আমি সেই চারুলতা পর্ব-১৭

0
2050

#আমি_সেই_চারুলতা
#Shuvra_Ahmed_Priya
#পর্বঃ১৭
_______________________

ফাতেমার এভাবে চলে যাওয়ার কারণ চারুর বোধগম্য হলোনা। সে কি কোনো কারণে চারুকে পছন্দ করছেনা? কিন্তু অপছন্দ করার কি আছে? ফাতেমা নামক এই মেয়েটির সাথে তো আগে কখনো দেখাই হয়নি তার। হামিদ অবশ্য সেসব পাত্তা দিলোনা। সে নিজেই চারুকে ঘরে নিয়ে আসলো। ফাতেমার আচরণে মনে হচ্ছে সে চারুর উপর চরম বিরক্ত কিন্তু চারু কিছুতেই বুঝতে পারছেনা এমন করার কারণ কি।
– তোমার কি জ্ঞান বুদ্ধি কিছু নাই? চারুরে কিছু খাইতে দাও। এত দূর থেইকা আসছে ও।
ফাতেমা কিছু না বলে কিছু খাবার এগিয়ে দিলো চারুর দিকে। চারু কেনো যেনো খেতে পারছেনা। অস্বস্তি হচ্ছে, এভাবে কারো বাসায় আসার পর সে যদি আন্তরিক আচরণ না করে তবে নিজেকে বেশ অসহায় লাগে এবং ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে অপমানজনক। চারু কিছুই খাচ্ছেনা বলে হামিদ নিজের হাতে খায়িয়ে দিলো চারুকে। ফাতেমার চাহুনিতে চারুর মনে হলো হামিদ যে ওকে খায়িয়ে দিচ্ছে সেটা তার পছন্দ হচ্ছেনা। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে চারু নিজের হাতেই খেতে চাইলো কিন্তু হামিদ ওকে নিজের হাতে খেতে দিলো না। এতে যেনো ফাতেমা আরো কিছুটা রেগে গেলো তবে কিছুই বললো না। খুব জোরে দরজা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো সে। হামিদ অবশ্য ফাতেমার রাগ বুঝলোনা। সে চিৎকার করে বললো,
– এত জোরে দরজা লাগাও ক্যান? দরজা কি তোমার বাপের? ভাঙলে জরিমানা কে দিবো?
হামিদের চিৎকারে কিছুটা ভয় পেলো চারু। ছোটবেলা থেকেই হামিদ কিছুটা রগচটা স্বভাবের ছেলে। হামিদ আবার বিরবির করে উচ্চারণ করলো, “বেআক্কেল মহিলা!” চারু আর কিছু বললো না। চুপচাপ থাকাই ভালো মনে করলো সে। কিছুক্ষণ পরেই হামিদ ফাতেমাকে ডাকলো। ফাতেমা আসার পরেই হামিদ বলতে শুরু করলো,
– শোনো কাউরে বলবানা আমি চারুকে পেয়ে গেছি।
– ক্যান?
– আমি মানা করছি তাই। সবাইরে বলবা তোমার দাদি গ্রামের থেইকা আসছে।
– কিন্তু আমার দাদি তো মইরা গেছে বছর কুড়ি হইবে। আমার দাদি কোথা থেকে আসবো?
হামিদের মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠলো। ফাতেমার বোকামি গুলো সহ্য হচ্ছেনা তার। একমাসেই ভীষণ রকম বিরক্ত হয়ে গেছে সে।
– তোমার দাদি নাই সেইটা তুমি জানো। প্রতিবেশিরা কি জানে?
– কি বলেন প্রতিবেশীরা জানে? তারা ক্যামনে জানলো?
– দেখো আজ আমার মেজাজটা ভালো আছে। একদম বিগড়ে দিবা না। যা বলবো যতটুকু বলবো শুধুমাত্র সেটাই করবা। সবাইকে বলবা গ্রাম থেইকা তোমার দাদি আসছে। মনে থাকবো?
ফাতেমা নিজের আহাম্মকের মতো হাসি দিয়ে বললো ঠিক আছে। হামিদের মুখ দেখেই চারু স্পষ্ট বুঝতে পারলো ফাতেমার উপর হামিদ ভীষণ রকম বিরক্ত। নতুন বউয়ের সাথে তো সম্পর্ক ভালো হওয়ার কথা। একমাসেই বিরক্ত কেনো?

হামিদ দ্রুত একটা ঘর খোজার চেষ্টা করছে। চারুর ভাষ্যমতে কেউ একজন ওর উপর নজর রাখছে। হামিদ বুঝতে পারছেনা কে সেই অজ্ঞাত লোক কিন্তু চারুকে বাঁচাতে হলে এখান থেকে তাকে নিয়ে যেতে হবে। কেউ হামিদের উপর নজর রাখে জানার পরেও চারু তার সাথে এসেছে। কতটা বিশ্বাস করলে এভাবে কিছু না বলে চারু চলে আসলো? নাহ, যেভাবে হোক চারুকে বাঁচাতে হবে। এখানে এক রাতও থাকা যাবেনা। আজ রাতেই সবাইকে নিয়ে এই বাড়ি ছাড়বে হামিদ। এখানের কেউই কিছু জানতে পারবেনা। তবে সমস্যা হলো ফাতেমা। পেটের মধ্যে কিছুই রাখতে পারেনা সে। ফাতেমার কথা মনে হতেই আবার মেজাজ বিগড়ে গেলো তার। হামিদ কোনোমতে বেশ কিছুটা জনশূন্য জায়গায় ঘরটা নিলো। মানুষ যত বেশি তত ঝামেলা। ভালোই হয়েছে তাড়াতাড়ি এমন একটা জায়গা পেয়ে গেছে। হামিদের ভাগ্য সবসময় সুপ্রসন্ন। হামিদ যেখানে ওঠার চিন্তাভাবনা করছে সেখানে আশেপাশে সব মিলিয়ে মাত্র সাতটা বাড়ি। কাজের জায়গা কিছুটা দূরে হয়ে যায় কিন্তু এখন সেসব দেখলে চলবেনা। হামিদ ফাতেমাকে তাড়াতাড়ি জামাকাপড়ের ব্যাগ গুছিয়ে নিতে বললো। রাতের অন্ধকার থাকতে থাকতেই এখান থেকে বেড়িয়ে পড়বে। তবে ফাতেমা বারবার প্রশ্ন করতে করতে বিরক্ত করে ফেলছে হামিদকে।
– আমরা কই যামু?
– বললাম না নতুন বাড়িতে যামু। এত চিল্লাও ক্যান?
– নতুন বাড়ি যামু ক্যান? এই বাড়িটা তো আমার খুব পছন্দ।
– তাইলে তুমি এইহানেই থাকো। আমি চারুরে নিয়া যাই। তোমার যেভাবে মন চায় ওইভাবে চলো তুমি।
ফাতেমা চুপ করে গেলো। সে বুঝতে পারছে হামিদের মেজাজ ভালো না। বিয়ের পর থেকেই খেয়াল করে আসছে হামিদ বেশ রগচটা স্বভাবের ছেলে। তাকে জোর গলায় একটা কথা কখনো বলা যায়না। হামিদ ওর ভাইয়ের আন্ডারে কাজ করে। বাসার সবাই ভেবেছিলো, অন্তত এই কারণে হলেও হামিদ ফাতেমার সাথে ভালো আচরণ করবে কিন্তু হামিদ সেসবের ধারের কাছেও যাচ্ছেনা। ফাতেমাও বাসার কাউকে কিছু বলতে পারেনা। সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয় সব মেয়েরই থাকে আর মেয়েটা যদি হয় কালো তাহলে তার জীবন একেবারে নষ্ট। ফাতেমার বয়স উনিশ। বারবার ছেলেপক্ষ ওকে এসে দেখলেও কেউ পছন্দ করতো না কারণ তার গায়ের রঙ কিছুটা ময়লা। বাবা এবং ভাই দুজনেই ফাতেমাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলো। অবশেষে হামিদের সাথে দেখা হয় ফাতেমার ভাইয়ের। হামিদের আচার আচরণে মুগ্ধ হয় সে কিন্তু হামিদ ছিলো খুবই সুদর্শন। ফাতেমা কোনোদিক থেকেই হামিদের যোগ্য ছিলো না। হামিদ এস এস সি পাস করেছিলো আর ফাতেমা সপ্তম শ্রেনী অবধি পড়েই পড়াশুনার সমাপ্তি টেনেছিলো। ফাতেমার ভাই খুব করে চাইতেন হামিদের সাথেই ফাতেমার বিয়ে হোক কিন্তু ফাতেমার গায়ের রঙ শ্যামলা বিধায় বলা হয়নি। এদেশে একজন কালো ছেলে এবং একজন ফর্সা মেয়ের বিয়ে যতটা স্বাভাবিক তেমনি একটা কালো মেয়ে আরেকটা ফর্সা ছেলের বিয়ে ততটাই অস্বাভাবিক। হঠাৎই হামিদের এক্সিডেন্ট ঘটলো। ফাতেমার ভাই সব খরচ দিলো। হামিদের সামর্থ্য ছিলোনা এতগুলো টাকা শোধ দেওয়ার। সুযোগ বুঝে ফাতেমার সাথে বিয়ের কথা তোলেন ফাতেমার ভাই। ম্যানেজারের বোনকে বিয়ে করলে অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে ভেবে হামিদ ফাতেমাকে না দেখেই বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। ফাতেমা যেদিন হামিদের ছবি দেখেছিলো তখন সে অবাক হয়েই তাকিয়ে ছিলো। এত সুন্দর একটা ছেলের সাথে তার বিয়ে হবে? ঘরোয়া আয়োজনের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়। হামিদ তখনও ফাতেমাকে দেখেনি। প্রথমবারের মতো দেখা হয় বাসর ঘরে। হামিদের নিশ্চয়ই আশা ছিলো তার বউ সুন্দরী হবে কিন্তু ফাতেমাকে দেখার পর তার মুখ মলিন হয়ে গিয়েছিলো। বোকা হলেও ফাতেমা বুঝেছিলো সেটা। হামিদ নিশ্চয়ই নিজের উপরেই রেগে গিয়েছিল মেয়ে না দেখে বিয়ে করার জন্য। ফাতেমাকে দেখেই হামিদ বাইরে চলে গিয়েছিলো। সারারাতও আসেনি। হামিদ ফিরে ভোরের কিছুক্ষণ আগে। পরে ফাতেমা তার ভাইয়ের কাছে শুনেছিলো হামিদ নাকি ফ্যাক্টরিতে এক্সটা কাজ করছিলো। এইটাকে ওভারটাইম বলে। ম্যানেজার জিজ্ঞেস করেছিলো বিয়ের রাতে কাজ করার কি অর্থ? হামিদ উত্তর দেয়নি। এখন ফাতেমার সাথে তার সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হলেও হামিদ যে এখনো তাকে পছন্দ করেনা সেটা বোঝে ফাতেমা। এর কারণ কি শুধুই গায়ের রঙ? গায়ের রঙই কি সব? ফাতেমা বেশ কয়েকবার হামিদের জন্য সাজার চেষ্টাও করেছিলো কিন্তু হামিদ সেদিকে ফিরেও দেখেনি। এরপর থেকে আর সে চেষ্টা করেনা। হামিদ যে তাকে স্ত্রী রূপে স্বীকার করেছে সেটাই এখন ফাতেমার কাছে অনেক। কিন্তু ফাতেমা খেয়াল করতো প্রতি সপ্তাহে রাতে একদিন হামিদ বাসায় থাকেনা। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে হামিদ জানিয়েছিলো চারুর কথা। ফাতেমা ব্যাপারটা পছন্দ করেনি। করবেই বা কিভাবে? মাত্র সাত হাজার টাকায় দুজনের চলাই মুশকিল আবার আরেকজন বাড়তি মানুষের খরচ কিভাবে চালানো যায়? তবে হামিদকে সরাসরি একথা বলার সাহস পায়নি ফাতেমা। সে ভেবেছিলো হামিদ বোধহয় চারুকে পাবেনা কিন্তু পাওয়ার পরেই যে এখানে নিয়ে চলে আসবে সেটা সে ভাবেনি। চারু মেয়েটা অনেক বেশি ফর্সা। ফাতেমার রাগের অন্যতম কারণও এইটা। সে হাজার চেষ্টা করেও যেখানে ফর্সা হতে পারেনা সেখানে চারুর এই দুধে আলতা গায়ের রঙ ভালো লাগছেনা ফাতেমার। নিজের ভিতর কেমন এক হিংসা অনুভূত হচ্ছে। ফাতেমা রান্নাঘরে এসে রান্না করতে শুরু করলো। হামিদ বাইরে কোথাও গিয়েছে। চারু ভাবলো ফাতেমার সাথে গিয়ে কিছুক্ষণ কথা বলা যাক। সে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলো। চারুকে দেখেও না দেখার ভান করলো ফাতেমা।
– কেমন আছো ভাবি?
– আপনের ভাইয়ে যেমন রাখছে তেমনই আছি।
– কেনো আমার ভাই কি তোমাকে ভালো রাখেনি?
– হ রাখছে কোনোমতন। আপনের কি কিছু লাগবো?
চারু বুঝতে পারছে ফাতেমা ওর উপস্থিতি পছন্দ করছেনা তাই সে সিদ্ধান্ত নিলো আরো কিছুক্ষণ কথা বলবে। ফাতেমা এগোতে না চাইলে পরে আর সে ফাতেমার বিরক্তির কারণ হবেনা কিন্তু চারু এখনও বুঝতে পারছেনা ফাতেমা কেনো তার উপর বিরক্ত।
– না এমনি কথা বলতে এসেছিলাম। আর আমি সম্ভবত আপনার ছোট। আমাকে আপনি সম্মোধন করতে হবেনা।
– আপনি কইরা না কইলে আবার আপনের ভাই আমারে বকবো। কি দরকার যেচে বকা খাওনের?
– বকা দেবে কেনো? বলবে আমি বলতে বলেছি। আমিও তো তোমাকে তুমি ডাকছি।
– তুমি কইরাই কইলাম তাইলে। তোমার লাইগ্যা তো তোমার ভাইয়ের সাত খুন মাফ। এই কয়েকদিনে যা বুঝছি তোমার ভাই তোমারে অনেক আদর করে। তোমার হাজার দোষ সে চোখে চাইয়াও দেখবোনা।
চারু আর কিছু বললোনা। ফাতেমার খোচা মারা কথা ধরতে পারছে সে।
– কি রান্না করছো ভাবি?
– আলু দিয়া শিং মাছের নিরামিষ রান্না করছি?
– মাছের নিরামিষ?
– হ।
চারু অবাক নেত্রে ফাতেমার দিকে তাকালো। এই মহিলা কি পরিমাণ বেআক্কেল তা আন্দাজ করতে পারছে সে। উনি নাকি শিং মাছের নিরামিষ রান্না করছে। কি অদ্ভুত কথাবার্তা! কে জানে তার রান্না কেমন?
– আমি একটু খাই ভাবি?
ফাতেমা কিছু না বলে কিছুটা তরকারি এগিয়ে দিলো চারুর দিকে। মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে বিরক্ত হচ্ছে। চারু তরকারি খেতেই বুঝতে পারলো লবণ বেশি হয়েছে। সামান্য বেশি না, অনেকটাই বেশি। চারু কিছু না বলে ফাতেমার প্রসংশা করলো। স্বভাবতই মেয়েরা প্রসংশা পছন্দ করে আর যে প্রসংশা করে তার সাথে খুব সহজেই সখ্যতা গড়ে ওঠে তাদের।
– ভাবি তোমার রান্নাটা কিন্তু খুব ভালো হয়েছে।
প্রসংশা শুনে ফাতেমার চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো কিন্তু পরক্ষণেই আবার বিরসমুখে বললো,
– তোমার ভাই তো আমার রান্না পছন্দ করেনা। আমার রান্না নাকি মজা হয়না।
– ছেলেরা রান্নার কি জানে বলো তো? আমার কাছে শোনো। তোমার রান্না খুবই ভালো।
এতক্ষণে ফাতেমার মুখ থেকে বিরক্তভাবটা কেটে গেছে। সে এবার অতিরিক্ত উৎসাহ নিয়ে চারুকে জিজ্ঞেস করলো,
– তুমি এত সুন্দর ক্যামনে হইলা? মুখে কি দাও?
ফাতেমার এমন কথায় অবাক হলো চারু। মুখে আবার কি দিবে? ফাতেমা হাত দিয়ে ডলে ডলে চারুর মুখ পরীক্ষা করছে আসলেই সে মুখে কিছু দিয়েছে কি না। দিলেও বা কি দিয়েছে। চারু এই ব্যাপারটা সহ্য করতে না পেরে যথেষ্ট ভদ্রতা সহিত ফাতেমার হাত নীচে নামিয়ে দিলো।
– আমি কোনো কিছুই ব্যাবহার করিনা। আমি যেমনই আছি আলহামদুলিল্লাহ। তুমিও যেমন আছো আলহামদুলিল্লাহ। অতিরিক্ত রঙচঙ মাখার কোনো প্রয়োজন নেই।
চারুর উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারলোনা ফাতেমা। সে বিরস মুখ করে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো। সে যেমন আছে তেমনই যদি সুন্দর হয় তবে হামিদ কেনো তার দিকে তাকায় না?

বিকেল হতেই হামিদ বাড়ি ফিরে এলো। চারুর এখানে কোনো জামাকাপড় নেই। হামিদ ঠিক করলো প্রথমে ওকে কিছু জামাকাপড় কিনে দেবে। হামিদের এইসব অতিরিক্ত আদিক্ষেতা পছন্দ করছেনা ফাতেমা। চারু খুব ভালোই বুঝতে পারছে তবে হামিদ ফাতেমাকে তেমন পাত্তা দিচ্ছেনা। চারু শুনেছিলো বিয়ের পরপর নাকি ছেলেরা বউয়ের কথা খুব মানে। জামাল হোসেনও মানতো তাই ওকে এস এস সি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছিলো তবে হামিদ কেনো এখনো ফাতেমাকে সহ্যই করতে পারেনা? আর ফাতেমাকে দেখেই চারু বুঝতে পেরেছে সে কিছুটা হিংসুটে ধরনের বোকা মেয়ে। ফাতেমার আচার আচরণের তোয়াক্কা না করে হামিদ চারুকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো। ঘুরে ঘুরে বেশ অনেক জামাকাপড়ই কিনলো। চারু বারবার এত খরচ করতে মানা করছিলো কিন্তু হামিদ মানলো না। চারু তো পর কেউ না। ও না দিলে কে দিবে? কেনাকাটা করতে করতে রাত হয়ে গেলো। হামিদ একটি রিকশা ডেকে নিলো বাসায় যাওয়ার জন্য। রিকশায় উঠেই ব্যাগগুলো সব ঠিকঠাক করতে করতে বললো,
– ম্যাট্রিক পরীক্ষাটা তো মনে হয় দেস নাই।
– না। ম্যাট্রিক পরীক্ষার চল এখন নেই। এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছি।
– মানে? ম্যাট্রিক আর এস এস সি কি আলাদা নাকি?
– হ্যাঁ।
– যাই হোক, পরীক্ষা কেমনে দিলি? এর আগেই তো ওই জানোয়ার দুইটা তোর বিয়া দিয়া দিলো।
– যার সাথে বিয়ে হয়েছিলো সে তার বসের অনুমতি নিয়েই মনে হয় আমাকে পড়িয়েছিলো।
– বস? নিজের বউরে পড়াইতে অন্যের অনুমতি লাগবো ক্যান?
চারু উত্তর না দিয়ে উদাস দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে রইলো। তাকে চুপ থাকতে দেখে হামিদ বললো,
– যাই হোক, পরীক্ষা দিছস ভালো কথা। এহন কি কলেজে ভর্তি হবি? এইহানে অনেক ভালো ভালো আর বড় কলেজ আছে।
চারু উত্তর দেয়না। এমনিতেই হামিদের আয় তেমন বেশি না। তারউপর এক্সটা করে লেখাপড়ার খরচ করার কি দরকার? ফাতেমার কাছে হয়তো আরো বেশি অসহ্য হয়ে যাবে সে। চারু কোনোভাবেই চাইছেনা ফাতেমা কিংবা হামিদ কারোর সাথে ওর সম্পর্ক খারাপ হোক কারণ এই পৃথিবীতে মাত্র দুজনই এখন চারুর আপন। ফাতেমা হয়তো ততটা না কিন্তু হামিদ তো আপন। একই রক্ত বয়ে চলেছে দুজনার শরীরে।
– কি রে কথা কস না ক্যান?
– অনেক তো পড়লাম। আর পড়বোনা।
হামিদের ভ্রু কুচকে গেলো। যেই চারুকে পড়াশোনায় কেউ কখনো হারাতে পারেনি। চারুর পড়াশোনা দেখে মনোরমা হামিদকে বকা দিতো না পরার জন্য, যেই চারু পড়াশোনা জন্য জীবন অবধি দিয়ে দিতে পারতো সে কিনা এখন লেখাপড়া করতে চাইছেনা। ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে অদ্ভুত।
– ক্যান পড়াশুনা করবিনা ক্যান?
– অনেক তো করলাম। আর কত?
– এই শহরে ম্যাট্রিক পাশের দাম নাই। এইটা গ্রাম না তোরে সেইটা বুঝতে হইবো। ম্যাট্রিক পাশ কইরা তুই জীবনে কিছুই করতে পারবিনা।
– তুমি করছোনা কিছু?
– আমার আর তোর জোড়া? আমি যা করতে পারমু তুই তা পারবি?
– কেনো পারবোনা? একই রক্ত বইছে আমাদের শরীরে।
– এমন পরিশ্রমের কাম আমি জীবনেও তোরে করতে দিমু না। তুই নিজের পায়ে দাঁড়াবি। বড় বড় অফিসে যেমন সবাই সুন্দর সাজগোজ কইরা কাজ করতে যায় তুই ওমন কাজ করবি। আর কাজ না করলেও সমস্যা নাই কিন্তু লেখাপড়া করতেই হইবো।
– কি হবে লেখাপড়া করে? বাদ দাও না।
– কিসের বাদ দিমু? কিছুদিনের মধ্যেই তোরে কলেজে ভর্তি করায়া দিমু। এমনিতেই অনেক পিছায়া গেছস।
চারু আর কিছু বললোনা। পড়তে তো সেও চায়। কে জানে ফাতেমা জানলে তার ব্যাবহার কেমন হবে? রিকশা থামিয়ে দিলো গলির কাছেই। ভিতরে আর যাবেনা। এখান থেকে হেটেই যেতে হবে বাসায়। দশ মিনিটের রাস্তা। হামিদ ভাড়া মিটিয়ে রওয়ানা হলো বাড়ির পথে। কিছুদূর যেতেই দেখা গেলো কালো রঙের একটি কার। আর তার পেছনে সাদা রঙের একটা কার। কালো রঙের কার থেকে বেড়িয়ে এলো মুখোশে আবৃত মুখের এক ব্যক্তি। আর পেছনের গাড়ি থেকে ছয়জন মানুষ। হ্যাংলা পাতলা ধরনের এই লোকটাকে একবার দেখেছিলো চারু। এই লোকটাই জামাল হোসেনের তথাকথিত সেই বস। তাকে দেখেই চারু হামিদের পেছনে চলে গেলো।
– কি রে পেছনে গেলি ক্যান?
– স স সামনে দেখো।
– কি হইছে সামনে?
– মুখোশ পড়া সেই লোকটাই বস। সে আমাকে ধরতে এসেছে। আমাকে বাঁচাও। তার জন্যই আজ আমার জীবনটা এমন হয়েছে।
শেষ বাক্যটা শুনে হামিদের চোখের সামনে কাল রাতের চারুর মলিন ও আঘাতপ্রাপ্ত মুখটা ভেসে উঠলো। চারুর সাথে যে এমন জঘন্য আচরণ করতে পারে তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। হামিদের চোখ থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গের মতো রাগ ছড়িয়ে পড়ছে। হামিদকে নিরস্ত্র দেখে চারজন লোক এগিয়ে গেলো তার দিকে। হামিদের ক্ষতি করা তাদের উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য চারুকে নিয়ে যাওয়া কিন্তু হামিদ যদি বাধা দেয় তবে তাকেও মেরে ফেলার অর্ডার আছে তাদের কাছে। লোকগুলো কিছুটা সামনাসামনি আসলেই হামিদ নীচের থেকে একটি কাঠের টুকরো তুলে নেয়। সেই কাঠে ছিলো ধারালো পেরেকঠোকা। পেরেকের সেই ধারালো অংশ দিয়ে চারজনকেই এলোপাথাড়ি আঘাত করলো হামিদ। হামিদকে নিরস্ত্র দেখে তারা সবাই নিরস্ত্র অবস্থাতেই এসেছিলো। হামিদের এমন আঘাতে প্রত্যেকটা শরীরই রক্তাক্ত হলো। বাকি যে দুইজন ছিলো তারা বন্দুক হাতে এগিয়ে এলো হামিদের দিকে। হামিদকে কাঠের টুকরোটা নীচে ফেলে দিতে বললো। হামিদ সেটা তো ফেললোই না উল্টো লোক দুইটার মাথা বরাবর ছুড়ে মারলো সেটাকে। ছয়জনকে মোটামুটি আহত করে দিয়ে হামিদ দৌড়ে গেলো বসের দিকে। সজোরে একটা গাড়ির সাথে তার মাথাটাকে ঠুকে দিলো হামিদ। আচমকা এমন আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিলোনা বস নামক সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি। কাল রাতের চারুর ইটের আঘাত আর আজ হামিদের দেওয়া আঘাত একই জায়গায় পড়ায় মাথা থেকে গলগল করে র*ক্ত বের হচ্ছে তার। সুযোগ বুঝে হামিদ আরো কিছুটা আঘাত করে ফেললো বস নামক সেই লোকটাকে। অতঃপর বসও হামিদের উপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করলো কিন্তু হামিদের সাথে পেরে উঠলো না সে। অজ্ঞাত এই ব্যক্তিটি সম্ভবত হামিদের চেয়ে বয়সে অনেকই বড় কিন্তু হামিদের স্বাস্থ্য ভালো আর হ্যাংলা পাতলা এই তথাকথিত বসের স্বাস্থ্য হামিদের তুলনায় বেশ কম তাই সে হামিদের সাথে খুব একটা পেরে উঠছেনা। ছয়জন লোক তৎক্ষনাৎ এসে ঘিরে ফেললো হামিদকে। এইবার তথাকথিত সেই বস হামিদের বুকে একটা লাথি মারলো। হামিদও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। লোকগুলো তার হাত ধরে ছিলো হামিদ পা দিয়ে বসের তলপেটে প্রচন্ড জোরে এক লাথি মারে। এতে সে আরো বেশি রেগে গিয়ে হামিদকে আঘাত করতে চায় কিন্তু তার আগেই পূর্ববর্তী সেই কাঠ দিয়ে আবারও বসের মাথায় আঘাত করে চারু। সাথেসাথেই নীচে পড়া থাকা এক বন্দু*ক তুলে বসের দিকে তাক করে সে। অবস্থা বেগতিক দেখে অজ্ঞাত সেই বস দ্রুত নিজের গাড়িতে উঠে বসে সেই জায়গাটি পরিত্যাগ করে। তারসাথে, যে ছয়জন ছিলো তারাও একটা গাড়িতে উঠে পড়লো। চারুর চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিলো না। সে গুলি করতে জানেনা। বেশ কয়েকবার ট্রিগার চাপার শর্তেও গু*লি বের হয়নি। সেই লোকগুলো হয়তো জানতো না। জানলে এখান থেকে নিশ্চয়ই চলে যেতোনা। তারা চলে যেতেই হামিদের দিকে দৌড়ে গেলো চারু। শরীরের বেশ কয়েকটা অংশে আঘাতের চিহ্ন হামিদের তবে খুব একটা ক্ষতি হয়নি। চারু হামিদের কাছে যেতেই হামিদ একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো তাকে,
– মন চাইতাছিলো খু*ন কইরা ফেলি কিন্তু ওই শালার ভাগ্য ভালা। তুই গু*লি করলিনা ক্যান?
– করতে পারিনা। শুধু হাতে নিয়েছিলাম ভয় দেখানোর জন্য।
– বাদ দে। ওরা আবার আসতে পারে। তোরে আগে সেইফ একটা জায়গায় নিয়া যাইতে হইবো। বাড়ি ঠিক হইয়া গেছ। কিছু চিন্তা করিস না।
বাসায় গিয়ে দরজা ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে দিলো ফাতেমা। তার মুখে ঘুমোঘুমো ভাব। সদ্য ঘুম থেকে উঠল নিশ্চয়ই। হামিদের আঘাতগুলো দেখে যেনো মূহুর্তেই ঘুম পালালো তার।
– কি হইলো আপনার এই অবস্থা ক্যান?
– কিছু হয় নাই। তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে নাও। দশ মিনিটের মধ্যে গাড়ি আসবো। আমরা এইহান থেইকা চইলা যামু।
– ক্যান? রাইতের আন্ধারে চুপিচুপি পালামু ক্যান? আমাগো ভাড়া তো সব শোধ করাই আছে।
– এত কথা কও ক্যান তুমি? যাইতে মন চাইলে আসো নাইলে এইহানেই থাকো। তোমার গুষ্টি সহ থাকো।
ফাতেমা কিছু বললোনা। সে ঘরের ভিতর থেকে গিয়ে স্যাভলন নিয়ে এলো। ঘরে প্রায়ই সময়ই হামিদ স্যাভলন আর তুলো রেখে দেয়। মাঝেমাঝে আঘাত লাগলে দ্রুত সেরে উঠে। ফাতেমা চেষ্টা করলো লাগিয়ে দিতে কিন্তু তার অনভিজ্ঞতার জন্য সে খুব একটা পেরে উঠছেনা যেমন যন্ত্রণা হচ্ছে হামিদের। সে ধমকে উঠলো ফাতেমাকে। হামিদের বকা শুনে আবারও চোখ জলে ভিজে উঠলো তার। হামিদ চারুকে বললো লাগিয়ে দিতে। এইটাও ভালো লাগলোনা ফাতেমার। মেয়েটার মধ্যে কি এমন আছে হামিদ ওর উপর এত নির্ভরশীল? বিয়ের পর থেকেই হামিদের মুখে শুধুই চারুর প্রসংশা আর নিজের দুর্নাম শুনে আসছে সে। এইটুকু একটা মেয়েকে হামিদ ওর চেয়ে বেশি ভালোবাসে এইটা ফাতেমা কিছুতেই মানতে পারছেনা। বোনকে এত ভালোবাসার কি আছে। কই ফাতেমার ভাই তো ফাতেমার চেয়ে তার বউকে বেশি ভালোবাসে। কিন্তু এই বোকা ফাতেমাকে কি আদেও বোঝানো সম্ভব বউ আর বোনের ভালোবাসা সম্পূর্ণই ভিন্ন। এই দুই ভালোবাসাকে কখনোই তুলনা করা যায়না।

★★★

– মা, মা বের হও তো। দেখো তো আমাকে চোরের মতো লাগে কি না?
শিহাবের চিৎকারে শুধু জমিদার গিন্নিই নয় বেড়িয়ে এলো জমিদার পরিবারের অনেকেই। বাচ্চারা অবশ্য এখনো ঘুমে মগ্ন। শিহাবের চেহারায় দেখা যাচ্ছে অতিশয় রাগ। মাথা ফেটে কিছুটা র*ক্ত গড়িয়ে পড়ছে জুলফি বেয়ে। তার কিছুটা দূরেই ভয়মিশ্রিত চেহারায় দাঁড়িয়ে আছে জাবিন।
– মা আমি কি দেখতে চোরের মতো?
– কি কস বাপ? চোরের মতো হবি ক্যান?
– তাহলে জাবিন আমাকে চোর ভেবে মাথায় আঘাত করলো কেনো? এই ছেলের কি বিন্দুমাত্র জ্ঞান হবেনা? এইসবের কি মানে?
জাবিনের মুখটা ছোট হয়ে গেলো। সে আমতা আমতা করে বললো,
– রাতে জল খেতে এসেছিলাম দেখি কেউ দরজা দিয়ে ভেতরে ডুকছে। ভাবলাম চোর এসেছে বোধহয় তাই আমার খেলতে যাওয়ার ব্যাটটা দিয়ে মেরে দিয়েছিলাম কিন্তু আঘাতটা তো লাগেনি।
– আঘাত লাগেনি তো আমার মাথা কিভাবে ফাটলো?
শিহাবের চিৎকারে ভড়কে যায় জাবিন। সে আসলেই অনুভব করেছে আঘাতটা কারো বাহুতে লেগেছে। মাথায় লাগেনি কিন্তু এমনই যদি হয় তো শিহাবের মাথা কিভাবে ফাটলো?
– মা তোমাকে ভালোয় ভালোয় বলে দিচ্ছি এদের একটু শাসন করো। কোনদিন যেনো খু”ন টুন করে বসে এরা।
কথাটা বলেই শিহাব ঘরের দিকে চলে গেলো। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে আবার তৈরি হয়ে নীচে নামলো সে। এরই মধ্যে মাথায় ব্যান্ডেজও করে ফেলেছে।
– আবার কই যাস?
– শাওনের কাছে যাই।
– এত রাইতে? সকালে যাইস।
– না এখনই যেতে হবে।
জমিদার গিন্নি আর আটকালো না শিহাবকে। আজকাল ছেলেটা যেনো কেমন হয়ে গেছে। বিশেষ করে শাওনের অসুস্থতার পরে। শাওনকে খুবই ভালোবাসে ছেলেটা। আজকাল আর ভাইয়ে ভাইয়ে এত ভালোবাসা কোথায় পাওয়া যায়?

সকাল বেলা নিজের হাতে নাস্তা তৈরি করলো জমিদার গিন্নি। প্রতিদিনই এমন হয়। বাসার সবার জন্য নিজের হাতেই রান্না করা হয়। এমন সময়েই সদর দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ পাওয়া গেলো। জমিদার গিন্নিই খুলে দিলো। ছোট জমিদার সাহেব।
– আপনে রাইতে বাসায় ছিলেন না?
– না আমি তো কাইল শাওনের লগে আছিলাম।
– ওহ। আসলে শরীর টা ভালো নাই তাই খেয়াল করি নাই। বহেন। শিহাব ভালো মতো পৌছাইছিলো তো রাইতে?
– শিহাব? শিহাব কই পৌছাইবো?
– ও তো কাইল রাইতে শাওনের লগে দেহা করতে গেছিলো।
– কই না তো। আমি তো কাইল সারারাতই শাওনের সাথে ছিলাম। কই শিহাব তো আসে নাই।
– কি বলেন? তাইলে আমার পোলাটা কই গেলো?
– আমি কেমনে বলমু ভাবি? পোলাটা কেমন জানি হইয়া গেছে। যেই পোলা রান্নাঘরে যাওয়া পছন্দ করতো না ও এহন রান্না করে। কাইল ও যাইয়া দেখলাম রানতাছে। কেমন যেনো হইয়া গেছে।
– ক্যান? ও রান্দে ক্যান? কামের মাইয়াডায় কি করে?
– কি জানি? আপনেও তো শিহাবের লগে তাল মিলায়া ওর হাতের রান্না খাইতে রাজি হইলন। পোলাডার হাতটাও কাইটা গেলো।
– কি কন এইগুলা? আমি ক্যান ওর হাতের রান্না খাইতে রাজি হমু?
– শিহাবই তো কইছিলো আপনারা ওর ওইখানে গেছিলেন পরে ও নিজের হাতে রান্না করতে গেলো তারপর ওর হাত কাইটা গেছে।
– আমি যদি যাই তাইলে আমার পোলারে রানতে দিমু ক্যান? আর আমি তো চার মাস হইলো শিহাবের বাড়িতে যাই নাই।
– এইটা কেমনে হয় ভাবি? শিহাব তো কাইল আমারে কইলো।
– শিহাব আপনেরে মিথ্যা কইলো? কিন্তু ক্যান? মিথ্যা কইয়া ওর কি লাভ?

বিঃদ্রঃ কি মনে হয়? আচ্ছা কতজন গল্পটা পড়ছেন আপনারা? সবাইকে দেখতে ইচ্ছে করছে।

#স্নেহা_ইসলাম_প্রিয়া

(কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)

To Be Continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here