#আমি_সেই_চারুলতা
#Shuvra_Ahmed_Priya
#পর্বঃ২৩
_______________________
আচ্ছা শিহাব যখন এ সত্য জানতে পারবে তখন কি হবে? সে কি মেনে নিতে পারবে ভালোবাসার এই করুন অবস্থা? চারু নিশ্চিত জানে, শিহাব কখনোই এমন জঘন্য সত্যি জানতে চাইবেনা। হ্যাঁ জঘন্য সত্যিই তো, এইটাকে জঘন্য সত্যিই বলা চলে। তার এতবছরের ভালোবাসা তার বোন এইটা তো জঘন্য সত্যিই হয়ে গেলো। এ কোন নিয়তির পরিহাস? তবে এই জঘন্য সত্যির চেয়েও জঘন্য তো নাজিমুদ্দিন। সে কিভাবে পারলো শিহাব তার ছেলে জানার শর্তেও চারুর সাথে তার বিয়ে ঠিক করতে? তার বুকে কাপন ধরলো না একবারও? কি হতো যদি ওরা বিয়েটা ভেঙে না দিতো? ছিহ! কি জঘন্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো তখন। তাছাড়া বিয়ে না হয়েই কি ওরা দুজন ভালো আছে? দুটো জীবনই তো সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেলো। চারুর যেই মনে শিহাব জায়গা করে নিয়েছে সেই জায়গাটা থেকে কি তাকে সরানো যাবে? কিন্তু মনে শিহাবকে জায়গা দেওয়াও তো জঘন্যতম পাপ। এই কথাটা চারু মানতে পারলেও তার মন কেনো মানতে পারছেনা?
– ম*দ খাইয়া কি তুই মাত*লামি শুরু করছস? কি কইতাছস এইগুলা? শিহাব নাজিমুদ্দিনের পোলা হইলে তার সাথে ক্যান চারুর বিয়া ঠিক করছিলো নাজিমুদ্দিন?
– নাজিমুদ্দিন করে নি। বস ঠিক করেছিলো। নাজিমুদ্দিন শুধু তার কথা অনুযায়ী কাজ করেছে। তাছাড়া আমাদের কোনো ইচ্ছেই ছিলো না শিহাবের সাথে চারুর বিয়ে দেওয়ার। প্ল্যান ছিলো কোনো একটা অযুহাতে শিহাবের সাথে চারুর বিয়ে ভেঙে দিয়ে বলবো এত ভালো ছেলে হাতছাড়া হয়ে গেলো। আর সেই সুযোগ ও অযুহাতে ওর বিয়ে দিয়ে দেবো জামাল হোসেনের সাথে।
– তারমানে এইসবই তোমাদের পূর্বপরিকল্পনা ছিলো? আমরা শুধু তোমাদের খেলার গুটি ছিলাম?
– হুম।
– কি চাও তোমরা আমার কাছে? কেনো এমন খেলা খেললে আমাদের নিয়ে?
– সেটা আমার অজানা। আমি শুধু ততটুকুই জানি যতটা আমাদের জানানো হয়।
– সকল সত্য কে জানে? তোদের সেই তথাকথিত বস?
– হুম।
– আর কে জানে?
– পরিপূর্ণ ভাবে আর কেউই কিছু জানেনা। সম্পূর্ণ ঘটনা কেবল মাত্র বসই বলতে পারেন তবে নাজিমুদ্দিন অনেক কিছু জানে যা আমার অজানা।
– আর কি কি জানো তুমি?
– আমি আর কিছুই জানি না। আমাকে এখন ছেড়ে দাও।
– বসকে কিভাবে পাবো?
– আমি জানিনা।
– বসের সাথে যোগাযোগ ক্যামনে করস এইটা বল।
– একটা নাম্বার আছে তবে সেটা সবসময় খোলা থাকেনা। মাঝেমধ্যে খোলা পাওয়া যায়?
– কখন কখন?
– নির্দিষ্ট কোনো সময় ধরাবাঁধা নেই। একদিন পর খোলে কিংবা একমাস পর এমনকি একবছরে একবার খোলারও রেকর্ড আছে।
হামিদ হোসেনের ফোন থেকে বসের নাম্বারটা নিলো। পুরো মোবাইল ঘাটাঘাটি করেও বস সম্পর্কিত আর কোনো তথ্য পাওয়া গেলো না।
– আমি আর কিছুই জানিনা। এখন আমাকে যেতে দাও।
– হুম যাইতে তো দিবোই।
– বাধন খুলো হাতের।
– বাধন খুলতে হইবো না। খুব দ্রুতই তোরে উপরে পাঠায়া দিমু। তহন ইচ্ছামতো স্বাধীন হইয়া ঘুরাঘুরি করিস।
– তোমরা আমাকে কথা দিয়েছিলে।
হামিদ উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। চারুর ঠোঁটের কোণেও দেখা গেলো ভয়ানক এক হাসি। সুন্দরী দের হাসি যে এত ভয়ানক হয় তা জানা ছিলো না হোসেনের। তার এই অবস্থ দেখে হামিদ বলে উঠলো,
– দেখলি, ক্যান মারার আগে তাদের ম*দ খাওয়াইতাম? মাথা কাম করেনা তহন। নইলে একটা পুলিশ হইয়া হোসেন কি এমন ধাধায় পরে? স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে সে জীবনেও এইসব স্বীকার করতো না কারণ সে বুঝতে পারতো আমরা তারে ছাইড়া দিমু না।
– তাহলে আরেক নরপি*শাচের শা*স্তি শুরু করা যাক?
– হুম।
হামিদ প্রথমেই ব্যাগ থেকে সুই বের করলো। এগিয়ে গেলো হোসেনের দিকে। সে এখনো বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে হামিদের দিকে। হামিদ চুপচাপ সুন্দর মতো গিয়ে সু*ই*টা সুন্দর করে আস্তে আস্তে ধীরে ধীরে ঢুকিয়ে দিলো হোসেনের চোখে।
যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলো সে কিন্তু তার যন্ত্রণাময় আওয়াজ শোনার মতো এখানে কেউ নেই। চারপাশে জঙ্গল। জঙ্গলের ঠিক মধ্যভাগে আছে তারা। চোখ থেকে র*ক্ত পড়ছে হোসেনের। আর ঠিক মাঝখানে চোখের মনি বরাবর ঢুকে রয়েছে একটি সু*ই। ভয়ংকর প্রশান্তিকর দৃশ্য। এই চোখ দিয়েই তো সে চারুর প্রতি কুদৃষ্টি দিয়েছিলো। এই শাস্তি তো অনেক আগেই তার পাওনা ছিলো। হামিদ একই চোখে আরো একবার সু*ই ঢোকালো। হোসেনের চিৎকারে মুখরিত হয়ে আছে জঙ্গল। অন্তত চারুর তো তাই মনে হচ্ছে। এইবার চারুও এগিয়ে গেলো সেদিকে। আবার সেই ঐতিহ্যবাহী লঙ্কাগুড়া। কেনো যেনো হামিদ এই জিনিসটার মায়া এখনো ছাড়তে পারেনি। সম্ভবত নিজে ভুক্তভোগী ছিলো তাই। চারু লঙ্কাগুড়োটা ঢেলে দিলো তার আরেক চো*খে। চিৎকার করতে করতে হাত দিয়ে চোখ ডলতে শুরু করলো হোসেন। পানি পানি করে চিৎকার করতে লাগলো। তার চিৎকার শুনে হামিদ কেরোসিনের বোতল এগিয়ে দিলো হোসেনের দিকে। সে এখন চোখে দেখতে পায়না। যা কিছুই তাকে দেওয়া সম্ভব। কেরোসিনের বোতল থেকে কেরোসিন সরাসরি ঢেলে দিলো চোখে। তার এমন বোকামিতে শব্দ করে হেসে ফেললো দুজন। আরে তোর চোখ না হয় গেছে। নাক তো ঠিক আছে। অবশ্য এমন কিছু দেখার আশাতেই ছিলো চারু আর হামিদ। হামিদ আবার এগিয়ে গেলো তার দিকে। ধীরে ধীরে মুখ থেকে একটা একটা করে দা*ত তুলে আনছে। এই ভয়ানক দৃশ্যও যে কতটা সুন্দর হতে পারে সেটা বোঝার কেউ নেই। যেকেউ দেখলেই এখন ওদের কোনো হিং*স্র সিরিয়াল কি*লার মনে করবে। করুক সমস্যা কোথায়? আগে তো ওরা এমন ছিলোনা। গ্রামের সহজ সরল নিরীহ দুই ছেলে মেয়ে ছিলো। এদের এমন হিং*স্র হওয়ার পেছনে তো দায়ী এই নরপিশা*চেরাই। হামিদ মোটামুটি দশটা দা*ত তুলে নিয়েছে তার। গতানুগতিক ধারায় এইবার জিহ্বাটাকেও প্রথমে লাইটার দিয়ে জ্বা*লালো তার তারপর মুখের ভিতর থাকা অবস্থাতেই সেটার কয়েক টুকরা করলো। তারপর হাতের আঙুল! হাতের প্রতিটি আঙু*লকে তিন টুকরো করলো হামিদ। চারু শুধু এইসব দেখেই যাচ্ছে। এদের শা*স্তি দেওয়ার চেয়ে এদের কষ্ট দেখতে ওর বেশি ভালো লাগে। একসময় ওরাও তো একই কাজ করেছিলো। সময় কাউকে ছেড়ে দেয়না। আজ যেইটাকে তুই নিজের বলে বাহাদুরি করছো, কাল অন্য কেউ সেটা তোমাকে দেখিয়ে বাহাদুরি করবে। হোসনকে খুব বেশি শাস্তি দেওয়া হলো না। ওর কাছ থেকে অনেক অজানাই জেনেছে চারু। এইবার চারু এগিয়ে গেলো হোসেনের দিকে। হাতে তুলে নিলো র*ক্তাক্ত ধা*রালো ছু*ড়ি। ধীরে ধীরে সব হাড় ভেঙে হাত দিকে কলিজাটা বের করে আনলো সে। আবারও এক অদ্ভুত নেসা গ্রাস করলো তাকে। কি অসম্ভব সুন্দর লাগছে কলিজাটাকে। এইটাকে খেতে ইচ্ছে করছে। চারু একবার কামড় বসিয়ে দিলো সেখানে। চারুকে আবারও এই কাচা কলিজা খেতে দেখে হামিদের শরীর শিউরে উঠলো একই সাথে সেখানে ভর করলো প্রচন্ড রাগ। চারু তার কথা শোনেনি। বারবার মানা করার শর্তেও সে আবার এমন কাচা কলিজা খাচ্ছে। হামিদ হাতের সামনে থাকা লঙ্কার গুড়োটা ছুড়ে মারলো নীচে। চারু সেটা দেখলেও বিশেষ পাত্তা দিলো না। এড়িয়ে গেলো সেটাকে। লঙ্কাগুড়োটা তার পায়ের কাছে এসে পড়লো। চারু সেটাকে হাতে তুলে নিয়ে একবার ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলো। এইবার কাচা কলিজায় লঙ্কাগুড়োটা মাখিয়ে আবারও সেখানে এক কামড় বসিয়ে দিলো।
– “বাহ! নতুন টেষ্ট।”
চারুর এমন আচরণে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো হামিদ। এইটা কি ছিলো?
★
বাড়িতে আসার পরপরই চারু খেয়াল করলো হামিদ তার সাথে বিন্দুমাত্র কথা বলছেনা। হামিদের এমন আচরণের কারণ সে খুজে পেলোনা। গাড়ীতেও সম্পূর্ণ রাস্তায় হামিদ কথা বলেনি। চারু ভেবেছিলো গাড়ি চালাতে অসুবিধা হবে তাই কথা বলছেনা কিন্তু এখন এতক্ষণ যাবত কথা না বলায় চারু বুঝতে পারছে হামিদ তাকে এড়িয়ে চলছে। চারু নিজ মনে প্রশ্ন রাখলো না।
– আমি কি কিছু করেছি?
হামিদ উত্তর না দিয়ে জামাকাপড় নিতে শুরু করলো। গোসলে যাবে সে।
– কি হলো উত্তর দাও না কেনো? আমি কি কিছু করেছি?
– না তা করবি ক্যান? সব তো আমি করছি। তোরে মানা করি নাই ওইটা তুই খাবি না? মানা করি নাই?
– আমি তো,,
– চুপ থাক। তোর আর কিছু কইতে হইবো না। আমার কথা মানবি ক্যান? আমি আর তোর কে? বড় কলেজে পড়স। ভালো টাকা কামাস। আমি না থাকলেও তো তোর চইলা যাইবো। আমার কথা ক্যান মানবি?
– তুমি কি বলছো এইসব?
– ভুল কইছি?
– অবশ্যই ভুল বলছো। তুমি কে মানে কি? তুমি আমার ভাই। আমার একমাত্র অভিভাবক।
– তুই সেইটা মানস?
– মানবো না কেনো?
– মানলে আমার কথা শুনস না ক্যান?
– ওরা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। ওদের শাস্তি দেখতে চাই আমি কিন্তু শুধু দেখে আমার শান্তি হয়না। এর জন্য এইটা প্রয়োজন।
– না আর না। তুই আমারে কথা দে আর এইসব খাবি না।
– তাহলে তুমি শান্তি পাবে?
– হ
– আচ্ছা ঠিক আছে। তোমার শান্তির জন্যই নাহয় আর খাবো না।
– চারু!
– হুম।
– তোর কি সত্যিই মনে হয় শিহাব নাজিমুদ্দিনের পোলা?
– জানিনা।
– ক্যামনে সম্ভব এইটা? এই লোক আমার মায়েরে এমনে ঠকাইলো?
চারুর পুরোনো ক্ষত যেনো জীবিত হয়ে উঠলো। এমন হওয়া কি খুব প্রয়োজন ছিলো? চারু শিহাবকে পাবেনা সে জানে। পেতোও না কখনো কিন্তু তাই বলে সে কিছুতেই শিহাবকে নিজের ভাই মানতে পারছেনা। শিহাব কি পারবে সেইটা মেনে নিতে? এ কেমন জীবন? জীবন কি এতটা যন্ত্রণাময় হয়? আর শিহাব যদি ওর ভাই হয়েই থাকে তবে কেনো দুজনের মনে এই অজানা অনুভূতি জন্ম হয়েছিলো? জীবন কেনো এত খেলছে ওদের নিয়ে? কি দোষ ওদের?
চারুর চিন্তাভাবনার ঘোর কাটলো ফোনের আওয়াজে। হামিদের ফোন বাজছে। ফোন তুলতেই ওপাশ থেকে নারীকণ্ঠ আওয়াজ পাওয়া গেলো,
– হামিদ ভাই কই আপনে? জলদি বাসায় আসেন। ফাতেমা ভাবির ব্যাথা উঠছে। বাচ্চা মনে হয় আজই হইয়া যাইবো।
– আপনি তাকে প্লিজ হাসপাতালে নিয়ে যান। আমরা আসছি।
– আপনে কে?
– আমি চারুলতা।
– ও চারু তুমি? হামিদ ভাই কি তোমার ওইখানে?
– হ্যাঁ। একটু বাতরুমে গেছে। আপনি প্লিজ ভাবিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
– এই রাইতে ভালা ডাক্তার পাওয়া যাইবো না। আমি দাই ডাকছি। হেই বাচ্চা প্রসব করাইতাছে। এই ফাকেই আমি হামিদ ভাইরে ফোন দিলাম।
– আচ্ছা আমরা এখনই আসছি।
দাই দিয়ে বাচ্চা প্রসব করানো সম্পর্কে চারু অবগত। ওর জন্মও এভাবে হয়েছে এমনকি গ্রামের প্রায় সবার জন্মই এভাবে হয়েছে।
হামিদ বেড়িয়ে আসতে চারু তাকে সবকিছু জানিয়ে বেড়িয়ে পড়লো বাসার উদ্দেশ্যে। বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে শোনা গেলো হামিদের মেয়ে হয়েছে। যেসব মহিলারা ঘরের ভিতরে ছিলো তারা হামিদকে দেখে বাইরে বেড়িয়ে এলো। এই জায়গাটা মূলত মফস্বল। যারা থাকে তারা প্রায় প্রত্যেকেই গ্রামের বাসিন্দা তাই এখনও তাদের মাঝে সেই প্রভাবটা রয়ে গেছে। চারু হামিদের সাথে ভিতরে ঢুকলো। হামিদকে দেখে ফাতেমা যতটা খুশি হলো চারুকে দেখেই তার মুখ ততটা মলিন হয়ে গেলো। চারুর ব্যাপারটা বেশ খারাপ লাগলো। ও তো রোজ রোজ থাকতে আসেনা এখানে। নিজের ভাইয়ের মেয়েকে দেখার অধিকারও কি তার নেই? তখনই ফাতেমা বলে উঠলো,
– এহনো আপনের মাইয়ারে কেউ কোলে নেয় নাই। আপনেই প্রথম ওরে কোলে নেন।
বাচ্চাকে হামিদ প্রথমে কোলে নিলো না। সে প্রথমেই তাকে চারুর কোলে দিলো। ফাতেমা রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো চারুর দিকে। চারু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। সে আজও জানেনা ফাতেমা কেনো এমন করে তার সাথে।
– দেখ চারু পুরা তোর মতো হইছে।
– আমার মতো কেনো হবে? তোমার মতো হয়েছে। মেয়ে বলে আমার মতো লাগছে।
হামিদ প্রতিউত্তর করলোনা। চারু ঠিকই বলেছে। চারুকে হামিদের ফিমেল ফার্সন বললেও ভুল হবেনা। একই দেখতে দুজন। চারু একবার বাচ্চাটার দিকে তাকালো। কি সুন্দর পরীর মতো মেয়েটা। ফর্সা গায়ের রঙ, চোখের পাপড়ি গুলো বড় বড় আর সুন্দর গোলাপি ঠোঁট। হাত পা ছোট ছোট। একেবারে নরম। প্রথম দিকে বাচ্চাদের চেহারা বোঝা যায় না কিন্তু তাও যেনো বোঝা যাচ্ছে বাচ্চাটা হামিদের মতো। ঘুমের মধ্যেই বাচ্চাটা ঠোঁট বাকিয়ে একটু হেসে উঠলো। হামিদ উচ্ছ্বসিত হয়ে চারুকে বললো,
– দেখ ছোট কালে তুইও এমনেই হাসতি। এই হাসি দেখে আমার কি যে মায়া লাগতো। বারবার কোলে নিতে ইচ্ছা করতো কিন্তু যখনই আমি কোলে নিতাম তখন তোর মনে হইতো আমার কোল বাতরুম। একপর্যায়ে বিরক্ত হইয়া তোরে কোলে নেওয়াই ছাইড়া দিয়েছিলাম। কিন্তু তুই কান্না করতি। আমার কোলে উঠতে চাইতি। যখনই মায়া করে কোলে নিতাম তখনই আবার একই কাজ।
হামিদের কথার ধরণে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো চারু। আহারে বেচারা! হামিদ এইবার নিজের মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বললো,
– তোমারে একেবারে পরীর মতো দেহা যায় মা। বড় হইয়া ফুপ্পির মতো হইবা।
– কিন্তু দোয়া করি, তোমার জীবন যেনো তোমার ফুপ্পির মতো না হয়। অনেক সুন্দর একটা জীবন তুমি পাও।
কথাটা বলে চারু ছোট একটা চুমু একে দিলো বাচ্চাটার কপালে। কি পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে সে।
বিঃদ্রঃ আজও আপনাদের বিরিয়ানি খাওয়াতে পারলাম না। অনেক চেষ্টা করেও সম্ভব হলো না। রিচেক হয়নি। হ্যাপি রিডিং।
#স্নেহা_ইসলাম_প্রিয়া
(কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)
To Be Continued….