Romantic_Devil পাঠ-১৬

#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
16.

জরিনা বানুও নিচে ছিল। চাচার লুঙ্গি পেঁচানো দেখে সে, কথা না বলে টিকতে পারল না।

” হায় আল্লাহ, চাচা ভুইলেও আন্নে এই লুঙ্গি নিয়া ওইখানে যাইয়েন না। লুঙ্গি ছিঁড়ি বিরি, খুলি পরে বিরাট কেলেংকারী হই যাইবো।

” চুপ থাক জরিনা। লুঙ্গি নিয়া বেশি কথা কইবি না।

” চাচা তোমার যাওয়া লাগবে না, তুমি বাসায় থাকো।

!¡!

” বাবা বলো কবুল।

কাশেম তাড়াতাড়িই এক নিমিষেই তিনবার কবুল বলে ফেলে। তা দেখে তার বন্ধুরা,

” বাহ বন্ধুর তর সইছে না।হাহাহা।

কাজী সাহেব এবার সিনহাকে কবুল বলতে বলে। এমন মুহূর্তে গুলির শব্দে বিয়ে বাড়িতে হৈ চৈ পড়ে যায়। সিনহা, তাকিয়ে দেখে ইমরান। ইমরানের হাতে রিভালবার। ইমরান রিভালবার হাতে নিয়ে স্টেজের দিকে এগিয়ে আসে।

স্টেজে এসেই প্রথমে ইমরান কাশেমের বুকে এক লাথি বসিয়ে দেয়। সিনহার হাত ধরে টেনে স্টেজ থেকে নেমে পড়ে। কাশেমের বাবা চেয়ারম্যান মজিদ সাহেব ইমরানের সামনে এসে দাঁড়ায়।

” তোর এতো বড় সাহস? তুই বন্দুক নিয়ে এসে মাস্তানি করছিস। চেয়ারম্যানের বউমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিস,তুই?

” অনেক সাহস আমার৷ তোর মতো দুই চারটা চেয়ারম্যানকে উড়িয়ে দিলে কিছু যায় আসবে না আমার। সামনে থেকে সরে দাঁড়া মরতে না চাইলে।
সরে দাঁড়া। (ধমক দিয়ে)

চেয়ারম্যান ভয় পেয়ে একপাশে সরে যায়। ইমরান শক্ত করে সিনহার হাত চেপে ধরেছে। সিনহা ব্যাথা পাচ্ছে, কিন্তু মুখে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। তার ডেভিলটা যেই পরিমাণ রেগে আছে,কিছু বললেই উলটা মার খেতে হবে।

সিনহার আব্বু-আম্মুও কিছু বলছে না। ইমরান এসেছে দেখে তারাও অনেক খুশি হয়।

ইমরান, সিনহাকে নিয়ে বাইরে বের হয়ে আসে। গাড়ির দরজা খুলে, সিনহাকে ভিতরে বসিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে।

ইমরান খুব দ্রুতই ড্রাইভিং চালাচ্ছে। আসলে নিজের রাগ সব আপাতত ড্রাইভিং এর উপর ঝাড়ছে।

” ভাইয়া আস্তে চালা, আমার ভয় লাগছে।(সিনহা ভয়ে ভয়ে বলল)

কিন্তু মনে হয় না সিনহার কথা ইমরানের কান অব্দি পৌঁছিয়েছে। কারন গাড়ির গতি বিন্দুমাত্র কমেনি।

” ভাইয়া গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে। আস্তে চালা।

ইমরান এবার অগ্নিচক্ষু নিয়ে সিনহার দিকে তাকায়।

” একদম চুপচাপ বসে থাক। মুখ দিয়ে আর একটা সাউন্ড করবি? থাপ্পড় মারতে মারতে তোর চেহারার নকশা আমি পালটে ফেলব।

ইমরানের রাগ দেখে সিনহাও চুপসে যায়। সে আর কিছু বলল না।

ইমরান ঢাকায় এসে গাড়ি নিয়ে সোজা কাজী অফিসের সামনে থামায়। গাড়ি থেকে নেমে সিনহাকে নিয়ে কাজী অফিসের ভিতরে প্রবেশ করে। ভিতরে আগে থেকেই আয়ান ও দুইটা মেয়ে বসা ছিল। ইমরানের বন্ধ-বান্ধুবী।

ইমরান, সিনহাকে চেয়ারে বসিয়ে; নিজে পাশে বসে।।
আয়ান এবার কাজী সাহেবকে বলল,

” কাজি সাহেব, বর কনে চলে এসেছে এবার শুরু করেন।

” বর কনে এসেছে? সিনহা অবাক হয় শুনে। অবাক হলেও অনেক খুশি হয় সে। ডেভিলের সাথে তার বিয়ে হচ্ছে। সে এখন ডেভিলের বউ হবে।(মনে)

কাজী সাহেব কাগজপত্র তৈরি করে বর কনেকে সাক্ষর করতে বলে। ইমরান রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করে, সিনহার দিকে এগিয়ে দেয়।

” সাইন কর।

” সাইন করলে কী হবে?

” আরে সিনহা ভাবী, তোমার আর ইমরানের বিয়ে হচ্ছে এখন। সাইন করলে ইমরানের বউ হয়ে যাবে তুমি।

” আমি সাইন করবো না।

কথাটা শুনামাত্রই ইমরান তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে। সে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেয় সিনহার গালে। সিনহা এটা কল্পনাও করতে পারেনি।

” এক্ষুনি সাইন করবি তুই। ওই কাশেম টাশেমের আশা চিরদিনের জন্য বাদ দে। ইমরান বেঁচে থাকতে কাশেম কেনো, কেউই ইমরানের কাছ থেকে তোকে আলাদা করতে পারবে না। (রেগে)

আয়ান,ইমরানের ঘাড়ে হাত রাখে।

” আরে বেটা শান্ত হও। সিনহা মজা করছে।

সিনহা তো দুষ্টামি করে বলছিল। কিন্তু ইমরান এভাবে রেগে ফায়ার হয়ে যাবে। সে কল্পনাও করেনি। সিনহা তাই আর দেরি করেনি। গালে হাত দিয়ে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করে দেয়।

” কংগ্রাচুলেশন ব্রো ফর ইউর নিউ ম্যারেড লাইফ।

আয়ান, ইমরানকে জড়িয়ে ধরে। সবাই দুজনকে কংগ্রাচুলেশন জানায়।

!¡!

ইমরান, সিনহাকে নিয়ে বাসায় চলে আসে। দুজনকে একসাথে দেখে জাহানারা চৌধুরী অবাক হয়। তার উপর সিনহার গায়ে এখনো বিয়ের শাড়ি।

” ইমরান, এইসব কী? সিনহা এখানে কেনো? ও তো এখন শশুরবাড়ি থাকার কথা।

” ও এখন শশুরবাড়িতেই আছে।

” মানে.?

ইমরান জাহানারা চৌধুরীর কাছে গিয়ে উনাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

” আম্মাজান, তোমাদেরকে ছাড়াই আমি সিনহাকে বিয়ে করেছি। প্লিজ ক্ষমা করে দেও আমাদের।

” মানে কী,হ্যাঁ? ছাড় আমাকে। একদম আমাকে ধরবি না তুই আমাকে।

” না আম্মাজান, তুমি আমাদের ক্ষমা না করলে আমি তোমাকে এভাবেই জড়িয়ে ধরে রাখবো।

সিনহাও এসে জাহানারা চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে।
জাহানারা চৌধুরী রাগ ধরে রাখতে পারলেন না। দুজনেই তো নিজের। একজন নিজের, অন্যজন ভাইয়ের। কার সাথেও বা রাগ করবে?

!¡!

সিনহা আগে যে রুমে থাকতো সেই রুমে গিয়ে দেখে দরজায় তালা দেওয়া।

” অদ্ভুত তো, দরজায় তালা দিলে কে?

সিনহা জরিনা বানুকে ডাক দেয়। জরিনা বানু আসতেই,

” রুমে তালা দিয়েছে কে? যা তো চাবি নিয়ে আয়।

” ইমরান ভাইজান কিছুক্ষণ আগেই তালা দিলো। আর চাবি উনার কাছেই আছে। আর আপনে এই রুমের চাবি খুঁজছেন কা? আপনি তো এখন ইমরান ভাইজানের সাথে থাকবেন।

সিনহা কিছু না বলে চাবি আনার জন্য ইমরানের রুমে যায়।

” ভাইয়া আমার রুমে তালা দিয়েছিস কেনো? চাবি দে আমাকে।

ইমরান বিছানায় বসা ছিল। সে বিছানা থেকে উঠে সিনহার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। সিনহা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ইমরান,সিনহার কাছেই এসে সিনহার গাল চেপে ধরল।

চলবে…

~ ইমতিহান ইমরান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here