হিমি পর্ব-৫৬

0
823

হিমি
লেখনী- সৈয়দা প্রীতি নাহার

৫৫.

“Bulaave tujhe yaar aaj meri galiyan
Basau tere sang main alag dunia
Na aaye kabhi dono main jara bhi faasle
Bas ek tu ho, ek main aur koi na

Hai mera subkuch tera tu samajhle
To chahe meri haq ke zammen rakhle
Tu sason pe bhi naam tera likh de
Main jiyu jab jab tera dil dhadke”

সাউন্ডবক্সে অনবরত গানটি বেজে চলেছে। এই নিয়ে দুবার বাজানো হয়েছে। এর আগেও তুলসী কুমারের ‘তেরি বান যাউঙ্গী’ গানটা দুবার শুনা হয়েছে। হিমির মনে হচ্ছে এদের কাছে গানের স্টক সীমিত। তাই এক‌ই গান দুবার করে বাজানো হচ্ছে। এমন‌ও হতে পারে শেষ মেষ গান না পেয়ে এক নাগারে বাজতে থাকবে কোনো এক হিন্দি গান। হিন্দি গান গুলো হিমির খুব একটা পছন্দ নয়। প্রচুর ইন্সট্রুমেন্টের আওয়াজ আর গলা ফাটিয়ে গাওয়া গানের আগা মাথা বুঝে না সে। এর চেয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীত ভালো। যদিও চার পাঁচটা গান‌ই শুনেছে হিমি তবুও তার মনে হচ্ছে এসব হিন্দি গানের চেয়ে বাংলা গানগুলোই স্রুতিমধুর।

স্টেইজে বরপক্ষের কয়েকজন নাচছে। স্টেইজের সামনেই মাঝখানে সোফা। বর কনে দুজনে সেখানে বসে। সোফার দু দিকে এবং পেছনে প্লাস্টিকের চেয়ার অতিথিরা বসে আছেন। এখন সবার দৃষ্টি স্টেইজের দিকে। নিহানের‌ও। মিশ্মির তাতে কোনো উত্তেজনা কাজ করছে না। অবশ্য বিয়ে নিয়েও উত্তেজনা ছিলো না তার। সবাই যখন করতালি আর উচ্ছল হেসে নাচ দেখতে মগ্ন তখন মিশ্মির দৃষ্টি শূণ্যে। মুখ বেজার। চোখ শুষ্ক। তাকে কেমন রুগ্ন দেখাচ্ছে। নিহান একবার মিশ্মির দিকে চেপে বসে ফিসফিস করে বললো,

‘আন‌কম্ফোরটেবল লাগছে?’

মিশ্মি বোধ হয় শুনলো না নিহানের কথা। নিহান বুঝলো কি বুঝলো না হঠাৎ‌ই ডান হাত বাড়িয়ে মিশ্মির হাতের উপর রাখলো। মিশ্মি চমকে উঠলো। একবার নিহানের হাতের দিকে তাকিয়ে আবার তার মুখের দিকে তাকালো। নিহানের ভাবান্তর নেই। ঠোঁটে ঝুলছে দুষ্টু হাসি। মিশ্মি এক প্রকার ঝাড়া দিয়েই হাত সরিয়ে নিলো নিজের। দুটো হাত মুঠো করে নিজের কোলের উপর নিয়ে বসে র‌ইলো। নিহান ভড়কে গেলেও বুঝালো নিজেকে, মিশ্মি হয়তো লজ্জা পাচ্ছে। তাই হাত সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আসল ব্যাপার তো তা নয়। নিহান যদি ভালো করে একবার মিশ্মির মুখের দিকে তাকাতো তবে দেখতো তার মুখে কষ্টের ছাপ। আকুলতা।

গান নাচের মাঝখানে বিরতি টেনে বর কনেকে হলুদ লাগানোর কার্যক্রম শুরু হলো। একে একে পরিবারের বড়রা তাদের হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছেন। নিহান হেসে হেসে সবার সাথে কুশল বিনিময় করলেও মিশ্মি চোখ তুলে তাকালো না। নিহানের মতোই আর সবাই ভেবে নিয়েছে লজ্জায় কুঁকড়ে আছে মিশ্মি। এক সময় অথৈ আর ইয়াসির উঠে এলো নিজেদের জায়গা থেকে। হলুদের বাটি থেকে আঙুলে একটু হলুদ নিয়ে নিহান আর মিশ্মিকে ছুঁয়ে দিলো অথৈ। ইয়াসির হাত ভর্তি করে হলুদ নিয়ে বললো,

‘এভাবে হলুদ দেয়? ‌আরে বিয়েটা ওদের। হলুদের দিন ভালো করে হলুদ মাখতে হয়। বেশি করে লাগাবে। এই দেখো আমাকে। দুজনকে কি করে ভুত করি দেখো।’

অথৈ চোখ পাকালো। ইয়াসির সেসবের তোয়াক্কা না করে মিশ্মির দু গালে হাতের হলুদ লাগিয়ে দিলো। ইয়াসিরের মুখটা তখন মিশ্মির মুখের সামনে। মিশ্মি এই প্রথম চোখ তোলে তাকালো। বুকটা ধ্‌ক করে উঠলো তার। এতোটা কাছ থেকে কখনোই ইয়াসিরকে দেখে নি মিশ্মি। আজ দেখছে। এমন একটা দিন‌ও যে দেখতে হতে পারে তা তো সে কখনোই ভাবে নি। কেনো ভাবে নি? ভাবা উচিত ছিলো তো! ইয়াসির মিশ্মির নাকে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে মিষ্টি করে হাসলো। বললো,

‘শালী সাহেবা? হ্যাপী হলদী! কাল দেখবে আমার দেয়া এই হলুদের গুণ। চাঁদের আলো বাদ দাও দিনের আলোও কম পরবে তোমার রুপের কাছে। সবাই হা করে শুধু দেখতেই থাকবে।’

মিশ্মির থমকালো। ঠোঁ দুটো কেঁপে কেঁপে উঠলো। চোখে ফুটলো অবিশ্বাস হৃদয়ে জাগলো অপমান। অভিমানগুলো হুট করেই রাগে পরিণত হলো। তার চেয়ে থাকার মাঝেই অথৈ ঝাঁকুনি দিলো মিশ্মিকে। বললো,

‘কি রে? কোথায় হারালি? আজ তোর দিন আর তুইই চুপচাপ! ‌একটু তো হাস!’

মিশ্মি শুকনো একটা হাসি দিলো। ইয়াসির তখন হাত ঘুরিয়ে অথৈর গালে একটু হলুদ লাগিয়ে দিয়ে বললো,

‘তোমার‌ও হলুদ লাগানো উচিত। নিহান নাহয় শালী সাহেবাকে দেখে চোখ জুড়াবে। আমি কি করবো?’

হেসে উঠলো অথৈ। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে গাল মুছতে মুছতে নিচে নামলো সে। ইয়াসির টিস্যুতে হাত মুছে অথৈর সাথে নিচে নামলো। থমথমে অথচ রুষ্ট দৃষ্টিতে স্বামী স্ত্রী দুজনের নিঃশব্দে ভালোবাসা দেখলো মিশ্মি। নিজেকে সংযত করলো। পাশ ফিরে নিহানের দিকে তাকালো। এই মানুষটার কি দোষ? কাল থেকেই তো তার হয়ে যাবে মিশ্মি। তাকে কেনো ধোঁকায় রাখবে? আচ্ছা, নিহানকে কি সব বলে দেয়া উচিত? না কি আড়াল করাই শ্রেয়? বুঝলো না মিশ্মি। সবার হলুদ লাগানো শেষে যখন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে ঠিক তখন‌ই অদ্ভুত এক কান্ড ঘটালো মিশ্মি। টিস্যু পেপার দিয়ে নিজের আর নিহানের চেহারায় লেগে থাকা হলুদ মুছলো। তারপর হলুদের বাটিতে হাত ডুবিয়ে এক গাদা হলুদ তুলে নিয়ে নিহানের সাড়া মুখে লাগিয়ে দিলো। অতিথিদের সাথে সাথে অবাক হলেন দু পরিবারের লোকজন। রোশন আরার মনে হলো মেয়ে বুঝি সব মেনে নিয়েছে। অথৈ ইয়াসির ওরা সহ কাজিনরা ‘ওহ, হো’ বলে আওয়াজ তুললো। নিহান নিজেও অবিশ্বাস্য চোখে তাকাচ্ছে। মিশ্মি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। শুধু নিহানের দিকে কিছুটা বেঁকে নিচু আওয়াজে বললো,

‘সবার শেষে বরের হাতের হলুদ ছুঁয়াতে চাই আমি। আমায় হলুদ দেবেন না?’

নিহান যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে। চ‌ওড়া হেসে সেও হলুদ লাগালো মিশ্মিকে। বিপরীতে হালকা হেসে আড়চোখে কারো দিকে তাকালো মিশ্মি। হিমির বিস্ময় থামছেই না। মিশ্মি এতো তাড়াতাড়ি সব মেনে নেয়ার মেয়ে নয়। তবে? এতক্ষন তো চুপচাপ ছিলো সে। আর কেউ না বুঝলেও হিমি বুঝেছে মিশ্মির হতাশা, দীর্ঘশ্বাস। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে আমূল পরিবর্তন হলো কি করে? যে নিহানের দিকে তাকাতো অব্দি না তাকে আজ নিজ হাতে হলুদ লাগাচ্ছে? এখন আবার লাজুক হাসছে। ঘাপলা আছে। অবশ্য‌ই আছে। হিমির ভেতরকার বুঝদার প্রতীতি ষড়যন্ত্রের স্বরে বললো, -মিশুর মনে ভয়াবহ কিছু চলছে। বড়সড় কিছু না ঘটালেও এমন কিছু ঘটাতে পারে যাতে সব ধূলিসাৎ হয়ে যায়। চোখে চোখে রাখ তাকে। ওর মনে কি চলছে জানতে না পারলেও কি করতে চাইছে ধরতে পারবি। বি কেয়ারফুল।

______________________

খাটে গা এলিয়ে দিয়ে লম্বালম্বি করা এক পায়ের উপর আরেক পা তুললো হিমি। আনমনে সিলিংএর দিকে তাকিয়ে গভীর ভাবনায় মগ্ন হলো। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে ভ্রু কুঁচকালো তাহির। খাটে বসে হিমিকে পর্যবেক্ষন করে বললো,

‘কি ভাবছেন?’

‘ভাবছি কাল কি হবে?’

‘ভাবার কি আছে? জানেন‌ই তো, বিয়ে হবে।’

হিমি চোখ সরিয়ে দেখলো তাহিরকে। বললো,

‘আপনি বুঝবেন না। ছাড়ুন।’

তাহির আর প্রত্যুত্তর করলো না। চশমা খোলে খাটে শুতেই হিমি উঠে বসলো। দুই পা মুড়িয়ে বসে ক্ষুদ্ধ গলায় বললো,

‘আমি ছাড়তে বললাম আর আপনি ছেড়ে দিলেন?’

তাহির ক্যাচ করতে পারলো না হিমির কথা। কপাল কুঁচকে রেখে বললো,

‘মানে?’

‘মানেটা হলো আমি কি ভাবছিলাম কেনো ভাবছিলাম সেসব জানার ইচ্ছে করলো না আপনার?’

‘ইচ্ছে তো করছিলো। জানতেও চাইলাম। আপনিই তো বললেন না।’

‘বললাম না তো কি আর জানতে চাইবেন না? আশ্চর্য! ‌কোনো কৌতুহল নেই আপনার?’

তাহির উঠে বসলো। বেড সাইড টেবিল থেকে চশমা নিয়ে আবা‌রো চোখে পরলো। বললো,

‘কিছুটা কৌতুহল আছে। আর আছে বলেই নিজ মনে এর উত্তর সাজিয়েছি।’

ভ্রু উঁচালো হিমি,

‘তাই না কি? তা কি উত্তর সাজালেন শুনি!’

‘প্রত্যেক মানুষ বিশেষ করে প্রত্যেক মেয়েই তার বিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মেয়ে ছোটবেলা থেকে দেখে কিছু কৈশোরে আর কিছু মেয়ে যৌবনে। মেইনলি তাদের নিজের বিয়ে নিয়ে অনেক প্ল্যানিং থাকে। মনে মনে অনেক কিছু সাজায়। ভাবে তাদের বর কেমন হবে, বিয়েতে কি কি হবে, শাড়ি না লেহেঙ্গা পরবে, মেক আপ কেমন করবে, কি কি অনুষ্ঠান হবে এটসেটেরা! আপনিও নিশ্চয় ভেবেছিলেন। কিন্তু সেসব কিছুই হয় নি। এখন চাচাতো মামাতো ভাই বোনের বিয়ে দেখে আফসোস হচ্ছে। নিজের ভাবনাগুলোর সাথে বাস্তবতা মিলিয়ে হতাশ হচ্ছেন আপনি। না চাইলেও আপনার মস্তিস্ক এসব আপনাকে ভাবাচ্ছে।’

মুখ বাঁকালো হিমি।

‘মোটেও না। আপনি আসলে আমায় ঠিক করে চিনতেই পারেন নি। আমি কখনোই এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি নি। বিয়ে নিয়ে লোকে চিন্তা করে সেটাও অথৈকে না দেখলে জানতাম না। আমার খুব অবাক লাগতো ওকে এসব নিয়ে কল্পনা করতে দেখলে। হাসি পেতো। আমি ভাবতেও পারি নি আমার কখনো বিয়ে হবে। আমি শুধু জানতাম আমাকে আমার বাবাকে ফেরাতে হবে। বাবার ভালোবাসা পেতে হবে। যে করেই হোক বাবার প্রিয় হয়ে উঠতে হবে। হ‌ই নি। হতে পারি নি আর পারবোও না। এটা ঠিক যে আপনার সাথে হুট করে বিয়েটা হয়ে যাওয়ায় আমি থমকেছিলাম। এবং কল্পনা আর বাস্তব মিলে নি আমার। তবে কল্পনাতেও কখনো নিজের বিয়ে দেখি নি আমি। দেখেছি আমার সুখ।’

দীর্ঘশ্বাস ফেললো তাহির। দরজায় করাঘাত শোনা গেলো।

‘ঘুমিয়ে পরেছিস হিমি?’

খাট থেকে নামলো হিমি। গলা উচিয়ে বললো,

‘না মামানি। আসছি।’

দরজা খুলতেই হাতে ট্রে নিয়ে ঘরে ঢোকলেন অনাহিতা। হেসে হেসে ট্রেটা টি টেবিলের উপর রেখে বললেন,

‘তোমরা তো মিষ্টি খেলে না তখন। তাই দিয়ে গেলাম। খেয়ে নিও।’

হিমি জোরপূর্বক হেসে মাথা নাড়লো। হিমির প্রতি সবার দরদ উতলে উঠছে টাইপ ব্যাপার স্যাপার। এখানে আসার দিন থেকে সবাই বেশ যত্ন করছে তার। যা এতগুলো বছর এদের সাথে থেকেও পায় নি তা আজ শুধু বিয়ে হয়েছে এবং স্বামী নিয়ে থাকতে এসেছে বলেই পাচ্ছে। অনাহিতার যেনো মুখ দিয়ে মধু ঝড়ে। হিমির মায়া হয়। বিয়ে হয়েছে বলে অনাহিতা হিমিকে বকা ঝকা করছেন না। নিশ্চয় বুক ফেটে কথাগুলো বাইরে বেরুতে চাইছে! একবার সুযোগ করে দেয়া উচিত তার। সময় বুঝে এমন কিছু করা উচিত যাতে অনাহিতা বুক উজার করে হিমিকে কয়েকটা কথা শুনাতে পারেন। তিনিও শান্তি পাবেন আর হিমির‌ও প্রাণ জুড়াবে।

আবার‌ও দরজায় ঠক ঠক শব্দ হলো। তাহির শুতে গিয়েও উঠে বসলো। হিমি স্পষ্ট দেখলো তাহিরের চেহারায় বিরক্তি। হবেই তো। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে মাঝরাতেও ঘুমাতে পারছে না। কেউ না কেউ সমানে বিরক্ত করছে। হিমি দরজা খুলতেই দেখলো মাথায় টাওয়াল জড়িয়ে মিশ্মিকে।

‘সরি। বিরক্ত করতে চাই নি। একটু দরকার ছিলো। আসবে?’

হিমি অবাক হলো। গত দুদিন মিশ্মি একবারের জন্য‌ও একটা শব্দ বলে নি হিমিকে। হিমির দিকে যখন‌ই তাকিয়েছে চোখে মুখে আক্রোশ ছিলো তার। অথচ এখন কি সাবলীল ভাবে কথা বলছে। হিমি কৌতুহলী গলায় বললো,

‘খুব ইম্পর্টেন্ট?’

‘হ্যা।’

‘ভেতরে আয়।’

‘না। দুলাভাই ঘুমাক। তুমি এসো। কথা আছে আমার।’

হিমি সায় জানিয়ে পেছন ফিরে তাকালো। তাহির চোখের ইশারায় হিমিকে যেতে বললো। হিমিও তাই দরজা ভেজিয়ে রেখে মিশ্মির সাথে বাইরে বেরুলো। সব স্বাভাবিক লাগছে হিমির কাছে। ঠিক আগের মতোই। যেমনটা মিশ্মি করতো। অথৈ করতো। যেকোনো দরকারে হিমিকে খুঁজতো। ভণিতা ছাড়াই বলতো, আপু কথা আছে। হিমি কখনো মনোযোগ দিয়ে শুনতো কখনো ব্যস্ততায় অন্যমনস্ক হয়ে। আজ আবার‌ও মিশ্মি ডাকলো তাকে। মিশ্মির স্বাভাবিকতায় যেনো খটকা বেড়ে গেলো হিমির। মিশ্মি হিমিকে নিয়ে নিজের শোবার ঘরে ঢুকলো। দরজা ভেতর থেকে আটকে দিয়ে মাথা থেকে টাওয়াল খোলে বললো,

‘চুলটা ঝেড়ে দেবে?’

‘এটা তোর দরকারি কথা?’

‘আরে নারে বাবা। তুমি আমার চুল ঝেড়ে দাও। আমি বলছি কি বলতে চাইছিলাম।’

হিমি টাওয়াল হাতে নিতেই উল্টোদিকে ঘুরে মাথাটা পেছনের দিকে খানিক নিচু করলো মিশ্মি। হিমি আলতো করে চুল ঝেড়ে দিতে লাগলো। মিশ্মি থমথমে গলায় বললো,

‘নিহানকে সব বলে দেবো?’

হিমি বুঝলো না মিশ্মির প্রশ্ন। জানতে চাইলো কি বলার কথা বলছে। মিশ্মি আগের মতোই কন্ঠে থমথমে ভাব রেখে বললো,

‘ইয়াসির স্যারকে ভালোবাসার কথা?’

হিমির হাত থেমে গেলো। কয়েক মুহুর্ত পর বললো,

‘বলে লাভ?’

‘কিছুই না শুধু সে আড়ালে থাকলো না। আমি তো এখন থেকে তার‌ই। তাকে সবটা না জানালে কষ্ট পেতে পারে।’

‘এই মাত্র‌ই না বললি তুই তার। সুতরাং, তুই সব সময়‌ই তার। অতীত জানালেই বরং সে কষ্ট পাবে।’

‘পরে যদি অন্যকারো থেকে জানতে পারে তখন?’

‘কে জানাবে? তুই না জানালে আর তো কেউ নেই তাকে কিছু জানানোর। আমি বলবো না। মামীও বলবে না। জানার কোনো চান্স নেই। আর তাছাড়া অতীতে এমন কিছু হয় নি যা না জানলে তোদের ভবিষ্যত নষ্ট হবে। তুই কোনো সম্পর্কে জড়াস নি। ভালোবেসেছিস‌। ভুলেও গেছিস। আবার নতুন করে মনে করে গিল্টি ফিল করার দরকার নেই তো।’

চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here