#নতুন_তুই_আমি#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-২৬……………………………………..
গায়ে হলুদের সমস্ত অনুষ্ঠান শেষ।
সন্ধ্যার পরপরই সিয়ামদের বাসার সবাই বাসায় ফিরে যায়।
তামান্না ফ্রেস হয়ে একটু শুয়ে আছে।
সারা দিন অনেক ধকল গেছে।
আর পাশে বসে ওর জেঠি মনি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
“তামান্না??”
“হুম জেঠিমনি….”
“ঘুম পাচ্ছে মা??”
“একটু একটু…”
“খাবার নিয়ে আসি?খেয়ে ঘুমা…”
“না…খিদে নেই।তুমি মাথায় হাত রাখছো তো-তাতেই হবে।”
“আচ্ছা!তোর খাওয়ার প্রতি এতো অনীহা কেনো বল তো??শশুড় বাড়ি গিয়ে যদি এমন করিস তাহলে তো একদম শেষ….”
“হু বলেছে তোমাকে,আমি অনেক খাই…”
“হ্যাঁ।সে তো তোর ফুচকা আর চটপটি ভাত না।
এমন হলে তো শশুড় বাড়িতে থাকার পর শুটকি হয়ে যাবি তুই।নিজের খেয়াল তখন নিজেকে রাখতে হবে তোর….”
“পারবো না।তোমরা বিয়ে কেনো দিচ্ছো??না দিলে কি শশুড় বাড়িতে যাওয়া লাগতো না আমার।”
শাড়ির আঁচলে চোখ মুছল জেঠিমনি।
তামান্না বুঝতে পারলো না।
এই মানুষ টা অসম্ভব রকমের সহ্যশীল মানুষ।
বিয়ের মাত্র ছয় বছর স্বামী হারিয়ে এতটা বছর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে পাড় করে এসেছে।
নিজের কোনো মেয়ে নেই তার।
তাই দেবড়ের একমাত্র মেয়েকেই ছোটবেলা থেকে নিজের কোলেপিঠে করে মানুষ করেছে।
চোখের পানি মুছে মুঁচকি হেসে তামান্নার কপালে একটা চুমু দিলেন।
তারপর বলেন,
“বোকা মেয়ে!!বউ হলে তোকে অনেক সুন্দর লাগবে।সিয়ামের মা খুব ভালো তোকে আনাদের মতোই যত্ন করবে…..”
“নাও করতে পারে….”
“কি করে বলছিস তুই??”
“এখন যা আদর যত্ন করে বা আগে যেমন করতো সেটা তো আলাদা।কিন্তু ঘরের বউয়ের সাথে কি এমন করবে??”
“এই চুপ।তেমন কিচ্ছু হবে না।দেখিস অনেক যত্নে রাখবে তোকে…..”
আর কোনো কথা হলো না।
তামান্না জেঠির আদরে আটখানা হয়ে ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে গেল।
জেঠিমনি শরীর চাদর টেনে মেয়ের মুখের দিকে বেশখানিক সময় তাঁকিয়ে রইল।
“সেদিনকার পিচ্চি মেয়ে আজ কত বড়!!!”
চোখটা আবারও ঝাপসা হয়ে এসেছে।
!
সিয়াম সাওয়ার নিয়ে এসে দেখে তার বেডের উপর ক্যামেরা রাখা।
সিয়াম দেখল এটা রাইয়ানের ডি.এস.এল.আর।
তাহলে এখানে কেনো??রাইয়ান যা যত্ন করে জিনিসটার!
এখানে তো রাখার কথা না।
নিশ্চয় ভুলে রেখে গেছে।
সিয়াম টাওয়েল টা রেখে ক্যামেরা টা সরাতেই তার নিচে একটা কাগজ দেখতে পেল।
খুলে দেখল রাইয়ানের হাতের লেখা,
“ভাইয়া,আমি ইচ্ছা করেই তোমার রোমে ক্যামেরাটা রেখেছি।তোমার আর ভাবীর তো দেখা হয় নি আজ।আমি জানি তুমি খুব করে ভাবীকে দেখতে চাইছিলে।কিন্তু সেটা তো সম্ভব না।তাই আমি ভাবীর প্রতিটা মুহুর্তের ছবি তুলে নিয়েছি তোমার জন্য।
আমার সামনে দেখতে হবে না বলেই রেখে এসেছি।একা একা এবার মন ভরে নিজের বউকে দেখো।”
লেখাটা পড়ে হাঁসল সিয়াম।
পিচ্চি মেয়ে কতটা বুঝে!!
সত্যিই সিয়ামের মন আনচান করছিল তামান্নাকে দেখার জন্য।নিজের কোনো বন্ধুকে গায়ে হলুদে নেওয়া হয় নি তাই ছবিও দেখতে পারছিলো না।
সামনে চতুর্থ বর্ষের এক্সাম তাই সব বন্ধু একদম কাল বিয়েতে আসবে গায়ে হলুদে কেউ আসে নি।
রাইয়ান এতো সহজে কাজ টা করে দিবে ভাবতেই পারে নি সিয়াম।তা না হলে বিয়ের পর সিয়ামকে এসব পিক ক্যামেরাম্যানের কাছ থেকে দেখতে হতো।
সিয়াম দরজা টা লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল।
ক্যামেরা অন করতেই বেশ বড়সড় একটা ধাক্কা খেল।
তামান্নাকে দেখে সিয়াম পুরো স্তব্ধ।
একেক একেক টা ছবিতে একদম হলুদ পরী লাগছে তামান্নাকে।
ইশশশ সিয়ামের আফসোস হচ্ছে সরাসরি দেখতে পারে নি বলে।
যাই হোক সিয়াম মনে মনে ঠিক করিয়ে নিয়েছে-বিয়ের পর ঠিক একদম তামান্না একদম এভাবে সাজাবে।আর তারপর সে বসে বসে দেখবে।তামান্না না করলেও শোনবে না সে।
সিয়াম আরও কয়েকটা ছবি দেখল।
একের পর এক দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখ লাগে যায় একটা ছবিতে।
যেটাতে তামান্নাকে পানি দিয়ে গোসল করানোর পর ভেজা কাপড়ে দাঁড়িয়ে মুঁচকি হাঁসছে তামান্না।
সিয়ামের চোখ জ্বলে যাচ্ছে।
খুব লোভ লাগছে তামান্নার প্রতি।
ভালোবাসার আবেশ দিতে ইচ্ছা করছে।
কিন্তু এখন তো সেটা সম্ভব নয়।
তাই সিয়াম তামান্নার ছবিতেই একটা চুমু দিলো।
তারপর কিছু একটা ভেবে মুঁচকি হাঁসলো।