পাগল প্রেমিকা পর্ব-৮

0
652

#পাগল_প্রেমিকা
#sharmin_akter_borsha
#পর্ব_০৮
৭দিন পর প্রতিদিনের মতো আজও আমি অপেক্ষা করছি ওর জন্য ওর সাথে কথা বলার জন্য ওর ভয়েস শোনার জন্য কিন্তু ওও এখনো ফ্রি হয় নি!
রাত দেড়টা (1:25am) বাজে।
মেসবুকের মেসেঞ্জারে ওর ইনবক্সের দিকে তাকিয়ে আছি কখন বলবে ওও আমি ফ্রি হয়েছি!
ভাবতে ভাবতে ওর একটা মেসেজ আসলো!
নিলয়– আমি আজকে ঘুমাবো!
আমি- ওকে! গুড নাইট!
(আমিও আর কিছুই বললাম না আমি যে এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম বলাই হলো না মুড অফ হয়ে গেলো আরও একটা মেসেজ দিলো)
নিলয়– তুমিও ঘুমিয়ে পড়ো!
আমি- হুম!
ওও চলে গেলো ফেসবুক মেসেঞ্জার থেকে ঘুমের দেশে!
কিন্তু আমার যে ঘুম আসছে না!
কারণ ওর ভয়েস তো শুনিনি আজ কিভাবে ঘুমাবো?
ঘুম আর আসলো না আমার তাই আবার অন্য একটা গল্প পরতে শুরু করলাম! রাত ৪টা বেজে গেছে প্রায়!
এখন ঘুম আসছে,, চোখ খুলে রাখতেই পারছি না!
ঘুমিয়ে গেলাম!
নিলয় যতই ব্যস্ত থাকুক না কেনো?
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাকে গুড মর্নিং বলতে একদিনও ভুলে না!
আমি যখনই ঘুম থেকে উঠবো,,, ফেসবুক মেসেঞ্জারে আসলেই দেখবো ওর ছোট্ট করে দেওয়া একটা মেসেজ–
– গুড মর্নিং!
অনেক খুশি হয়ে যাই আমি নিলয়ের একটা মেসেজ আসলেই আমার ফোনে!
ও একটা মেসেজ দিলে আমার খুশির সীমা থাকে না!
মনে হয়,,, আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেছি
কিন্তু ফাজিল টা সেটা বুঝেই না
একদিন তো বলেই দিলাম দিনে একটা হলেও মেসেজ দিবেন আমাকে আমি অপেক্ষা করি আপনার মেসেজের জন্য নিলয় ও কিছু বলে ছিলো তারপর কি বলছিলো বলবো না হিহিহি! সেদিনই প্রথম দুপুর বেলা কল দিয়েছিল শুধু ৩ মিনিটের জন্য তবুও আমি অনেক খুশি ছিলাম কল তো দিছে দিনে প্রথমবার!
আজ ও আমি প্রতিদিনের মতো হাতে ফোন নিয়ে বসে আছি অপেক্ষা করছি ওর কিন্তু ওর সেদিকে কোনো ভ্রুুক্ষেপই নেই!
আর উনি গ্রুপে গল্প পোস্ট করেই যাচ্ছেন আর মেয়েরা লাইক কমেন্ট লাভ রিয়েক্ট দিতেছে আর উনিও রিপ্লাই দিচ্ছে কিন্তু এদিকে আমার মেসেজ সিন ও করছে না।
লাইক কমেন্ট করে ঠিক আছে মেয়েদের লাভ রিয়েক্ট দিতে হবে কেন?
আর পারলাম না সহ্য করতে,, তাই গ্রুপ থেকে নিয়ে নিলাম লিভ (বেশি বোঝা ভালো না আর বেশি বুঝেই নিয়ে নিলাম লিভ) এর পরিনাম কি হবে একটুও ভাবিনি!
আজ রাত আর নিলয়ের সাথে কথা হলো না! (নিলয়ের আমি একটা ডাকনাম দিয়েছি খুবই মিষ্টি কিন্তু তোমাদের বলবো না)হিহিহি
না থাক বলেই দেই,,, Writer Babu বৃষ্টির রাইটার বাবু.!
ভার্সিটি থেকে ফিরার পথে আমার বেস্টি কে আমি নিলয়ের কথা সব বলি।
তারপর জুম্মা নিলয়কে দেখতে চায় আর আমি নিলয়ের একটা ছবি জুম্মাকে দেখাই !
ছবি দেখার পর জুম্মা ও এইডা কি বললো।
জুম্মা– দোস্ত তোর চয়েস এত খারাপ!
আমি– কিহহহ বললি তুই!
তুই আমাকে এই কথা বলতে পারলি!
তুই কিন্তু আমার ভালোবাসাকে অপমান করছিস!
আমি আর কখনো তোর সাথে কথা বলবো না! (বলতে বলতে কেঁদেই দিলাম সত্যিই যে নিলয়কে খুব বেশি ভালোবাসি তাই ওকে এই কথা বলায় নিজেরই বেস্টির সাথে ঝগড়া করতে গিয়ে কেঁদেই দিলাম)
জুম্মা– তুই কাঁদছিস কেন পাগলী! আমি তো মজা করছি শুধু
জুম্মা– ছেলেটা সত্যি হেব্বি!
আমি– কি বললি হেব্বি দাঁড়া দিছি ওকে উত্তম মাধ্যম মাইর! তুই আর যদি কোনো দিন আমার রাইটার বাবুর উপর যদি নজর দিস তো আমার থেকে খারাপ আর কেউ হইবো না দেখিস!
জুম্মা– ওকে সরি আর বলবো না!
কিন্তু দোস্ত মালটা হেব্বি হ্যান্ডসাম সাথে কিউট ও! (বলেই জুম্মা দিলো এক দৌঁড়)
আমি– ওই দাঁড়া কুত্তী কি বললি আজকে তুই শেষ তোর একদিন কি আমার যে কয়দিন লাগে দাঁড়া বলছি জুম্মা! (এই বলে আমিও দৌঁড়াচ্ছি ওর পিছনে)
আমি– ওই বুটকি মুটকি দাঁড়া আমি আর দৌড়াতে পারতাম না দাঁড়া কইতাছি শয়তান বুটকি দাঁড়া
(রাস্তার পাশে বসে পড়লাম,,, এই রাস্তায় গাড়ি চলাচল করে না খুব কম গাড়ি চলে বেশির ভাগ মানুষই চলাচল করে এই রাস্তায় )
আমি উঠে অন্য শর্ট কাট রাস্তা দিয়ে ওকে ধরলাম তারপর ওকে ইচ্ছে মতো মারলাম।
জুম্মা– হইছে চল এখন ফুচকা খেয়ে আসি!
আমি– আমি ওইসব আবি যাবি খাইনা।
জুম্মা– হো তুই তো খাবি শুধু আইসক্রিম যা ভাগ কুত্তী!
আমি– ডাইনী বুড়ি আইসক্রিম নিয়া কিচ্ছু বলবি না।
জুম্মা– তুই আমার ফুচকা কে আবি যাবি বললি কেন?
আমি– ১০০বার বলমু।
জুম্মা– তো আমিও বলবো।
আমি– যা বাই তোর সাথে কথা নাই।
জুম্মা— না বললে নাই হুহহ।
বলেই ফুচকার দোকানে গিয়ে একা একাই ফুচকা খেতে লাগলো আর আমি বাহিরে দাঁড়িয়ে দেখছি!
আমাকে একটু খেতে সাধলোও না ডাইনী খেয়েই যাচ্ছে খেয়েই যাচ্ছে আমাকে দেখাই দেখাই খাচ্ছে ওর পেট ব্যাথা জেনো করে হুহহহ .।
সব খাওয়া শেষ প্লেটে গুনে গুনে আর মাত্র ১/২ টা আছে।
জুম্মা– কিরে কুত্তী খাবি নাকি?
আমি– না তুই-ই খা ডাইনী রাক্ষসী একটা!
এতক্ষণ একটা বার সাধলি ও না আর এখন খাওয়া শেষ আর বলছিস খাবি?
জুম্মা– তুই-ই তো বললি তুই ফুচকা খাসনা!
আমি– হইছে চল!
জুম্মা– কোথায়?
আমি– আইসক্রিম কিনতে?
জুম্মা- হুম চললল!
দুইটা আইসক্রিম কিনলাম!
আমি– ধর ( একটা আইসক্রিম ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম)
ও আইসক্রিম নিলো হাতে আর বললো।
জুম্মা– চল।
আমি– কোই?
জুম্মা– ঘুরবো।
আমি– মানে???
জুম্মা– রিকশায় ঘুরবো তোর সাথে আজ।
আমি– দেখ তুই তো জানিস আমি রিকশায় উঠতে পারি না। অনেক ধুলো চল আমার গাড়িতে উঠ আমি যাবো না রিকশায়।
জুম্মা– কি বললি তুই বেস্টির একটা কথা রাখবি না
সব সময় তো গাড়িতেই চলাচল করিস আজ না হয় বেস্টির সাথে ঘুরবি কিন্তু না।
আমি– আচ্ছা চল ডাইনী বুড়ি মন খারাপ করিস না তুই তো জানিস তোর মুড অফ দেখতে আবার ভালো লাগে না।
জুম্মা আর আমি আইসক্রিম খাওয়া শেষ হলে একটা রিকশায় উঠি!
জুম্মা– জান্নাত তুই মাস্ক টা খোল সড়া বলছি এটা আর আবহাওয়াটা উপভোগ কর।
টান দিয়ে মুখ থেকে সানগ্লাস আর মাস্ক টা খুলো নিলো!
(আমি বোরকা আর হিজাব ছাড়া বাহিরে যাই না তাই এখানে বাতাসে চুল উড়ার কোনো ব্যবস্তা নাই)
কিরে কেমন? (জুম্মা)
— দারুন লাগছে তো। (দুই হাত উড়ন্ত পাখির মতো মেলে দিলাম।
খুব তাজা তাজা বাতাস শরীরে এসে পরছে
দারুন তো লাগবেই।
আমি– ওই তোর চুল সড়া বালগুলা মুখে আইসা পরতাছে উফ! (হাত দিয়ে চুল সরাতে সরাতে বললাম)
জুম্মা— ওই তোর হ্যান্ডসাম এর কি খবর রে কথা হইছে রাতে রাতজাগা পাখি গুলা সারারাত জেগে জেগে কি এত গপ্পো করিস। হাসতে হাসতে বলল।
আমি— তো তোরে বলতে হইবো নাকি?
তারপর সারাদিন ঘুরার পর যে যার বাড়ি চলে আসলাম!
সারাদিন ফেসবুকে ঢুকি নাই রাতে ফেসবুকে ঢুকতেই!
নিলয়– কুত্তী হারামী!
সারাদিন একটা মেসেজও দেয় না!
আমি তো মেসেট দুইটা দেইখা অবাক আকাশ থেকে পরছি। তারপরেও পার্ট নিয়া মেসেজ দিলাম।
আমি– আচ্ছা? আপনার কি টাইম আছে মেসেজ দেখার জন্য?
সাথে সাথে রিপ্লাই দেয়।
নিলয়– হো আছে।
আমি– না নাই,,, আর থাকেও না.. আর কখনো থাকবেও না!
আর মেসেজ দিলো না দেখলোও না ওর কাছে বলে সময় আছে এখনই আর মেসেজ দেখার সময় পেলো না আন্ডা আছে মন্ডু আছে ওর কাছে।
ফোনটা রাগে ঢিল মারলাম বিছানার উপর তারপর গেলাম বর্ষা আর রিমার কাছে দু’জনে হেব্বি অভিমান করছে ওদের সময় দেই না বলে। ওদের রাগ অভিমান ভাঙিয়ে রাতে ওদের দুজনকে নিজের হাতে খাইয়ে দিলাম। তারপর গল্প করতে বসলাম শীতের রাতে রাতে বাহিরের বাহিরে আগুন পোহাচ্ছি বাড়ির সবাই অন্য পাশে আমরা তিন বোন এক পাশে আর কাব্য নাহিদ অপূর্ব অন্য পাশে। আমি তো শুধু আমার রাইটার বাবুর কথাই বলছি ওদের আর দীর্ঘ ১০/১২ দিন ধরে একজনের কথা শুনতে শুনতে ওরা বোরিং হয়ে গেছে।
এত যে রাইটার বাবু রাইটার বাবু করিস তাকে তো চিনিসও না আর এখন পর্যন্ত দেখিসও নি। তোর কাছে তোর ছবি চাইছে তুই দিয়া দিছিস আরেক মাইয়ার ছবি। আর এত যে ভালোবাসিস তোর রাইটার বাবুকে বলছিস? (রিমা)
এইসব ছেলেদের চরিত্রের ঠিক নেই এরা শুধু টাইমপাস করে আর এদের আইডিরও অভাব হয় না এদের মতো ছেলেরা অনেক মেয়েদের সাথে কথা বলে শুধু নিজেদের টাইমপাস করার জন্য তাই একটু কেয়ারফুল হো বৃষ্টি যাতে পরে পস্তাতে নয় হয়। (বর্ষা)
বর্ষা আর রিমার কথা গুলো আমার পছন্দ হলো না তাই ওদের কাছ থেকে চলে এলাম বাড়িতে।
রাত ১২টা!
ওয়েট করতে করতে আমি শেষ।
রাত সাড়ে ১২টায়…
কল দিয়ে কিছু কিছু কথা বললো! আমিও শুনলাম
(কি বলছে বললাম না আমার লজ্জা করে)
নিলয়– আমি একটু ব্যস্ত আছি একটু কাজ আছে তারপর ফ্রি হয়ে ১০মিনিট পর কল দিচ্ছি! ওকে?
আল্লাহ হাফেজ কলিজা উমমমমম্মাহহহহ!
আমি– ওকে,,,!
এটা কি ছিলো উম্মাহ দিলো। হায় বাচ্চি কা জান লেগি কেয়া। একটু অবাক হলাম কারণ এই প্রথম মেসেজে উম্মাহ দিলো এতদিন তো ফোনেই দিচ্ছে হিহিহি।
আমি আবারও ওয়েট করছি..
রাত ২টা ওয়েট করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ি।
ঘুমানোর আগে নিলয়কে অনেক গুলো মেসেজ ও কল দেই!
রিপ্লাই না পেয়ে বুঝতে পারলাম নিলয় ঘুমিয়ে পরেছে!
আমিও কম কিসে অনেক রোমান্টিক রোমান্টিক মেসেজ দিলাম সাথে একশো উম্মাহ উম্মাহ মিস ইউ রাইটার বাবু কোই তুমি ওই ওই কুত্তা বিলাই রাইটার বাবু উমমমমমম্মমাহ উম্মাহহ অনেকগুলা মেসেজ দিলাম হিহিহি।
মাত্র চোখটা বন্ধ করে ঘুমিয়েছি রাত ২ঃটা বেজে ৩৫ মিনিট.!
আর নিলয়ের রাত ৩টা বাজে হঠাৎ ফোনে কল আসলো!
আমি- উফফ কে ফোন দিছে বলে ফোনটা হাতে নিলাম
ফোনের স্কিনে নাম দেখে আমার ঘুম উড়ে গেলো হা করে তাকিয়ে আছি মুখ বন্ধ করে সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পরলাম পরে দৌঁড়ে রুম থেকে বারান্দায় চলে আসলাম কল রিসিভ করতেই!
আমি– হ্যালো!
নিলয়– হ্যালো সরি আমি ঘুমিয়ে পরছিলাম!
আমি- ওও তো এখন উঠছো কিভাবে?
নিলয়- ফোনের আলো জ্বলে উঠলো আর ঘুম ভেঙে গেলো!
আমি– এতগুলা কল দিলাম এতগুলা মেসেজ দিলাম তখন ঘুম ভাঙ্গে নাই আর ফোনের আলোয় ঘুম ভেঙে গেছে না?
নিলয়– হো ফোন সাইলেন্ট ছিলো আর লাইট জ্বলতেই চোখে লাগল আর ঘুম ভেঙে গেলো।
রাগারাগি শেষ আবার কথা হলো ৪০মিনিট
সাথে এত্তোগুলা উম্মাহহহ দিলো নিলয় আমার রাগ ভাঙানোর জন্য আমিও দেই উম্মাহ এত্তোগুলা। আমার নিলয়ের প্রতি ভালোবাসা দিনদিন বেড়েই যাচ্ছে সাথে নিলয়ের জন্য পাগলামি ও জন্মাচ্ছে…
এই শীতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলা যে কি কষ্টের একদিন বললেই বুঝতে পারবেন হুহহ তবুও আমি আমার রাইটার বাবুর সাথে কথা বলার জন্য সব রকম কষ্ট সয্য করতে রাজি আছি। বারান্দার গিরিল দিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা বাতাস এসে আমাকে ঠান্ডা করে দিচ্ছে আর এদিকে আমি কাঁপতে কাঁপতে শেষ হয়ে যাচ্ছি আহহ কি কাঁপনি।
আমি শীতে কাঁপছি ওই দিকে নিলয় অন্য কিছু মনে করছিলো। উল্টা পাল্টা কোনো কিছুই ভাবার দরকার নাই বলে দিলাম হুহহহ.!
তারপর দু’জনে ঘুমিয়ে গেলাম!
সকালে প্রতিদিনের মতো আজও নিলয় মেসেজ দিতে ভুলেনি।
নিলয়– গুড মর্নিং!
আর আমি এখনো ঘুমাচ্ছি সকাল ১০টায় ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিতেই নিলয়ের মেসেজ দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠে।
আমিও সঙ্গে সঙ্গে রিপ্লাই দেই। কিন্তু ফাজিল টার সময়ই নেই আমার মেসেজ দেখার।
আমি মেসেজ দেই সকালে সে রিপ্লাই দেয় বিকালে ইচ্ছা করে বাঁদর টাকে ইহহহ সামনে পেলে ইচ্ছা মতো আদর করতাম হিহিহি।
মেসেজ দিছি ১০টায় রিপ্লাই আসলো ৫টায়।
তারপরেও কোনো সমস্যা নাই মেসেজ তো দিছে আমার রাইটার বাবু…
আমিও নিলয়ের আইডির নিকনাম সেট করলাম রাইটার বাবু দিয়া।
সন্ধ্যায় কল দিলো রাইটার বাবু হুট করেই..!
আমি বাহিরে ছিলাম ফোন সাইলেন্ট ছিলো কল আসতেই ফোন কাঁপা-কাঁপি শুরু করলো ফোন হাতে নিয়ে দেখি রাইটার বাবু কল দিছে সাথে সাথে সবার সামনে থেকে কেটে পরলাম সিঁড়ির সামনে এসেই দিলাম এক দৌঁড় দৌঁড়ে রুমের সামনে এসেই কল রিসিভ করি আর নয়তো কল কেটে যেতো আর একবার কল কাটলে দ্বিতীয় বার ও কল দেয় না আর আমি দিলেও রিসিভ করে না হেব্বি ফাজিল।
রুমে ঢুকে কল রিসিভ করে হ্যালো বলতে বলতে ঠাসসসস করে দরজা আটকে দিলাম আর দরজা বন্ধ করার শব্দ শুনে রাইটার বাবু বলল।
“হো কর কর আরো দরজা বন্ধ কর আর এহন টিভিতে গান ছাড় তারপর কথা কোইস তুই তো আনার টিভিতে গান না ছাইড়া দরজা বন্ধ না কইরা কথা কইতে পারোস। ”
বেশ জোরে জোরেই বলল ওর কথা শুনে এদিকে আমার হাসি চলে আসলো উল্টো আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আবারও বলা শুরু করল।
” গান না ছাড়লে দরজা বন্ধ না করলে তোর মা তো আবার শুনলে তোরে জুতা দিয়া বাইরাইবো ছাড় গান ছাড় গান না ছাড়া পর্যন্ত তো কোনো কথা কবি না”
“কি বলল ও এইটা শেষমেষ জুতা আর কিছু পাইলো না কওয়ার লাইগা” (মনে মনে)
তারপর বললাম।
“আমাকে ছাড়ু দিয়া মারবো কেন আজাইরা ফাউল কথা”
তারপর আমিও হাছা হাছা টিভিতে গান চালু দিয়ে কলে কথা বললাম শুরুতে একটু ক্ষোভ নিয়ে কথা বললেও এখন রাইটার বাবু অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছে আমারও কেমন জানি লাগছে ইচ্ছে করছে কিস করতে।
আর কোনো ইচ্ছেই অপূর্ণ রাখতে নেই।
আমিও ইচ্ছা মতো ফোন মুখের সামনে ধরে কিস করতে লাগলাম লাগাতার উম্মাহ উম্মাহ উম্মাহহহহহহ।
রাইটার বাবু: ওই ওই থাম কুত্তী কি শুরু করছিস আমি বাহিরে আছে সাথে লোক আছে।
আমি- তাতে আমার কি আমি তো কিস করবোই। বলে আবারও কিস দিতে শুরু করলাম উম্মাহ উম্মাহহহহহহ।
রাইটার বাবু- এখন যদি শুধু রাত হইতো তোকে বুঝাইতাম মজা।
আমি- সরি আমি মজা খাইনা দুঃখিত হিহিহি..!
রাইটার বাবু- আচ্ছা পরে কথা হবে আমি কাজে আছি।
আমি- আচ্ছা ঠিক আছে রাইটার বাবু উমমম্মাহহহ।
রাইটার বাবু- আবার?
আমিঃ আপনার কি আমি আমার রাইটার বাবুকে দিছি হুহহহ।
রাইটার বাবুঃ হুহহ বাই।
বলে কেটে দিলো আর সন্ধ্যার পর একটাও মেসেজ দেয়নি কিন্তু আমি খুশি কল তো দিয়েছিলো।
” আরও একটা কথা যখন আমার রাইটার বাবু রেগে যায় না তখন ঠুসস করে কল কেটে দেয় কাউকে কোনো কথা বলার সুযোগই দেয় না আর নয়তো ব্লক করে দেয় আর নয়তো আনফ্রেন্ড করে দেয় এটা ওর স্বভাব আবার যখন রাগ কমে যায় তখন মিজেই সরি বলে । আসলে আমার রাইটার বাবু এমনই নিজের কথা শেষ তো ঠুসস করে কল কেটে দেয় সবার সাথেই এমন করে একা আমার সাথে নয়।”
নিলয় যে গ্রুপের এডমিন সে গ্রুপের আরও একটা ছেলে এডমিনের সাথে আমর আগে থেকেই এড ছিলো ফেসবুকে সে হঠাৎ মাঝেমধ্যে মেসেজ দিতো আর আমি রিপ্লাই দিতাম কারণ তার গল্পগুলো আমার ভালো লাগতো তাই একসময় রিকুয়েষ্ট দিছিলাম। সে হঠাৎ করে মেসেজ দিলো.!
“আমাদের মেসেঞ্জার চ্যাট গ্রুপে এড হবেন”
আমিও ভাবলাম এড হলেই দেখতে পারবো ওই গ্রুপে নিলয় আছে কি না আর থাকলে কয়জন মেয়ের সাথে কথা বলে তাই বলে দিলাম।
“হুম ওকে.”
তারপর সে আমাকে তাদের গ্রুপে এড দেয় আর আমি গ্রুপে গিয়েই মেম্বার চেক করছি কোথাও অভ্র নীল আইডি খুঁজে পাচ্ছি না পুরে বুঝলাম ও চ্যাট গ্রুপে নাই শুধু পাবলিক গ্রুপেই আছে।
এদিকে ওই ফাজিল ছেলে আমাকে বারবার কলে যেতে বলছে আমি কেন যামু কলে আমি তো গ্রুপে এড হতেই চেয়েছিলাম নিলয় মানে আমার রাইটার বাবুর জাসুসি করতে এদিকে ওই বজ্জাত ছেলের যাওরামি আমার একটুও সয্য হচ্ছে না।
বাবু টাবু কলিজা সোনা আমাকে চিনতে পারছো না এইটা সেইটা কত্তো কিছু বলতাছে এদিকে গেলো আমার মেজাজ গরম হইয়া নিয়া নিলাম লিভ.!
তারপর রাতে রাইটার বাবু মেসেজ দিলো।
“তুমি এখন আর গল্প পোস্ট দাও না কেনো?
এখন আমি কি বলবো আমি যে ওর গ্রুপ থেকা লিভ নিয়া নিছি (মনে মনে) তারপর মেসেজ দিলাম
“আমি গ্রুপ থেকা লিভ নিছি”
“কেন?” (নিলয়)
এহন কি কমু আসল কথা হইলো আমার মেসেজের রিপ্লাই দেয় না ওইদিকে মেয়েদের কমেন্টের রিপ্লাই দেয় সেটা আমার খারাপ লাগতো বুকের বা পাশটায় চিনচিন ব্যাথা করতো আর করবোই না কেনো আমার রাইটার বাবু একান্তই আমার হুহহ তাই জেনো আর মেয়েদের নেকামি নেকামি কমেন্ট দেখতে না হয় সেজন্য লিভ নিয়া নিছি এখন এইটা কি ওকেও বলবো।
ভাবতে ভাবতে সেম এইভাবে লিখে একটা মেসেজ দিয়া দিলাম তারপর ফাজিল উগান্ডা আরও রাইগা গেল আর বলল।
“তো কি চাও তুমি হ্যাঁ আমি আর গ্রুপে পোস্ট দিমু না কারো মেসেজের রিপ্লাইও দিমু না এইটাই চাও?”
” গ্রুপে পোস্ট দিবেন না কেনো আপনার গ্রুপ অবশ্যই দিবেন শুধু মেয়েদের রিপ্লাই দিবেন না আনার কষ্ট লাগে। ”
“গ্রুপ থেকে লিভ নিয়া একদম ঠিক করো নাই কি ভাবছো আমি তোমারে ফলো করি না। কয়েকদিন ধরে গ্রুপে তোমার কোনো পোস্ট দেখছি না আমার গ্রুপ থেকে লিভ নিছো আমার সাথে আর কথা বলবা না। ” বলেই ঠিস করে কল কেকেটে দেয়। ওই যে উপরে যে বলছিলাম না নবাব সিরাজউদ্দলার বংশধর রাগ উঠলে এমনই করে নিজের বলা শেষ হলে ঠুসঠাস কল কেটে দেয়।
তারপর একশো টা সরি মেসেজ দিছি। ভুল হইছে আর হবে না আমি এখনই গ্রুপে জয়েন্ট হইতাছি। একহাজার মেসেজ দিলাম কোনো রিপ্লাই পেলাম না। রাত দুইটায় রিপ্লাই দিলো।
“আগের এসএমএস গুলা পড়তে ছিলাম আমাকে কত রিকুয়েষ্ট করছিলা গল্পটা পোস্ট করার জন্য আর কয়েকদিন ধরে গল্পটা পড়া তো ধূর গ্রুপেই নেই তুমি। ”
তারপরেও অনেক বার সরি বললাম। এর আগেও গ্রুপ থেকা ৫/৬ বার লিভ নিছিলাম আর এইবার রাইটার বাবু রাইগা গেছে আর পরে বলল।
“এই লাস্ট বার এর পরে যদি আর একবার লিভ নেস গ্রুপ থেকা তোরে একবারে ব্লক কইরা দিমু আর ঢুকতে পারবি না গ্রুপে বইলা দিলাম মাথায় রাখিস।”
হারামি কি থ্রেড দেয়।। (মনে মনে)”
রাতে আর কথা হয় না। হারামী ডায় বুঝে না নাকি আমি যে পকে ভালোবাসি আর ওর সাথে কথা না বলে থাকতে পারি না।
রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকি আমার রাইটার বাবু হয়তো আমার সাথে আর কখনো কথা বলবে না। মনের ভেতর হাজারও দুঃ কষ্ট চেপে চোখের পানি মুছে নেই ফোনটা হাতে নিয়ে অনেকগুলো মেসেজ দেই কিন্তু রাইটার বাবু রিপ্লাই দেওয়া তো দূরের কথা সিনও করলো না। তারপর ফোন মাথার পাশে রেখে ঘুমিয়ে পরি।
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি অবাক হয়ে যাই আমি ভাবিনি এমন টা হবে আমি তো পুরাই অবাক।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here