নীলাম্বরীর_প্রেমে পর্ব : ১০
#Tuhina pakira
বাড়িতে ঢুকতেই আয়ু ওর মায়ের দিকে তাকালো।তিনি তখন রান্নাঘরে কিছু টুকটাক কাজ করছিল।আয়ুর মা আয়ু কে দেখে বেশ অবাক হলো।
-” কী রে তুই এই বাড়ি আসছিস? আমি ভাবলাম তুই হয়তো অনেকক্ষণ এসে গেছিস। আমি তো ও বাড়ি ছিলাম তাই খেয়াল ছিল না। ”
আয়ু কিছুই বললো না। আদৌ ও কিছু শুনছে কিনা কে জানে। আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে সোফার উপরে নিজের ব্যাগটা রেখে দিয়ে আয়ু নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো।
-” আমি ভাবলাম তুই হয়তো এসে গেছিস। দেখ তিশা তোর কাছেই গেলো এই। এতক্ষণ আমার সঙ্গে গল্প করছিল। মেয়েটা তার মানে একা বসে আছে দেখ।”
তিনি আবারও কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। অপরদিকে আয়ুর মা যে আয়ুকে কতো কী বলে গেলো সে তো কিছুই শোনেনি। নিজের রুমের দরজাটা বন্ধ করে ও একছুটে বারান্দার মেঝেতে গিয়ে বসে পড়লো। হাঁটু দুটির মাঝে নিজের মাথা রেখে নিঃশব্দে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো আয়ু। পিছনে দেওয়ালে মাঝে মাঝে মাথার পিছন দিকটা ঠুকতে লাগলো। চুলের ব্ল্যাক ক্লিপটা ভেঙে গিয়ে বাঁধা চুলগুলো এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে পড়ল। ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। এতো কষ্ট ও আগে কখনো পাইনি। হঠাৎই ছোটো ছোটো দুটো হাত ওর দিকে কেউ বাড়িয়ে দিলো। আয়ু মাথা তুলে তাকালো না পর্যন্ত হাত দুটো ধরেই কাঁদতে লাগলো।
-” আয়ু দি কানছো (কাঁদছো) কেনো ? তোমার হাতে আউ হয়েছে?”
আয়ুর কাঁদতে কাঁদতে গলা বসে এসেছে কথা আসছে না মুখে। তখনই ওর পাশের বারান্দা থেকে কেউ বলে উঠলো,
-” কী হচ্ছে দুজনের?”
নিশিতার গলার আওয়াজ পেতেই আয়ু তৎক্ষণাৎ নিজের চোখ মুছে উঠে দাঁড়ালো। কাউকে বুঝতে দিলে হবে না ও কাঁদছিল।
-” কী হয়েছে আয়ু? ”
-” কী..কী হবে? কি….ছু না।”
-” না মানে তুমি হড়বড় করে উঠে দাঁড়ালে তাই বললাম। ”
-” ও আচ্ছা। কিছু বলবে কাকিমনি?”
নিশিতা হেসে বলল,
-” আসলে আমি তিশাকে ডাকতে এসেছিলাম। ”
কথা টা বলে তিনি আয়ুর পাশে থাকা তিশার দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেল। ও বেচারি বুঝতে পারছে না কাঁদবে না হাসবে।
-” এ কী মামনি কী করেছো? ”
আয়ু এতক্ষণ অন্যকিছু ভাবছিল। নিশিতার কথায় তিশার দিকে তাকাতেই অমাবস্যায় ঘিরে যাওয়া মুখে এক চিলতে পূর্ণিমার ঝিলিক খেলে গেলো।
তিশা কিছুক্ষণ আগে আয়ুর রুমে আসতেই ওর নজর যায়, পেন দানিতে থাকা লাল আর কালো রঙের মার্কার পেনের দিকে। এই পেন দুটো তিশার বেশ ভালো লাগে। এই পেন দিয়ে একটু খাতায় আঁচড় কাটতেই কী সুন্দর লেখা যায়। দেখতে কী ভালো লাগে। লেখাগুলোও বেশ বড়ো বড়ো হয়। এই পেন ও আয়ু কে প্রায়ই ব্যবহার করতে দেখে। তিশা লাফিয়ে লাফিয়ে মার্কার পেন দুটো নেবার চেষ্টা করলো; কিন্তু পারলো না। টেবিলের উপরে হাত পাওয়া একটা বই নিয়ে পেন দানিটা একটু জোরে ঠেলা মারতেই ওটা পড়ে গেলো। পেন দানিতে থাকা সব কিছুই টেবিলে পড়ে তা গড়িয়ে মেঝেতে চলে যায়। তিশা ওখান থেকে লাল আর কালো মার্কার পেন দুটো তুলে নিলো। ও দেখেছে ওর আয়ু দিদি ওই পেন দিয়ে হাতে স্টার আঁকে। মাঝে মাঝে ওর হাতেও এঁকে দেয়। হঠাৎই তিশার মনে এলো সিনচানের কথা। ও টিভি তে দেখেছে ওর সিনচান খুব ভালো মেকআপ করে। তিশা টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে নিলো একবার। তারপর চারিদিকে মেকআপ বক্স খুঁজতে শুরু করলো কিন্তু পেলো না। তিশা হাতের দিকে তাকিয়ে মার্কার পেন দুটো খুব ভালো করে দেখলো; লাল রঙের দেখতে মার্কার টা লাল আর কালো রঙের মার্কার টা হলো কালো। তিশা সিনচানের মতো গুনগুন করতে করতে লাল মার্কার টা দিয়ে ওর মায়ের মতো কপালে গোল লাল টিপ আঁকলো, মাথায় মায়ের মতো সিঁদুর পড়লো, গাল দুটোতে গোল করলো। আর কালো মার্কার দিয়ে বাবার মতো দাঁড়ি আঁকতে লাগলো। তারপর নিজেকে ভালো করে একবার দেখে নিলো।
-” আমাকে মা আর বাবার মত লাগচে( লাগছে )। ধুর এখানে সাদা পেন নেই কেনো?তাহলে ঠাম্মির মতো লাকতো ( লাগতো) ।”
তারপর গালে হাত দিয়ে কিছু ভাবতে ভাবতে নজর গেলো আয়ুর সাদা ওরনাটার দিকে। ওরনাটা নিয়ে ভালো করে মাথায় পেঁচিয়ে লম্বা চুল করে নিলো।
-” বাহ্ আমাকে কি তুন্দর ( সুন্দর ) লাগছে। যাই জেম্মাকে দেখিয়ে আচি।”
তিশা কথাটা বলে পিছন ফিরতেই দেখতে পেলো আয়ু কে। কিন্তু কিছু বলার আগেই ও বারান্দায় চলে যায়।
-” এই সব কি করেছিস তিশু?”
-” আমাকে কী তুন্দর ( সুন্দর ) লাগছে না!”
-” মামনি তুমি এসব কি করেছো? এই মেয়েটা আমাকে পাগল করে দেবে। বাড়ি আয় আগে। মুখ পরিষ্কার করে দিই আগে। ”
তিশা মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে রইলো। আয়ু নীচু হয়ে তিশার সামনে বসে বললো ,
-” আমার তিশু বুড়িকে খুব সুন্দর লাগছে। পুরো রসগোল্লা। ”
তিশা আনন্দে লাফিয়ে আয়ুর গলা জড়িয়ে ধরলো।
-” ইয়ে আমাকে লচোগল্লা লাকছে( রসগোল্লা লাগছে)।”
আয়ু উঠে দাঁড়ালো। তিশা বাড়ি যাবে। ও আসার সময় দরজা বন্ধ করে এসেছে দরজাটা খুলে দিতে হবে।আয়ু চলে যাবার মুহূর্তে নিশিতা বলে উঠলো,
-” আয়ু তোমার বাম গালে কী হয়েছে?”
আয়ু চমকে নিজের গালে হাত দিয়ে দিল।
-” কী হবে কিছুই না। ”
-” না গালটা কেমন লাল হয়ে আছে।”
– ” আসলে কী বলোতো এই রোদ্দুরে বাড়ি এলাম হয়তো অ্যালার্জি ফুটেছে। ”
নিশিতা আর কথা বাড়ালো না। আয়ু ঘরে গিয়ে তিশাকে দরজাটা খুলে দিল। তিশা চলে যেতেই আয়ু দরজাটা বন্ধ করে দিল। তবে লক করেনি। প্রচুর ক্লান্ত লাগছে ওর। বিছানায় বসতেই বারান্দার দিকের পর্দা গুলো হাওয়ায় নড়ে উঠলো। আয়ুর মনে পড়ে গেলো স্পর্শের কথা। ছুটে গিয়ে বারান্দার দিকের দরজা , জানলাটা বন্ধ করে দিয়ে আস্তে আস্তে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
♣
দুপুর পৌনে ১ টা,
চোখে দুপুর রোদের আলো পড়তে আয়ুর ঘুম ভাঙলো। আয়ুর মা বারান্দার দিকের দরজা খুলতে খুলতে বললো,
– ” যা স্নান করে আয়। সেই এসে ঘুমিয়েছে। খিদে পায়নি নাকি? এসে দেখি উনি ঘুমাতে ব্যস্ত। যা তাড়াতাড়ি।”
আয়ু আলেসি ভেঙে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। আয়ুর মা আয়ুর ঘর গোছাতে গোছাতে বললো,
-” স্পর্শ চলে গেছে জানিস আয়ু?”
আয়ু সবই শুনতে পেলো কিন্তু কিছু বললো না। ও এই বিষয়ে কিছু বলতেই চায় না ।
-” কী রে সাড়া দিচ্ছিস না যে ? স্নান করতে গিয়ে ঘুমিয়ে গেলি নাকি? ”
-” না ঘুমাইনি। মা খিদে পেয়েছে খাবার দাও তাড়াতাড়ি।”
-” খেতে দেবো তো , সারাদিন ঘুরে এখন তার খিদে পেয়েছে। তাড়াতাড়ি নীচে আয় আমি খেতে দিচ্ছি। ”
আয়ু শাওয়ারের তলায় চুপ চাপ ভিজতে লাগলো। হাত দুটো শক্ত করে মুঠো করে ধরলো, পায়ের আঙ্গুল গুলো দিয়ে মেঝেতে চেপে ধরলো। অপরদিকে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে কী ঠিক বুঝতে পারলো না সে নিজেই। জলের ধারায় হয়তো চোখের জল লুকিয়ে পড়েছে।
♣
সেই ঘটনার পর কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। এখন রাত ১১:৫০ টা। সবাই যে যার ঘরে চলে গিয়েছে ঘুমাতে। আয়ুও গিয়েছিল কিন্তু চুপি চুপি আবার নীচে ফিরে এসেছে। ও আজ স্পর্শকে ফোন করবে। আর কিছুক্ষণ পর ওর জন্মদিন। ওকেই উইশ করবে। সেইদিনের পর স্পর্শের সঙ্গে ওর আর কথা হয়নি। যাবার পরের দিন সব অভিমান ভুলে আয়ু স্পর্শের সাথে কথা বলতে গিয়েছিল কিন্তু,
সেইদিন স্পর্শ যখন ওর মাকে ভিডিও কল দিয়েছিল তখন সবে আয়ু মিমির সাথে কথা বলতে গিয়েছিল। স্পর্শের মা আয়ুকে দেখে বললো,
-” এইতো আয়ু , আয় দেখ স্পর্শ ফোন করেছে। ”
আয়ুও সব অভিমান ভুলে এগিয়ে গিয়েছিল ফোনের দিকে। ও স্পর্শকে ছেড়ে কিছুতেই থাকতে পারছে না। ফোনটা হাতে নেবার সময় স্পর্শ বলে উঠলো,
-” মা আমি ওর সাথে পড়ে কথা বলবো , বাবা ডাকছে মিথিলা ফোন দিয়েছে। টাটা। ”
সেইদিন আয়ুর মনটা আবার ভেঙে গিয়েছিল। পুরোনো কথা ভাবতে ভাবতে 12 টা বাজার কয়েক মুহূর্ত আগেই ও ফোন করলো স্পর্শের নাম্বারে। কিন্তু বারবার ফোনে একটা মিষ্টি গলা বলে চলেছে নম্বরটি ব্যস্ত। আয়ু ফোনটা রেখে দিল। কিছুক্ষণ বসে রইল যদি ওর স্পর্শ দা ঘুরিয়ে ফোন করে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেও যখন ফোন এলো না ও নিজেই আবার ফোন করলো। কিন্তু আবারও সে ব্যস্ত। আয়ু আর দাঁড়ালো না নিজের ঘরে চলে গেল। এক গ্লাস জল খেয়ে শুয়ে পড়লো। চোখ বন্ধ করতেই ভেসে উঠলো সেইদিন স্পর্শ দার থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে কারোর সাথে ধাক্কা খাওয়ার মুহূর্ত,
সেইদিন।।
~~~~~~~
ট্রেন এসে দাঁড়াতেই সেইদিন মিথিলা ছুটে আসছিল স্পর্শের কাছে। ততক্ষনে অবশ্য ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। ওর হাতে ছিল স্পর্শের জন্যে একটা গিফট। কিন্তু তখনই ওর ধাক্কা লাগে আয়ুর সাথে। দুজনেই নিজেদের সামলে নিলেও মিথিলার হাতের গিফট টা ছিটকে লাইনে পরে যায়। মিথিলার মাথা গরম হয়ে যায়। যার জন্যে এই কাজটা হলো তার দিকে তাকাতে মিথিলার রাগ যেনো চড়চড় করে বাড়তে থাকলো। ও আয়ু কে একদম পছন্দ না। এই যে ও স্পর্শ কে ভালোবাসে কিন্তু স্পর্শ সবসময় চিপকে থাকে এই আয়ুর সাথে। এতে ওর রাগে গা জ্বলে ওঠে। কিন্তু এই রাগ কার উপর স্পর্শ না আয়ু? তা ও জানে না। কিন্তু তাও ও সব দোষ আয়ু কেই দেয়। ফলস্বরূপ, আজকে তার সুযোগ। আজ স্পর্শ নেই আয়ুকে বাঁচাতে। ঠাস করে সপাটে চড় বসিয়ে দিলো আয়ুর গালে। আয়ু হতভম্ব হয়ে মিথিলার দিকে তাকালো। ট্রেন চলে যাওয়ায় স্টেশন ফাঁকাই ছিল। কিছু দূরে ছিল সাদ আর অরূপ। তবে দুজনেই বিষয়টা দেখে ওদের দিকে এগিয়ে গেলো।মিথিলা আয়ুর হাত চেপে ধরলো।
-” তুই স্পর্শকে প্রপোজ করেছিস কেনো? তোকে কে বলেছিল ওকে প্রপোজ করতে। বেশি এক্সটা পাকামো সবেতে তাইনা। আর আজ তুই আমার গিফটটা ফেলে দিলি। জানিস ওটা আমি কতো কষ্ট করে স্পর্শের জন্যে এনেছিলাম। তোর সবেতেই নজর কেনো এতো। কান খুলে শুনে রাখ, স্পর্শ আমার আর ও আমাকেই ভালোবাসে। ”
আয়ু কিছু বললো না, হাঁ করে তাকিয়ে রইল খালি মিথিলার দিকে। তখনই অরূপ এসে ধমক দিয়ে বলল,
-” ওই তুই ওকে মারলি কেনো? ও কী করেছে? আর তুই কি চৈত্র সেলে এসে জিনিস টানাটানি করছিস নাকি? স্পর্শ ওর না , তোর হেনাতেনা বকছিস কেনো? ”
-” ওই সব করেছে। ওর জন্যে স্পর্শ আমার হয়নি। শুধু ওর জন্যে।”
সাদের মাথা গরম হয়ে গেলো। এতে আয়ুর কী দোষ ও খুঁজে পেলো না। তাই মিথিলাকে ধমক দিয়ে পাঠিয়ে দিল। আয়ুও কিছু বললো না এগিয়ে গেলো বাড়ির দিকে। মনের মধ্যে আরও একটা অভিমান সঞ্চয় হলো। মানুষটা ওকে সবার সামনে হাসির পাত্র করে গেছে। কই ও তো কাউকে বলেনি তবে ও কেনো বললো?
♣
সাদ আর অরূপের সঙ্গে কথা বলছিল স্পর্শ। কথা শেষে ল্যাপটপটা বন্ধ করে ব্যালকনি থেকে পুরো শহরটা একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। ও রয়েছে দশ তলায়। এখন রাত হলেও এই শহরে এখনও গাড়ি চলছে। এই শহর বোধহয় ঘুমায় না। ওর আগের গণ্ডির ছোট্ট শহরটা ১০ টা বাজতেই নিরব হয়ে যেত। স্পর্শের খুব মনে পড়ছে আয়ুর কথা। এখানে তো আর ওখানের মত সামনে কোনো ব্যালকনিতে আয়ুর আসার চান্স নেই। এখানে সবই তো বড়ো বড়ো বিল্ডিং। ওদের শহরের মতো সবুজ প্রকৃতির অনেক অভাব এখানে। ওর শহরটা ছিল গ্রাম , শহরের মাঝামাঝি , ওটাই ছিল ওর পছন্দের। আর এখানে ও তো এই কদিনেই হাঁফিয়ে গেছে। না জানে কদিন থাকতে হবে।
স্পর্শ ঘরে চলে গেলো। ওর একবার আয়ু কে ফোন করতে ইচ্ছে হচ্ছে। সেই দিনের পর ওদের আর কথা হয়নি। নানা ব্যস্ততায় সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তার উপর ফোনটা ওর ভীষণ ডিস্টার্ব করছে। বিছানা থেকে ফোনটা হাতে নিতেই দেখে আয়ুর বাড়ির ল্যান্ডলাইন এর ফোন। ওর বাবা কখন যে ওর মায়ের সঙ্গে ফোন রেখে চলে গেছে ও দেখেনি। কল ব্যাক করলো নিশ্চয় ওকে উইশ করতে ফোন করে ছিল। ভাবতেই মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো।
♣
বসার ঘরের টেলিফোনটা অনেকক্ষণ ধরে বাজছে। হাই তুলতে তুলতে আয়ুর বাবা গিয়ে ফোনটা ধরলো।
-” হ্যালো, কে?”
-” আমি স্পর্শ আঙ্কেল।”
-” ও বল, এতরাতে কিছু অসুবিধা হয়েছে?”
-” না আসলে মিসডকল দেখে ফোন করলাম।”
– ” রাতে কথা হবার পর তো কেউ আর কল দেয়নি। ”
-” ও তাহলে হয়তো আমি ভুল দেখেছি। আচ্ছা আমি রাখছি কাল কথা হবে ।
ফোনটা রেখে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো স্পর্শ। নিজের মনেই বিড়বিড় করলো ,
-” অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছিলি না আমার ফোনের। সরি রে , কেনো যে বাবাকে ফোনটা দিতে গেলাম। ”
স্পর্শ উঠে দাঁড়ালো । আজকের রাতটা হয়তো ওর আক্ষেপ করেই কেটে যাবে।
♣
স্পর্শ ফোন ডিসকানেক্ট করে দিয়েছে অনেকক্ষণ কিন্তু সাদ ফোন কাটেনি। কিছু বলতে চাইছে হয়তো।
– ” অরূপ তোর কি হয়েছে? তুই ঠিক মতো কথা বলছিস না কেনো আমার সাথে? ”
-” তুই জানিস না কি হয়েছে? তুই কেনো ওই শাকচুন্নি কে আয়ুর প্রপোজ এর কথা বলেছিস? স্পর্শ বারণ করে ছিল না।”
সাদ এতক্ষণে বুঝলো অরূপের রাগার কারণ। ওর একটা ছোট্ট ভুলের জন্যে আয়ু কে মিথিলার থেকে কত কি শুনতে হলো।
-” আমি তো বন্ধু ভেবে ইয়ার্কি করে বলেছিলাম। কীকরে জানবো ও এই কান্ড ঘটাবে। তুই ভাই প্লিজ স্পর্শকে এই সব কিছু বলিস না। তাহলে ও খুব রেগে যাবে। ”
-” এবারের মতো বাঁচলি। পেট পাতলা কোথাকার। ফোন রাখ ঘুম পেয়েছে। ”
(চলবে )
{ বিঃ : ত্রুটি ক্ষমা করবেন । ভালো কিংবা খারাপ কেমন হয়েছে জানাবেন । হ্যাপি রিডিং }