তোর_জন্য পর্ব ১৩+১৪

0
3356

#তোর_জন্য
#sumaiya_moni
#পার্টঃ১৩+১৪

.
.
.
আদ্রিয়ানঃ একটা সুযোগ কি পাওয়া যায়না?

আমিঃ হ্যা সুযোগ আছে। ওইদিন রাহুল ভাইয়া স্টোর রুমে গেছে, কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন? এটা বলতে হবে।

আদ্রিয়ান ঃ
একটা গল্প বলছি,,,,

অনেকদিন আগের কথা, একছিলো এক পেত্নী আরেক ছিলো ভদ্র ছেলে
সেই পেত্নীটা শুধু জালাতন করতো ভদ্র ছেলেটিকে। কারনে-অকারনে রেগে থাকতো আর সেই ভালো ছেলেটির বিভিন্ন উপায়ে রাগ ভাঙাতে হতো।
মাঝে কেটে যায় অনেকগুলো বছর। সেই ছেলেটির সাথে ওই পেত্নীর সবরকমের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় যে কোনো কারনে।
কিন্তু ছেলেটি সবসময়ই চোখে চোখে রাখতো। অথচ পেত্নীটি বুঝতেই পারতোনা, কারন অন্য মানুষের সাহায্য নিতো যার জন্য মেয়েটি বুঝতে পারেনি।
মেয়েটির মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখে ছেলেটি নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনা। কিন্তু কিছু করার থাকেনা,, নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।
!
ছেলেটির সাথে মেয়েটির দেখা হয়। মেয়েটিকে দেখার সাথে সাথেই ছেলেটি নিস্তব্ধ হয়ে যায়। আগের চঞ্চলতা খুঁজে পায়না। যে মেয়ে সবসময় দুষ্টুমিতে মগ্ন থাকতো কিন্তু তার এতটা পরিবর্তন দেখে ছেলেটি নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি।
ছেলেটি পাগলের মত হয়ে যায় সত্যিটা জানার জন্য।
কারন, বাসা থেকে বের হলে মেয়েটি যা যা করে সবকিছু ছেলেটি জানতে পারে, বাসার ভিতরের কিছুই জানেনা।
তাই ছেলেটি বাড়ির ভিতরে গোপন ক্যামেরা রাখে। বিশেষ করে একটা রুমের সামনে ক্যামেরা লাগিয়ে রাখে,, যেখানে ওই মেয়েটি থাকতো।
কিন্তু বিকেলের দিকে মেয়েটি ব্যাগ নিয়ে নিজের রুম থেকে বের হলো। তখন ছেলেটি পিছু নিয়ে দেখে মেয়েটি স্টোর রুমে গেছে।
হঠাৎ ছেলেটির মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসলো, তাই স্টোর রুমের ডুপ্লিকেট চাবি নিলো।
কিন্তু স্টোর রুমের কাছে এসে শুনতে পেলো ভিতর থেকে দড়জা আটকানো,,আর মেয়েটি চেঁচামেচি করছে।
তাই ছেলেটি বাধ্য হয়ে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দড়জা খুললো।
কিন্তু ভিতরে যেয়ে ছেলেটির মাথায় রক্ত উঠে গেল,,।
তাই মারামারি করে পেত্নীটিকে নিজের কাছে নিয়ে গেলো।
কিন্তু সেই পেত্নী তো পেত্নীই,,ছেলেটি কত ভালোবেসে তাকে নিজের কাছে নিলো। কিন্তু সে কিনা স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তার এমন বোকাবোকা কথা শুনে ছেলেটি বেশ মজা নিলো,,,
মেয়েটিকে রাগানোর জন্য ছেলেটি অন্যএকজনকে নিজেদের মধ্যে আনলো,,,মেয়েটি দেখে তো যেমন রাগে ফুঁসছে তেমনই মন খারাপ।
ছেলেটি কখনোই চায়নি মেয়েটি মন খারাপ করুক, কারন নিজের থেকেও ভালোবাসে তাকে।
!
কিন্তু হঠাৎ ছেলেটির মধ্যে একটা অস্থিরতা ভাব দেখা গেল,,,তার মনে হয়েছিলো মেয়েটি তাকে ছেড়ে চলে যাবে।
তাই আগে থেকেই মেয়েটির অজান্তে স্টোর রুমে একটা ক্যামেরা লাগালো। আর নিজে বসে অপেক্ষা করছিলো,,,,
মেয়েটি রুমে ঢোকা মাত্রই ছেলেটি জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়।
কিন্তু সেই বোকা মেয়েটি তখনও কিছু বুঝতে পারলোনা,,,সেই ছেলেটির যে তাকে ভালোবাসে।
এমনকি সেই মেয়েটি, ছেলেটিকে ছেড়ে চলে যেতে চাচ্ছিলো,,,তাই ছেলেটি বাড়ি থেকে যাওয়ার জন্য সবকিছু বন্ধ করে দেয়।
সবার অজান্তে মেয়েটিকে বিয়ে করে ওইদিন রাতেই।
কত কষ্ট করছে সেই ভদ্র ছেলেটি কিন্তু মেয়েটি বুঝলোই না। শুধু শুধু রাগ করে,এমনকি কাছে যেতে চাইলেও মেয়েটি বাঁধা দেয়। শুধুমাত্র জোর করে কয়বার কিসি দিছিলো,তাতেই মেয়েটির নাকি সবকিছু শেষ।
ছেলেটির আশা আর পূর্ণ হলোনা। তার ভাবনাকে দেখা হবেনা😭।

আমিঃ এতক্ষন কথাগুলো আবেগের সাথে শুনছিলাম৷ সত্যিই তো আমি কখনোই বুঝিনি তাকে।
পেত্নী বলাতেও রাগ হলোনা।
কিন্তু ভদ্র ছেলে!!!সে ভদ্র কিভাবে হয়। আর শেষের কথাগুলো শুনে লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে।
সবকিছুর মধ্যে তার এইসব আনতেই হবে।

আদ্রিয়ান ঃ আমায় কেউ ভালোবাসেনা। সবাই অবহেলা করে,,,(কান্নার ভান ধরে)

আমিঃ ওইইই মিয়া। মেয়েদের মতো কি শুরু করছেন! হুম্মম?
সবাই অবহেলা করে মানে!! আর কার কার কাছে ভালোবাসার জন্য গেছিলেন। শুনি??,

আদ্রিয়ান ঃ থতমত খেয়ে,,,,,
ক ক কই কারো কাছে যাইনিতো। ভাবনার আম্মুর কাছেই গেছি, কিছু ভাবনার আম্মু পাত্তাই দিচ্ছেনা।
আমায় ভালোবাসেনা ঠিক আছে, কিন্তু ভাবনার কথা তো ভাবতেই পারে। মেয়েটা কোথায় আছে, কিভাবে আছে কে জানে।
মেয়েটিকে আমাদের কাছে আনার চেষ্টা তো করতেই পারি।

আমিঃ কিইইইইইই(চোখ বড়বড় করে)

আদ্রিয়ান ঃ দেখো আমি কিন্তু আমার মেয়েকে খুব ভালোবাসি।
তুমি আমার মেয়েকে কষ্ট দিতে দিতে পারোনা।

আমিঃ আপনার মেয়েকে আপনি নিয়ে আসবেন আমায় বলছেন কেন!

আদ্রিয়ান ঃ আমি একাএকা 😷!!

আমিঃ তার কথার ধরন বুঝে তারাতারি কেটে পড়লাম। নয়তো কিনা কি বলে ফেলে কে জানে।
.
রোহানা আন্টির সাথে ব্রেকফাস্ট গুছিয়ে আদ্রিয়ানকে ডাকতে আসছি,,,রুমে এসেই দেখি গতকালের মেয়েটি।
এখনো যায়নি!!
তারা হাসাহাসি করছে, কিন্তু আমি যাওয়া মাত্রই চুপ হয়ে গেলো।

মোহনাঃ হাই! আমি মোহনা। আদ্রিয়ানের গুড ফ্রেন্ড।

আমিঃ ওয়ালাইকুম সালাম, আমি মিসেস আদ্রিয়ান মাহমুদ ( সালাম দিতে হয় তাও জানেনা। হাই, হ্যালো পাইছে আর কিছু লাগেনা তাদের যত্তসব)

আমার কথা শুনে মেয়েটি অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। মুখে অবস্থা দেখে খুব হাসি পাচ্ছে। কিন্তু নিজের হাসিকে খুন করতে হলো।
আমার জামাইর পিছনে ঘুরঘুর করা!! দেখাচ্ছি কত ধানে কত চাল।
আদ্রিয়ান আমার কথা শুনে মিটমিট করে হাসছে। কিন্তু আমার মত নিজেকে সামলে নিলো,,,,,
আদ্রিয়ান ঃ কিছু বলবা? ( আমাকে উদ্দেশ্য করে)

আমিঃ হ্যা। ব্রেকফাস্টের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে।

আদ্রিয়ান ঃ আচ্ছা। চল মোহনা,,,,।

মোহনাঃ হুম

আদ্রিয়ানের পাশের চেয়ারে তারাতারি যেয়েই আমি বসে পরলাম। মোহনা আপুকে এবারও বিশেষ ধরনের চমক দিলাম।
শখ কত! আমার জামাইর পাশে বসার।
এতদিন যত নষ্টামি করুক আদ্রিয়ান। এখন আর কোনো সুযোগ দিচ্ছিনা।
গতকাল অবধি ভালো ছিলাম বাড়িত অতিথি ছিলো বলে।

আদ্রিয়ান তাকিয়ে বললো,,,
এখনও ভাবনার জগতে যেতে হবে!! আগে খেয়ে নাও তারপর যতখুশি ভাবতে থাকো😉

আমিঃ হুহ

*খাবারের একপর্যায়ে আদ্রিয়ানের কথায় বিষম খেল মাসুদ সাহেব।

#চলবে
(বড় করে পর্বটি লিখছিলাম। কপি করবো তখনই ডিলিট হয়ে যায়। আজকে আর লিখতে চাইনি,,,কিন্তু সবাইকে কষ্ট দিতে চাইছিনা। তাই নিজে কষ্ট করে লিখলাম।
ছোট পর্ব দেয়ার জন্য আমি অনেক দুঃখিত।
গল্পটি কেমন হইছে,,, ভালো / খারাপ দুটোই জানাবেন নেক্সট না লিখে। ধন্যবাদ)

#তোর_জন্য
#sumaiya_moni
#পার্টঃ১৪
.
.
.
আদ্রিয়ান ঃ আচ্ছা আব্বু, আমার দাদু বাড়িতে আমরা থাকিনা কেন!!
আমার যতটুকু মনে পড়ে, দাদা বাড়ির সীমানায়ও পা রাখিনি কখনো😓।

মাসুদ সাহেব ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলেন। কিছু না বলে মনমরা হয়ে উঠে গেলেন।

আদ্রিয়ান ঃ ভয় পাচ্ছো!! যতবারই তোমার কাছে জানতে চেয়েছি ততবারই এড়িয়ে যাচ্ছো।
কি লুকাচ্ছো?
এমনকি আমার দাদা বাড়িতে কে কে আছে, সেটা পর্যন্ত জানিনা।

মাসুদ সাহেব ঃ দাদা নেই তোমার।

আদ্রিয়ান ঃ কাকা তো আছে,,,,,,।

মাসুদ সাহেব আদ্রিয়ানের কথা শুনে থমকে গেলেন। ছেলের মুখে নিজের নরপশু ভাইয়ের কথা শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।

আদ্রিয়ান ঃ আব্বু! আগে যা কিছু হইছে তুমি শেয়ার করোনি কারো সাথে। কিন্তু এখন তোমার ছেলে বড় হইছে,,, তুমি চাইলে সবকিছুই বলতে পারো।
ছেলে বড় হলে বাবার শক্তি অনেকটা বেড়ে যায়, নিশ্চয় এ কথাটি তোমার অজানা নয়।

মাসুদ সাহেব কিছু না বলে চলে গেলেন।
সবাই চুপচাপ হয়ে গেল।
কাকার কথা বলাতে এমন করছেন কেন! মাসুদ সাহেব।
আশিক আদ্রিয়ানের কাঁধে হাত রাখলো,আদ্রিয়ান কিছু না বলে হাত ধুয়ে উঠে গেলো।
সবাই যার যার মতো চলে গেল, কারো মুখে কোনো কথা নাই।

রুমে যেয়ে দেখি আদ্রিয়ান গুটিশুটি দিয়ে বসে আছে। যতই হোক আমার একটামাত্র বজ্জাত স্বামী। এভাবে চুপচাপ থাকলে ভালো লাগেনা, তাছাড়া তার মনও ভালো নেই।
আমি পাশে যেয়ে বসা মাত্রই আমার কাঁধে মাথা রাখলো। কিন্তু তাকে এভাবে চুপচাপ থাকলে ভালো লাগেনা।
মুখ গোমড়া করে আছে পেঁচার মতো। “যাইহোক এভাবে একদম ভালো লাগছেনা। একটু রাগানো যাক,,,
আদ্রিয়ান ভাইয়ায়ায়া!!

তিনি মাথা তুলে ভুরু কুঁচকে তাকালো, কাটা জায়গায় লবন দেয়া যাকে বলে।

আমিঃ মন খারাপ করে আছেন কেন!! একদম পেঁচার মতো লাগে।

আদ্রিয়ান ঃ কি বললে তুমি? তার আগে,,,।

আমি ঃ (মুখে হাত দিয়ে),,,,,কই কিছু বলিনি।

ওরে বাপরে বাপ,,,গোমড়ামুখো থেকে ভালো করতে চাইছি। কিন্তু তার জন্য রাগাতে গেলাম কেন😳কত বুদ্ধিমতী মেয়ে আমি,,,নিজের পায়ে নিজেই কুড়োল দিতে পারি।
কিন্তু আদ্রিয়ান কিছু না বলে চলে গেল। বেশিই করে ফেলি আমি😓।

—————————————-
কতক্ষন হলো এখনো আদ্রিয়ান বাসায় আসেনি। চিন্তিত হয়ে বসে আছেন মাসুদ সাহেব। রোহানা বেগম মাসুদ সাহেবের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালেন। তিনি কখনোই মাসুদ সাহেবের কাছে জানতে চায়নি,,, তিনি পরিবার থেকে আলাদা আছে কেন!
মাসুদ সাহেবও কখনো বলেনি। কিন্তু আজকে তার সমস্ত চিন্তাভাবনায় কড়া নাড়ছে আদ্রিয়ানের কথায়।
মাসুদ সাহেব বলে দিলেই পারতেন। ছেলের চিন্তা করে মাসুদ সাহেবের দিকে রাগের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন রোহানা বেগম।
এমনকি আদ্রিয়ানের মোবাইল বন্ধ। গভীর ঘুমে মগ্ন ছিলো আশিক ও নিবিড়।
কিন্তু যখন শুনতে পেল আদ্রিয়ান সেই সকাল থেকে বাসায় নেই এখন প্রায় সন্ধ্যা। চিন্তিত হয়ে আশিক ও নিবিড় আদ্রিয়ানকে খোঁজার উদ্দেশ্যে দড়জা অবধি গেল,,,
তখনই দেখতে পেল আদ্রিয়ান বাসায় আসছে। সাদা শার্ট রক্তে ভেঁজা। সবার সামনে আশা মাত্রই রোহানা বেগমের আগেই মোহনা দৌড়ে জরিয়ে ধরে হাউমাউ কাঁদা শুরু করলো।
ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই স্তব্ধ হয়ে আছেন।

আমি রোহানা আন্টির পাশে ছিলাম, যা ঘটলো সবকিছু চোখের সামনেই।
হাত-পা বরফের মতো হয়ে গেল। শুধু আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছি।
তার সাদা শার্ট যে রক্তে মাখা তার জন্য!! নাকি শুধুই মোহনা আপুর জন্য।
ভালো বন্ধু হতে পারে তাই বলে এভাবে!!!

আদ্রিয়ান মোহনাকে সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো ভাবছে আমার মনের মধ্যে কি চলছে,,,
কিছুক্ষনের জন্য নীরবতা পালন করছে সবাই। কিন্তু পরক্ষণেই রোহানা আন্টি আদ্রিয়ানের কাছে যেয়ে কান্না শুরু করে দিলো।

আদ্রিয়ান ঃ আম্মু!! এভাবে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।
সরি তোমাদের এভাবে কষ্ট দেয়ার জন্য। আসলে আমার একটা বন্ধু মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করছে ওরে নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম। অন্যকোনো দিকে খেয়াল ছিলোনা। আর মোবাইলটাও কোথায় যেন পরে যায়।

রোহানা বেগম ঃ বোকা বানাচ্ছিস আমাদেরকে!(কান্না করে)। এই যে রক্তমাখা শার্ট পরে আছো,,,(এখনো কান্না করে যাচ্ছেন)

আদ্রিয়ান ঃ পুরোনো ফ্রেন্ডরা আড্ডা দিচ্ছিলাম তখনই প্রলয় বাইক নিয়ে আসে,,,কিন্তু আমাদের কাছাকাছি আসা মাত্রই একটা অটোর সাথে ধাক্কা খায়।
মুহুর্তের মধ্যে কিভাবে কি হয়ে যায় বুঝতে পারিনা।
(বলেই আদ্রিয়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো)
আদ্রিয়ান রুমের উদ্দেশ্য পা বাড়ালো। রোহানা আন্টি আমাকে তার সাথে আসতে বললেন,,আমিও বাধ্য মেয়ের মত আদ্রিয়ানের পিছন পিছন রুমে আসছি।
এখন আর কোনো ঝামেলা করতে চাইনা, এমনিতেই বন্ধুর জন্য কষ্ট পাচ্ছেন। আর আমি ওভাবে দুষ্টুমি না করলে হয়তো এভাবে রাগ করে যেতোনা।

রুমে আসা মাত্রই আদ্রিয়ান দড়জা লাগিয়ে দিলো। এখন আর ভয় লাগছে না,,তার মোহনা আছেই তো। তার যখন কাউকে জরিয়ে ধরতে ইচ্ছে করবে মোহনা তো আছেই।

আদ্রিয়ান ঃ সরি (মাথা নিচু করে)।এভাবে চিন্তায় ফেলতে চাইনি।
আসলে মোবাইল কোথায় যে হারিয়ে যায় বুঝতে পারিনি।

(আমি ভাবছি মোহনার কথা বলবে, এখন দেখছি অন্য কথা। তার মনে হয় ভালোই লাগছিলো।)
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। যা হবার হইছে,,এখন ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিন। তার জন্য শার্ট বের করলাম। একবারের জন্যও তার দিকে তাকাইনি।
মেজাজই খারাপ হয়ে গেছিলো, বউ থাকা স্বত্তেও অন্য মেয়েরা এভাবে জরাজরি করবে আর তিনি হাসিমুখে চলে আসবেন।
থাকুক তিনি তার মতো, আমিও আমার মত থাকতে পারবো।

তিনি রক্তমাখা শার্ট পরা অবস্থায়ই আমার কাছে আসলেন।
আদ্রিয়ান ঃ রেগে আছো(মাথা নিচু করে)

আমিঃ আমি রাগ করিনা। আর আপনি আমার সাথে এমন ব্যবহার করেননি যার জন্য রেগে থাকবো।

আদ্রিয়ান ঃ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। আসলে তোমায় একবার ভাইয়া বলতে নিষেধ করছি, কিন্তু আবারও বলছো তাই রেগে চলে গেছিলাম।আমার রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকেনা, তাই আগে থেকেই সরে গেছি। নয়তো অজান্তে যদি কষ্ট দিয়ে ফেলতাম(মাথা নিচু করে)

আমিঃ বুঝতে পারছি। তার জন্যই হয়তো মোহনা আপু জরিয়ে ধরছে?
কারন, আমিতো কখনো এমন কিছু করিনি(চোখে পানি টলমল করছে)

আদ্রিয়ান ঃ আ আ আসলে মোহনা এমনকিছু করবে ভাবতে পারিনি। তাছাড়া ও যে পরিবেশে বড় হইছে তার মধ্যে এটা কিছুই না।
তাই মন খারাপের কিছু নাই।
(আমার কাছে এসে কথা গুলো বললেন)

আমিঃ একদম কাছে আসবেন না।
আর এই রক্তমাখা শার্ট সরিয়ে ফেলুন ভয় লাগে।
বলেই বারান্দায় আসছি।

একটু পরেই তার ডাক পরলো। সবকিছু তো গুছিয়েই দিয়ে আসছি। তাহলে এখন আবার কি দরকার।
কিন্তু রুমে এসে দেখি বজ্জাত জামাই শুধু তাওয়ালে পরে চুল ঠিক করছে। লজ্জা বলতে কিছুই নেই তার বেশ বুঝতে পারছি।
এভাবে কেউ থাকে!! তাও আমার মত একটা নিষ্পাপ মেয়ের সামনে।

আদ্রিয়ান ঃ মনে মনে ভেবেও কোনো কাজ নেই। সবকিছু বুঝতে পারি,,কিছুদিন ছিলাম তো ভাবনার আম্মুর সাথে তাই তার মনের কথা পড়তে পারি।

আমি চোখ বড়বড় করে তাকালাম। তিনি হেসে বললেন,,,

এভাবে তাকানোর কিছু নেই। আমি এমনিতেই সুন্দর ,, বলা তো যায়না কখন নজর লেগে যায়।

(তার মতিগতি বুঝা মুশকিল। এই অবস্থায়ও এভাবে কথা বলে যাচ্ছেন!!)
আমিঃ আপনার দিকে ওই ঘষেটি দের মতো তাকিয়ে থাকার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।
আমি তাকালে নজর লাগে আর তারা জরিয়ে ধরলে ভালো লাগে!তাইনা!!

আদ্রিয়ান আমার কাছে এগোতে এগোতে বলছেন,,,
কেন! তোমার হিংসে লাগে? নাকি কষ্ট লাগে? (হেসে)

আমিঃ হিংসে কষ্ট কিছুই লাগেনা। আর আমার কিছু দরকার নাই,,হুহ!!

আদ্রিয়ান ঃ আমার তো কষ্ট লাগে, বউ আমায় একটুও ভালোবাসেনা। অন্য মেয়েদেরকেও ভালোবাসতে দিচ্ছেনা।

আমিঃ কই আমি নিষেধ করছি নাকি?(রেগে)
যান না (অন্য মেয়েদের কথা বলছেন তিনি!! তার মানে অন্য কেউ যা করুক তার ভালোই লাগে)

আদ্রিয়ান আমার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললেন,,,
আচ্ছা! বউ সম্মতি দিছে যখন তাহলে তো কোনো বাঁধা নেই।

কথাটি শোনামাত্রই গলাটা চিপে ধরলাম। সাহস কত, আমিতো আবেগে বলছি কথাগুলো কিন্তু তিনি সত্যি ভাবলেন!!
কিন্তু পরক্ষণেই ছেড়ে দিলাম।

আদ্রিয়ান ঃ ওরে গুন্ডি বউ আমার এভাবে কেউ স্বামীকে অত্যাচার করে!! একটু হলেই তো উপরে পাঠিয়ে দিতে।

আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম।

আদ্রিয়ান ঃ আচ্ছা সরি।

আমিঃ হুহ

আদ্রিয়ান ঃ সরি তো। এভাবে মন খারাপ করলে আমার ভালো লাগেনা।
তিনি আমার চুলগুলো কানে গুজে দিলেন। এবং কপালে ভালবাসার পরশ একেঁ দিলেন।

—————————————-

মাসুদ সাহেব আদ্রিয়ান মুখোমুখি বসে আছে।
আজকে ছেলের কাছে কিছুই গোপন রাখবেন না তিনি। রোহানা বেগমও পাশে আছেন।
মাসুদ সাহেব কথাগুলো বলছেন আর চোখ দিয়ে নোনাজল পরছে,,,,,

#চলবে

(দুঃখিত 😓লেখিকা ভালো না। শুধু শুধু সবাইকে অপেক্ষায় রাখে।
আসলে, ব্যাস্ততা + অসুস্থতায় দিনগুলো কাটছে। তাই সময় পেলেই লিখতে বসি। অসুস্থতায় লেখার মনমানসিকতা পাইনা)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here