#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
02.
” বুঝো না,একটা মেয়ের কাছে এই ছেলেগুলো কী চাইতে পারে.?(হেসে)
” মানে.?
” মানে আড়ালে চল, তারপর বুঝাবো…
এই কথা বলে একটা ছেলে সিনহার হাত চেপে ধরে। বাকী ছেলেগুলো সিনহাকে চারিদিক থেকে ঘুরে রাখে।
” হ্যালো ব্রাদার, এই ঝুম বৃষ্টির ভিতরে এখানে কী হচ্ছে?
কারো কন্ঠ শুনে ছেলেগুলো ঘুরে সামনে তাকায়। দেখে একটা ছেলে ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
” ও মাই গড। একটা মেয়ের সাথে এতো গুলো ছেলে? ছি! ছি! ছি!.।
” ওই শালা চুপ থাক। ফটর ফটর না করে নিজের ভালো চাস তো কেটে পড় এখান থেকে।
” এগুলা ভালো না ব্রাদার,মেয়েটাকে ছেড়ে দাও। আমরা যে যার কাজে চলে যাই।
” এই শালা বেশি কথা বলে,ওই যা তো দুইটা দিয়ে এই ছেলের মুখ বন্ধ করে দিয়ে আয়।
” আমার মুখ বন্ধ করবি? আয় দেখি কেমন পারস।
এই কথা বলে ছেলেটা তার বুক পকেটের পিছন থেকে একটা রিভালবার বের করে।রিভালবার দেখে বখাটে ছেলেগুলো ভয় পেয়ে যায়। সিনহাকে রেখে এদিক ওদিক দৌড়ে পালিয়ে যায়।
সিনহা ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে। সে কাঁপছে এখন। নিজেকে তার খুব অসহায় লাগছে একমুহূর্তে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে তার। ছেলেটা দূরে দাঁড়িয়ে সিনহাকে পরখ করছে। মেয়েটা যে খুব ভয় পেয়েছে, এখনো পাচ্ছে। তার কাঁপাকাঁপিতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। সে মেয়েটার দিকে আগাবে কিনা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে।
এমনসময় সিনহা বাইকের শব্দ শুনতে পায়। ইমরান সিনহার সামনে এসে বাইক থামায়। আপন মানুষকে দেখে মানুষের ভিতরের কান্নাটা ডুকরে বাইরে বের হয়ে আসে।সিনহার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে,ইমরানকে দেখে সে ডুকরে কেঁদে উঠে।
সিনহাকে কাঁদতে দেখে ইমরান ভয় পেয়ে যায়। সে বাইক থেকে নেমে সিনহার কাছে যায়।
” সিনহা কী হয়েছে? কান্না করছিস কেনো? বল আমাকে,কেউ কিছু বলেছে তোকে?( উদ্ধিগ্ন হয়ে)
ইমরানের কথা শুনে সিনহা রেগে যায়। সে রেগে ইমরানের বুকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। ইমরান বুঝতে পেরেছে সিনহা কোনো কারনে খুব বেশি ভয় পেয়েছে। তাই এমন ব্যবহার করছে। সিনহা কান্না করছে আর ইমরানের বুকে কিল-ঘুষি মারছে। ইমরান, সিনহাকে শক্ত করে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। সিনহা নিরাপদ জায়গায় ঠায় পেয়ে আস্তে আস্তে শান্ত হয়ে যায়।
” সিনহা কী হয়েছে বল আমাকে? কেউ তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করছে?
সিনহা এবার, ইমরানের বুক থেকে মুখ তুলে। তারপর তার সাথে কী হতে যাচ্ছিল,সব খুলে বলল ইমরানকে। ইমরান সব শুনে কলিজার পানি শুকিয়ে যায়। তার সিনহার সাথে এমন একটা খারাপ কিছু হতে যাচ্ছিল। সিনহা এমন একটা খারাপ সিচুয়েশন পার করে এসেছে.। ইমরান শক্ত করে আবার সিনহাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। খুব বড় ভুল হয়ে গেছে তার, এভাবে সিনহাকে রাস্তায় ফেলে যাওয়া।
ইমরান,সিনহাকে নিয়ে ছেলেটার কাছে এগিয়ে যায়।
” ধন্যবাদ ভাই তোমাকে। তোমার কারনে আজকে আমি ওকে সুস্থ ভাবে ফিরে পেয়েছি। অনেক কৃতজ্ঞ তোমার কাছে আমি।
” যে কোনো মেয়ে হলেই আমি এমনটা করতাম। ইটস ওকে। তুমি এখন ওকে বাসায় নিয়ে যাও। খুব ভয় পেয়েছে আজকে।
” হুম।
ইমরান, সিনহাকে বাইকের পিছন বসিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পুরোটা রাস্তায় সিনহাকে একটা কথাও বলেনি। ইমরানকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে চুপ করে ছিল সে।
|
বাসায় আসতেই ইমরানের আম্মা জাহানারা চৌধুরী ইমরানকে ইচ্ছামতো কথা শুনিয়ে দিলেন। তার ভাইয়ের একমাত্র আদরের মেয়ের প্রতি ইমরানের এমন অবহেলা তিনি মেনে নিলেন না। মেয়েটা পুরো ভিজে চুপসে গেছে। অথচ তার ছেলে ইমরান গাধাটা সাথে থেকেও ওকে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে নিয়ে এলো। কোনো কেয়ার’ই করলো না সে।
” আম্মা তোমার চিৎকার চেচামেচি শেষ হলে, আমরা যাই।
” আমি চিৎকার চেচামেচি করি? থাপ্পড় মেরে তোর গাল আমি লাল করে ফেলবো। কোথাও দাঁড়াতে পারলি না।?মেয়েটাকে এভাবে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে নিয়ে এলি কেনো?
” হইছে আমার ভুল হয়েছে। নেক্সট টাইম থেকে আর এমন ভুল হবে না আম্মাজান। এবার তাহলে যাই আমি।
” মনে থাকে যেনো? যা সিনহা চেঞ্জ হয়ে আয়।
” জি ফুফি।
|
সিনহার মনের পরিস্থিতি বুঝার জন্য ইমরান সিনহার রুমে যায়। দেখে সিনহা মহারানী বিছানায় বসে মোবাইল টিপছে।
” মোবাইলে কী করছিস?
”
” কিছু জিজ্ঞেস করছি তোকে।
”
” আরে আজব কানে শুনতে পাচ্ছিস না নাকি?
” আমার এখন তোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
এই কথা বলে সিনহা পাশে মোবাইল রেখে বিছানায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়ে।ইমরান কাছে গিয়ে সিনহাকে বিছানা থেকে টেনে তুলে।সিনহা মুখে বিরক্তির অভিব্যক্তি প্রকাশ করে।
” তো কখন আপনার আমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হবে, শুনি.?
” আমি তোর সাথে রাগ করেছি,বুঝতে পারছিস না তুই?(রেগে)
” সেটা তো ভালো করেই বুঝতে পারছি। তো এই রাগ ভাঙানোর জন্য কিছু একটা তো করতে হবে আমাকে। কী করতে হবে তাড়াতাড়ি বল?
ইমরানের কথা শুনে সিনহা খুশিই হয়। সে বলে,
” একটা না দুইটা করতে হবে।
” সমস্যা নেই, আপনি বলেন।
” প্রথমত এখন কান ধরে উঠবস করতে হবে।
দ্বিতীয়ত বিকালে আমাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে।
চলবে…
~ ইমতিহান ইমরান।