রিস্টার্ট পার্ট-৮

0
4510

#রিস্টার্ট
#পিকলি_পিকু
#পার্ট_৮

প্রতিদিনের মতো স্কুলে লাঞ্চের পর গল্প করছে নাদিয়া ও তার সহকর্মীরা। আফরা আজ কেক এনেছে।

– এটা সাব্বির এনেছে। উউউউউ! চকলেট! ডার্ক চকলেট অন কেক। একটা বাইট নিয়ে দেখ। মুখের ভেতর যেন আনন্দের বোমা ফুটছে! উমমমমমম!
– কালকে না বললি তোর ডায়েট চলছে।
– আগামী কাল থেকে আবার শুরু করবো। সাব্বির বলল, আমি নাকি শুকিয়ে যাচ্ছি। ওর ভালো লাগছে না আমি ঘাস লতা পাতা খাচ্ছি। তাই কেক আনলো। খেয়ে দেখ। মনে আনন্দ চলে আসবে।
– আমি কেক পছন্দ করি না। জানিস না?
– যাহ! ঢং!

অন্য কলিগেরা আফরার কেক দেখে সাবাড় করে দিল। আফরার মন খারাপ হয়ে গেল। এত কিছুর মাঝে সুলোচনা ম্যাডাম বললেন,
– নাদিয়া, ইজ এভ্রিথিং অলরাইট নাও?
– ইয়াপ!
– তোমার বরের কী খবর? স্যরি বলে এখন?
– হুম।

ফাহিমা ম্যাডাম আড়চোখে চেয়ে বললেন,

– এখনো কিছু চলছে।
– আপনি তো অনেক কিছু জানেন। বলুন দেখি, কী চলছে?
– তোমার মুখে একটা স্যাডনেস আছে।
– কীসের?
– সেটা তুমিই ভালো জানো। ইউ ক্যান শেয়ার। আমরা আইডিয়া দিতে পারি।
– আপাতত অন্য একজন থেকে আইডিয়া নিচ্ছি। আপনাদের দরকার হলে পরে জানাবো।

আফরা এতক্ষণ দোয়া দরূদ পড়ছিল। কারণ নাদিয়া যদি একবার রেগে যেত, তবে শেষ। বাড়ি ফেরার সময় নাদিয়ার হঠাৎ বেকারিতে চোখ গেল। আজ যেহেতু চেনা জানা কথা হবে তো কেক খেতে খেতেই কথা বলা যাবে। জাহিদ কে ও একবার কেক খেতে দেখেছিল। ওর বোধহয় পছন্দ। কেক কিনে বাড়ি আসার পর মনে হলো ও কী করছে! ওর চুল গুলো সব সামনে, টেবিলে কেক রাখা। ও এসব কেন করছে? ও এত ডেসপারেট কেন? ও জাহিদ কে এত দাম দেয় কেন? কেক! ও জীবনে শুধু আফরার জন্য কেক কিনেছে, তাও আফরা বলত তাই। রাহু বা অংশু ভাইয়া কেও কখনো এত দাম দেয় নি। অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। এই কারণেই জাহিদ বেশি ভাব দেখায়। নিজেকে এখন আফরার বর সাব্বিরের মতো লাগে।

বাইরের পোষাক বদলে ও যখন একটা কুর্তি পরছিল তখন ও সবচেয়ে সুন্দর নীল কুর্তি টা পরলো। আজ তো প্রথম কথা হওয়ার কথা। রেডিও শুনতে শুনতে তৈরী হচ্ছিল নাদিয়া। রেডিও তে বাঁজছে, ” এক বৈশাখে দেখা হলো দুজনার। ” নাদিয়া গুনগুন করছে। আজকে আরজে ঐশী পুরনো দিনের গান বাজাচ্ছে। পুরোটা শুনতে পারবে না হয়তো। যদি জাহিদ তাড়াতাড়ি আসে? ঐ যে, জাহিদের আগমন। আজকেও তাড়াতাড়ি! বাহ!

– আপনার সমস্যা না থাকলে কী আমরা এখন কথা বলতে বসতে পারি?
– এখন! একটু ফ্রেশ হয়ে আসি?
– অবশ্যই। এখন মানে এখনই তা নয়। আপনি আসুন, আমি নাস্তা দিচ্ছি। এরপর। মানে তাড়া নেই। আস্তে ধীরে আসুন।

জাহিদ অবাক হচ্ছে। অরনী সম্পর্কে ও যা যা জানত তা সব ঠিক। এত বছর পরে ও সব একই। ও সবসময় ওর স্পেশাল দিনে নীল রংটাই পরে। আজও তাই। অরনী খুব সিরিয়াস মেয়ে। ও সব কিছুতেই সর্বোচ্চ এফোর্ট দেয়। জাহিদ ওর পোষাক বদলে ট্রাউজার আর টিশার্টে নাদিয়ার সামনে। জিনিসটা একদম যাচ্ছে না। নাদিয়া ফিটফাট, জাহিদ সদরঘাট। মানে ঘরের পোষাক। মেয়েরা একটু বেশি করে এটাই তার প্রমাণ। নাদিয়ার খারাপ লাগছে কারণ মনে হচ্ছে ও মরিয়া হয়ে উঠেছে। যেন কোনো আত্মমর্যাদা নেই ওর। তবুও মুখে হাসি নিয়ে জাহিদকে কেক আর কফি এগিয়ে দিলো। জাহিদ কেক দেখে ভাবছে, ‘কেক! আজকে কী ওনার জন্মদিন? কাল পিপি সাহেব বলল আর উনি হাসলেন। এটাই কারণ ছিল?’ এখন কী বলবে?

– খেয়ে দেখুন।
– জ্বী। আসলে,
– কী?
– স্যরি।

নাদিয়ার মুখের হাসি গায়েব হয়ে গেল। ‘তো উনি এখন কেক ও খায় না। সেদিন তো খাচ্ছিল। আজকে আমি আনলাম তাই?’ নাদিয়া মুখে হাসি নিয়ে বলল,

– সমস্যা নেই।
– আমি আসলে জানতাম না।
– না, না। আমি জানতাম না। আমার ভুল হয়েছে।
– আমরা দুজনেই জানতাম। কাল পিপি স্যার বললেন ও।
– পিপি কখন বলল?
– আপনি হাসলেন না? আমি আপনার জন্মদিন জানি না?

নাদিয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে হাসতে লাগলো। জাহিদ বুঝতে পারছে না হচ্ছে টা কী। তাও বলল,

– উইশিং ইউ আ বিলেটেড হ্যাপি বার্থডে। আই মিন বার্থডে কী এখনো চলছে?
– জাহিদ! আমার বার্থডে আসতে এখনো দেরি আছে। আর এটা আমার বার্থডে কেক না।
– তো?
– এমনি কিনলাম। ভাবলাম আপনি খাবেন। মানে সন্ধ্যা বেলা গল্প করতে করতে।
– ও!

কী বোকা জাহিদ! লজ্জা লাগছে। একটু কেক মুখে দিয়ে হাত দিয়ে ঢেকে ফেলল। চকলেট! ডার্ক চকলেট! মুখের ভেতর যেন আনন্দের বোমা ফুটছে! উমমমমম! খুবই অকওয়ার্ড লাগছে। আনন্দে মুখ থেকে আওয়াজ না বেরিয়ে যায়। তাহলে আরো লজ্জা পাবে।
– তো আপনার চকলেট কেক পছন্দ?
– হুম! না! না! একদম না।
– ওওও!

নাদিয়ার মন খারাপ হয়ে গেল। পছন্দ না। তাই জোর করে খাচ্ছে। মুখে হাত দিয়ে রেখেছে যাতে ও বুঝতে না পারে ওর খারাপ লাগছে।

– বেশি খারাপ লাগলে খাওয়ার দরকার নেই।
– না না। আমার পছন্দ চকলেট কেক।

জাহিদ ভাবছে পছন্দ না বলে ফেলল কেন? এখন তো সত্যি বললেও বিশ্বাস করবে না। গাঁধা জাহিদ! নাদিয়া মনে মনে বলল, “মিথ্যেবাদী।” মুডটাই নষ্ট করে দিল। তাও কথা তো বলতে হবে।

– আপনার বার্থডে কবে জাহিদ ?
– আমার বার্থডে?
জাহিদ কেক মুখেই বলছিল কথা টা। এরপর মুখে আবার হাত দিয়ে শেষ করে বলল,

– চলে গেছে।
– কবে ছিল?
– গত মাসের চার তারিখ।
– মানে?

নাদিয়া হিসাব করে দেখল। ড্যাম ইট! ও যেদিন ওকে উপোস রেখেছিল সে রাত ই। মানে জন্মদিনের রাত ও না খেয়ে ছিল।

– আ’ম রিয়েলি স্যরি জাহিদ! আমি জানতাম না। জানলে এমন কাজ করতাম না!
– কী কাজ?
– আপনি সেদিন না খেয়ে ছিলেন।
– ও! সমস্যা নেই। আমার অভ্যাস আছে। আপনি কেক খাচ্ছেন না কেন?
– আসলে, আমি কেক পছন্দ করি না। মিষ্টি জিনিস ভালো লাগে না।
– ও আচ্ছা।

নাদিয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,

– তো পরিচিতি পর্ব।
– কেমন?
– শুরু থেকে।

জাহিদ কেকটার দিকে তাকিয়ে আছে। ওর আরেকটা খাওয়ার ইচ্ছে ছিল। থাক। ফ্রিজেই থাকবে। উনি তো কেক খান না। পরে খাওয়া যাবে।

– আমি ভলান্টিয়ার করছি। হাই! আমি নাদিয়া সামাদ। একজন স্কুল শিক্ষক।
– আমি জাহিদ আহমেদ। জেনারেল ম্যানেজার, সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনাল।
– আপনি কোথায় থাকেন?
– হুম?

নাদিয়া নিজেই হাসতে থাকে। কোথায় থাকে প্রশ্ন টা একটু বেশি বেশি করে ফেলেছে। এইটা তো জানে।

– স্যরি স্যরি। আপনার দেশের বাড়ি কোথায়? (হাসতে হাসতে)
– আমার দেশের বাড়ি কুমিল্লা।
– ও!

নাদিয়া চুপ করে থাকে। খুবই অকওয়ার্ড একটা অবস্থা। জাহিদ ইতস্তত করে বলল,
– আপনাদের?
– চাঁদপুর।
– ওকে।

জাহিদ মাথা নাড়তে নাড়তে ভাবলো একদম ঠিক যা শুনেছিল। অরনী চন্দ্রবিন্দু টা খুব সুন্দর করে উচ্চারণ করে। “চাঁদপুর, পাঁচ, কাঁচামরিচ। ” আগেও খেয়াল করেছিল।

– উহুম উহুম! এরপর? পরিবার পরিচিত।
– ওকে।
– আমি? ওকে আমি ভলান্টিয়ার করছি। আমার পরিবারে মা বাবা, দুই ভাই, একটা ভাবি আর ভাতিজি। একটা ভাই আমার বড়, অংশু। একটা ভাই ছোট, রাহু। ভাবির নাম মিষ্টি আর ভাতিজি অর্ষা। আপনার?
– মা বাবা নেই। আমরা মোট তিনভাই। আমি ছোট। ভাইদের নাম সালাম আর সাহিদ। বড় ভাবি মোহনা আর ছোট ভাবি সানিয়া।
– বাচ্চারা?
– ও। বড় ভাইয়ের দুই মেয়ে , ছোট ভাইয়ের একটা মেয়ে দুইটা ছেলে। যমজ।
– ওদের নাম কী জানতে পারি?
– ওদের নাম?

জাহিদ চিন্তা করে ওদের নাম কী যেন? বিধি না, বিথী?

– কী হলো?
– বলছি, বড় ভাইয়ার মেয়ে বিথী আর বিন্তি। ছোট ভাইয়ার মেয়ে রি, হৃদি।
– আর ছেলেরা?
– ওদের নাম। কী যেন।
– আপনি ওদের নাম,
– সি, সি, আ।
– জাহিদ!
– সিয়াম!
– জাহিদ!!!

অরনী হঠাৎ হাসতে শুরু করল। জাহিদ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। কী হলো!

– আমি বুঝতে পারছি না, আমি কী হাসবো না কাঁদব?
– মানে?
– আমি এতদিন ভাবতাম আপনি শুধু আমার ব্যাপারে অমনোযোগী। কিন্তু না।
– আমি ভুলে গেছি একজনের নাম। স্যরি।
– শুধু একজনের ই নাম ভোলেননি।
– জ্বী?
– ওটা বিন্তি না বিন্নি। বিন্নি একটা ধানের নাম। আর হৃদি না, রিদ্ধি। ওরা তো তাও মেয়ে। চাচা হিসেবে আপনার তো ভাতিজাদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কথা। তার উপর ওরা যমজ।
– ওদের নাম ও ভুল?
– হ্যাঁ। ও সিয়াম না, সিয়ান আর ওর ভাই ইয়ান। আশ্চর্য! আপনার ওদের কে কোলে নেওয়ার মুহূর্তও মনে নেই?

জাহিদ চুপ করে আছে। নাদিয়া কপালে হাত দিয়ে বসে আছে।
– আপনি ওদের কোলেই নেননি?
– নিয়েছি। আসলে ওরা খুলনা ছিল যখন হয়েছিল। পরে নিয়েছি।
– কবে?
– বিয়ের সময়।
– ও মাই গড! চেঞ্জ দ্য টপিক। স্কুল।
– আমার?
– জ্বী। নাকি স্কুলের নাম ও ভুলে গেছেন। চাকরি কীভাবে করেন! ও হ্যাঁ, এখন তো শুধু চাকরি সম্বন্ধীয় ডেটা আপনার মাথায়।
– মনে আছে।
– কোনটা?
– ইস্ট ওয়েস্ট গ্রামার স্কুল।
– ইংলিশ মিডিয়াম?
– জ্বী।
– পশ!
– জ্বী?
– না মানে একটা তেই পড়েছেন? আর কোনো স্কুল নেই?

জাহিদ নিজের নিঃশ্বাস বন্ধ করে রাখলো। ‘ বলা যাবে না। বাকিটার নাম বলা যাবে না। বললে আর কিচ্ছুর উত্তর দেওয়া যাবে না। চুপ। মিথ্যা না বলে অন্তত চুপ। জাহিদ, সেদিন অরনীর হাত ধরে কাহিনী তুমিই বাড়িয়েছ। যেমন চলছে চলতে দাও।’

– কী হলো? ওকে। আমি কয়টা তে পড়েছি বলতে পারব না। প্রথমে অগ্রণী কিন্ডারগার্টেন। আসলে তখন থেকেই অরনী নামটা বাদ দিতে চাইতাম। সবাই আমাকে অগ্রণী ডাকতো তাই। এরপর মা যেটাতে টিচার ছিল, ধানমন্ডি ল্যাব। রাহু আর আমি ততদিন এক সাথে ছিলাম। তারপর মতিঝিল আইডিয়াল ফাইভ পর্যন্ত । এরপর সিক্সে রাহু আদমজী ক্যান্টনমেন্ট, আমি শহীদ আনোয়ার গার্লস। দুটো পাশাপাশি আর ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে তাই চাচ্চু বলেছিল এইটা বেস্ট। আর্মিদের স্কুল, আর্মি দের নিয়ম। নাইনে ভিকারুননিসা। এবার চাচ্চু বলল এইটা বেস্ট। কলেজে হলি ক্রস, বাবা বলল এটা বেস্ট।
– শেষ?
– হ্যাঁ।
– ছয়টা।

নাদিয়া হাসতে লাগলো। জাহিদ গুনেও ফেলেছে। জাহিদ ও মুচকি হাসলো। ও পড়েছে মাত্র দুইটা স্কুলে। আরেকটা বলা যাবে না।
– ভার্সিটি?
– ডিইউ আইবিএ, বিবিএ, আর ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহাম পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন।
– নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে ইংলিশ এ অনার্স, দেন মাস্টার্স ইউনিভার্সিটি অব টরোন্টো।

জাহিদ নাদিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। এই কথা গুলো বলার সময় নাদিয়া চেহারাতে খুব কষ্টের ছাপ দেখা যাচ্ছে। ওর তো ইংলিশ পড়ার কথা ছিল না। জাহিদের খুব জানতে ইচ্ছে করছে ও হঠাৎ মেডিকেলে না পড়ে ইংলিশ কেন পড়ল। এমন তো ছিল না যে ও পড়াশুনাতে ভালো করেনি। ও তো সবসময় ফার্স্ট হতো। কী হয়েছিল ওর সাথে? যদি জিজ্ঞেস করে তবে আবার পাল্টা প্রশ্নের সম্মুখীন হবে যে ও এত কিছু কী করে জানে? জাহিদ যে অরনীর ব্যাপারে অনেক কিছুই জানে তা নাদিয়া জানে না। ওর জানা উচিত না।

– আপনার গার্লফ্রেন্ড ছিল স্কুলে? বা ক্রাশ?
– না।
– কাউকে ভালো লাগে নি?
– না।
– আর। আর কী বলব?
– আজকে থাক। পরে।
– ওকে।

জাহিদ এরপর ওর অফিসের কাজ করতে বসে। কাজ করতে করতে ও হঠাৎ ও অতীতে চলে যায়। ও লেভেলে জাহিদ যখন ওর স্কুল বদলায় তখন। ওর বাবা মারা যাওয়ার পর ওর স্কুলের খরচ সালাম ভাইয়ার কাঁধে চলে আসে। সেই মুহূর্তে সেই খরচ জোগাতে না পেরে জাহিদ স্কলারশিপে একটি প্রাইভেট ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি হয়। খুব কম স্কুলে স্কলারশিপ দেওয়া হয়। তার মধ্যে এটা বেস্ট ছিল। সেখানে বাংলাদেশের সব ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ছেলেমেয়েরা পড়ত। দুই একজনকেই শুধু স্কলারশিপ দেওয়া হতো, যদিও তারা এই স্কুলে টিকতে পারত না। মাত্রই জাহিদের এক স্কলারশিপ প্রাপ্ত সহপাঠী টিসি নিয়ে চলে গেছে। আর বাকি সবাই জাহিদকে একঘরে করে দিয়েছে। সবাই অপেক্ষা তে ছিল ও কখন ছেড়ে যাবে সে স্কুল। তখনই ওর জীবনে আসে একটি মেয়ে, সারা। স্কুলের সবচেয়ে সুন্দরী আর পপুলার ছিল সে। ওর বাবা প্রচুর বড়লোক। কিন্তু ও বাকি সবার মতো ছিল না। ও ছিল দয়ালু, জাহিদের পাশে বসতো। ওর সাথে অংক করত। ওরা একসাথে লাঞ্চ করত। তবে অনেকেই সেটা পছন্দ করতো না। তাই সেটা সারার বাবার কানে পৌঁছে দিল। তৎক্ষণাৎ তিনি জাহিদের স্কলারশিপ ক্যান্সেলের ব্যবস্থা নিলেন। জাহিদ অনেক ভয়ে ছিল, কারণ ওর স্কলারশিপ ক্যান্সেল করলে ও এই মুহুর্তে কোথায় যাবে? ওর ভাইয়ার পক্ষে মায়ের চিকিৎসা আর ওর পড়াশুনা একসাথে সম্ভব না। এই স্কুল থেকে বের করে দিলে আর কোনো ইন্সটিটিউটই ওকে জায়গা দেবে না।

– জাহিদ, আপনি কী আজ ঘুমাবেন না?
– আরেকটু কাজ বাকি আছে। আসছি।
– ওকে।

পরদিন সকালে নাদিয়া স্কুলে চলে গেল। লাঞ্চ টাইমে ঐ কেক গুলো ওর সহকর্মীদের খাইয়ে দিল। বাসায় যখন কেউ কেক খায় না তাহলে রেখে কী করবে। সেদিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে জাহিদ ফ্রিজে কেক গুলো খুঁজে দেখেছে। ফ্রিজে কেক নেই। হতাশ হয়ে লাভ ও নেই। নাদিয়া হয়তো দাঁড়োয়ানকেই দিয়ে দিয়েছে। আহ ! কেক! জাহিদের ফোন জ্বলে উঠলো। ড. পিপি কাল সন্ধ্যায় কথা বলতে চায়।

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here