#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১২
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আমাকে এই মেসেজটি কে দিবে? রিপ্লাই দিবো নাকি না বুঝতেছি না। মনে হয় কেউ মজা করেছে তাই আর কোনো রিপ্লাই দিলাম না। তানহার সাথে কথা শেষ করে পড়া গুলো কমপ্লিট করে নিলাম। রাতের খাবার খেয়ে রুমে এসে দেখলাম আবার ওই নাম্বার থেকে মেসেজ এইবার বলেছে, তোমাকে একবার দেখার জন্য কতোবার তোমার সামনে আসি তুমি কি দেখো না আমায়?
অবাক হয়ে গেলাম এই মেসেজ গুলো কে করছে? সাজ্জাদ নয় ত? ব্লক করে দিবো নাকি বুঝতে পারছি না। কিন্তু ব্লক করলাম না কে মেসেজ দিচ্ছে তা আমাকে জানতেই হবে। কথা গুলো ভেবে একটু দির রুমে গেলাম কতক্ষণ গল্প করে আবার রুমে ফিরে আসলাম।
আদ্রিতা চলে যাওয়ার পর সামিরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। ভাবছে কি হতে চলেছে ৩টি জীবনের আদোও কি তারা সুখি হতে পারবে সবাই?নাকি সবার জীবন এলোমেলো হয়ে যাবে?
এদিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটি ছেলে সামিরাকে দেখছে। সে হয়তো বুঝতে পারছে সামিরা কি বিষয় নিয়ে চিন্তিত। ছেলেটি মনে মনে বলে উঠলো, অসময়ী বৃষ্টি চিন্তা করো না আর কিছুদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
সামিরা আর ও কতক্ষণ দাঁড়িয়ে রুমে চলে গেলো। সামিরা বড্ড চাপা স্বভাবের কোনো কিছু নিয়ে অনেক কষ্ট পেলে ও কখনো বলবে না কাউকে। সে চাইলেই বিয়ে ভেঙে দিতে পারছে না। সামিরা জানতো না সাজ্জাদের সাথে তার বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। তার বাবা যখন সামিরাকে জিজ্ঞেস করেছিলো সামিরার বিয়েতে মত আছে কি না? তখন সামিরা বলেছিলো যেহেতু বাবার পছন্দ তাই তার মত আছে। বাবার পছন্দ খারাপ হবে না সেজন্য আগে থেকে ছেলেকে দেখার প্রয়োজন মনে করি নি। অন্যদিকে মেয়ের মত আছে দেখে আত্মীয় স্বজনদের জানানো হয় বিয়ের ব্যাপারে। এখন কথা বার্তা অনেক এগিয়ে গিয়েছে বিয়ের তারিখ পর্যন্ত ঠিক করা কিভাবে বিয়ে ভেঙে দেওয়া যাবে কিছুই বুঝতে পারছে না সামিরা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘুমিয়ে পড়লো।
*********
সাজ্জাদ মাএ তার সব কাজ শেষ করলো। আজকে আদ্রিতার সাথে অন্য একটি ছেলেকে দেখে তার মোটেও ভালো লাগে নি। কিন্তু আদ্রিতাকে সরাসরি কিছু বলার অধিকার নেই তার। চারটি জীবন একে অন্যের সাথে জড়িয়ে আছে। এর মধ্যে ২টি জীবন যদি একএে হয় যায় তাহলে একজনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
*******
স্বাধীন নিজে ও চিন্তিত সে বুঝতে পারছে না সাজ্জাদের সিদ্ধান্ত কি সঠিক কি না? আর সাজ্জাদ যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে কি সবার ভালো হবে নাকি খারাপ তাও বুঝতে পারছে না।
*******
আকে রাতে ৪০ টি মেয়ে প্রাচার করতে হবে।
কিন্তু বস পুলিশদের নজর আছে সব জায়গায়।
যেভাবেই হোক মেয়েদের প্রাচার করতে হবে আজকে। আর আদ্রিতা নামের মেয়েটিকে তুলে আন। পারলে ওর সাথে অন্য মেয়েরা থাকলে তাদের ও তুলে আন।
ওকে বস।
সকালে ~
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়লাম। আজকে আলো আসবে না আমার একাই যেতে হবে। রাস্তায় রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় আরিয়ান স্যার আসলো। বললো কি ব্যাপার একা দাঁড়িয়ে যে?
স্যার আজকে কলেজে আলো আসবে না তাই রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। ( আদ্রিতা)
ও আচ্ছা, (আরিয়ান)
স্যার আমার সাথে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কথা বলছে।
সাজ্জাদ ঠিক করেছিলো আজকে আদ্রিতাকে কলেঝে পৌঁছে দিবে। কারন সাজ্জাদ শতভাগ নিশ্চিত S.R এর লোক আদ্রিতার আশে পাশে আছে। কিন্তু রাস্তায় আরিয়ানের সাথে দেখে সাজ্জাদের রাগ বেড়ে গেলো। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ রেখে আদ্রিতাকে বললো গাড়িতে উঠো। আরিয়ান বললো কিরে তুই কি প্রায়ই ওকে কলেজে দেয়ে আসিস?
হ্যাঁ, কলেজের সামনে দিয়েই অফিস যায়। বাচ্চা মেয়ে বলা ত যায় না রাস্তায় কখন কার নজরে পড়ে তাই আমি দিয়ে আসি ওকে।
কথাটি কেনো জানি আরিয়ানের ভালো লাগলো না। আচ্ছা আদ্রিতা তুমি যাও কথাটি বলে আরিয়ান চলে গেলো।
কিসের বাচ্চা মেয়ে? আমি ইন্টার ১ম বর্ষের স্টুডেন্ট। আর আমি যাবো না আপনার সাথে। (আদ্রিতা)
রাস্তায় কোনো রকম ঝামেলা করো না। চুপচাপ গাড়িতে বসো। (সাজ্জাদ)
না যাবো না। ( আদ্রিতা)
চুপচাপ যাবে নাকি তুলে নিয়ে যাবো? সাজ্জাদ একটি হাসি দিয়ে বললো আমার কোলে উঠার শখ হয়েছে নাকি? তাহলে আসো তোমাকে গাড়িতে নিয়ে যায়। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদের কথা শুনে লজ্জায় যেনো সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে। মানুষটার মুখে কি কোনো কথা আটকায় না নাকি? এমনি আমাদের কথা রাস্তায় অনেক লোক শুনছে। তাই আর কথা না বাড়িয়ে সাজ্জাদের সাথে গাড়িতে উঠে পড়লাম। পিছনে বসতে নিলাম সাজ্জাদ বললো সামনে বসো। কথা বাড়ালাম না বসে পড়লাম। গাড়ি চলছে আপন গতিতে। গাড়িতে একটি গান বাজছে…
কোন রুপকথার দেশে
আমি থাকছি মিলেমিশে
কেন বইছে হাওয়া দখিন দিকে খুব
সে কি দেখতে পেয়েও পায়না
নাকি দেখতে আমায় চায়না
তবু সুযোগ রা দেয় তারই ঘরে ডুব
বোঝেনা সে বোঝেনা……..
.
তার চোখে যেন দেখলাম
আজ দিনটা বড় মেঘলা
বুঝি বৃষ্টি নামবে বলল সে আমায়..!
কেন মেঘ সরেনা রত্তি
কেন গল্প হয়না সত্যি
আমি মরতে তারই তৈরি দোটানায়..দোটানায়
বোঝেনা সে বোঝেনা
.
যদি একটি বারও পারতো
সব চিন্তা ভুলে আসতে
আমি সব হারাতাম তাকে পেতে হায়..!
কবে পায়ের শেকল খুলবে
আর প্রেমের ফার্দা উড়বে
আমি চেয়ে থাকি সেই দিনের সীমানায়
বোঝেনা সে বোঝেনা
এতোক্ষণ গাড়িতে বসে গান শুনছিলাম। হঠাৎ মনে পড়লো সেদিন সন্ধ্যার কথা সাজ্জাদকে জিজ্ঞেস করতে হবে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম সেদিন পার্কে কি হয়েছিলো আপনি আমাকে আঘাত করেছিলেন কেনো? আমি জানি সেদিন খাবারে কেনো ভেজাল ছিলো না। কি হয়েছিলো সেদিন? সাজ্জাদ আমার কথার জবাব দিচ্ছে না এক মনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। রেগে দিয়ে তার হাত ধরে টান দিলাম গাড়ি এলোমেলো ভাবে চলা শুরু করলো। সাজ্জাদ তাড়াতাড়ি আদ্রিতাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি ঠিকভাবে চালানো শুরু করলো। গাড়িটি একটি সাইডে রেখে বললো,
পাগল হয়ে গোছো তুমি? দেখছো গাড়ি চালাচ্ছি। তবুও কেনো এরকম করলে? আর একটু দেরি হলে বড় একটি এক্সিডেন্টে হয়ে যেতে পারতো।
আদ্রিতা নিজে ও বুঝতে পারে নি এরকম কিছু হবে। হঠাৎ গাড়ি এলোমেলো ভাবে চলাই সে নিজেও ভয় পেয়ে গেছে।
সরি আমি বুঝতে পারি নি এরকম কিছু হবে। কিন্তু আপনি আমার কথার জবাব দেন কি হয়েছিলো সেদিন? আপনি আমার মাথায় আঘাত করেছিলেন কোনো? আর আপনি সেদিন রাতে যখন বাসায় হামলা হলো তখন ও কি ভাবে আসলেন? সব বিপদের সময় আপনি যুক্ত থাকেন কিভাবে? জবাব দিন আমাকে।
আদ্রিতা, আমার মনে হয় দেশে S.R ফিরে এসেছে। আর তার নজর আমাদের উপর আছে।
সাজ্জাদের একথা শুনে আমার আগের সব কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে। এজন্যই সাজ্জাদ আদ্রিতাকে জানাতে চাই নি ব্যাপারটি।
আদ্রিতার শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখে সাজ্জাদ দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিতাকে নামালো গাড়ি থেকে কিন্তু গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে কিছু লোক ঘিরে দাড়ালো সাজ্জাদ আর আদ্রিতাকে…….
#চলবে
[ সাজ্জাদ মানুষটা কিন্তু বাস্তবে ও সব সময় আমার পাশে থাকতো 🫣 যেই সমস্যা হতো না কেনো সে আগলে নিতো ❤️
দেখি সাজ্জাদ কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামিরাকে বিয়ে করবে নাকি না। আর আরিয়ান স্যার সবসময় আমাদের আশে পাশে ঘুরে কেনো? আর আমার ফোনে মেসেজ কে দিয়েছিলো? 🤔 ]