Child_Of_Night Part-22

0
1125

#Child_Of_Night
Writer : Tanjima Islam

___________________[22]__________________

মাটি খোড়া শেষ। কফিনের ডালা দেখা যাচ্ছে। খাজে খাজে লেপ্টে আছে গুড়া মাটি। লোক দুটো ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশপ আর ফাদারের দিকে তাকালো। এন্ড্রু বারবার রুমাল বের করে মুখ মুছছে। এই শীতেও ঘামছে তার শরীর।

আন্দ্রেস ইশারায় লোক দুটোকে বলল কফিনের ডালা খুলতে। লোক দুটো তার কথা মতো শাবল গেথে দিল কফিনের চিরের মাঝে। সজোরে চাপ দিতেই কফিনের পেরেক ছাড়িয়ে আলগা হয়ে গেলো ডালাটা। লোক দুটো যেই না ডালা খুলতে যাবে, আন্দ্রেস তাদের বাধা দিয়ে বলল,

—–” তোমরা এবার উঠে এসো। আমি দেখছি।

লোক দুটো একে অপরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করে উঠে এলো। তাদের কাজ করতে ডাকা হয়েছে, কাজ করেছে। কিন্তু বিশপ হটাৎ সমাধি খুড়ে কি দেখতে চাচ্ছে বুঝতে পারছেনা তারা।

প্রথমে তারা ভেবেছিলো, হয়তো লাশ পোস্টমর্টেম করার জন্য সমাধি খোড়া হবে। কিন্তু, আশা অব্দি গীর্জার ভেতর তো কোনো পুলিশের লোকজনও দেখা গেলো না।

আন্দ্রেস একটা কাচের শিশি বের করে হলি ওয়াটার ছিটিয়ে দিল কফিনের ওপর। এন্ড্রুর দিকে তাকিয়ে বলল,

—–” তুমি ওপাশ থেকে ডালা খোলো। আমি এপাশে দাড়াচ্ছি।

বলেই আস্তে-ধীরে সমাধির ভেতর কফিনের পাশে নেমে ডাড়ালো আন্দ্রেস। এন্ড্রু রুমালটা পকেটে রেখে কফিনের ওপাশে নেমে এলো। লোক দুটো কৌতুহলী হয়ে ফাদার আর বিশপের কার্যকলাপ দেখছে। এন্ড্রু দু’হাতে কফিনের ডালা ধরে একটানে খুলে ফেলল।

____________________________

মরিস কুড়াল দিয়ে কেটে ছিড়ে কটেজের পেছনের ঝোপটা বেশ আলগা করে ফেলেছে। সোফিয়া নজর রাখছে, কেউ এদিকে আসছে কি না। কিন্তু এই ভরদুপুরে পুরো ফেরিঙ্গাসি লেক একেবারে খা খা করা করছে। জনমানসের চিহ্ন নেই কোথাও। মরিস এগিয়ে এসে বলল,

—–” চল, এটাকে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেই।

সোফিয়া মাথা নাড়ল। মুখে কিছু বলল না। মহিলাটার নিথর দেহ দেখেও তার মনে হচ্ছে মহিলাটা মরেনি। যেন বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে তাদের দিকেই। কিন্তু এখন এটার পেছনে সময় নষ্ট করা চলবে না। নীরা ভেতরে। তাদের যে করেই হোক আগে ভেতরে ঢুকতে হবে।

মরিস আর সোফিয়া মহিলাটার নিথর দেহ ঠেলেঠুলে নিয়ে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিল। লাশটা মুহুর্তের মধ্যেই মিলিয়ে গেলো কুয়াশাজড়ানো ঝোপের মধ্যে। মরিস একটা কুড়াল সোফিয়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,

—–” চল!

সোফিয়া কাপা কাপা হাতে কুড়ালটা নিল। ভেতরে তাদের জন্য কি বিপদ অপেক্ষা করছে ঈশ্বর জানে। সে মনেমনে প্রার্থনা করল, ঈশ্বর যেন তাদের নিরাপদে রাখে। হাতলবিহীন দরজাটা খোলাই আছে। বিধায় তাদের আর দরজা ভাঙ্গার দরকার হল না।

ভেতরে যাওয়ার আগে মরিস ফোন বের করে মিউনিখ পুলিশকে সাহায্যের জন্য জানিয়ে এখানকার লোকেশন সেন্ড করে দিল। তার মন বলছে, ভেতরে ভয়ানক কিছু অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। তাই সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখাই ভালো।

দরজা দিয়ে ঢুকে সামনে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। যেন কোনো কৃষ্ণ গহব্বরের ভেতরে হারিয়ে যাচ্ছে তারা। বাইরের আলো মিইয়ে আসতেই মরিস ফোনের ফ্ল্যাশলাইট অন করল। সোফিয়াও অন করতে গেলে বাধা দিয়ে বলল,

—–” তুই এখন অন করিস না। আমার ফোনের চার্জ শেষ হলে তখন করিস।

সোফিয়া মাথা দুলিয়ে আচ্ছা জানালো। মরিস খুব সন্তর্পনে এগিয়ে চলেছে। তার পিছুপিছু এগিয়ে চলেছে সোফিয়া। কিছুটা এগোতেই নাকে একটা বিদঘুটে সোদা গন্ধ এসে লাগল।

উহঃ কি উৎকট গন্ধ! যেন বহুবছর ধরে জীবিত প্রাণীর প্রবেশ ঘটেনি এখানে। চলতে চলতে হটাৎ থমকে দাঁড়ালো মরিস। সোফিয়া অবাক হয়ে বলল,

—–” কি হল? থামলি যে!

মরিস হাতের ইশারায় সোফিয়াকে চুপ করতে বলল। চুপ হয়ে গেলো সোফিয়া। মনে হচ্ছে মরিস কিছু একটা শোনার চেষ্টা করছে। সোফিয়াও কান সতর্ক করল। অনেক চিতকার এর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তবে খুবই ক্ষীণ সে শব্দ। কোথা থেকে আসছে? মরিস ফিসফিসিয়ে বলল,

—–” শুনতে পেয়েছিস!?

সোফিয়া মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ জানালো। মরিস একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল,” রেডি থাক, যেকোনো মুহুর্তে

মরিসের কথা শেষ হওয়ার আগেই বিকট শব্দে তাদের পেছনের দেয়ালটা খসে পড়ল। আঁতকে উঠল সোফিয়া। মরিস তার হাত ধরে ছিটকে সরে দাড়ালো। মার্বেল আর বালিতে মিশে হালকা ধোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

মরিস দ্রুত ফোনের ফ্ল্যাশলাইট ঘুরিয়ে সেদিকে তাক করল। সোফিয়া খামছে ধরেছে মরিসের জ্যাকেট। খসে পড়া বালি সরে যেতেই ফ্ল্যাশলাইট এর আলোয় খাবলা খাবলা মার্বেল দেখা গেলো।

মরিস এগিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই সোফিয়া আরও জোরে তার জ্যাকেট খামছে বলল, ” মরিস! আমার খুব ভয় করছে!

মরিস খেয়াল করল, ভয়ে আতংকে সোফিয়ার চোখমুখ রক্তশূণ্য হয়ে গেছে একেবারে। মহিলাটাকে মারার পর থেকেই কেমন অদ্ভুত আচরণ করছে সোফিয়া।

তাকে ভেতরে নিয়ে যাওয়ার সাহস পেলো না মরিস। সোফিয়ার জিন্সের পকেট থেকে ফোন বের করে ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে সোফিয়ার হাতে দিয়ে বলল,

—–” তুই এখানে ওয়েট কর। আমি ভেতরটা দেখে আসি।

সোফিয়া কিছু বলল না। আতংকে তার হৃদপিন্ড ঠেলে বেরিয়ে আসবে মনে হচ্ছে। মরিস কি বলছে তার কানে আদৌ ঢুকছে কি না কে জানে। মরিস তার হাতে কুড়ালটা শক্ত করে ধরিয়ে বলল,

—–” কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ চলে আসবে। তারপর আমরা একসাথে এখান থেকে বের হবো।

সোফিয়া মাথা দুলিয়ে আচ্ছা জানালো। কিন্তু মনেমনে সে আশ্বস্ত হতে পারছেনা। মনে হচ্ছে তারা এখান থেকে বেচে ফিরতে পারবেনা! এখানে প্রতিটি পদে পদে বিপদ ওত পেতে আছে। মরিস সোফিয়ার দুই বাহু চেপে বলল,

—–” সাবধানে থাকিস!

বলেই দ্রুত পায়ে খসে পড়া দেয়াল ডিঙিয়ে ভেতরে চলে গেলো মরিস। সোফিয়ার চোখ বেয়ে এক ফোটা নোনাজল গড়িয়ে পড়ল। মরিস কি পারবে নীরা’কে নিয়ে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে!?

—–” সোফিয়া!

কারো ডাক পেয়ে চমকে উঠল সোফিয়া। কে ডাকলো তাকে? পরক্ষণেই পিনপতন নীরবতা নেমে এলো তার চারপাশে। কুড়ালটা শক্ত করে ধরে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। নাহ, কেউ নেই।

সোফিয়ার হটাৎ মনে হল, ফ্ল্যাশলাইট এর আলোটা কেমন যেন ঝিমিয়ে আসছে। ফোনের চার্জ কি শেষ হয়ে যাচ্ছে!? সে ফোনস্ক্রিনে তাকালো, সাতচল্লিশ পার্সেন্ট চার্জ আছে এখনো। কিছুটা স্বস্তি পেলো, কিন্তু মন থেকে ভয়টা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে এই ঘুটঘুটে অন্ধকারেই কেউ শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।

—–” সোফি!

আবারও ডাকল কেউ! সোফিয়া এবার উদ্ভ্রান্তের মতো এদিক ওদিক তাকাতে লাগল। মরিস কি তাকে ডাকছে? নাকি নীরা!? সোফিয়া কাপা কাপা গলায় বলল,

—–” নী’নীরা!

কোনো সাড়া এলো না। সোফিয়া আবার ডাকল,” ম’মরিস!!

এবারও কোনো সাড়াশব্দ এলো না। কি হচ্ছে তার সাথে!? সে কি ভুল শুনছে নাকি সত্যি কেউ তাকে ডাকছে!?

_____________________________

কফিনের ডালা সরাতেই সারলোটের স্নিগ্ধ ঘুমন্ত শরীরটা দৃশ্যমান হয়ে উঠল। পায়ে হাটু অব্দি সাদা মোজা পরা। গায়ে সাদা রঙের ফ্রক। সাদা মোজা পরা হাত জোড়া বুকের ওপর পরিপাটি করে রাখা।

মুখটা অসম্ভব ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে। কিন্তু ঠোঁট! আন্দ্রেস তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সারলোটের ঠোটের দিকে। মুক্তো দানার মতো কিছু একটা বেরিয়ে আছে ঠোটের কোনায়! ক্রুশ চেপে ধরল আন্দ্রেস।

এন্ড্রু এপাশে দাঁড়িয়ে ভালোভাবে দেখতে পারছেনা। কিন্তু বিশপের চাহনি দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা দেখতে পেয়েছে বিশপ! আন্দ্রেস ডান হাতে হলি ওয়াটার এর শিশিটার মুখ আলগা রেখে বাম হাত দিয়ে সারলোটের ঠোঁট জোড়া ফাক করে দিল।

সাথেসাথেই আন্দ্রেস এর চোখ জোড়া বিস্ময়ে বড়বড় হয়ে গেলো। সারলোটের ঠোটের দুপাশ বেয়ে ক্যানাইন দাত জোড়া ধারালো ছুরির মতো সরু লম্বা হয়ে বেরিয়ে এসেছে!

—–” বিশপ! এ কি!? লাশটার দাত অতবড় কেন?

একরকম চেচিয়ে উঠলো লোক দুটোর একজন। অন্যজন কিছু না বলে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছে সারলোটের নিথর দেহের দিকে। এন্ড্রু উঁচু হয়ে দেখার চেষ্টা করছে, কি দেখে অমন চেচিয়ে উঠলো লোকটা? দাতে কি হয়েছে? আন্দ্রেস দ্রুত সরে এসে লোক দুটোকে বলল,

—–” যা দেখেছো তা বাইরের একটা কাকপক্ষীও যেন জানতে না পারে। যাও এখান থেকে!

বিশপের ধমক খেয়ে লোক দুটো নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে সাথেসাথেই কেটে পড়ল। এন্ড্রু দেখতে না পেলেও বুঝে গেছে যে, তার ধারণাই ঠিক। আন্দ্রেস চিন্তিত হয়ে বলল,

—–” এন্ড্রু! ডালা লাগিয়ে এখানেই অপেক্ষা করো। আমি না আসা পর্যন্ত নড়বে না!

বলেই দ্রুত পায়ে সিমেট্রি থেকে বেরিয়ে গেলো আন্দ্রেস। এখনই গিয়ে কতৃপক্ষকে জানাতে হবে ব্যাপারটা। নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।

গীর্জা থেকে বেরিয়ে ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করছে আন্দ্রেস। সে ভেবে পাচ্ছেনা আগে কতৃপক্ষকে জানাবে নাকি মেয়েটার বাসায় গিয়ে খোজ খবর নেবে? কারণ কতৃপক্ষকে জানালে তারা এসে এক্সরসিজম করতে বলবে নয়তো বুকে ক্রুশ গেথে লাশটা পুড়িয়ে ফেলতে বলবে।

ভ্যাম্পায়ার নিধনের বহু পদ্ধতি আছে। কিন্তু এতে করে তো সে বাকিদের ধরতে পারবে না। বরং শয়তান গুলো আরও সতর্ক হয়ে যাবে। আন্দ্রেসের ভাবনার সুতো ছিড়ল ট্যাক্সি ড্রাইভারের ডাকে,

—–” বিশপ! যাবেন কোথায়!?

________________________________

মরিস ভেতরে ঢুকেই হতভম্ব হয়ে গেছে। একটা পঞ্চভুজাকৃতির কক্ষের ভেতর চারিদিকে অতিকায় কিছু বাদুড় রক্তমাখা অবস্থায় পড়ে আছে।

দেয়ালের গায়ে সেই লোকটার গলা চেপে ধরে দাড়িয়ে আছে একটা মেয়ে! লোকটার ঠোঁটের কোণ বেয়ে রক্তের ধারা বইছে! মরিস ভয়ে চেচিয়ে উঠলো,

—–” নীরা!

সাথেসাথেই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো নীরা। তার সমস্ত চুল মুখের সামনে এসে পড়েছে। নীরার চোখ বন্ধ রক্তশূন্য চেহারা দেখে আরেক দফা আঁতকে উঠল মরিস। এ কাকে দেখছে সে? নীরা নাকি নীরা রূপী কোনো শয়তান!?

নীরা এবার ওরহানকে ছেড়ে মরিসের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। মরিস কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। তার চিন্তাশক্তি লোপ পাচ্ছে। কেমন একটা মিষ্টি ঘ্রাণ লাগছে নাকে। বড্ড ঝাঝালো!

টলতে শুরু করল তার শরীর। হাত থেকে ফোন পড়ে ফ্ল্যাশলাইট অফ হয়ে গেলো। সাথেসাথে মরিসও লুটিয়ে পড়লো মেঝেতে। চোখ জোড়া বোজার আগে কানে এলো খিলখিলিয়ে হাসির ঝংকার!

ওরহান উলটে পড়ে আছে মেঝের ওপর। তার সারা শরীরে অজস্র ক্ষতের জ্বালাপোড়া হচ্ছে। উঠে বসার শক্তিটুকুও নেই।

অনেক কষ্টে সে চোখ মেলে দেখল, নীরার বুকের ভেতর থেকে সেই নীলচে-সবুজ রঙা আলো বেরিয়ে নিচে পড়ে থাকা একটা লোকের ভেতর প্রবেশ করছে! ওরহান সেই অবস্থাতেই একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল,

—–” পালিয়ে যাও নীরা!

ওরহানের কথাটা নীরা শুনতে পেলো কি না কে জানে। সে ধপ করে মেঝেতে পড়ে কাশতে লাগল। বুকের ভেতরটা কেমন যেন জ্বালাপোড়া অনুভূত হচ্ছে। কাশির চোটে নীরা’র দম বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।

গলা দুই হাতে চেপে কাশছে সে। একপর্যায়ে কাশতে কাশতে রক্তের ধারা বেরিয়ে এলো নীরার মুখ দিয়ে। গলগল করে রক্ত ঝরতে লাগল। রক্তের ধারা দেখে নীরা’র ভয় লাগছে, সে কি মারা যাচ্ছে? এত কষ্ট হচ্ছে কেন তার!?

ওরহান অনেক কষ্টে ওঠার চেষ্টা করছে। নীরা’র মুখ দিয়ে রক্তের ধারা বইতে দেখে তার শরীরের ব্যথা মিইয়ে গিয়ে ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠলো। নীরা’র কোনোদিকে হুস নেই।

চোখের সামনে যেন দুনিয়া দুলে উঠছে তার। ওরহান আস্তে-ধীরে উঠে নীরা’র দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। নীরা’র চোখমুখ লাল রঙ ধারণ করেছে। শিরা ধমনী সব ফুলে উঠেছে চামড়ার ভেতর দিয়ে।

ওরহান এসে নীরা’র গলায় হাত ছুইয়ে দিতেই কাশির ধাক্কা কমে এলো। কিছুটা স্বস্তি অনুভব করল নীরা। মুখের রঙ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে তার। ওরহান নীরা’র চিবুকে হাত ছুইয়ে বলল,

—–” পালিয়ে যাও নীরা!

সম্বিৎ ফিরল নীরা’র। তাকিয়ে দেখল ওরহানের গাল বেয়ে রক্ত পড়ছে। তার লালচে চোখ জোড়ায় বেদনার অশ্রু টলমল করছে! নীরা ফুপিয়ে কেঁদে উঠল,

—–” ওরহান! আমি ইচ্ছে করে করিনি! বিশ্বাস করো! আমি ইচ্ছে করে তোমাকে কষ্ট দেইনি!

ওরহান হেসে ফেলল। ব্যথিত চোখে এক চিলতে খুশির ঝলক দেখা যাচ্ছে তার মাঝে। ওরহান নীরা’র হাতে চুমু খেয়ে বলল,

—–” জানি! মিলিয়ান তোমাকে আবিষ্ট করে সবাইকে হত্যা করিয়েছে। ও তোমাকেও মেরে ফেলবে নীরা! পালিয়ে যাও!

নীরা অঝোরে কাদতে লাগল। সে ভাবতেও পারেনি তার একটা ভুলে এতো ভয়ানক কিছু ঘটে যাবে। মিলিয়ান তাকে দিয়ে খুন করেছে এতগুলো ভ্যাম্পায়ারকে। নীরা খেয়াল করল, তার মুখ থেকে ওরহানের হাত সরে গেছে। শিথিল হয়ে আসছে ওরহানের হাত। নীরা হুট করে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরল।

—–” ওরহান প্লিজ! প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না! আমি তোমার সব কথা শুনবো। কোনোদিন অবাধ্য হবো না! ওরহান!

নীরার গগনবিদারী চিৎকার কক্ষের দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বারবার। ভীষণ অসহায় লাগছে তার নিজেকে! কেন এমন হল তার সাথে!? কেন তার বোনকে সুইসাইড করতে হল?

কেন মিলিয়ান শয়তানের সন্তান? আর কেনই বা সে তাকে বাচাতে এলো? এখন কি করবে সে? কার কাছে গিয়ে সাহায্য চাইবে? কি করে বাচাবে তার ভালবাসাকে!?

________________[চলবে]_________________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here