#আমি_সেই_চারুলতা
#Shuvra_Ahmed_Priya
#পর্বঃ২২
_______________________
র*ক্তমাখা ছু*ড়িটা ব্যাগ থেকে বের হলেই পানি দিয়ে সেটা ধুয়ে নিলো চারু। হামিদ গেছে গোসলে। সাধারণত খু*নগুলো করার পর এখান থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়েই হামিদ বাসায় যায়। ফাতেমা এইসব ব্যাপারে এখনো অজ্ঞাত। জানলে হয়তো ভয় পেতে পারে। পাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। এই অবস্থায় শুধু শুধু ফাতেমাকে ভয় দেখানোর বিপক্ষে দুজনেই। ডেলিভারি ডেট আসতে দেরি নেই। ডাক্তার বলেছে এখনো অবধি সব স্বাভাবিক আছে। এমনই চলতে থাকলে ফাতেমার নর্মাল ডেলিভারি হবে। ফাতেমা জানে হামিদ নাইট ডিউটি করে তাই মাঝেমধ্যে বাসায় যায়না আর যেদিন সে বাসায় যাবেনা সেদিন প্রতিবেশীদের কাউকে রেখে আসে ফাতেমার সাথে। বলা তো যায়না কখন কি বিপদ ঘটে।
হামিদ মূলত এই বাড়িটা নিয়েছিলোই খু*নের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। খাবার রান্না করাই ছিলো। চারু সেটাকে গরম করতে দিয়ে দিলো। গোসল শেষ হলেই হামিদ খাবার চাইবে। হলোও তাই। গোসল শেষ করেই চারু হামিদকে ভাত দিলো আর শেফালীর মাংস আর কলিজার আধখাওয়া টুকরোটাকে রেখে দিলো ফ্রিজে।
– তুই আসলেই ওইগুলা নাজিমুদ্দিনরে খাওয়াবি।
– অবশ্যই। নইলে নিয়ে এলাম কেনো? কলিজা খাই ঠিকই কিন্তু ওর অপবিত্র মাংস তো আমি খাবো না।
– হ মহান কাম করছো কলিজা খাইয়া।
– এমন করো কেনো তুমি আমার সাথে? একটু কলিজাই তো খেয়েছি।
– এমন ভাবে কইতাছস মনে হয় যেনো গরু মুরগির কলিজা খাইছস।
– গরু কিংবা মুরগির অপমান করোনা। তারা হালাল খাবার আর ওই শেফালী চির হারাম।
– মানুষের মাংস মাত্রই হারাম।
– আমি মাংস খাইনি।
– এত কথা বলস ক্যান? মাংস, কলিজা আর কিছুই তুই খাবিনা।
– আমার শান্তি লাগেনা।
– না লাগুক। পরবর্তী শিকার কে? নাজিমুদ্দিন?
– সে না শহরে গেছে? এত সময় আমাদের নেই অপেক্ষা করার জন্য। পরবর্তী শিকার হোসেন।
– পুলিশ?
– হুম।
– ক্যান সে কি করছে? মানে তার অ*পরাধ আছে কিন্তু সেইটা তো খু*ন করার মতো না।
– দুইটা কারণে মূলত তাকে খুন করবো। প্রথমত, সে জানে বস কে। তার সাথে বসের পরিচয় আছে। শেফালীর কাছে যেই খবর পাইনি সেটা তার কাছে পাবো নিশ্চিত। আর দ্বিতীয়ত, সে হলো দুমুখো সাপ। মানুষের সাথে উপরে উপরে ভালো আচরণ করে আর ভিতরে ভিতরে তাদের ক্ষতি করে। মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলছে এই জানো*য়ার। তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।
– জামাল, সবুজ আর শেফালী ছিলো নিতান্তই সাধারণ মানুষ। তাদের সহজেই মা*রতে পারছি কিন্তু এই লোক তো পুলিশ। তারে ক্যামনে মারমু?
– পৃথিবীতে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। আমার কাছে প্ল্যান আছে। তুমি সব ব্যাবস্থা করবে শুধু।
– কি প্ল্যান?
★
এইবার খুব বেশি সময় নিলো না চারু। প্ল্যান পার্ফেক্টভাবে সাজানো হয়েছে। সকল সরঞ্জামও তৈরি। পুলিশটার পর পরবর্তী শিকার হবে নাজিমুদ্দিন আর তারপরই তথাকথিত সেই বস।
নিশিরাতে শেয়ালের ডাক ছাড়িয়ে সবুজ ধানের আইল ঘেসে হেটে চলেছে পুলিশ অফিসার হোসেন। পূর্নিমার আলোয় আলোকিত ধরণী। পুলিশ স্টেশন থেকে বাসায় ফিরছে সে। কাজ করতে করতে বেশ রাত হয়ে গেছে আবার তার উপর আবার ওর একজন সহকর্মী জোর করে কয়েক পেগ খায়িয়ে দিয়েছে। জামাল হোসেন আর সবুজ আলীর কেস নিয়ে তদন্তে নেমেছে সে কিন্তু এখনো অবধি কোনো সুরহা পাওয়া যায়নি। খু*নি নিজের কোনো চিহ্ন ফেলে যায়নি। মৃ*ত্যু গুলোও ছিলো বিভৎস। এমন সময়েই একজন নারীর চিৎকার শোনা গেলো। জঙ্গল থেকে আসছে। সম্ভবত কেউ বিপদে পড়েছে। তাকে বাঁচতে যাওয়া উচিত। সবাই জানলে ডিপার্টমেন্টে তার নাম বাড়বে। সে ধীর পায়ে এগিয়ে চললো জঙ্গলের দিকে। পূর্ণচন্দ্রের আলোকে সব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। কিছুটা ভেতরে ঢুকতেই দেখতে পেলো একজন শাড়ি পরহিত যুবতী পেছন ঘুরে রয়েছে। চুলগুলো খোলা, এলোমেলো চুলগুলো কোমড়ের নিচে নেমে গেছে। হাত, পা দেখে মনে হচ্ছে মেয়েটার গায়ের রঙ দুধে-আলতা। এখনো মেয়েটার মুখ দেখেনি সে তবে নিঃসন্দেহে মেয়েটা অপরূপ সুন্দরী। এই ঠান্ডা হওয়ার মধ্যেও ঘামতে শুরু করলো সে। গ্রামে ভূত প্রেতের অভাব নেই। সে কি তেমন কারোর পাল্লায় পড়লো নাকি? শুকনো একটা ঢোক গিলে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো সেই সুন্দরী নারীমূর্তিটির দিকে,
– ক কে? কে আপনি? এত রাতে এই জঙ্গলে কি করছেন?
কোনো উত্তর পাওয়া গেলো না। হোসেন কয়েক মূহুর্ত চুপ রইলো। তার মনে হচ্ছে আসলেই সে কোনো ভূত প্রেতের পাল্লায় পড়েছে নয়তো সে বেশি খেয়ে নিয়েছে। সে পিছনে ঘোরে ফিরে যাওয়ার জন্য কিন্তু তখনই পেছন থেকে কেউ তার মাথায় আঘাত করলো,
★
জ্ঞান ফিরতেই হোসেন লক্ষ্য করলো তার হাত, পা সব বাধা। তার পাশেই শোনা যাচ্ছে হালকা গুঞ্জন। সম্ভবত একটা ছেলে এবং মেয়ে পরষ্পরের সাথে কথা বলছে। তার জ্ঞান ফিরতে দেখতেই এদের মধ্যে ছেলেটা বলে উঠলো,
– এই দেখ, ওর জ্ঞান ফিরছে।
হোসেন ছেলেটার দিকে তাকালো। কোথাও সে দেখেছে তাকে। কে এইটা? নাজিমুদ্দিন? নাহ, নাজিমুদ্দিন এতটা যুবক নয়। তার বয়স চল্লিশ ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। এই যুবকটির বয়স সম্ভবত ২১-২২। এর বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার পাশে থাকা মেয়েটাকে দেখে এক মূহুর্তের জন্য আৎকে উঠলো হোসেন। মুখ থেকে অস্পষ্ট শব্দে ভেসে এলো,
– চারুলতা!
– বাহ! চিনেছিস তাহলে। ভুলে যাসনি বলে খুশি হলাম।
– আমাকে এখানে আটকে রেখেছো কেনো?
– তোমাকে আমি বুদ্ধিমান ভেবেছিলাম। এই বোকা বোকা প্রশ্ন আমি আশা করিনি তোমার কাছে। বলো তো আমি কেনো তোমাকে আটকেছি?
– আমাকে ছেড়ে দাও। আমি কিছু করিনি।
– চারু তুই কথা এত প্যাচাইতাছোস ক্যান? যা জিজ্ঞেস করার তাড়াতাড়ি কর। আমাগো হাতে সময় নাই।
– আরে রাখো না। আমাদের কাছে এখনো ঘন্টা তিনেক সময় আছে। কাউকে উপরে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য এই তিন ঘন্টা যথেষ্ট।
– আমাকে ছেড়ে দাও বলছি। পরে আফসোস করবে। একজন অন ডিউটি পুলিশ অফিসারকে হত্যার দায় কি হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা নেই তোমাদের।
হামিদ কোথাও থেকে একটা চা*বুক জোগাড় করেছিলো। সেই চা*বুক দিয়ে কষিয়ে আঘা*ত করলো জামাল হোসেনের পিঠে। ব্যাথায় আৎকে উঠলো সে।
– যা বলতে বলমু, যতটুকু বলতে বলমু ঠিক ততটুকুই বলবি। এর বাইরে একটা কথাও না।
– কি জানতে চাও?
– বস কে?
হোসেন নিরুত্তর হয়ে বসে রইলো। নিরবতা সম্মতির লক্ষণ হলেও এই নিরবতা সম্মতির লক্ষণ নয়। সে বলবেনা বস কে।
– জানতাম তুই এমন তেড়িবেড়ি করবি। তোর জন্য গ্রামের থেইকা বিশেষ কারেন্ট নিয়া আসছি।
– বিশেষ কারেন্ট?
– হুম। ইলেক্টিক শক দিয়ে মা*রবো তোরে।
হামিদ মাল্টিফ্লাগের মাধ্যমে কিছু একটা করছে। এই মূহুর্তে হোসেন নিজের উপর প্রচুর বিরক্ত ছিলো। কি দরকার ছিলো কোনো কিছু না বুঝে এই জঙ্গলে চলে আসার? এই ধরনের গাধামির মানে কি? ম*দের প্রতিক্রিয়া নাকি? হোসেন ভেবেছিলো হামিদ তাকে ভয় দেখাচ্ছে কিন্তু কিছুক্ষণের মাঝেই তার ভুল ভাঙলো। এক মূহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো সে ইলেক্ট্রিক শক খে*য়ে।
– এইবার বল, আরো খাবি নাকি ভালোয় ভালোয় বলবি বস কে। কোন নরপি*শাচ আমার জীবনটা এইভাবে নষ্ট করে দিয়েছে। দেখ তোর সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই। ভালো হবে তুই আমাদের বসের পরিচয় জানিয়ে দে আমিও তোকে ছেড়ে দেই। শুধু শুধু ঝামেলায় জড়ানোর কি মানে?
হোসেন কিছু বললো না কিন্তু তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে সে এই প্রস্তাবে রাজি।
– দেখ ভালো করে বলছি। নিজের জীবন কিন্তু আগে। শুধু শুধু তার জন্য নিজের জীবন এভাবে শেষ করিস না। তথাকথিত সেই বস তোকে ব্যাবহার করছে শুধুমাত্র। বলে দে বস কে।
– তোমরা তাকে চেনো। খুব ভালো ভাবেই চেনো।
– কে সে?
– সুবহান!
– সুবহান?
– হ্যাঁ সুবহান। তার কাছেই সেদিন আমরা তোমাকে নিয়ে গিয়েছিলাম।
চারু মনে করার চেষ্টা করছে সুবহান কে কিন্তু এই নামে ও কাউকে চেনে বলে মনে করতে পারছেনা। হোসেন তো বলেছিলো চারু তাকে চেনে। ভয়েস টাও চারুর চেনা চেনা মনে হচ্ছিলো। চারু একবার হামিদের দিকে তাকিয়ে ঈশারায় জিজ্ঞেস করলো সে চিনেছে কি না? হামিদ না বোধক মাথা নাড়লো।
– সুবহান কে? আমরা কোনো সুবহানকে চিনি না।
– চেনো। তার কথাবার্তায় বোঝা যায় তোমরা পূর্বপরিচিত।
– তারে দেখতে কেমন সেইটা বল। (হামিদ)
– তার চেহারা আমি দেখিনি। এমনকি আজ অবধি কেউই তাকে দেখেনি। আন্ডার ওয়ার্ল্ডে সে মাস্ক ম্যান নামে বিশেষ পরিচিত।
– কোথায় থাকে? কি করে? চারুরে ক্যামনে চিনে?
– জানি না। চারুর সাথে প্রথম পরিচয় কিভাবে সেটাও জানি না। চারুর জন্মেরও আগে তার নজর পড়েছিলো চারুর উপর। সে মাঝেমধ্যেই এসে দেখে যেতো চারুকে। সে সম্ভবত শহরবাসী। গ্রাম সে খুব একটা পছন্দ করেনা।
– আর কি কি জানস তার সম্পর্কে?
– তার সম্পর্কে কেউই বিশেষ কিছু জানেনা।
– তার দলে কে কে আছে?
– নাজিমুদ্দিন। তোমাদের বায়োলজিক্যাল বাবা, যাকে শিহাবও খুজছে হন্য হয়ে।
– কেনো? শিহাব কেনো তাকে খুজছে?
– কারণ তোমাদের জন্মদাতা শিহাবেরও জন্মদাতা। সে হন্য হয়েই খুজছে নিজের সেই জন্মদাতাকে।
হোসেনের কথা শুনে দুজনেই প্রচন্ড রকমের অবাক হলো। বিনা মেঘে এখানে বজ্রপাত হলেও বোধহয় ওরা এতটা চমকাতো না যতটা হোসেনের কথায় হচ্ছে।
– কি কইতাছোস এইসব তুই? পাগল হইছস? শিহাব তো জমিদারের পোলা।
– আমি ঠিকই বলছি। শিহাব জমিদারের ছেলে নয়। সে তোমাদেরই বাবার আরেক সন্তান। শিহাবকে জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা যায় আর নাজিমুদ্দিন ওই নবজাতকের কোন দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হয়না তাই রাতের অন্ধকারে চলে আসে সেখান থেকে। শিহাবের ভাগ্য হয়তো ভালো ছিলো তাই জমিদার গিন্নি একই হাসপাতালে মৃত সন্তান জন্ম দেন। সন্তানের জন্য যখন তিনি একেবারে পাগলপ্রায় তখনই জমিদার সাহেব শিহাবকে তার হাতে তুলে দেন। সেদিন থেকেই শিহাব তার সন্তান হিসেবে পরিচিত পায়। মজার কথা কি জানো? তাদের মনে হয় এই কথাটা কেবল তারা তিনজনই জানে। আমাদের দলের প্রত্যেকে জানে এই কথাটা। এমনকি নাজিমুদ্দিনও জানে। অবশ্য শিহাব তার বায়োলজিক্যাল সন অর্থ্যাৎ জৈবিক ছেলে হলেও শিহাবের কিন্তু কোনো পিতৃ পরিচয় নেই। অর্থাৎ সে জারজ। ঠিক তোমাদের মতোই।
শেষাক্ত কথাটি শুনে হামিদের মাথার রক্ত গরম হয়ে উঠলো। সে নাক বরাবর একটা ঘু*সি দিলো হোসেনকে। নাক থেকে গলগল করে র*ক্ত বের হতে শুরু করলো,
– আমরা জারজ না। আমাদের বাপের পরিচয়ও আছে আবার মায়ের পরিচয়ও আছে। শুনতে পেরেছিস তুই?
– তাহলে তোমরা অবৈধ সন্তান।
– বাজে কথা বলবি না। মেজাজ খারাপ হইতাছে। আমরা অবৈধ ক্যামনে হই? আমাগো বাপ মায়ের বিয়া হইছে।
– ধর্মমতে কিন্তু চার বিয়ের বেশি বিয়ে হয় না। আইনেও হয় না তাই তোমাদের বাবা মায়ের বিয়েও কার্যকর হয়নি। তোমাদের মা যে তোমাদের বাপের কততম বউ তা তোমাদের বাবা নিজেও জানেনা। তাহলে হলে নাকি তোমরা অবৈধ সন্তান? অবশ্য তোমার বাবা একটা জিনিস বুঝলে। কোনো নারীর প্রতি তার লোভ কম না। চারুই মনে হয় একমাত্র মেয়ে যে তার হাত থেকে ছাড়া পেয়েছে। সম্ভবত নিজের মেয়ে বলেই ছাড় পেয়েছে। এই লোক কিন্তু নিজের ভাতিজিকেও ছাড়ে নি। এমনকি এই লোকের মাঝে মায়া দয়া বলতেও কিছু নাই। শিহাব ওর নিজের ছেলে জানা শর্তেও কিভাবে ইচ্ছা পূর্বক তার সাথে এমন করতে পারে কে জানে? শিহাবের সাথে তোমার বিয়ে তো কখনোই হতো না। শুধু শুধু বেচারা কষ্ট পেলো। এই সম্পূর্ণ দুনিয়ায় শিহাবই মনে হয় একমাত্র ছেলে যে নিজের সৎ বোন কে ভালোবেসে গৃহত্যাগী হয়েছে।
কথাটা বলে হোসেন এমন ভাবে হাসতে শুরু করলো যেনো মনে হয় খুব বড় একটা কৌতুক শুনিয়েছে সে। চারু এখনো স্তব্ধ হয়ে আছে৷ এইটা কিভাবে সম্ভব? শিহাব চারুর ভাই? চারুর সম্পূর্ণ দুনিয়াই যেনো এলোমেলো লাগছে। এমন তো নয় শিহাব তাকে একা ভালোবেসেছিলো। শিহাবের প্রতি সেই ভালোবাসা কিশোরী চারু বুঝতে না পারলেও আজ আঠারো বছর বয়সী এই যুবতী বুঝতে পারে। নিজের কষ্টের কাছে শাওনের আত্মহত্যার কষ্টটা কষ্ট মনে হয়নি তার। স্বার্থপর হয়ে গিয়েছিলো সে। এমন স্বার্থপরতার পরেও সে মনে করেছিলো সে শাওনকে ভালোবাসে শুধুমাত্র পরিস্থিতির চাপে এমন হয়ে গেছে কিন্তু না। শাওনের প্রতি তার অনুভূতি ছিলোনা কিন্তু শিহাব দুটো কথা শোনাতেই অভিমান ছেয়ে গিয়েছিলো চারুর ভিতর। সে আর কখনো গ্রামে ফিরে যাবেনা পণ করেছিলো। শিহাবের সামান্য দুটো কথায় যার এত অভিমান ভালোবাসা তো সেখানেই ছিলো। শাওনের প্রতি ভালোবাসাটা ছিলো শুধুমাত্র বন্ধুত্বের যা কিশোরী চারু বুঝতে পারেনি কিন্তু এখন এ কোন সর্বনাশা সত্যি সামনে এলো? শিহাব নাজিমুদ্দিনের ছেলে! এই কথা শোনার চেয়ে বোধহয় মৃত্যুও শ্রেয় ছিলো চারুর কাছে।
বিঃদ্রঃ ছোট ছোট বলবেন না প্লিজ। কি পরিমাণ ঝামেলায় আছি বর্ণনা করা সক্ষম না। এই পরিবেশে যে আমি লিখতে পারছি সেটাই অনেক। তার মধ্যে আপনাদের উৎসাহই আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। হাজারো ঝামেলার মাঝেও লিখে ফেলি এইটুকু। আপনাদের ভালোবাসাই আমার লেখার প্রাণ।
#স্নেহা_ইসলাম_প্রিয়া
(কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)
To Be Continued….