জ্বিনের ভালোবাসা
#পর্ব২
লেখিকাঃ Mahiya Akter Priya
Story Credit : Mahiya Akter Priya
এসব ভাবতে ভাবতে সে বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে গোসল করে খাওয়া দাওয়া করে নেয়। দুপুরে ভাবতে থাকে ২ দিন ধরে তার সাথে কি হচ্ছে? তার মা জিগ্যেস করে কি হয়েছে? সে উত্তরে বলে কিছু হয় নি। পড়ার চাপ টা বেশি। প্রতিদিনের মত আজ রাতেও ছাদে যায়। আর এর রহস্য বের করেই ছাড়বে। দোলনায় বসে বসে হিন্দি গান শুনছে হঠাৎই সে মিষ্টি গন্ধ টা আবার পায় সে। সে বলে, হিন্দি গান কেন শুনছেন? বাংলায় কি খারাপ আছে? এবার প্রিয়া রেগে গিয়ে বলল, কে আপনি? সামনে আসুন। এতই যদি কথা বলার ইচ্ছা থাকে তাহলে সামনে এসে কথা বলুন। আর আমি কি গান শুনবো না শুনবো সেটা আমার ব্যআপার। হঠাৎই আবার আওয়াজ এলো, আরে! রেগে যাচ্ছেন কেন? ভাষা শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি। তাই বাঙালি হিসাবে বাংলা গান শোনা উচিত আমাদের। প্রিয়া বলল, এই কে বলুন তো আপনি? তখন থেকে জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন। সে বলল, আমি কে সেটা আপনার জানতে হবে না। সময় হলে এমনি জানতে পারবেন।
এই কথায় প্রিয়ার খুব রাগ হয়। প্রিয়া বলল, দেখুন সামনে এসে কথা বলুন। কিছু না শুনে সে আবার পুরো ছাদ খুজে দেখল। সেই কন্ঠ টা আবার বলল, এত অদৈর্য কেন আপনি? বললাম তো সময় হলে জানতে পারবেন। প্রিয়া ভাবল সে যখন আসে তখন একটা গন্ধ পাওয়া যায়। সেটা খুজে বের করতে হবে কোথা থেকে আসছে। কিন্তু অদ্ভুত, সব জায়গায় সমান গন্ধ। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? তখনই সেই কন্ঠ টা বলল, এত রাতে আপনি এখানে কি করেন? জানেন না, এই সময় জ্বিনেরা বাইরে থাকে। প্রিয়া বলল, এতক্ষন আমার সন্দেহ ছিলো যে আপনাকে মা পাঠিয়েছে কি না? এখন আমি সিউর আপনাকে মা পাঠিয়েছে। কি সব আবোল তাবল বলছেন? আপনার মা এসব বিষয়ে কিছুই জানে না। প্রিয়া বলল, হয়েছে, আপনাকে আর মায়ের সাপর্ট টানতে হবে না। খুব ভালো ভাবে বোঝা হয়ে গেছে। এই কে বলুন তো আপনি? সামনে আসুন। সে বলল, আমি তো আপনার সামনেই আছি। শুধু আপনি দেখতে পাচ্ছেন না। প্রিয়া খুব রেগে গেলো। বলল সামনে থাকলে দেখব না কেন?
ওমনি একটা বল হাওয়ায় উড়তে লাগলো। প্রিয়ার অবাক হয়ে গেছে। সেই কন্ঠ টা বলল, এটা আমার হাতে আছে। কিন্তু আপনি আমাকে দেখতে পাচ্ছেন না। প্রিয়া ভয় পেয়ে নিচে চলে গেলো। নিচে গিয়ে সে দরজা বন্ধ করে দেয়। সে ভাবছে এটা কি হলো? সে রাতে গন্ধ টা আর সে পেলো না। কিন্তু ভয়ের কারনে সারারাত সে ঘুমাতে পারছে না। সকাল হতেই একটু ঘুমালো সে। ঘুম থেকে উঠার পর এমনি তার কিছু মনে থাকে না কিন্তু এবার মনে হচ্ছে সে এটা ভুলতেই পারবে না। কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হয়। খাবার টেবিলে গিয়ে খাবার খায়। তার ভাই জিগ্যেস করে, কিরে তোর কি মন খারাপ? ও বলে নাহ আসলে পড়ার চাপ বেশি। বেশি করে পড়া দেয়। ওর ভাই বলল, বেশি পড়লে তো তোরই লাভ। জ্ঞান অর্জন তো তোরই হবে। প্রিয়া আর কিছু বলে না। ১ সপ্তাহ খুব স্বাভাবিক। সে আর ছাদে যায় না। সেই গন্ধ টাও আর পায় না। ১ সপ্তাহ পর কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
সেদিন কলেজ থেকে বাসায় এসে দেখে কেউ নেই মা ছাড়া। মা কে জিগ্যেস করল, সবাই কোথায়? মা বলল, ভাবি তার বাবার বাসায়, আব্বু বাজারে আর ভাইয়া কাজে। ভাইয়া কাজে গেছে তারমানে আজকে আবার নতুন কিছু নিয়ে আসবে। ফ্রেস হয়ে খেয়ে নেয়। তারপর টিভি দেখতে থাকে। হঠাৎই ক্রলিং বেল বাজলো। ভাইয়ার আসার সময় হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিয়ে ভাইয়া কে জড়িয়ে ধরে বলে আজ কি এনেছিস। সে সবসময় এটা করে। কিন্তু পারফিউমের গন্ধে বুঝল এটা ওর ভাই না কারন ওর ভাই এই পারফিউম ব্যাবহার করে না। তাকে ছেড়ে দিয়েই দেখল, লম্বা মত একটা ছেলে। ফর্সা রং তবে সূর্যের তাপে নাক মুখ লাল হয়ে গেছে। সিল্কি চুল। দেখে বোঝা যায় রেগুলার জ্বিমে যায়। সাদা শার্টের সাথে জিন্স প্যান্ট। দেখতে খুবই সুন্দর। প্রিয়া বলল, সরি আসলে আমি ভেবেছিলাম আমার ভাই। ছেলেটা বলল, ওকে।
তখনই মা ভিতর থেকে আসল, বলল, প্রিয়া কে এসেছে? প্রিয়া বলল, তুমি এসে দেখে যাও। প্রিয়ার মা আসতেই ছেলেটা সুন্দর করে তাকে সালাম দিলো। সে সালামের উত্তর নিয়ে বলল, কি চাও বাবা? সেই ছেলেটি বলল, আমার নাম আবির। ঘর ভাড়ার এড দেখে এখানে আসলাম। প্রিয়ার মা বলল, একটা ঘর। তোমাদের সমস্যা হবে না তো? ছেলেটা বলল, না। আমি একাই থাকব। প্রিয়ার মা বলল, তোমার বাবা মা? আবির বলল, তারা আর এই পৃৃথিবীতে নেই। প্রিয়ার মা বলল, ওহ, আমি আসলে বুঝতে পারি নি। ছেলেটা বলল, ঠিক আছে। প্রিয়ার মা বলল, তুনি যদি আমাদের সাথে থাক তাহকে কি সমস্যা হবে? আমাদের সাথেই খাবে আর থাকবে। নিজের পরিবারের মত ভাববে। ছেলেটি বলল ঠিক আছে।
এভাবে তারা সব ঠিক করে নিলো। প্রিয়ার খুব খারাপ লাগছে এভাবে অপরিচিত একজনকে জড়িয়ে ধরল। ওর ভাইয়া আসলে খাবারের প্যাকেট টা ওর হাতে দিলো আর বলল, কি হয়েছে আমার বোন টার? খুশি মনে হচ্ছে না তো। প্রিয়া বলল, কিছু না।
( বানান ভুলের জন্য ক্ষমা করবেন। আমি বড় করে দিতে চাইছিলাম কিন্তু দুই বার লেখা টা ডিলিট হয়ে গেলো। ২ ঘন্টা লাগল পুরো এইটুকু লিখতে। যদি ডিলিট না হতো তাহলে আরো বড় দিতাম।
চলবে…