লাভ রেইন পর্ব-৪৩

0
1794

#লাভ_রেইন
#তারিন_জান্নাত
পর্বসংখ্যাঃ৪৩

১০৭.

দুপুরের পর থেকে শুরু হলো অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা। বাড়িতে একের পর এক পাড়া-পড়শীর ভীড় লেগে গেলো। লাঞ্চের পর সকলে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলো।কিন্তু পাড়া-পড়শীর আগমনের সেটাও সম্ভব হলো না।জুলিয়া বিরক্ত মুখে ড্রয়িংরুমে এসে দেখলো,তার শাশুড়ি নিভু নিভু চোখে চেয়ে মহিলাদের সাথে কথা বলছেন। জুলিয়া শাশুড়ির চোখেমুখে স্পষ্ট বিরক্তির রেশ দেখতে পেলো। জুলিয়া এগিয়ে এসে বললো,

— কি ব্যাপার চাচি’আম্মারা? এই দুপুরবেলা
এখানে কি? ঘুমাতে দিবেন না?

জুলিয়া কথায় পারভীন নামের মহিলাটি হেসে বলল,

— তুমিও ঘুমাও। আমরা নতুন জামাইয়ের সাথে
দেখা করতে এসেছি। আমাদের সিলির তো ভাগ্য খুলেছে। এমন সুন্দর একটা বর পেয়েছে।

রুজিনা এবং জুলিয়া উভয়ের মেজাজ খারাপ হলো পারভীনের কথায়। পাড়ার বাকি মহিলাদেরকে পুষলিয়ে এখানে পারভীন নিয়ে এসেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কারণটাও জুলিয়ার জানা। জুলিয়া আলতো হেসে বলল,

— আপনাদের নতুন জামাই যার-তার সাথে দেখা করতে চায়না চাচি আম্মা।মনে কষ্ট নিবেন না।

জুলিয়ার কথায় মনে মনে ক্রোধান্বিত হয় পারভীন।পাশে থাকা মহিলাদর দিকে চেয়ে স্বল্প হাসি ছুঁড়ে বলল,

— রুজিনা আফা,তোমার মেয়েটা কালা হয়েও একটা গতি হয়ে গেলো। আমার এতো সুন্দর মেয়েটা কি হবে কে জানে।

পারভীনের কথায় উপস্থিত সকলেই বিরক্ত হয়। তার কথাকে পাত্তা না দিয়ে অন্য একজন রোকসানা নামের মহিলা বলে উঠলেন,

— আফা, আপনাদের জামাই তো এ দেশীয় নয় মনে হয়।কোথায় থাকেন? কি করেন,মানে পেশা কী?

রুজিনা থমথম দৃষ্টি জুলিয়ার দিকে চাইলেন,শাশুড়ির দৃষ্টির অর্থ চটপট বুঝে ফেললো জুলিয়া।ক্ষীণ হেসে বলল,

— ভাইয়ার মা বাংলাদেশী চাচিমা। আর ভাইয়া পেশায় একজন পাইলট।

রোকসানা খুশী হলেন,কিন্তু অবাক হননি।আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলো বিদেশি ছেলেটার আকর্ষনীয় চেহারার সাথে শক্তপোক্ত পেশাদারি গম্ভীর্যভাব দেখে। যাক, সিলিভিয়ার সাথে আগে অনেক ঝগড়া বিবেধ থাকলেও এখন তার অস্তিত্ব বিলুপ্ত প্রায়। রোকসানা হেসে বলল,

— জুলিয়া, সিলিভিয়া কোথায় দেখছি না যে?
ডাকো ওকে,কথাবার্তা একটু বলি।

জুলিয়া স্মিত হেসে বলল,

— সিলি তো নেই চাচিমা। বরের সাথে চলে গিয়েছে তার আমেরিকা।ওর পড়াশোনাটাও তো শেষ হয়নি।

এবার সকলে তব্দা খেয়ে গেলো। আকস্মিক ভাবে পরিবেশটা একটু পিনপতন নীরবতা পালন করলো।অতঃপর সেই নীরবতাকে ঠেলেঠুলে পাঠিয়ে তারা সুর সুর করে বেড়িয়ে গেলো।তারা যেতেই রুজিনা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন এমন এক নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,

— আজব মহিলামহল’ যেখানে সেখানে দলবেঁধে উপস্থিত হয় মানুষকে বিরক্ত করতে।

এমনিতেই মেয়েকে বিদায় দিতে প্রচণ্ড কেঁদেছেন তিনি আজ।তার উপর মেয়েকে দুইভাবে বিদায় দিতে হয়েছে,এক.স্বামীর সাথে,দুই.পড়াশোনার উদ্দেশ্যে। এখনো যে শেষ হয়নি একমাত্র মেয়ের পড়াশোনা,কতদিন লাগে কে’জানে। ভাবতেই মনটা আরো বিষন্নতায় ডুবে গেলো।

১০৮.

তেহভীন কি’সের জন্য এতো তাড়াহুড়ো করছিলো সেটা সিলিভিয়ার বোধগম্য হলো এখন। এতো চমকপ্রদ একটা জয়গায় এনে দাঁড় করানোর জন্য এতো পায়তারা। চারপাশে বুলেটপ্রুফ কাঁচের ঘেরোয়া একটি কক্ষ। সন্ধ্যার ভিউটা অত্যন্ত নজরকাঁড়া। সিলিভিয়া কাঁচ ভেদ করে বাইরের দৃশ্য থেকে চোখ সরিয়ে তেহভীনের দিকে তাকালো।আপাততে সে গম্ভীর চোখে মোবাইল দেখছে।কি দেখছে সেই জানে,তবে কাল রাত থেকে হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করছে মনে হলো সিলিভিয়ার। একটা চাপা উৎকন্ঠিত ভাব লক্ষ করলো সে। সিলিভিয়া পূনরায় বাইরে চোখ রাখলো।মৃদু অন্ধকারে ডুবে আছে অচেনা শহরটি। বিলাশবহুল এবং ব্যয়বহুল একটা হোটেল স্যুইটে উঠেছে তারা। যে হোটেলে প্রবেশের পর সিলিভিয়ার মনে হয়েছিলো সে হোটেলে নয় বরং শিল্পির শিল্পকর্মে প্রবেশ করেছে। এতো অভিজাত্য,নিপুণ কায়দায় সাজানো নয় হাজার বর্গফুটের বিশালা এই স্যুইটটি।সিলিভিয়ার এখন মনে হচ্ছে পৃথিবীর বুকে একটি স্বর্গীয় কক্ষে অবস্থান করছে। এতোটা খরচ কেন করলো তেহভীন সেটাই বুঝতে পারছেনা সিলিভিয়া। কোন প্রয়োজনও ছিলো না। এমন না যে সে কোন নামকরা তারকা’মডেল,বা শিল্পপতি। সাধারণ একজন বাঙালি মেয়ে সে,তার তো এতো চাহিদা নেই। এতেটা বিলাসিতা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
মিনিট দুয়েক সময় অতিক্রমের পর তেহভীন সিলিভিয়ার পাশে এসে দাঁড়ালো,ডানহাতে সিলিভিয়ার চিবুক ধরে মুখটা নিজের দিকে ফেরালো। সিলিভিয়া হঠাৎ চমকে উঠলো। তেহভীন কে দেখে ঈষৎ হাসলো। তেহভীন মৃদু স্বরে বলল,

— তুমি আমাকে নিয়ে কি ভাবছো?

সিলিভিয়া করুণ মুখে তাকালো।তেহভীনের হাসি চলে আসলো সিলিভিয়ার মুখ দেখে। তার মনের কথাটা ঝট করে পাকড়াও করার কারণেই এই দশা। তাতে তার কি দোষ,সৃষ্টিকর্তা তার মধ্যে এই গুনটা দিয়েছে হয়তো প্রিয়তমার মনের আনাচে-কানাচে কি চলছে সেটা সে যেনো বুঝতে পারে।ভেরী ইমপ্রেসিভ!

সিলিভিয়া সময় নিয়ে অতঃপর জিজ্ঞেস করলো,

— আমরা ক্যালিফোর্নিয়াতে গেলে কি হতো তেহভীন? শুধু শুধু ‘লাস ভেগাসে’ এসেছি।আর তুমি এতো খরচ কে…

তেহভীন সিলিভিয়াকে থামিয়ে দিতে মুখে হাত রাখলো, এরপর বলল,

— সিলভার, আমি যতদিন বেঁচে থাকবো,চেষ্টা রাখবো পৃথিবীর সবটুকু হ্যাপিনেস তোমার ভাগে রাখতে।

সিলিভিয়া তেহভীনের বুক বরাবর হাত রেখে বলল,

— পৃথিবীর সবটুকু সুখ আমার চাইনা তেহভীন।
আমার তুমি হলেই যথেষ্ট। আই নিড ইয়্যু।

সিলিভিয়ার কথায় তেহভীনের মুখের রঙটা নিভে গেলো। তার ড্যাড কাল যে থ্রেট দিয়েছে তাকে ফিরে যাওয়ার জন্য তার একবিন্দু পরিমাণ খবরও সে সিলিভিয়াকে জানতে দেয়নি।এখনও দিবে না। তেহভীন হাসলো ছোট করে। বলল,

— আ’ম অলওয়েজ ইউর।

সিলিভিয়ার কি হলো জানেনা,তেহভীন ওই বাক্য শুনেই চোখের কোণ ভিজে এলো। তেহভীনকে সেটা দেখতে দিলো না,বিচক্ষণ তেহভীন তার দৃষ্টিতে কোনকিছুই আড়াল হয়না।সিলিভিয়ার চোখের কোণে স্পষ্ট টিয়ার্স দেখে তার ভালো লাগলো না। পেশিবহুল হাতজোড় তুলে সিলিভিয়ার দু’গাল চেপে ধরে খানিকটা কাছে টানলো তেহভীন।সিলিভিয়া তখন তেহভীনের চোখে চোখ রাখলো। তেহভীন চোখ না সরিয়ে সুগভীর চোখে চেয়ে থাকলো সিলিভিয়ার মুখ,চোখ,নাক,ঠোঁট। এ পর্যায়ে এসে সিলিভিয়া মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো। তেহভীন এভাবে তাকিয়ে আছে কেন বুঝলো না। বার কয়েক এদিক-ওদিক তাকালো। তারপরও তেহভীন চোখ সরালো না। সিলিভিয়া পড়লো একটা সমস্যায়,শরীর মিঁইয়ে যাচ্ছে তার এমন চাহনিতে। এভাবে থাকলো কিছুটা মুহূর্ত তারা। হঠাৎ সিলিভিয়াকে অবাক করে দিয়ে রাজ্যের ঘুম নেমে এলো সিলিভিয়ার চোখে। এই পদ্ধতিতেও ঘুম পাড়ানো যায় আজ শিখলো তেহভীনের কাছে।নাকি সে ক্লান্ত,আর তেহভীনের দৃষ্টি থেকে বাঁচতে তার অবচেতন মস্তিষ্ক ঘুমটাকে আঁকড়ে ধরলো। সিলিভিয়া যখন নিভু নিভু চোখে তাকালো, তখন তেহভীন শীতল কন্ঠে বলল,

— কয়েকটা ঘন্টা ঘুমিয়ে নাও সিলভার।
টুডে এন্ড টুমরো আ’ই উইল বার্ন ইয়্যূ ফর টু নাইট’স।

সিলিভিয়া শুনলো ঠিক,প্রত্যুত্তর করতে পারলো না। ঢুলুঢুলু অবস্থায় কাঁচের সাথে শরীর ঠেকাতে যাবে,তার আগেই তেহভীন ওকে পাঁজা কোলে তুলে নিলো। আস্তেধীরে গ্রে’কালারের বেডে উপর শুইয়ে দিলো সিলিভিয়াকে। গায়ে লেপ টেনে দিলো। তেহভীন পাশে শুয়ে দৃঢ়চোখে চেয়ে থাকলো সিলিভিয়ার মুখের দিকে।

সিলিভিয়া উঠলো ঠিক পাঁচঘন্টা পর। উঠে আলসেমি ঝাড়লো। মস্তিষ্কে একটা ফুরফুরে ভাব চলে এসেছে। সারাদিনের ক্লান্তিটা নিমিষেই উধাও,পাশ ফিরে দেখলো তেহভীনও ঘুম, তার দিকে মুখ করে ফিরে শুয়েছে।সভ্য মানুষের ঘুমানোর ধরণ ও সভ্য গুছানো,এলোমেলো ভাব নেই। পাশে তার ফোনটা পড়ে রইলো। সিলিভিয়া তেহভীনের ফোনটা হাতে নিয়ে বলল,

— আমি তোমার ফোনটা নিচ্ছি তেহভীন।

তেহভীন সাথে সাথে জবাব দিলো না।একটু পর নড়েচড়ে সিলিভিয়া পাশ ঘেঁষে শুয়ে বলল,’নাও।’
সিলিভিয়া হেসে ফেললো। তেহভীনকে এ পর্যন্ত অনেকবার অনেক কথা বলেছে সে। বরাবরেই সে ঘুমের মধ্যে প্রত্যুত্তর করে।একটু সময় নেয় ঠিক,জবাবটা সে দিবেই। সিলিভিয়া ঝটপট লকটা খুলল। কখনো তেহভীনের ফোন ঘেঁটে দেখেনি সে।আজ হঠাৎ কৌতূহলী হয়ে ফোনটা দেখতে নিলো। কিন্তু ফোনের মধ্যে আহামরি কিছু পেলো না।তবে ভিন্ন ক্যাটগরির গেইমে ঠাসা ফোনটা।ফটো অপশনে ক্লিক করে দেখলো শুধু তার আর তেহভীনের কয়েকটা ছবি আর কয়েকটা ফ্যামিলি ছবি। আর বেশিরভাগ ছবি তেহভীনের এয়ারফোর্সের ইউনিফর্ম পরিহিত। সিলিভিয়া ফোনটা দেখে আগের জায়গায় রেখে দিলো। ফ্রেস হওয়ার জন্য কাপড় নিয়ে আবারও রেখে দিলো। চিন্তা করলো পুরো স্যুইটটা তেহভীন জেগে উঠার আগে পরিদর্শন করে ফেলবে।

দুটি শয়নকক্ষ, একটি সল্ট রিল্যাক্স রুম,একটি ম্যাসাজ টেবিল,একটি সুদৃশ্য জাকুজি যেখনে অনায়াসে দু’জন শাওয়ার করতে পারবে,মনোরম সুইমিংপুলসহ বারান্দা ও দুইটি গোসলখানা। সম্পূর্ণ স্যুইটের ওয়াল পেইন্ট থেকে শুরু করে ফ্লোর,বিছানা,চাদর,ডায়নিং টেবিল সব গ্রে কালারের। যারজন্য পরিপূর্ণ সৌন্দয্যের নহর বয়ে যাচ্ছে এই স্যুইটে৷ আকর্ষণীয় সরঞ্জামে অভিজাত্যের ছোঁয়া। সিলিভিয়ার মনে হলো তাদের দু’জনের জন্য এই বিশাল স্যুইটটা অনর্থক।যেখানে একটা বেডরুম তাদের জন্য এনাফ। ওই যে কথায় আছে না, শখের চেয়ে বড় কিছু এ পৃথিবীতে নেই। এতসব কিছুর মাঝে ভালোলাগা সিলিভিয়াকে অতৃপ্ত রেখেছে কেন যেনো। সিলিভিয়াকে নয়,শুধুই তার মনকে। যে চেতন,অবচেতন মন তেহভীনের সান্নিধ্য চায়ছে। সিলিভিয়া দেখলো সুইমিংপুলের পাশে একটা রুম লকড করা আছে। সেখানে যেতে হলে মাঝখানে সুইমিংপুল অতিক্রম করে যেতে। সম্পূর্ণ স্যুইট দেখা হলেও, ওই কক্ষে এখন যাওয়ার ইচ্ছে হলো না আর সিলিভিয়ার। তাই সে ফিরে গেলো পূর্বের শয়নকক্ষে। এই কক্ষে এসে দেখলো তেহভীন ডায়নিং টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে খাবারের ম্যানূ দেখছে। একজন বয়স্ক ব্রিটিশ আমেরিকান লোক এবং দু’জন সমবয়সী তরুন ‘ফুড বাকেট’থেকে সব খাবার টেবিলে সার্ভ করছে। সিলিভিয়াকে দেখে তেহভীন হাত উঁচিয়ে চলে যেতে ইশারা করলো। সিলিভিয়া প্রথমে না বুঝলেও পরে বুঝে গেলো।আর তৎক্ষনাৎ জাকুজি’র সাইডে চলে গেলো। ফ্রেস হয়ে একেবারে কক্ষে ফিরবে।
সিলিভিয়া ফ্রেস হয়ে এসে দেখলো তেহভীন তারজন্য অপেক্ষা করছে।দূরত্বে রাখা চেয়ারকে একসাথে রাখলো তেহভীন।এরপর সিলিভিয়াকে বসার জন্য আমন্ত্রণ জানালো। দু’জনে ডিনার শুরু করে ফেললো। সিলিভিয়া ঘড়িতে সময় দেখে অবাক হয়ে গেলো। বারোটা এক মিনিটি। আজকের ডিনারে এতো লেট?বিরস মুখে তেহভীনের দিকে চেয়ে বলল,

— বারোটা বেজে গেছে।আমি চেয়েছিলাম ডিনারের পর বাইরে যেতে। বাইরের ভিউটা বেশ চমৎকার। আর লাইটিংও চোখ ধাধানো।

তেহভীন তখন সবেমাত্র মাংস দিয়ে তৈরি ‘আবরিয়া রাকুর’ স্টিকটি মুখে দিচ্ছিলো। সিলিভিয়ার কথায় স্টিকটা নামিয়ে বলল,

— সিলভার,খেয়ে নাও তোমার উত্তর আধঘন্টা পর দিচ্ছি।

সিলিভিয়া থামলো না,

— আরে আধঘন্টা পর কেন,এখনি বলো।

তেহভীন জবাব দিলো না, সিলিভিয়ার দিকে চেয়ে মৃদু হাসতে হাসতে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।
ডিনারের পর মাঝখানের সময়টা টিভি দেখে কাটালো দু’জনে।সিলিভিয়া অবশ্য আর কথা বলেনি।চুপ থাকলো। তেহভীন সাইলেন্ট মোডে থাকা সিলিভিয়াকে আগাগোড়া পর্যবেক্ষণ করলো। হঠাৎ আধশোয়া থেকে উঠে তেহভীন ঝট করে সিলিভিয়াকে টেনে তুলে সামনে নিয়ে আসলো। সিলিভিয়া অবাক হয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগে তেহভীন বলে উঠলো,

— তোমার জন্য স্যাভেজ হতে চাইছি আজ।

সিলিভিয়া অবাক হলো তেহভীনের কথায়। সেদিন না তার কাছে সময় চেয়েছিলো ফিজিক্যাল এটাচডমেন্টের জন্য।তাহলে আজ এই কথার অর্থ কি? সিলিভিয়া নিজের বিমূঢ় ভাব কেটে বলল,

— তুমি না সময় চেয়েছিলে তেহভীন?

তেহভীন সিলিভিয়ার গুছিয়ে বেঁধে রাখা চুল খোলে দিয়ে এলোমেলো করে দিতে দিতে বলল,

— আমি তো সময় চেয়েছি,কিন্তু সময় আমাদের এক হওয়াটা মানছে না।আমার মনে হচ্ছে তোমাকে সম্পূর্ণ আমার না করে ছাড়লে অনেক বড় বিপদে পড়বো।

— তেহভীন? আ’ম ন..

তেহভীন সিলিভিয়ার কথা কানে তুললো না। সিলিভিয়ার হালকা উন্মুক্ত কোমড় চেপে ধরে কাছে টেনে কোলে তুলে নিলো।পা বাড়ালো হানিমুনের স্যুইটের প্রধনা ও আকর্ষনীয় ইন্সট্যান্ট বেডরুমে।যেখানে তারা দু’জনে ডুবে যাবে একে’অপরের মাদকতায়। জীবনের একত্রিশটা বছর কালে ভদ্র হয়ে থাকা তেহভীন আজ প্রিয়তমার কাছে ভীষণ উন্মাদ হয়ে যাবে। হয়ে যাবে চরম অসভ্য। সিলিভিয়াকে কতোটা ভালোবাসে সেটা আজ বুঝিয়ে দিবে সে। সিলিভিয়ার নিজেও স্তব্ধ হয়ে আছে আগাম মুহূর্তের আগমনী বার্তা পেয়ে। ভয়টা মুখশ্রীতে দৃশ্যমান না হলেও হাঁটুদ্বয় ভীষণ কাঁপছে তার। তেহভীন সিলিভিয়া কানের কাছে মুখ এনে আবচা আওয়াজে বলল,
— লাভ ইজ লাইক দ্যা ওয়াইল্ড রোজ,
এন্ড আ’ই লাভ ইউ,আ’ই লাভ, আ’ই লাভ ইউ!

(চলবে)

অল্প অল্প করে এতটুক লিখলাম।ছোট হয়েছে বলবেন না কেউ। ১৬৫০ শব্দ।কেমন হয়েছে সেটা মন্তব্য করবেন আশা করি।পেজের রিচ কমে গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here