Romantic_Devil পাঠ-৯

#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
09.

” ভাতিজা, ওরে চুপ করে সিট থেকে উইঠে যাইতে ক। আমি কিন্তু এখন রেগে যাবো, রেগে গেলে কিন্তু আমার লুঙ্গি টুঙি সব খুলে যাইবো কই দিলাম।

চাচার কথাটা জরিনার বানুর কানে পৌঁছে যায়। সে সিট থেকে দৌড়ে আসে।

” হায় আল্লাহ! চাচা আন্নে ভুলে রাগিয়েন না। এই বাসের ভিত্রে লুঙ্গি খুইল্লে একটা কেলেংকারী হই যাইবো।

” লুঙ্গি খুললে আমার কী?

” হায় আপা, এইটা কি কন চাচার লুঙ্গি খুললে সর্বনাশ হই যাইবো।

” কোনো সর্বনাশ হবে না, তুমি গিয়ে ওই মহিলার পাশে বসো। আর চাচা গিয়ে তোমার সিটে বসুক, তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

সিনহার কথায় জরিনা বানু রাজি হয়ে মহিলার পাশে গিয়ে বসে।

” এক্কেরে এবার ভাতিজার কোলে উইঠা বইসা থাক। লজ্জা শরম কিছু নাই মাইয়ার।

” হ ইচ্ছা হলে কোলে উইঠাই বইসা থাকবো৷ তুমি বলতে হবে না।

” আমি তোরে কোলে নিতে পারব না।

” তোরে কথা বলতে বলছে কে? আমি কথা বলতেছি তো,তুই শুধু শুনতে থাক।

” মানে কী? তুই আমারে নিয়া কথা বলবি। আমি চুপ করে বসে থাকবো?

” হুম বসে থাকবি। কথা বলতে চাইলে,শুধু আমারে নিয়া কথা বলবি।

” এতো ইচ্ছা নাই আমার তোরে নিয়া কথা বলার।

” আমার না ঘুম পাচ্ছে, ঘুমাবো।

” বাসে ঘুমাবি?

সিনহার মুখ থেকে আর জবাব আসে না। সে ইমরানের কাঁধে হেলান দিয়ে ঢলে পড়ে।

” আরে কি আজব মেয়ে, ঘুমিয়ে পড়লো?

বাসের ঝাঁকুনিতে সিনহার মাথা বারবার নিচে পড়ে যাচ্ছিল। ইমরান সিনহার মাথাটা আস্তে উঠিয়ে নিজের হাত দিয়ে সিনহাকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে। সিনহাও আরাম পেয়ে ইমরানের আরো কাছে চলে আসে।

!¡!

বিকালের দিকে তারা গ্রামের রাস্তায় এসে নামে। সবাই হেটেই সিনহাদের বাড়ির দিকে এগুচ্ছে। সাত আট মিনিটের পথ। রাস্তা টাও মানুষ হাটা চলাচল করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। এই রাস্তায় রিক্সা চলে, তাও দুই একটা দেখা যায়। রিক্সা ছাড়া কোনো বাহন চলাচল করার ব্যবস্থা নেই।

বাড়ির কাছে আসতেই দেখে সিনহার বাবা রফিক সাহেব দাঁড়িয়ে আছে।সিনহা বাবাকে দেখে সবার আগেই দৌড়ে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরে।

” বাবা কেমন আছো?

” ভালো আছি আম্মাজান। তুই কেমন আছিস?

” আমিও ভালো আছি।

সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় শেষে রফিক সাহেব সবাইকে নিয়ে বাসার ভিতরে নিয়ে যায়।

ইমরানকে দেখে সিনহার ছোট বোন মারিয়া দৌড়ে আসে।

” ভাইয়া কেমন আছো.?

” ভালো আছি। তুমি?

” আমিও। ভাইয়া তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।(হেসে)

” থ্যাঙ্কিউ। তোমাকেও সুন্দর লাগছে মারিয়া।(হেসে)

দুজনের কথা শুনে সিনহা ভ্রূ কুঁচকায়।

” মারিয়া যা নিজের কাজে যা। ভাইয়া অনেক ক্লান্ত। অনেক দূর জার্নি করে এসেছে, এখন রেস্ট নিবে।

” কোথায়? ভাইয়াকে তো ক্লান্ত মনে হচ্ছে না।

” তোর সমস্যা কী? ক্লান্ত বলছি না। যা নিজের কাজে যা।

” আপু তুই এরকম করিস কেনো? যেনো তোর জামাই লাগে? ঢঙ।

মারিয়া বিরক্তি নিয়ে চলে যায়। সিনহা রেগে ইমরানের দিকে তাকায়। তা দেখে ইমরান,

” কী সমস্যা? আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?

” এতোবার যে আমি ক্লান্ত ক্লান্ত বলতেছি। তুই বোবা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলি কেনো? বলতে পারিস নাই,তুই যে ক্লান্ত।

” যাক বাবা, আমি তো তেমন ক্লান্ত না। ঠিক আছি আমি।

” ক্লান্ত না হলে এখানে দাঁড়িয়ে নাচতে থাক।

সিনহা রাগ দেখিয়ে চলে যায়। এই মেয়ে হঠাৎ এমন করছে কেনো আমার সাথে।?

!¡!

সন্ধ্যায় নাস্তা খাওয়া শেষে সবাই আড্ডা দিতে বসে।
আড্ডার জন্য বাড়ির উঠানকেই তারা বেছে নিয়েছে।
সিনিয়ররা বসেছে এক পাশে। জুনিয়ররা বসেছে আরেকপাশে।

মারিয়া ট্রুথ ওর ডেয়ার খেলার প্রস্তাব রাখল। সবাই তাতে সায় দিলো। কোকাকোলার বোতল এনে প্রথমে মারিয়াই বোতল টা ঘুরিয়ে দেয়। বোতলের মুখ প্রথমেই এসে দাঁড়ায় ইমরানের দিকে মুখ করে।

” ভাইয়া তুমি.. বলো কী নিবে.?

” অবশ্যই ডেয়ার.।(ভাব নিয়ে)

” আচ্ছা আমি দিচ্ছি।

” ওই তুই ছোট্ট মানুষ তুই কী ডেয়ার দিবি? ওরে ডেয়ার আমি দিচ্ছি।

” আমি ক্লাস নাইনে পড়ি আমি। ছোট্ট না।

” হ তুমি ছোট্ট না। পেকে পাকনা হয়ে গেছো।

ওই ভাইয়া তোর ডেয়ার হচ্ছে এখন পুকুরের পানিতে লাফ দিবি।

” হোয়াট… সিনহা এটা কীরকম ডেয়ার?

” যেরকমই হোক, ডেয়ার পালন করতে পারলে বলো। নাহলে মেনে নেও তুমি ভীতু।

” আপু এটা ঠিক না। এই সন্ধাবেলায় ভাইয়া পুকুরে লাফ দিবি?

” তোর এতো দরদ লাগলে তুই তার বদলে লাফ দে।

” আচ্ছা ভাইয়ার বদলে আমি লাফ দিবো।

” মারিয়া তুমি লাফ দিতে হবে না। আমিই দিচ্ছি।

সবাই পুকুরপাড়ে এসে জড় হয়েছে৷ ইমরান লাফ দেওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে।

” এতো সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি লাফ দে।

ইমরান পুকুরে লাফ দিয়েই হাবুডুবু খেয়ে চিৎকার শুরু করে দিয়েছে।

” সিনহা আমি ডুবে যাচ্ছি। সিনহা ডুবে যাচ্ছি আমি।

” আপু এটা কী ডেয়ার দিলি? ভাইয়া তো ডুবে যাচ্ছে।

সিনহার মুখে ঘাম জমে গেছে।ইমরান ডুবে যাচ্ছে কথাটা কানে শোনা মাত্রই, সে কিছু না ভেবেই পুকুরে ঝাঁপ দেয়।

চলবে…

~ ইমতিহান ইমরান।

আরো গল্প পেতে জয়েন করুন লেখকের গ্রুপে❤️

🥀গল্পভ্রমর(ভালোবাসার গল্পঘর)❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here