#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
13.
ইমরান, সিনহার কাছে যেতে নিলেই একটা মেয়ে এসে সামনে দাঁড়ায়। মেয়েটা কনে পক্ষের কেউ হবে, তাই ইমরান কিছু বলতেও পারে না। সৌজন্যতার খাতিরে মেয়েটার সাথে,ইমরানের হেসে হেসে কথা বলতে হয়। দূর থেকে এই দৃশ্য দেখে সিনহা রানী রেগে ফায়ার। সে ইমরানের কাছে গিয়ে ইমরানের পাঞ্জাবীর কলার চেপে ধরে টেনে নিয়ে আসে। মেয়েটা তো সিনহার এমন কান্ডে হা হয়ে গেছে। ইমরানও হতবাক।
সিনহা ইমরানকে মানুষ শূন্য এক জায়গায় এনে দাঁড় করায়।
” আরে সিনহা পাঞ্জাবীর কলার ধরে টেনে আনলি কেনো? মান ইজ্জত তো কিছুই রাখলি না আমার।
” কিস করবি আমারে,আর প্রেম করবি অন্য মাইয়ার সাথে,তা তো হবে না। বল কী করছিলি ওই মেয়েটার সাথে?
” তুই তো বলেই দিয়েছিস,আমি প্রেম করছিলাম।
” কীইই বললি..?(রেগে বোম)
” না না মজা করেছিলাম। প্রেম করছিলাম না তো। মেয়েটা একটু কথা বলতে চাইলো, তাই হা হু করে জবাব দিচ্ছিলাম।
” হা হু করে হেসে হেসে জবাব দিতে হবে কেনো? বাই বলে চলে আসতে পারলি না?
” এইটা বিয়ে বাড়ি সিনহা। আর মেয়েটা কনে পক্ষের লোক,এভাবে চলে আসা যায়, বল? খারাপ দেখা যায় না?
” খারাপ দেখা যাক। আমি এতো কিছু বুঝি না। তুই অন্য কোনো মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে পারবি না ব্যস।
” আচ্ছা দেখা যাবে।
” দেখা যাবে না৷ আমার কথা শুনতেই হবে।
এখন বল হাতের এমন অবস্থা কেনো করলি,তুই?
” খুব রাগ উঠছিল, তাই।
” রাগ উঠলে এমন করবি কেনো, তুই? আমাকে কষ্ট দিতে তোর খুব ভালো লাগে, তাই না..?(ইমরানের ব্যান্ডেজ করা হাত ধরে)
ইমরান কিছু না বলে শুধু মুচকি হাসে। যেই হাসি সিনহা খেয়াল করেনি। সে ইমরানের হাতের দিকে তাকিয়ে আছে।
” কয়টা ঘুষি মেরেছিস.?
” তুই কীভাবে বুঝলি?
” আমি তোকে সবার থেকে ভালো বুঝি। তুই তা বুঝবি না।
” চারটা ঘুষি দিয়েছি।
” আর কখনো এমন করবি না তুই। করলে আমি তোকে মেরে ফেলবো, দেখিস।
” ওয়ার্নিং দিচ্ছিস.?
” হ্যাঁ দিচ্ছি। এখন চল খাবার খাবি।
” খেয়েছি তো।
” দেখেছি তো কেমন খেয়েছিস। আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
ইমরান এক প্লেট খাবার এনে ইমরানকে খাইয়ে দিচ্ছে। দু একজন এমন দৃশ্য দেখে ভেবে নিয়েছে এরা জামাই বউ। জামাইয়ের হাতে ব্যান্ডেজ, তাই বউ যত্ন করে খাওয়াই দিচ্ছে। জামাইয়ের প্রতি, বউয়ের কতো ভালোবাসা। সবাই, যারা দেখেছে তাই বলাবলি করছে।
” সবাই কী ভাবছে বল তো? আমার মতো জোয়ান একটা ছেলে, একটা মেয়ের হাতে খাবার খাচ্ছি। সবাই তো জামাই বউ ভেবে নিচ্ছে।
” ভাবলে ভাবুক। তোর এটা নিতে মাথা ব্যাথা থাকতে হবে না।
” মাথা ব্যাথা থাকবে না মানে? আমার মতো অবিবাহিত জোয়ান ছেলেকে বিবাহিত বানিয়ে দিচ্ছে,মাথা ব্যাথা তো থাকবেই।
” ওরে আমার জোয়ান ছেলে, বুইড়া ধামড়া একটা।
” ওই আমি বুইড়া ধামড়া ছেলে? (সিনহার গাল টেনে দিয়ে)
” আহ…
ওই গাল টানবিনা একদম। ব্যাথা পাই আমি।
” তো কি আদর করার জন্য গাল টানছি আমি?
” বেশি কথা বলিস, তুই।
সিনহার খাওয়ানো শেষ হলে হাত ধুয়ে নেয়। ইমরান মুখ ধুয়ে সিনহার ওড়ান টেনে নিজের মুখ মুছে নেয়।
” আরে…
ইমরান, সিনহার দিকে তাকিয়ে ভেটকি হাসি দেয়।
রিনা মেয়েটা (ইমরান যার সাথে হেসে হেসে কথা বলছিল) এসে সিনহার পথ আটকে দাঁড়ায়।
” এই যে বেহায়া বেশরম মেয়ে। লজ্জা লাগে না একটা ছেলের কলার চেপে ধরে সবার সামনে থেকে নিয়ে যেতে।
মেয়েটার কথা শুনে সিনহা রেগে ফুলে উঠে। এই মেয়ের সাহস কতো? সে তার ডেভিলের কলার ধরবে, মাথা ধরে চুল টানবে,দরকার পড়লে কলার টেনে ছিঁড়ে ফেলবে। তাতে এই মেয়ে তাকে কিছু বলার কে?
” এক ঘুষি মেরে না, তোর এই পেত্নীর মতো চেহারার নকশা আমি পালটিয়ে দিবো। আমার জামাইয়ের কলার চেপে ধরি, নাকি চুল টেনে ধরি। তোর সমস্যা কী? তুই কিছু বলার কে?
” তোমার জামাই মানে..? ওকে দেখে তো বিবাহিত মনে হয় না।
” তোকে কে বলছে,আমার জামাইয়ের চেহারা দেখতে? একদম আমার জামাইয়ের ধারে কাছে ঘেষবি না। নাহলে উষ্টা মেরে নদীতে চুবাইয়া মারবো।
মেয়েটা আর কিছু না বলে আহত হ্নদয় নিয়ে সিনহার সামনে থেকে প্রস্থান করিল। আর সিনহা রানী মেয়েটাকে ঝাড়তে ফেলে শান্তির এক নিশ্বাস নিলো।
সিনহা, ইমরানকে টেনে আনলো ফটো তোলার জন্য।
বর-কনে’কে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই বরের সোফা স্টেজ খালি পড়ে আছে। যার কারনে সিনহা সুযোগ পেয়ে ইমরানকে টেনে আনলো।
” ওই ফটোগ্রাফার ভাইয়া আমাদের ফটো তুলেন।
সিনহা, ইমরানের সাথে একদম ঘেঁষে বসেছে। সে এক হাত দিয়ে ইমরানের এক হাত জড়িয়ে ধরে বসেছে।
ফটোগ্রাফার ফটো তুলছে। সিনহা একবার ইমরানের কাধে মাথা দিয়ে ফটো তুলছে, আরেকবার গালে হাত দিয়ে ইমরানের দিকে তাকিয়ে পোজ দিচ্ছে। অন্য আরেকবার ইমরানকে তার দিকে তাকাতে বলছে, দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে ফটো তুলছে।
ইমরান,এবার সিনহাকে অবাক করে দেয়। সে সিনহাকে নিজের কোলে বসিয়ে সিনহার দিকে তাকায়। সিনহার হাতে ইমরানের গলায় চলে যায়। সেও ইমরানের দিকে তাকায়। ফটোগ্রাফার ক্লিক করতে দেরি করে না।
” জাস্ট আওসাম হয়েছে ভাই। দুজনকে হেব্বি মানিয়েছে।
কথাটা শুনে সিনহা এবার লজ্জা পায়। ইমরান হাসে।
!¡!
ভালোই ভালোই কোনো ঝামেলা ছাড়া চাচার বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়ে যায়।
বাড়িতে এনে চাচার বউকে ভিতরে প্রবেশ করাতে চাইলে চাচা এসে বাধা দেয়।
” আমার বউকে আমি কোলে করে ভিতরে প্রবেশ করাবো।
” হায় আল্লাহ চাচা এটা তো রিস্ক হইয়া যাই।
চাচা, জরিনা বানুকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়।
চাচা, তার বউকে কোলে তুলে নেয়। ভিতরে প্রবেশ করার জন্য হাটতেই চাচার লুঙি পায়ের নিচে পড়ে যায়। চাচা হাটতেই লুঙ্গিতে টান পড়ে লুঙ্গি সবার সামনে খুলে যায়।
জরিনা বানু চিৎকার দিয়ে উঠে,
” হায় আল্লাহ, আমি তো আগেই কইছি এইটা খুবি রিস্কি কাজ। কেউ আমার কথা শুইনলো না। এখন তো ঠিকি লুঙ্গি খুলি পড়ি গেছে। আইজকা বিয়ার দিনও চাচার লুঙ্গি না খুইলে পারল না।😐
চলবে….
~ ইমতিহান ইমরান।
Page, follow WRiter im Ran