আমি সেই চারুলতা পর্ব-২১

0
1875

#আমি_সেই_চারুলতা
#Shuvra_Ahmed_Priya
#পর্বঃ২১
_______________________

কেটে গেছে তিন মাসেরও বেশি সময়। জামাল হোসেন ও সবুজ আলীর কেসটা একটু ঝিমিয়ে এসেছে। এইবার চারু আর হামিদের পরবর্তী শিকার নাজিমুদ্দিন। যে বাবা সন্তানের প্রতি দায়িত্ব তো পালন করেই না উল্টো প্রতিটি পদে তাকে বিপদে ফেলে দেয় সে কখনো বাবা হতেই পারেনা। তার জন্য সর্বৎকৃষ্ট শাস্তি মৃ*ত্যুদণ্ড। শিকার বলতে অবশ্য তেমন কোনো শিকার নয়। হঠাৎই একদিন বাড়িতে গিয়ে নাজিমুদ্দিনকে খু*ন করে আসা। সিম্পল প্ল্যান। তবে এতে হয়তো খুব বেশি ঝামেলা হয়ে যাবে কারণ ওদের বাড়ির আশেপাশে কমপক্ষে দশ থেকে পনেরোটা বাড়ি আছে। চিৎকার করলে সবার উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাই যাই করতে হবে খুব সাবধানে। বিকেল প্রায় হয়ে এসেছে। এসময়টাতেই এসে হামিদ চারুকে দেখে যায়। কিছুক্ষণের মাঝেই ঘরে প্রবেশ করলো হামিদ,
– কি রে তুই নাকি জীববিজ্ঞান ক্লাস টেস্টে শূন্য পেয়েছিস?
– বাজে কথা। কে বলেছে?
– ফাতেমা বললো। ও নাকি পরীক্ষার আগে বারবার তোকে ডিম খেতে বারণ করেছিলো তুই মানিস নি আর তাই পরীক্ষায়ও ডিম মানে শূন্য পেয়েছিস।
চারু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। কয়েকদিনের জন্যই তো গিয়েছিলো ও বাড়িতে। সেটাও সহ্য হলোনা ফাতেমার।
– আমি জোর করে ডিম খাইনি। তুমি তো জানোই আমি ডিম পছন্দ করিনা। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে ভাবি জোর করে আমাকে ডিম খায়িয়ে দিয়েছে। আমি ভেবেছিলাম পরীক্ষা বলেই হয়তো খাওয়াচ্ছে। যাই হোক, পরীক্ষায় ৮৯ পেয়েছি।
– তোরে কইছিলাম না এই মহিলা হিংসুটে। কারোর ভালো সহ্য হয়না তার। প্রমাণ পাইলি তো এইবার? আমার মা শ্যামলা ছিলো ঠিকই কিন্তু এমন হিংসুটে ছিলো না।
– বাদ দাও তার কথা। এ ব্যাপারে কিছু বলোনা। এই অবস্থায় অতিরিক্ত বকাবকি করা উচিত হবেনা।
– ভাগ্যিস তোর বাড়ি চেঞ্জ কইরা দিছিলাম। ওইহানে ওই মহিলার সাথে থাকতে পারতিনা তুই। আমিও এহন ওইহান থেইকা বের হইলে ভালো একটা শান্তির জায়গায় আইসা ঘুমাইতে পারি।
– একটা কথা বলি?
– বল।
– তোমাকে কিন্তু শুদ্ধ বাংলা বললেই বেশি ভালো লাগে। ওইদিন জামাল হোসেনের সাথে যেভাবে বলেছিলে ঠিক সেভাবে।
– এইটা এতদিন পর তোর মনে হইলো?
– আগেই মনে হয়েছিলো। বলা হয়নি।
– ছোট কালে হয় নাই এহনো আর হইবো না। ওহ শোন, যেইটা কইতে আসছিলাম।
– বলো।
– নাজিমুদ্দিন নামের পিশাচটা নাকি চট্টগ্রাম শহরে গেছে আর শেফালী ওর মামার বাড়ি। আমরা যদি আমাগো বাড়িতে যাই একটারেও ধরতে পারমু না। ভাবতাছি শেফালীর মামার বাড়িই যাই।
– ওর মামা মামীকে কি করবে?
– সামনের সপ্তাহে নাকি ওর মামা মামী হজ্বে যাইবো। বিশাল বড়লোক মানুষ তারা। ওই বাসায় শেফালী একাই থাকবো।
– হজ্বে যাবে? শেফালীকে ঠিকমতো শিক্ষা দিতে পারলো না কিন্তু হজ্বে যাবে। কি লাভ? যদি তাকে সঠিক শিক্ষাটা দিতে পারতো তাহলে বোধহয় আল্লাহ এমনিই তাদের ক্ষমা করে দিতেন।
– বাদ দে। ওইটা তাদের নিজের ব্যাপার। শেফালীরে মার*তে পারলেই আমার শান্তি।

নির্ধারিত দিনে চারু আর হামিদ বেড়িয়ে গেলো শেফালীর মামা বাড়ির উদ্দেশ্যে। হামিদ খোজ খবর নিয়েছে শেফালীর মামা আর মামী দুইদিন আগেই চলে গিয়েছে। বাসায় এখন শেফালী একা। চারু জানে শেফালীর দুর্বলতা হামিদ। সে অনুযায়ীই নিজেদের পরিকল্পনা সাজিয়েছে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ীই কাজ করলো তারা। প্রথমেই হামিদ গিয়ে দরজায় করাঘাত করলো। বেশ কয়েকবার দরজা ধাক্কানোর পর বেড়িয়ে এলো শেফালী। গল্পের আসল লেখিকা স্নেহা ইসলাম প্রিয়া। শেফালীকে দেখে প্রচন্ড রকমের অবাক হলো হামিদ। বেশ খোলামেলা পোশাকে ছিলো সে। একটা মেয়ে কিভাবে এমন পোশাক পরে বাইরে চলে আসতে পারে সে ধারণা তার নেই। তবে হামিদ শেফালীকে দেখে যতটা অবাক হয়েছে তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছে শেফালী।
– তুমি?
– ক্যান আসতে পারি না?
হামিদের নরম স্বরে বলা কথাটা শুনে ভড়কে গেলো শেফালী।
– হ পারবা না ক্যান? আসো ভিতরে আসো।
হামিদ শেফালীর সাথে ভিতরে ঢুকে গেলো। চারু এখনো বাইরে অপেক্ষায় রয়েছে।
– কেমন আছো? এতদিন কই ছিলা?
– ভালোই আছি। শহরে ছিলাম। আইজ হঠাৎ আপনের কথা মনে আসলো তাই ভাবলাম দেখা কইরা যাই।
– আমার কথা?
– হুম আপনের কথা। দেহেন আমি কিন্তু আপনেরে মা ডাকতে পারমু না। আপনে যতই আমার বাপের বউ হন না কেনো মা আমি ডাকমু না আপনেরে। আপনের কি ওত বয়স হইছে নাকি? আপনে হইলেন গিয়া আমার সমবয়সী বন্ধুর মত।
শেফালী অবাকের পর অবাক হচ্ছে। এ কোন হামিদকে সে দেখছে? এইটা কি সেই হামিদ যার কাছে হাজার চেষ্টার পরেও সে পাত্তা পায়নি? তবে সু্যোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করলো শেফালী। সে গিয়ে হামিদের কাধে হাত রেখে বললো,
– তোমার যা ইচ্ছা তুমি আমারে ডাইকো। কোনো সমস্যা নাই।
শেফালী ভেবেছিলো হামিদ হাত সরিয়ে দেবে কিন্তু সেটাও করলো না হামিদ।
– আমারে দেখতে কেমন শেফালী?
– অসম্ভব সুন্দর দেখতে তুমি। আমার জীবনে দেহা সেরা সুন্দর পুরুষ তুমি। তুমি এমন এক পুরুষ যারে প্রতিটা নারী এক রাইতের জন্য হইলেও পাইতে চায়।
ঘৃণায় হামিদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় অবধি বিষিয়ে উঠলো। ছিহ! কি জঘন্য চিন্তাভাবনা। হামিদ অবশ্য এখনই সেই ঘৃণা প্রকাশ করলো না। এই ঘৃণা প্রকাশের জন্য সারারাত পড়েই আছে।
– তাই নাকি? সব নারীই পাইতে চায়? সেই সব নারীর মধ্যে কি তুমিও আছো?
শেফালী একটু লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিতে হামিদের কাছাকাছি এগিয়ে এলো। হামিদ একটু দুরে সরে এসে বললো,
– তোমার জন্য একটা উপহার আছে। নিবা?
– তুমি আমারে বি*ষ দিলেও আমি সেটা নিমু। তুমি দিবা আর আমি নিবো না এইটা কহনো হয়?
হামিদ একটা গ্লাসে কিছুটা ম*দ ঢাললো। মদ ছাড়াও অবশ্য শেফালীকে কাবু করা সম্ভব তবে মদ খেলে শেফালীর মস্তিকের ক্ষমতা কমে যাবে। তার কাছ থেকে কথা বের করে আনা সহজ হবে। ম*দের গ্লাসটা শেফালী সানন্দে গ্রহণ করলো। একপ্রকার জোর করেই হামিদ তিন গ্লাস খায়িয়ে দিলো শেফালীকে। শেফালী এইবার আবার হামিদের কাছাকাছি আসতেই হামিদের এতক্ষণের নিয়ন্ত্রণের বাধ ভেঙে গেলো, কষিয়ে এক থাপ্পড় মারলো শেফালীকে। শেফালী অবাক হয়ে তাকালো হামিদের দিকে,
– আমি বি*ষ দিলেও নাকি তুমি নিবা তাইলে সামান্য একটা থাপ্পড় খাইয়াই এই অবস্থা ক্যান হইলো তোমার?
– আমারে মারলা ক্যান?
– চুপ কর হারা*মজাদী। তোরে যে এহনো বাচায়া রাখছি তোর সাত কপালের ভাগ্য। এহন ভালোয় ভালোয় বল বস কে।
– কিসের বস? কোন বস?
হামিদ নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করলো না। আবারো কষিয়ে এক থাপ্পড় মারলো শেফালীকে।
– ভালোয় ভালোয় কইয়া দে বস কে। যার কাছে তুই চারুরে দিয়া দিছিলি।
– জামাল হোসেন। জামাল হোসেনের কাছে আমি এক লাখ ট্যাকা দিয়া চারুরে বিক্রি করছিলাম।
– তোর কাছে বসের কথা জিজ্ঞেস করছি। জামাল হোসেনের না। বল, বস কে? আমি জানি তুই চিনস বস রে। তার সাথে বিছানায়ও গেছস তুই। সত্যি কইরা বল বস কে।
শেফালী এইবার কান্না করে দিলো। এইটা সম্ভবত ম*দের প্রতিক্রিয়া।
– বিশ্বাস করো আমি জানি না বস কে। আমি তো অনেক মানুষের লগেই বিছানায় গেছি। আমি জানি না তাদের মধ্যে বস কোনটা।
ম*দের কারণেই হয়তো শেফালী এমন সরল স্বীকারোক্তি দিচ্ছে। তবে হামিদের মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে তার উত্তরে। শেফালী মেয়ে না হলে এতক্ষণে তার শরীরের একটা হাড় ও আস্ত থাকতো না। শেফালীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এখন প্রয়োজন চারুকে। হামিদ চারুকে ঘরের ভিতর ডেকে আনলো। শেফালী চারুকে দেখে বেশ অবাক হয়েই বললো,
– তুই?
– হ্যাঁ আমি। আমি চারুলতা। চিনতে পারছিস তো আমাকে?
– আমার এইহানে কি চাস?
– বস কে?
– আমি জানি না।
চারু ব্যাগ থেকে একটা ছু*ড়ি বের করে সেটাকে শেফালীর সামনেই গরম করলো। তারপর গরম ধারালো সেই ছু*ড়ি দিয়ে হাতের কুনুই থেকে কবজি পর্যন্ত লম্বা একটা আচড় দিলো। সাথে সাথে র*ক্তে মাখামাখি হয়ে গেলো শেফালীর হাত। শেফালীও চিৎকার করে উঠলো।
– ভালোয় ভালোয় কইয়া দে বস কে। এমনিতেও তুই মরবি কিন্তু তুই যদি কইয়া দেস বস কে তাইলে কম কষ্ট দিয়া তোরে মারমু।
– বিশ্বাস করো আমি সত্যিই জানি না বস কে। কোথা থেইকা আসলো আর এই বসের কাহিনি কি।
– জামাল হোসেনের খবর কিভাবে পেয়েছিলি?
– তোর বাপে নিয়া আসছিলো। আমি তো বেশি বয়স দেইখা তার কাছে এক লাখ ট্যাকা দাবি করছিলাম। ভাবছিলাম ৫০ হাজার অন্তত দিবো কিন্তু ব্যাটায় পুরা এক লাখই দিছে। মাঝে মাঝেই আমারে এইটা ওইটা কিনা দিতো। আমার লগে বেশ কয়েকবার বিছানায়ও গেছে। এর বাইরে আমি আর কিছু জানি না বিশ্বাস কর।
– মিথ্যা কথা বলবিনা শেফালী। মেজাজ গরম হইতাছে আমার। আমি জানি, তুই জানস বস কে। এহন যদি না কস যা হইবো তার জন্য তুই দায়ী থাকবি।
– আমি সত্যিই জানিনা।
হামিদ এইবার চারুর হাত থেকে ছু*ড়িটা নিয়ে ধীরে ধীরে একটা একটা করে শেফালীর নক তুল*তে শুরু করলো। আগের বার চারু করেছিলো তাই এইবার হামিদ করলো। একে একে হাত পায়ের মোট বিশটা নকই তুলে ফেললো হামিদ। শেফালীর যন্ত্রণাময় চিৎকার যেনো বহু গুণে প্রশান্তি দিচ্ছিলো তাকে।
– চুপ। একদম চিৎকার করবি না। জিহ্বা কে*টে ফেলবো।
– আমারে ছাইড়া দাও। বিশ্বাস করো আমি জানি না কে বস।
– এমনে ভালো হবিনা তুই। আরো কঠিন শাস্তির যোগ্য তুই।
হামিদ এইবার ধারালো ছু*ড়িটা দিয়ে শেফালীর ডান হাতের একটা আঙুল কে*টে ফেললো। আবারও যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলো শেফালী। চারুর ব্যাপারটা বেশ মনে ধরলো। কে জানে হামিদ এমন নতুন নতুন বুদ্ধি কোথায় পায়। চারু এইবার গিয়ে সেই ক্ষ*ত স্থানে লবণ মরিচের প্রলেপ লাগানো শুরু করলো। এইটাও সে হামিদের কাছেই শিখেছিলো। শেফালীর মুখ থেকে বসের পরিচয় জানতে না পেরে হামিদ একে একে প্রায় সব গুলো আঙুলই কে*টে ফেললো শেফালীর। হামিদের মনে এখন কিঞ্চিৎ সন্দেহ জাগছে শেফালী আসলেই বস সম্পর্কে কিছুই জানেনা। শেফালী এত ভালো মানুষ নয় যে বসের পরিচয় লুকাতে নিজের জীবন বলি দিয়ে দেবে।
– এ কিছু বলছেনা কেনো? আঙুল কা*টার পরেও কি এর শিক্ষা হয়নি?
– এরে আমি কি করমু কিছুই বুঝতাছিনা। নে ধর, এতদিনে যত রাগ পুইষা রাখছিলি সব এহন বাইরে বাইর কইরা দে।
চারু হামিদের হাত থেকে ছু*ড়িটা নিলো। এই চরিত্রহীন মহিলার শাস্তি হওয়া উচিত ভয়ংকর। এর জন্য কত মেয়ের সংসার ভেঙেছে তা বোধহয় সে নিজেই জানেনা।
– এর চাম*ড়া তুলে নেই?
– যা খুশি কর। এরপর লবণ মরিচও লাগাইতে পারস।
হামিদের কথা শুনে তাদের দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালো শেফালী। চারুর হাতে ধারালো ছু*ড়ি। তার চোখে জ্বলজ্বল করছে প্রতিশোধের আগুন আর তারই পাশে রয়েছে হামিদ। এই দুই সুন্দর মানুষকে দেখে শেফালীর অন্তরাত্মা অবধি কেটে উপলো। কুপির হালকা সোনা রঙা আলোয় যেনো এই দুই মৃ*ত্যুদুতকে ভয়ংকর লাগছে শেফালীর কাছে। আজ হামিদের সৌন্দর্যও তাকে টানছে না। অসহ্য ভয় গ্রাস করেছে তাকে। চারু অবশ্য প্রথমেই চামড়া তোলার কাজ করলো না। হামিদকে সে দেখেছিলো লাইটার দিয়ে জামাল হোসেন ও সবুজ আলীর জিহ্বা পুড়ি*য়ে দিতে তাই সে ঠিক করলো শেফালীর হাত পায়ে আগুনের ছ্যাকা দেবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলো চারু। হাতে পায়ে বিভিন্ন অংশে লাইটারের আগুনের ছ্যাকা দিচ্ছে শেফালীকে।
– সাবধানে। কাপড়ে যেন না লাগে। পুইড়া গেলে কিন্তু আর ওরে কষ্ট দিয়া মারন যাইবো না। এই ধরনের পিছলা কাপড়ে দ্রুত আগুন লাগে। তুই এক কাম কর এইগুলা খুইলাই ছ্যাকা দে। আমি বাইরের ঘরে গিয়া একটু খাওয়া দাওয়া কইরা আসি। সেই বিকালে খাইছি। তোর হইয়া গেলে আমারে ডাকিস।
– তার আর প্রয়োজন পড়বেনা। যে মেয়ে নিজের ইচ্ছেয় হাজার পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হতে পারে তার আবার লজ্জা। এমনকি তোমাকে চাইতেও কি না সে দ্বিধাবোধ করেনি। ছিহ! কি রুচিবোধ! একবারও মাথায় এলো না তুমি তার ছেলে।
– হোপ। কিসের আমি ওর পোলা? আমি ওর কিচ্ছু লাগি না। কিচ্ছু না।
হামিদের ধমক আমলে নিলো না চারু। আসলেই তো, এমন জঘন্য মহিলা আবার কিসের মা? হামিদ বাইরে চলে গেলো খাবার খেতে। চারু সর্বাঙ্গে আগুনের ছ্যাকা দিলো শেফালীর। হাজার পুরুষের রাতের সঙ্গীর এর চেয়ে কম শাস্তি হওয়া উচিত নয়। চারু এইবার ধারালো ছু*ড়িটা হাতে তুলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করতে শুরু করলো। গল্পের আসল লেখিকা স্নেহা ইসলাম প্রিয়া। শেফালীর এই চিৎকার কানে যাচ্ছে হামিদেরও। তার চিৎকারেই হামিদের অন্তত প্রশান্তিতে ছেয়ে যাচ্ছে। বাহ! এতদিন পর বেশ ভালোভাবে খাবার উপভোগ করছে সে। মাছ-মাংসে যেভাবে ডলে ডলে মশলা মাখানো হয় শেফালীর সেই আধপো*ড়া শরীরেও চারু ঠিক সেভাবেই মশলা মাখালো। কিছু একটা মনে পড়তেই চারু খুব দ্রুত কিছুটা মাংস কেটে কে*টে নিলো শেফালীর শরীর থেকে। জীবন্ত অবস্থায় শরীরের মাংস কে*টে নেওয়ায় শেফালী যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলো।
– বস কে?
– আমি সত্যিই জানি না।
– জানিস না? তারমানে বলতে পারবিনা? বলতেই যখন পারবিনা তাহলে এই মুখের এখন কি কাজ? কি করা যায় বল তো?
– দয়া কর চারু। আমারে ছাইড়া দে। আমি সত্যিই কিছু জানি না।
– তুই যেভাবে আমার উপর অত্যাচার করেছিস তোর মনে হয় আমি তোকে ছেড়ে দেবো?
– আমি তো শয়তান। তোর উপর অত্যাচার করছি। তুই তো ভালা মানুষ। আমারে ছাইড়া দে।
শেফালী কথা শুনে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো চারু।
– আজ দেখবি এই ভালোমানুষির কত রূপ।
চারু এইবার জীবন্ত অবস্থায় শেফালীর চাম*ড়া খুলতে আরম্ভ করলো। হামিদ যতটা সহজে করেছিলো ব্যাপারটা আসলে তত সহজ নয়। বেশ পরিশ্রম এবং সময়সাপেক্ষ কাজ। চারুর সেটা পছন্দ হলো না। তাই সে কাজ বাদ দিয়ে সীসা গরম করে নিলো। এখন সে এই সীসা ঢালবে এই পিশাচিনীর গোপনাঙ্গে। হাজার পাপ করা এই অঙ্গ কিভাবে বেঁচে যাবে শাস্তির থেকে? গোপনাঙ্গে গরম সী*সা ঢালতেই চিৎকার করে উঠলো শেফালী। ইতিমধ্যে দুই বার জ্ঞান হারিয়েছে সে। চারু এইবার তার জ্ঞান ফেরালো। সম্পূর্ণ সজ্ঞানে তার সকল শা*স্তি সম্পন্ন হবে। চারু বেশ ভালোই বুঝতে পারছে শেফালী বস সম্পর্কে কিছু জানেনা তাই তার এই জিহ্বা এখন চারুর কোনো কাজের না। এবারেও হামিদের বুদ্ধি অনুসরণ করলো সে। লাইটার দিয়ে প্রথমেই জিহ্বায় ছ্যা*কা দিলো। তারপর ধীরে ধীরে পাঁচ টুকরো করে কা*টলো তার জিহ্বাটাকে। অতঃপর চারু একে একে শেফালীর ব্রেস্ট দুটোও কে*টে ফেললো। শেফালীর এই যন্ত্রণা গুলো দারুণ উপভোগ করছিলো সে। খুব ভালো লাগছিলো। অবশেষে আবার এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ছু*ড়ি ও হাতের সাহায্যে জীবন্ত অবস্থায় চারু বের করে আনলো শেফালীর কলি*জা। এভাবেই অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরানো অবস্থায় মৃ*ত্যুকে স্বীকার করে নিলো শেফালী। কলিজাটা দেখেও চারুর কলিজা শান্ত হচ্ছেনা কিন্তু ভয় নেই। চারু জানে এখন তাকে কি করতে হবে। এখন কচমচ করে এই কলিজাটাকে খেতে হবে। দারুণ প্রশান্তি পাওয়া যাবে। এই কলিজার মালিকটি কম কষ্ট দেয়নি তাকে। চারু একটা কামড় বসিয়ে দিলো সেই কলিজাতে। এখন কিছুটা শান্তি লাগছে। কলিজাটা খাওয়ার মাঝপথে হঠাৎই হামিদ চারুর হাত থেকে সেটি কেড়ে নিলো।
চারুর মুখে লেগে ছিলো ঘন লাল, তাজা র*ক্ত। কলিজা খাওয়ার ফলে সেটায় লেগে থাকা রক্তই এখন চারুর হাতে এবং মুখে অবস্থান করছে।
– খু*ন করবি ভালা কথা এইসব খাস ক্যান?
– না খেলে তৃপ্তি পাই না। আমার কলিজা ঠান্ডা হয়না। অদ্ভুত এক নেসা গ্রাস করে আমাকে। আমার মন বারবার এইটা আমাকে খেতে বলে।
– সবসময় মনের কথা শুনতে নাই। একবার আমার কথাটাও শুন। এমন জঘন্য মাইয়া মানুষের কলি*জা তোর খাইতে হইবো না।
– আচ্ছা খাবো না কিন্তু এই কলিজা যদি আমি অন্য কাউকে খাওয়াই?
হামিদ এক মূহুর্তের জন্য আৎকে উঠলো। এই সময়ে চারুকে ভয়ংকরী লাগছে। মনে হচ্ছে যেনো যেই এই মূহুর্তে ওর সামনে আসবে তাকেই সে ভস্ম করে দেবে। হামিদ একপ্রকার ভয় নিয়েই জিজ্ঞেস করলো,
– কারে খাওয়াবি?
– নাজিমুদ্দিন নামক পিশাচকে এই পিশাচিনীর কলিজা খাওয়াবো। শুধু কলিজা না ওই দেখো মাংসও কে*টে রেখেছি। তাকে আমি শেফালীর মাংসের এবং কলিজার বিরিয়ানি রান্না করে খাওয়াবো।
হামিদ এক মূহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে রইলো। এই চারুর সাথে যেনো নতুন করে পরিচিত হচ্ছে সে। এইটাই কি সেই ছোট্ট কোমলমতি চারু? এতটা নিষ্ঠুর কিভাবে হয়ে গেলো সে? নাকি পরিস্থিতি তাকে এমন কঠিন ও নিষ্ঠুর তৈরি করেছে? হামিদ চেয়ে দেখলো চারু হাতে ছু*ড়িটা তুলে নিয়েছে। এখন নিশ্চয়ই মনের আশা মিটিয়ে আঘাত করবে এই পিশাচিনীকে।

বিঃদ্রঃ ইচ্ছামতো শাস্তি দিতে পারলাম না শেফালীকে। ভায়োলেন্স ভুতের মতো তাড়া করে যাচ্ছে ভূতের রানীকে। হ্যাপি রিডিং।

#স্নেহা_ইসলাম_প্রিয়া

(কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)

To Be Continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here