#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
#পর্ব – ২৫ (বার্থডে স্পেশাল)
হঠাৎ এভাবে সারপ্রাইজ পাওয়াতে কিছুক্ষণ থ হয়ে রইলাম আমি। ভাবতে পারিনি এমন কিছু পেয়ে যাবো। আনভীরের দৃষ্টি বিচরণ করে চলছ আমার কম্পনরত ঠোঁটে, চোখে, গলার ভাঁজে আর চিবুকে। বিস্ময়ে শুকনো ঢোক গিলছি আমি, ঠোঁট কাঁপছে অল্প বিস্তর ভাবে, চিবুক ক্রমান্বয়ে পরিণত হলো রক্তিম আভায়। আমি অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম সেভাবেই। মাথা ঘুরিয়ে দেখলাম শিউলি ভাবি, আজরান ভাইয়া, নাহিদ ভাইয়া, মামুন, রিফাত আর রিমি আপুও এসেছে। সবার চোখে মুখে আত্নআনন্দের বহিঃপ্রকাশ। আমায় এভাবে বিস্ময় পানে উনাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আজরান ভাইয়া বললেন,
‘ আনভীর তোমায় ইমোশনলেস করার জন্য বুঝি বার্থডে প্ল্যান করেছে? এসব ভাবনা উড়াও আহি! ইন্জয় দিস। এন্ড ওয়ান্স এগেই হ্যাপি বার্থডে।’
আমি তথারুপি পুনরায় তাকাই আনভীরের দিকে। উনার হাতে এখনও কেক আছে। সেখানে সুসজ্জিত ক্যান্ডেলের আলো উনার রূপে প্রতিফলিত হওয়াতে করে তুলছে মোহগ্রস্থ। আনভীরের ঠোঁট কোলে পরিতৃপ্তির হাসি। চকচক করা ঘোলাটে চোখ জোড়া জানান দিচ্ছে আমার প্রতি পাহাড় সমান তীব্র অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
‘ এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে? ক্যান্ডেলে ফুঁ দাও!’
মাথা নাড়াই আমি স্বাচ্ছন্দ্যে। মোমবাতিতে ফু দেওয়ার আগে আনভীর আবিষ্ট কন্ঠে বলেন,
‘ উইশ করবে না?’
ওহ হ্যাঁ। উত্তেজনায় আচ্ছন্ন হয়ে বেমালুম ভুলেই বসেছিলাম ব্যাপারটা। তৎক্ষণাৎ চোখ বন্ধ করি আমি। পূর্বে এমন ঘটনা হলে সহস্রবার ভাবতাম যে কি উইশ করা যায়। কিন্ত আজ ভাবিনি একদন্ড। উইশ করে ক্যান্ডেলে ফু দিলাম আমি। সবাই পেছনে বড়সড় করে হাততালি দিলো। পুনর্বার চিৎকার করে বললো,
‘ হ্যাপি বার্থডে।’
খুশিতে আত্নহারা সবাই। রিমি আপু বললো,
‘কেট কাটো এবার ভাবি?’
নাহিদ ভাইয়ার কাছ থেকে নাইফ নিয়ে আমি কেক কাটলাম এবার। প্রথম পিসটা শিউলি ভাবির উদ্দেশ্যে এগিয়ে দিতেই আনভীর যেন ক্ষেপে গেলেন। আগবাড়িয়ে বললেন,
‘ আগে আমাকে দাও।’
আনভীরের তথারূপ কথা শুনে মিটমিটিয়ে হেসে উঠলো সবাই। আমিও অপ্রসন্ন অবস্থায় ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম উনার দিকে। সামান্য একটা কেকই তো! এ নিয়ে বাচ্চাদের মতো বলার কি হলো? শিউলি ভাবি বিদ্রুপ করে বললেন,
‘ আমার দেবরটা আচ্ছা হিংসুটে হয়েছে তো! বউয়ের হাতের কেকের প্রথম পিসটা পর্যন্ত আমায় খেতে দিলো না।’
আনভীর পাত্তা দিলেন না শিউলি ভাবির কথায়। ব্যক্ত করলেন,
‘ আহির কাছে ফার্স্ট প্রায়োরিটি হবো আমি। দ্যান তোমরা একে একে আসবে। সেটা কেকের বেলাতেই হোক আর অন্য কিছুর বেলাতেই হোক!’
আমি মাথা নুয়ে ফেললাম লজ্জায়। পরপর উনার বলা দুটো কথা এই শীতেও আমায় উষ্ণ রাঙায় আবৃত করছে। রিমি আপু বললেন,
‘ ভাবি গো, আনভীর ভাইকে জলদি কেকটা খাইয়ে দাও।’
‘ কি হলো বউ! ওয়েট করছি তো!’
উনার মুখে ‘ বউ’ শুনে বরাবরের মতো এবারও আমার শরীরে এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করলো। ধীরগ্রস্থে তাকালাম উনার দিকে। উনি অধীর আগ্রহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ঠোঁট প্রান্তে বিদ্যমান আবছা দুষ্টু হাসি। ভ্রু নাচিয়ে দেখছেন আমার কার্যকলাপ। সে ব্যাপারটা আমার দৃষ্টিগোচর হলো না। কেকের পিসটা খাইয়ে দিতেই পেছন থেকে সবাই ‘ওহহো!’ করে ওঠাতে আমি যেন আরও বেপরোয়া বনে গেলাম। এর মধ্যেই একটা ভয়ঙ্কর কাজ করেছিলেন আনভীর।
সকলের দৃষ্টি উপেক্ষা করে কেক খাওয়ার সময়েই ফট করে ঠোঁট ছোয়ালেন আমার আঙুলে। আমার শিরদাঁড়া দিয়ে এক অন্যরকম শীতল প্রবাহ অতিবাহিত হলো হঠাৎ এমন কিছু হওয়াতে। আসলে আনভীর যে আচমকা এরকম একটা কাজ করে বসবেন সেই আশা আমি বিন্দুমাত্র করিনি। এভাবেই কেক কাটা, কেক খাওয়া, ভাগাভাগির পর্ব অল্প সময়ের মধ্যেই। আমার কাছে সবকিছু কেমন যেন স্বপ্নের মতো লাগছিলো। মনে হচ্ছিল যে আমি উড়ে বেড়াচ্ছি দূর পাল্লার মেঘের ভেলায়।
জীবনের এতগুলো জন্মদিন পার হলো কিন্ত এতটা আনন্দ করেছি এই প্রথম। এতটা ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ এর সাক্ষাৎ পেয়েছি এই প্রথম।
আনভীরের বাবা ছোট একটা নেকলেস গিফ্ট করেছেন আমায়। মাথায় হাত দিয়ে বিনয়ীর সহিত বললেন,
‘ আরও বড় হও মা। তোমায় আমি কিন্ত বড্ড আদর করি। এজন্য না যে তুমি আনভীরের স্ত্রী বা আমার বন্ধুর মেয়ে বলে। তুমি মেয়েটা আপাদমস্তক মিষ্টি গড়নের মেয়ে। যাকে স্নেহ না করে পারা যায় না। তোমার ঠোঁটের হাসি দেখলে আমার সবসময়ই তোমার মায়ের কথা মনে পড়ে। কেননা তোমার মা’ও এভাবে হাসতো মিষ্টি করে৷’
আনভীরের বাবাই প্রথম এবং একমাত্র মানুষ, যার কাছে আমি শুনেছি নিজের মায়ের এত গল্প। আমার আব্বু আর আম্মুর লাভ ম্যারিজ ছিলো। দু’জনেরই বন্ধু ছিলেন বাবা। আমার আব্বুর আর্থিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না থাকাতে নানু বাড়ির কেউই তাদের সম্পর্কে রাজি ছিলো না। পরন্ত বাবাই হেল্প করে উনাদের। কিন্ত আমি ভেবে পাই না এটা কেমন ভালোবাসা যেখানে স্ত্রীর মৃত্যুর পর একজন পিতা তার মেয়েকে অন্য একজনের কাছে সপে দেয়? বস্তুতঃ আমি আমার আম্মুর প্রতি কখনোই দেখিনি আব্বুর ভালোবাসা। আমার মনে এক বিদ্বেষ জেগেছিলো যে ভালোবাসা এমনই, মৃত্যুর পর কেউ তার জন্য পরোয়া করে না। মনে হয় যে আনভীরের এরূপ পাগলামিও চলে যাবে আমায় একা রেখে।
আমার ভাবনার সুতা কাটলো রিমি আপুর ডাক পড়াতে। তারপর আমি সেসব ভুলিয়ে সবার সাথে সময় কাটানোর জন্য মশগুল হয়ে পড়লাম। মা আসেনি এখানে। তার কারন উনার অসুস্থতা। তাই বাবাকে অগত্যাই পূর্বে বেড়িয়ে পড়তে হলো যেহেতু উনি বাড়িতে একা আছেন। আমি এক এক করে গিফ্ট খুলতে থাকলাম সবার। শিউলি ভাবি সুন্দর কারুকাজ করা একটি ড্রেস গিফ্ট করেছেন গিফ্ট করেছেন আমায়। ড্রেসটি আসলেই খুব সুন্দর। রিমি আপু দিয়েছে ঘড়ি। মামুন ভাইয়া একটা গিফ্ট র ্যাপিং পেপার দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছে আর বলেছে এখন না খুলতে। সারপ্রাইজ আছে এখানে। এ নিয়ে সবাই হুলস্থূল কান্ড শুরু করলো৷ বিশেষত রিমি আপু। বললো, সবাই গিফ্ট দেখিয়েছে তাহলে এটা দেখাবে না কেন। পরন্ত হার মেনে নিলো সবাই মামুন ভাইয়ার কীর্তিকলাপের জন্য। এবার সবার সন্দিহান দৃষ্টি আছড়ে পড়লো ওয়ান এন্ড অনলি নাহিদ ভাইয়ার ওপর। নাহিদ ভাইয়া ভড়কে গিয়েছে এমন দৃষ্টিতে। বললো,
‘ কি হলো, এমন ভুতুমপেচার মতো আমারে দেখছো কেনো সবাই?’
‘ শালা সবাই গিফ্ট দিলো তুই দিবি না।’
মামুন ভাইয়ার কথায় সে ভাব নিয়ে বললো,
‘ আরে আমি তো ভাবির স্পেশাল মানুষ। জন্ম জন্মান্তরের পরিচয় আমাদের৷ শুভদৃষ্টি থেকেই আমরা চেষ্টা করি কিভাবে একে অপরকে ল্যাং মেরে নিচে ফেলতে পারবো৷ এখন এখানে কি গিফ্ট দেওয়া দেওয়ি চলে?’
‘ তারমানে তুই গিফ্ট আনিস নি!’
‘ আরে এনেছি তো! যতই হোক, আহি আনভীর ভাইয়ের বউ। আর তার বউ মানেই তো আমার বউ!’
এতক্ষণ নাহিদ ভাইয়া ভাব নিয়ে থাকলেও শেষ কথাটি যে ভাবের চোটে এভাবে বলে ফেলবে তা হয়তো আমাদের বা নাহিদ ভাইয়ার সবারই কল্পনার বাইরে ছিলো। নাহিদ ভাইয়া শুকনো ঢোক গিলে তাকালো আনভীরের দিকে। উনি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছেন। দাঁতে দাঁত চেপে নাহিদ ভাইয়াকে বললেন,
‘ সবার সামনে চড় থাপ্পড় খাওয়ার শখ জেগেছে তোর?’
‘ আরে মাফ করেন ভাই, আমি অমনে বলতে চাইনি।’
দুজনের এমন অবস্থা দেখে আমাদের হাসির কোলাহলে চারপাশ মেতে উঠলো। রেস্টুরেন্টে যারা ম্যানেজার বা ওয়েটার ওয়েট্রেস ছিলো ওরাও হাসছে সবাই। শিউলি ভাবি বললো,
‘ আচ্ছা এবার গিফ্ট দে আহিকে।’
নাহিদ ভাইয়া দাঁত কেলানি দিয়ে একটা প্যাকেট দিলো আমায়। আমি সেটা খুলে থতমত খেয়ে গেলাম মোটামুটি। কেননা সেখানে নাহিদ ভাইয়ার সুন্দর একটা ছবি ছিলো। অবশ্যই সুন্দর বলা চলে, মনে হয় যেন হাজার খুঁজে নিজের বেস্ট পোজ এর এই ছবি বের করেছে। আমি বললাম,
‘ এটা কি?’
‘ আরে ভাবি তুমি সেদিন বলেছিলে না যে আর কত সিঙ্গেল থাকবো, আপনারও একজন ভাবি দরকার। তাই মানে..’
লজ্জার ভঙ্গি করলেন নাহিদ ভাইয়া। বললেন,
‘ আমার এই ছবি দিয়ে মেয়ে খুঁজে আপনার ভাবি বানিয়ে নিন। এটাই আপনার গিফ্ট হবে৷ দারুন না!’
বলেই নাহিদ ভাইয়ার সর্বাঙ্গে দুষ্টুমির পরিতৃপ্তি বহিঃপ্রকাশ ভেসে উঠলো। আমি বুঝেছিলাম, আমি আগেই বুঝেছিলাম এই শয়তান ব্যাটায় এমন কিছুই করবে। রাগমিশ্রিত নয়নে পলকহীন ভাবে সেই রাগের আভাস ফুটিয়ে উঠলো মেকি হাসি ফুটে উঠলো আমার চোখে। বললাম,
‘ প্রবলেম নট ব্রাদার। আমার আগের বাসায় একজন আপা কাজ করতো। আমরা তাকে ডাকতাম সকিনা বিবি বলে। সকিনা আর নাহিদ! দারুন মানাবে।’
আমার কথা শুনে আরও একপ্রকার হাসিতে মশগুলো হয়ে উঠলো সবাই। এভাবেই অনেকক্ষণ আড্ডা মাস্তি চললো আমাদের। সবকিছুর মধ্যে আনভীর শুধু নির্বিকার। পলকহীন ভাবেই উনি দেখে চলছিলেন আমায় সারাটা সময়। শেষে অবশিষ্ট যে কেক গুলো ছিলো ওগুলোও ছাড়েননি নাহিদ ভাইয়া আর রিমি আপু। সবার ওপর ক্রিমের বর্ষণ ফেলে গোলমেলে কান্ড বাধিয়ে ফেলেছেন। আমিও ছিলাম এই ক্রিম বর্ষণের ভিক্টিম। কিন্ত সবকিছুর মধ্যে কেউ আনভীরের গায়ে ক্রিম লাগানোর মতো দুদন্ড সাহস করলো না।
রিমি আপু অদ্ভুত হাসি হেসে বললো,
‘ ভ..ভাই ক্রিম লাগাবো।’
আনভীর প্রতিউত্তর করলেন না রিমি আপুর কথায়। আমি তখন মুখের ক্রিম টিস্যু দিয়ে মুছতে মগ্ন। আনভীর এবার আচমকা চেয়ার ছেড়ে উঠে আমার কাছে এলেন। আমায় চরম অবাক করে দিয়ে দুহাত ধরে কাছে টেনে নিলেন আমায়। তারপর নিজের গাল আমার গালের সাথে সন্তর্পনে ঘষে দিতেই আমি বিমূঢ় হয়ে রইলাম। ঘটনাটি ঘটেছিলো মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য। আনভীর তারপর বললেন,
‘ ক্রিম লাগিয়ে নিয়েছি মিসেস এর গার্ল থেকে। এখন প্রোপার বার্থডে পার্টি লাগছে তো?’
‘ প্রোপার মানে? সুপার ডুপার লাগছে ভাই!’
রিমি আপুর টিটকারী মূলক কথা আমায় যেন লজ্জায় আবিষ্ট করে ফেললো। কিছুক্ষণ মূর্তমানের মতো তাকিয়ে ছিলাম নিচের দিকে।
শিউলি ভাবি বললো,
‘ আনভীর তুমি গিফ্ট দিলে না আহিকে?’
‘ কি গিফ্ট দিবো আবার। বার্থডে পার্টি না অর্গানাইজ করলাম? আরও কিছু দিতে হবে?’
‘ বলে কি ছেলেটা! বার্থডে পার্টি অর্গানাইজ আর গিফ্ট দেওয়া এক হলো?’
আনভীর হাসলেন কিছুক্ষণ। অতঃপর বললেন,
‘ দেখা যাক!’
কথাটি অজান্তেই মন খারাপ করে দিলো। সত্যি কথা বলতে গিফ্ট আমার কাছে ভেল্যু করে না, ভেল্যু করে গিফ্ট দেওয়ার মতো সুন্দর সুন্দর মানুষগুলো। আমি সত্যি বলতে আনভীরের গিফ্টের জন্যই বেশি আশা করছিলাম। পরন্ত ভাবনাটি উড়িয়ে দিলাম আমি। সবাই তো একরকম নাও হতে পারে।
তারপর সবাই রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়ি আমরা। আজরান ভাইয়া ঘুমুঘুম কন্ঠে বললো,
‘ নাহিদ তুই ড্রাইভ কর। আমি ঘুমের ঠেলায় ড্রাইভ করতে পারবো না।’
তারপর একে একে দুই গাড়িতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো সবাই। আমার হাতে একগাদা গিফ্ট আর চুলে বার্থডে স্প্রে দিয়ে মাখামাখি। আনভীর গাড়িতে বসলেন। সেই সাথে বসলাম আমিও। মুখে মলিনতার ছাপ। আনভীর হঠাৎ ইন্জিন স্টাট করেও অফ করে দিলেন। তাকালেন আমার দিকে। বললেন,
‘ তুমি হ্যাপি হও নি!’
‘ কি বলছেন? অবশ্যই আমি হ্যাপি হয়েছি। এমন সারপ্রাইজের অভিজ্ঞতা এই প্রথম আমার। কেই বা না হ্যাপি হবে যদি আপনার মতো এত কেয়ারিং কাউকে পায়?’
আমি কথাটি বলে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লাম। আনভীর বললেন,
‘ তবুও তো মুখটা ভালো দেখাচ্ছে না।’
বলে আমার একটু কাছে এলেন উনি।বললেন,
‘ গিফ্ট দেইনি বলে মন খারাপ।’
আমি দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে যাই এতে। ব্যাস্ত হয়ে বলে উঠলাম,
‘ আরে না না। এমন কিছুই না। আসলে…’
আমায় কিছু বলতে না দিয়ে আনভীর হঠাৎ কোমড় চেপে নিজের কাছে টেনে নিলেন আমায়৷ আমায় গালের কাছে ঠোঁট নিয়ে বেশ সময় নিয়ে একটা কোমল স্পর্শ করলেন। আমার শরীর নড়ে উঠলো এ এক নতুন অনুভূতিতে। মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হলো না। আনভীর সরে আসলেন এবার। বললেন,
‘ আনভীর মানেই স্পেশাল। তাই তোমার বার্থডে গিফ্টটাও নাহয় স্পেশাল করে দিবো নে?’
আমি কথা বলতে পারলাম না। মাথা নত করে বসে রইলাম সেভাবেই। উনি মুচকি হেসে গাড়ি স্টার্ট করলেন। বললেন,
‘ ক্রিমটা ভালোমতো মুছোনি। তাই কিস করার সময় ওটারও টেস্ট পেলাম। ইয়াম্মি!’
ব্লাশ করছি আমি লোকটার নির্লজ্জ কথাবার্তায়। কিন্ত তাকানোর সাহস পেলাম না। হে আল্লাহ! তোমার এই বিশাল ধরনীতে আমার লজ্জা লুকানোর জন্য একটু জায়গা খুঁজে বের করো। আমি সেখানে ঢুকে যাই।
.
.
.
.
.
.
~চলবে ইনশাআল্লাহ
আজ ক্লাসের জন্য নয়টায় বেরিয়েছি এবং সেই সাথে কোচিং পর্ব শেষ করে এসেছি বিকেল চারটায়। খাওয়া-দাওয়ার পর্ব এর মধ্যে বের করা সময়সাপেক্ষ হয়ে গিয়েছে আমার জন্য। আজকের এই ১৬০০+ শব্দের পর্বটা তিনদিন ধরে লিখছিলাম একটু একটু করে। রিচেক করা হয়নি। ভুলক্রুটি ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ থাকবে৷
Group: ❤️কায়াভ্রমর❤️-{Stories of Kayanat Afrin}