপলাকে নিয়ে এইদিকে তিনি আর আসবেন না।কখনো না।
চলবে………..
তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:47
ওরা প্রায় চলে এসেছে।আর কিছুক্ষণপরই বাস থামবে আর কিছুক্ষণ পরই ওরা জীবন্ত স্বর্গে পৌঁছে যাবে।অপলা একধরনের চাপা উত্তেজনা অনুভব করছে।এইতো ওরা পৌঁছে গেছে।জীবন্ত স্বর্গের গেটের সামনে বাস এসে থামলো।সবাই এক এক করে নামছে।বাসের হর্ন শুনতেই ভিতর থেকে গেট খুলে দেয়া হলো।আগে থেকেই বলা ছিলো ওরা আসবে।দারোয়ান এসেই হিশাম আহমেদকে স্যালুট করল।যার মানে তিনি হিশাম আহমেদকে ভালো করে চিনেন।মাহিম রিজভী বাকিরা বাস থেকে নেমে এলো।ওদের দারোয়ান এগিয়ে এলো।দারোয়ান লোকটা হিন্দু,সচ্ছন লোক।হাসিমুখে বলল,অনেকদিন পর দাদাবাবুগো দেখলাম,এইদিকে তো আসেনই না।রুদ্র এগিয়ে বললো,দাদা মাহিম তো এতদিন ছিল না,ও ঢাকায় ছিল তাই আসা হয় নাই।দারোয়ান হেসে বলল,ঢাকা থেকে এসেও আমাদের কথা মনে করছেন এই অনেক,চলেন সবাই ভিতরে।
ভিতরটা এত সুন্দর হবে ভাবেনি অপলা।মনে হচ্ছে আসলেই স্বর্গ।স্বর্গ হয়তো এমনই হয়।যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ তার ফাঁকে উকি দিচ্ছে বাহারি রঙের ফুলের মেলা।একপাশে হাজার হাজার প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে।ফলের গাছগুলোর ভিতর থেকে পাখির কিচিরমচির শুনা যাচ্ছে।একপাশে শানবাঁধানো পুকুর ঘাট।পুকুর পাড়ের চারপাশেও সারিসারি গাছ।আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ছোট ছোট বসার বেঞ্চ।সামনে বাংলোমত বড় বড় দোতলা বাড়ি,তার পাশে ছোট আরেকটা বাড়ি সম্ভবত অফিস এইটা।বড় বাড়িটায় হয়তো থাকার ব্যবস্থা।এইখানে কত মায়েরা থাকে তারা তো এক একটা স্বর্গই।মানুষ কি করে তার জান্নাতকে এইখানে ফেলে যায়?
ভিতরে ঢুকে সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে চারপাশটা দেখলেও মাহিম আর ওর বন্ধুরা খুব অবাক হল।চারপাশটা বড্ড ফাঁকা।এই সময়ে সবাই বাইরে থাকার কথা।কেউ বাগানের ঘাসে বসে গল্প করে।কেউ স্বামীর হাত ধরে হাটে,কেউবা বেঞ্চে বা পুকুর ঘাটে চুপ করে বসে থাকে।কিন্তু আজতো কাউকে দেখা যাচ্ছে না।একদম ফাঁকা চারপাশটা।তবে কি কারও কিছু হলো??কেউ খুব অসুস্থ কি?ভিতরে গিয়ে খোঁজ করতে হবে।সবাই একসাথে ভিতরে যেতে চাইলে অন্তর বাঁধা দেয়।সবাই একসাথে ভিতরে ঢুকে ভিড় করে কি লাভ?তারচেয়ে আমি আর রুদ্র ভিতরে যাই তোরা বাকিদের বাইরেটা ঘুরে দেখা।অন্তরের কথায় যুক্তি আছে তাই বিনাবাক্যে সবাই মেনে নিল।
লুবনা আর রিজভী একটা গাছের শিকড়ের উপর বসে আছে।লুবনা আসতে চায়নি রিজভীই একপ্রকার জোর করে নিয়ে এসেছে।কত কথা যে বলতে পারে এই ছেলেটা..লুবনা শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আর শুনে।লুবনা এইটা বুঝতে পেরেছে এই কদিনে এই ছেলেটার মনটা খুব পরিষ্কার।কোনো ভনিতা নেই যেনো ডাইরির খোলা পাতা।লুবনা চাইলেই সবটা পরে ফেলতে পারবে।
অপলা খুব আগ্রহ করে আশপাশের সবটা দেখছে।তার সাথে আছে রুনু ঝুনু।একটার পর একটা প্রশ্ন করছে। অপাপু এই গাছটার নাম কী?ওই গাছটায় কি ফল হয়?এই ফুল কি ছিড়া যাবে?এইখানে কি কেউ থেকে?পুকুরে কি মাছ আছে?এই জাতীয় হাজারটা প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে হাপিয়ে যাচ্ছে অপলা।তবে হটাৎই মাহিমের উপস্থিতি ওকে সস্তি দিলো।এখন মাহিম রুনু ঝুনুর সব প্রশ্নের এক এক করে জবাব দিচ্ছে।তবে যাই বলো মাহিমের ধৈর্য্য আছে।অপলা মাহিমের দিকে তাকিয়ে আপন মনে হাসলো।মাহিম ইশারায় জিজ্ঞেস করল কি?অপলা মাথা নেড়ে বুঝলো কিছু না।মাহিমও প্রতিউত্তরে হাসলো।
হিশাম আহমেদ ও রেহনুমা আহমেদ অপলার কাছাকাছিই আছেন।যেনো চোখে হারাচ্ছে।এহসান চৌধুরী ও মোমেনা চৌধুরী উনাদের থেকে একটু দাড়িয়ে দুজনে কিছু নিয়ে কথা বলছে।উনারা একবার মোহন আরেকবার মাহিমের দিকে তাকিয়ে ম্লান হাসলেন।তার ছেলে দুটো সত্যিই ভালো থাকবে।হয়তো তাদের নিয়েই কথা বলছেন।তুর্য আজ মায়ের হাত ধরে লক্ষ্মী ছেলের মতো ঘুরছে কারণ আজ আব্বুও আছে খুব বকবে দুষ্টুমি করলে।একটু দুষ্টুমি করলেও অনেক বকবে।লিপির খুব ভালো লাগছে অনেকদিন পর তার বরের সাথে সময় কাটাতে পারছে।বড্ড ব্যস্ত তার বরটা।বরকে কাছে পেয়ে বেমালুম ভুলে গেছে রিজভীকে চোখে চোখে রাখার কথা।কিন্তু তূর্য ঘাড় ঘুরিয়ে এদিক সেদিক ওর মামা আর চাচ্চুকে খুঁজছে।ওর ওদের সাথেই ঘুরার কথা।কিন্তু কাউকেই দেখছে না।তখনই ওর ছোট ছোট চোখ দুটো আটকে যায় একটা গাছের শিকড়ে।ঐতো মামা বসে আছে।পিছন থেকে মামার কাধ দেখা যাচ্ছে।আম্মু আম্মু মামা কাছে যাই?মামা কই?ঐযেএএ গাছের ঐখানে,চলো চলো।
লিপি তুর্যের হাত ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।ওর মন বলছে এইখানে লুবনাও আছে।যদি থাকে তাহলে আজই খুব শাসন করতে হবে রিজভীকে।কাছাকাছি আসতেই তূর্য গিয়ে মামা বলে রিজভীর গলা জড়িয়ে ধরলো।রিজভী কিছুটা হকচকিয়ে গেল।ও সামলে তুর্যকে পিছন থেকে সামনে এনে ওর কোলে বসালো।কি ব্যাটা দুষ্টুমি করছিস কেন?তুর্য সে কথার জবাব না লুবনার দিকে তাকিয়ে বলল আন্নি তোমরা কি লুকোচুরি খেলছে আলালে বছে।লুবনা লজ্জা পেল এইটুকু একটা ছেলে একে কি বলবে?রিজভী বললো না বাবা আমরা লুকোচুরি খেলছি না,আমরা তো….আমরাতো কি বল,রিজভীকে কথা শেষ করতে না দিয়ে লিপি বলল।লিপির শব্দ পেয়ে সামনে তাকালো রিজভী।দ্রুত দুজনই উঠে দাড়ালো।লিপি আবার জিজ্ঞেস করল,
– আমরাতো তো কি?কি করছিলি আড়ালে বসে?
– আসলে আপু…আমরা…
– কি আমতা আমতা করছিস বল কি?
– গল্প করছিলাম…
– গল্প করার জন্য এইরকম লুকিয়ে করার কি মানে?
– না মানে আসলে আপু…
– কি না আসলে??(এইবার লুবনার দিকে তাকালো।মেয়েটা লজ্জায় আতঙ্ককে মাথা নিচু করে।)লুবনা তুমিই বা কেনো আসলে?
– আসলে আপু আমি..
– কি বল?তোমার থেকে এইরকম কিছু আশা করিনি।খুব ভালো ভেবেছিলাম তোমাকে।
– (লুবনার মাথাটা আরও ঝুলে গেছে নিচের দিকে।ওর খুব কান্না পাচ্ছে)
– (লুবনার কাদো কাদো মুখের দিকে তাকিয়ে যেনো রিজভীর মনে সাহস এলো ওর জন্য লুবনাকে কষ্ট পেতে দেয়া যাবেনা)আপু ওকে কিছু বলনা।
– ঠিক আছে বলবো না কিন্তু তুই কোন সাহসে বাসায় মেহমান আসছে তাকে নিয়ে আড়ালে বসে গুজুরগুজুর করিস?এতে কি লুবনাকে কেউ ভালো বলবে?
– (লুবনা এইবার কেঁদেই ফেললো)
– আপু লুবনাকে কেউ খারাপও বলবে না।(বলেই লুবনার হাতটা শক্ত করে ধরলো)আপু আমি লুবনাকে ভালোবাসি।আমি চাই না তুমি কি ওকে ছোট করে কিছু বলো।আপু কেউ কাওকে ভালোবাসলেই কি সে খারাপ?যদি হয় তাহলে পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই খারাপ।তুমি লুবনাকে আঘাত করে আর একটাও কথা বলবে না।
– (লুবনা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে কি বলছে এসব?কেন বলছে?আমার হয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজের বোনের সাথে এমন ব্যবহার কেন করছে?)
লিপি রিজভীর দিকে তাকিয়ে আছে।তার ছোট ভাইটা আজ কত বড় হয়ে গেছে।নিজের ঠিক ভুল সব বুঝে।এতগুলো কথা শুনিয়ে দিলো আজ?সত্যিই তার ভাই অনেক বড় হয়ে গেছে।লিপির চোখ বেয়ে নিজের অজান্তেই পানি গড়িয়ে পড়ল।সে আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেল।তুর্য কোনদিকে যাবে বুঝতে না পেরে মায়ের পিছন পিছন যাচ্ছে।
চলবে……..
সকল পর্বের লিংক
https://m.facebook.com/chayabithi.11/photos/a.158674299705436/158673836372149/?type=3