#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
17.
” ভাইয়া আমার রুমে তালা দিয়েছিস কেনো? চাবি দে আমাকে।
ইমরান বিছানায় বসা ছিল। সে বিছানা থেকে উঠে সিনহার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। সিনহা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ইমরান,সিনহার কাছেই এসে সিনহার গাল চেপে ধরল।
” তুই এখন আর সেই সিঙ্গেল সিনহা নেই। তোর এখন বিয়ে হয়েছে। তাই ও রুমে থাকার প্রশ্নই আসে না। এখন থেকে এই রুমে থাকবি৷ নাকি আমার সাথে থাকতে সমস্যা? কাশেমের কথা মনে পড়ছে? কাশেমের সাথে বিয়ে হয়নি, এইজন্য আফসোস হচ্ছে?
” ভাইয়া…. এইসব কী বলছিস…?
” কীভাবে সবসময় এমন নিখুঁত অভিনয় করতে পারলি সিনহা? তোর তো নাটকে কাজ করা উচিত। সবসময় বলতি আমাকে ভালোবাসিস, আমাকে বিয়ে করতে চাইতি। আর এখন অন্য কারো বউ হওয়ার জন্য কনে সেজে তার পাশে বসে ছিলি।
কথাগুলো বলার মধ্যেই ইমরানের রাগ বেড়ে যাচ্ছিল। রাগে সে সিনহার গাল জোরে চেপে ধরে। সিনহা খুব ব্যাথা পাচ্ছিল।
” ভাই..য়া…আমি ব্যাথা পাচ্ছি।
” আমিও তখন খুব ব্যাথা পেয়েছিলাম। কীভাবে তুই অন্য কাউকে বিয়ে করার জন্য রাজি হয়ে গেলি? আমার আচরণ, ব্যবহারে একবারও কি তোর মনে হয়নি? যে আমি তোকে ভালোবাসি।
অনেক ভালোবাসতাম সিনহা তোকে। কিন্তু এখন তোকে আমার ঘৃণা করতে মন চাচ্ছে।
ইমরান, সিনহাকে ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। সিনহা ধপ করে মেঝেতে বসে কান্না করতে থাকে। দুচোখ বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু বর্ষণ করতে থাকে সে।
” ভাইয়া আমি জানি তুই আমাকে ভালোবাসতি। কিন্তু আমি কী করতাম? আমার যে তখন বিয়ে করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। একবার জিজ্ঞেস করতি? যে কেনো সিনহা ওই বদমাশ কাশেমকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে।
সিনহা কান্নার পর্ব শেষ করে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে। সিনহার এই রুমে নিজের কোনো কাপড় নেই। তাই সে শাড়ি পাল্টিয়ে ইমরানের একটা ট্রাউজার, টিশার্ট পড়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়।
ইমরান এখনও রুমে আসেনি। সে কি রুমে আসবে না?সিনহার এমন ভাবনার ভিতরেই ইমরান রুমে প্রবেশ করে।
সিনহাকে দেখেই কিছুক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। সিনহা তার ট্রাউজার, টিশার্ট কেনো পড়েছে? হিসাব মিলাতে পারছে না। এভাবে দেখে তো তার মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই মেয়েটাকে এতো সুন্দর হতে কে বলেছে?
” সমস্যা কী তোর? আমার ট্রাউজার, টিশার্ট কেনো পড়েছিস?(ধমক দিয়ে)
” এই রুমে আমার কোনো ড্রেস নেই। ঐ রুমে তো তালা দিয়েছিস।
ইমরান আর কিছু বলে না। চুপচাপ সে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে। অবশ্য এক পাশ হয়ে শুয়েছে। আরেকপাশে পর্যাপ্ত জায়গা রেখে।
সিনহা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। সে কী করবে এখন? কোথায় ঘুমাবে?
” খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে না থেকে বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়লে ভালো হয়।
” আমি কোথায় ঘুমাবো?
” বিছানায় এতো জায়গা, তোর চোখে পড়ছে না?
” ও আল্লাহ, আমি ডেভিল টার সাথে ঘুমাতাম। কি লজ্জা! কি লজ্জা! আমি তো এই কথা শুনেই লজ্জায় মরে যাচ্ছি। ঘুমাবো কী করে?(মনে)
আমি তোর সাথে ঘুমাবো?
প্রশ্নটা শুনে ইমরানের রাগ উঠে যায়। সে বিছানা থেকে উঠে সিনহার দিকে এগিয়ে যায়। ইমরানের রাগ, সিনহার চোখেও ধরা পড়ে। সে ভয় পেয়ে পিছনে হটতে লাগল।
সিনহা দরজার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে পালাতে যাবে, তার আগেই ইমরান খপ করে সিনহার হাত ধরে পেলে।
ইমরান,সিনহাকে টান দিয়ে কাছে এনে কোলে তুলে নেয়।
” ভাইয়া কী করছিস? কোলে কেনো নিয়েছিস?
ইমরান, জবাব না দিয়ে সিনহাকে বিছানায় ধপাস করে ফেলে দেয়।
” ওরে আল্লাহ…
” বিছানায় ঘুমা তুই। আমার সাথে ঘুমাতে হবে না।
ইমরান কথাটা বলে দাঁড়িয়ে থাকেনি। রুম থেকে হনহন করে বেরিয়ে যায়। সিনহা থতমত খেয়ে যায়।
” এটা কী হলো?
সারারাত ইমরান রুমে আসেনি। সিনহা অপেক্ষা করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে যায়। সিনহা গাধীর একবারও মনে হয়নি।৷ বাইরে একবার দেখে আসি। যে ইমরান কোথায়?
এইদিকে ইমরান ছাদে এসে দোলনায় বসে চোখ বন্ধ করে সারারাত কেটে দেয়।
সকালবেলা,,!
সবাই ব্রেকফাস্ট করতে ডাইনিং টেবিলে বসেছে।
জাহানারা চৌধুরী ইমরানকে দেখতে না পেয়ে সিনহাকে জিগ্যেস করে,
” সিনহা,ইমরান কোথায়? এখনো উঠে নি?
সিনহা ভাবনায় পড়ে যায়। সে কী বলবে? কালকে রাত থেকেই তো ইমরানের কোনো হদিস পাচ্ছে না সে।
সিনহা কিছু বলার আগেই জরিনা বানু বলে,
” ওইতো ভাইজান আসছে।
ইমরানের সাথে সিনহার একবার চোখাচোখি হয়। ইমরান নিজের চেয়ারে গিয়ে বসে।
” উনি বাড়িতে ছিল? (সিনহা মনে)
!
খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষে যে যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়। সিনহা রুমে গিয়ে দেখে, ইমরান রেডি হচ্ছে।
” ভাইয়া কোথাও যাচ্ছিস.?
” হুম, কাজ আছে।
” কালকে রাতে কোথায় ছিলি?
” বাড়িতেই ছিলাম। কোথাও যাইনি।
” বাড়িতে কোথায় ছিলি?
” এতো কথা জিজ্ঞেস করছিস কেনো? জেনে কী করবি তুই?
” এমনি জানতে চাইলাম।
” আমার ব্যাপারে তোর কোনো কিছু না জানলেও চলবে।
ইমরান রুম থেকে বের হচ্ছিল, সিনহা হাত ধরে আটকায়।
” আমার সাথে এভাবে কথা বলছিস কেনো?
” কীভাবে কথা বলছি তোর সাথে আমি?
” প্রত্যেক কথায় রাগ দেখাস।
” এমনি আমি। এখন হাত ছাড়।
” না তুই এমন না। সুন্দর করে আমার সাথে কথা না বললে আমি হাত ছাড়বো না
” হাত ছাড় সিনহা।
” না ছাড়বো না আমি।
” হাত ছাড়।
ইমরান রেগে ঝাড়া মেরে সিনহার থেকে নিজের হাত ছুটিয়ে বের হয় যায়। সিনহা কান্না করে দেয়। চোখ দিয়ে জলের ধারা বইতে থাকে তার।
চলবে…
~ ইমতিহান ইমরান।
Follow : WRiter im Ran