#Child_Of_Night
Writer : Tanjima Islam
[12]
নীরা ‘দের বাসার সামনে এসে ট্যাক্সি থেকে নেমে এলো সোফিয়া। সেদিনের পর থেকে নীরার সাথে আর কথা হয়নি তার।
এমনকি ভ্যাকেশন শুরুর আগেরদিন বিকালে ভার্সিটির ইভেন্টেও আসেনি। সোফিয়া ভেবেছিলো অন্তত তার পারফরম্যান্স দেখতে নীরা অবশ্যই আসবে।
কিন্তু না, সে আসেনি। সোফিয়া নিশ্চিত সে’রাতের জন্যই নীরা এখনও তার ওপর রেগে আছে।
বাড়িটার আশপাশে একবার দেখে নিয়ে ভেতরে চলল সোফিয়া। কয়েকবার কলিংবেল বাজালো অথচ কেউ দরজা খুললো না।
বাসায় কি কেউ নেই! সোফিয়া মেইন ডোর থেকে সরে এসে রুমের জানালায় উঁকি মারল।
ভেতর থেকে পর্দা টাঙানো। দেখা যাচ্ছে না ভেতরে কেউ আছে কি না। মিলিয়ানের তো এখন স্কুলও অফ। তাহলে কোথায় গেছে নীরা?
সোফিয়া আশেপাশে তাকিয়ে ভাবল কোনো প্রতিবেশীর কাছে শুনবে। এরমধ্যেই দেখতে পেলো, নীরা’দের পাশাপাশি বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে দুটো লোক।
তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে ব্যস্ত। সোফিয়া দ্রুত পায়ে সেদিকে এগিয়ে গেলো। লোক দুটোর কেউই তাকে খেয়াল করেনি।
মনে হচ্ছে তারা জরুরি কোনো ব্যাপারে কথা বলছে। সোফিয়া কাছাকাছি গিয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,
” এক্সকিউজ মি!
প্রায় সাথেসাথেই সোফিয়ার দিকে তাকালো লোক দুটো। সোফিয়া একটা সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে বলল,
” আপনারা কি এখানে থাকেন?
দু’জনের মধ্য থেকে মধ্যবয়স্ক লোকটা মাথা দুলিয়ে বলল,” জ্বি, কেন কি হয়েছে?
” না, আসলে আমি আপনার প্রতিবেশী নীরার ফ্রেন্ড। একটা জরুরি দরকারে ওর কাছে এসেছি। কিন্তু মনে হয় বাসায় কেউ নেই। আপনি কি জানেন ওরা কোথায় গেছে?
লোকটা কিছু বলার আগেই এক ভদ্রমহিলা সাথে করে সাত কি আট বছরের একটা মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে বলল,” রবার্ট চলো, আমরা রেডি।
সোফিয়াকে একরকম উপেক্ষা করে তারা হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে পড়ল। কিন্তু সোফিয়া ব্যাপারটা তেমন আমলে নেয়নি।
বরং ঐ সাত আট বছরের বাচ্চা মেয়েটাকে দেখে বেশ অবাক লাগছে তার। এতটুকু বাচ্চা মেয়ের শরীর এমন পাংশুটে বিবর্ন হল কিভাবে। মনে হচ্ছে যেন তার দেহে সামান্যতম রক্ত নেই।
ফোনের রিংটোন পেয়ে ভাবনায় ছেদ পড়ল সোফিয়ার। হ্যান্ডব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখল, মরিস কল দিচ্ছে।
সোফিয়া একবার নীরার বাসার দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে এলো। ফোন বেজেই চলেছে। সোফিয়া ফুটপাতে এসে কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মরিসের কন্ঠঃ শোনা গেলো,
” হ্যালো সোফি! কোথায় তুই?
” আমি একটু বাইরে কেন কি হয়েছে?
” আমি নীরার বাসায় যাচ্ছি। তুই কি যাবি?
” নীরা বাসায় নেই। বোধহয় বাইরে গেছে।
” তুই কিভাবে জানলি নীরা বাসায় নেই?
” আমি নীরার বাসায় গেছিলাম। আচ্ছা আমি ফোন রাখছি, এখন একটা কাজ আছে।
সোফিয়া কল কেটে দিল। সে ভেবে পাচ্ছেনা নীরা হটাৎ কোথায় গেলো! ভ্যাকেশন কাটাতে দেশে ফিরে যায়নি তো?
দেশে গেলে তো তাকে একটাবার কল বা টেক্সট দিয়ে জানাতো! ট্যাক্সি এসে গেছে। সোফিয়া ট্যাক্সিতে উঠে ড্রাইভারকে লোকেশন দেখিয়ে দিল।
_______________________
|
|
|
|
|
|
|
|
|
কেবিনের বাইরে পায়চারি করছে রবার্ট। হেনা মনেমনে প্রার্থনা করছে। বেশ কিছুক্ষণ পর সারলোটের কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো ডক্টর থমাস। এসেই বলল,
” আর্জেন্ট ব্লাড লাগবে। আপনাদের কারোর কি পেশেন্ট এর ব্লাডগ্রুপ এর সাথে মিল আছে?
হেনা প্রায় আতংকিত গলায় বলল, ” ব্লাড কেন লাগবে ডক্টর? ওর কি অপারেশন করা লাগবে!? কি হয়েছে আমার মেয়ের?
রবার্ট তাকে শান্ত করে বলল,” ডক্টর আমার আর আমার মেয়ের ব্লাডগ্রুপ একই। কিন্তু ওর কি হয়েছে যে, রক্ত দেওয়া লাগবে?
” এখনই বলতে পারছিনা। তবে পেশেন্টের কন্ডিশন খুব একটা ভালো না। যে কোনো মূহুর্তে রক্তের অভাবে তার মৃত্যু ঘটতে পারে।
কথাটা শোনা মাত্রই রবার্ট আর হেনার চোখেমুখে স্পষ্ট ভয় ছড়িয়ে পড়ল। কি হয়েছে তাদের মেয়ের? যেকোনো মুহুর্তে মারা যাবে এর মানে কি! হেনা হতাশায় মুষড়ে পড়ে বলল,” হা ঈশ্বর! রক্ষা করো, আমাদের সন্তানকে তুমি রক্ষা করো!
ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে গেছে রবার্ট। কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা সে। ডক্টর হন্তদন্ত হয়ে কোথায় যেন গেলো। এরমধ্যেই একজন নার্স এসে বলল,
” মি. রবার্ট আমার সাথে চলুন।
রবার্ট হেনাকে বেঞ্চে বসিয়ে দ্রুত পায়ে নার্সের সাথে চলে গেলো। হেনা অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে কেবিনের দরজায়।
সে এখনও ভেবে পাচ্ছেনা এক রাতের মধ্যেই মেয়েটার কি হয়ে গেলো! গতরাতেও তো সব ঠিকই ছিলো। তাহলে?
______________________
|
|
|
|
|
জ্ঞান ফিরেছে নীরার। সে আস্তে-ধীরে চোখ মেলে দেখল, নিজের রুমের বেডে শুয়ে আছে। ঘরের ভেতরটা আবছা আলোয় আলোকিত।
কয়টা বাজে এখন? ভোর নাকি সন্ধ্যা? নীরা শোয়া ছেড়ে উঠতে চাইলো কিন্তু পারলোনা। ধুপ করে আবার বেডে শুয়ে পড়ল।
এত ক্লান্ত লাগছে কেন শরীরটা? মিলিয়ান! মিলিয়ান কোথায়? মিলিয়ানের কথা মনে পড়তেই নীরার সব মনে পড়ে গেলো।
সে তো এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বেরিয়েছিলো। তারপর মিলিয়ানকে ডাকতে গিয়ে দেখল মিলিয়ান রুমে নেই। তারপর ওয়াশরুমে! মিলিয়ানের সেই রক্তমাখা মুখ!
সাথেসাথেই ধড়ফড়িয়ে উঠে বসল নীরা। গায়ে এখনও বাইরে যাওয়ার ড্রেস পরা তার।
বেডের পাশেই প্যাক করা লাগেজ। রুমের ভেতরটা ভালো করে দেখে নিল নীরা। রুমে সে ছাড়া এই মুহুর্তে কেউ নেই।
নীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বেড থেকে নেমে এলো। রুমের দরজা ভেজিয়ে দেওয়া। ড্রয়িং রুম থেকে কারোর ফিসফিস শব্দ ভেসে আসছে।
নিশ্চয়ই মিলিয়ান! নীরা বার কয়েক নিঃশ্বাস নিয়ে সশব্দে দরজাটা খুলে ড্রয়িং রুমে এসে দাড়ালো। সোফায় বসে আছে মিলিয়ান।
তার সামনেই একটা কালো ছায়ামূর্তি! নীরা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো সেদিকে। এটা কি তার চোখের ভ্রম? নাকি বাস্তব?
মিলিয়ান সোফা ছেড়ে উঠে চকিতে নীরার দিকে ফিরে তাকালো। প্রায় সাথেসাথেই গায়েব হয়ে গেলো ছায়ামূর্তিটা। নীরা এখনও হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। মিলিয়ান ধীর পায়ে নীরার সামনে এসে বলল,
” তুমিও কি মাম্মামের মতো আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
এতক্ষণে মিলিয়ানের দিকে তাকিয়েছে নীরা। মিলিয়ানের বলা কথাটা বোধহয় সে শুনতে পায়নি। মিলিয়ান নীরার আতংকিত চাহনি দেখে বলল,
” বুঝেছি, তুমিও পালিয়ে যেতে চাও।
নীরা যেন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে। ঠোঁট জোড়া কাপছে কিন্তু শব্দ বেরুচ্ছে না। মিলিয়ান এবার নীরার হাত জোড়া নিজের ছোট ছোট হাত দিয়ে ধরে বলল,
” আমি প্রমিজ তুলে নিলাম, তুমি চলে যাও।
মিলিয়ানের থমথমে মুখটার পেছনে যে বেদনাদায়ক কষ্ট হচ্ছে তা ঠিকই আচ করতে পেরেছে নীরা।
কিন্তু মিলিয়ান এমন বলছে কেন? আর কেনই বা প্রমিজ তুলে নিচ্ছে? মিলিয়ান এবার আস্তে-ধীরে নীরার হাত ছেড়ে দিয়ে সরে যেতে লাগল।
নীরা কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। মুহুর্তের জন্য মনে হল যেন তার কলিজা ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে কেউ। নীরা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না।
ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরল মিলিয়ানকে। মিলিয়ান সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়ল। নীরা তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে বলল,
” কিসব বাজে বকছো মিলিয়ান! কোথাও যাবো না আমি। তোমাকে রেখে কোথাও যাবো না।
বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠল নীরা। মিলিয়ান নির্বিকার হয়ে আছে। তার মাঝে কোনো নড়নচড়ন নেই। নীরা বেশ কিছুক্ষণ পর উঠে মিলিয়ানকে সোফায় বসিয়ে বলল,
” আর কখনও এমন কথা বলবেনা মিলিয়ান। নাহলে কিন্তু মাম্মাম অনেক কষ্ট পাবে।
মিলিয়ান কিছু বলছেনা। কেমন যেন শূন্য দৃষ্টিতে নীরার দিকে তাকিয়ে আছে সে।
নীরা ব্যাপারটা খুব একটা আমলে না নিয়ে দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বাজে। এতক্ষণ ধরে সেন্সলেস হয়ে ছিলো সে!
কিন্তু সে তো বাথটাবে পড়েছিলো। তাকে বেডে নিয়ে গেলো কে? মিলিয়ান!
এতটুকু বাচ্চা কিভাবে তাকে বাথটাব থেকে তুলে নিয়ে যাবে! নীরা জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে মিলিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,
” আচ্ছা মিলিয়ান! আমি তো বাথটাবে পড়ে গেছিলাম, ওখান থেকে কি তুমি আমাকে এনেছো? নাকি অন্য কেউ?
” ওরহান আংকেল।
” ওরহান! উনি কোত্থেকে এলো? তুমি ডেকেছিলে?
মিলিয়ান কোনো উত্তর দিলো না। নীরা আবার কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ফোনের রিংটোন বেজে উঠল। নীরা একবার মিলিয়ানের দিকে তাকিয়ে আবার ফোন নিতে রুমের দিকে চলে গেলো।
মরিস কল দিচ্ছে। নীরার এখন কারোর সাথে কথা বলার ইচ্ছে নেই। কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে তার। সে ফোন সাইলেন্ট করে ওয়াশরুমে ঢুকল। লম্বা শাওয়ার নেওয়া দরকার।
_________________________
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সারলোটকে ব্লাড দেওয়া হয়েছে। ঘুমন্ত শিশুর মতো শুয়ে আছে সে। পাশেই একটা টুলে বসে আছে হেনা। রবার্ট কেবিনের সোফায় হেলান দিয়ে ঘুমোচ্ছে।
রাতে সে জাগবে আর হেনা ঘুমাবে। কিছুক্ষণ আগেই ডক্টর এসে দেখে গেছে সারলোটকে।
রক্ত দেওয়ার পর তাকে অনেকটা সুস্থ দেখাচ্ছে। ফ্যাকাসে মুখটাতে লালচে আভা ফুটে উঠেছে। নার্স ডিনার এনে সারলোটকে খাওয়ার আগের মেডিসিম খাইয়ে দিয়ে হেনা’কে বলল,
” মিসেস পল! পেশেন্টকে এবার খাইয়ে দিন। একটু পরে এসে আমি খাওয়ার পরের মেডিসিন দিয়ে যাবো।
” আচ্ছা।
হেনা মেয়েকে খাইয়ে দিতে দিতে রবার্টকে ডেকে তুলল। এখন তাকে বাইরে থেকে গিয়ে খাবার আনতে হবে।
রবার্ট মেয়ের সাথে টুকটাক কথা বলে কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো। হেনা মেয়েকে খাওয়াচ্ছে। সারলোট অন্যমনস্ক হয়ে বলল,
” মা!
” হু?
” ভ্যাম্পায়াররা কি বাস্তবে আছে নাকি শুধুই কল্পকাহিনিতে?
মেয়ে এতক্ষণে কথা বলেছে দেখে হেনার মনটা খুশিতে নেচে উঠল। মেয়েটার শরীর ভালো নেই।
এমন সময় ওর সাথে একটু গল্পগুজব করা দরকার। তাহলে হয়তো সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। হেনা মেয়েকে খাওয়াতে খাওয়াতে বলল,
” পৃথিবীটা এক রহস্যময় জালে মোড়ানো। এখানে সবকিছু বিজ্ঞানের আলোকে বিবেচনা করা যায় না। কিছু জিনিস আছে যা বিশ্বাসের ওপর টিকে থাকে। ভ্যাম্পায়ার ব্যাপারটাও ঠিক তেমনই। কেউ কেউ এদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে কেউ আবার কল্পকাহিনি বলে উড়িয়ে দেয়।
সারলোট আর কিছু বলল না। সে আবারও নানান চিন্তায় অন্যমনস্ক হয়ে পড়ল।
তার বারবার মনে হচ্ছে ঐ বাদুড়টা কোনো সাধারণ বাদুড় ছিলো না। নিশ্চয়ই ওটার কারণেই তার এই অবস্থা। রবার্ট ফিরে এসেছে।
হাতে দুই প্যাকেট খাবারের বক্স। হেনা সারলোটকে খাইয়ে দিয়ে রবার্ট এর সাথে খেয়ে বসল। নার্স এসে মেডিসিন দেওয়ার সাথেসাথেই ঘুমিয়ে পড়েছে সারলোট।
হেনা খেয়ে উঠে সোফায় শুয়ে পড়ল। সারাদিনের ক্লান্তিতে ভীষণ ঘুম পাচ্ছে তার। সোফায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুম চলে এলো দুচোখে।
রবার্ট কেবিনের লাইট অফ করে সারলোটের বেডের পাশে টুল নিয়ে বসল। কাচের জানালা ভেদ করে চাঁদের রূপোলী আলোয় আলোকিত হয়ে গেছে কেবিনের ভেতরটা।
_____________________
|
|
|
|
|
মাত্রই ডিনার করে উঠেছে নীরা। মিলিয়ান রাতে খাবেনা বলেছে। নীরাও তাকে বেশি জোর করেনি। তার মাথায় এখন নানান প্রশ্ন ঘুরছে।
মিলিয়ানের সাথে বসে কথা বলা দরকার। মিলিয়ান নিজের রুমে বসে ড্রয়িং করছে। নীরা দরজায় নক করতেই সে না তাকিয়ে বলল,
” দরজা খোলা আছে মাম্মাম।
নীরা দরজার নব ঘুরিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখল, উল্টো ফিরে ড্রয়িং করছে মিলিয়ান। নীরা ধীর পায়ে মিলিয়ানের পাশে চেয়ার নিয়ে বসে বলল,
” মিলিয়ান! তোমার সাথে কিছু জরুরি কথা আছে।
” বলো শুনছি।
নীরা বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে উঠল, “আপু কিভাবে মারা গেছিলো?
মিলিয়ান এবারও না তাকিয়েই বলল, ” জানিনা।
” আচ্ছা, বাদ দাও। তখন যে বললে, ওরহান আমাকে রুমে নিয়ে গেছিলো। উনি কোত্থেকে এলো? তুমি ডেকেছিলে ওনাকে?
” জানিনা।
নীরা খেয়াল করল ওরহানের চোয়াল ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে উঠছে। হাতে ধরা পেইন্ট ব্রাশটা দ্রুত চালাতে লাগল মিলিয়ান।
নীরা কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। সবকিছু কেমন যেন রহস্যময় ঠেকছে তার কাছে। নীরা চেয়ার ছেড়ে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল রাত সাড়ে দশটা বাজে। সন্ধ্যে পর্যন্ত সেন্সলেস হয়ে ছিলো সে। এখন আর ঘুম আসছেনা। বেশ কিছুক্ষণ ড্রয়িং রুমে পায়চারি করতে করতে নিজের রুমে এসে ফোন হাতে নিয়ে ওরহানকে কল করল নীরা। রিং বাজতেই রিসিভ করল ওরহান। নীরা উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল,
” মি. ওরহান। এতো রাতে আপনাকে কল করার জন্য খুবই দুঃখীত।
” ইটস ওকে মিস নীরা। তো এখন কেমন আছেন আপনি?
নীরা উত্তর না দিয়ে বলল, “আমরা কি দেখা করতে পারি?
” এখন?
” যদি ব্যস্ত না থাকেন তাহলে এখনই দেখা করতে চাই।
” বেশ। কোথায় দেখা করতে চান বলুন।
” বাসায় আসুন।
কল কেটে দিল নীরা। একমাত্র ওরহানই আছে যাকে সবটা খুলে বলতে পারবে সে। আর জানতেও পারবে তাকে কে ডেকেছিলো।
ফোন হাতে নিয়ে পায়চারি করতে করতে ল্যাপটপ অন করে বসল নীরা। ওরহান আসার আগে মায়ের সাথে কথা বলা দরকার।
নিউজ ফিডে ঢুকে স্ক্রল করতে করতে একটা আর্টিকেল দেখে নীরার দৃষ্টি আঁটকে গেলো।
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
[চলবে]
বিঃদ্রঃ গত রাতে হটাৎ ইলেক্ট্রিসিটি চলে যাওয়ায় পোস্ট করতে পারিনি🙂