মন_পাড়ায়
পর্ব_৫৩
#নিলুফার_ইয়াসমিন_ঊষা
অর্ক বসে আছে বিনয়ের মা’য়ের সামনে। চা’য়ে চুমুক দিচ্ছি সে। বিনয়ের মা বলল,
“বলো না বাবা মেয়েটাই কুফা। আমাদের বাড়িতে আসার পর থেকে আমাদের পরিবার নষ্ট করেছে আর এখন তোমার পরিবার। দেখ বাবা তোমাদের সামনে ভালো সাজে কিন্তু পিছে ঠিকই উল্টাপাল্টা কথা বলে। মেয়েটাই এমন।”
বিনয়ের মা প্রায় দশ মিনিট ধরে প্রভার নামে খারাপ কথা বলেই যাচ্ছে আর অর্ক তা চুপচাপ শুনছে কিছু বলতে না। সে হঠাৎ করে বিনয়ের মা’য়ের কথা কেটে বলল,
“আন্টি একটু ফাতেমা ডাক দিবেন?”
কথাটা শুনতেই বিনয়ের মা হকচকিয়ে গেল। সে বিস্মিত সুরে বলল,
“কে…কেন বাবা?”
“একটু ডাক দিন। কতদিন দেখি না। ওর ভার্সিটি নিয়ে কথা আছে।”
বিনয়ের মা’কে অনেক অস্বস্তিতে ভুগতে দেখা গেল কিন্তু তবুও ডাকতে হলো তার ফাতেমাকে। ফাতেমা আসার পর সে ফাতেমাকে জিজ্ঞেস করল,
“কেমন আছিস ফাতেমা?”
“ভালো ভাইয়া।”
“তোর ভার্সিটি কেমন চলে?”
ফাতেমা আড়চোখে তাকায় তার মা’য়ের দিকে আবার মাথা নামিয়ে উওর দেয়,
“ভালো ভাইয়া।”
“ভালো? কিন্তু তোর ভার্সিটি থেকে তো জানতে পাই যে তুই ক্লাসই করিস না। ফার্স্ট ইয়ারে তিনদিন পড়ে আর ক্লাসই করিস নি। পরীক্ষাও দিস নি।”
সাথে সাথে বিনয়ের মা উঠে তার মেয়ের কাঁধ ধরে রাগান্বিত স্বরে বলে,
“কী! তুই পরীক্ষা দেস নি? ক্লাস করিস নি? তাইলে প্রতিদিন কই ঢ্যাঙঢ্যাঙ করে বেড়াস?”
বিনয়ের মা’য়ের নাটক দেখে অর্ক তাচ্ছিল্য হেসে চা’য়ে আবার চুমুক দিয়ে বলে,
“আন্টি আমি আপনাকে বেতন যে দিতাম তা কোথায় গেল? এখন এইটা বলবেন না যে ফাতেমা বেতন দিত কারণ আপনি নিজে বলেছেন বেতন আপনি দেন।”
বিনয়ের মা অর্কের দিকে তাকালো। তাকে বিভ্রান্ত দেখাল। অর্ক ফাতেমাকে বলল,
“তুই যেয়ে তোর প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে নে।”
ফাতেমা সাথে সাথে রুমে ঢুকে পড়ে। বিনয়ের মা ধীরে-সুস্থে বসে সোফায়। অর্ক তার দিকে পাঁচটা কাগজ এগিয়ে দেয়। বিনয়ের মা জিজ্ঞেস করে,
“এইসব কী বাবা?”
“আপনি এখন আপনার নাটক বন্ধ করতে পারেন। আমি আপনার সত্যিটা জানি। আর এগুলো হচ্ছে বিনয়ের লেখা চিঠি। যেখানে স্পষ্ট লেখা আছে যে আপনি প্রভার নামে যা বলেছেন তা সব মিথ্যা। খালা আমি আপনাকে অনেক সম্মান করতাম। এইসব আপনার থেকে আশা করি নি।আপনাকে আমি প্রভার কথা কী বলব! আপনি ফাতেমার সাথে কত কি করেছেন তাতে যদি আপনার বুক না কাঁপে তাহলে প্রভা তো পরের ঘরের মেয়ে।”
অর্ক উঠে দাঁড়িয়ে চিঠিগুলো হাতে নিলো। ফাতেমাও তার রুম থেকে একটা ব্যাগ নিয়ে বের হয়েছে। অর্ক যাওয়ার পূর্বে বলল,
“আমি ফাতেমাকে নিয়ে যাচ্ছি আমার বাসায়। সেখানে থেকে ওকে পড়াশোনা করাব আর পরে বিয়েও দিব। আর আপনি ভুলেও আর উল্টা-পাল্টা কিছু করবেন না, নাহয় আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।”
বলে অর্কে ফাতেমার দিকে তাকিয়ে বলল,
“তুই বাহিরে গাড়ির কাছে যা।”
ফাতেমা কাঁপছিলো সে মুহূর্তে। আড়চোখে একবার তার মা’য়ের দিকে তাকাল। তার অগ্নিদৃষ্টি দেখে দৌড়ে গেল বাসার বাহিরে।
পিছনে অর্ক যেতে নিলেই বিনয়ের মা বলল,
“তোমার কী মনে হয় যে তুমি আমাকে ধমক দিবে আর আমি চুপ থাকব? আমি সবাইকে এটা বলে দিব যে তোমার ও প্রভার মাঝে আগের থেকে খারাপ সম্পর্ক ছিলো এইজন্য তোমরা আমার ছেলেকে…..”
অর্ক বিনয়ের মা’য়ের কথা কেটে স্বাভাবিক গলায় বলল,
“আর আমি আপনাদের লাইফ হেল করে দিব। আপনি সে মুহূর্তের জন্য আফসোস করবেন যে মুহূর্তে আপনি এই কথাটা ভেবেছেন।”
অর্ক ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি নিয়ে চলে গেল সেখান থেকে।
.
.
ঝিনুক ভার্সিটি যেয়ে সবার পূর্বে গেল হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অফিস রুমে। সেখান থেকে গেল ৩০৭ নং রুমে। সে রুমে যেয়ে প্রফেসর রহিমকে বাহির থেকে ডাকলো। স্যার বোর্ডে অঙ্ক করাচ্ছিলো। ঝিনুকের কথা শুনে বের হলো একটু। বের হয়েই কড়া কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
“দেখছ তুমি ক্লাস করাচ্ছি তবুও বারবার ডাকছ কেন? আর তুমি ফাস্ট ইয়ারে না? এতদিন ক্লাস করছ না কেন?”
ঝিনুক কিছু বলল না। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তার দিকে। তার সামনে একটি ছবি তুলে ধরলো।
ছবিটা দেখে রঙ উড়ে গেল প্রফেসর রহিমের। সে বিস্মিত দৃষ্টিতে ছবিটার দিকে তাকিয়ে রইলো। বিস্ময়ে সে ছবিটা হাতে নিয়ে অবাক হয়ে তাকাল ঝিনুকের দিকে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“তুমি এই ছবি পেলে কীভাবে? এই ছবি তো ঝুমুরের কাছে ছিলো। তুমি ঝুমুরের সাথে পরিচিত?”
ঝিনুক দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“এখানে লোকটা আপনি?”
“তুমি অফিসে যেয়ে বসো, আমি আসছি।”
“আপনি আমাকে উওর দিন।”
“আমি ক্লাসে বলে আসছি। তুমি দাঁড়াও।”
প্রফেসর রহিম রুম থেকে সবাইকে কাজ দিয়ে ঝিনুককে নিয়ে গেল অফিস-রুমে। সেখানে একটি মেডাম কাজ করছিলো। তাকেও বের করলো কোনো এক কাজের বাহানায়। তারপর ঝিনুককে জিজ্ঞেস করল,
“তুমি ঝুমুরকে চেনো? ওর বোনের মেয়ে তুমি? নাম কী যেন? হ্যাঁ প্রভা। না, ও তো আরও বড় ছিলো। তুমি কীভাবে চেনো ঝুমুরকে? আর কেমন আছে ও? কতবছর ধরে দেখি না।”
ঝিনুক ক্রোধের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লোকটার দিকে। তার চোখে জল টলমল করছে। হাতের মুঠো বন্ধ করে রেখেছে। সে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“উনি আত্নহত্যা করেছে একুশ বছর আগেই।”
কথাটা শুনার জন্য রহিম স্যারকে অপ্রস্তুত দেখাল। সে টেবিলটা ধরে দাঁড়ালো। তার দৃষ্টি বিভ্রান্ত।
ঝিনুক আবারও বলল,
“আর আমি উনার মেয়ে।”
প্রফেসর রহিম চোখ তুলে তাকাল এবার। ঝিনুক তার চোখে জল দেখতে পেয়ে বুঝতে পারল আসলেই হয়তো তার বাবা উনি। কিন্তু লোকটা কাঁদছে কেন? যে মানুষ সে বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে তার খবর রাখে নি এমন মানুষের এই নাটকীয় কান্না দেখার বিন্দুমাত্র শখ নেই তার।
লোকটা তার মাথায় হাত রাখতে নিলেই ঝিনুক এক ঝটকায় তার হাত সরিয়ে দিলো। সিক্ত কন্ঠে বলল,
“আপনার জন্য আমার মা আত্নহত্যা করেছে আর আমি অনাথ হয়ে গেছি। সাথে পেয়েছি অবৈধ সন্তানের সিল। আপনি যদি আমার মা’কে আপনই করতেন তাহলে কেন উনাকে ভালোবাসা দেখালেন? কেন? সেদিন আপনার মেয়েকে দেখেছিলাম আপনার সাথে। খুব ভালোবাসেন ওকে না? আমার কী? তাহলে আমি কী দোষ করেছিলাম? আমাকে ফেলে আসলেন কেন? আমাদের জীবনটা এলোমেলো করে দিয়ে নিজে সুখে সংসার করছেন?”
প্রফেসর রহিম কাঁপছিলেন। সে যেয়ে বসলেন তার চেয়ারে। দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তারপর তার মানিব্যাগ হাতে নিয়ে একটা ছবি বের করে দিলেন আর বললেন,
“এইটা আমার ও সীমার বিয়ের ছবি।”
ঝিনুক ছবিটা দূর থেকে দেখেই চিনলো যে এই ছবির মেয়েটা তার মা’য়ের সাথের ছবিতেও ছিলো।
প্রফেসর রহিম আবার একটি ছবি বের করে বললেন,
“আর এইটা ঝুমুর ও অনিকের বিয়ের ছবি।”
কথাটা শুনতেই চমকে গেল ঝিনুক। অবাক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ প্রফেসর রহিমের দিকে তাকিয়ে থেকে ছবিটা হাতে নিলো। দেখলো ছবিটা আসলে তার মা ও আরেকটি ছেলের। সে জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে তাকায় প্রফেসর রহিমের দিকে।
প্রফেসর রহিম বললেন,
“তুমি ওদের ভালোবাসার অংশ মামনী। অবৈধ সন্তান বলে ওদের ভালোবাসার অপমান করো না। ওরা বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো। আর এটা ওদের বিয়ের ছবি। আমি ও অনিক অনেক ভালো বন্ধু ছিলাম। সীমাকে আমি পছন্দ করতাম এবং সীমার বান্ধবী ছিলো ঝুমুর ও শান্তা। আমার ও সীমার সম্পর্কে পর আমরা জানতে পারি ঝুমুর ও অনিকও একে একে অপরকে পছন্দ করে। আর আমরাই ওদের সম্পর্ক করতে সাহায্য করি। এরপর সীমার পরিবার আমাদের সম্পর্কের কথা জানে এবং আমাদের সম্পর্ক ভাঙতে চায়। আমাকে তারা কোনোভাবেই আপন করতো না তাই আমরা দুইবছর সবাইকে বুঝানোর পর হার মেনে পালিয়ে বিয়ে করি। আর আমাদের দেখাদেখি ঝুমুরের মনেও শখ জাগে বিয়ের। তোমার মা পাগল ছিলো একটা। সারাটাক্ষন পাগলামো করতেই থাকতো। তবে হ্যাঁ সে পাগলামিগুলো খুব মনে করেছি এতবছর।
অনিকের পরিবারে ঝ
ঝুমুরের কথা প্রায় সবাই জানতো কিন্তু ওর মা মেনে নিচ্ছিলো না ঝুমুরকে। সে শহরের শিক্ষিত কোনো মেয়েকে ঘরের মেয়ে করেই আনবেন না।
ঝুমুরের পরিবারে শুধু ওর মা জানতো অনিকের কথা। ঝুমুরের জেদের কারণেই আমাদের বিয়ের একসাপ্তাহের মধ্যে ঝুমুর ও অনিক বিয়ে করে। আর তার দশদিন পর ঝুমুরের মা’য়ের মৃত্যুর খবর পাই। কিন্তু আমরা কেউ-ই সেখানে যেতে পারি না কারণ আমার পরিবার পুলিশের কাছে রিপোর্ট করেছিলো। আমার মামা ছিলো পুলিশে তাই ভারী সমস্যা হয়। কিন্তু অনিক যায় সেদিন। কিন্তু ঝুমুরের সাথে কথা বলতে পারে না। ভালো মতো দেখাও করতে পারে নি। মানুষ ছিলো যে অনেক। আমরা কয়েকদিন ওর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি কিন্তু ঝুমুরের কোনো খবর ছিলো না। ওর মা মারা গিয়েছিল তাই বুঝতে পারছিলাম যে ও এখন কথা বলার অবস্থায় নেই। অন্যদিকে অনিকের পরিবার ওকে কলকাতা পাঠায় যেন পুলিশের এইসব জঞ্জাল থেকে বের হতে পারে।
তবে অনিকে কলকাতা যাওয়ার পূর্বে দেখা করে ঝুমুরকে সবটা জানায়।
আমরা একমাস পর জানতে পারি অনিকের মা না’কি ঝুমুরকে বলেছে অনিক অন্য কোথাও বিয়ে করেছে। যে মেয়েকে অনিকের জন্য পছন্দ করেছে তাকে বউ হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলো ঝুমুরকে। এইসব সীমাকে অনিকের ভাবি বলেছে। আমরা ঝুমুরের বাসায় যেয়ে দেখি ঝুমুর এবং ওর বাবা কেউ-ই নেই ঘরে। আশেপাশে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তারা গিয়েছে চট্টগ্রাম। ঝুমুরের বোনের বাসায় শিফট হয়ে গেছে। আমরা জানতাম না ওর বোনের বাসা কোথায়! এরপর আর ওকে খুঁজে পাই নি। আমি জানি না ও অনিকের মা’য়ের কথা বিশ্বাস করে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কি’না? যদি নিয়ে থাকে তাহলে ও অনিকের ভালোবাসার অপমান করেছে। অনিক ঝুমুরের জন্য নিজের পরিবারের সাথে যুদ্ধ করেছে একরকম আর ও বিশ্বাসই রাখলো না সে ভালোবাসার উপর। কিন্তু আমার মনে হয় না ঝুমুর কখনো অবিশ্বাস করবে অনিককে। ওদের ভালোবাসা ভীষণ গভীর ছিলো।”
ঝিনুকের সাথে সাথে মাথায় এলো সৈকতের সাথে তার করা ব্যবহারগুলো। সে আবার তাকাল তার মা ও বাবার ছবির দিকে। আবার নোনাপানি মাখা নয়ন নিয়ে তাকাল প্রফেসর রহিমের দিকে। ঝিনুক ভীষণ আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“কোথায় এখন সে?”
“তোমার বাবা?”
কথাটা শুনতেই ঝিনুকের কান্না আসতে চাইলো। তার বাবা? আজ প্রথম এই শব্দটা শুনে তার ঘৃণা লাগছে না। কাজ করছে একরাশ সুখ। সে ভীষণ আগ্রহ নিয়ে মাথা নাড়ালো।
প্রফেসর রহিম তার চশমা খুলে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“কলকাতা যাওয়ার চারমাস পরই ও এক্সিডেন্টে মারা গেছে।”
কথাটা শুনতেই ঝিনুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো। সে লোকটা আজীবন ঘৃণা করে এসেছে। তার জীবন থেকে মুছে দিতে চেয়েছে। আজ যখন সে লোকটাকে সে নিজের বাবা হিসেবে প্রথমবার সম্মান করছে তখন সে জানতে পারছে মানুষটার অস্তিত্বই নেই এই পৃথিবীতে!
প্রফেসর রহিম আবারও বললেন,
“আমাদের তো জানানোও হয় নি ওর মৃত্যুর খবর। প্রায় একবছর যোগাযোগ না করায় আমি অনেক খোঁজ নেওয়ার পর জানতে পারি অনিক আর নেই।”
ঝিনুক চোখ বন্ধ করতেই তার দুইগাল ভিজে গেল।
প্রফেসর রহিম আবারও বললেন,
“মামনী তুমি বাসায় চলো, সীমা তোমাকে দেখে অনেক খুশি হবে। শুধু ঝুমুরের মৃত্যুর কথাটা….. ”
ঝিনুক তার কথা কেটে উদাসীন কন্ঠে বলল,
“আজ না স্যার। ক্ষমা করবেন আপনার সাথে এত বাজে ব্যবহার করার জন্য।”
“চাচা ডাক দিবে। তুমি না দেখতে তোমার মা’য়ের মতো হয়েছ কিন্তু চোখটা তোমার বাবার মতো। অনিক ও ঝুমুর দেখতে পেল না তাদের মেয়েটা এত মিষ্টি হয়েছে, মাশাল্লাহ!”
“চাচা আমি কী বাবা ও মা’য়ে ছবিটা নিতে পারি?”
প্রফেসর রহিম তার চোখ মুখে ব্যস্ত হয়ে বলল,
“অবশ্যই মামনী। তুমি কিছু খাবে মা? আনাব? দাঁড়িয়ে আছ কেন বসো।”
“না, আজ এমন অনেক কিছু জেনেছি যা আমি সারাজীবনে কল্পনাও করি নি।”
.
.
ঝিনুক বসেছিল ভার্সিটির পিছনের এক জায়গায় প্রায় দুই ঘন্টা ধরে। স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। সে ঠিক বুঝতে পারছে না তার অনুভূতি। একদিক দিয়ে তার বাবার প্রতি এত বছরের ঘৃণাটা ভুল প্রমাণ হওয়ায় স্বস্তি লাগছে আবার অন্যদিকে সে বাবা পৃথিবীতে নেই ভেবে বুকের ভেতর বিষণ্ণতা ছড়িয়ে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে অঞ্জলি আসলো কোথা থেকে সে ঝিনুককে দেখে ধমকের সুরে বলল,
“তোকে না আমি বলেছিলাম বারোটায় দেখা করব? প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিট ধরে কল দিচ্ছি তোকে তোর খবরই নেই। প্রভা আপুকে কল দিয়ে জানলাম তুই বের হয়েছিস। সম্পূর্ণ ভার্সিটিতে খোঁজার পর এইখানে পেলাম তোকে। আচ্ছা শুন একজনের সাথে তোকে দেখা করাব।”
চলবে…….
[আশা করি ভুল ক্রুটি ক্ষমা করবেন ও ভুল হলে দেখিয়ে দিবেন।]
পর্ব-৫২ঃ
https://www.facebook.com/828382860864628/posts/1271757216527188/